%E0%A6%AC%E0%A6%BE%E0%A6%82%E0%A6%B2%E0%A6%BE%E0%A6%A6%E0%A7%87%E0%A6%B6
সুপ্রিমকোর্ট আইনজীবী সমিতির ভোটগ্রহণ শেষ
সুপ্রিমকোর্ট আইনজীবী সমিতির কার্যনির্বাহী কমিটির নির্বাচনে দু’দিনব্যাপী ভোটগ্রহণ বৃহস্পতিবার শেষ হয়েছে।
সমিতির আওয়ামী লীগ সমর্থক নেতাদের পক্ষ থেকে গঠিত নির্বাচন পরিচালনা কমিটি এই নির্বাচন পরিচালনা করেন।
পুলিশি পাহারায় কঠোর নিরাপত্তা বেষ্টনীর মধ্যে আওয়ামী লীগ সমর্থক আইনজীবীদের ভোট দিতে দেখা যায়।
এবারের নির্বাচনে ৮ হাজার ৬০২ জন ভোটারের মধ্যে দুইদিনে ৪ হাজার ১৩৭ ভোট পড়েছে বলে দাবি এই নির্বাচন পরিচালনা কমিটির।
অন্যদিকে নির্বাচন পরিচালনা কমিটি সবার সম্মতিতে বৈধভাবে গঠিত না হওয়ার অভিযোগ তুলে, এই ভোটে অংশ নেননি বিএনপি সমর্থক ও সমমনা আইনজীবীরা।
তবে আজও সুপ্রিমকোর্ট চত্বরে উভয় পক্ষের আইনজীবীদের মধ্যে দফায় দফায় মিছিল-পাল্টা মিছিল, ধস্তাধস্তি, হট্টগোলের ঘটনা ঘটেছে। প্রতিবছর এই ভোট উৎসবমুখর পরিবেশে ভোট হলেও এবারের চিত্র ছিল কিছুটা ভিন্ন।
আরও পড়ুন: সমিতির নির্বাচন বিষয়ে প্রধান বিচারপতির করণীয় কিছু নেই: অ্যাটর্নি জেনারেল
সমিতির এই ভোটের প্রথম দিনে ভোটকেন্দ্র থেকে বিএনপি সমর্থক আইনজীবীদের বের করে দেয়া, পুলিশি নির্যাতন, অবৈধ নির্বাচন পরিচালনা কমিটির মাধ্যমে ভোটগ্রহণ, বিএনপি সমর্থক আইনজীবীদের রুমে তালা লাগিয়ে দেয়া ও আদালত চত্বরে বিপুল সংখ্যাক পুলিশের উপস্থিতির বিষয়গুলো বৃহস্পতিবার সকালে প্রধান বিচারপতির আদালতে তুলে ধরেন বিএনপি সমর্থক আইনজীবীরা।
পরে খাসকামরায় নিয়ে প্রধান বিচারপতিসহ আপিল বিভাগের বিচারপতিরা বিএনপি সমর্থক আইনজীবী নেতাদের বক্তব্য শোনেন। এরপর সরকারের প্রধান আইন কর্মকর্তা অ্যাটর্নি জেনারেলের বক্তব্যও শোনেন প্রধান বিচারপতি।
এরপর আওয়ামী লীগ ও বিএনপিপন্থী আইনজীবীদের মিছিল-শ্লোগান, ভোটের প্যান্ডেলের সামনে দু’পক্ষের ধাক্কাধাক্কি, পৃথক মামলায় বিএনপিপন্থী ২২ আইনজীবীর আগাম জামিন এবং বিকেলে দুপক্ষের ধাক্কাধাক্কির মধ্য দিয়ে বিএনপিপন্থী আইনজীবীদের অংশগ্রহণ ছাড়াই সমিতির দ্বিতীয় দিনের ভোটগ্রহণ শেষ হয়েছে। দিনভরই আদালত চত্বরে ছিল উত্তেজনা।
আইনজীবীর ভাষ্যমতে, সমিতির এবাবের ভোটকে ঘিরে উৎসবের পরিবর্তে উত্তেজনার আমেজ ছিল। তবে আজ রাতেই এই ভোট গণণা ও ফল ঘোষণা করা হতে পারে বলে জানিয়েছেন নির্বাচন পরিচালনা কমিটির প্রধান মো. মনিরুজ্জামান।
বৃহস্পতিবার সকালে প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকীর নেতৃত্বাধীন আট সদস্যের আপিল বিভাগে ঘটনার বর্ণনা তুলে ধরেন বিএনপিপন্থী আইনজীবীরা।
সকালে আপিল বিভাগে শুনানির শুরুতে জ্যেষ্ঠ আইনজীবী এ জে মোহাম্মদ আলী বলেন, ‘আদালত প্রাঙ্গণে নজীরবিহীন ঘটনা গতকাল (বুধবার) ঘটেছে, যা চলমান। আজও রুমে তালা লাগানো আছে, অনেকের রুমের চারপাশে পুলিশ দেয়া হয়েছে। বাইরে থেকে এ ঘটনার পেছনে কেউ আছে কিনা তা দেখতে হবে। এই অঙ্গনে এটা কি অনুমোদিত? তারা সমিতির জ্যেষ্ঠ সদস্যদেরও নির্যাতন করেছে। আমরা সুরক্ষা চাচ্ছি।’
সমিতির নির্বাচনে বিএনপি প্যানেল থেকে সম্পাদক প্রার্থী মো. রুহুল কুদ্দুস বলেন, ‘সমিতির নির্বাচন হয় সব সময় উৎসবমুখর। তবে এবার কি হলো? আজও আমি রুমে ঢুকতে পারিনি। রুমের বাইরে থেকে তালা লাগানো। কক্ষের সামনে পুলিশ রয়েছে। পুলিশ দিয়ে পিটিয়ে ভোট কেন্দ্র থেকে বের করে দেয়া হয়েছে।
আরও পড়ুন: প্রধান বিচারপতির কাছে অভিযোগ উপস্থাপন করলেন বিএনপিপন্থী আইনজীবীরা
এ সময় প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী বলেন, ‘মি. রুহুল কুদ্দুস আপনাদের সবাইকে সম্মান করি। আপনারা ২ জন ১১টার সময় (বিরতি) আসেন। কোনো করণীয় থাকলে করবো। প্রয়োজনে অ্যাটর্নি জেনারেলকেও ডেকে নেবো।’
এ সময় সমিতির সভাপতি পদপ্রার্থী মাহবুব উদ্দিন খোকন বলেন, ‘নজিরবিহীন ঘটনা। ভোটকেন্দ্রে তিন চারশ পুলিশ ঢুকে ধাক্কা দিতে থাকে। সবাই পড়ে যাচ্ছিল আর পুলিশ পা দিয়ে পাড়িয়েছে। আমার পায়ে ব্যাথা আমি ঠিকমতো দাড়াতে পারছি না।’
এ সময় প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী বলেন, ‘এ কথাগুলো ভেতরে বসে শুনি। ১১ টায় আসেন। এখন কোর্টের কাজ করি।’
পরে বেলা ১১টার পরে বিএনপি ফোরামের ৫জন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী প্রধান বিচারপতির সঙ্গে তার খাস কামরায় সাক্ষাত করেন। এ সময় সেখানে আপিল বিভাগের অন্যান্য বিচারপতিরা ছিলেন। সেখানে তারা তাদের সব অভিযোগ তুলে ধরেন। সবকিছু শুনে অ্যাটর্নি জেনারেলের সঙ্গে কথা বলে সিদ্ধান্ত জানাবেন বলে প্রধান বিচারপতি বিএনপি সমর্থক আইনজীবীদের জানায়।
এরপর প্রধান বিচারপতির সঙ্গে সাক্ষাত করে এসে অ্যাটর্নি জেনারেল নিজ কার্যালয়ে সাংবাদিকদের বলেন, ‘প্রধান বিচারপতি বলেছেন, এটা আমাদের বিষয় না। সমিতি একটি প্রাইভেট বডি। এটা বারের (আইনজীবী সমিতির) বিষয়। এখানে প্রধান বিচারপতির করণীয় কিছু নেই। আপনারা বারের সিনিয়র আইনজীবীদের নিয়ে বসে আলাপ করে সমস্যার সমাধান করেন। সবাই মিলে পরিবেশ সুষ্ঠু রাখার চেষ্টা করেন।
পরিবেশ সুষ্ঠু আছে কিনা জানতে চাইলে সরাসরি জবাব না দিয়ে অ্যাটর্নি জেনারেল বলেন, পরিবেশ সুষ্ঠু রাখতে হলে দু’পক্ষকেই সমানভাবে দায়িত্ব নিতে হবে। একপক্ষ ব্যালট ছিড়ে নিয়ে যাবে অপরপক্ষ বাধা দেবে তাহলে পরিবেশ ঠিক থাকবে কি করে? কাকে দোষ দেবেন? বিএনপি তো প্রথম থেকেই নির্বাচন করতে চাচ্ছিল না। আগের দিন রাতে ব্যালট পেপার ছিড়ে ফেলে।
অপর এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, বিএনপি সমর্থকরা পুনরায় নির্বাচন দাবি করতেই পারে। তবে নির্বাচন সুষ্ঠুভাবে হচ্ছে এবং শত শত আইনজীবী লাইন ধরে ভোট দিচ্ছেন বলেও তিনি উল্লেখ করেন।
জানা যায়, সমিতির নির্বাচন পরিচালনা কমিটি নিয়ে ঘটনার সূত্রপাত হয়। গত ২৩ ফেব্রুয়ারি তফসিল ঘোষণার পর থেকে নির্বাচন পরিচালনা কমিটির প্রধান কে হবেন তা নিয়ে দ্বন্দ্বে জড়ান দু’পক্ষের আইনজীবী নেতারা। পরে ঐকমত্যের ভিত্তিতে নির্বাচন পরিচালনা কমিটির প্রধান করা হয় জ্যেষ্ঠ আইনজীবী, বঙ্গবন্ধু আওয়ামী আইনজীবী পরিষদের নেতা, সাবেক বিচারপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা মনসুরুল হক চৌধুরীকে। কিন্তু ১৩ মার্চ সন্ধ্যায় ব্যক্তিগত কারণ দেখিয়ে তিনি পদত্যাগ করেন।
আরও পড়ুন: আদালত চত্বরে পুলিশের লাঠিচার্জে ১০ সাংবাদিক ও আইনজীবী আহত
একাধিক সূত্র জানায়, নির্বাচন পরিচালনা কমিটি ভোট গণনার মেশিন ব্যবহার করতে চাইলে সমিতির বর্তমান সম্পাদক ও আওয়ামী ফোরামের সম্পাদক প্রার্থী আবদুন নূর দুলাল তাতে বাধা দেন। তিনি আলাদা ব্যালট পেপার তৈরি করে আনেন। এ নিয়ে বিরোধের জেরে গত ১৩ মার্চ বিকালে প্রার্থী পরিচিতি সভার পর সন্ধ্যায় মনসুরুল হক চৌধুরী পদত্যাগ করেন। এ অবস্থায় গত মঙ্গলবার বিএনপি ও আওয়ামী সমর্থক আইনজীবীরা ফের নির্বাচন পরিচালনা কমিটির প্রধান কে হবেন, তা নিয়ে বিভক্ত হয়ে পড়েন।
সমিতির আওয়ামী ফোরামের নেতারা বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. মনিরুজ্জামানকে নির্বাচন পরিচালনা কমিটির প্রধান করে নির্বাচন পরিচালনা উপকমিটি ঘোষণা করেন। অন্যদিকে বিএনপি সমর্থকরা সমিতির সাবেক সহসভাপতি এ এস এম মোক্তার কবিরকে প্রধান করে একটি নির্বাচন পরিচালনা উপকমিটি গঠন করেন। বিষয়টি নিয়ে দুপক্ষের আইনজীবীদের মধ্যে উত্তেজনা দেখা যায়।
উত্তেজনাকর পরিস্থিতির মধ্যে বুধবার সকালে ভোট গ্রহণ শুরুর উদ্যোগ নিলে বিএনপি-সমর্থিত প্যানেল থেকে মনোনীত প্রার্থীরা নির্বাচন পরিচালনা-সংক্রান্ত উপকমিটির সঙ্গে বিবাদে জড়ান। এক পর্যায়ে আইনজীবী সমিতির সভাপতি ও ভোটে আওয়ামী লীগ ফোরামের সভাপতি প্রার্থী মমতাজ উদ্দিন ফকির পুলিশ ডাকেন। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে বেলা ১১টার ৪০ মিনিটের দিকে সমিতির মিলনায়তনে কয়েকশ পুলিশ প্রবেশ করে। তারা বিএনপি সমর্থক আইনজীবীদের ভোটকেন্দ্র থেকে বের করতে লাঠিচার্জ শুরু করলে প্রায় ১৫ জন আইনজীবী আহত হন।
এসময় পুলিশের সঙ্গে ঢোকা সাংবাদিকরা ঘটনার ছবি, ভিডিও নিতে থাকেন। ফলে পুলিশ সাংবাদিকদের ওপর চড়াও হয়। সাংবাদিকদেরকেও বেধড়ক লাঠিপেটা করতে থাকলে এনটিএন নিউজের জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক জাভেদ আক্তারসহ ১০-১২জন গণমাধ্যম কর্মী আহত হন।
পুলিশ দুঃখিত
সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির নির্বাচন চলাকালে সাংবাদিকদের ওপর পুলিশি হামলার ঘটনায় দুঃখ প্রকাশ করেছেন ডিবিপ্রধান হারুন অর রশিদ।
সুপ্রিম কোর্টের বার ভবনে আইন, বিচার ও মানবাধিকারবিষয়ক সাংবাদিকদের সংগঠন ল’রিপোর্টার্স ফোরাম (এলআরএএফ) কার্যালয়ে এসে এ দুঃখ প্রকাশ করে হারুন অর রশিদ বলেন, হঠাৎ করে দু’পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা বিরাজ করায় পুলিশকে একটু হ্যান্ডেল করতে হয়েছে। হ্যান্ডেল করতে গিয়ে আমাদের কিছু পুলিশ সদস্য আহত হয়েছেন। পাশাপাশি আমার প্রিয় সাংবাদিক ভাইদের কয়েকজন আহত হয়েছেন। এজন্য আমি আমার ব্যক্তিগত পক্ষ থেকে আন্তরিকভাবে দুঃখিত। আমাদের কমিশনার মহোদয়ও দুঃখ প্রকাশ করেছেন, আসলে এটা উচিত হয়নি।
হারুন অর রশিদ বলেন, ভবিষ্যতে এই পবিত্র জায়গায় হ্যান্ডলিং করতে আমরা একটু সাবধান হব।
নির্বাচন স্থগিত চেয়ে রিট
এদিকে সমিতির নির্বাচন স্থগিত চেয়ে হাইকোর্টে একটি রিট দায়ের করা হয়েছে। গতকাল সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ও নির্বাচনের সভাপতি প্রার্থী ইউনুছ আলী আকন্দ এ রিট করেন। রিটে বাংলাদেশ বার কাউন্সিলের চেয়ারম্যান, সুপ্রিম কোর্ট বারের বর্তমান কমিটির সম্পাদক, বর্তমান কমিটির সভাপতি ও চলমান নির্বাচনে আওয়ামী লীগ সমর্থিত প্যানেলের সভাপতি প্রার্থী সিনিয়র অ্যাডভোকেট মো. মোমতাজ উদ্দিন ফকির, বিএনপি সমর্থিত সভাপতি প্রার্থী ব্যারিস্টার এএম মাহবুব উদ্দিন খোকন, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সচিব ও সুপ্রিম কোর্ট বার নির্বাচন পরিচালনা সাব-কমিটির আহ্বায়ক সিনিয়র অ্যাডভোকেট মো. মনসুরুল হক চৌধুরীকে বিবাদী করা হয়েছে।
পাশাপাশি অনুষ্ঠিত ২০২৩-২০২৪ সালের নির্বাচনের ফলাফলের ওপর নিষেধাজ্ঞা চাওয়া হয়েছে। একইসঙ্গে রিটে নির্বাচন পরিচালনার জন্য একজন প্রশাসনিক কর্মকর্তা নিয়োগের আর্জি জানানো হয়েছে।
প্রথম জাতিসংঘ পানি সম্মেলন নিউইয়র্কে শুরু ২২ মার্চ
আগামী ২২-২৪ মার্চ যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কে জাতিসংঘের সদর দপ্তরে প্রথম জাতিসংঘ পানি সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে। বৃহস্পতিবার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র সেহেলী সাবররীন এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান।
তিনি জানান, নেদারল্যান্ডস ও তাজিকিস্তান-এর যৌথ সভাপতিত্বে ‘ইউএন ২০২৩ ওয়াটার কনফারেন্স’- অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে।
১৯৭৭ সালের পর ৫০ বছরে পানি বিষয়ে এটিই প্রথম জাতিসংঘ সম্মেলন।
বাংলাদেশ প্রতিনিধিদলের প্রধান হিসেবে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড.আব্দুল মোমেন এবং পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রীসহ একটি উচ্চপর্যায়ের প্রতিনিধিদল যোগ দেবেন।
তিনি আরও বলেন, সম্মেলনে ‘ওয়াটার অ্যাকশন ডিকেড (২০১৮-২০২৮)’-এর বাস্তবায়ন অগ্রগতির সমন্বিত পর্যালোচনা করা হবে এবং আন্তর্জাতিকভাবে সম্মত পানি-সংক্রান্ত বিভিন্ন লক্ষ্য ও কার্যক্রমগুলোকে আরও গতিশীল ও কার্যকর করে তোলা হবে বলে আশা করা যাচ্ছে।
আরও পড়ুন: রোহিঙ্গাদের জন্য জাতিসংঘের ৬ সংস্থার তহবিল বরাদ্দ বাস্তবায়ন
সেহেলী সাবররীন বলেন, বাংলাদেশ প্রতিনিধিদল পানি বিষয়ক টেকসই উন্নয়ন অভীষ্ট ৬ এর আওতাধীন বিষয়গুলোতে দেশের অগ্রগতি এবং এ বিষয়ক আন্তর্জাতিক সহায়তা নিয়ে আলোচনা করবেন।
এছাড়া, জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে পানির ব্যবস্থাপনা ও প্রাপ্যতার ক্ষেত্রে উদ্ভূত চ্যালেঞ্জগুলো সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হবে।
এক্ষেত্রে জলবায়ু পরবির্তনের ফলে পানি বিষয়ক অভিযোজনে বাংলাদেশের নিজস্ব অভিজ্ঞতাসমূহ যেমন-ভাসমান ফসল চাষ পদ্ধতি এবং জলমগ্নতা, খরা, লবণাক্ততা ও জলবায়ু সহিষ্ণু ফসলের জাত উদ্ভাবনসহ বিভিন্ন স্থানীয় পদ্ধতি বিশ্ব সম্প্রদায়ের কাছে তুলে ধরা হবে।
এছাড়াও, অর্থনীতির বিভিন্ন ক্ষেত্রে পানির যথাযথ মূল্যায়নের বিষয়ে বাংলাদেশ সরকার কারিগরি পর্যায়ে যে কাজ করেছে সে বিষয়েও অভিজ্ঞতা তুলে ধরা হবে। এর পাশাপাশি আন্তর্জাতিক পানিসম্পদ সহযোগিতার ক্ষেত্রে অববাহিকাভিত্তিক ব্যবস্থাপনার যেসব বিষয়ে বাংলাদেশ গুরুত্বারোপ করেছে সেসব বিষয়ে প্রতিবেশী দেশসমূহ ও সংশ্লিষ্ট অন্যান্য সকলের সঙ্গে আলোচনা করা হবে।
এক্ষেত্রে সুষ্ঠু পানি ব্যবস্থাপনাকে আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক সহযোগিতা, শান্তি ও নিরাপত্তার অন্যতম নিয়ামক হিসেবে তুলে ধরা হবে। ‘বাংলাদেশ ডেল্টা প্ল্যান ২১০০’- এর আওতায় অ্যাডাপ্টিভ ডেল্টা ম্যানেজমেন্ট-এর ক্ষেত্রে যেসব স্বল্প ও দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা গ্রহণ করা হচ্ছে সে বিষয়েও আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে অবহিত করা হবে।
সর্বোপরি, ২০১৬-১৭ সালে জাতিসংঘের মহাসচিবের হাই লেভেল প্যঅনেল অন ওয়াটার-এর সরকার প্রধানদের অন্যতম হিসেবে প্রধানমন্ত্রীর যে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা, তার ধারাবাহিকতায় বাংলাদেশে সরকারি-বেসরকারি সহযোগিতার মাধ্যমে গৃহীত বিভিন্ন কর্মসূচি জাতিসংঘসহ সংশ্লিষ্ট অন্যান্য সকলের কাছে তুলে ধরা হবে।
আরও পড়ুন: বিশ্বের ৭৮ মিলিয়ন শিশু কোনোদিন স্কুলে যায় না: জাতিসংঘ প্রধান
জাতিসংঘ শান্তিরক্ষীদের বিরুদ্ধে অপরাধের জবাবদিহিতা নিশ্চিতে 'গ্রুপ অব ফ্রেন্ডস' গঠন
নাসিরনগর সাম্প্রদায়িক সহিংসতা: ১৩ জনের ৪ বছর কারাদণ্ড
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার নাসিরনগর উপজেলায় পাঁচ বছর আগে সাম্প্রদায়িক সহিংসতায় হিন্দু মন্দিরে অগ্নিসংযোগের মামলায় সাবেক ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যানসহ ১৩ জনকে চার বছরের কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত।
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ মাসুদ পারভেজ আসামিদের দুই হাজার টাকা করে জরিমানা করেছেন বলে নিশ্চিত করেছেন জেলা আদালতের পরিদর্শক দিদারুল আলম।
দণ্ডপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন- স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা ও সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান দেওয়ান আতিকুর রহমান আঁখি, মো. মোখলেস মিয়া, মো. মফিজুল হক, খসরুল মিয়া, নাজির রহমান, মো. মাহফুজ মিয়া, ইদু মিয়া, শেখ মো. আব্দুল আহাদ, সায়হাম রাব্বী শ্যাম, মীর কাশেম। নাসিরনগর উপজেলার অন্যান্য এলাকার আনিস মিয়া, তবারক রেজা ও সজীব চৌধুরী।
রায় ঘোষণার সময় ১৩ আসামির মধ্যে আটজন আদালতে উপস্থিত ছিলেন।
মামলার এজাহারে বলা হয়, ২০১৬ সালের ৩০ অক্টোবর উপজেলার হরিপুর ইউনিয়নের হরিণবেদ গ্রামের বাসিন্দা রসরাজ দাসের ফেসবুক অ্যাকাউন্ট থেকে ইসলাম ধর্ম নিয়ে একটি অবমাননাকর পোস্টের গুজব ছড়ানোর পর উপজেলার কয়েকটি এলাকায় হিন্দু সম্প্রদায়ের একটি মন্দিরসহ বিভিন্ন স্থাপনায় ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করে দুর্বৃত্তরা।
আরও পড়ুন: ২১ আইনজীবীর ভাষা ছিল অশ্লীল: ব্রাহ্মণবাড়িয়ার ঘটনায় হাইকোর্ট
পরে সহিংসতার ঘটনায় মোট আটটি মামলা দায়ের করা হয়।
পরে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ১৩ জনকে আসামি করে চার্জশিট দাখিল করেন।
বৃহস্পতিবার সব আইনি প্রক্রিয়া শেষ করে পাঁচ আসামির অনুপস্থিতিতে আদালত এ রায় দেন।
রায়ে ক্ষুব্ধ হয়ে আসামিপক্ষের আইনজীবী কামরুজ্জামান মামুন রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করবেন বলে জানান।
বাদীর কৌঁসুলি নাজমুল হোসেন রায়ে সন্তোষ প্রকাশ করে বলেন, রায়ে ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠিত হয়েছে।
আরও পড়ুন: ব্রাহ্মণবাড়িয়া আইনজীবী সমিতি কালো দাগ সৃষ্টি করেছে: হাইকোর্ট
সাকিব আল হাসান ও হিরো আলমকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হতে পারে: ডিবি প্রধান
ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) গোয়েন্দা শাখার প্রধান মোহাম্মদ হারুন-অর-রশিদ জানিয়েছেন, দুবাইয়ে আরাভ জুয়েলার্সের উদ্বোধনে অংশ নেয়া ক্রিকেটার সাকিব আল হাসান এবং আলোচিত কন্টেন্ট ক্রিয়েটর হিরো আলমকে তদন্তের স্বার্থে জিজ্ঞাসাবাদ করা হতে পারে।
বৃহস্পতিবার নিজ কার্যালয়ে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘ওই জুয়েলারির দোকানের মালিক আরাভ খান পুলিশ সদস্য খুনের মামলার আসামি, এ বিষয়টি সাকিবকে জানানো হয়েছিল। তবু তিনি দুবাই গেলেন। বিষয়টি অত্যন্ত দুঃখজনক।’
হারুন-অর-রশিদ আরও বলেন, ‘আরাভ খান ওরফে রবিউল ইসলাম একজন খুনি, সে একজন মেধাবী পুলিশ কর্মকর্তাকে খুন করেছে। মিডিয়াতে ও অনেকের বলার পরেও সাকিবসহ অনান্য স্টার খুনের মামলার আসামির ডাকে দুবাইয়ে গেছেন। এবং তার স্বর্ণের দোকান উদ্বোধনে যোগ দিয়েছেন।’
ডিবি প্রধান আরও বলেন, ইন্টারপোলের সহায়তায় ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে আলোচনা করে রবিউলকে দেশে ফিরিয়ে আনার জন্য আইনি পদক্ষেপ নেয়া হবে।
আরও পড়ুন: ‘বিতর্কিত’ সাকিবকে শুভেচ্ছা দূত না রাখার সিদ্ধান্ত দুদকের
জরিমানা চেয়ে বাংলালিংক-যমুনা ব্যাংককে সাকিবের লিগ্যাল নোটিশ
ক্ষমা চাইলেন সাকিব!
টেকসই উন্নয়নের জন্য দুর্যোগ মোকাবিলায় প্রস্তুতি নিন: রাষ্ট্রপতি
দেশের অগ্রগতির ধারা অব্যাহত রাখতে দুর্যোগ এবং পরবর্তীতে জানমালের ক্ষয়ক্ষতির ঝুঁকি কমাতে সঠিক সময়ে যথাযথ প্রস্তুতি নিতে বলেছেন রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ।
বৃহস্পতিবার রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে বাংলাদেশ স্কাউটসের ৫১তম বার্ষিক সাধারণ সভার (এজিএম) উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন তিনি।
রাষ্ট্রপতি বলেন, সঠিক সময়ে যথাযথ প্রস্তুতি নেয়া হলে এসব দুর্যোগের ঝুঁকি কমানো এবং জানমালের ক্ষয়ক্ষতি কমানো সম্ভব।
তিনি বলেন, ভৌগোলিক অবস্থানের কারণে বাংলাদেশ প্রতি বছর বিভিন্ন প্রাকৃতিক দুর্যোগের ঝুঁকিতে থাকে।
তিনি আরও বলেন, বৈশ্বিক উষ্ণতা ও জলবায়ু পরিবর্তনের নেতিবাচক প্রভাব বিশ্বব্যাপী আজ ভিন্ন বাস্তবতা তৈরি করেছে।
বাংলাদেশের সকল দুর্যোগ ঝুঁকি কমানোর উদ্যোগে স্বেচ্ছাসেবক হিসেবে কাজ করার জন্য স্কাউটদের ধন্যবাদ জানিয়ে তিনি বলেন, বাংলাদেশ স্কাউটস সদস্যরা স্থানীয় জনগণের সঙ্গে উদ্ধার, ত্রাণ ও পুনর্বাসন কাজে অংশগ্রহণ করে দেশের দুর্যোগ ব্যবস্থাপনায় গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখছে।
তিনি বলেন, সরকার ২০৪১ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে একটি উন্নত, সমৃদ্ধশালী ও স্মার্ট দেশে পরিণত করার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে। সরকারের সমসাময়িক পরিকল্পনা প্রণয়ন ও বাস্তবায়নের ফলে বাংলাদেশ ইতোমধ্যে স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উন্নয়নশীল দেশে উন্নীত হয়েছে।
রাষ্ট্রপতি উন্নয়নের এই অগ্রযাত্রা অব্যাহত রাখতে নতুন প্রজন্মকে দক্ষ ও মানবিক মানুষ হিসেবে গড়ে তুলতে বলেন ।
তিনি বলেন, এ লক্ষ্যে সরকার বাংলাদেশে স্কাউট আন্দোলন জোরদার করতে সার্বিক সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিয়েছে।
হামিদ জোর দিয়ে বলেন, তরুণদের স্বাধীনতা সংগ্রাম ও মুক্তিযুদ্ধের প্রকৃত ইতিহাস জানা উচিত।
তিনি আরও বলেন, ‘যারা স্বাধীনতার জন্য জীবন উৎসর্গ করেছেন তাদের প্রতি আমাদের যথাযথ শ্রদ্ধা জানাতে শিখতে হবে। বাংলাদেশের একটি গৌরবময় ইতিহাস ও ঐতিহ্য রয়েছে। তাদেরও জানা উচিত।’
আরও পড়ুন: বাংলাদেশ স্কাউটস-এর সর্বোচ্চ পদক ’রৌপ্য ব্যাঘ্র অ্যাওয়ার্ড’ পেলেন শিক্ষামন্ত্রী
তিনি বলেন, ঘরে বসেই তাৎক্ষণিকভাবে বিশ্বের অনেক কিছু জানা সম্ভব।
তিনি আরও বলেন, ‘সবার আগে তথ্য প্রযুক্তির সাহায্যে নিজের দেশ সম্পর্কে জানতে হবে।’
বাংলাদেশের স্কাউটসের প্রধান হামিদ বলেন, দেশের সব জেলা ও উপজেলায় স্কাউট ভবন ও প্রশিক্ষণ কেন্দ্র নির্মাণ, প্রতিটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে দুটি করে দল গঠন এবং সব শিক্ষার্থীকে স্কাউট প্রশিক্ষণ দেয়ার বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশনা বাস্তবায়নের উদ্যোগ নিতে হবে।
স্কাউটিং বাংলাদেশের চলমান অগ্রগতির নেতৃত্বে আগামী প্রজন্মকে দক্ষ মানবসম্পদে পরিণত করতে সাহায্য করবে।
২০২২ সালে মোট ৬২৬ স্কাউট রাষ্ট্রপতির স্কাউট পুরস্কার অর্জন করেছে।
রাষ্ট্রপতি বাংলাদেশ স্কাউটের উন্নয়ন ও সম্প্রসারণে তাদের অনন্য অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ ২০২২ সালে সিলভার টাইগার এবং সিলভার ইলিশ অ্যাওয়ার্ড এবং অন্যান্য পুরস্কার প্রাপকদের অভিনন্দন জানান।
অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন বাংলাদেশ স্কাউটসের সভাপতি আবুল কালাম আজাদ, ক্যাম্প প্রধান ও প্রধান জাতীয় কমিশনার ড. মোজাম্মেল হক খান।
আরও পড়ুন: মেডিকেল কলেজকে টাকা বানানোর যন্ত্রে পরিণত করা উচিত নয়: রাষ্ট্রপতি
দেশে ৭ জনের করোনা শনাক্ত
দেশে বৃহস্পতিবার সকাল ৮টা পর্যন্ত আগের ২৪ ঘণ্টায় করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে কারও মৃত্যু হয়নি। এ সময় নতুন করে সাত জনের শরীরে এ ভাইরাস শনাক্ত হয়েছে।
এখন পর্যন্ত দেশে করোনায় ২৯ হাজার ৪৪৫ জনের মৃত্যু হয়েছে এবং শনাক্তের সংখ্যা ২০ লাখ ৩৭ হাজার ৯৫৪ জনে পৌঁছেছে।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর করোনা বিষয়ক নিয়মিত সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানিয়েছে।
এছাড়া বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, গত ২৪ ঘণ্টায় দুই হাজার ৫৮০ জনের নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে।
এ সময়ে শনাক্তের হার শূন্য দশমিক ২৭ শতাংশ। মোট পরীক্ষায় এ পর্যন্ত শনাক্তের হার ১৩ দশমিক ২৯ শতাংশ এবং শনাক্ত বিবেচনায় মোট মৃত্যুর হার এক দশমিক ৪৪ শতাংশ।
এদিকে, গত ২৪ ঘণ্টায় করোনা থেকে সুস্থ হয়েছেন আরও ৬ জন। এ নিয়ে দেশে মোট সুস্থ ব্যক্তির সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ২০ লাখ ৬ হাজার ৭০২ জনে।
শনাক্ত বিবেচনায় সুস্থতার হার ৯৮ দশমিক ৪৭ শতাংশ।
আরও পড়ুন: করোনা: দেশে মৃত্যু নেই, শনাক্ত ৬
দেশে ৯ জনের করোনা শনাক্ত
দেশে ৬ জনের করোনা শনাক্ত
ঢাকা ওয়াসার কর্মকর্তা-কর্মচারীদের পারফরম্যান্স বোনাস দেয়া অবৈধ: হাইকোর্ট
ঢাকা ওয়াসার কর্মকর্তা-কর্মচারীদেরকে পারফরম্যান্স বোনাসের (উৎসাহ ভাতা) দেয়ার সিদ্ধান্তকে অবৈধ ঘোষণা করেছেন হাইকোর্ট। একইসঙ্গে, কোনও বিধি প্রণয়ন ছাড়াই খেয়াল-খুশিমতো পানির দাম বৃদ্ধির সিদ্ধান্তও অবৈধ ঘোষণা করা হয়েছে।
কনজ্যুমার অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ক্যাব) করা রিট আবেদনের চূড়ান্ত শুনানি করে বৃহস্পতিবার বিচারপতি মো. মজিবুর রহমান মিয়া ও বিচারপতি কাজী মো. ইজারুল হক আকন্দের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ রায় দেন।
আদালতে রিটের পক্ষে শুনানিতে ছিলেন ব্যারিস্টার জ্যেতির্ময় বড়ুয়া। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল অরবিন্দ কুমার রায় ও সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল সামসুন নাহার লাইজু।
পরে ব্যারিস্টার জ্যোতির্ময় বড়ুয়া জানান, ঢাকা ওয়াসা আইন ১৯৯৬ এ সুস্পষ্টভাবে বিধি দ্বারা নির্ধারিত পদ্ধতিতে পানির মূল্য বৃদ্ধির কথা বলা থাকলেও কোনো বিধি প্রণয়ন ছাড়াই খেয়াল খুশিমত পানির মূল্য বৃদ্ধি এবং অবৈধভাবে ওয়ায়াসার কর্মকর্তা-কর্মচারীদের পারফরম্যান্স বোনাস দেয়াকে চ্যালেঞ্জ করে রিট দায়ের করে ক্যাব। উভয় পক্ষে দীর্ঘদিন শুনানি হওয়ার পর যেকোনও সময় রায় দেয়ার কথা ছিল। আজ উচ্চ আদালত বিধি বহির্ভূতভাবে পানির মূল্য নির্ধারণ ও পারফরম্যান্স বোনাস দেয়াকে অবৈধ ঘোষণা করেছেন।
তিনি আরও জানান, যেহেতু অন্যায় কাজগুলো আগেই সমাপ্ত হয়েছে তাই সেসব বাতিল না করে ক্ষমা করে দিয়েছেন। কিন্তু ভবিষ্যতে বিধি ছাড়া যেন পানির মূল্য নির্ধারণ করা না হয় এবং পারফরম্যান্স বোনাস দেয়া না হয় সে মর্মে নিষেধাজ্ঞা দেয়া হয়েছে। মহামান্য আদালতের কাছে বিধি প্রণয়ন না হওয়ায় পর্যন্ত জুডিশিয়াল গাইডলাইন করে দেয়ার যে আবেদন ছিল তা আপাতত মঞ্জুর করা থেকে বিরত থেকেছেন এবং প্রত্যাশা ব্যক্ত করেছেন যে সরকার অনতিবিলম্বে বিধি প্রণয়ন করে বিদ্যমান অসুবিধা দূর করবে।
বিধি প্রণয়ন না করে পানির মূল্য নির্ধারণের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে বিভিন্ন গণমাধ্যমের প্রতিবেদন যুক্ত করে গত বছরের ৩১ জুলাই ক্যাবের পক্ষে স্থপতি মোবাশ্বের হোসেন ওই রিট করেন। রিটের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে গত বছরের ১৬ আগস্ট ঢাকা ওয়াসার কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ‘পারফরম্যান্স বোনাস’ হিসেবে প্রণোদনা দেয়ার ওপর তিন মাসের নিষেধাজ্ঞা দেন হাইকোর্ট। একই সঙ্গে কোনো বিধি প্রণয়ন না করে পানির মূল্য নির্ধারণ করা কেন বেআইনি ঘোষণা করা হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল দেয়া হয়।
আরও পড়ুন: ওয়াসার এমডি বিষয়ে দুদকের অনুসন্ধান অগ্রগতি জানতে চেয়েছেন হাইকোর্ট
স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের সচিব, ঢাকা ওয়াসা বোর্ড, ঢাকা ওয়াসার চেয়ারম্যান, ব্যবস্থাপনা পরিচালক, প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তাসহ বিবাদীদের চার সপ্তাহের মধ্যে রুলের জবাব দিতে বলা হয়।
হাইকোর্টের এই আদেশ স্থগিত চেয়ে আপিল বিভাগে আবেদন করা হলে তাতে সাড়া দেননি আদালত। পরে গত বছরের ১১ অক্টোবর আপিল বিভাগের চেম্বার বিচারপতির আদালত এ বিষয়ে হাইকোর্টের আদেশ বহাল রেখে মূল মামলাটি দ্রুত নিষ্পত্তির নির্দেশ দেন।
সে অনুযায়ী গত ১৬ নভেম্বর ওয়াসার পক্ষে ব্যারিস্টার এ এম মাসুম একটি এফিডেভিট দাখিল করেন।
তাতে বলা হয় ২০১১-২০১২ অর্থবছর থেকে এ পর্যন্ত ৮টি অর্থবছরে ঢাকা ওয়াসার কর্মকর্তা-কর্মচারীদের পারফরম্যান্স বোনাস দেয়া হয়। এর মধ্যে ২০১১-২০১২ অর্থবছরে পারফরম্যান্স বোনাস বাবদ দেয়া হয় ২ কোটি ৯৯ লাখ ৭০ হাজার ৫৫০ টাকা। ২০১২-২০১৩ অর্থবছরে দেয়া হয় ৩ কোটি ১লাখ ৩৮ হাজার ২১৯, ২০১৪-২০১৫ অর্থবছরে দেয়া হয় ৩ কোটি ৩৫ লাখ ৯২ হাজার ৮১টাকা, ২০১৬-২০১৭ অর্থবছরে দেয়া হয় ৫ কোটি ৭৩ লাখ ৫৯ হাজার ৩১০ টাকা, ২০১৭-২০১৮ অর্থবছরে দেয়া হয় ৯ কোটি ৬০ লাখ ৮৮ হাজার ৭১৭ টাকা, ২০১৮-২০১৯ অর্থবছরে দেয়া হয় ২৩ কোটি ২৩ লাখ ৭৯হাজার ২৫৩টাকা, ২০১৯-২০২০ অর্থবছরে দেয়া হয়েছে ২৩ কোটি ৬২ লাখ, ৪০ হাজার ৫১৫টাকা, ২০২০-২০২১ অর্থবছরে দেয়া হয়েছে ১৭ কোটি ৭৮লাখ ৫১ হাজার ৫১৭টাকা।
আদালতে দাখিল করা প্রতিবেদনে দেখা যায়, ওয়াসা প্রথম ৫টি অর্থবছরে ১টি করে উৎসাহ বোনাস দিলেও; ২০১৮-২০১৯ অর্থবছরে ৪টি, ২০১৯-২০২০ অর্থবছরে ৪টি এবং ২০২০-২০২১ অর্থবছরে ৩টি উৎসাহ বোনাস দিয়েছে। তবে ২০১৩-২০১৪ এবং ২০১৫-২০১৬ অর্থবছরে কোনও উৎসাহ বোনাস দেয়া হয়নি।
ওয়াসার এফিডেভিটে আরও বলা হয়, ওয়াসা আইনের ধারা ২২ অনুযায়ী মূল্যস্ফীতির কারণে কোনও রকমের বিধি প্রণয়ন করা ছাড়াই বোর্ডের অনুমতি নিয়ে প্রতি বছর ৫শতাংশ হারে দাম বৃদ্ধি করতে পারে। ঢাকা পানি সরবরাহ ও পয়ঃনিষ্কাশন কর্তৃপক্ষ (কর্মকর্তা ও কর্মচারী) চাকরি প্রবিধানমালা-২০১০ এর ৩৪(৩) বিধি অনুযায়ী ঢাকা ওয়াসা কর্তৃপক্ষ তার কর্মকর্তা-কর্মচারীদের পারফরম্যান্স বোনাস দিতে পারে।
এদিকে সূত্র জানায়, ২০০৯ সালের পর থেকে এ পর্যন্ত মোট ১৫ বার ওয়াসা পানির দাম বাড়িয়েছে। এ অবস্থায় বিধি তৈরি না করেই পানির দাম বাড়ানো এবং কর্মকর্তা কর্মচারীদের মধ্যে পারফরম্যান্স বোনাসের নামে টাকা বিতরণের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে রিট করে ক্যাব।
আইনজীবী জ্যোতির্ময় বড়ুয়া বলেন, ‘বিধি প্রণয়ন ছাড়া পানির মূল্য নির্ধারণ ১৯৯৬ সালের ওয়াসা আইনের ২১ ও ২২ ধারার পরিপন্থী।’ আদালত উভয়পক্ষের শুনানি নিয়ে বৃহস্পতিবার পারফরম্যান্স বোনাস ঘোষণা ও বিধি ছাড়া পানির মূল্য বৃদ্ধির সিদ্ধান্ত অবৈধ ঘোষণা করে রায় দিয়েছেন।
আরও পড়ুন: ঢাকা ওয়াসার কর্মীদের উৎসাহ বোনাসে হাইকোর্টের নিষেধাজ্ঞা
ওয়াসার এমডিসহ ৯ জনের বিরুদ্ধে মামলার আবেদন
ঝালকাটিতে সড়ক দুর্ঘটনায় স্কুলছাত্রসহ নিহত ২
ঝালকাঠিতে বাসের ধাক্কায় স্কুলছাত্রসহ দুইজন নিহত হয়েছে। বৃহস্পতিবার সকালে নলছিটি উপজেলার শিমুলতলা এলাকায় বরিশাল-পটুয়াখালী মহাসড়কে এই দুর্ঘটনা ঘটে।
নিহতরা হলেন- বাকেরগঞ্জ এলাকার মিলন ভট্টাচার্যের ছেলে ও ভুট্টো উচ্চ বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণির ছাত্র তূর্য ভট্টাচার্য এবং ভ্যানচালক মো. আকাশ।
নলছিটি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা(ওসি) মো. আতাউর রহমান জানান, তুর্য তার স্কুলের সামনে ভ্যানচালক আকাশের সঙ্গে কথা বলার সময় পটুয়াখালীগামী একটি দ্রুতগামী বাস তাদের চাপা দিলে ঘটনাস্থলেই দু’জনের মৃত্যু হয়।
বিচারের দাবিতে বিক্ষুব্ধ স্কুল শিক্ষার্থী ও এলাকাবাসী দুই ঘণ্টা সড়ক অবরোধ করে রাখে।
আরও পড়ুন:পঞ্চগড়ে সড়ক দুর্ঘটনায় চতুর্থ শ্রেণির শিক্ষার্থী নিহত
সিলেটের ওসমানীনগরে পৃথক দুর্ঘটনায় কলেজছাত্রীসহ নিহত ২
ডেঙ্গু: দেশে আরও ৩ রোগী শনাক্ত
এডিস মশাবাহিত ডেঙ্গু রোগে আক্রান্ত হয়ে বৃহস্পতিবার সকাল ৮টা পর্যন্ত আগের ২৪ ঘণ্টায় কারও মৃত্যু হয়নি। তবে এ সময়ে তিনজন ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়েছেন।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হেলথ ইমার্জেন্সি অপারেশন সেন্টার ও কন্ট্রোল রুম এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানিয়েছে।
আক্রান্ত তিনজনই ঢাকার বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, সারাদেশের বিভিন্ন হাসপাতালে বর্তমানে ডেঙ্গু আক্রান্ত ২৪ জন রোগী চিকিৎসাধীন রয়েছেন। এর মধ্যে ১৪ জন ঢাকার মধ্যে এবং ১০ জন রোগী ঢাকার বাইরের বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি আছেন।
সরকারি প্রতিবেদন অনুযায়ী, ১ জানুয়ারি থেকে ১৬ মার্চ ২০২৩ পর্যন্ত ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে মোট ৭৯৬ জন রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। এর মধ্যে ঢাকায় ৩৮৯ জন ও ঢাকার বাইরে ভর্তি হয়েছেন ৪০৭ জন ডেঙ্গু রোগী।
অন্যদিকে, চিকিৎসা শেষে ৭৬৬ জন হাসপাতাল থেকে ছাড়পত্র নিয়ে বাড়ি ফিরে গেছেন। এদের মধ্যে ৩৬৯ জন ঢাকার বাসিন্দা, বাকি ৩৯৭ জন ঢাকার বাইরের অন্যান্য জেলার বাসিন্দা।
এছাড়া চলতি বছর ডেঙ্গুতে মোট ৯ জনের মৃত্যু হয়েছে।
আরও পড়ুন: দেশে ডেঙ্গুতে কারও মৃত্যু হয়নি, আক্রান্ত ৫
দেশে ডেঙ্গুতে কারও মৃত্যু হয়নি, আক্রান্ত ২
দেশে ডেঙ্গুতে কারও মৃত্যু হয়নি, আক্রান্ত ৪
জয়পুরহাটে প্রতিবেশীকে হত্যার দায়ে ৬ জনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড
জয়পুরহাটে জমি সংক্রান্ত বিরোধের জেরে প্রতিবেশীকে হত্যা মামলায় একই পরিবারের পাঁচজনসহ ৬ জনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। এ ছাড়া তাদের প্রত্যেককে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরও দুই বছরের কারাদণ্ডাদেশ দেয়া হয়েছে।
বৃহস্পতিবার দুপুরে জেলার অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ নুরুল ইসলাম আসামীদের উপস্থিতিতে এ রায় ঘোষণা করেন।
দণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন- জয়পুরহাট সদর উপজেলার দেবরাইল গ্রামের আহাম্মদ আলী (৭৪),তার স্ত্রী মিনা বেগম (৬২), তাদের তিন ছেলে আলতাব হোসেন (৪৫), মোন্তাজ আলী (৪১) ও এন্তাজ আলী (৩৫) এবং প্রতিবেশী আব্দুস সাত্তারের ছেলে আনোয়ার হোসেন (৪৩)।
জয়পুরহাট জেলা ও দায়রা জজ আদালতের সরকারি কৌসুলি (পিপি) অ্যাডভোকেট নৃপেন্দ্রনাথ মণ্ডল এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
আরও পড়ুন: জয়পুরহাটে অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রী হত্যার দায়ে স্বামীর মৃত্যুদণ্ডাদেশ
মামলার বিবরণে জানা যায়, ২০০৭ সালের ১১ এপ্রিল জয়পুরহাট সদর উপজেলার দেবরাইল গ্রামের আজিজুল তার বাবা ও ভাইদের নিয়ে সাংসারিক আলোচনা করছিলেন। জমি সংক্রান্ত বিরোধের জের ধরে ওই সময় প্রতিপক্ষ প্রতিবেশীরা (আসামিরা) সেখানে উপস্থিত হয়ে বাবা ও ভাইসহ আজিজুলকে মারপিট করে আহত করে। পরে তাদের উদ্ধার করে গুরুতর আহত অবস্থায় জয়পুরহাট আধুনিক জেলা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
এ ঘটনায় ১৭ এপ্রিল আজিজুলের ভাই মিজানুর রহমান মিঠু সদর থানায় মামলা করেন।
হাসপাতালে ২২দিন চিকিৎসা নেয়ার পর আহত আজিজুল মারা যান। ওই মামলায় দীর্ঘ শুনানি শেষে আদালত বৃহস্পতিবার দুপুরে এ রায় দেন।
মামলায় অ্যাডভোকেট নৃপেন্দ্রনাথ মণ্ডল (পিপি) ও গকুল চন্দ্র মণ্ডল বাদী পক্ষের এবং আ্যাডভোকেট আকতার বানু আসামিপক্ষের আইনজীবী ছিলেন।
আরও পড়ুন: জয়পুরহাটের ক্ষেতলালে সিএনজি ও ট্রাকের মুখোমুখি সংঘর্ষে নিহত ৫
জয়পুরহাটের ট্রাকের চাকায় পিষ্ট হয়ে দাদা ও নাতির মৃত্যু