সিলেট, ১৩ সেপ্টেম্বর (ইউএনবি)- বিয়ানীবাজার পৌরশহরের প্রাণকেন্দ্রে নির্মিত মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্স উদ্বোধনের এক বছর অতিবাহিত হয়েছে। স্থানীয় সংসদ সদস্য এবং শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ এ ভবনের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করার পর মাত্র একদিন একটি সংবর্ধনা অনুষ্ঠানের জন্য ভবনের মিলনায়তন খুলে দেয়া হয়েছিল। এরপর থেকে তালাবদ্ধ মুক্তিযোদ্ধাদের প্রাণের এই ভবনটি।
স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধারা জানান, নবনির্মিত কমপ্লেক্সটি তালাবদ্ধ থাকায় তাদের পৌরশহরে বসার মতো নির্দিষ্ট জায়গা নেই। তাছাড়া তাদের সরকারি-বেসরকারি বিভিন্ন কার্যক্রম বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। এমনকি তারা সভা-সমাবেশও করতে পারছেন না। ভবনটি তালাবদ্ধ থাকায় এর পরিবেশ নোংরা-আবর্জনাময় হয়ে পড়েছে।
কমপ্লেক্স বন্ধ থাকার বিষয়টি শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ এবং সিলেট জেলা প্রশাসককে অবহিত করা হয়েছে বলেও জানান তারা।
উপজেলা প্রকৌশলী রামেন্দ্র হোম চৌধুরী জানান, সাড়ে তিন কোটি টাকা ব্যয়ে এ কমপ্লেক্স নির্মাণ করে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর। চারতলা বিশিষ্ট এ ভবনের নীচ তলায় আটটি দোকান, দ্বিতীয় ও তৃতীয় তলায় মুক্তিযোদ্ধা কার্যালয় এবং চতুর্থ তলায় মিলনায়তন কেন্দ্র নির্মাণ করা হয়েছে।
‘প্রায় এক বছর আগে ভবনটি ব্যবহার উপযোগী করে আমরা সংশ্লিষ্টদের কাছে হস্তান্তর করি। তবে এটি কেন মুক্তিযোদ্ধাদের হাতে বুঝিয়ে দেয়া হচ্ছে না তা আমি বলতে পারব না। বর্তমানে এই ভবনের চাবি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে আছে,’ যোগ করেন তিনি।
পৌর মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক কমান্ডার সহিদ আলী অভিযোগ করেন, কমপ্লেক্স খুলে দেয়ার বিষয়ে অনেকবার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে অনুরোধ করা হয়েছে। সেই সাথে স্থানীয় এমপি এবং জেলা প্রশাসককেও অবহিত করা হয়েছে।
মুক্তিযোদ্ধা বাবুল আখতার জানান, ১৮ শতক জমির ওপর কমপ্লেক্স নির্মাণ করার কথা থাকলেও মাত্র আট শতক জমিতে তা নির্মাণ করা হয়েছে। বাকি জায়গা ক্ষমতাসীন দলের এক নেতাকে বরাদ্দ দেয়ার পাঁয়তারা চলছে। তিনি জমি দখল করে নিয়েছেন। প্রশাসন তা উদ্ধারের প্রতিশ্রুতি দিলেও সে কার্যক্রম শুরু হয়নি।
এবিষয়ে উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক কমান্ডার আতাউর রহমান খান বলেন, ‘মুক্তিযোদ্ধাদের মধ্যে বিভক্তি আছে। এটা দূর না হলে ভবন খুলে দেয়া ঠিক হবে না। তাছাড়া নির্বাচিত কমান্ড গঠন না হলে কারা এই ভবনের দেখাশোনা করবে?’
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা কাজি আরিফুর রহমান বলেন, ‘সারাদেশে মুক্তিযোদ্ধাদের কোনো নির্বাচিত কমান্ড নেই। উপজেলা পর্যায়ে ইউএনও’রা কমান্ডার হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। সে অনুযায়ী ভবন রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্ব আমার ওপর বর্তায়। ভবনের চাবি আমার কাছে রয়েছে। নির্বাচিত কমান্ড গঠন করা হলে কিংবা সরকারি নির্দেশনা পেলে আমি দায়িত্ব হস্তান্তর করব।’
তবে এক বছর ধরে কমপ্লেক্সটি সম্পূর্ণ বন্ধ থাকার অভিযোগ মানতে রাজি নন তিনি।