ঢাকা, ২৬ নভেম্বর (ইউএনবি)- আওয়ামী লীগের মনোনয়ন দেয়ার পরের দিন আজ দেশের আরেক বৃহত্তম রাজনৈতিক দল বিএনপির মনোনয়ন দেয়ার কথা রয়েছে।
বিএনপির একাধিক সিনিয়র নেতা রবিবার রাতে ইউএনবিকে জানান, সোমবার গুলশানের চেয়াপার্সনের কার্যালয় থেকে মনোনয়ন দেয়ার প্রক্রিয়া শুরু হবে।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মওদুদ আহমেদ বলেন, আমরা আনুষ্ঠানিকভাবে সোমবার থেকে মনোনয়ন দেয়া শুরু করবো।
দলের আরেক স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, আমরা আমাদের প্রার্থীদের তালিকা চূড়ান্ত করেছি। এখন আমারা জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট এবং আমাদের জোটের সাথে আলোচনা করছি।
প্রার্থীদের যোগ্যতা, সক্ষমতা এবং জনপ্রিয়তার ওপর ভিত্তি করে তালিকা চুড়ান্ত করা হয়েছে বলেও জানান তিনি।
দলের অভ্যন্তরীণ সূত্র জানায়, দলের কয়েকজন নেতা রবিবার রাতের মনোনয়ন পেয়েছেন এবং অন্যদের আজ মনোনয়ন দেয়া হবে। ফলে সারাদেশের মনোনয়ন প্রত্যাশীরা মনোনয়ন নিতে রাজধানীতেই অবস্থান করছেন।
দূরের জেলাগুলো থেকে আগত প্রার্থীদের আজ সবার আগে মনোনয়ন দেয়া হতে পারে বলেও সূত্রটি জানিয়েছে।
সূত্রটি আরও জানান, প্রথম দিনে ১৫০ থেকে ২০০ আসনের মনোনয়ন চিঠি দেয়া হতে পারে এবং অন্য আসনগুলোতে পরবর্তীতে দেয়া হবে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থায়ী কমিটির এক নেতা বলেন, সাধরণ ২০০১ এবং ২০০৮ সালে বিএনপির হয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করা প্রার্থীদের অগ্রাধিকার দেয়া হবে। এছাড়াও দলের অভ্যন্তরীণ জরিপ অনুযায়ী জনপ্রিয় প্রার্থীদের বিষয়টিও বিবেচনায় থাকবে।
অনেক পুরাতন প্রার্থীই এবার মনোনয়ন পাবে না জানিয়ে তিনি বলেন, রাজধানীতে অনেক আসনে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট ও ২০ দলীয় জোট থেকে প্রার্থী আসতে পারে।
রাজধানীতে বিএনপির অনেক ‘হেভিওয়েট’ প্রার্থী বাদ পড়ার সম্ভাবনার কথা জানিয়ে তিনি বলেন, দুই জোটকে রাজধানীতে ৫ থেকে ৭টি আসন ছেড়ে দিতে হবে।
তবে যেসব আনগুলোতে দুই জোটের সাথে ভাগাভাগি করা হবে, সেগুলোতে বিএনপির প্রার্থী শুধু মডেল হিসেবে থাকতে পারে বলেও ইঙ্গিত দেন ওই স্থায়ী কমিটির সদস্য।
এদিকে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর দলের অন্য সিনিয়র নেতাদের সাথে দুই জোটের সঙ্গে আসন ভাগাভাগির বিষয় নিয়ে রবিবার রাতেও বিএনপি চেয়ারপার্সনের গুলশান কার্যালয়ে আলোচনায় বসে ছিলেন বলে জানা যায়।
বিএনপি মহাসচিরে সাথে ঘনিষ্ঠ এমন এক নেতা ই্উএনবিকে বলেন, রবিবার রাতেই দলের ২০০ প্রার্থীর মনোনয়ন চিঠিতে স্বাক্ষর করা হয়ে গেছে।
গণফোরামের সাথে ১০টি আসন ভাগাভাগির কথা জানিয়ে ওই নেতা বলেন, এছাড়াও নাগরিক ঐক্য, জেএসডি এবং কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের সাথে তিনটি করে আসন ভাগাভাগি করা হয়েছে।
এছাড়াও ২০ দলীয় জোটের প্রার্থীদের জন্যও ৪০টি আসন রাখা হয়েছে। তবে দুই জোটের পক্ষ থেকে আরও অনেক বেশী আসন দাবি করা হয়েছে বলেও জানান ওই নেতা।
২০ দলীয় জোটের পক্ষ থেকে নিবন্ধন হারানো জামায়ত অন্তত ৩৫টি আসন চেয়েছে কিন্তু বিএনপি ইসলামিক এই দলটিকে ২৫টির বেশি আসন দিতে রাজি নয়।
এছাড়াও অলি আহমেদ নেতৃত্বাধীন দল এলডিপি বিএনপির কাছে ছয়টি আসন দাবি করলেও তাদের চারটি আসন দেয়ার ব্যাপারে সম্মত হয়েছে বিএনপি।
পাশাপাশি ভোলা-১ আসনটি বিজেপি চেয়ারম্যান আন্দালিব রহমান পার্থ, চট্টগ্রাম-৫ কল্যাণ পর্টির চেয়ারম্যান সৈয়দ মোহাম্মদ ইব্রাহিম, পঞ্চগড়-২ জাগপার তাসমিনা প্রধান, নীলফামারী-১, বাংলাদেশ পিপলস পর্টির রিতা রহমান, যশোর-৫ ও সুনামগঞ্জ-৩ পর্যায়ক্রমে জামায়াত উলেমা-ই-ইসলামের মুফতি ওয়াক্কাস ও শানুর পাশার সাথে এবং যশোর-৪ মাইনোরিটি জনতা পার্টি সুপ্রিতি কুমার মন্ডলের সাথে ভাগাভাগির ব্যাপারে সিদ্ধান্ত হয়েছে।
এছাড়াও হবিগঞ্জ-৪ আসনটি খেলাফত মজলিসের মহাসচিব আহমেদ আবুল কাদের, নড়াইল-২ এনপিপি’র ফরিদুজ্জামান ফরাদের সাথে, গাইবান্ধা-৩ জাপা’র (জাফর) টিআই ফজলে রাব্বি এবং পিরোজপুর- ১ একই দলের মোস্তফা জামাল হায়দারেকে মনোনয়ণ দেয়া হতে পারে।
এছাড়াও জোটের অন্য শরীকদলগুলো এক বা একাধীক আসন দাবি করলেও ভেবেচিন্তে পরবর্তীতে সিন্ধান্ত নিবে, তেমনটাই জানা গেছে।