কিছু এনজিও রোহিঙ্গাদের জন্য বিদেশ থেকে আসা তহবিলের ৭৫ শতাংশ অর্থ নিজ কর্মীদের পেছনে ব্যয় করছে বলে ১৩ মার্চ অভিযোগ করেন মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক।
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে আইনশৃঙ্খলা সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের সাথে আলাপকালে তিনি আরও বলেছিলেন, ‘গোয়েন্দা প্রতিবেদন অনুযায়ী দেখা যাচ্ছে, এনজিওগুলো খারাপ উদ্দেশ্য নিয়ে কাজ করছে। আর সেপ্টেম্বর পর্যন্ত তাদের হোটেল ভাড়া বাবদ ব্যয় হয়েছে প্রায় দেড় শ কোটি টাকা। আর ফ্ল্যাট ভাড়া দিয়েছে আট কোটি টাকার উপরে।’
মন্ত্রীর এসব অভিযোগে উদ্বেগ জানিয়ে বিবৃতিতে বলা হয়, ‘বাংলাদেশ আইএনজিও ফোরাম মাননীয় মন্ত্রী এবং সংশ্লিষ্ট সবাইকে আশ্বস্ত করছে যে আন্তর্জাতিক এনজিওগুলো এসব অভিযোগের পাত্র হতে পারে না। আমরা এ জাতীয় অভিযোগের প্রেক্ষিতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের যে কোনো তদন্তে সম্পূর্ণ উন্মুক্ত থেকে পূর্ণ সহযোগিতা দেয়ার নিশ্চয়তা দিচ্ছি। এছাড়া আমরা দ্ব্যর্থহীন কণ্ঠে জানাতে চাই যে স্বচ্ছতা এবং দায়বদ্ধতা নিশ্চিত করার জন্য আমাদের কর্মসূচি এবং পরিচালন সম্পর্কে জননিরীক্ষার স্বার্থে প্রয়োজনীয় তথ্য সরবরাহ করব।’
এতে আরও বলা হয়, আন্তর্জাতিক এনজিওগুলো বাংলাদেশ সরকারের সব বিধি-বিধান কঠোরভাবে প্রতিপালন করে বিভিন্ন প্রকারের পরিচালন ব্যয় যেমন- পারডিয়েম, বাসস্থান ও যাতায়াত খরচ মিটিয়ে থাকে। তারা প্রত্যেকে দায়বদ্ধতা নিশ্চিত করার জন্য নিয়মিত এবং পদ্ধতিগতভাবে এনজিও ব্যুরোর কাছে রিপোর্ট করে থাকেন। তাদের প্রত্যেকের কর্মসূচি স্বাধীন ও স্বতন্ত্রভাবে মূল্যায়ন করা হয় এবং তাদের আর্থিক লেনদেন তালিকাভুক্ত অডিট ফার্ম দ্বারা অডিট করা হয়।
রোহিঙ্গা কর্মসূচিতে কর্মরত সব আন্তর্জাতিক এনজিও আর্থিক নিয়ম-শৃঙ্খলা ও বিধি-বিধান সরকার অনুমোদিত পরিচালন মানদণ্ড অনুযায়ী অত্যন্ত কঠোরভাবে প্রতিপালন করে। প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের অধীন এনজিও অ্যাফেয়ার্স ব্যুরোর সুনির্দিষ্ট অনুমোদনের প্রেক্ষিতেই কার্যক্রম গ্রহণ করা হয়ে থাকে। এনজিও অ্যাফেয়ার্স ব্যুরো সুনির্দিষ্ট কর্মসূচির পরিপ্রেক্ষিতে বিস্তারিত আর্থিক বিবরণ এবং খাত ভিত্তিক বাজেট বিশ্লেষণ করেই সুনির্দিষ্ট প্রকল্প অনুমোদন করে, যোগ করা হয় বিবৃতিতে।
বিভিন্ন জাতিসংঘ প্রতিষ্ঠান, আন্তর্জাতিক এনজিও এবং দেশীয় এনজিও সরকারের সাথে একাত্ম হয়ে রোহিঙ্গাদের ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মসূচিতে কাজ করে যাচ্ছে জানিয়ে বিবৃতিতে বলা হয়, রোহিঙ্গাদের জন্য মানবিক সাহায্য কর্মসূচিতে সবার লক্ষ্য এক হলেও বিভিন্ন ধরনের প্রতিষ্ঠানের প্রশাসন, পরিচালন পদ্ধতি ও বাজেট পদ্ধতি ভিন্ন ভিন্ন।