বিশ্ব
রুশ কর্তৃপক্ষের খেরসনবাসীদের অবিলম্বে শহর ত্যাগের পরামর্শ
ইউক্রেনে নিযুক্ত রুশ কর্তৃপক্ষ খেরসন শহরের সব বাসিন্দাদের শনিবার অবিলম্বে চলে যেতে বলেছেন। রাশিয়া ইউক্রেনে আক্রমণ চালানোর পর প্রথম যে শহর তাদের দখলে নিয়েছিল তা পুনরুদ্ধার করার লক্ষ্যে ইউক্রেনীয়রা পালটা আক্রমণ করতে পারে এমন সম্ভাবনায় কর্তপক্ষ সিদ্ধান্তটি নিয়েছে।
টেলিগ্রাম মেসেজিং সার্ভিসের একটি পোস্টে ক্রেমলিনপন্থী আঞ্চলিক প্রশাসন বেসামরিক নাগরিকদের রুশ নিয়ন্ত্রিত অঞ্চলের ভেতরে যাওয়ার জন্য বড় নদী পার করতে নৌকা ব্যবহারে জোরালোভাবে আহ্বান জানিয়েছে। যেখানে, আসন্ন এক উত্তেজনাপূর্ণ পরিস্থিতি ও মর্টার নিক্ষেপের হুমকি এবং কিয়েভের সন্ত্রাসী হামলার পরিকল্পনার কথা উল্লেখ করা হয়।
আরও পড়ুন: রুশ পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে রোহিঙ্গা পরিস্থিতি অবহিত করলেন মোমেন
ইউক্রেনে প্রায় আট মাসব্যাপী যুদ্ধের প্রায় শুরু থেকেই খেরসন রাশিয়ার দখলে। এই শহরটি গতমাসে প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন যে চারটি শহর রাশিয়ার অন্তর্ভুক্ত করেন তার একটি। বৃহস্পতিবার যা রুশ সামরিক আইনের অধীনে আনা হয়।
শুক্রবার ইউক্রেনীয় বাহিনী প্রদেশ জুড়ে রুশদের অবস্থান লক্ষ্য করে বোমাবর্ষণ করেছে। নিপার নদীজুড়ে ক্রেমলিনপন্থী বাহিনীর পুনঃসরবরাহ সড়কগুলো লক্ষ্য করে এবং শহরটি পুনরুদ্ধার করার জন্য চূড়ান্ত চাপ সৃষ্টির প্রস্তুতি হিসেবেই এই হামলা করা হয়।
আগস্টের শেষের দিকে পাল্টা আক্রমণ শুরু করার পর থেকে ইউক্রেনের সামরিক বাহিনী এই অঞ্চলের উত্তরে বিস্তৃত এলাকা পুনরুদ্ধার করেছে। শনিবার নতুন সাফল্যের কথা জানিয়ে বলা হয়, রুশ সৈন্যরা বেরিসলাভ জেলার চারিভনে ও চকলোভ গ্রাম থেকে পিছু হটতে বাধ্য হয়েছে।
খেরসন শহরকে দখলে নেয়ার বিষয়টি রুশ কর্মকর্তাদের জানানো হয়। শিল্প ও বন্দরের কারণে শহরটি উভয়পক্ষের আগ্রহের কেন্দ্রবিন্দুতে আছে। হাজার হাজার বাসিন্দাদের যখন সরিয়ে নেয়ার চেষ্টা করা হচ্ছিল তখন অঞ্চলটি যেন এক দুর্গে পরিণত হয়!
আরও পড়ুন: শান্তিতে নোবেল পেলেন বেলারুশের আলেস বিলিয়াতস্কি ও রাশিয়া–ইউক্রেনের দুই মানবাধিকার সংগঠন
রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের যন্ত্রাংশবাহী ৪র্থ রুশ জাহাজ মোংলায় ভিড়েছে
জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে লঙ্ঘিত হচ্ছে মানবাধিকার: জাতিসংঘ বিশেষজ্ঞ
জলবায়ু পরিবর্তন প্রেক্ষাপটে মানবাধিকারের প্রচার ও সুরক্ষাবিষয়ক জাতিসংঘের বিশেষ র্যাপোর্টিয়ার ইয়ান ফ্রাই বলেছেন, সারা বিশ্বে জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে মানবাধিকার নেতিবাচকভাবে প্রভাবিত ও লঙ্ঘিত হচ্ছে।
মানবাধিকারগুলোর মধ্যে রয়েছে জীবন, স্বাস্থ্য, খাদ্য, উন্নয়ন, আত্মনিয়ন্ত্রণ, পানি ও স্যানিটেশন, কর্ম, পর্যাপ্ত বাসস্থান ও সহিংসতা, যৌন নির্যাতন, পাচার এবং দাসত্ব থেকে মুক্তির অধিকার।
শুক্রবার জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে পেশ করা এক প্রতিবেদনে জাতিসংঘের এই বিশেষজ্ঞ বলেন যে উন্নত অর্থনীতির কারণে দরিদ্রতম ও ন্যূনতম মানিয়ে নিতে সক্ষম এমনদের প্রতি বড়ধরনের অবিচার হয়েছে।
তিনি বলেন, ‘গ্রিনহাউস গ্যাস নিঃসরণ ব্যাপকভাবে হ্রাস করার দায়িত্ব নিতে উন্নত অর্থনীতি ও বড় করপোরেশনগুলোর নিষ্ক্রিয়তার জন্য জলবায়ুর যে ক্ষতি হয়েছে তার ক্ষতিপূরণ দাবি করা হয়েছে। উদাহরণ হিসেবে জি২০ সদস্য দেশগুলোর কথা বলা যায়। যারা ৭৮ শতাংশ গ্রিনহাউস গ্যাস নির্গমনের জন্য দায়ী।’
আরও পড়ুন: মিয়ানমারের সামরিক জান্তা সত্য আড়ালের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে: জাতিসংঘ বিশেষজ্ঞ
ফ্রাই আরও বলেন, মানবসৃষ্ট জলবায়ু পরিবর্তন বিশ্বের প্রাকৃতিক পরিবেশ ও সমাজের জন্য সবচেয়ে বড় হুমকির কারণ। যার সম্মুখীন বিশ্ব কখনও হয়নি। আর এর কারণে সবচেয়ে বেশি মূল্য দিতে হচ্ছে দরিদ্র দেশগুলোকে।
নিউইয়র্ক থেকে প্রাপ্ত একটি বার্তা অনুসারে, বিশেষ র্যাপোর্টিয়ারের প্রতিবেদনটি প্রশমন কাজ, ক্ষয়ক্ষতি, প্রবেশাধিকার ও অন্তর্ভুক্তি এবং জলবায়ু অধিকার রক্ষাকারীদের সুরক্ষার বিষয়গুলোর ওপর গুরুত্বারোপ করে।
ফ্রাই বলেন, গ্রিনহাউস গ্যাস নির্গমন কমানোর জন্য অপর্যাপ্ত পদক্ষেপের সামগ্রিক প্রভাব একটি মানবাধিকার বিপর্যয় তৈরি করছে এবং এই জলবায়ু পরিবর্তন সম্পর্কিত বিপর্যয়ের খরচ প্রচুর।
যারা সবচেয়ে বেশি আক্রান্ত ও ক্ষতির শিকার, তারা বর্তমান পরিস্থিতিতে সিদ্ধান্ত গ্রহণে সবচেয়ে কম অংশগ্রহণ করতে সক্ষম। এদিকে, শিশু, যুবক, মহিলা, প্রতিবন্ধী, আদিবাসী ও সংখ্যালঘুসহ এদের ভবিষ্যত নিশ্চিত করার জন্য আরও বেশি কাজ করতে হবে।
ফ্রাই জলবায়ু অধিকার রক্ষাকারীদের সম্পর্কে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেন, গোষ্ঠী ও সম্প্রদায়গুলো জলবায়ু পরিবর্তনের বিষয়ে পদক্ষেপজনিত অভাবের কারণে ক্রমবর্ধমান হতাশাগ্রস্ত হয়ে পড়ছে। জলবায়ু সংক্রান্ত জরুরি অবস্থা প্রত্যক্ষ করতে তারা বিক্ষোভ ও জনগণের হস্তক্ষেপের দিকে ঝুঁকছে।
এই বিশেষজ্ঞ জোর দিয়ে বলেন, আদিবাসীরা, বিশেষ করে গুরুতর আক্রমণ ও মানবাধিকার লঙ্ঘনের লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত হয়েছে।
ফ্রাই ২০২৩ সালে অনুষ্ঠিতব্য একটি প্রস্তাবিত উচ্চস্তরের প্রশমন প্রতিশ্রুতি ফোরামসহ সাধারণ পরিষদে বেশ কয়েকটি সুপারিশ পেশ করেন। যেখানে ক্ষয়ক্ষতির আর্থিক সুবিধা পরিচালনার জন্য পদ্ধতি ও নিয়মকে সংজ্ঞায়িত করতে অর্থ বিশেষজ্ঞদের একটি পরামর্শমূলক গ্রুপ প্রতিষ্ঠার কথা বলা হয়েছে। যেখানে জলবায়ু পরিবর্তনের প্রতিকার ও অভিযোগের উল্লেখ আছে, যাতে ক্ষতিগ্রস্থ সম্প্রদায়গুলো প্রয়োজনে আশ্রয় নিতে পারে।
আরও পড়ুন: রোহিঙ্গাদের আবারও ‘বাঙালি সম্প্রদায়’ বলল মিয়ানমার
মিয়ানমার বিষয়ক আসিয়ানের বিশেষ দূতকে সু চির সঙ্গে দেখা করার আহ্বান
ভারতে বাস দুর্ঘটনায় ১৫ জন নিহত
ভারতের মধ্যাঞ্চলীয় রাজ্য মধ্য প্রদেশের একটি ব্যস্ততম সড়কে পার্ক করা একটি ট্রাকের সঙ্গে একটি বাসের সংঘর্ষে ১৫ জন নিহত এবং ৪০ জন আহত হয়েছে।
শনিবার মধ্যপ্রদেশের রাজধানী ভোপাল থেকে প্রায় ৬০০ কিলোমিটার দূরে রেওয়া জেলার সুহাগি পাহাড়ির কাছে এই মর্মান্তিক দুর্ঘটনাটি ঘটে।
এসময় ওই বাসে করে ১০০ অভিবাসী শ্রমিক দীপাবলির(আলোর উত্সব) জন্য ভারতের উত্তর প্রদেশে তাদের নিজ জেলায় ফিরছিল।
একজন ঊর্ধ্বতন পুলিশ কর্মকর্তা স্থানীয় সংবাদমাধ্যমকে বলেছেন, ‘পার্ক করা গাড়িটি দেখতে না পেয়ে বাসটির চালক পেছন থেকে উচ্চ গতিতে থাকা অবস্থায় ট্রাকটিকে ধাক্কা দেয়।এতে ঘটনাস্থলেই ১৫ জন যাত্রীর মৃত্যু হয়।’
আরও পড়ুন: ট্রাম্পের ভারত সফরের সময় নয়াদিল্লিতে সংঘর্ষে নিহত ৭
তিনি বলেন, আহতদের সুহাগীর একটি হাসপাতালে নেয়া হয়েছে। ‘গুরুতর আহত কয়েকজনকে পরে রেওয়ার সঞ্জয় গান্ধী মেমোরিয়াল হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়েছে।’
কর্মকর্তারা বলছেন, দুর্ঘটনাটি তদন্তের নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
ভারতে সাধারণত প্রতি চার মিনিটে একটি সড়ক দুর্ঘটনা ঘটছে। এসব দুর্ঘটনার জন্য প্রায়শই দুর্বল রাস্তা, বেপরোয়া গাড়ি চালানো এবং ট্রাফিক আইনের দুর্বলতাকে দায়ী করা হয়।
সাম্প্রতিক বছরগুলোতে ভারত সরকারের কঠোর ট্র্যাফিক আইনের প্রয়োগ দুর্ঘটনার ওপর লাগাম টেনে ধরতে ব্যর্থ হয়েছে। পরিসংখ্যান অনুযায়ী দেশটিতে প্রতি বছর দুর্ঘটনায় এক লাখেরও বেশি মানুষ প্রাণ হারায়।
আরও পড়ুন: নয়াদিল্লিতে গুদামে অগ্নিকাণ্ডে নিহত ৯
নয়াদিল্লিতে ভবনে আগুন, নিহত ৩
‘আমরা ফিরে আসব’ লিখে কি সতর্কতা দিচ্ছে মিয়ানমারের জান্তা বাহিনী!
মিয়ানমারের একটি উচ্চ বিদ্যালয়ের একজন শিক্ষক সেনাবাহিনীর হাতে আটক হওয়ার পর মধ্য মিয়ানমারে তার শিরশ্ছেদ করা দেহ বিভৎসভাবে প্রদর্শনের জন্য রেখে দেয়া হয়েছিল।
প্রত্যক্ষদর্শীরা বৃহস্পতিবার বলেছেন, সেনাবাহিনী সামরিক শাসনের বিরোধিতাকে দমনের চেষ্টা করে বলে অভিযোগ করা অনেকগুলো অপকর্মের সর্বশেষ ঘটনা এটি।
প্রত্যক্ষদর্শীদের বর্ণনা এবং গ্রামীণ ম্যাগওয়ে অঞ্চলের তাউং মিন্ট গ্রামে তোলা ছবিতে দেখা যায়, ৪৬ বছর বয়সী স তুন মো-এর মাথাবিহীন দেহটি স্কুলের বন্ধ গেটের সামনে মাটিতে ফেলে রেখে তার মাথাটি ওপরে ঝুলিয়ে রাখা হয়েছিল। গত বছর থেকে বন্ধ থাকা স্কুলটিও পুড়িয়ে দেয়া হয়।
সামরিক সরকার বা রাষ্ট্র নিয়ন্ত্রিত গণমাধ্যম কেউই এই শিক্ষকের মৃত্যুর তথ্য প্রকাশ করেনি।
গত বছর অং সান সু চির নির্বাচিত সরকারের কাছ থেকে ক্ষমতা দখলের পর মিয়ানমারের সামরিক বাহিনী কয়েক হাজার মানুষকে গ্রেপ্তার করেছে। দুই হাজার ৩০০ এর বেশি বেসামরিক মানুষকে হত্যার জন্য দায়ী করা হয় এই জান্তা সরকারকে।
মার্কিন পররাষ্ট্র দফতরের মুখপাত্র নেড প্রাইস টুইটারে বলেছেন, ‘মিয়ানমার সামরিক শাসকদের দ্বারা ম্যাগওয়ে অঞ্চলে স্কুল শিক্ষককে গ্রেফতারের পর শিরোচ্ছেদ করে বিকৃতভাবে প্রকাশ্যে আনার খবরে আমরা হতবাক।’ ‘শিক্ষককে হত্যা সহ সকল নৃশংস সহিংসতার বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কাছ থেকে কঠোর প্রতিক্রিয়া দাবি করেন তিনি।’
সেপ্টেম্বরে, উত্তর-মধ্য মায়ানমারের সাগাইং অঞ্চলে বৌদ্ধ বিহারের একটি স্কুলে হেলিকপ্টার হামলায় অন্তত সাতজন তরুণ ছাত্র নিহত হয়। সামরিক সরকার হামলার দায় অস্বীকার করেছে। জাতিসংঘ শিশু অধিকার কমিটি জুন মাসে বলেছে, সেনাবাহিনী দেশটির ক্ষমতা দখলের পর থেকে স্কুল ও শিক্ষা কর্মীদের ওপর ২৬০টি হামলার ঘটনা নথিভুক্ত করেছে।
আরও পড়ুন: মিয়ানমার সব সময় একই দাবি করে: ভারপ্রাপ্ত পররাষ্ট্র সচিব
২০২১ সালের ফেব্রুয়ারিতে সেনাবাহিনীর ক্ষমতা দখলের পর থেকে মিয়ানমার অশান্ত হয়েছে। নাগরিকরা দেশব্যাপী শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভ করছে। বিক্ষোভ দমনে নিরাপত্তা বাহিনী মারাত্মক শক্তি প্রয়োগ করেছিল।জান্তা বাহিনীর নিপীড়ন ব্যাপকভাবে সশস্ত্র প্রতিরোধের দিকে পরিচালিত করে। যা পরবর্তীতে জাতিসংঘের বিশেষজ্ঞরা এটিকে গৃহযুদ্ধ হিসেবে চিহ্নিত করেছে।
দেশটির সেনাবাহিনী গ্রামাঞ্চলে বড় ধরনের অভিযান পরিচালনা করেছে। অভিযানকালে তারা গ্রাম জ্বালিয়ে দেয়া এবং লক্ষাধিক মানুষকে তাদের বাড়িঘর থেকে তাড়িয়ে দেয়া, এমনকি আন্তর্জাতিক বা স্থানীয় কোনও সংস্থাকে তাদের মানবিক সহায়তার সামান্য বা কোনও প্রবেশাধিকার দেয়নি।
মিয়ানমারের সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে পশ্চিমাঞ্চলীয় রাজ্য রাখাইনে দীর্ঘদিন ধরেই গুরুতর মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ রয়েছে। আন্তর্জাতিক আদালত মনে করছে যে ২০১৭ সালে বিদ্রোহ বিরোধী অভিযানে সেখানে একটি নৃশংস গণহত্যা চালিয়েছে। এতে সংখ্যালঘু মুসলিম রোহিঙ্গাদের প্রায় সাত লাখের বেশি সদস্যকে জীবন রক্ষার্থে প্রতিবেশী বাংলাদেশে পালিয়ে যেতে বাধ্য করেছে।
নিহত শিক্ষক স টুন মো একজন প্রবীণ শিক্ষাবিদ ছিলেন।যিনি তার জন্মস্থান থিত নি নাউং গ্রামে দেশের গণতন্ত্রপন্থী সরকার প্রতিষ্ঠিত একটি উচ্চ বিদ্যালয়ের দায়িত্ব নেয়ার আগে সামরিক সরকার বিরোধী বিক্ষোভে অংশ নিয়েছিলেন।
সামরিক শাসনের বিরোধী একটি আন্ডারগ্রাউন্ড সংগঠন হলো জাতীয় ঐক্য সরকার। যারা নিজেকে দেশের বৈধ প্রশাসনিক সংস্থা হিসেবে দাবি করে। চলতি বছর দেশের কিছু অংশে একটি অন্তর্বর্তী শিক্ষা ব্যবস্থা হিসাবে স্কুলগুলোর একটি নেটওয়ার্ক খোলা হয়েছে। তারা বিশ্বাস করেছিল নিজেদের রক্ষা করতে এটির প্রতি অনুগত সশস্ত্র মিলিশিয়ারা যথেষ্ট শক্তিশালী।
স টুন মো তার গ্রামের স্কুলে এবং নিকটবর্তী অন্য একটি স্কুলে গণিত পড়াতেন এবং থিট নি নাউং-এর প্রশাসনের সাথে জড়িত ছিলেন, যেখানে তিনি তার পরিবারের সঙ্গে থাকতেন। তিনি এর আগে ম্যাগওয়েতে একটি বেসরকারি স্কুলে ২০ বছর শিক্ষকতা করেছেন। স্কুলটি ম্যাগওয়ে নামেও পরিচিত।
বৃহস্পতিবার তার মৃত্যুতে দেরীতে একটি বিবৃতিতে এনইউজি-এর শিক্ষা শাখা শোক প্রকাশ করেছে। বিবৃতিতে তাকে এবং অন্যান্য নিহত শিক্ষকদের ‘বিপ্লবী নায়ক’ হিসেবে প্রশংসা করেছে এবং সামরিক বাহিনীর বিরুদ্ধে তাদের প্রতিরোধ চালিয়ে যাওয়া শিক্ষক ও ছাত্রদের সঙ্গে একাত্মতা প্রকাশ করেছে।
চলতি মাসে প্রায় ৯০ জন সরকারি সৈন্যের একটি বাহিনী অন্তত বেশ কয়েকটি গ্রাম্য এলাকায় অভিযান চালানোর সময় তার মৃত্যু ঘটে।
একজন গ্রামবাসী ফোনে দ্য অ্যাসোসিয়েটেড প্রেসকে(এপি) জানিয়েছেন যে তিনি স টুন মো সহ প্রায় দুই ডজন গ্রামবাসীর মধ্যে ছিলেন যারা রবিবার সকাল সাড়ে নয়টায় একটি চিনাবাদাম খেতে একটি কুঁড়েঘরের পিছনে লুকিয়ে ছিলেন। যখন বেসামরিক নাগরিকদের সঙ্গে 80 টিরও বেশি সশস্ত্র সৈন্যের একটি দল এসে পৌঁছায়। আকাশে তাদের সামরিক অস্ত্র দিয়ে গুলি করছিল এবং তারা গাইড হিসেবে বেসামরিক লোকদের নিয়োগ করে অভিযানে অংশ নেয়।
কর্তৃপক্ষের শাস্তি পাওয়ার আশঙ্কা এড়াতে গ্রামবাসী নাম প্রকাশ না করার শর্তে কথা বলেছিলেন। কারণ তারা সৈন্যদের হাতে ধরা পড়েছিল। তাদের ফোন এবং অন্যান্য জিনিসপত্র বাজেয়াপ্ত করেছিল তারা। এবং একজন অফিসারের নির্দেশে দল থেকে তিনজনকে আলাদা করেছিল। সে সময় কেবলমাত্র টুন মো স'কে নিয়ে গিয়েছিল।
গ্রামবাসী বলেছিলেন, ‘সে সময় আমাদের মাথা নত ছিল এবং আমরা তাদের দিকে তাকানোর সাহস করিনি। পরে একজন সৈন্য তাকে ডাকল এসো।’ ‘ মোটাসোটা এসো, আমাদের অনুসরণ কর,’ এবং তাকে নিয়ে গেল। সৈন্যরা তার সঙ্গে নম্র আচরণ করেছিল, তাই আমরা ভাবিনি যে এটি ঘটবে’।
তিনি বলেন, স তুন মোকে থিট নি নাউং থেকে এক কিলোমিটার (প্রায় এক মাইল) উত্তরে তাউং মিন্ট গ্রামে নিয়ে যাওয়া হয় এবং পরের দিন তাকে সেখানে হত্যা করা হয়।
গ্রামবাসী আরও বলেন, ‘সোমবার সকালে জানতে পারি তাকে হত্যা করা হয়েছে। একজন ভালো শিক্ষককে হারানো খুবই দুঃখজনক যার ওপর আমরা আমাদের সন্তানদের শিক্ষার জন্য নির্ভরশীল ছিলাম।’
তাউং মিন্ট গ্রামের আরেকজন গ্রামবাসী বলেছেন, সৈন্যরা চলে যাওয়ার পর সোমবার বেলা ১১টার দিকে তিনি স তুন মো-এর লাশ দেখতে পান।
তাউং মিন্টের গ্রামবাসী বলেছেন , ‘প্রথমে আমি আমার বন্ধুদের ডেকেছিলাম। তারপরে আমি শরীরের দিকে আরও ঘনিষ্ঠভাবে তাকিয়েছিলাম। আমি অবিলম্বে জানতাম যে এটি শিক্ষক স তুন মো। তিনি গত কয়েক মাসে একজন স্কুল শিক্ষক হিসেবে আমাদের গ্রামে যেতেন। তাই আমি তার মুখ চিনতে পেরেছি।’ যিনি নিজের নিরাপত্তার জন্য নাম প্রকাশ না করতে বলেছিলেন।
তার বন্ধুর তোলা ফটোতে শিক্ষকের শরীর ও মাথা দেখা গেছে। সু চির ছবি সম্বলিত একটি পুরনো প্রচারণার পোস্টারে মৃতদেহের উরু ঢেকে দেওয়া হয়েছে।
গ্রামবাসীদের মতে, তার ডান হাত থেকে বিচ্ছিন্ন আঙ্গুলগুলো তার উরুর মধ্যে রাখা হয়েছিল। একটি তিন আঙুলের স্যালুট হল একটি অঙ্গভঙ্গি যা দেশের আইন অমান্য আন্দোলন দ্বারা গৃহীত হয়েছে।, যা ‘দ্য হাঙ্গার গেমস’ সিরিজ দ্বারা অনুপ্রাণিত হয়েছে।
রবিবার সৈন্যদের দ্বারা আংশিকভাবে পুড়িয়ে দেওয়া স্কুলের বাইরের দেওয়ালে একটি অশুভ সতর্কবাণীসহ গ্রাফিতি লেখা রয়েছে: ‘আমরা ফিরে আসব, তুমি (অপরাধী) যারা পালিয়েছিল।’
আরও পড়ুন: সীমান্তে মিয়ানমারের হেলিকপ্টার থেকে ব্যাপক গোলা বর্ষণ
মিয়ানমারে স্কুলে হেলিকপ্টার হামলা, ৭ শিক্ষার্থীসহ নিহত ১৩
চীন সীমান্তে ভারতীয় সামরিক হেলিকপ্টার বিধ্বস্ত, নিহত ৩
উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্য অরুণাচল প্রদেশে চীন সীমান্তের কাছে ভারতীয় সেনাবাহিনীর একটি হেলিকপ্টার বিধ্বস্তে সশস্ত্র বাহিনীর অন্তত তিন সদস্য নিহত হয়েছেন।
শুক্রবার সকালে রাজ্যের আপার সিয়াং জেলার মিগিং গ্রামের কাছে একটি পাহাড়ি এলাকায় এই মর্মান্তিক ঘটনা ঘটে। দুর্ভাগ্যজনকভাবে বিধ্বস্ত হওয়ার সময় অ্যাডভান্সড লাইট হেলিকপ্টারটি পাঁচ সেনা সদস্যকে বহন করছিল।
ভারতীয় সেনাবাহিনী এক বিবৃতিতে বলেছে, ‘এখন পর্যন্ত নিহত তিনজনের মধ্যে দুইজনের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। তৃতীয় লাশটি উদ্ধারের চেষ্টা চলছে।’
আরও পড়ুন: ভারতের উত্তরাখণ্ডে হেলিকপ্টার বিধ্বস্ত, নিহত ৭
প্রতিরক্ষা কর্মকর্তা স্থানীয় মিডিয়াকে জানিয়েছেন, তদন্ত করতে আদালতকে নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
এক মাসে অরুণাচল প্রদেশে এটি দ্বিতীয় সামরিক হেলিকপ্টার বিধ্বস্তের ঘটনা। চলতি মাসের শুরুর দিকে একই ধরনের হেলিকপ্টার দুর্ঘটনায় একজন পাইলট প্রাণ হারিয়েছেন।
এটিও স্মরণ করা যেতে পারে যে ভারতের প্রথম সামরিক প্রধান জেনারেল বিপিন রাওয়াত, তার স্ত্রী এবং ১২ জন সশস্ত্র বাহিনীর সদস্য ২০২১ সালের ডিসেম্বরে দক্ষিণ ভারতে একই রকম হেলিকপ্টার দুর্ঘটনায় মারা গেছেন।
৬৩ বছর বয়সী চিফ অব ডিফেন্স স্টাফ দক্ষিণাঞ্চলীয় রাজ্য তামিলনাড়ুর ডিফেন্স সার্ভিসেস স্টাফ কলেজে একটি বক্তব্য দিতে যাচ্ছিলেন। যখন এমআই-১৭ ভি৫ হেলিকপ্টারটি একটি পাহাড়ি এলাকায় অবতরণের ঠিক আগে দুর্ভাগ্যজনকভাবে বিধ্বস্ত হয়ে বিস্ফোরিত হয়ে আগুনে ধরে যায়।
আরও পড়ুন: নবাবগঞ্জে হেলিকপ্টার বিধ্বস্ত: পাইলটের মৃত্যু
হেলিকপ্টার বিধ্বস্ত: ভারতের সেনা সর্বাধিনায়কসহ ১৩ জন নিহত
ইমরান খানকে অযোগ্য ঘোষণা করল পাকিস্তানের নির্বাচন কমিশন
পাকিস্তানের জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানকে অযোগ্য ঘোষণা করেছে দেশটির নির্বাচন কমিশন।
একই সঙ্গে তার বিরুদ্ধে দেশে দীর্ঘস্থায়ী রাজনৈতিক অস্থিরতা আরও গভীর করার পদক্ষেপে জড়িত ও সম্পদ গোপন করার অভিযোগ তোলা হয়েছে।
ইমরান খানের মুখপাত্র ফাওয়াদ চৌধুরী সাংবাদিকদের বলেছেন যে পাকিস্তানের নির্বাচন কমিশন রাজধানী ইসলামাবাদে বহু প্রতীক্ষিত রায় ঘোষণা করেছে। চৌধুরী এই পদক্ষেপের নিন্দা করেন।
আইন বিশেষজ্ঞদের মতে, নির্বাচন কমিশনের রায়ে খান জাতীয় পরিষদে তার আসন হারাবেন।
সংসদ অনাস্থা ভোটের মাধ্যমে খানকে ক্ষমতাচ্যুত করার কয়েক মাস পর সর্বশেষ সিদ্ধান্তটি আসলো।
আরও পড়ুন: ইমরান খানের ওপর চাপ বাড়াচ্ছে পাকিস্তান সরকার
ইমরান খানের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসবাদের অভিযোগ পুলিশের
নির্বাচন দিতে সরকারকে ৬ দিনের আল্টিমেটাম ইমরান খানের
বিশ্বে করোনায় আক্রান্ত ৬৩ কোটি ২০ লাখ ছাড়িয়েছে
বিশ্বব্যাপী করোনাভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা ৬৩ কোটি ২০ লাখ অতিক্রম করেছে।
সর্বশেষ বৈশ্বিক পরিসংখ্যান অনুসারে শুক্রবার সকাল পর্যন্ত বিশ্বব্যাপী করোনায় মোট আক্রান্তের সংখ্যা ৬৩ কোটি ২০ লাখ ৪৬ হাজার ৫৫৫ জনে পৌঁছেছে। এছাড়া এ ভাইরাসে মৃতের সংখ্যা ৬৫ লাখ ৭৯ হাজার ৭৬৮ জনে দাঁড়িয়েছে।
করোনায় সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত দেশ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে এখন পর্যন্ত শনাক্তের সংখ্যা ৯ কোটি ৯০ লাখ ৩৭ হাজার ৪৩৯ জন এবং মোট মৃত্যুবরণ করেছে ১০ লাখ ৯২ হাজার ৪০৯ জন।
বাংলাদেশের প্রতিবেশি দেশ ভারতে শুক্রবার পর্যন্ত মোট শনাক্ত হয়েছে চার কোটি ৪৬ লাখ ৩৮ হাজার ১১ জন এবং একই সময়ে মৃত্যুর সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে পাঁচ লাখ ২৮ হাজার ৯৪৩ জনে।
বাংলাদেশ পরিস্থিতি
বৃহস্পতিবার স্বাস্থ্য অধিদপ্তর এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছে, দেশে গত ২৪ ঘণ্টায় করোনায় আক্রান্ত হয়ে একজন মারা গেছেন। এ সময়ে নতুন করে ২৪৩ জনের শরীরে এই ভাইরাস শনাক্ত হয়েছে।
এ নিয়ে দেশে করোনায় মৃতের সংখ্যা ২৯ হাজার ৪১১ জন এবং শনাক্তের সংখ্যা ২০ লাখ ৩৩ হাজার ৬৬২ জনে পৌঁছেছে।
বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, গত ২৪ ঘণ্টায় চার হাজার ১৭৪ জনের নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে।
এ সময়ে শনাক্তের হার পাঁচ দশমিক ৮২ শতাংশ। মোট পরীক্ষায় এ পর্যন্ত শনাক্তের হার ১৩ দশমিক ৫৯ শতাংশ।
শনাক্ত বিবেচনায় মোট মৃত্যুর হার এক দশমিক ৪৫ শতাংশ।
এদিকে গত ২৪ ঘণ্টায় করোনা থেকে সুস্থ হয়েছেন আরও ৪৬৮ জন। এ নিয়ে দেশে মোট সুস্থ ব্যক্তির সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১৯ লাখ ৭৬ হাজার ২৮৫ জনে।
শনাক্ত বিবেচনায় সুস্থতার হার ৯৭ দশমিক ১৮ শতাংশ।
চাদে সরকারবিরোধী বিক্ষোভে নিহত ৬০
চাদের নিরাপত্তা বাহিনী দেশটির দুটি বড় শহরে বৃহস্পতিবার সরকারবিরোধী বিক্ষোভকারীদের ওপর গুলি চালালে অন্তত ৬০ জন নিহত হয়। বিষয়টি সরকারের এক মুখপাত্র ও মর্গের একজন কর্মকর্তা জানিয়েছেন।
মধ্য আফ্রিকার দেশটিতে অন্তর্বর্তী নেতা মহামত ইদ্রিস দেবির ক্ষমতার দুই বছরের মেয়াদ বৃদ্ধির বিরুদ্ধে বিক্ষোভের ফলে সৃষ্ট এই সহিংসতার পরে কর্তৃপক্ষ কারফিউ জারি করে।
চাদ সরকারের মুখপাত্র আজিজ মহামত সালেহ বলেন, রাজধানী এনজামেনায় ৩০ জন নিহত হয়েছেন। যদিও বিক্ষোভকারীদের দাবি, এই সংখ্যা ৪০ হবে।
শহরের মর্গের একজন কর্মকর্তা জানান, চাদের দ্বিতীয় বৃহত্তম শহর মাউন্ডুতে আরও ৩২ জন বিক্ষোভকারী নিহত হন। বিষয়টির সংবেদনশীলতার কারণে নাম প্রকাশ না করার শর্তে এই কর্মকর্তা বলেন, ৬০ জনেরও বেশি মানুষ আহত হয়েছেন।
আরও পড়ুন: শ্রীলঙ্কায় কারফিউ উপেক্ষা করে সরকারবিরোধী বিক্ষোভ অব্যাহত
অন্যান্য বিক্ষোভ দেশটির ডোবা ও সারাহ শহরে সংঘটিত হয়।
তিন দশকেরও বেশি সময় ক্ষমতায় থাকার পর দেবির বাবার হত্যাকাণ্ডের পর তিনি গত বছর দায়িত্ব নেন। সেসময় থেকে এটিই হচ্ছে বড় আকারের মারাত্মক সরকারবিরোধী বিক্ষোভ।
কর্মকর্তারা বলেন, প্রয়াত প্রেসিডেন্ট ইদ্রিস দেবি ইতনো ২০২১ সালের এপ্রিলে দেশটির উত্তরাঞ্চলে যুদ্ধক্ষেত্রে চাদ সেনাদের সঙ্গে দেখা করার সময় বিদ্রোহীদের হাতে নিহত হন।
এনজামেনার প্রধান হাসপাতালে, বন্দুকের গুলিতে আহত অনেক ব্যক্তিকে চিকিৎসা দিতে হিমিশিম খেয়েছেন। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানন, আহতদের মধ্যে কয়েকজনকে সেনাবাহিনীর গাড়িতে করে লিবার্টি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে এবং তাদের ওপর নির্যাতনের চিহ্ন রয়েছে।
আরও পড়ুন: কাজাখস্তানে সরকারবিরোধী বিক্ষোভে নিহত ১৬৪
প্রত্যক্ষদর্শীরা আরও বলেন, বিক্ষোভকারীরা এনজামেনার রাজধানী জুড়ে বৃহস্পতিবার দিবাগত মধ্যরাত ৩ টার দিকে জড়ো হতে থাকে। পুলিশ ভিড় লক্ষ্য করে কাঁদানে গ্যাস ছুড়লেও বিক্ষোভকারীরা এগিয়ে আসতে থাকে এবং তাদের সংখ্যা বাড়তে থাকে। তখনই নিরাপত্তা বাহিনী গুলি চালায়, বিক্ষোভকারীরা কাঁদানে গ্যাসের মধ্যে ঘটনাস্থল থেকে মৃতদের জড়ো করতে লড়াই করে।
নিহতদের মধ্যে একজন চাদ সাংবাদিক নার্সিস ওরেজে আছেন। যিনি সিইএফওড রেডিওতে কাজ করতেন এবং এক বুলেট আঘাতে তার মৃত্যু হয়।
আরও পড়ুন: শ্রীলঙ্কায় সরকারবিরোধী বিক্ষোভে পুলিশের গুলিতে নিহত ১, আহত ১৩
পদত্যাগ করার ঘোষণায় যা বললেন ট্রাস
ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী লিজ ট্রাস পদত্যাগের ঘোষণা দিতে ডাউনিং স্ট্রিটের বাইরে বক্তব্য দিয়েছেন।
আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম বিবিসি জানিয়েছে, প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব নেয়ার মাত্র ৪৫ দিন পর লিজ ট্রাস ঘোষণা করেছেন যে তিনি আগামী সপ্তাহের মধ্যে কনজারভেটিভ পার্টির নেতৃত্বের নির্বাচনের জন্য পদত্যাগ করছেন।
এখানে তার সম্পূর্ণ বক্তব্য তুলে ধরা হলো-
বক্তব্যে তিনি বলেন, ‘আমি একটি বড় অর্থনৈতিক এবং আন্তর্জাতিক অস্থিরতার সময়ে প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব নিয়েছি। যেসময় পরিবার এবং ব্যবসাগুলো কীভাবে তাদের বিল পরিশোধ করবে তা নিয়ে চিন্তিত ছিল।’
তিনি বলেন, ‘ইউক্রেনে পুতিনের অবৈধ যুদ্ধ আমাদের সমগ্র মহাদেশের নিরাপত্তাকে হুমকির মুখে ফেলেছে এবং নিম্ন অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির কারণে আমাদের দেশকে অনেক দিন ধরে আটকে রাখা হয়েছে।’
আরও পড়ুন: পদত্যাগ করলেন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী লিজ ট্রাস
লিজ ট্রাস বলেন ‘আমি কনজারভেটিভ পার্টি থেকে এটি পরিবর্তন করার ম্যান্ডেট নিয়ে নির্বাচিত হয়েছি। আমরা জ্বালানি বিল দিতে জাতীয় বীমা কেটেছি এবং আমরা একটি স্বল্প কর নির্ভর উচ্চ প্রবৃদ্ধির অর্থনীতির জন্য একটি দৃষ্টিভঙ্গি নির্ধারণ করেছি যা ব্রেক্সিটের স্বাধীনতার সদ্ব্যবহার করবে।’
তিনি বলেন, ‘আমি স্বীকার করি, যদিও পরিস্থিতির পরিপ্রেক্ষিতে আমি যে ম্যান্ডেটের ভিত্তিতে কনজারভেটিভ পার্টি থেকে নির্বাচিত হয়েছি তা আমি পূরণ করতে পারব না। আমি তাই মহামান্য রাজার সঙ্গে কথা বলেছি। তাকে জানিয়েছি যে আমি কনজারভেটিভ পার্টির নেতা হিসাবে পদত্যাগ করছি।’
পদত্যাগী ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আজ সকালে আমি ১৯২২ কমিটির চেয়ারম্যান স্যার গ্রাহাম ব্র্যাডির সঙ্গে দেখা করেছি। আমরা একমত হয়েছি যে আগামী সপ্তাহের মধ্যে একটি নেতৃত্ব নির্বাচন সম্পন্ন হবে।’
তিনি বলেন, ‘এটি নিশ্চিত করবে যে আমরা আমাদের আর্থিক পরিকল্পনাগুলো সরবরাহ করার এবং আমাদের দেশের অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা এবং জাতীয় নিরাপত্তা বজায় রাখার পথে রয়েছি।’
লিজ ট্রাস আরও বলেন, ‘উত্তরসূরি নির্বাচন না করা পর্যন্ত আমি প্রধানমন্ত্রী হিসেবে থাকব। ধন্যবাদ। ‘
আরও পড়ুন: কনজারভেটিভ পার্টির নবনির্বাচিত নেতা লিজ ট্রাসকে প্রধানমন্ত্রীর শুভেচ্ছা
কনজারভেটিভ পার্টির নেতা লিজ ট্রাস যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী হচ্ছেন
পদত্যাগ করলেন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী লিজ ট্রাস
ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী লিজ ট্রাস বৃহস্পতিবার পদত্যাগ করেছেন। ক্ষমতা গ্রহনের পর টালমাটাল অবস্থায় মাত্র ছয় সপ্তাহ পার করার পরই তিনি পদত্যাগ করলেন। তার আর্থিক নীতিগুলোর জন্য নিজ দলে বিরোধীতার কারণে এই পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়। ফলে তার কর্তৃত্ব বিলুপ্ত হয়।
তিনি বলেন, ‘আমি যে ম্যান্ডেট নিয়ে নির্বাচিত হয়েছি তা আমি দিতে পূরণ করতে পারব না।’
মাত্র একদিন আগে ট্রাস ক্ষমতায় থাকার প্রতিশ্রুতি দিয়ে বলেছিলেন যে তিনি ‘একজন যোদ্ধা এবং পদত্যাগকারী নন।’ কিন্তু ট্রাস তার দৃঢ়তা আর ধরে রাখতে পারলেন না।
সমালোচনার বন্ধ করে তার সরকার ছেড়ে যাওয়া একজন সিনিয়র মন্ত্রীকে ধরে রাখতে পারেননি। ফলে হাউস অব কমন্সে একটি ভোট বিশৃঙ্খলা ও ক্ষোভের সৃষ্টি হয়। তার কয়েকদিন পরেই তাকে তার অনেক অর্থনৈতিক নীতি পরিত্যাগ করতে বাধ্য করা হয়েছিল।
আরও পড়ুন: পদত্যাগ করার ঘোষণায় যা বললেন ট্রাস
তার প্রস্থান একটি বিভক্ত কনজারভেটিভ পার্টিকে এমন একজন নেতা খুঁজছে যে তার দলের বিভক্তিকে একত্রিত করতে পারে।
এর আগে রক্ষণশীল আইন প্রণেতা সাইমন হোয়ারে বলেছিলেন যে সরকার বিশৃঙ্খলার মধ্যে রয়েছে।
তিনি বৃহস্পতিবার বিবিসিকে বলেছেন, ‘কারও রুট প্ল্যান নেই। এটি প্রতিদিনের ভিত্তিতে হাতে হাতে লড়াইয়ের মতো।’
তিনি বলেন, পরিস্থিতি পরিবর্তনের জন্য ট্রাসের হাতে ‘প্রায় ১২ ঘন্টা’ সময় ছিল।
ট্রাস তার ১০ ডাউনিং স্ট্রিট অফিসে গ্রাহাম ব্র্যাডির সঙ্গে তড়িঘড়ি করে একটি বৈঠক করেছিলেন। যিনি একজন সিনিয়র কনজারভেটিভ আইন প্রণেতা ও নেতৃত্বের চ্যালেঞ্জগুলো তদারকি করেন। প্রধানমন্ত্রীর প্রতি এখনও সংসদের টোরি সদস্যদের সমর্থন আছে কিনা তা মূল্যায়ন করার দায়িত্ব দেয়া হয়েছিল ব্র্যাডিকে। দৃশ্যত মনে হয় তিনি তা করেননি।
বৃহস্পতিবার পার্লামেন্টের বেশিরভাগ কনজারভেটিভ সদস্য তাকে পদত্যাগ করে বিশৃঙ্খলার অবসানের আহ্বান জানিয়েছিলেন।
দলটি কয়েক মাস আগে সাবেক ট্রেজারি প্রধান ঋষি সুনাককে ট্রাসের পরাজিত করার রেসের মতো আরেকটি বিভক্ত নেতৃত্বের প্রতিযোগিতা এড়াতে আগ্রহী।
আগামী ২০২৪ সালের আগে কোনও জাতীয় নির্বাচন হবে না।
ব্র্যাভারম্যানকে স্বরাষ্ট্র সচিব হিসাবে প্রতিস্থাপন করা হয়েছিল। অভিবাসন এবং আইনশৃঙ্খলার জন্য দায়ী মন্ত্রী, সাবেক ক্যাবিনেট মন্ত্রী গ্রান্ট শাপস, তার পরাজিত প্রতিদ্বন্দ্বী সুনাকের একজন উচ্চ-পর্যায়ের সমর্থক।
২৩ সেপ্টেম্বর অর্থনৈতিক প্যাকেজ উন্মোচনের পর শুক্রবার ট্রাস তার ট্রেজারি প্রধান কোয়াসি কোয়ার্টেংকে বরখাস্ত করার কয়েকদিন পরে নাটকীয় ঘটনা ঘটেছিল।
আরও পড়ুন: কনজারভেটিভ পার্টির নবনির্বাচিত নেতা লিজ ট্রাসকে প্রধানমন্ত্রীর শুভেচ্ছা
পদত্যাগ করলেন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী লিজ ট্রাস