ভারত
বাংলাদেশের সঙ্গে উন্নয়ন অংশীদারিত্ব ও সহযোগিতার প্রতি ভারতের প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত প্রণয় ভার্মার
বাংলাদেশে নিযুক্ত ভারতীয় হাইকমিশনার প্রণয় ভার্মা দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য ও বিনিয়োগ বৃদ্ধি করার ও মানুষে-মানুষে বিনিময়ের প্রসারের জন্য বাংলাদেশের সঙ্গে উন্নয়ন অংশীদারিত্ব ও সহযোগিতার প্রতি ভারতের প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করেছেন।
তিনি আমাদের স্থলবন্দরসমূহের সংযোগ ও বাণিজ্য অবকাঠামো শক্তিশালী করার এবং সীমান্ত হয়ে পণ্য ও মানুষের চলাচল ক্রমান্বয়ে সহজতর করার জন্য উভয় পক্ষের অব্যাহত প্রচেষ্টার ওপর জোর দেন।
বৃহস্পতিবার (২৩ ফেব্রুয়ারি) বেলা ১২ টার দিকে ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তে পেট্রাপোল-বেনাপোল ইন্টিগ্রেটেড চেকপোস্ট (আইসিপি) পরিদর্শনে আসেন। হাইকমিশনার বেনাপোল বন্দরে এসে পৌঁছালে বন্দরের চেয়ারম্যান আলমগীর হোসেন ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা জানান।
এসম তিনি উভয় পক্ষের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন এবং সীমান্ত ব্যবস্থাপনা, বাণিজ্য সহজীকরণ ও অবকাঠামোগত উন্নয়ন সম্পর্কিত বিভিন্ন বিষয়ে আলোচনা করেন।
হাইকমিশনার পেট্রাপোল-বেনাপোল আইসিপির তাৎপর্য এবং পণ্য ও যাত্রীদের চলাচলের সুবিধার্থে এর সক্ষমতা বাড়ানোর প্রচেষ্টার কথা উল্লেখ করেন।
আরও পড়ুন: জাহাজের শুভেচ্ছা সফর ভারত-বাংলাদেশের বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কের প্রতীক: প্রণয় ভার্মা
পেট্রাপোল-বেনাপোল সীমান্ত ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে বাণিজ্যের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি প্রবেশদ্বার, যেখানে স্থল-ভিত্তিক দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্যের ৭০ শতাংশেরও বেশি এই স্থলবন্দর দিয়ে হয়ে থাকে।
২০১৭ সালের আগস্ট থেকে এই সীমান্তটি চব্বিশ ঘন্টা চালু রয়েছে।
যাত্রীদের চলাচলের ক্ষেত্রে পেট্রাপোল-বেনাপোল আইসিপির গুরুত্বের প্রেক্ষিতে, ২০২১ সালের সেপ্টেম্বরে আধুনিক সুযোগ-সুবিধা সম্বলিত একটি নতুন প্যাসেঞ্জার টার্মিনাল বিল্ডিং উদ্বোধন করা হয়েছিল।
যাত্রীদের ক্রমবর্ধমান আন্তঃসীমান্ত চলাচলের চাহিদা পূরণের জন্য দ্বিতীয় একটি প্যাসেঞ্জার টার্মিনাল বিল্ডিংও নির্মাণাধীন রয়েছে।
এছাড়াও, ভারত সরকারের অনুদান সহায়তায় দ্বিতীয় একটি কার্গো টার্মিনাল গেট নির্মিত হতে যাচ্ছে, যা প্রতিদিনের আন্তঃসীমান্ত যানবাহনের যাতায়াতকে দ্বিগুণ করবে বলে আশা করা হচ্ছে।
বাংলাদেশ বিশ্বে ভারতের বৃহত্তম উন্নয়ন সহযোগী এবং দক্ষিণ এশিয়ায় সবচেয়ে বড়ো বাণিজ্য অংশীদার। বিগত পাঁচ বছরে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য ৭ বিলিয়ন মার্কিন ডলার থেকে প্রায় ১৮ বিলিয়ন মার্কিন ডলারে উন্নীত হয়েছে।
ভারতে বাংলাদেশের রপ্তানি গত তিন বছরে ধারাবাহিকভাবে ১ বিলিয়ন মার্কিন ডলার ছাড়িয়েছে, যা ২০২১-২২ সালে প্রায় ২ বিলিয়ন মার্কিন ডলারে পৌঁছায়। বৈচিত্র্যময় বাজার নিয়ে ভারত এশিয়ায় বাংলাদেশের জন্য শীর্ষ রপ্তানি গন্তব্য হিসেবে আবির্ভূত হয়েছে।
হাইকমিশনার বলেন, বাংলাদেশের সঙ্গে আমাদের সংযোগ ও বাণিজ্য অবকাঠামো উন্নয়ন প্রকল্পগুলো আমাদের দীর্ঘস্থায়ী বন্ধুত্ব এবং এই দুই দেশ ও জনগণের অগ্রগতি ও সমৃদ্ধি পরস্পরের সাথে জড়িত থাকার যৌথ প্রত্যয়ের ওপর ভিত্তি করে নির্মিত।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশ সবসময় ভারতের কাছে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার পায়: প্রধানমন্ত্রীকে ভারতীয় হাইকমিশনার
বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে ভারতীয় হাইকমিশনারের শ্রদ্ধা
প্রযুক্তিখাতের উন্নয়নে একসঙ্গে কাজ করতে চায় বাংলাদেশ-ভারত
উদীয়মান প্রযুক্তিকে পরবর্তী স্তরে নিয়ে যাওয়ার জন্য একসঙ্গে কাজ করার আগ্রহ প্রকাশ করেছে বাংলাদেশ ও ভারত।
রবিবার তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলকের সঙ্গে ভারতের পশ্চিমবঙ্গের বেঙ্গল চেম্বার অব ইন্ডাস্ট্রিজের প্রেসিডেন্ট সুবীর চক্রবর্তীর নেতৃত্বে ৯ সদস্যের একটি প্রতিনিধি দলের বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।
বৈঠকে এ আগ্রহের কথা জানানো হয়।
বৈঠকে তারা থ্রিডি, এআই এবং অন্যান্য ডিজিটাল ট্রান্সফরমেশনসহ উদীয়মান প্রযুক্তিতে সহযোগিতার সুযোগ সৃষ্টির বিষয়ে আলোচনা করেন।
আরও পড়ুন: ৩ সেপ্টেম্বর থেকে বাংলাদেশ-ভারত ফ্লাইট চালু হতে পারে
বেঙ্গল চেম্বারের নেতারা বলেন, আইসিটি হচ্ছে নলেজ বেইজড ইন্ডাস্ট্রি। তাই যৌথভাবে কাজ করলে সুদূরপ্রসারী সুফল পাওয়া যাবে। নেতারা স্টার্টআপ, এগ্রিটেক, সাইবার সিকিউরিটি, হেলথ ডেলিভারি সিস্টেম, আইটি ইনোভেশন সেন্টারসহ ডিজিটাইজেশনে যৌথ-সহযোগিতার মাধ্যমে কাজ করার ওপর গুরুত্বারোপ করেন।
বৈঠকে বাংলাদেশ এবং ওয়েস্ট বেঙ্গলের মধ্যে স্টার্টআপ ইকো-সিস্টেম গড়ে তুলতে স্টার্টআপ অথবা ইয়াং অন্টারপ্রেনিয়র সামিট এবং স্টার্টআপ হ্যাকাথন আয়োজন করার বিষয়ে একমত পোষণ করা হয়।
আইসিটি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক বলেন, ভারত এবং বাংলাদেশের প্রযুক্তি কোম্পানিগুলোর মধ্যে স্টার্টআপ এক্সচেঞ্জ, বিটুবি ম্যাচমেকিং এবং নলেজ শেয়ারিংয়ের মাধ্যমে ভবিষ্যতে অংশীদারিত্বের ভিত্তিতে আমরা এগিয়ে যেতে চাই।
তিনি ইমার্জিং টেকনোলজি বিশেষ করে মাইক্রো প্রসেসর ডিজাইন, আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স (এআই), রোবটিক্স এবং সাইবার সিকিউরিটি এ চারটি এরিয়াতে যৌথভাবে কাজ করতে বেঙ্গল চেম্বারের প্রতিনিধি দলের কাছে সহযোগিতা কামনা করেন।
তিনি বলেন, আমাদের দেশে অনেক মেধাবী শিক্ষার্থী রয়েছে। তাদের আরও দক্ষ করে গড়ে তুলতে দু’দেশের শিক্ষাঙ্গণ ও ইন্ডাস্ট্রির মধ্যে সহযোগিতা বাড়াতে হবে।
প্রতিমন্ত্রী বাংলাদেশের আইসিটি খাতে বিনিয়োগ করতে ভারতের বেঙ্গল চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির নেতাদের প্রতি আহ্বান জানান।
তারা দু’দেশের মধ্যে পারস্পরিক সম্পর্ক আরও ঘনিষ্ট ও সৌহার্দপূর্ণ হবে বলেও প্রত্যাশা ব্যক্ত করেন।
আরও পড়ুন: কুড়িগ্রামের বালিয়ামারীতে বাংলাদেশ-ভারত সীমান্ত হাট চালু ডিসেম্বরে
বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্ক হৃদয়ের মাধ্যমে সংযুক্ত: দোরাইস্বামী
হিলি সীমান্তে বিএসএফের গুলিতে বাংলাদেশি যুবক নিহত
দিনাজপুরের হিলি সীমান্তে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর (বিএসএফ) গুলিতে এক বাংলাদেশি যুবক নিহত হয়েছেন বলে জানিয়েছে বাংলাদেশি স্থানীয়রা। শুক্রবার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে সীমান্তের ২৮৫ এর ২৫ সাব সীমানা পিলারের পাশে ভারতের অভ্যন্তরে এ ঘটনা ঘটে।
নিহত শাহাবুল হোসেন বাবু (২৪) হাকিমপুরের ধরন্দা গ্রামের আবুল হোসেনের ছেলে।
আরও পড়ুন: হিলি স্থলবন্দরে ১৮ বছর পড়ে থাকা ৫০ ট্রাক পণ্য ধ্বংস
হাকিমপুর পৌরসভার ওয়ার্ড কাউন্সিলর মো. রফিকুল ইসলাম জানান, সন্ধ্যার পর সীমান্তের বাসিন্দারা দুই রাউন্ড গুলির শব্দ শুনতে পায়। ঘটনাটি আমাকে জানালে আমি ভারতে খোঁজ নিয়ে জানতে পারি শাহাবুল হোসেন বাবু নামের এক যুবক নিহত হয়েছে। সে বাংলাদেশের ধরন্দা গ্রামের আবুল হোসেনের ছেলে শাহাবুল।
২০ বিজিবি ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল রফিকুল ইসলাম ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, বিএসএফের পক্ষ থেকে এখনও লাশ হস্তান্তর করা হয়নি।
শিগগিরই এ বিষয়ে একটি পতাকা বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে বলে জানান তিনি।
আরও পড়ুন: হিলি ও লালমনিরহাটের রেল ও সড়ক পথ ব্যবহারের প্রস্তাব দিয়েছে ভারত: রেলমন্ত্রী
৪.৩ মাত্রার ভূমিকম্পে কেঁপে উঠল সিলেট
ভারতের মেঘালয় রাজ্যের ৪ দশমিক ৩ মাত্রার ভূমিকম্পে কেঁপে উঠেছে সিলেটে। বৃহস্পতিবার সকাল ৯টা ৫৬মিনিটে সিলেট মহানগরীতে কম্পন অনুভূত হয়।
জানা যায়, ভূমিকম্পের উৎপত্তিস্থল বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তরের ঢাকা অফিস থেকে ২০৩ কিলোমিটার উত্তর-পূর্বে এবং ছাতকের ১১ কিলোমিটার উত্তর-পূর্বে ভারতের মেঘালয় রাজ্যে।
তবে তাৎক্ষণিকভাবে হতাহতের কোনো খবর পাওয়া যায়নি।
সিলেট আবহাওয়া অধিদপ্তরের আবহাওয়াবিদ সাঈদ আহমদ চৌধুরী এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
মার্কিন ভূ-তাত্ত্বিক জরিপ সংস্থার তথ্য অনুসারে, ভূমিকম্পটির গভীরতা ছিল ৬৪ দশমিক আট কিলোমিটার।
আরও পড়ুন: তুরস্কে ভূমিকম্পের ৮ দিন পর আরও জীবিত মানুষ উদ্ধার
তুরস্ক-সিরিয়ায় ভূমিকম্প: ভবিষ্যৎ নিয়ে শঙ্কায় বেঁচে যাওয়া হাজারো মানুষ
ভূমিকম্প: নিহতের সংখ্যা ৩৩ হাজার ছাড়াল, তুরস্কে ঠিকাদার আটক
ভারতের পররাষ্ট্র সচিবের বাংলাদেশ সফর
ভারতের পররাষ্ট্র সচিব শ্রী বিনয় কোয়াত্রা বুধবার বাংলাদেশে তাঁর সরকারি সফর শেষ করেছেন।
সফরকালে, পররাষ্ট্র সচিব বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী, মহামান্য শেখ হাসিনার সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন এবং দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের প্রতি ভারতের অব্যাহত প্রতিশ্রুতি, বাংলাদেশকে ভারতের ‘নেবারহুড ফার্স্ট পলিসি’-র একটি অপরিহার্য অঙ্গ ও ‘অ্যাক্ট ইস্ট পলিসি’-র মূল অংশীদার হিসেবে তুলে ধরে ভারতের প্রধানমন্ত্রীর বার্তা পৌঁছে দেন।
আরও পড়ুন: বিনয় কোয়াত্রার সফর ঢাকা-দিল্লি সম্পর্ককে আরও জোরদার ও গতিশীল করবে: ভারত
পররাষ্ট্র সচিব পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেনের সঙ্গেও সাক্ষাৎ করেন এবং তাঁকে ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর পক্ষে শুভেচ্ছা জানান।
ফরেন অফিস কনসাল্টেশন চলাকালে পররাষ্ট্র সচিব কোয়াত্রা ও পররাষ্ট্র সচিব রাষ্ট্রদূত মাসুদ বিন মোমেন এই সম্পর্কের সকল দিক নিয়ে বিস্তৃত আলোচনা করেন।
উভয় পক্ষই ভারত সরকারের অর্থায়নে রেয়াতি লাইন অব ক্রেডিট, বাণিজ্য ও বিনিয়োগ, সংযোগ, বিদ্যুৎ ও জ্বালানি, প্রতিরক্ষা ও নিরাপত্তা এবং মানুষে-মানুষে বন্ধনসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে চলমান দ্বিপক্ষীয় সহযোগিতাকে আরও জোরদার করতে সম্মত হয়েছে।
তাঁরা যৌথ স্বার্থের আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক ইস্যুতে সহযোগিতা ও পরামর্শ বাড়াতে সম্মত হয়েছেন।
এই প্রেক্ষাপটে, ভারতের জি-২০’র প্রেসিডেন্সি চলাকালীন সময়ে বিভিন্ন অনুষ্ঠানে অতিথি দেশ হিসেবে বাংলাদেশের সক্রিয় অংশগ্রহণের ব্যাপারে ভারত ভীষণভাবে উন্মুখ।
উভয় পক্ষই জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের অস্থায়ী সদস্য পদের জন্য আসন্ন প্রার্থিতার ব্যাপারে পারস্পরিক সমর্থন প্রদান করতে সম্মত হয়েছে।
সাম্প্রতিক বছরগুলোতে, বিশেষ করে গত দশকে, ভারত ও বাংলাদেশ নেতৃস্থানীয় পর্যায়সহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে উচ্চ সম্পৃক্ততা বজায় রেখেছে।
পররাষ্ট্র সচিবের সফর দুই দেশের মধ্যে বহুমুখী অংশীদারিত্বকে আরও জোরদার করতে সাহায্য করেছে, সময়ের সঙ্গে পরীক্ষিত তাদের এই সম্পর্ককে পুনরায় বলবৎ করেছে এবং দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের অগ্রগতি ব্যাপকভাবে পর্যালোচনা করার সুযোগ দিয়েছে।
আরও পড়ুন: বৃহত্তর বাণিজ্য, সংযোগ ব্যবস্থা ঢাকা-দিল্লি সম্পর্কের উজ্জ্বল ভবিষ্যতকে ধারণ করে: দোরাইস্বামী
বিনয় কোয়াত্রার সফর ঢাকা-দিল্লি সম্পর্ককে আরও জোরদার ও গতিশীল করবে: ভারত
পররাষ্ট্র সচিব বিনয় কোয়াত্রার সফর ঢাকা-দিল্লি সম্পর্ককে আরও জোরদার করবে ও গতি দেবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেছে ভারত।
মঙ্গলবার এক বিবৃতিতে দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ভারতের ‘নেবারহুড ফার্স্ট’ নীতি অনুযায়ী দেয়া ‘সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার’ অনুযায়ী পররাষ্ট্র সচিব বিনয় কোয়াত্রা বাংলাদেশ সফরে আসবেন।
ভারত বলেছে, বাংলাদেশ ভারতের সর্বোচ্চ উন্নয়ন সহযোগী এবং এই অঞ্চলে তার বৃহত্তম বাণিজ্য অংশীদার।
মন্ত্রণালয়ের মতে, ভারতীয় পররাষ্ট্র সচিবের সফর দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ককে আরও জোরদার করবে এবং বিভিন্ন ক্ষেত্রে চলমান সহযোগিতার গতি বাড়াবে।
বাংলাদেশের পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেনের আমন্ত্রণে আগামী ১৫-১৬ ফেব্রুয়ারি বাংলাদেশে সরকারি সফরে আসবেন পররাষ্ট্র সচিব কোয়াত্রা।
সফরকালে উভয় পররাষ্ট্র সচিব রাজনৈতিক ও নিরাপত্তা, পানি, বাণিজ্য ও বিনিয়োগ, বিদ্যুৎ ও জ্বালানি, প্রতিরক্ষা, সংযোগ এবং উপ-আঞ্চলিক সহযোগিতাসহ দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের সম্পূর্ণ পরিসর পর্যালোচনা করবেন।
নেপালে (১৩-১৪ ফেব্রুয়ারি) দুদিনের সরকারি সফর শেষ করে ঢাকায় আসবেন কোয়াত্রা।
আরও পড়ুন: বৃহত্তর বাণিজ্য, সংযোগ ব্যবস্থা ঢাকা-দিল্লি সম্পর্কের উজ্জ্বল ভবিষ্যতকে ধারণ করে: দোরাইস্বামী
পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেন এবং তার ভারতীয় সমকক্ষ ফরেন অফিস কনসালটেশনে (এফওসি) দ্বিপক্ষীয় বিষয় নিয়ে আলোচনা করবেন।
কোয়াত্রা গত বছরের ১ মে পররাষ্ট্র সচিব হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেন এবং এরপর এটিই হবে তার প্রথম বাংলাদেশ সফর।
সর্বশেষ ২০২১ সালের ২৯ জানুয়ারি ভারতের নয়াদিল্লিতে এফওসি অনুষ্ঠিত হয়েছিল।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা চলতি বছরের ৯-১০ সেপ্টেম্বর নয়াদিল্লিতে অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া ১৮তম গ্রুপ অব টুয়েন্টি (জি২০) শীর্ষ সম্মেলনে যোগ দেয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি শেখ হাসিনাকে সম্মেলনে যোগ দেয়ার আমন্ত্রণ জানিয়েছেন।
এদিকে, পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন আগামী ১-২ মার্চ নয়াদিল্লিতে জি২০ পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের বৈঠকে যোগ দেবেন।
একটি কূটনৈতিক সূত্র জানিয়েছে, ভারতের পররাষ্ট্র সচিবের সফরের সময় প্রধানমন্ত্রী ও পররাষ্ট্রমন্ত্রীর আসন্ন সফর সম্পর্কিত বিষয়গুলো নিয়ে আলোচনা হতে পারে।
কাত্রার সফরে প্রধানমন্ত্রী ও পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করার সম্ভাবনা রয়েছে।
ভারত ২০২২ সালের ১ ডিসেম্বর থেকে ২০২৩ সালের ৩০ নভেম্বর পর্যন্ত জি২০ এর সভাপতির দায়িত্বে থাকবে। দেশটি তার সব বৈঠকে বাংলাদেশকে ‘অতিথি দেশ’ হিসেবে আমন্ত্রণ জানিয়েছে।
বাংলাদেশ এই বছর সভাপতিত্বে জি২০ বৈঠকে ভারতের আমন্ত্রণকে ‘বড় সম্মান’ হিসেবে মনে করছে।
মোমেন সম্প্রতি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমরা সেখানে আমাদের বিষয়গুলো তুলে ধরব। এটা আমাদের জন্য অনেক বড় সম্মানের। আমাদের বিচক্ষণ হওয়া উচিত, আয়োজক দেশের আমন্ত্রণ পাওয়া দক্ষিণ এশিয়ার একমাত্র দেশ বাংলাদেশ।
ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ভারত বাংলাদেশ, মিশর, মরিশাস, নেদারল্যান্ডস, নাইজেরিয়া, ওমান, সিঙ্গাপুর, স্পেন ও সংযুক্ত আরব আমিরাতকে (ইউএই) তার সভা এবং শীর্ষ সম্মেলনে অতিথি দেশ হিসেবে আমন্ত্রণ জানিয়েছে।
জি২০ সদস্যরা বিশ্বব্যাপী জিডিপির প্রায় ৮৫ শতাংশ, বিশ্ব বাণিজ্যের ৭৫ শতাংশের বেশি এবং বিশ্বের জনসংখ্যার প্রায় দুই-তৃতীয়াংশের প্রতিনিধিত্ব করে।
আরও পড়ুন: ঢাকা-দিল্লি সম্পর্ক ‘সবচেয়ে ভালো অবস্থানে’, টানাপোড়েনের জল্পনা নাকচ
বাড়ছে ঢাকা-দিল্লি সম্পর্ক, ২০১৯ সালে রেকর্ড ১৫ লাখ ভিসা ইস্যু
ভারত-ভুটানের ট্রানজিট চুক্তি কার্যকরে গতি পাবে শেরপুরের নাকুগাঁও স্থলবন্দর
সার্কভুক্ত দেশগুলোর মধ্যে ভারতের পর সবচেয়ে কাছাকাছি ভৌগোলিক অবস্থান বাংলাদেশ ও ভুটানের।
স্থলপথে রাজধানী ঢাকার সঙ্গে শেরপুর জেলার নাকুগাঁও স্থলবন্দর হয়ে ভুটানের রাজধানী থিম্পুর দুরত্ব মাত্র ৪০০ কিলোমিটার।
বাংলাদেশ ও ভুটানের মধ্যে মধুর বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক এবং দুই দেশের মধ্যে কিছু কিছু পণ্য নিয়ে আগ্রহ থাকলেও এত কাছাকাছি দুরত্বের হলেও ভারতের সঙ্গে ভুটানের ট্রানজিট সমস্যার কারণে স্থলপথে বাণিজ্যিক সম্পর্ক তেমন এগুচ্ছে না।
তবে ভারতের সঙ্গে ট্রনজিট সমস্যা সমাধানের দৌড়গোড়ায় রয়েছে বলে জানিয়েছেন ভুটানের রাষ্ট্রদূত রিচেন কুইনস্টুল।
আরও পড়ুন: হিলি স্থলবন্দরে সীমান্ত বাণিজ্য বন্ধ
১৩ ফেব্রুয়ারি সোমবার দুপুরে শেরপুরের নাকুগাঁও স্থলবন্দর পরিদর্শনে এসে এমন আশার বানী শুনালেন ভুটানের রাষ্ট্রদূত।
তিনি জানান, ইতোমধ্যে ভারতের সঙ্গে ট্রানজিট নিয়ে একাধিক দফায় আলোচনা হয়েছে। আশা করছি, খুব শিগগিরই সমস্যার সমাধান হবে। এতে ভুটান ও বাংলাদেশের মধ্যে আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য এগিয়ে নেয়া সম্ভব হবে।
এছাড়া ভারত-ভুটান ট্রানজিট চুক্তি কার্যকরে গতি পাবে শেরপুরের নাকুগাঁও স্থলবন্দর।
বন্দর সূত্রে জানা যায়, সম্প্রতি শেরপুরের নাকুগাঁও স্থলবন্দরসহ ময়মনসিংহের হালুয়াঘাট উপজেলার গোবরাকুড়া ও কড়ইতলী স্থলবন্দর দিয়ে গার্মেন্টস পণ্য নিতে বাংলাদেশের সঙ্গে চুক্তি করেছে ভুটান। সেই চুক্তির অংশ হিসেবে সোমবার দুপুরে ভূটানের রাষ্টদূত রিচেন কুইনস্টুল শেরপুরের নালিতাবাড়ি উপজেলার নাকুগাঁও স্থলবন্দর পরিদর্শনে আসেন। এসময় তিনি ভুটানের সঙ্গে বাংলাদেশের কোন বৈরিতা নেই বলে জানান।
এখন শুধু ভারতের সঙ্গে ট্রানজিট চুক্তি অনুমোদন হলেই গার্মেন্টস পণ্য সহ অন্যান্য পণ্য ভুটান আমদানী করতে পারবে।
বন্দর পরিদর্শন শেষে ভুটানের রাষ্ট্রদূত স্থানীয় আমদানি-রপ্তানিকারক সমিতির নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করেন।
বৈঠকে বাংলাদেশি ব্যাবসায়ীরা ভুটান থেকে পণ্য আমদানি ছাড়াও বাংলাদেশ থেকে গার্মেন্টস পণ্যের পাশাপাশি শুটকি মাছ ও প্লাস্টিক পণ্য রপ্তানি করতে ইচ্ছা প্রকাশ করেন।
এ সময় বাংলাদের কাস্টমস কমিশনার ওয়াহিদা রহমান চৌধুরী, ভুটান দূতাবাসের মিনিস্টার কাউন্সেলর (ট্রেড) কেনচো থাইলোসহ অন্যান্যরা উপস্থিত ছিলেন।
ব্যবসায়ীদের সঙ্গে বৈঠক শেষে উপস্থিত সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে ভুটান রাষ্ট্রদূত জানান, ইতোমধ্যে বাংলাদেশ ও ভুটানের মধ্যকার দ্বিপাক্ষিক-ব্যবসায়ীক বিষয়ে বেশকিছু চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে। বর্তমানে বাংলাদেশে ভুটান থেকে ১৮টি পণ্য আমাদানি করার অনুমতি আছে।
পাশাপাশি বাংলাদেশ থেকে ১০টি পণ্য ভুটানে যাচ্ছে।
আমি বিশ্বাস করি, বাংলাদেশ এবং ভুটান বন্ধু দেশ। এছাড়াও আমরা চেষ্টা করছি এই দুই দেশের আমদানি-রপ্তানিকৃত সকল পণ্য শুল্কমুক্ত সুবিধা পাবে।
এছাড়াও বাংলাদেশ ও ভুটানের মধ্যকার দ্বিপাক্ষিক ব্যবসায়ী চুক্তিগুলোও দ্রুতই বাস্তবায়ন করা হবে।
তিনি জানান, নাকগাঁও স্থলবন্দর নিয়ে ভুটানের ব্যাপক আগ্রহ রয়েছে। এ বন্দর ব্যবহার করে ট্রানজিট চুক্তি কার্যকর হলে বন্দরের গতিশীলতাও অনেক বাড়বে।
কাস্টমস কমিশনার ওয়াহিদা রহমান চৌধুরী বলেন, বাংলাদেশের তিনটি এলসি পয়েন্ট দিয়ে ভুটান বাংলাদেশে পণ্য আমদানি ও রপ্তানি করবে। বৃহত্তর ময়মনসিংহ এলাকার এলসি পয়েন্ট লো হলো নাকুগাঁও, গোবরাকুড়া ও করাইতলি।
ভুটান বাংলাদেশ থেকে প্রধান পণ্য হিসেবে তৈরি পোশাক আমদানি করতে চায়। এর বিপরীতে পাথর, ফলসহ তাদের তৈরি পণ্য রপ্তানি করতে চায়।
প্রধানমন্ত্রী সর্বোতভাবে নির্দেশনা দিয়েছেন যেন নির্বিঘ্নে এই কার্যক্রম করা যায়।
ইতোমধ্যে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে একটি চুক্তিও সম্পন্ন হয়েছে। তবে তালিকাভুক্ত পণ্যের ১৯ টি তালিকার বাইরেও পর্যায়ক্রমে আরও পণ্য রপ্তানি বাড়বে।
নাকুগাঁও স্থলবন্দর আমদানি-রপ্তানিকারক সমিতির সভাপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমান মুকুল বলেন, বাংলাদেশ থেকে তিনটি পণ্য আমদানি করার জন্য রাষ্ট্রদূতকে আমরা অনুরোধ করেছি।
পণ্যগুলো হলো-শুঁটকি মাছ, প্লাস্টিক পণ্য ও তৈরি পোশাক। এ বিষয়ে সংগঠনের পক্ষ থেকে একটি লিখিত আবেদনও দেয়া হয়েছে। ভুটানের সঙ্গে সরাসরি পণ্য আমদানি-রপ্তানি চালু হলে নাকুগাঁও স্থলবন্দরের গতিশীলতাও অনেক বাড়বে।
সরকারের রাজস্ব আদায়ের পাশাপাশি স্থানীয়ভাবে কর্মসংস্থান ও ব্যবসা-বাণিজ্যে নতুন দিনের দুয়ার খুলবে।
উল্লেখ্য, এর আগে ২০১৯ সালের ৩ মার্চ বাংলাদেশে নিযুক্ত ভুটানের তৎকালীন রাষ্ট্রদূত সোনাম এল রাবগী শেরপুরের নালিতাবাড়ীর নাকুগাঁও স্থলবন্দর পরিদর্শন করেছিলেন।
তখন তিনি স্থলবন্দরে ব্যবসা-বাণিজ্যের জন্য কী ধরনের সম্ভাবনা আছে তা নিয়ে আলোচনা ও সরেজমিনে পরিদর্শন করেছিলেন।
আরও পড়ুন: হিলি স্থলবন্দরে ১৮ বছর পড়ে থাকা ৫০ ট্রাক পণ্য ধ্বংস
দুই দিন বন্ধের পর হিলি স্থলবন্দরে আমদানি-রপ্তানি শুরু
ভারতের সঙ্গে বাণিজ্য বাড়াতে হাইকমিশনের সহায়তা চায় বিজিএমইএ
সভাপতি ফারুক হাসানের নেতৃত্বে বাংলাদেশ গার্মেন্টস ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিজিএমইএ) একটি প্রতিনিধি দল নয়াদিল্লিতে ভারতে বাংলাদেশের হাইকমিশনার মো. মুস্তাফিজুর রহমানের সঙ্গে দেখা করেছে এবং ভারতের সঙ্গে বাণিজ্য বাড়াতে সহায়তা চেয়েছে।
অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন- বিজিএমইএর সহসভাপতি শহীদুল্লাহ আজিম, প্রেস, প্রকাশনা ও প্রচার বিষয়ক বিজিএমইএ’র স্থায়ী কমিটির সভাপতি শোভন ইসলাম এবং বিজিএমইএ’র বাণিজ্য বিষয়ক স্থায়ী কমিটির সভাপতি মোহাম্মদ কামাল উদ্দিন প্রমুখ।
আরও পড়ুন: বিজিএমইএ’র আরও দুটি সবুজ কারখানার স্বীকৃতি ইউএসজিবিসি’র
প্রতিনিধি দলটি ভারতে বিজিএমইএ এবং কনফেডারেশন অব ইন্ডিয়ান টেক্সটাইল ইন্ডাস্ট্রি দ্বারা যৌথভাবে আয়োজিত সোর্সিং মিট এবং রোডশোতে অংশ নিতে ৯-১২ ফেব্রুয়ারি ভারতে গিয়েছিল।
তারা বাংলাদেশ-ভারত বর্তমান বাণিজ্য পরিস্থিতি এবং দুই প্রতিবেশী দেশের মধ্যে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য বৃদ্ধির সম্ভাবনা নিয়ে আলোচনা করেন।
বৈঠকে বিজিএমইএ সভাপতি ফারুক হাসান বলেন, এমন অনেক ক্ষেত্র রয়েছে যেখানে বাংলাদেশ ও ভারত পারস্পরিক বাণিজ্য সুবিধা পেতে একে অপরকে সমর্থন করতে পারে।
তিনি বলেন, ভারত রাসায়নিক ও অন্যান্য কাঁচামালসহ মানবসৃষ্ট ফাইবারভিত্তিক কাপড়ের সম্ভাব্য উৎস, যেখানে দেশটি বাংলাদেশ আরএমজি রপ্তানির গন্তব্যের প্রতিশ্রুতি দিচ্ছে।
বিজিএমইএ সভাপতি বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে অশুল্ক বাধা অপসারণে বাংলাদেশ হাইকমিশনের সহায়তা কামনা করেন, যাতে সহজে আরও বাণিজ্যের পথ প্রশস্ত হয়।
রপ্তানি-আমদানি প্রক্রিয়া ত্বরান্বিত করতে তিনি স্থলবন্দরের সমস্যা সমাধানে হাইকমিশনের সহযোগিতা কামনা করেন।
ফারুক হাসান ভারতীয় ব্যবসায়ীদের জন্য কনস্যুলার পরিষেবা সহজ এবং দীর্ঘমেয়াদী ভিসা সহজতর করার জন্য হাইকমিশনের প্রতি আহ্বান জানান।
আরও পড়ুন: তৈরি পোশাক শিল্পে জুলাই-ডিসেম্বরে ১৬% বেড়ে রপ্তানি ২৩ বিলিয়ন ডলার: বিজিএমইএ
২০২২ সাল ছিল ঘুরে দাঁড়ানোর বছর: বিজিএমইএ
ভ্যালেন্টাইনস ডে-তে গরুকে আলিঙ্গন করার আবেদন প্রত্যাহার করল ভারত
আগামী সপ্তাহের ‘ভ্যালেন্টাইনস ডে’কে ভালোবাসার (রোমান্স) উৎসব হিসেবে নয়, 'গরু আলিঙ্গন দিবস' হিসেবে পালনের জন্য নাগরিকদের কাছে যে আহ্বান জানানো হয়েছিল তা প্রত্যাহার করেছে ভারত সরকার।
আহ্বানটি নিয়ে রাজনৈতিক মহল ও সামাজিক মাধ্যমে ব্যাপক সমালোচনা করা হয়।
সরকারের অ্যানিমেল ওয়েলফেয়ার বোর্ড অব ইন্ডিয়ার জারি করা এক বিবৃতিতে বলা হয় যে বুধবার ওই আবেদনটি প্রত্যাহার করা হয়েছে।
আরও পড়ুন: মেঘনায় গরুবাহী ট্রলারে ডাকাতি, ৩০ লাখ টাকা লুট!
রাজনৈতিক বিশ্লেষক নীলাঞ্জন মুখোপাধ্যায় বলেন, যুক্তি উপেক্ষা করে গরুকে আলিঙ্গন করার আহ্বান একেবারেই পাগলামি।
তিনি আরও বলেন, ‘সব মহলের তীব্র সমালোচনার মুখে হিন্দুত্ববাদের রাজনীতিকে (হিন্দু জাতীয়তাবাদ) উপহাস করা থেকে বিরত রাখতেই আবেদন প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত নেয় সরকার।’
তরুণ, শিক্ষিত ভারতীয়রা সাধারণত ভ্যালেন্টাইনস ডে পার্ক ও রেস্তোঁরাগুলোতে ভিড় করে, উপহার বিনিময় করে ও পার্টি করে উদযাপন করে থাকে।
অ্যানিমেল ওয়েলফেয়ার বোর্ড বুধবার বলেছিল যে গরুকে আলিঙ্গন করলে মানসিকভাবে সমৃদ্ধি আনবে এবং ব্যক্তিগত ও সমষ্টিগত সুখ বৃদ্ধি করবে।
কট্টরপন্থী হিন্দুরা যারা গরুকে পবিত্র হিসেবে মনে করে পূজা করেন তারা বলছেন যে পশ্চিমা ছুটির দিনটি ঐতিহ্যগত ভারতীয় মূল্যবোধের বিরুদ্ধে যায়।
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির নেতৃত্বাধীন হিন্দু জাতীয়তাবাদী বিজেপি সরকার, বহুমাত্রিক বৈচিত্র্যের জন্য পরিচিত ধর্মনিরপেক্ষ ভারতকে হিন্দু আধিপত্যবাদী দেশে পরিণত করার পরিকল্পনাকে এগিয়ে নিচ্ছে।
দেশটির প্রায় এক দশমিক চার বিলিয়ন জনসংখ্যার মধ্যে প্রায় ৮০ শতাংশই হিন্দু। মুসলমান ১৪ শতাংশ এবং বাকি ছয় শতাংশ খ্রিস্টান, শিখ, বৌদ্ধ ও জৈন।
গরু দীর্ঘদিন ধরে হিন্দুদের মনে গভীরভাবে মিশে আছে এবং অনেকেই এটিকে নিজেদের মায়ের মতোই গভীরভাবে শ্রদ্ধা করে। ভারতের বেশিরভাগ রাজ্যেই গরু জবাই নিষিদ্ধ করেছে।
আরও পড়ুন: ভালোবাসা দিবসে গরুকে আলিঙ্গনের আহ্বান
চট্টগ্রামে এবার গরু ফ্যাশন শো!
হিলি ও লালমনিরহাটের রেল ও সড়ক পথ ব্যবহারের প্রস্তাব দিয়েছে ভারত: রেলমন্ত্রী
রেলপথ মন্ত্রী নূরল ইসলাম সুজন বলেছেন, হিলি ও লালমনিরহাটের রেল ও সড়ক পথ ব্যবহারের প্রস্তাব দিয়েছে ভারত।
তিনি বলেন, ভারত তাদের আসামসহ সেভেন সিস্টারের সঙ্গে রেলপথ ও সড়ক যোগাযোগ স্থাপনের জন্য বাংলাদেশের হিলি ও লালমনিরহাট ব্যবহারের প্রস্তাব দিয়েছে। এতে করে দুই দেশের সঙ্গে যোগাযোগ ব্যবস্থা উন্নত হবে এবং ব্যবসা-বাণিজ্য আরও গতিশীল ও বৃদ্ধি পাবে। দুই দেশই লাভবান হবে। আমরা এই বিষয়টি ভেবে দেখছি।
শুক্রবার বেলা আড়াইটায় বিরামপুর রেলস্টেশনে নির্মাধীণ ইয়ার্ডের জায়গা ও রেলস্টেশনের নতুন ভবন কাজের অগ্রগতি পরিদর্শননে এসে তিনি সাংবাদিকদের একথা বলেন। এসময় তার সঙ্গে স্থানীয় উপজেলা নির্বাহী অফিসার পরিমল কুমার সরকার ও পৌর মেয়র অধ্যক্ষ আক্কাছ আলী সহ অনেকে উপস্থিত ছিলেন।
তিনি বলেন, উত্তরবঙ্গের সব রেলপথকে ডাবল লাইনে করা হবে। সরকার এই লক্ষ্যে ব্যাপক পরিকল্পনা নিয়েছে। যাত্রী সেবার মান ও আসন সংখ্যা বৃদ্ধির জন্য ট্রেনের আরও বগি বাড়ানো হবে। রেলের আরও অনেক অনেক সংস্কার কাজ করা হবে। সকল রেলস্টেশনকে আধুনিকায়ণ ও নতুন রেলপথ নির্মাণ করা করা হবে। যার প্রমাণ হিসেবে বিরামপুর রেলস্টেশনে অনেক উন্নয়নমূলক কাজ করা হচ্ছে।
আরও পড়ুন: নির্ধারিত সময়ের মধ্যে বঙ্গবন্ধু রেলসেতুর নির্মাণকাজ শেষ হবে: রেলমন্ত্রী
হিলি রেলস্টেশন নিয়ে এক প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, দিনাজপুরের হিলি রেলস্টেশনে ইয়ার্ড ছিল। ফলে যেখানে পণ্য লোড-আনলোড করা হতো। কিন্তু ভারতের বর্ডারের কাছে হওয়ায় পণ্য লোড-আনলোডে তারা আপত্তি দিয়েছে। একারণে পণ্য লোড-আনলোড বন্ধ থাকায় সেখান থেকে সরিয়ে বিরামপুর রেলস্টেশনে ইয়ার্ড নির্মাণ করা হচ্ছে। এরফলে এখন থেকে পরিবহনের মাধ্যমে ট্রেনের মালামাল দেশের সব জায়গায় পণ্য পাঠানো যাবে।
তিনি বলেন, বিভিন্ন ঘটনা ঘটার কারণে কিন্তু হিলি রেলস্টেশনের কিছু কার্যক্রম বন্ধ হয়ে গেছে। আমরা পরীক্ষা করে দেখব চলমান কাজ কেন বন্ধ হয়ে গেল। যদি ভারতের দিক থেকে আর কোন আপত্তি না থাকে বা আমাদের দিক থেকে যেসব ঘটনার কারণে বন্ধ হয়ে গিয়েছিল সেই সমস্যাগুলো যদি আর না থাকে তাহলে আমরা চেষ্টা করব সেখানে স্টপেজ বাড়ানোর। সমাধান না হওয়া পর্যন্ত সেখানে নতুন কোন ট্রেনের স্টপেজ দেয়া হবে না। তবে পশ্চিমপাশ থেকে পূর্বপাশে স্টেশন সরিয়ে নেয়ার বিষয়ে তিনি ভেবে দেখার আশ্বাস দেন।
উল্লেখ্য, ২০২১ সালে প্রায় ৩ কোটি টাকা ব্যয়ে বিরামপুর রেলস্টেশনে ইয়ার্ড নির্মাণ ও রেলস্টেশনের ভবণ নির্মাণ কাজ চলছে। যা ইতোমধ্যে রেলস্টেশনটির ৮০ ভাগ কাজ শেষ হয়েছে।
আরও পড়ুন: চট্টগ্রাম-কক্সবাজার রেললাইন এ বছরই চালু হবে: রেলমন্ত্রী
সব যানবাহনে ভাড়া বাড়লেও ট্রেনের ভাড়া বাড়েনি: রেলমন্ত্রী