বাংলাদেশে নিযুক্ত ভারতীয় হাইকমিশনার প্রণয় ভার্মা দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য ও বিনিয়োগ বৃদ্ধি করার ও মানুষে-মানুষে বিনিময়ের প্রসারের জন্য বাংলাদেশের সঙ্গে উন্নয়ন অংশীদারিত্ব ও সহযোগিতার প্রতি ভারতের প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করেছেন।
তিনি আমাদের স্থলবন্দরসমূহের সংযোগ ও বাণিজ্য অবকাঠামো শক্তিশালী করার এবং সীমান্ত হয়ে পণ্য ও মানুষের চলাচল ক্রমান্বয়ে সহজতর করার জন্য উভয় পক্ষের অব্যাহত প্রচেষ্টার ওপর জোর দেন।
বৃহস্পতিবার (২৩ ফেব্রুয়ারি) বেলা ১২ টার দিকে ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তে পেট্রাপোল-বেনাপোল ইন্টিগ্রেটেড চেকপোস্ট (আইসিপি) পরিদর্শনে আসেন। হাইকমিশনার বেনাপোল বন্দরে এসে পৌঁছালে বন্দরের চেয়ারম্যান আলমগীর হোসেন ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা জানান।
এসম তিনি উভয় পক্ষের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন এবং সীমান্ত ব্যবস্থাপনা, বাণিজ্য সহজীকরণ ও অবকাঠামোগত উন্নয়ন সম্পর্কিত বিভিন্ন বিষয়ে আলোচনা করেন।
হাইকমিশনার পেট্রাপোল-বেনাপোল আইসিপির তাৎপর্য এবং পণ্য ও যাত্রীদের চলাচলের সুবিধার্থে এর সক্ষমতা বাড়ানোর প্রচেষ্টার কথা উল্লেখ করেন।
আরও পড়ুন: জাহাজের শুভেচ্ছা সফর ভারত-বাংলাদেশের বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কের প্রতীক: প্রণয় ভার্মা
পেট্রাপোল-বেনাপোল সীমান্ত ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে বাণিজ্যের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি প্রবেশদ্বার, যেখানে স্থল-ভিত্তিক দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্যের ৭০ শতাংশেরও বেশি এই স্থলবন্দর দিয়ে হয়ে থাকে।
২০১৭ সালের আগস্ট থেকে এই সীমান্তটি চব্বিশ ঘন্টা চালু রয়েছে।
যাত্রীদের চলাচলের ক্ষেত্রে পেট্রাপোল-বেনাপোল আইসিপির গুরুত্বের প্রেক্ষিতে, ২০২১ সালের সেপ্টেম্বরে আধুনিক সুযোগ-সুবিধা সম্বলিত একটি নতুন প্যাসেঞ্জার টার্মিনাল বিল্ডিং উদ্বোধন করা হয়েছিল।
যাত্রীদের ক্রমবর্ধমান আন্তঃসীমান্ত চলাচলের চাহিদা পূরণের জন্য দ্বিতীয় একটি প্যাসেঞ্জার টার্মিনাল বিল্ডিংও নির্মাণাধীন রয়েছে।
এছাড়াও, ভারত সরকারের অনুদান সহায়তায় দ্বিতীয় একটি কার্গো টার্মিনাল গেট নির্মিত হতে যাচ্ছে, যা প্রতিদিনের আন্তঃসীমান্ত যানবাহনের যাতায়াতকে দ্বিগুণ করবে বলে আশা করা হচ্ছে।
বাংলাদেশ বিশ্বে ভারতের বৃহত্তম উন্নয়ন সহযোগী এবং দক্ষিণ এশিয়ায় সবচেয়ে বড়ো বাণিজ্য অংশীদার। বিগত পাঁচ বছরে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য ৭ বিলিয়ন মার্কিন ডলার থেকে প্রায় ১৮ বিলিয়ন মার্কিন ডলারে উন্নীত হয়েছে।
ভারতে বাংলাদেশের রপ্তানি গত তিন বছরে ধারাবাহিকভাবে ১ বিলিয়ন মার্কিন ডলার ছাড়িয়েছে, যা ২০২১-২২ সালে প্রায় ২ বিলিয়ন মার্কিন ডলারে পৌঁছায়। বৈচিত্র্যময় বাজার নিয়ে ভারত এশিয়ায় বাংলাদেশের জন্য শীর্ষ রপ্তানি গন্তব্য হিসেবে আবির্ভূত হয়েছে।
হাইকমিশনার বলেন, বাংলাদেশের সঙ্গে আমাদের সংযোগ ও বাণিজ্য অবকাঠামো উন্নয়ন প্রকল্পগুলো আমাদের দীর্ঘস্থায়ী বন্ধুত্ব এবং এই দুই দেশ ও জনগণের অগ্রগতি ও সমৃদ্ধি পরস্পরের সাথে জড়িত থাকার যৌথ প্রত্যয়ের ওপর ভিত্তি করে নির্মিত।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশ সবসময় ভারতের কাছে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার পায়: প্রধানমন্ত্রীকে ভারতীয় হাইকমিশনার