লাইফস্টাইল
বান্দরবান ট্যুর গাইড: সেরা দর্শনীয় স্থানসমূহ
বান্দরবান বাংলাদেশের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলের বিভাগীয় শহর চট্টগ্রাম থেকে প্রায় ৭৭ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত। এর বিশেষত্ব শুধু পার্বত্য চট্টগ্রাম একটি জেলা হিসেবেই নয়, বাংলাদেশের সেরা দর্শনীয় স্থানগুলোর জেলা হিসেবেও বান্দরবান জনপ্রিয়। এখানকার প্রাকৃতিক ঐশ্বর্যের মধ্যে সবচেয়ে বেশি নজর কাঁড়ে এর সবুজে ঢাকা পাহাড়, উন্মত্ত জলপ্রপাত এবং ক্ষুদ্র-নৃ গোষ্ঠীর মানুষগুলো। এই অভিজ্ঞতাগুলো পেতে হলে জানতে হবে কীভাবে এই সৌন্দর্য্যকে আলিঙ্গন করা যায়। বার জেনে নিন বান্দরবান ভ্রমণের খুঁটিনাটি সম্পর্কে।
বান্দরবানের সেরা ১০ দর্শনীয় স্থান
নীলাচল, বান্দরবান সদর
নীলাচল বান্দরবান প্রধান শহর থেকে প্রায় ৭ কিলোমিটার দূরে টাইগারপাড়ায় সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে প্রায় ২০০০ ফুট উপরে অবস্থিত। নীলাচলের বাইরের দিকটা ছিন্নভিন্ন পাহাড় দ্বারা সজ্জিত হলেও ভেতরটা খুব প্রশান্ত। কোথাও বিস্তীর্ণ দিগন্তের ঢালে ঘোরাঘুরির রাস্তা, কোথাও পাহাড়ি পাড়া, আর তার সঙ্গে রূপালী নদী যেন শিল্পীর আঁকা ছবি। মেঘহীন আকাশে নীলাচল থেকে কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতের মনোরম দৃশ্য উপভোগ করতে পারেন পর্যটকরা।
শহর ছেড়ে চট্টগ্রামের পথে প্রায় তিন কিলোমিটার হেঁটে বাঁ দিকের ছোট্ট রাস্তাটি নীলাচলের পথ। এ পথে প্রায় দুই কিলোমিটার পাহাড়ে উঠতে হবে।
আরও পড়ুন: বর্ষাকালে বাংলাদেশের সেরা ১০টি ভ্রমণ স্থান
নীলগিরি, থানচি
সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে প্রায় ৪০০০ ফুট উপরে অবস্থিত নীলগিরি বাংলাদেশের অন্যতম একটি উঁচু শৃঙ্গ। পুরো এলাকাটি মেঘে ঢেকে থাকার কারণে দর্শনার্থীরা নীলগিরিকে মেঘের দেশ বলে থাকেন। নীলগিরির সূর্যোদয়ের মুহূর্তটি আশ্চর্যজনক এবং কুয়াশাচ্ছন্ন শীতকালে এটি যেকোনো পর্যটককে চমকে দিতে পারে। মনোরম হেলিপ্যাড নীলগিরির সবচেয়ে আকর্ষণীয় জায়গাগুলোর একটি। পর্যটন এলাকাটির রক্ষণাবেক্ষণে নিযুক্ত আছে বাংলাদেশের আর্মি ব্রিগেড।
চিম্বুক পাহাড়, থানচি
বান্দরবান জেলা থেকে প্রায় ২৫ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত এটি বাংলাদেশের তৃতীয় বৃহত্তম পর্বত। চান্দের গাড়ি দিয়ে চিম্বুক ভ্রমণের সময় এর চারপাশের নয়নাভিরাম প্রকৃতির দৃশ্য দেখা যায়। দর্শনার্থীরা যখন এই জায়গা থেকে নিচের দিকে তাকায়, তারা মেঘের ভেলা দেখে অবাক হয়ে যায়।
বান্দরবান শহর থেকে পৌঁছাতে প্রায় দেড় ঘণ্টা সময় লাগে। সেক্ষেত্রে মনে রাখতে হবে বিকাল ৪টার পর চিম্বুক-থানচি রুটে কোনো যানবাহন চলবে না। তাই চিম্বুক পাহাড়ে যেতে হলে সেই সময়ের আগেই যেতে হবে। সাধারণত পর্যটকরা চিম্বুক, নীলগিরি, মিলনছড়ি, এবং শৈলোপ্রপাট ঝর্ণা একসাথে দেখার জন্য গাড়ি ভাড়া করে।
আরও পড়ুন: ইন্দোনেশিয়া ভ্রমণ গাইড: দর্শনীয় স্থান সমূহ, খরচ
শৈলপ্রপাত ঝর্ণা, থানচি
মিলনছড়ির এই জলপ্রপাতটি থানচি থানা থেকে মাত্র কয়েক কিলোমিটার দূরে। এর অত্যন্ত ঠান্ডা এবং স্বচ্ছ পানিতে প্রচুর পাথর দেখা যায়। ঝর্ণাটি স্থানীয়দের জন্য বিশুদ্ধ পানির একটি বড় উৎস। জলপ্রপাতের বাইরে একটি বাজারও রয়েছে যেখানে পর্যটকরা তাঁত পণ্য এবং স্থানীয় খাদ্য সামগ্রী কিনতে পারেন। এখান থেকে স্থানীয় জনগোষ্ঠীর সংগ্রামী জীবন গভীরভাবে অবলোকন করা যায়।
বান্দরবানের অন্যতম আকর্ষণ চিম্বুক পাহাড় ও নীলগিরির পথের মাঝেই পড়ে শৈলপ্রপাত। তাই নীলগিরি ভ্রমণের গাড়ি মাঝ পথে থামিয়ে এই ঝর্ণা দেখে নেয়া যায়।
বগা লেক, রুমা
বিস্ময়কর এই নীল পানির লেকটির সৌন্দর্য দেখতে প্রতি বছর প্রচুর পর্যটক এখানে আসেন। বর্ষাকালে রাস্তার বেহাল দশার কারণে বগা লেকে যাওয়া বেশ কষ্টকর হয়ে যায়। শীতের মৌসুমে পর্যটকরা ক্যাম্প ফায়ার করতে পারেন, যা নিঃসন্দেহে একটি দারুণ স্মৃতি।
আরও পড়ুন: সিলেট শহরের দর্শনীয় স্থান: অতুলনীয় প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে সমৃদ্ধ ঐতিহাসিক নগরী
বান্দরবান থেকে রুমা বাজারের দূরত্ব ৪৮ কিলোমিটার। আর রুমা বাজার থেকে বগা লেক পর্যন্ত ১৭ কিলোমিটারের পথ। বর্ষার সময় গাড়ি সরাসরি বগা লেক পর্যন্ত যায় না। তাই নতুন পর্যটকদের বগা লেক পর্যন্ত হেঁটে যাওয়া জন্য প্রস্তুত থাকতে হবে।
স্বর্ণ মন্দির, বান্দরবান সদর
এই বৌদ্ধ মন্দিরটির আসল নাম বুদ্ধ ধাতু জাদি মন্দির, যেটি বান্দরবানের সেরা দর্শনীয় স্থানসমূহের একটি। মায়ানমারের কারিগরদের কাঠের তৈরি এই অনন্য মন্দিরে বাংলাদেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম বুদ্ধমূর্তি রয়েছে। মন্দিরটি সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে প্রায় ৬০০ ফুট উচ্চতায় অবস্থিত।
এই স্বর্ণ মন্দিরে যেতে হলে অবশ্যই সকাল সাড়ে ৮টা থেকে বেলা সাড়ে ১১টার মধ্যে যেতে হবে। আর সকালে যেতে না চাইলে দুপুর পৌনে ১টা থেকে সন্ধ্যা ৬টার মধ্যে যেতে হবে। ২০ টাকা প্রবেশ ফি দিয়ে মন্দিরটিতে প্রবেশ করে দর্শনার্থীরা এর স্থাপত্য এবং চারপাশের প্রাকৃতিক দৃশ্য উপভোগ করতে পারেন।
আরও পড়ুন: হিমাচল, জম্মু-কাশ্মীর ও লাদাখ ভ্রমণ: দর্শনীয় স্থান ও খরচ
তিন্দু, থানচি
বাংলাদেশের নায়াগ্রা নামে পরিচিত তিন্দুর পাশ দিয়ে বয়ে গেছে পাহাড়ি নদী সাঙ্গু। পাহাড়, মেঘ, নদী, জলপ্রপাত, রহস্য, রোমাঞ্চ সবই এখানে পাওয়া যায়, তাই তিন্দু অ্যাডভেঞ্চার প্রিয় ভ্রমণকারীদের জন্য অন্যতম প্রিয় আকর্ষণ।
বান্দরবান থেকে থানচি উপজেলার দূরত্ব প্রায় ৭৯ কিলোমিটার। বান্দরবান থেকে থানচি যাওয়ার পথে মিলনছড়ি, চিম্বুক, নীলগিরি পড়ে। এই দীর্ঘ পথে চারপাশের সুন্দর প্রকৃতি দেখতে দেখতে চোখ ও মন দুটোই সতেজ হয়ে যায়। থানচি ঘাট থেকে ছোট ইঞ্জিনের নৌকা ভাড়া করে প্রায় দুই ঘণ্টায় থানচি থেকে তিন্দু পৌঁছানো যায়। এ সময় যাত্রাপথে সাঙ্গু নদীর মনোমুগ্ধকর রূপের অভিজ্ঞতা নেয়া যায়।
কেওক্রাডং, রুমা
সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে প্রায় তিন হাজার ১৭২ ফুট উঁচু এই পর্বতটি রুমা সদর থেকে প্রায় ৩০ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত। ছোট-বড় পাহাড়-পর্বতের সমন্বয়ে প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে ভরপুর এই দুর্গম এলাকা। কেওক্রাডং বাংলাদেশ ও মায়ানমার সীমান্তে অবস্থিত। সবুজ পাহাড়ের অপরূপ সৌন্দর্য, শীতল ঝর্ণা, আঁকাবাঁকা পথ, পাহাড়ি রাস্তার ধারে, পাহাড়ের চূড়ায় মেঘের লুকোচুরির খেলা; এই সব কিছু মিলে মনে নেশা ধরিয়ে দিবে।
আরও পড়ুন: ভ্রমণের উপকারিতা: দেশ বিদেশ ভ্রমণ আপনার মধ্যে কি পরিবর্তন আনতে পারে?
রুমা থেকে কেওক্রাডং যাওয়ার পথে মাঝে পড়বে দার্জিলিং পাড়া নামে একটি ক্ষুদ্র নৃ গোষ্ঠীদের গ্রাম। অনেক পর্যটকই যাত্রা বিরতি দিয়ে এই অপূর্ব গ্রামটিতে বিশ্রাম নেন।
জাদিপাই জলপ্রপাত, রুমা
কেওক্রাডং পাহাড় থেকে মাত্র দেড় কিলোমিটারের পথ জাদিপাই জলপ্রপাত। তিন হাজার ৬৫ ফুট উচ্চতায় অবস্থিত বান্দরবানের সর্বোচ্চ গ্রাম পাশিংপাড়া অতিক্রম করে জাদিপাইপাড়ার পথে উঠে গেছে খাড়া রাস্তা। পাশিংপাড়ার উপর থেকে জাদিপাই পাড়ার দিকে তাকালে মনে হবে সবুজের কোলে ঘুমিয়ে থাকা ছোট্ট গ্রাম। বর্ষায় এই রাস্তাটি বেশ ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে যায়। তাই বর্ষা-পরবর্তী মৌসুমে এখানে বেড়াতে আসাটা উত্তম।
জাদিপাই ঝর্ণায় যেতে হলে যেতে হবে বান্দরবানের রুমা উপজেলা থেকে বগালেকে এবং তারপর কেওক্রাডং পাহাড়ের চূড়ায়। কেওক্রাডং পাহাড় থেকে ১৫ থেকে ২০ মিনিটের দূরত্বে থাকা পাশিংপাড়ার খাড়া পথ ধরে ৪০ মিনিট হাটলেই জাদিপাই জলপ্রপাত পৌঁছানো যায়।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশের সেরা ১০টি প্রাকৃতিক ঝর্ণা, জলপ্রপাত কোথায়? কীভাবে যাবেন?
নাফাখুম, রেমাক্রি
নাফাখুমের খুমের মানে হচ্ছে জলপ্রপাত আর এটি বাংলাদেশের বৃহত্তম জলপ্রপাতগুলোর একটি। স্থানীয় লোকজন এটিকে রেমাক্রি জলপ্রপাত বলে থাকে। এখানে একবার ভ্রমণ করলে ভ্রমণকারীরা বারবার আসতে চায়। লোকেরা একে বাংলাদেশের নায়াগ্রা জলপ্রপাত বলে ব্যাখ্যা করে।
সাঙ্গু নদী থেকে নৌকা নিয়ে রেমোক্রি হয়ে নাফাখুমে যেতে হয়। এই যাত্রা পথে তিন্দু, রাজাপাথর এবং পদ্মঝিরিও দেখে নেয়া যায়। বর্ষাকালে নদীতে পানির প্রবাহের অনেক চাপ থাকায় অধিকাংশ ক্ষেত্রে নাফাখুম যাওয়ার জন্য কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে অনুমতি পাওয়া যায় না। অন্যদিকে শীতের মৌসুমে পানির স্তর অনেক নিচে থাকায় নৌকা নিয়ে যাওয়া যায় না। তদনুসারে, নাফাখুম ভ্রমণের সর্বোত্তম সময় বর্ষাকালের পরে এবং শীত মৌসুম শুরু হওয়ার আগে।
ঢাকা থেকে বান্দরবানের দর্শনীয় স্থানগুলোতে যাওয়ার উপায়
প্রথমেই বান্দরবান যাওয়ার জন্য ঢাকা থেকে সরাসরি শুধুমাত্র বাস আছে। তবে চট্টগ্রামে সরাসরি যাওয়ার ক্ষেত্রে বিমান, ট্রেন, বাস; তিনটির যে কোনটি ব্যবহার করা যেতে পারে। অতঃপর চট্টগ্রাম থেকে লোকাল বাসে করে বান্দরবান। এবার বান্দরবান থেকে উপরোক্ত দর্শনীয় জায়গাগুলো ভ্রমণের জন্য আছে লোকাল বাস, সিএনজি চালিত অটোরিকশা, জিপ এবং চান্দের গাড়ি।
আরও পড়ুন: ঘুরে আসুন মালদ্বীপ: অপরূপ এক দ্বীপদেশ ভ্রমণ গাইড
তিন জনের টিম হলে সাধারণত সবাই বড় গ্রুপগুলোর সঙ্গে একসাথে হয়ে চান্দের গাড়িতে ভ্রমণ করে। এই গাড়িগুলো সকাল ৮টা থেকে বিকাল ৪টা পর্যন্ত পাওয়া যায়। এই জায়গাগুলো ভ্রমণের একটি প্রয়োজনীয় ব্যাপার হচ্ছে- এ জায়গাগুলোতে গাইড অবশ্যই নিতে হয়। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো উপজেলা প্রশাসন থেকে ভ্রমণের অনুমতি নিতে হয়। গাইডরা ভ্রমণের যান ঠিক করা থেকে শুরু করে এই অনুমতি নেয়ার যাবতীয় কাজ সমাধা করে দেয়।
এছাড়া বান্দরবানের সেরা দর্শনীয় স্থানসমূহ ভ্রমণে যে বিষয়ে সতর্ক থাকতে হবে সেটি হচ্ছে- আর্মিদের চেকিংয়ের সুবিধার্তে সঙ্গে সব ধরনের পরিচয়পত্র থাকা বাঞ্ছনীয়। গাইড নেয়ার সময় অবশ্যই সরকার কর্তৃক নিবন্ধিত গাইড সমিতি থেকে গাইড ভাড়া করা উচিত। বিকাল ৪টার পর আর্মি ক্যাম্প থেকে আর অনুমতি মেলে না। একই সঙ্গে যানবাহন পাওয়ারও কোনো উপায় থাকে না। তাই পুরো যাত্রাটি অনেক সতর্কতার সঙ্গে পরিকল্পনা করা উচিত। বর্ষাকালে বান্দরবানকে অধিক সুন্দর দেখালেও এই সময় জায়গাগুলোর বিপজ্জনক অবস্থার কথাও মাথায় রাখতে হবে।
আরও পড়ুন: ঢাকার কাছেই প্রকৃতির মাঝে ক্যাম্পিং সাইট
ইউনাইটেড হসপিটালে হেপাটাইটিস দিবস পালিত
সারা বিশ্বে ২৮ জুলাই বিশ্ব হেপাটাইটিস দিবস পালিত হয়। এবছর এই দিবসের প্রতিপাদ্য হচ্ছে- হেপাটাইটিস নির্মূলের এখনই সময়।
বিশ্বে প্রায় ৩৩ কোটি মানুষ হেপাটাইটিস বি এবং সি ভাইরাসে আক্রান্ত। প্রতি ১০ জনের ৯ জন জানেনই না,তারা হেপাটাইটিস বি বা সি ভাইরাসে আক্রান্ত। এছাড়া হেপাটাইটিসে আক্রান্ত হয়ে প্রতি ৩০ সেকেন্ডে একজন মারা যাচ্ছেন। লিভার ক্যানসার ও সিরোসিসের প্রধান কারণ হচ্ছে হেপাটাইটিস বি ও সি ভাইরাস।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার তথ্য অনুযায়ী, বাংলাদেশে হেপাটাইটিস ‘বি’ ও ‘সি’ ভাইরাসে প্রায় এক কোটি মানুষ আক্রান্ত। বেসরকারি হিসাবে হেপাটাইটিসে প্রতি বছর ২০ হাজারের বেশি মানুষের মৃত্যু হয় দেশে। কাজেই এই রোগ থেকে বেঁচে থাকার সহজ উপায়গুলো প্রতিদিন মেনে চললে এই রোগ থেকে বেঁচে থাকা সম্ভব। এই জন্য জনসচেতনতা প্রয়োজন। আর জনসচেতনতার লক্ষ্যে হসপিটালে আগত রোগী বা তাদের পরিবারের সদস্যদের বিনামূল্যে স্বাস্থ্য পরীক্ষা করার জন্য, ইউনাইটেড হেলথকেয়ার সার্ভিসেস লিমিটেড (ইউএইচএসএল)- এর ডিরেক্টর মেডিকেল সার্ভিসেস ডা. মাহবুব উদ্দিন আহমেদ চিকিৎসক, নার্স ও অন্যান্য ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার উপস্থিতিতে হসপিটাল লবিতে একটি হেলথ চেক বুথ উদ্বোধন করেন।
এ সময় বক্তব্য রাখেন ইন্টারভেনশনাল গ্যাস্ট্রোএন্টেরোলজিস্ট এবং হেপাটোলজিস্ট, ইউনাইটেড গ্যাস্ট্রোলিভার সেন্টার এর ডিরেক্টর ডা. এ কিউ এম মোহসেন এবং সিনিয়র কনসাল্টেন্ট ডা. মাহবুব আলম। এ সময় বক্তারা ইউনাইটেড হসপিটালের এডভান্সড টেকনোলজি সম্পন্ন গ্যাস্ট্রোলিভার সেন্টার ও ইউনাইটেড হসপিটালের হেপাটাইটিস প্যাকেজ এবং সর্বাধুনিক প্রযুক্তির ক্যাপসুল এন্ডোসকপি সম্পর্কে সবাইকে অবহিত করেন। অনুষ্ঠানে হেপাটাইটিস দিবস নিয়ে জনসচেতনতার লক্ষ্যে বেশ কিছু দিক তুলে ধরেন।
উল্লেখ্য, বিশ্ব হেপাটাইটিস দিবস উপলক্ষে ইউনাইটেড হসপিটাল সপ্তাহব্যাপী সামাজিক সচেতনতামূলক কার্যক্রম পরিচালনা করছে, যার মধ্যে বিভিন্ন ক্লাবে ও কর্পোরেট হাউসে সচেতনতামূলক সেমিনার ও অনলাইন সেমিনার কার্যক্রম এবং বিভিন্ন টেলিভিশনে আলোচনা সভায় ইউনাইটেড হসপিটালের বিশেষজ্ঞ ডাক্তাররা উপস্থিতি ও পরামর্শ প্রদান করছেন।
আরও পড়ুন: ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালের অনুমতি পেলো বঙ্গভ্যাক্স
‘মাত্রাতিরিক্ত গ্যাস্ট্রিকের ওষুধ সেবনের ফলে ৪৫ শতাংশ গ্যাস্ট্রিক আলসার হয়’
বর্ষাকালে বাংলাদেশের সেরা ১০টি ভ্রমণ স্থান
অপূর্ব জলপ্রপাত ও পর্বতমালা থেকে শুরু করে মেঘাচ্ছন্ন আকাশের নিচে সমুদ্র সৈকত, ভ্রমণপিপাসুরা বাংলাদেশের প্রতিটি কোণায় খুঁজে পাবেন প্রকৃতির উদারতা। আর যদি বর্ষাকালে বাংলাদেশের সেরা ভ্রমণ স্থানগুলো খুঁজে বের করতে হয়, তাহলে বলতে হবে বর্ষাস্নাত বাংলাদেশ আরো বেশি মনোরম, মনোমুগ্ধকর এবং আবেদনময়ী। বৃষ্টির দিনে জানালা থেকে হাত বাড়িয়ে হালকা বৃষ্টির ফোঁটা অনুভব করা সর্বাঙ্গে নৈসর্গিক শিহরণ জাগায়। তবে জাদুকরী ঋতুটিকে পুরোপুরি উপভোগ করতে হলে পা ফেলতে হবে ঘরের বাইরে। চলুন, জেনে নেয়া যাক বর্ষণমুখর দিনে ভ্রমণের জন্য দারুণ কয়েকটি জায়গা সম্পর্কে।
বর্ষাকালে ভ্রমণের জন্য বাংলাদেশের সেরা ১০টি দর্শনীয় স্থান
রাতারগুল সোয়াম্প ফরেস্ট, সিলেট
সিলেট থেকে প্রায় ২৬ কিলোমিটার দূরে রাতারগুলের এই ডুবে যাওয়া বনে রয়েছে প্রায় ৭০-এর বেশি প্রজাতির গাছপালা এবং প্রাণী।
বর্ষাকালে ভারত থেকে অত্যধিক পানি নদী দিয়ে প্রবেশ করলে বনের সাথে যুক্ত গোয়াইন নদী প্লাবিত হয়। আর তখনি বনটি তার স্বর্গীয় সৌন্দর্য্যে জীবন্ত হয়ে ওঠে। বনের পুরোটাই পানির নিচে তলিয়ে যায় এবং গাছের ছাউনি ছাতার মতো বনকে ঢেকে দেয়। এ সময় নৌকায় করে নদী পেরোনোর সময় পাখির কিচিরমিচির ও পাতায় বৃষ্টির পানি পড়ার মৃদু শব্দের প্রতিধ্বনি শুনতে পাওয়া যায়।
সিলেট শহরের খাদিম চা বাগান ও খাদিমনগর জাতীয় উদ্যানের ভেতর দিয়ে অল্প সময়ে শ্রীঙ্গি ব্রিজ অথবা জাফলং গামী যে কোন গাড়িতে করে সারিঘাট হয়ে গোয়াইনঘাট বাজার। রাতারগুল জলাবন ঘোরার জন্য শ্রীঙ্গি ব্রিজ বা গোয়াইনঘাট বাজার থেকে ডিঙ্গি নৌকা ভাড়া পাওয়া যায়।
পড়ুন: ভ্রমণের উপকারিতা: দেশ বিদেশ ভ্রমণ আপনার মধ্যে কি পরিবর্তন আনতে পারে?
টাঙ্গুয়ার হাওর, সুনামগঞ্জ
বর্ষাকালে শুধু সূর্যাস্ত এবং সূর্যোদয়ের সেই আদিম প্রাকৃতিক দৃশ্যই নয়; একটি হাওরের আরও অনেক কিছু দেয়ার আছে। পূর্ণিমার রূপালী মোহাবিষ্ট নৌকার ছাদে কাটানো একটি রাতের কথা কল্পনাতেও ভালো লাগা ছড়িয়ে দেয়। বৃষ্টির পর ত্বকে চাঁদের আলো মেখে আকাশের বিশালতার নীচে শুয়ে থাকার অনুভূতি অতুলনীয়। আর হাওরের গভীরে ঢুকতে শুরু করলে আপনার যান্ত্রিক জীবনের সমস্ত তাড়াহুড়ো জলের গুঞ্জনের মাঝে নিমেষেই হারিয়ে যাবে।
সুনামগঞ্জ থেকে সুরমা নদীর উপর বড় ব্রীজটির কাছেই পাওয়া যায় তাহিরপুরের গাড়ি। আর তাহিরপুরের নৌকা ঘাটে অপেক্ষা করে টাঙ্গুয়ার হাওর বেড়ানোর নৌকা।
পড়ুন: সিলেট শহরের দর্শনীয় স্থান: অতুলনীয় প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে সমৃদ্ধ ঐতিহাসিক নগরী
বিছানাকান্দি, সিলেট
রাতারগুল সোয়াম্প ফরেস্টের মতো সিলেটের বিছানাকান্দিতেও বর্ষা মৌসুমে ফুল ফোটে। মেঘালয়ের সেভেন সিস্টার থেকে নেমে আসা স্রোত বিছানাকান্দিকে পাহাড়, জলপ্রপাত এবং নদীর মিলনে পরিণত করে। এই জায়গাটির বিশেষত্ব হল এর মনোরম খাসিয়া পর্বতগুলো। সেগুলো এতই উঁচু যে মাঝে মাঝে পাহাড়ের চূড়া ছুঁয়ে মেঘ দেখতে পাওয়া যায়। বর্ষায় পানির বিশাল স্রোত ঝরনা হয়ে হ্রদ তৈরি করে পিয়াইন নদীর সাথে সংযুক্ত হয় যার দৃশ্য সত্যিকার অর্থে নেশা ধরিয়ে দেয় যখন।
বিছানাকান্দি ভ্রমণে প্রথমে সিলেটের আম্বরখানা থেকে হাদারপার যেতে হবে। এখানকার নৌকা ঘাটের নৌকাগুলোই বিছানাকান্দি নিয়ে যায়। তবে জায়গাটি ষোল আনা উপভোগ করতে সবাই বিছানাকান্দি ও পান্থুমাইয়ের জন্য একত্রে নৌকা ভাড়া করে নেয়।
পড়ুন: ঢাকার কাছেই প্রকৃতির মাঝে ক্যাম্পিং সাইট
সুন্দরবনের ম্যানগ্রোভ বন, খুলনা
বিশ্বের বৃহত্তম ম্যানগ্রোভ বন এবং একটি ইউনেস্কো ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ সাইট হওয়ায় প্রতিটি প্রকৃতিপ্রেমি নিজেকে হারিয়ে ফেলতে চান প্রাকৃতিক সৌন্দর্য্যের এই অপার প্রাচুর্যে। সবুজের সতেজতায় ভিজিয়ে রাখা ছাড়াও সুন্দরবন ছোট ছোট দ্বীপে পরিপূর্ণ যেগুলো সারা দিন উপভোগ করা যায়, বিশেষ করে সূর্যাস্তের সময়। ঘন বনের মধ্য দিয়ে হাঁটার ক্ষেত্রে হিরন পয়েন্ট, বা নীলকোমল, সুন্দরবনে ভ্রমণের জন্য সবচেয়ে জনপ্রিয় স্থান।
একটু সময়সাপেক্ষ হলেও, সুন্দরবন পৌছানোর জন্য স্টিমার হয়ে প্রথমে খুলনা যাত্রাটি গ্রামবাংলার মনোরম প্যানোরামার অনুভূতি দিবে। খুলনা থেকে সুন্দরবনে যাওয়ার একমাত্র মাধ্যম নৌ পরিবহন। এক্ষেত্রে বন পরিদর্শন করার জন্য একটি ব্যক্তিগত মোটর লঞ্চ বা স্পিডবোট ভাড়া করা যেতে পারে।
পড়ুন: ইন্দোনেশিয়া ভ্রমণ গাইড: দর্শনীয় স্থান সমূহ, খরচ
জাফলং, সিলেট
বাংলাদেশের এই সীমান্তবর্তী অঞ্চলের ওপারে আছে ভারতের ডাওকি। ডাওকি নদী পাহাড় থেকে জাফলং হয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করেছে। জাফলংয়ের বাংলাদেশ সীমান্তে দাঁড়িয়ে ভারতের সুউচ্চ পর্বতশ্রেণী দেখা যায়।
এসব পাহাড় থেকে নেমে আসা জলপ্রপাত এক মনোরম দৃশ্যের অবতারণা করে। এছাড়া ভারতের ডাউকি বন্দরের ঝুলন্ত সেতুও পর্যটকদের প্রধান আকর্ষণ। বর্ষার সময় ভারতীয় সীমান্তে ভারী বৃষ্টিপাতের ফলে সর্পিলাকার ডাওকি নদী যেন তার প্রাণশক্তি ফিরে পায়। ডাওকি নদীর পানির স্বচ্ছতাও জাফলংয়ের অন্যতম আকর্ষণ।
ঢাকা থেকে সিলেট পৌছার পর শহর থেকে বাসে বা সিএনজি অটোরিকশায় দুই ঘন্টার মধ্যেই জাফলং যাওয়া যায়।
পড়ুন: ঘুরে আসুন মালদ্বীপ: অপরূপ এক দ্বীপদেশ ভ্রমণ গাইড
কুয়াকাটা সমুদ্র সৈকত, পটুয়াখালি
বাংলাদেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের এই ১৮ কিলোমিটার দীর্ঘ সমুদ্র সৈকতটি পর্যটকদের কাছে সমুদ্র কন্যা নামে পরিচিত। এটি বাংলাদেশের একমাত্র সমুদ্র সৈকত যেখানে সূর্যোদয় এবং সূর্যাস্ত উভয়ই দেখা যায়।
এখানকার পর্যটকদের প্রধান আকর্ষণগুলো হচ্ছে ৩৬-ফুট লম্বা সোনার বৌদ্ধ মূর্তি, শুটকি পল্লী, ফাতরার চর, লাল কাঁকড়ার দ্বীপ এবং মনোমুগ্ধকর মায়ামী গঙ্গামতির চর। এছাড়া যে কুয়ার নামে এই শহরের নামকরণ সেই ঐতিহাসিক কুয়া দেখতেও ভ্রমণপিপাসুরা ভিড় জমান।
পূর্বে ঢাকা থেকে কুয়াকাটা যেতে প্রায় ১২ থেকে ১৩ ঘন্টা লাগলেও, পদ্মা সেতু হওয়ার পর এই সময়টা কমে নেমে এসেছে প্রায় ৫ ঘন্টায়। তাই এখন কুয়াকাটাকে আরো অভিজাত করে সাজানো হচ্ছে পর্যটকদের জন্য।
পড়ুন: হিমাচল, জম্মু-কাশ্মীর ও লাদাখ ভ্রমণ: দর্শনীয় স্থান ও খরচ
কক্সবাজার সমুদ্র সৈকত, কক্সবাজার
১২০ কিলোমিটার দীর্ঘ এই সমুদ্র সৈকতটি মুলত শীতকালে দর্শনার্থীতে পরিপূর্ণ থাকে। কিন্তু যারা এর বর্ষাকালের রূপ দেখেননি তারা জীবনে দারুণ কিছু থেকে বঞ্চিত হয়েছেন। সামনে অবিরাম নীল জলরাশির সাথে মেঘাচ্ছন্ন আকাশের মিথস্ক্রিয়ার কোন কিছুর সাথে তুলনা চলে না।
আর অবিরাম বর্ষণ ভেজা হাওয়ার পূর্ণতা দিয়ে এক অদ্ভূত মুগ্ধতা সৃষ্টি করে। স্নান, সূর্যস্নান, সাঁতার কাটা এবং সার্ফিংয়ের জন্য সমুদ্র সৈকতের নিজস্ব জনপ্রিয়তা রয়েছে। নিরালায় এই সুন্দরের স্বাদ নিতে অনেকেই এই অফপিক সময়টাকেই বেছে নেন।
ঢাকা থেকে সড়ক কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতে পৌছাতে সময় লাগে ১০ থেকে ১২ ঘন্টা, যেখানে আকাশপথে সময় লাগে মাত্র এক ঘণ্টা।
পড়ুন: বাংলাদেশের সেরা ১০টি প্রাকৃতিক ঝর্ণা, জলপ্রপাত কোথায়? কীভাবে যাবেন?
শ্রীমঙ্গল চা-বাগান, মৌলভীবাজার
বিপুল সংখ্যক চা বাগান এবং সাত রঙের চায়ের উৎপত্তির কারণে মৌলভীবাজারের এই উপজেলাটিকে বলা হয় বাংলাদেশের চায়ের রাজধানী। শ্রীমঙ্গলের প্রবেশ পথেই স্বাগত জানাবে সাতগাঁও চা-বাগানের সহায়তায় মৌলভীবাজার জেলা প্রশাসনের তৈরি চা-কন্যা ভাস্কর্য।
চা গবেষণা ইনস্টিটিউট (বিটিআরআই)-এর ভেতরে দক্ষিণ দিকে পড়বে ফিনলের চা-বাগান। ভানুগাছের পথ ধরে সামনে এগোলেই দেখা যাবে জেরিন টি-এস্টেট। তারপর লাউয়াছড়ার কিছু আগেই জঙ্গলঘেরা পথে হাটলে পাওয়া যাবে নূরজাহান টি-এস্টেটের।
শ্রীমঙ্গল থেকে প্রায় ১২ কিলোমিটার দূরে কমলগঞ্জ যাওয়ার পথে পড়বে লাউয়াছড়ার মনোরম উদ্যান। কমলগঞ্জ থেকে মাত্র ৫ কিলোমিটার দূরে পাহাড়ঘেরা চা-বাগানের মধ্যে চোখে পড়বে সুবিশাল মাধবপুর লেক। মাধবপুর লেক থেকে ধলাই সীমান্ত পর্যন্ত চলে যাওয়া পথের দুপাশে শুধুই চা-বাগান।
সিলেটের বিমান বন্দর, রেলওয়ে বা বাস ষ্টেশন থেকে ট্যাক্সি ভাড়া করে অনায়াসেই শ্রীমঙ্গল যাওয়া যাবে। গাড়ি রিজার্ভ করে চা-বাগানগুলো ঘুরে দেখা যেতে পারে।
পড়ুন: কলকাতা ভ্রমণ: দর্শনীয় স্থানে যাওয়ার উপায় ও খরচ
ভোলাগঞ্জ সাদা পাথর, সিলেট
ভোলাগঞ্জ সাদা পাথর সিলেটের উত্তর থেকে ৩৩ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত। প্রকৃতপক্ষে, এটি সিলেটের বৃহত্তম পাথর উত্তোলন স্থান। এই দর্শনীয় স্থানটির প্রধান আকর্ষণ হলো- মেঘালয়ের মেঘ, পাহাড়ী ঝরনা, এবং ধোলাইয়ের বালুকাময় উপকূল।
বর্ষার পাহাড়ি ঢলের সাথে নেমে আসা সাদা পাথরগুলো ধলাই নদের বুকে মিশে ভোলাগঞ্জের সৌন্দর্য্য বহুগুণ বাড়িয়ে দিয়েছে। তবে ভোলাগঞ্জ যাওয়ার সড়কের অবস্থা খুব একটা আরামদায়ক নয়। সিলেট সদরের যে কোন স্থান থেকে বাস, সিএনজি, লেগুনা বা প্রাইভেট কারে করে পৌছা যায় প্রায় ৩৫ কিলোমিটার দূরত্বের ভোলাগঞ্জে।
পড়ুন: সিলেট শহরের দর্শনীয় স্থান: অতুলনীয় প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে সমৃদ্ধ ঐতিহাসিক নগরী
নীলাচল, বান্দরবান
প্রাকৃতিক সৌন্দর্য এবং সুদূর সমুদ্রের স্পর্শ থেকে শুরু করে গাছপালা ও পাখির কিচিরমিচিরে পরিপূর্ণ এই প্রকল্পটি ২০০৬ সালের জানুয়ারিতে উদ্বোধন করা হয়েছিল। এই পর্যটন কেন্দ্রটি এত উচ্চতায় অবস্থিত যে, এর সৌন্দর্য আকাশের বিশালতাকেও হার মানায়।
নীলাচলে পর্যটকদের সুবিধার্থে ছোট-বড় অনেক রেস্ট হাউস রয়েছে। আর শিশুদের খেলার জন্যও রয়েছে আকর্ষণীয় ব্যবস্থা। নামের সঙ্গে মিল রেখে প্রতিটি বিশ্রামাগারের রংও করা হয়েছে নীল। বর্ষায় ভেজা প্রকৃতির মায়া বিমোহিত করবে বৃষ্টিভেজা সকালে। দূরের তাজা বন, আকাশে কালো মেঘ এবং দূর সৈকতের গর্জন সবকিছু মিলে প্রকৃতির এক অপূর্ব দৃশ্য তৈরি করে।
ঢাকা থেকে বাসে সরাসরি বান্দরবান যাওয়া যায় ১০ থেকে ১১ ঘন্টার মধ্যে। অতঃপর বান্দরবান থেকে নীলাচল যেতে সিএনজি ভাড়া নিতে হয় অথবা কোন গ্রুপের সাথে উঠে পড়তে হয় চান্দের গাড়ি বা জিপে।
পড়ুন: গরমকালে কম খরচে বাংলাদেশের কোথায় কোথায় ঘুরতে যাবেন?
পরিশিষ্ট
বর্ষাকালে বাংলাদেশের সেরা ভ্রমণ স্থানের মধ্যে এই ১০টি নদীমাতৃক দেশটির শুধুমাত্র একটি দিক পূরণ করবে। বৃষ্টির মৌসুমে পুরো বাংলাদেশটাই যেন সেজে উঠে আপন মায়ায়। নদীমাতৃক দেশ হওয়ায় জলজ সৌন্দর্য্যের পরশ পাওয়ার এটিই সর্বোত্তম সময়।
ভ্রমণ করার জন্য যে দর্শনীয় স্থানটিই বেছে নেবেন, তা আপনার বাকি জীবনকে প্রভাবিত করবে। তাই ভ্রমণের জন্য জায়গাটির সাথে সামঞ্জস্য উপযুক্ত সময়টাও একটা গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। তবে ঋতুটি পোকা-মাকড় ও রোগ-জীবাণু ছড়ানোর জন্যও অনুকূলে থাকে বিধায় নিরাপদের ভ্রমণের তাগিদেই ভ্রমণপিপাসুদের নিজের স্বাস্থ্যের প্রতি খেয়াল রাখা উচিত।
ভ্রমণের উপকারিতা: দেশ বিদেশ ভ্রমণ আপনার মধ্যে কি পরিবর্তন আনতে পারে?
ভ্রমণ মানে শুধু সৈকতের নয়নাভিরাম দৃশ্য চোখে নিয়ে প্রিয় পানীয়তে চুমুক দেওয়া নয়। নয় অস্ত যাওয়া সূর্যটাকে হা করে গিলে ফেলার ভঙ্গিমাকে ফ্রেমবন্দি করে ইনস্টাগ্রামে আপলোড করা। ভ্রমণের উপকারিতা তখনই অনুধাবন করা যায়, যখন জীবনের ঝক্কি-ঝামেলা পেছনে ফেলে প্রিয় গন্তব্যের উদ্দেশ্যে বেরিয়ে পড়া হয়। ঘুম থেকে ওঠা থেকে শুরু করে জীবনের ভারিক্কি মতবাদ নিয়ে জম্পেশ আড্ডার আমেজের রদ বদলটা ভ্রমণের ভূমিকা সরবে ঘোষণা করে। চলুন জেনে নেয়া যাক, দেশ বিদেশ ভ্রমণ একটা জীবনকে আমূল বদলে দিতে কতটুকু প্রভাব ফেলে।
জীবনের নানা ক্ষেত্রে ভ্রমণের উপকারিতা
মানসিক চাপ এবং উদ্বেগ থেকে মুক্তি
মাত্র তিন দিনের একটি স্বল্পমেয়াদী ছুটি যে কোন যান্ত্রিকতায় আবদ্ধ অনুভূতিকে স্বাধীনতা এবং সুস্থতায় রূপ দিতে ইতিবাচক এবং তাত্ক্ষণিক প্রভাব ফেলে। অধিকন্তু, বাড়িতে ফিরে আসার পরেও এই উপকারী প্রভাবগুলো বেশ কিছু দিন স্থায়ী হয়।
ব্যাপারটাকে চলন্ত বাসের গতি জড়তার সাথে তুলনা করা যেতে পারে। চলন্ত বাস আচমকা ব্রেক কষলে শরীরের উপরের অংশ স্বাভাবিকভাবেই সামনের দিকে হেলে পড়ে। এই প্রাকৃতিক কার্যকলাপটিই ঘটে ভ্রমণের সময়। নিত্য অস্থিরতা থেকে হঠাৎ দু-একদিনের ভ্রমণ স্থিরভাবে জীবনটাকে উপভোগ করতে দেয়। এ সময় সেই গতি জড়তাটা পুরোটাই কাটিয়ে উঠেন ভ্রমণকারি। এটি মানসিক প্রশান্তি বৃদ্ধির প্রভাবক হিসেবে কাজ করে।
পড়ুন: ইন্দোনেশিয়া ভ্রমণ গাইড: দর্শনীয় স্থান সমূহ, খরচ
সুস্বাস্থ্যের স্থায়ীত্ব
মনের পাশাপাশি ভ্রমণ দেহের সুস্থতার উপরও ইতিবাচক প্রভাব ফেলে। অবশ্য ভ্রমণের সময় ব্যক্তিগত পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা এবং স্বাস্থ্যকর খাবার খাওয়ার দিকে খেয়াল রাখতে হবে। তবে এ কথা অনস্বীকার্য যে, ভ্রমণ শারীরিক অনুশীলনে অভ্যস্ত হওয়ার একটি দুর্দান্ত সুযোগকে উন্মুক্ত করে। এর অর্থ হতে পারে সারাদিন ধরে শহরের চারপাশে হাঁটা বা কায়াকিং, হাইকিং এবং সাঁতার কাটা। ভ্রমণ হৃদরোগের ঝুঁকি কমায়।
গ্লোবাল কমিশন অন এজিং এবং ট্রান্সআমেরিকা সেন্টার ফর রিটায়ারমেন্ট স্টাডিজ একটি সমীক্ষা প্রকাশ করে। সেখানে দেখা যায়, যে পুরুষ এবং মহিলারা ছয় বছরে দুবার ভ্রমণ করেন, তাদের চেয়ে যারা এক বছরে দুবার ভ্রমণ করেন, তাদের হার্ট অ্যাটাক বা অন্য হৃদরোগে মারা যাওয়ার সম্ভাবনা কম থাকে।
অভিজ্ঞতার মাধ্যমে সৃজনশীলতা বৃদ্ধি
ভ্রমণের ফলে সৃষ্ট অভিজ্ঞতাগুলো শুধুই স্মৃতির অবতারণা করে না। মস্তিষ্ককে সদা সচেতন রাখার মাধ্যমে মানুষের উদ্ভাবনী হওয়ার ক্ষমতাকেও বাড়িয়ে দেয়। ভ্রমণের সময় থাকা-খাওয়ার ব্যবস্থা করা, নতুন রীতিনীতির সাথে পরিচিত হওয়ার সাথে যা আগে কখনো করা হয়নি তার সাথে মানিয়ে নেয়ার চেষ্টা করা হয়।
পড়ুন: ঘুরে আসুন মালদ্বীপ: অপরূপ এক দ্বীপদেশ ভ্রমণ গাইড
এটি ব্যক্তির চিন্তাভাবনা এবং নির্দিষ্ট পরিস্থিতিকে মোকাবেলার জন্য তার ভেতরকার সৃজনশীলতাকে উদ্দীপিত করে। চিরচেনা বৃত্তবন্দি-সদৃশ পরিবেশ থেকে বেরিয়ে আসাটা বাস্তব দৃষ্টান্তের মাধ্যমে শিখিয়ে দেয় যে, সবকিছুরই একটি বিকল্প আছে।
ভ্রমণ এমন একটি অবস্থা যা প্রতিটি ইন্দ্রিয়কে স্পর্শ করে। নতুন দৃশ্য আর খাবার তো আছেই; তার পাশাপাশি নতুন সুর, নতুন গন্ধ এমনকি নতুন সম্পর্ক একটি শক্তিশালী সংবেদনশীলতার জন্ম দেয়। এগুলো যে কোন সমস্যা সমাধানের সময় নতুন ভাবে ভাবনার রসদ যোগায়। অভিনব যুক্তি, বিশেষায়িত পরিকল্পনা, দ্রুত শিখে নেয়ার প্রবণতা সব কিছু নতুন সিদ্ধান্তের দিকে ধাবিত করে। এক কথায় যত বেশি ভ্রমণ করা হবে, ভ্রমণকারি তত বুদ্ধিমান হবেন।
আত্মবিশ্বাস বৃদ্ধি
ভ্রমণ একজন মানুষের আত্মনিয়ন্ত্রণের আস্থা অর্জনের জন্য প্রেরণা যোগায়। বিশদ অভিজ্ঞতা সুদূরপ্রসারি চিন্তা করতে সাহায্য করে। কর্মজীবনের এর প্রভাব অপরিসীম, কেননা কর্মক্ষেত্রের বিস্তারের জন্য প্রয়োজন বহুজাতি, বহু সংস্কৃতির সংমিশ্রণ।
পড়ুন: বাংলাদেশের সেরা ১০টি প্রাকৃতিক ঝর্ণা, জলপ্রপাত কোথায়? কীভাবে যাবেন?
ঘন ঘন ঘোরাঘুরি অপরিচিত কারখানা বা ট্রেড শোয়ের প্রবেশদ্বারে কড়া নাড়ার যাবতীয় ভয় কর্পূরের মত উড়িয়ে দিতে পারে। ভ্রমণের ফলে বিচিত্র পৃথিবীতেও এমন কিছু জায়গার সন্ধান পাওয়া যায় যেগুলো বিভিন্ন দেশে একই রকম। স্বাভাবিক ভাবেই একই রকম পরিবেশ অজানা দেশে পেলেও সেখানে মানিয়ে যেতে বিড়ম্বনায় পড়তে হয় না।
তাছাড়া একদম নতুন জায়গা খাপ খাইয়ে নিতে ঠিক কতটুকু সময় লাগছে সে বিষয়ে সম্যক ধারণা হয়ে যায়। ফলে একজন পর্যটক এমন জায়গায় যেতেও পিছপা হননা যে জায়গার ব্যাপারে কোথাও থেকে কোন তথ্য পাওয়া যাচ্ছে না।
অধিক বন্ধুত্বপূর্ণ মানসিকতা
যে ব্যক্তি পৃথিবীর যত বেশি মাইল পথ অতিক্রম করেছে, সেই সংখ্যার থেকেও তার বন্ধু সংখ্যা বেশি। এটি জটিল কোন অঙ্ক নয়; বরং সেই বন্ধুরা শুধু চেনামুখের থাকে না, বিভিন্ন বিপদে-আপদে তাদের সাহায্যও পাওয়া যায়। বছরে যিনি দু’একবার ভ্রমণের জন্য ঘুরতে বের হন এমন মানুষের থেকে যিনি ঘন ঘন ঘুরে বেড়ান এমন মানুষের কথায় যে কেউ সহজেই বুদ হয়ে যান।
পড়ুন: রাতে হাইওয়েতে গাড়ি চালানোর সময় প্রয়োজনীয় কিছু সতর্কতা
গহীন শ্বাপদসংকুল জঙ্গলে এক রাত, খরস্রোতা কোন নদীর পাশে বসে ভবঘুরেদের সাথে আড্ডা, দুর্গম উপত্যকার লেকের পানিতে গোসলের গল্প শোনার ভাগ্য সব সময় সবার হয়ে ওঠে না। তাছাড়া প্রতিটি এলাকার স্থানীয় লোকেরা তাদের থেকে ভিন্ন অন্য কোন জনগোষ্ঠীর ভয়-দুঃখ-আনন্দের কথা শুনতে পছন্দ করেন।
উন্নত কর্মজীবন
অফিসের চারা দেয়ালের মধ্যবর্তী দূরত্ব যতই হোক না কেন, তাতে মনোরম লেক আর মাথার উপর আকাশ না থাকলে কোন লাভ নেই। অনেকে কাজের পরিবেশ ভালো করার জন্য ডেস্কে বা অফিসের দেয়ালে প্রেরণামূলক পোস্টার লাগান। কেউ কেউ ইউটিউবে প্রেরণামূলক ভিডিও দেখেন। কিন্তু এক সময় এসব কিছুই যেয়ে মিশবে বিরক্তিতে। কারণ এগুলো পুনরাবৃত্তিমুলক ক্রিয়াকলাপ।
তাই যে নিয়োগকর্তারা সুস্থ কর্মক্ষেত্র চর্চা করেন তারা কর্মীদেরকে পেইড ভ্যাকেশন বা অতিরিক্ত বোনাস হিসেবে কোথাও ঘুরে আসতে অফার করে। অধিকাংশ ক্ষেত্রে এই অফারগুলো থাকে দেশের বাইরে ভ্রমণের। শুধু মানসিক প্রশান্তি-ই নয়, ভ্রমণকারি কর্মীরা তাদের সৃজনশীলতা ও অভিজ্ঞতা দিয়ে প্রতিষ্ঠানকে আরো লাভজনক কাজ উপহার দিতে পারেন।
পড়ুন: ফ্লাই ডাইনিং: কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতে বাংলাদেশের প্রথম ঝুলন্ত রেস্টুরেন্ট
দৈনন্দিন জীবনের চক্র থেকে পরিত্রাণ
ভ্রমণ মাত্রই বৈচিত্র্যের অবগাহন। দৈনন্দিন জীবনের তাড়াহুড়ো থেকে বেরিয়ে আসাতে এর কোন বিকল্প নেই। ঘড়ির কাটায় বাঁধা জীবন থেকে মুক্ত করে দেশ-বিদেশ ঘোরাঘুরি এক উন্নত জীবনের স্বপ্ন যাপন করতে শেখায়। যারা ৯ থেকে ৫টার গোলক ধাঁধাঁর নৈরাশ্যে দিন কাটাচ্ছেন তাদের একমাত্র ওষুধ ভ্রমণ।
এখানে ভারসাম্যে নিয়ে আসতে হবে জীবনে একের পর এক অর্জনের পেছনে ছুটে যাওয়াটাকে। নতুবা জীবনের আসল উদ্দেশ্য হিসেবে শান্তিতে বেঁচে থাকা আর আর্থিক উন্নতির মাঝে এক বিশাল সীমারেখা রচিত হবে। তখন জীবনের শেষ প্রান্তে হাজার অর্জনের পরে একরাশ অপ্রাপ্তির কষ্ট থেকে যাবে।
যোগাযোগ এবং ভাষার দক্ষতা
দেশ-বিদেশ ঘোরা মানে নতুন মানুষের সাথে পরিচিতি; নতুন ভাষার সাথে পরিচিতি। অজানা দেশটিতে চলাফেরা করার তাগিদে অনেকটা বাধ্য হয়েই প্রকৃতিগত ভাবে শিখে নিতে হয় সে দেশের ভাষা। এভাবে যত দেশ ঘোরা যায়, তত ভাষা সম্পর্কে জানা যায়।
পড়ুন: কলকাতা ভ্রমণ: দর্শনীয় স্থানে যাওয়ার উপায় ও খরচ
এখানে এই শিখনটি একদম ব্যাকরণসহ ভাষা শিক্ষার দাবি করে না। স্থানীয়দের মূল্যবোধ, চাওয়া-পাওয়া, বোঝাপড়া বোঝার জন্য প্রয়োজনীয় শব্দগুলোই এখানে মূখ্য বিষয়। এভাবে বহু ভাষায় দক্ষতা সম্পন্ন ব্যক্তি যে কোন প্রতিষ্ঠান এবং দেশের জন্য সম্পত্তি সদৃশ।
জীবনের জন্য নতুন উদ্দেশ্য ও কাজের সন্ধান লাভ
কোন এক ভ্রমণ কখনো জীবন পরিবর্তনকারী অভিজ্ঞতা হতে পারে। নতুন চাকরির খোঁজ বা ব্যবসা শুরু করার মত জীবনের গুরুত্বপূর্ণ পরিবর্তনকালে ভ্রমণ সহায়ক ভূমিকা পালন করে। সঠিক দিকনির্দেশনা, উপযুক্ত রশদ এবং কাজের নতুন ধারণা পাওয়ার মাধ্যমে একজন পর্যটক উপযুক্ত সিদ্ধান্ত গ্রহণকারীতে পরিণত হতে পারে। পৃথিবীর অধিকাংশ বড় বড় প্রতিষ্ঠানের স্থাপিত হওয়ার সাথে মিশে আছে এরকম হাজারো ভ্রমণ গল্প।
প্রকৃতি ও পৃথিবীর সৌন্দর্য্যে অবগাহন
বিস্তৃত ফসলের মাঝে ঘুরে বেড়ানো, নীল রঙের কোন লেকের শান্ত পানিতে ডুব দেয়া বা পর্বত চূড়ায় মেঘের ধোয়াশায় নিজের ঝাপসা হাতের আঙ্গুল গোনার বিনিময় করা কোন কিছু দিয়েই সম্ভব নয়। এই সৌন্দর্যপ্রীতি শুধু প্রকৃতির প্রশংসা করার জন্য নয়। গোটা বিশ্ব ভ্রম্মান্ডের তুলনায় নিরন্তর প্রাপ্তির পেছনে ছুটে যাওয়া দেহটা যে কত ক্ষুদ্র তা অনুধাবন করা।
পড়ুন: সিলেট শহরের দর্শনীয় স্থান: অতুলনীয় প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে সমৃদ্ধ ঐতিহাসিক নগরী
এই শ্বাসরুদ্ধকর আশ্চর্যগুলো জীবনটাকেও একইভাবে সুন্দর করার জন্য দৃষ্টি খুলে দেয়। মানুষের প্রতিটি কর্মকান্ডের উপর নির্ভর করে এই প্রাকৃতিক ঐশ্বর্য। তাই এগুলো রক্ষার্থে ভ্রমণপিপাসুরা অনেক যত্নবান হয়ে ওঠেন। নিজের ও ভবিষ্যত প্রজন্মের জন্য গভীর উপলব্ধিতে এই নিঃসীম সৌন্দর্য্যের প্রতি তাদের ঔদাসিন্য থাকে না।
শেষাংশ
সর্বোপরি, ভ্রমণের উপকারিতা নতুন এক জীবন ধারণের মাইলফলক স্থাপন করে। দেশ-বিদেশ ঘোরার ব্যাপারে যে তথাকথিত ভয়টি কাজ করে তা হলো ঘুরে বেড়াতে অনেক অর্থের প্রয়োজন। যথেষ্ট পরিমাণ অর্থ থাকলে নিঃসন্দেহে বেশি দেশ ভ্রমণ সম্ভব। কিন্তু এখানে ভয়ের ব্যাপারটি আসে ভূল দৃষ্টিভঙ্গি থেকে। সমাজে সর্বজনবিদিত তথাকথিত জীবনের জন্য সবাই হুমড়ি খেয়ে পড়েন বড় ত্যাগ স্বীকারে, বড় বিনিয়োগে। তা করতে যেয়ে এমনকি কখনো প্রাণ ওষ্ঠাগত হওয়ার পরিক্রম হয়।
এক্ষেত্রে ভ্রমণ নিছক বিনোদন হিসেবেই বিবেচিত হয়। কিন্তু ভ্রমণকে উপজীব্য জীবনও হতে পারে সেই সমাজ স্বীকৃত উন্নত মানের। তার জন্য সেই বিনিয়োগ, সেই ত্যাগ-তিতিক্ষাগুলো পরিকল্পিত উপায়ে ধাবিত করতে হবে ভ্রমণকে উদ্দেশ্য করে।
পড়ুন: হিমাচল, জম্মু-কাশ্মীর ও লাদাখ ভ্রমণ: দর্শনীয় স্থান ও খরচ
তাজউদ্দীন আহমদ দেশের সবচেয়ে অন্ধকার সময়ে পাশে দাঁড়িয়েছিলেন: সিআরআই
বাংলাদেশের প্রথম প্রধানমন্ত্রী তাজউদ্দীন আহমদকে তার জন্মবার্ষিকীতে শ্রদ্ধা জানিয়ে শনিবার সেন্টার ফর রিসার্চ অ্যান্ড ইনফরমেশন (সিআরআই) বলেছে, তাজউদ্দীন আহমদ দেশের সবচেয়ে অন্ধকার সময়ে পাশে দাঁড়িয়েছিলেন।
তাজউদ্দীন আহমদকে তার দূরদর্শী নেতৃত্বের জন্য স্মরণ করা হয়।
সিআরআই তার ভেরিফায়েড ফেসবুক পেইজ থেকে শেয়ার করা এক পোস্টে বলেছে, ‘জনকল্যাণের একটি হাতিয়ার হিসেবে রাজনীতির ওপর বিশ্বাস, তার জীবদ্দশায় অসংখ্য উদাহরণের মাধ্যমে ফুটে উঠেছে।’
তাজউদ্দীন আহমদকে নিয়ে চার মিনিটের একটি ভিডিও শেয়ার করেছে সিআরআই।
২৩ জুলাই বঙ্গবন্ধুর ঘনিষ্ঠ সহযোগী এবং মুক্তিযুদ্ধকালীন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক তাজউদ্দীন আহমদের ৯৭তম জন্মবার্ষিকী।
আরও পড়ুন: জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের জন্মবার্ষিকী আজ
আজ রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ১৬১তম জন্মবার্ষিকী
চাকরির পাশাপাশি অনলাইনে কাজ করে বাড়তি আয়ের উপায়
কর্মক্ষেত্রের প্রতিটি বিভাগে বৈশ্বিক প্রতিযোগিতা বৃদ্ধির দরুণ স্থায়ী চাকরির পাশাপাশি খণ্ডকালীন বা চুক্তি ভিত্তিক কাজের মাধ্যমে বাড়তি আয়ের তাগিদও বেড়ে চলেছে। শুধুমাত্র একটি চাকরি দিয়ে জীবনযাত্রার নিত্য প্রয়োজনীয় মৌলিক পণ্য বা সেবার মূল্যের উর্ধ্বগতির চাপ সামলানো প্রতিদিনি কঠিনতর হচ্ছে। এমতাবস্থায় অনলাইনে আয়ের উপায়গুলো যেন আলোকবর্তিকা হয়ে এসেছে। এতে শুধু সংসারের বাড়তি খরচে যে সহায়তা হচ্ছে তা নয়, যাবতীয় খরচ মিটিয়ে সঞ্চয়ের জন্যও ব্যবস্থা হচ্ছে। এমনকি স্থায়ী চাকরিটির বদলে অনলাইন কাজটিকে গ্রহণ করা যাচ্ছে স্থায়ীভাবে। চলুন, জেনে নেয়া যাক- অনলাইনে কাজ করে বাড়তি আয়ের উপায়গুলো সম্পর্কে।
চাকরির পাশাপাশি অনলাইনে অর্থ উপার্জনের ১০টি উপায়
একটি ইউটিউব চ্যানেল খোলা
এক সময় সাইড জব হিসেবে সেরা উপায় হলেও ইউটিউবিং এখন ক্যারিয়ারে পরিণত হয়েছে। প্রতিযোগিতা বেড়ে যাওয়ার দরুণ এখন দিনের প্রায় পুরোটা সময় দিতে হয় একটি ইউটিউব চ্যানেলের পেছনে। তবে ভ্লগ শুরুর মাধ্যমে দিনের একটি ছোট অংশ অতিবাহিত করে এখনো ইউটিউবে সফল হওয়া যায়। ভ্লগ ভিডিওগুলো মুলত কন্টেন্ট নির্মাতার নিত্যদিনের বিভিন্ন কার্যকলাপ নিয়ে জড়িত থাকে। তাই শুধুমাত্র একটি স্মার্টফোন থাকলেই নিজের কর্মকান্ডগুলো রেকর্ড করে ইউটিউবে আপলোড করে দেয়া যায়।
পোস্ট প্রোডাকশন এবং ভিডিও ইডিটের কাজ কম থাকায় এধরণের ভিডিওগুলো কম সময়ে বেশি পরিমাণে বানানো যায়। তাই টার্গেট কীওয়ার্ডগুলোও তুলনামুলক কম সময়ের মধ্যে ভিডিওগুলোকে দর্শকদের নিকট জনপ্রিয় করে তুলতে পারে। গুগল অ্যাডসের রেভেনিউ শেয়ারিং পদ্ধতি ছাড়াও এরকম ভ্লগাররা এখন বিভিন্ন ব্র্যান্ডের প্রচারের মাধ্যমেও বেশ ভালো পরিমাণ অর্থ উপার্জন করে থাকে।
আরও পড়ুন: যে ১০টি সফটওয়্যার জানা থাকলে চাকরি পেতে সুবিধা হবে
অনলাইন রিসেলিং
খুব সহজ করে বলতে গেলে অপেক্ষাকৃত কম দামে কোন কিছু কিনে তা বেশি দামে বিক্রি করাটাই রিসেলিং। এটা কোন নতুন বিষয় নয়, বরঞ্চ নেট দুনিয়ায় বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধার কারণে ব্যবসায়ের এই পুরনো উপায়টি অনেক সহজ হয়ে গেছে। এখানে শুরুতেই মার্কেট রিসার্চ করে দুটো বিষয়ে সম্যক ধারণা নিতে হবে।
প্রথমটি হলো কোথায় কম দামি জিনিসপত্র পাওয়া যায় এবং দ্বিতীয়টি হলো অনলাইন মার্কেটে সেই জিনিসগুলোর সর্বোচ্চ বিক্রয়মূল্য কেমন। ইবে, অ্যামাজন, ইটসি, র্যাকুটেন হলো বর্তমানে রিসেলিং-এর জন্য জনপ্রিয় মার্কেটপ্লেস।
অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং
বেশ পুরনো এই ব্যবসায়িক পদ্ধতিটির জন্য অর্থ ও কৌশলের সঠিকভাবে প্রয়োগ করা দরকার। ডিজিটাল ব্যবসার জগতে এই লিঙ্ক শেয়ারিং ভিত্তিক ধারণাটি ব্যবসার চিরাচরিত সূত্র মেনে চলে। স্বল্প মূল্যের পণ্যের উপর লাভ পেতে হলে বেশি গ্রাহক পেতে হবে। আর বেশি দামের পণ্যের জন্য সীমিত কিছু গ্রাহক হলেই চলবে।
আরও পড়ুন: ইনস্টাগ্রাম থেকে আয় করবেন যেভাবে
এখানে মার্কেটাররা পণ্য তৈরিকারকদের নিকট থেকে পণ্যের লিঙ্ক নিয়ে পুরো ইন্টারনেটে ছড়িয়ে দেয়। লিঙ্কে ক্লিক করে পণ্যটি কেনার সম্ভাবনার উপর ভিত্তি করে মার্কেটাররা লিঙ্কটির ডিজিটাল মার্কেটিং-এর উপর অর্থ বিনিয়োগ করেন। অতঃপর চূড়ান্ত ভাবে পণ্য বিক্রি হলে তারা পূর্ব নির্ধারিত স্বয়ংক্রিয় সিস্টেম অনুযায়ী তার একটা নির্দিষ্ট শতাংশ লাভ করেন। এই শতাংশ লাভের চুক্তিটি এককালীন অথবা প্রতি মাসে পুনরাবৃত্তি হতে পারে।
উভয় ক্ষেত্রেই পণ্যের লিঙ্ক শেয়ারের সিস্টেমটি একবার চালু করে দিলেই পরবর্তীতে আর কাজ করার প্রয়োজন হয় না। গভীর রাতে মার্কেটার যখন ঘুমিয়ে তখন পৃথিবীর কোন না কেনা প্রান্তে কেউ একজন পণ্যটির লিঙ্কে ক্লিক করে তা কিনে ফেলে।
অনলাইনে ফটো বিক্রি
ইন্টারনেট ফটোগ্রাফারদের ছবি শেয়ারের জন্য পুরো জগৎটাকে হাতের মুঠোয় এনে দিয়েছে। এর জন্য যে শুধু ডিএসএলআর ক্যামেরা থাকতে হবে তা নয়। মোবাইল ফটোগ্রাফিকেও এখানে আলাদা ভাবে গুরুত্ব দেয়া হয়। ছবি তুলে মার্কেটপ্লেসগুলোতে আপলোড করার পর শুরু হয় তার প্রচারণার কাজ। এখানে ডিজিটাল মার্কেটিং বেশ কার্যকরি ভূমিকা পালন করে।
আরও পড়ুন: আপনার স্মার্টফোন দিয়ে আয় করার সেরা কিছু উপায়!
অবশ্য এক যুগ আগে মার্কেটিং-এর প্রয়োজন হতো না। ওয়েবসাইটে আপলোড করার পরেই ক্রেতারা ছবি কেনার জন্য ভিড় জমাতো। এখনো জমায় বৈকি; কিন্তু ফটোগ্রাফারদের সংখ্যা মাত্রাতিরিক্ত হওয়ায় নতুনদের জন্য মার্কেটিং অবধারিত হয়ে পড়ে। অ্যাডোবি, শাটারস্টক, বিগস্টকফটোর মত সাইটগুলো ছবি বিক্রির জন্য প্রথম সারির মার্কেটপ্লেস।
চাকরির দক্ষতা কাজে লাগিয়ে ফ্রিল্যান্সিং
চাকরির পাশাপাশি অনলাইনে কাজ করে বাড়তি আয়ের লক্ষ্যে চাকরির দক্ষতাটিই হতে পারে মুল হাতিয়ার। এক্ষেত্রে কম্পিউটার বিজ্ঞান, সফ্টওয়্যার প্রযুক্তি এবং আইটি(ইনফরমেশন টেকনোলজি) সেক্টরের কর্মচারিরা সবার থেকে এগিয়ে থাকেন। কেননা এই সেক্টরের ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র কাজগুলোই অনলাইনে বেশ চওড়া দাম উঠে। ছোট একটা মোবাইল অ্যাপ বানিয়েই বেশ ভালো পরিমাণ আয় করতে পারেন সফ্টওয়্যার ডেভেলপাররা।
অ-প্রযুক্তিগত বিভাগেও স্পেশালিস্টরা পিছিয়ে থাকেন না। হিসাব রক্ষক, আইন বিষয়ক কন্সালটেন্ট, অনুবাদক, ভয়েস-ওভার-আর্টিস্ট, কন্টেন্ট রাইটাররা তাদের দক্ষতার ভিত্তিতে উপার্জন করে থাকেন। ফ্রিল্যান্সিং কাজের জন্য আপওয়ার্ক, ফাইভার, ফ্রিল্যান্সার ডট কম, এমনকি ফেসবুকের মত সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মগুলোতেও আনাগোনা হয় ফ্রিল্যান্সারদের।
আরও পড়ুন: চাকরির সিভি ও পোর্টফোলিও তৈরির প্রয়োজনীয় কিছু ওয়েবসাইট
পডকাস্ট শুরু করা
বিস্ময়কর হলেও সাম্প্রতিক বছরগুলোতে অডিওবুক প্রকাশ করা পডকাস্ট সাইটগুলো অত্যন্ত জনপ্রিয়তা পেয়েছে। একটি পডকাস্টের জন্য প্রয়োজন হয় ভালো কন্ঠ, মাইক্রোফোন এবং কম্পিউটার। কি বলা হচ্ছে তা কতটুকু সাড়া ফেলবে তা নির্ভর করছে অডিও কন্টেন্ট এবং কথকের কন্ঠের মাধুর্যতার উপর।
পডকাস্টগুলো অর্থ উপার্জন করে বিজ্ঞাপন থেকে, তাই শ্রোতা সংখ্যা যত বাড়বে অর্থ উপার্জনও তত বেশি হবে। আর ঠিক এই জায়গাতেই আসে ডিজিটাল মার্কেটিং-এর চাহিদা। বিখ্যাত পডকাস্টাররা সব সময় অ্যাপলের আইটিউনকে নির্বাচন করে থাকে। এছাড়াও শীর্ষস্থানীয় পডকাস্ট প্রকাশনার মধ্যে আছে বাযস্প্রাউট, ক্যাপটিভেট, এবং ট্রানজিস্টর-এর মত সাইটগুলো।
সোশ্যাল মিডিয়া ম্যানেজার
যেহেতু গোটা বিশ্বই বর্তমানে সোশ্যাল মিডিয়া জ্বরে আক্রান্ত, তাই এই রোগীদের দিকেই সব সময় দৃষ্টি থাকে সব ধরনের ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানগুলোর। ব্যবহারকারিদের সব সময় নিজেদের কন্টেন্টের প্রতি আকৃষ্ট রাখতে বিপুল বিনিয়োগ করে থাকে অনলাইন ব্যবসাগুলো। আর এই আকৃষ্ট রাখার কাজগুলোর ব্যবস্থা করেন সোশ্যাল মিডিয়া ম্যানেজাররা।
আরও পড়ুন: অনলাইনে চাকরির ইন্টারভিউ দিতে প্রয়োজনীয় পাঁচ অনলাইন প্ল্যাটফর্ম
সোশ্যাল মিডিয়া প্রোফাইল থেকে শুরু করে পেজ, গ্রুপ, পোস্ট পরিচালনার পাশাপশি গ্রাহকদের সাথে রিয়েল টাইম চ্যাটে অংশ নেয়ার কাজগুলো করে থাকে এই ম্যানেজাররা। ফ্রিল্যান্সিং কাজগুলো মধ্যে অন্যতম প্রধান কাজ এটি। শীর্ষস্থানীয় মার্কেটপ্লেসগুলো ছাড়াও এই কাজগুলোর দেখা মেলে ইন্ডিড, লিঙ্ক্ডইন, মডস্কোয়াড, এমনকি স্বয়ং ফেসবুকেও।
ডিজিটাল পণ্য বিক্রি
যে কোন ভিডিও, অডিও, গেম, অ্যাপ্স, ওয়েব টেমপ্লেট, প্লাগ-ইন্স এবং যে কোন বইয়ের ডিজিটাল সংস্করণ ডিজিটাল পণ্যের অন্তর্ভূক্ত। প্রায় সময় তৈরিকারকরা তাদের বানানো ডিজিটাল পণ্যটি প্রচারের জন্য মার্কেটারদের সরণাপন্ন হন। প্রতি বিক্রিতে স্বল্প শতাংশ প্রদানের ভিত্তিতে পণ্য নির্মাতা ও মার্কেটারদের মধ্যে ব্যবসায়িক চুক্তি হয়।
অর্থাৎ অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং-এর মাধ্যমে এই বিক্রির কাজ হয়ে থাকে। আর যারা কিনে থাকেন তারা ব্যবহার করেন পণ্য রিসেলিং পদ্ধতি। এ ধরণের পণ্যের জন্য শীর্ষস্থানীয় মার্কেটপ্লেসগুলোর মধ্যে আছে ইটসি, শপিফাই, ইনভাটোর মত সাইটগুলো।
আরও পড়ুন: চাকরি প্রার্থীদের সফল সিভি তৈরির কিছু গুরুত্বপূর্ণ টিপস
ওয়েবসাইট এবং অ্যাপ পরীক্ষা করুন
বিভিন্ন অনলাইন ব্যবসাগুলো তাদের অ্যাপ এবং ওয়েবসাইট উন্নত করতে তাদের টার্গেটকৃত অডিয়েন্সের প্রতিক্রিয়া যাচাই করে থাকে। এই প্রতিক্রিয়া জানানোর ব্যাপারটি সাইট বা অ্যাপটি পরীক্ষা করার মাধ্যমে সম্পন্ন হয়। এই কাজের জন্য টেস্টারের একটি কম্পিউটার, একটি ওয়েবক্যাম, একটি মাইক্রোফোন এবং একটি ভাল ইন্টারনেট সংযোগ থাকা বাঞ্ছনীয়।
বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই প্ল্যাটফর্ম-প্রদত্ত সফ্টওয়্যারগুলো ব্যবহার করে স্ক্রিন রেকর্ড দেখাতে হয়। ওয়েবসাইট বা অ্যাপটি চালানোটা সহজ কিনা তা পরীক্ষার ফলাফল হিসেবে পরিবেশন করতে হয়। ইউজার-টেস্টিং, ইউজারফিল, ইউজারলিটিক্স প্রভৃতি সাইটগুলো এ ধরনের কাজ সরবরাহ করে থাকে।
ওয়েবসাইট তৈরি করা
মুল ধারণাটি হলো ওয়েবসাইট তৈরি করে গুগল সার্চ ইঞ্জিনে র্যাঙ্ক করে গুগল অ্যাডসেন্সের মাধ্যমে আয় করা। কিন্তু এখানে সুক্ষ্ম দুটি পার্থক্য আছে। প্রথমটি হলো এই ওয়েবসাইট এক পেজের হয়। আর দ্বিতীয়টি হলো অন্যান্য ওয়েবসাইটের মত এখানে হাজার হাজার কন্টেন্টের প্রয়োজন হয় না। শুধু দরকার হয় নির্দিষ্ট কিছু অডিয়েন্সকে একটি সুনির্দিষ্ট সেবা প্রদান। যেমন গুগলে সার্চ করলে এমন অনেক এক পেজের সাইট পাওয়া যাবে যেগুলোর কোনটা শুধু বড় ছবিকে ছোট করছে, অথবা কোন ওয়েব পেজের লিঙ্ককে ছোট করছে।
আরও পড়ুন: কর্ম জীবনে উন্নতির জন্য কলেজ বিশ্ববিদ্যালয়ে থাকতেই কিভাবে প্রফেশনাল নেটওয়ার্ক তৈরি করবেন
এধরনের ওয়েবসাইটগুলোতে খুব অল্প সময়ের মধ্যে লক্ষ লক্ষ ভিউ পাওয়া যায়। এগুলোর কীওয়ার্ড সীমিত কিন্তু সুনির্দিষ্ট থাকে বিধায় গুগল অ্যাডসেন্স থেকে বেশ ভালো পরিমাণ আয় করা যায়। এর জন্য প্রয়োজন একজন ওয়েব ডেভেলপার এবং একজন ডিজিটাল মার্কেটার। নিয়মিত আয়ের একটি ধারা তৈরি করতে এটি একটি সেরা বিনিয়োগ হতে পারে।
পরিশিষ্ট
চাকরির পাশাপাশি অনলাইনে কাজ করে বাড়তি আয়ের এই উপায়গুলো মানুষের জীবনে অভাবনীয়ভাবে স্বচ্ছলতা এনে দিচ্ছে। তবে অনলাইন প্ল্যাটফর্মগুলোতে ভিড় বাড়ার সাথে সাথে কাজ পাওয়ার সম্ভাবনা পূর্বাপেক্ষা জটিলতর হয়ে উঠছে। এছাড়াও প্রযুক্তির দ্রুত অগ্রসর হওয়ার কারণে আগের চেয়ে অধিক হারে অনেক কাজের চাহিদা কমে যাচ্ছে। তবে ভালো দিক হলো- অনেক নতুন নতুন কাজের ক্ষেত্রও তৈরি হচ্ছে। কিন্তু সেগুলোতে প্রয়োজন পড়ছে যথেষ্ট ব্যবহারিক দক্ষতার। মুলত অনলাইন টুল্সগুলো জীবনকে সহজ করলেও অফলাইনের মত এ জায়গাগুলোতেও সফলতা কিন্তু রাতারাতি সম্ভব নয়। অর্থের পরিমাণ কম লাগলেও অনলাইনে আর্থিক স্বচ্ছলতার জন্য যথেষ্ট মেধা, শ্রম এবং সময় বিনিয়োগের কোন বিকল্প নেই।
আরও পড়ুন: কর্মজীবনে সাফল্যের জন্য কিভাবে নিজেকে গ্রুমিং করবেন?
ইন্দোনেশিয়া ভ্রমণ গাইড: দর্শনীয় স্থান সমূহ, খরচ
ধর্মীয় সভ্যতা থেকে শুরু করে বহুজাতি সংস্কৃতি, আগ্নেয়গিরির দ্বীপাঞ্চল সহ গ্রীষ্মমন্ডলীয় স্বর্গ; এসব কিছু একসাথে পাওয়া যাবে ইন্দোনেশিয়ার দর্শনীয় স্থানগুলোতে। বিশ্বের এই ৪র্থ জনবহুল দেশটি এর দিগন্ত জোড়া সৈকত ও পাহাড়ের ল্যান্ডস্কেপ বিশ্ব পরিব্রাজকদের বিশালতা ও বিচিত্রতা অন্বেষণের খোরাক জোগায়। জুলাই থেকে আগস্টের শুষ্ক মৌসুম ইন্দোনেশিয়ার ভ্রমণের উপযুক্ত সময়। এ সময় ২৫ থেকে ২৭ সেলসিয়াস ডিগ্রি তাপমাত্রা হাল্কা বৃষ্টিপাতের সাথে আরামপ্রদ অনুভূতি দেবে। এর কোন কোন দর্শনীয় স্থান সংস্পর্শ পেয়েছে পাপুয়া নিউ গিনির, কোনটা মিশেছে মালয়েশিয়া এবং ব্রুনাইয়ের সাথে। ইন্দোনেশিয়ার সব চেয়ে জনপ্রিয় এবং আকর্ষণীয় গন্তব্যগুলো অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে এবারের ফিচারে।
ইন্দোনেশিয়ার জনপ্রিয় দর্শনীয় স্থানসমূহ
উবুদ, বালি
একদিকে ধান ক্ষেত্র চলে গেছে পাম-রেখাযুক্ত পাহাড়ের নিচে আর বাগান ঘেরা উপত্যকার বাতাসে বাজতে থাকে স্থানীয় গেমলান সঙ্গীত। এমনি দৃশ্য চোখে পড়বে বালির সবচেয়ে সুন্দর গ্রাম উবুদে গেলে। সিমিয়ান দেখার জন্য যাওয়া যেতে পারে মাঙ্কি ফরেস্টে, অথবা স্থানীয় শিল্পের সাথে পরিচিত হতে প্রবেশ করা যেতে পারে আগুং রাই মিউজিয়ামে। অন্ধকারের নামলে স্থানীয় মন্দিরগুলোতে দর্শনার্থীদের সৌজন্যে শুরু হয় লেগং ব্যালে বা বন্য কেকাক ফায়ার নাচ।
সুলুবান সৈকত, বালি
প্রকৃতির অপার বিস্ময় এই সুলুবান সৈকতে আছে রোমাঞ্চকর গুহা, যা যে কোন দক্ষ স্কুবা ডাইভারকে নিমেষেই চমকে দিতে পারে। সুলুবান সৈকত উলুওয়াতু বালির একটি দর্শনীয় সৈকত। ব্লু পয়েন্ট বিচ এবং পান্তাই সুলুবান বালি নামে পরিচিত এই সৈকতে সার্ফিয়ের সময় ঢেউগুলোকে মনে হবে যেন সঙ্গীতের তালে তালে স্পন্দিত হচ্ছে।
পড়ুন: ঘুরে আসুন মালদ্বীপ: অপরূপ এক দ্বীপদেশ ভ্রমণ গাইড
গিলি দ্বীপ, লম্বক
লোম্বকের উপকূলে প্রবাল সহ তাদের স্ফটিক ফিরোজা রঙের পানি, সাদা-বালির সৈকত, স্বাস্থ্যকর খাবারের রেস্তোরাঁ, অভিজাত সৈকত পার্টিগুলোর জন্য গিলি দ্বীপের কোন তুলনা হয় না। গিলি ট্রাওয়ানগান (ওরফে 'গিলি টি') হল দ্বীপগুলোর মধ্যে সবচেয়ে বড় এবং সবচেয়ে উন্নত দোকান, ম্যাসেজ পার্লার এবং ক্যাফেতে ভরপুর। আর গিলি মেনো হল সবচেয়ে ছোট এবং সবচেয়ে ঐতিহ্যবাহী দ্বীপ।
বাটাম, রিয়াউ
রিয়াউ প্রদেশের বৃহত্তম শহর বাটাম একটি শৈল্পিক শহর। এটি ইন্দোনেশিয়া-মালয়েশিয়া-সিঙ্গাপুর গ্রোথ ট্রায়াঙ্গেলের একটি মুক্ত বাণিজ্য অঞ্চলের অংশ। এখানে আছে বিখ্যাত বেরেলাং ব্রিজ, যার রয়েছে ছয়টি অত্যাধুনিক ফুল সুইং অংশ, যা বাটাম, রেম্পাং এবং গালাং দ্বীপ তিনটিকে সংযুক্ত করেছে।
বালি দ্বীপ, বালি
ইন্দোনেশিয়ায় সকল সৌন্দর্য যেন অল্প অল্প করে অঙ্গে ধারণ করে আছে ঈশ্বরের দ্বীপ নামে পরিচিত এই বালি দ্বীপ। যার কারণে সুন্দর মন্দির থেকে সুউচ্চ পর্বত, সমৃদ্ধ ঐতিহ্য এবং সংস্কৃতি থেকে উত্তেজনাপূর্ণ নাইটলাইফের এই মিলনকেন্দ্রটি ইন্দোনেশিয়ার সবচেয়ে জনপ্রিয় পর্যটন স্পটে পরিণত হয়েছে। বালির অভিমুখে গমনকারি ভ্রমণপিপাসুরা সানুর বিচ, পুরা লুহুর উলুওয়াতু এবং তুকাদ সেপুং ঝর্ণা দেখতে ভোলেন না।
পড়ুন: বাংলাদেশের সেরা ১০টি প্রাকৃতিক ঝর্ণা, জলপ্রপাত কোথায়? কীভাবে যাবেন?
ইয়োগিয়াকার্তা, জাভা
ইয়োগিয়াকার্তা জাভার সবচেয়ে জনপ্রিয় পর্যটন গন্তব্য। প্রায় ৫ লাখ মানুষের এই শহরটি বোরোবুদুর এবং প্রম্বানানের মন্দিরগুলোর জন্য বিখ্যাত। এর জাভানিজ চারুকলা থিয়েটার থেকে শুরু করে ব্যালে পারফরম্যান্স বিশ্ব দরবারে সপ্রতিভভাবে তুলে ধরে। ছোট্ট এই শহরটি পায়ে হেঁটেই পুরোটা ঘোরা যেতে পারে। মেরাপি লাভা ট্যুরে শক্ত লাভা দ্বারা আটকে থাকা আশেপাশের শান্ত গ্রামগুলো পর্যটকদের সবচেয়ে বেশি আকর্ষণ করে।
কেলিমুতু হৃদ, সুমাত্রা
কেলিমুতু আগ্নেয়গিরি দ্বারা গঠিত তিনটি অংশে বিভক্ত হ্রদটিকে একসাথে কেলিমুতু ডাকা হয়। একই আগ্নেয়গিরির শিখরে অবস্থিত হলেও হ্রদ তিনটির রঙগুলোও ভিন্ন- লাল, নীল এবং সাদা। যথেষ্ট দুঃসাহসের পরিচয় দিতে হবে এই ক্রেটার হ্রদগুলো ঘুরতে যেতে হলে। কিন্তু দেখার পর মনে হবে যে, জীবন বোধ হয় ষোল কলা পূর্ণ হলো।
নুসা পেনিদা, বালি
শামুকের খোলসের আবরণে গুপ্ত ঝিনুকের সাথে তুলনা করা যেতে পারে এই অফবিট জায়গাটিকে। বালির জাকজমক সৌন্দর্য্যে অনেকেই এ জায়গাটির কথা ভুলে যান। কিন্তু এর চমৎকার পর্বতময় উপকূলরেখাগুলো থেকে চোখ ফেরানো যায় না। বালি থেকে এক দিনের ক্রুজ নিয়ে এই দ্বীপটিতে অনায়াসেই ঘুরে আসা যায়।
পড়ুন: সিঙ্গাপুর ভ্রমণ: সাগরের উপকন্ঠে অভিজাত উদ্যাননগরী
টোবা হৃদ, উত্তর সুমাত্রা
পৃথিবীর বৃহত্তম ক্যালডেরাতে অবস্থিত টোবা হ্রদের সংস্পর্শে রয়েছে প্রায় ৭০ হাজার বছর আগে গঠিত হওয়া আগ্নেয়গিরির উৎস। এটি হয়ত একটি ধাঁধার মত শোনাতে পারে যে, এই টোবা হ্রদটি একটি দ্বীপে অবস্থিত, যেটি আবার জেগে আছে একটি হ্রদের মধ্যে। এই ধাঁধার উত্তর পেতেই উৎসকু পর্যটকরা ছুটে যান উত্তর সুমাত্রায়।
কমোডো ন্যাশনাল পার্ক, নুসা টেঙ্গারা তৈমুর
এই জায়গাটি পশ্চিম নুসা টেঙ্গারা তৈমুর বরাবর সুম্বাওয়া এবং ফ্লোরেসের মাঝে অবস্থিত। এখানে দেখা মেলে কোমোডো ড্রাগন নামে পরিচিত জায়ান্ট মনিটর লিজার্ডের। শুষ্ক, রুক্ষ এবং অনুর্বর দ্বীপটিতে পার্কটির পাশাপাশি মেরিন রিজার্ভের একটি অংশও পড়েছে। এছাড়াও ভ্রমণ অভিলাষীদের ভিড় জমতে দেখা যায় পিঙ্ক বিচ ও লাওয়া দারাত গিলিতে।
ইন্দোনেশিয়া ভ্রমণকে উপভোগের সেরা এক্টিভিটিসগুলো
স্নরকেলিং, সার্ফিং এবং ডাইভিং-এর মতো অ্যাডভেঞ্চার স্পোর্টসের জন্য ইন্দোনেশিয়াকে স্বর্গ বলা যেতে পারে। এছাড়া নৌকায় করে দ্বীপে দ্বীপে ঘোরা, মাছ ধরা অথবা সৈকতের পাশের ক্যাফে বা খুপরিতে বসে দৃষ্টিতে দিগন্ত ধরতে ধরতে সময়টা কাটিয়ে দেয়া যায়। পাহাড় ট্র্যাকিং এবং বিস্ময়কর লেক ঘুরে দেখার রোমাঞ্চটা পরিপূর্ণতা পেতে পারে পর্বত চূড়া থেকে সূর্যাস্ত এবং সূর্যোদয় দেখার মাধ্যমে। সুপ্ত আগ্নেয়গিরির লেকের ঈষৎ উষ্ণ পানিতে সাঁতার কাটাটা যেমন রোমাঞ্চকর তেমনি অতুলনীয় অভিজ্ঞতার অবতারণা করবে।
পড়ুন: সিলেট শহরের দর্শনীয় স্থান: অতুলনীয় প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে সমৃদ্ধ ঐতিহাসিক নগরী
গলফ উৎসাহীদের জন্য বাটাম নোংসা উপকূল এবং ওয়াটারফ্রন্ট সিটি বরাবর স্পোর্টস ক্লাব এবং রিসোর্টগুলো দারুণ পছন্দ হতে পারে।
দুর্লভ প্রাণী অভয়ারণ্যতেও সুযোগ আছে কায়াকিং, ডাইভিং, ট্রেকিং বা দ্বীপ ভ্রমণের। বহু রঙের হ্রদগুলো আর পর্বত চূড়ার মন্দিরগুলো অবশ্য কোন কার্যকলাপের দাবি রাখে না। শুধু সেগুলোর পাশে বসে থেকেই কাটিয়ে দেয়া ঘন্টার পর ঘন্টা।
হাইকিং, সাইক্লিং, বালি সুইং, জেটপ্যাকিং, রিভার রাফটিং-এর স্মৃতিগুলো ফ্রেমবন্দি করে রাখার জন্য ফটোগ্রাফির সময়টাও উপভোগ করার মত। যা বহু বছর পরেও অফিসের ডেস্কে কাজের বিরতিতে নিমেষেই নিয়ে যেতে পারে ইন্দোনেশিয়ার গোধুলি আর রাতের অভূতপূর্ব জনজ্জীবনে।
পড়ুন: গরমকালে কম খরচে বাংলাদেশের কোথায় কোথায় ঘুরতে যাবেন?
বাংলাদেশে থেকে ইন্দোনেশিয়া ভ্রমণ খরচ
ঢাকা থেকে ইন্দোনেশিয়ার বালিতে যেতে হলে মালয়শিয়া বা সিঙ্গাপুরে ট্রানজিট নিয়ে যেতে হয়। কুয়ালালামপুরের ট্রানজিট হয়ে বালি পৌছতে প্রায় ৬ ঘন্টা সময় লাগে। এয়ার টিকেট মূল্য কত আগে টিকেটটি কাটা হচ্ছে তার উপর নির্ভর করে। কমপক্ষে দুই মাস আগে কিনলে বালির টিকেটের দাম পড়তে পারে ২৫ থেকে ৩৫ হাজার টাকা।
এয়ারপোর্টের যাবতীয় ঝামেলা শেষে ব্লু বার্ড ট্যাক্সিগুলো মিটারে বিভিন্ন দর্শনীয় স্থানে পৌছে দিতে পারে। ইন্দোনেশিয়ার ম্রুদ্রা বা রুপিয়ার দাম বাংলাদেশের টাকার থেকে কম। বালিতে ভেতরে বিভিন্ন জায়গা মিটারে ট্যাক্সিতে যেতে প্রায় ৩০ থেকে ৪০ হাজার রুপিয়া লাগে। বাংলাদেশি টাকায় যা ১৮০ থেকে ২৫০ টাকার মত।
মালয়শিয়া হয়ে লম্বকের বিমানবন্দর পর্যন্ত ৩০ থেকে ৩২ হাজার টাকা লাগতে পারে। এয়ারপোর্ট থেকে বাসে ও ফেরীতে করে গিলিসে যেতে ৪ থেকে সাড়ে ৪ হাজার টাকা খরচ হতে পারে। বাটাম ঘোরার জন্য সিঙ্গাপুরের বিমানবন্দর হতে বাস বা ট্যাক্সিতে করে হারবারফ্রন্ট স্টেশনে আসতে হবে। ফেরিতে যাওয়া আসার খরচ পড়তে পারে মাথাপিছু ৩ থেকে ৪ হাজার টাকা। তবে এজন্য সিঙ্গাপুরের ডাবল এন্ট্রি ভিসা নেয়া আবশ্যক।
পড়ুন: ফ্লাই ডাইনিং: কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতে বাংলাদেশের প্রথম ঝুলন্ত রেস্টুরেন্ট
বাংলাদেশ থেকে ইয়োগিয়াকার্তা যেতে বিমান ভাড়া ৪০ থেকে ৫০ হাজার টাকা খরচ হতে পারে। সেখান থেকে বাসে করে দর্শনীয়স্থানে যেতে ৭০০ থেকে ৮০০ টাকা লাগতে পারে।
সুমাত্রা যাওয়ার জন্য প্রথমে যেতে হবে মেদান। মালয়শিয়া ট্রানজিট হয়ে কুয়ালানামু পর্যন্ত যেতে বিমানভাড়া ৩২ থেকে ৩৫ হাজার টাকা। সেখান থেকে মেদানের ট্রেন ভাড়া ৩৫০ থেকে ৪০০ টাকা।
কেলিমুতু আগ্নেয়গিরি লেক দেখতে হলে যেতে হবে এন্ডে শহরে। ৪৭ থেকে ৫০ হাজার টাকা খরচ হবে বিমান যোগে এন্ডেতে নামতে। অতঃপর ট্যাক্সি করে আশেপাশের দর্শনীয় স্থানসমূহ ঘোরা যাবে।
পড়ুন: হিমাচল, জম্মু-কাশ্মীর ও লাদাখ ভ্রমণ: দর্শনীয় স্থান ও খরচ
কমোডো দ্বীপে যেতে প্রথমে নামতে হবে লাবুয়ান বাজো এয়ারপোর্টে, যেখানে বিমানভাড়া নিতে পারে ৩৭ থেকে ৪০ হাজার টাকা। তারপরে লাবুয়ান বাজোতে নৌকায বা ফেরিতে করে কমোডো দ্বীপ।
পরিশিষ্ট
আজকের আলোচনায় আমরা ইন্দোনেশিয়ার সবচেয়ে জনপ্রিয় দর্শনীয় স্থানগুলো এবং ভ্রমণের আনুষঙ্গিক খরচ তুলে ধরেছি। দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার অন্যান্য অংশের তুলনায় বালিকে সাধারণত একটি সস্তা গন্তব্য হিসেবে বিবেচনা করা হয়। খাবার থেকে আবাসন পর্যন্ত সবকিছুই সাধারণত সাশ্রয়ী এবং বাজেট ভ্রমণের জন্য সুপারিশ করা যেতে পারে। এটি একটি অত্যন্ত বিষয়গত প্রশ্ন কিন্তু নুসা পেনিডা দ্বীপের দর্শকরা একমত হবেন যে এটিকে ইন্দোনেশিয়ার সবচেয়ে সুন্দর অংশ হিসেবে বিবেচনা করা যেতে পারে। উবুদ ইন্দোনেশিয়ায় দেখার জন্য সেরা শহরগুলির মধ্যে একটি হিসাবে বিবেচিত হতে পারে।
পড়ুন: ঢাকার কাছেই প্রকৃতির মাঝে ক্যাম্পিং সাইট
ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালের অনুমতি পেলো বঙ্গভ্যাক্স
ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তর (ডিজিডিএ) দেশি কোম্পানি গ্লোব বায়োটেকের তৈরি করোনাভাইরাসের টিকা ‘বঙ্গভ্যাক্স’ মানুষের শরীরে পরীক্ষামূলক প্রয়োগের অনুমতি দিয়েছে।
রবিবার ওষুধ প্রশাসন অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক সালাউদ্দিন ইউএনবিকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন ।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালে (বিএসএমএমইউ) প্রথম ধাপের এই ট্রায়াল হবে।
বিএসএমএমইউ-এর হেপাটোলজি বিভাগের অধ্যাপক ডা. মামুন আল মাহতাব এই ট্রায়ালের প্রধান হিসাবে দায়িত্ব পালন করবেন।
অনুমোদন দিয়ে ডা. মামুনকে পাঠানো ডিজিডিএ এর দেয়া চিঠি অনুসারে, গবেষণা প্রটোকলটি ডিজিডিএ কর্তৃক অনুমোদনের তারিখ থেকে এক বছরের জন্য অনুমোদিত হবে।
বাংলাদেশ এখন যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা, জাপান, ভারত, চীন, দক্ষিণ কোরিয়া, থাইল্যান্ড এবং ভিয়েতনামের পরে এমআরএনএ ভ্যাকসিন সক্ষমতা নিয়ে বিশ্বের নয়টি দেশের অভিজাত গ্রুপে যোগ দিলো।
গ্লোব বায়োটেক লিমিটেড দাবি করেছে, ডেল্টা ভেরিয়েন্ট সহ কোভিড-১৯ এর ১১টি রূপের সঙ্গে লড়াই করার জন্য বঙ্গভ্যাক্স ১০০ শতাংশ কার্যকর।
গত বছরের ১৭ জানুয়ারি গ্লোব বায়োটেক, একমাত্র বাংলাদেশি কোম্পানি যেটি করোনা টিকা তৈরির চেষ্টা করছে, বঙ্গভ্যাক্সের ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল পরিচালনার জন্য অনুমোদনের জন্য বাংলাদেশ মেডিকেল রিসার্চ কাউন্সিলের (বিএমআরসি) কাছে একটি আবেদন জমা দেয়।
২৩ নভেম্বর বিএমআরসি বঙ্গভ্যাক্সকে মানুষের শরীরে পরীক্ষামূলক প্রয়োগের নীতিগতভাবে অনুমোদন দেয়।
গ্লোব বায়োটেক ২০২০ সালের ২৮ ডিসেম্বর টিকা তৈরির লাইসেন্স পায়।
বিএমআরসি, যারা এই ধরনের সমস্ত ট্রায়ালের তত্ত্বাবধান করে, গত বছরের জুনে কিছু শর্ত জুড়ে দেয়। ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালের অনুমতি পাওয়ার আগে এ শর্তগুলো পূরণ করতে হয়।
মূল শর্ত ছিল গ্লোব বায়োটেককে প্রথমে বানর বা শিম্পাঞ্জির ওপর ট্রায়াল চালাতে হবে।
সেই সময়ে সংস্থাটির চিহ্নিত বাধাগুলির মধ্যে একটি ছিল যে দেশে কোনও তৃতীয় পক্ষের ক্লিনিক্যাল গবেষণা সংস্থা (সিআরও) ছিল না যা প্রাণীর ওপর এই জাতীয় পরীক্ষা পরিচালনা করতে পারে।
আরও পড়ুন: ‘বঙ্গভ্যাক্স’ মানবদেহে ট্রায়ালের অনুমোদন
শর্ত পূরণ করলে ‘বঙ্গভ্যাক্সের’ ট্রায়ালের অনুমতি: বিএমআরসি
তীব্র গরমে হিট স্ট্রোক থেকে বাঁচতে করণীয়
গ্রীষ্ম শুরুর পর থেকে প্রতিটি দিন পূর্বাপেক্ষা বেশি দাবদাহ নিয়ে হাজির হয়। জুলাইয়ের শুরুতে তা নিতান্ত প্রকট আকার ধারণ করে। এমনকি এই মাত্রা প্রতি বছর বেরেই চলেছে। তাই গরমের এই তীব্রতা আগের তুলনায় অধিক গুরুত্ব সহকারে নেওয়া আবশ্যক। তীব্র গরমে হিট স্ট্রোক স্বাস্থ্যের জন্য মারাত্মকভাবে ঝুঁকির কারণ হতে পারে। তাপের সংস্পর্শে আশা ব্যক্তির শরীরের বাইরের অংশের সাথে সাথে ক্ষতিগ্রস্ত হয় ভেতরের প্রত্যঙ্গগুলোও। জীবন-জীবিকার তাগিদে ঘরের বাইরে বিভিন্ন কাজে ব্যস্ত থাকায় স্বাভাবিক ভাবেই এই বিপজ্জনক তাপের সংস্পর্শে থাকতে হয়। অসহনীয় গরমে হিট স্ট্রোক থেকে বাঁচবার জন্য করণীসমূহ নিয়েই আজকের স্বাস্থ্য কথন।
প্রচন্ড গরমে হিট স্ট্রোক এড়িয়ে চলার উপায়
শরীরকে যথেষ্ট পরিমাণে হাইড্রেটেড রাখা
সঠিকভাবে হাইড্রেটেড থাকা শরীরের তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ করতে সাহায্য করে। যাদের খুব বেশি ঘরের বাইরে থাকার প্রয়োজন হয়, তাদের শরীরকে ভালভাবে হাইড্রেটেড করে বাইরে বের হওয়ার পরিকল্পনা করতে হবে। এখানে নিছক এক গ্লাস পানি পান যথেষ্ট নয়। সারা দিন হাইড্রেটেড থাকা মানে সাথে সব সময় পানির বোতল রাখতে হবে।
যখনি ঘামের মাত্রা বৃদ্ধি পাচ্ছে তখনি সাথে সাথে স্পোর্টস ড্রিঙ্কে চুমুক দেয়া উচিত। এতে ঘামের কারণে শরীরের হারিয়ে যাওয়া ইলেক্ট্রোলাইটগুলোকে পুনরায় পূরণ করা যায়। পানি পানের সাথে এমনভাবে অভ্যস্ত হতে হবে যে, পানির পিপাসা পাওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করা যাবে না।
পড়ুন: উচ্চ রক্তচাপ (হাই প্রেশার) হলে যা এড়িয়ে চলা উচিত: ক্ষতিকর খাবার, পানীয়, অভ্যাস
উষ্ণ মৌসুমের উপযুক্ত পোশাক পরিধান
মৌসুম অনুযায়ী পোশাক পরিধানটা সুস্বাস্থ্য ও মানসিক সুস্থতার জন্য খুবই দরকারি। আঁটসাঁট, রঙিন এবং একাধিক স্তরের মোট পোশাক শরীর থেকে ঘামকে বাষ্পীভূত করা কঠিন করে তুলতে পারে। ফলে শরীরের অতিরিক্ত তাপ মুক্তি বাধাগ্রস্ত হয়। আশপাশের অপরিবর্তিত আর্দ্রতা শরীরে ঘামের হওয়ার প্রবণতাকে বাড়াতে থাকে। পোশাক এমনিতেই গরম থাকে আর ঘাম কাপড়কে আর্দ্র করে উষ্ণতাকে আরো বাড়িয়ে দেয়। ফলশ্রুতিতে শরীরের তাপমাত্রা ভারসাম্য হারিয়ে কেবল অস্বস্তি বাড়াতে থাকে।
তাই প্রচন্ড গরম আবহাওয়াতে সাদা, অথবা যে কোনো হাল্কা রঙের এবং সুতি ফেব্রিকের কাপড় পড়া উচিত। এতে শরীরের অতিরিক্ত তাপ বের করে দিতে সুবিধা হয়। মুখমন্ডল রক্ষার জন্য একটি চওড়া হ্যাট পরা উত্তম।
শরীরের উন্মুক্ত জায়গাগুলোকে সূর্য থেকে বাঁচানোর জন্য প্রচুর ঘাম-প্রতিরোধী সানস্ক্রিন ব্যবহার করা যেতে পারে।
পড়ুন: মাইগ্রেনের ব্যথা কমানোর ঘরোয়া উপায়
অতিরিক্ত গরম স্থান থেকে দূরে থাকা
প্রচন্ড গরমের সময় সব জায়গাতেই তাপের ভয়াবহতা বিরাজ করে। এরপরেও যতটা সম্ভব তীব্র তাপ থেকে নিজেকে বাঁচিয়ে রাখা শরীরকে স্বাভাবিক রাখার কার্যকরি উপায় হতে পারে। ইঞ্জিনযুক্ত যে কোন গাড়ি তাপের এক বিরাট উৎস। তাই যতটা পারা যায় এ ধরনের যানবাহনের সংস্পর্শ এড়িয়ে চলা উচিত। হোক সেটা ইঞ্জিন চালুরত অথবা পার্ক করা, উভয় ক্ষেত্রেই গাড়িটি বিপজ্জনক।
রাস্তা দিয়ে হাটার সময় ছায়ার নিচ দিয়ে চলাচল করা উচিত। যতটা সম্ভব অতিরিক্ত ভিড় এড়িয়ে চলতে হবে। সম্ভব হলে দিনের অধিকাংশ সময় বিশেষ করে উষ্ণতম সময়গুলো তথা- দুপুরবেলায় বাড়ির ভিতরে থাকতে হবে। সারাটা সময় বাইরে থাকতে হলে ঘন ঘন বিরতি নিয়ে কাজ করতে হবে।
ঘরের ভেতরে থাকার ক্ষেত্রে ঘরটাকেও ঠান্ডা রাখার কথা বিবেচনা করা উচিত। টেবিল ফ্যানের সামনে কতগুলো বরফ রেখে এবং ভেজা কাপড় দিয়ে ঘরের মেঝে মুছে ঘরের তাপমাত্রা স্বাভাবিক রাখা যেতে পারে। রান্নার সময় এক্সস্ট ফ্যান চালিয়ে রাখা আবশ্যক।
পড়ুন: উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে উপযুক্ত খাবার ও জীবন ধারণ পদ্ধতি
ভারী খাবার এড়িয়ে চলা
যে কোন খাবার গ্রহণের সময় শরীরের তাপ তৈরি হয়। খাবারে পরিমাণের সাথে সমানুপাতিক হারে শরীরে তাপের যোগান হতে থাকে। তাই দুপুর এমনকি রাতের খাবারও যারা ভরপেট খান তাদেরকে সাবধান হতে হবে। ছায়ায় বা ফ্যানের নিচে বসে খাওয়া-দাওয়া করলেও এর ব্যতিক্রম হয় না। এই তাপ বৃদ্ধিটা ভেতর থেকে শরীরকে জ্বালিয়ে দিতে থাকে।
খাবারের পর হেটে হেটে হজমের চিন্তা করলেও লাভ নেই। উল্টো হাটার ফলে শরীরের তাপ আরো বেড়ে যাবে। আবার অনেক কম খাবার খাওয়া শরীরকে দুর্বল করে তুলবে। তাই কোন এক বেলা একদম ভরপেট খাবার না খেয়ে অল্প করে ৩ ঘন্টা পর পর খাবার খাওয়া যেতে পারে। এতে শরীরে তাপমাত্রার ভারসাম্য বজায় থাকবে।
জরুরি অবস্থায় তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নেয়া
প্রচন্ড গরমের কারণে অনেক সুঠাম দেহের অধিকারিও বিভিন্ন শারীরিক জটিলতায় আক্রান্ত হতে পারে। এগুলোর মধ্যে অতিরিক্ত দুর্বলতা, বমি বমি ভাব, শরীরের তাপমাত্রা ১০৪ ডিগ্রি ফারেনহাইট বা তার বেশি, প্রচন্ড মাথাব্যথা প্রভৃতি লক্ষণগুলো গুরুতর পরিস্থিতির সৃষ্টি করতে পারে। এছাড়াও রয়েছে হঠাৎ বিভ্রান্তি বা হ্যালুসিনেশন, হাঁটতে অসুবিধা, খিঁচুনি এবং মূর্ছা যাওয়া।
পড়ুন: স্বাস্থ্য সুরক্ষায় পিংক সল্ট বা হিমালয় লবণের উপকারিতা
এ অবস্থায় অতিরিক্ত গরম কমানোর জন্য যথাযথ পদক্ষেপ না নেওয়া হলে হিট স্ট্রোক চরম আকার ধারণ করতে পারে। এমনকি খুব খারাপ অবস্থায় এটি জীবনের জন্য হুমকিতে পরিণত হয়। এতে মস্তিষ্কসহ অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গগুলোর ক্ষতি সাধন হতে পারে। তাই হিট স্ট্রোকের এই অবস্থায় অবশ্যই অবিলম্বে ডাক্তারের সরণাপন্ন হওয়া প্রয়োজন।
প্রচন্ড গরমে হিট স্ট্রোক থেকে বাঁচতে প্রয়োজনীয় খাবার
ফলের সালাদ
শরীরে খাবারের চাহিদা, মুখে স্বাদের ভিন্নতা এবং শরীরকে পুনরায় হাইড্রেটিং-এর জন্য সেরা খাবার হচ্ছে ফলের সালাদ। বিভিন্ন রসাল ফলের ককটেল দারুণ একটি খাবার হতে পারে ব্রেকফাস্ট অথবা সন্ধ্যার স্ন্যাকসে।
তরমুজে পানির পরিমাণ শতকরা ৯০ ভাগ, কমলায় ৮৭ ভাগ, আর শসাতে ৯৫ ভাগ।
পড়ুন: কান পেতে রই: দেশের প্রথম মানসিক সহায়তা হেলপলাইন
এক কাপ শসার টুকরোতে মাত্র ১৬ ক্যালোরি থাকে, যা ভারী খাবারের ঝামেলা থেকে অনেক অনেক দূরে। আপেল গরমের মাসগুলোতে দেহকে সতেজ রাখার গ্যারান্টিযুক্ত।
টমেটো শুধুমাত্র একটি সুস্বাদু খাবারই নয়, এটি শরীরকে ঠান্ডা রাখতেও সহায়ক ভূমিকা পালন করে। টমেটোতে থাকা লাইকোপিন মুলত একটি অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, যা সূর্যের ক্ষতিকর রশ্মি থেকে ত্বককে রক্ষা করতে সাহায্য করে। এই ফলগুলোর সংমিশ্রণে তৈরি স্বয়ংসম্পূর্ণ একটি ডিশ-ই যথেষ্ট গরমের অস্বস্তির সাথে যুদ্ধ করতে।
পাতাযুক্ত সবুজ শাক
পালং শাকের মত এক গাঢ় সবুজ শাকেই পানি আছে শতকরা ৯২ ভাগ। এটি যা ঘামের মাধ্যমে নষ্ট হয়ে যাওয়া ভিটামিন এবং ম্যাগনেসিয়াম ও ক্যালসিয়ামের মত খনিজের ঘাটতি পূরন করে। পুদিনা আরও প্রাণবন্ত ভেষজগুলোর মধ্যে একটি। তাজা পুদিনা কয়েক শতাব্দী ধরে গরম আবহাওয়ায় মানুষকে শীতল করতে ব্যবহার করা হয়ে আসছে। কখনো চা-এ বা ঠান্ডা পানীয়তে কখনো বা সালাদে অভিজাত উপস্থিতি পাওয়া যায় এই পাতাটির।
পড়ুন: ডায়রিয়া বা উদরাময়: কারণ, লক্ষণ, প্রতিরোধ ও প্রতিকারের উপায়
ডাবের পানি
ডাবের পানি ইলেক্ট্রোলাইট দিয়ে ভরা থাকে যা শরীরকে হাইড্রেটেড এবং ঠান্ডা রাখতে সাহায্য করে। এই পাওয়ার পানীয়টি তাপকে পরাস্ত করে সারাদিন ধরে শরীরকে সক্রিয় রাখে। এটি হজম ক্ষমতা বাড়াতেও কাজে লাগে। গরমের সময়ে পাকস্থলি সংক্রান্ত জটিলতায় অনেককে হরহামেশাই ভুগতে দেখা যায়।
মাছ
মাংসের উপর নির্ভর না করে ডায়েটে প্রোটিনের চাহিদা পূরণে মাছের রাখা উত্তম। ভাল ফ্যাটি অ্যাসিড সমৃদ্ধ মাছ মাংসের একটি উপযুক্ত বিকল্প। এটি আহারের পর কম তাপ উৎপন্ন করে, তাই অস্বস্তিকরভাবে ভরপেট বোধ হবে না, যা সাধারণত মুরগি এবং গো-মাংস খাবারের সময় অনুভূত হয়।
দই
দই গরমের সময় জনপ্রিয় কারণ এতে জলের পরিমাণ বেশি এবং শীতল প্রভাব রয়েছে। দই অন্ত্রের উপকারি ব্যাকটেরিয়ার অনূকুলে থাকে, যা শরীরকে খাদ্যের বিষক্রিয়ার বিরুদ্ধে লড়াই করতে সাহায্য করে। উষ্ণ মৌসুমে ঘরের বাইরে বিভিন্ন ধরনের খাবার খাওয়ার কারণে ব্যাকটেরিয়া সংক্রমণ বেড়ে যায়। এখানে দই একটি প্রতিরোধী খাবার হিসেবে কাজ করে।
পড়ুন: এয়ার কন্ডিশনার ছাড়াই গরমে ঘর ঠান্ডা রাখার কার্যকরী উপায়
ক্যালসিয়াম সমৃদ্ধ এই মিষ্টান্নটি প্রচন্ড উষ্ণতায় ঠান্ডা পানীয়ের বিকল্প হিসেবে কার্যকরি ভূমিকা পালন করে। ভিটামিন বি এবং অন্ত্র-বান্ধব ব্যাকটেরিয়া সমৃদ্ধ দই শরীরকে ভেতর থেকে প্রশান্তি দেয়। বিভিন্ন ফলের সাথে মিশিয়ে দইয়ে দারুণ স্বাদ যোগ করা যেতে পারে।
পরিশিষ্ট
প্রচন্ড দাবদাহে হিট স্ট্রোক থেকে বাঁচতে উপরোক্ত উপায়গুলো অনেকটাই স্বাস্থ্যের অনুকূলে আসতে পারে। যদিও মানুষ সৃষ্ট কারণে বৈশ্বিক উষ্ণতার দরুণ প্রতিনিয়ত পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাচ্ছে। এ অবস্থায় নিজের ও আশেপাশের মানুষগুলোর সুরক্ষায় প্রত্যেকেরই নিজ নিজ অবস্থান থেকে সতর্ক থাকা বাঞ্ছনীয়। বিশেষ করে যারা তুলনামুলক ভাবে বেশি ঝুঁকিতে আছেন তাদের প্রতি খেয়াল রাখতে হবে। এদের মধ্যে আছেন শিশু, বৃদ্ধ, স্থুলকায় ব্যক্তি এবং বিভিন্ন শারীরিক জটিলতায় অসুস্থ মানুষেরা। পারস্পরিক যত্নশীল হওয়ার সম্মিলিত প্রচেষ্টায় তীব্র গরমে দুর্ভোগকে কাটিয়ে ওঠা যেতে পারে।
পড়ুন: গরমকালে কম খরচে বাংলাদেশের কোথায় কোথায় ঘুরতে যাবেন?
ফ্ল্যাট বাসা ক্রয়ের পূর্বে যে বিষয়গুলো যাচাই করা প্রয়োজন
নির্ভরযোগ্য বাসস্থানের নিমিত্তে একটি ভাল মানের ফ্ল্যাট কেনা জীবনের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্তগুলোর একটি। একটি ফ্ল্যাট কেনার জন্য চূড়ান্ত সিদ্ধান্তে উপনীত হওয়ার মাঝে নিহিত থাকে কয়েক বছরের সঞ্চয় এবং পরিকল্পনা। তাই ফ্ল্যাট বাসা ক্রয়ের পূর্বে এর আনুষঙ্গিক বিষয়গুলো ভালো মত যাচাই করা উচিত। এই তাৎপর্যপূর্ণ সম্পত্তিটি অর্জনের সাথে জড়িত থাকে প্রচুর পরিমাণে ব্যাংক-ঋণ এবং প্রতি মাসের উপার্জন থেকে উল্লেখযোগ্য অর্থ সঞ্চয়। কোন একটি জ্ঞানের স্বল্পতার কারণে সমূহ বিপত্তিতে পড়তে হতে পারে। চলুন জেনে নেয়া যাক, একটি নতুন ফ্ল্যাট বাসা ক্রয়ের পূর্বে কোন বিষয়গুলো যাচাই করবেন।
ফ্ল্যাট বাসা ক্রয়ের পূর্বে যে ১০টি বিষয় যাচাই করা জরুরি
ফ্ল্যাটের বাজার মূল্যের সাথে বাজেটের সামঞ্জস্যতা
যে কোন পণ্য বা সেবার ক্রয়ের ন্যায় ফ্ল্যাট কেনারও প্রথম ধাপ হল বাজেট ঠিক করা। এই ক্রয়মূল্যের পরিসীমা যাচাইয়ের জন্য প্রথমেই কয়েকটি ফ্ল্যাট দেখা উচিত। বিভিন্ন অনলাইন সাইট থেকে শুরু করে বন্ধু-বান্ধব কিংবা আত্মীয়-স্বজনের সাথে কথা বলেও একটা ধারণা লাভ করা যেতে পারে। সব দিক বিবেচনা করে একটি নির্দিষ্ট সংখ্যা নির্ধারণ করে নিজে টাকা জমিয়ে তারপর ফ্ল্যাট কেনার দিকে অগ্রসর হওয়া উত্তম। এই কার্যকলাপটি একটি ত্রুটিহীন মজবুত আর্থিক পরিকল্পনার দাবি করে।
এছাড়া দীর্ঘমেয়াদে ব্যাঙ্ক থেকে ফ্ল্যাট ক্রয়ের জন্য ঋণ নিয়েও এই অর্থের সঙ্কুলান করা যেতে পারে। কিন্তু এপথে অগ্রসর হওয়ার পূর্বে প্রতি মাসে কিস্তি পরিশোধের সক্ষমতা থাকবে কিনা সে ব্যাপারে নিশ্চিত হওয়া আবশ্যক। নতুবা ভয়াবহ আর্থিক বিড়ম্বনার সম্মুখীন হতে হবে।
আরও পড়ুন: রাতে হাইওয়েতে গাড়ি চালানোর সময় প্রয়োজনীয় কিছু সতর্কতা
ফ্ল্যাটের অবস্থান
শহরের প্রধান সড়কের কাছাকাছি হলে সবচেয়ে বেশি, আর সড়ক ছেড়ে যত ভেতরে যাওয়া যায় ততই কমতে থাকে ফ্ল্যাটের দাম। শহরতলীর একদম বাইরে চলে গেলে দাম আরো পড়ে যায়। গ্রামাঞ্চল বা মাত্র শহরায়নের আওতায় পড়া প্লটের ফ্ল্যাটগুলো সাধারণত সবচেয়ে কম মূল্যের হয়ে থাকে। বাসস্থান যেখানেই খোঁজা হোক না কেন, বাজার, হাসপাতাল, শপিংমল, স্কুল ইত্যাদিকে ধারের কাছে রাখাটা সবারই চাওয়া।
অবশ্য প্রায় ক্ষেত্রে সবগুলো একসাথে পাওয়াটা সম্ভব হয়ে ওঠে না। এক্ষেত্রে গুরুত্বের ভিত্তিতে প্রয়োজনীয় বিষয়গুলোর একটা লিস্ট করা যেতে পারে। অতঃপর বিভিন্ন জায়গার সাথে তুলনা করে যেখানে ক্রয়মূল্যের সাথে সামঞ্জস্য রেখে অপেক্ষাকৃত বেশি সুবিধা পাওয়া যাচ্ছে, সে জায়গাটি নির্বাচন করা যেতে পারে।
মালিকানার ধরন
বাংলাদেশে সাধারণত ব্যক্তি এবং ডেভেলপারদের থেকে ফ্ল্যাট ক্রয় করা হয়ে থাকে। ডেভেলপার কোম্পানিগুলো থেকে ফ্ল্যাট কেনার সময় প্রথম শ্রেণীর ডেভেলপার নির্বাচন করার চেষ্টা করতে হবে। খরচ একটু বেশি হলেও তাদের কাছ থেকে ফ্ল্যাট কেনার বেশ কিছু সুবিধা রয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে অভিজ্ঞতা, জনশক্তির দক্ষতা, কাজের তত্ত্বাবধান, উন্নততর কাঁচামালের ব্যবহার, অসামান্য স্থাপত্য, হস্তান্তর-পরবর্তী পরিষেবা এবং কিস্তি সুবিধা। অন্যদিকে, ব্যক্তির কাছ থেকে ফ্ল্যাট কেনাতে তুলনামূলকভাবে সস্তা দাম ছাড়া আর কোনো বিশেষ সুবিধা নেই।
আরও পড়ুন: প্রাকৃতিক দুর্যোগের সময় পশু-পাখির সুরক্ষা: বন্যা, খরা ও শৈত্য প্রবাহে করণীয়
সরেজমিনে ফ্ল্যাটের আকার এবং নকশা যাচাই
ফ্ল্যাট কেনার সময় সরেজমিনে লিফট, শ্যাফ্ট, সিঁড়ি এবং বিশেষভাবে ফ্ল্যাটের মেঝে দেখে নেয়া উচিত। ফ্ল্যাটের বিজ্ঞাপনে প্রদত্ত মোট স্কয়ার ফিটের সিংহভাগ-ই (প্রায় ৭০ থেকে ৭৫ শতাংশ) থাকে ফ্ল্যাটের প্রবেশদ্বার থেকে শুরু করে বারান্দার আগ পর্যন্ত দেয়াল ঘেরা বসবাসের জায়গা। এর বাইরে ২৫ থেকে ৩০ শতাংশ লিফ্ট, লবি, ছাদ, গার্ডরুম, জেনারেটর কক্ষ প্রভৃতি কমনস্পেস।
বিক্রেতার কাছ থেকে ফ্ল্যাটের নকশা নিয়ে এগুলো ভালো করে মিলিয়ে দেখা জরুরি। এসময় আশেপাশের ফ্ল্যাট মালিকদের সাথে কথা বলে নেয়া যেতে পারে। পুরো জমিতে কত তলা বিল্ডিং উঠেছে এবং প্রতিটি ফ্লোরে কতটি করে ইউনিট তাও জানা দরকার। এখানে বোঝা যাবে সম্পূর্ণ জমিটি সমান ভাবে বন্টন হচ্ছে নাকি কমবেশি হচ্ছে।
ফ্ল্যাটের বৈধতা পরীক্ষা
এটি সবচেয়ে বেশি দরকারি বিষয় এবং ফ্ল্যাট নির্বাচন করার সময়েই এই কাজটি করা উচিত। অনেকেই বায়না করার পর হঠাৎ ফ্ল্যাটের অবৈধতার কথা জানতে পেরে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। নির্বাচিত ফ্ল্যাট, সম্পূর্ণ বিল্ডিং ও এর এলাকাটি সরকার তথা রাজউক কর্তৃক অনুমোদিত কিনা এবং অন্য কোনো আইনি সমস্যা থেকে মুক্ত কিনা তা পরীক্ষা করতে হবে। এর জন্য রাজউকের কর্তৃক প্রদানকৃত সনদপত্র বিশেষ করে ফার বা এফএআর(ফ্লোর এরিয়া রেশিও) দেখে নিতে হবে। বিদ্যুৎ সংযোগ আছে কি না এবং সেটি বাণিজ্যিক না আবাসিক তা পরীক্ষা করে দেখতে হবে।
আরও পড়ুন: শিশুদের ই-পাসপোর্টের নিয়ম: কীভাবে আপনার অপ্রাপ্ত বয়স্ক সন্তানের পাসপোর্ট করবেন
ফ্ল্যাট বা জমির রেকর্ড পরীক্ষা
অ্যাপার্টমেন্ট কেনার আগে তার জমির রেকর্ড অনুসন্ধান আরো একটি আবশ্যক বিষয়। জমির মাটির গুণাগুণ এবং এর ভূসংস্থান সম্পর্কে জানতে হবে। মুল বিষয় যেটি দেখতে হবে তা হচ্ছে ফ্ল্যাটের কোন বকেয়া পাওনা আছে কিনা যা এখনও নিষ্পত্তি হয়নি। এর জন্য ফ্ল্যাটের খাজনা-খারিজের কাগজপত্রের বৈধতা যাচাই করতে হবে। খাজনা বাকি থাকার দরুণ সম্পত্তিটি কখনো নিলামে উঠেছে কি না তা খুঁজে বের করা অতীব জরুরি।
ফ্ল্যাটটি বা যে জমিতে ফ্ল্যাটটি আছে তা আগে কারা কিনেছেন তার জন্য এর বায়া দলিল পরীক্ষা করতে হবে। ফ্ল্যাটের নামজারি খতিয়ানের পাশাপাশি সর্বশেষ জরিপ বিএস(বাংলাদেশ সার্ভে)সহ বিভিন্ন সময়ের জমি জরিপ যেমন সিএস(ক্যাডেস্ট্রাল সার্ভে), এসএ(স্টেট অ্যাকুইজিশন সার্ভে), আরএস(রেভিশনাল সার্ভে)ও দেখতে হবে।
ঝামেলা-মুক্ত ফ্ল্যাট যাচাই
নিষ্কন্টক পণ্য বা সেবার বৈশিষ্ট্য হলো সেটি আরো কোন ক্রেতার কাছে বিক্রি করা হয় নি। এই বিষয়টি ফ্ল্যাট কেনার ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য। ফ্ল্যাটটি কোন ব্যাঙ্কের নিকট বন্ধক দেয়া আছে কিনা তা খুঁজে বের করা আবশ্যক। নামজারি মামলা সহ খতিয়ানে ফ্ল্যাটের মালিকের নাম পাওয়া গেলেই কাজ শেষ নয়। দেখতে হবে মালিক ফ্ল্যাটটি বিক্রির জন্য কারো উপর দায়িত্ব ভার অর্পন করেছেন কিনা। দায়িত্বপ্রাপ্ত লোকের বৈধতাও যাচাই করা দরকার। কোনো ধরনের মধ্যস্থতাকারীর মাধ্যমে না কিনে সরাসরি মালিক ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে ফ্ল্যাট কেনা উত্তম।
আরও পড়ুন: কোন ধরনের আগুন কীভাবে নেভাবেন?
নিরাপত্তা সহ যাবতীয় সুযোগ-সুবিধা
ডেভেলপার বা ব্যক্তি মালিক; ফ্ল্যাট বিক্রেতা যেই হোক না কেন, ফ্ল্যাটের মূল্যের উপযুক্ততা নিরুপন করার জন্য দেখে নেয়া উচিত যে ফ্ল্যাটটিতে কি কি সুযোগ-সুবিধা পাওয়া যাচ্ছে। গ্যাস সংযোগ এক সময় ফ্ল্যাটের বৈধতার বিষয় ছিলো। কিন্তু আজকাল নতুন ফ্ল্যাটে সরকার গ্যাস সংযোগ না দেয়ায় গ্যাস ছাড়াই ফ্ল্যাট ক্রয় করতে হয়। তবে নিরবচ্ছিন্ন গ্যাস সংযোগ আবাসনের নির্ভরযোগ্যতা আরো বাড়িয়ে দেয়।
বাড়িতে থাকার মত নিরাপত্তা ব্যবস্থার সাথেও কখনো আপস করা যায় না। অ্যাপার্টমেন্ট ম্যানেজমেন্ট সিস্টেমের নিরাপত্তা পরিমাপ করার তাগিদে নিশ্ছিদ্র প্রহরা, সন্তোষজনক সিসিটিভি নজরদারি, ফায়ার অ্যালার্ম, জরুরি প্রস্থান ইত্যাদির প্রতি দৃষ্টিপাত করা আবশ্যক।
ফ্ল্যাট ক্রয়ে ব্যাংক ঋণের সুবিধা
ডেভেলপারদের কাছ থেকে ফ্ল্যাট ক্রয়ের ক্ষেত্রে এই বিষয়টিতে গুরুত্ব দেয়া যেতে পারে। বেশিরভাগ ব্যাংকই নামীদামী ডেভেলপারদের গ্রাহকদের ঋণ প্রদান করে থাকে। এক্ষেত্রে যে প্রতিষ্ঠানের নিকট থেকে ফ্ল্যাট ক্রয়ে মনস্থির করা হয়েছে তাদের নেটওয়ার্কে থাকা ব্যাঙ্কগুলোতে খোঁজ নেয়া যেতে পারে। এতে ডেভেলপারদের সুখ্যাতির ব্যাপারেও নিশ্চিত হওয়া যাবে। আর যদি তাদের সাথে কোন ব্যাঙ্ক যুক্ত না থাকে, তাহলে তাদের কাছ থেকে ফ্ল্যাট কেনার ব্যাপারটি পুনর্বিবেচনা করা উচিত।
আরও পড়ুন: এটিএম বুথে কার্ড আটকে গেলে কি করবেন ? এই সমস্যা থেকে পরিত্রাণের উপায় কি?
ফ্ল্যাট বায়নানামা ও রেজিস্ট্রেশনের গুরুত্বপূর্ণ শর্তাবলী
সবশেষে টোকেন মানি দিয়ে ক্রেতা-বিক্রেতার ফ্ল্যাট বিক্রির চুক্তি করার পালা। টোকেন মানির বিনিময়ে বিক্রেতা ক্রেতাকে একটি বরাদ্দপত্র সরবরাহ করেন। তারপর বাকি পরিমাণের জন্য ক্রেতা, ব্যাঙ্ক এবং বিক্রেতার মধ্যে একটি ত্রিপক্ষীয় লেনদেন সংঘটিত হয়। একই সাথে ভুমি অফিস, ক্রেতা ও বিক্রেতার মাঝে একটি ত্রিপক্ষীয় চুক্তি সাক্ষরিত হয়, যাকে ফ্ল্যাট বা জমি বিক্রয় চুক্তিপত্র বলা হয়। এর মাধ্যমে সম্পত্তিটি সরকারের নিকট রেজিস্ট্রেশন হয় এবং চূড়ান্তভাবে সেটি ক্রেতার নিকট হস্তান্তর হয়।
এই চুক্তিতে ব্যাংকের মাধ্যমে লেনদেনকৃত টাকার পরিমাণ উল্লেখ থাকে। বায়না ও বিক্রয় চুক্তিনামা উভয় চুক্তিপত্র স্বাক্ষর করার আগে বিশদভাবে পড়ে বুঝে নেয়া উচিত। ক্রেতার ফ্ল্যাটে ওঠার সময়রেখার একটি সুস্পষ্টতা থাকা উচিত বায়নানামাতে। প্রায়ই ডেভেলপাররা অতিরিক্ত সময় আবেদন করে। এই আবেদনের সঠিক যৌক্তিতা বিচারপূর্বক তার শর্তগুলো স্পষ্টভাবে উল্লেখ থাকা উচিত।
অন্যদিকে, ক্রেতা কত কিস্তিতে ফ্ল্যাটের টাকা পরিশোধ করবেন তা বায়না দলিলে স্পষ্টভাবে উল্লেখ করতে হবে। কিস্তি শেষে ফ্ল্যাট স্থানান্তরের দিনক্ষণ এমনকি যদি কোন কারণে ক্রয় করা না যায়, সেক্ষেত্রে এটি কীভাবে নিষ্পত্তি করা হবে তারও স্পষ্ট উল্লেখ থাকতে হবে।
আরও পড়ুন: বন্যা বা ঘূর্ণিঝড়ের পূর্বেই যেসব খাবার সংরক্ষণ করা জরুরি
শেষাংশ
ফ্ল্যাট বাসা ক্রয়ের পূর্বে এই বিষয়গুলোর দিকে খেয়াল রাখলে ঝামেলাহীনভাবে সম্পন্ন হবে ফ্ল্যাট হস্তান্তর। এটা নিছক একটি পণ্য বা সেবা কেনা নয়, বরং একজন ক্রেতার জীবনের উল্লেখযোগ্য সময়কে বিনিয়োগ করা। তাই এই সম্পত্তি কেনার ক্ষেত্রে কারও দ্বারা প্রলুব্ধ হয়ে তাড়াহুড়ো করে কোন চুক্তিতে যাওয়া ঠিক নয়। দলিলপত্রের ঠিক-বেঠিক নিয়ে দ্বিধান্বিত থাকলে একজন দক্ষ আইনজীবীকে দেখিয়ে নেওয়া ভালো। উদ্দেশ্য যেখানে জীবনকে একটি পরম নির্ভরতার স্থায়ী ঠিকানা দেয়া, তাই তার আগে প্রতিটি পদক্ষেপ সতর্ক হওয়া চাই।