ক্ষমতাসীনদের ইঙ্গিত করে তিনি বলেন, ‘ওরা যতই দশ নম্বরি করুক আমরা সবাই ভোট দিতে যাব। হাজার হাজার মানুষ ভোট দিতে যাবে। দেশের সব ভোটারকে আগামী নির্বাচন ঘিরে ভোটকেন্দ্র পাহারা দিতে হবে। টাকা দিয়ে ভোট কেনা হয়েছে কিনা, তা সংঘবদ্ধ হয়ে প্রতিহত করতে হবে। জনগণকে বিশ্বাস করতে হবে যে আমরাই সব ক্ষমতার উৎস, আমরাই দেশের প্রকৃত মালিক।’
শনিবার বিকালে সুপ্রিম কোর্ট চত্বরে জাতীয় আইনজীবী ঐক্যফ্রন্ট আয়োজিত আইনজীবীদের মহাসমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
কামাল হোসেন অভিযোগ করে বলেন, ‘এই সরকারের আমলে বিচার বিভাগের ওপর আঘাত এসেছে, বিচার বিভাগের ওপর হস্তক্ষেপ হচ্ছে, নিম্ন আদালতের দায়িত্ব পালন অসম্ভব করে দেয়া হচ্ছে। সাবেক প্রধান বিচারপতি এসকে সিনহাকে ষোড়শ সংশোধনীর রায় দেয়া নিয়ে শাস্তি পেতে হয়েছে। সাতজন বিচারপতি ওই রায়ে স্বাক্ষর করেছেন, কিন্তু একজনকে শাস্তি পেতে হলো।’
২০১৪ সালের নির্বাচন নিয়ে তিনি বলেন, ‘নির্বাচন ছাড়াই ১৫৪ জনকে সংসদ সদস্য করা হয়েছে। এ নিয়ে আবার গেজেটও প্রকাশ করা হয়েছে। আমি মনে করি এই গেজেট করে তারা প্রেসের কাগজ নষ্ট করেছে।’
জাতীয় ঐক্যফন্টের এই শীর্ষ নেতা আরও বলেন, ‘এবার নির্বাচনে দুই কোটি তরুণ ভোটার। এরাই দেশের মালিক। নির্বাচনকে ঘিরে গুণ্ডাপাণ্ডা থাকবে, তবু আমাদের এগিয়ে যেতে হবে। ঘরে ঘরে মানুষকে গিয়ে বোঝাতে হবে।’
উপস্থিত আইনজীবীদের উদ্দেশ্যে ড. কামাল বলেন, ‘আপনারা এই অনুষ্ঠান শেষে জেলা আইনজীবী সমিতিগুলোকে নিয়ে এই সভার সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন করবেন। কারণ, সময় খুবই কম।’
‘এর আগে ২০১৪ সালের নির্বাচনের পর দ্রুত আরেকটি নির্বাচন দেয়ার কথা সরকারের পক্ষ থেকে বলা হলেও পাঁচ বছরেও সে নির্বাচন হয়নি। এই পাঁচ বছরে আমরা ভোটাধিকার থেকে বঞ্চিত হয়েছি। সংবিধানের মূলমন্ত্র গণতন্ত্র। কিন্তু এই পাঁচ বছরে কি আমরা সে গণতন্ত্র দেখতে পেয়েছি? নির্বাচন দেবে বলে তারা ভাওতাবাজি করেছে। ভাওতাবাজিতে পুরস্কার পদ্ধতি থাকলে তারা মেডেল পাওয়ার যোগ্য হত,’ যোগ করেন তিনি।
খালেদা জিয়ার মুক্তি প্রসঙ্গে কামাল হোসেন বলেন, ‘তিনি দেশের প্রধানমন্ত্রী ছিলেন। তার কারামুক্তি চাই। যেখানে এতদিন পর একটি গ্রহণযোগ্য নির্বাচন হতে যাচ্ছে সেখানে খালেদা জিয়াকে, একটি বড় দলের নেত্রীকে পরিত্যক্ত জেলে রাখা হয়েছে। তাকে মুক্তি দিতে হবে। তাকে ছাড়াও হাজার হাজার নেতাকর্মীকে কারাগারে রেখে নির্বাচনে বৈষম্য সৃষ্টি করা হচ্ছে। এতে গণতন্ত্র ফিরে আসবে না, সংবিধান সমুন্নত থাকবে না।’
সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সভাপতি ও আইনজীবী ঐক্যফ্রন্টের আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট জয়নাল আবেদীনের সভাপতিত্বে এবং ব্যারিস্টার এএম মাহবুবব উদ্দিন খোকন ও অ্যাডভোকেট সানাউল্লাহ মিয়ার পরিচালনায় মহাসমাবেশে আরও বক্তব্য দেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, সাবেক স্পিকার ও বিএনপি নেতা ব্যারিস্টার জমিরউদ্দিন সরকার, খন্দকার মাহবুব হোসেন, নিতাই রায় চৌধুরী, মীর নাসির উদ্দিন প্রমুখ।