জাবি
জাবির ফার্মেসি বিভাগে দীর্ঘ সেশন জট, দায় নিতে রাজি নয় কেউ
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ফার্মেসী বিভাগে দীর্ঘ সেশন জট চলছে কিন্তু এর দায় নিতে চায় না বিভাগ কিংবা সংশ্লিষ্ট কেউ।ভর্তির পর ছয় বছর পার হয়ে গেলেও এখনও তৃতীয়বর্ষ পার হতে পারেননি জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) ফার্মেসি বিভাগের ২০১৬-২০১৭ শিক্ষাবর্ষের(৪৬ ব্যাচ) শিক্ষার্থীরা।
তৃতীয় বর্ষের চূড়ান্ত পরীক্ষা শেষ হয়েছে প্রায় দুই বছর আগে। তবে এখনও ফল প্রকাশিত হয়নি। এরমধ্যে চতুর্থ বর্ষের পরীক্ষাও নিয়ে নিয়েছে বিভাগ।
যদিও আগের বর্ষের চূড়ান্ত পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশের আগে পরবর্তী বর্ষের পরীক্ষা নেয়ার কোন নজির বিশ্ববিদ্যালয়ে নেই। তবুও নির্ধারিত সময়ে পরীক্ষা না নেয়া ও ফল প্রকাশ করতে না পারার ব্যর্থতা ঢাকতেই বিভাগের শিক্ষকরা নিয়মের সব বিধি উপেক্ষা করেই ’সেশনজট কমাতে’ চতুর্থ বর্ষের পরীক্ষা শেষও করে ফেলেছেন।
আরও পড়ুন: শিক্ষার্থীকে মারধরের অভিযোগ জাবি ছাত্রলীগ কর্মীদের বিরুদ্ধে
কিন্তু তৃতীয় বর্ষের ফল প্রকাশ না করে কীভাবে শিক্ষার্থীদের চতুর্থ বর্ষের পরীক্ষায় বসানো হলো তার কোন সন্তোষজনক ব্যাখ্যা পাওয়া যায়নি সংশ্লিষ্ট কারও কাছে।
বিভাগের সভাপতি অধ্যাপক মুহম্মদ দিদারে আলম মুহসিন বলছেন, দীর্ঘ সেশনজটের কবল থেকে শিক্ষার্থীদের জীবন বাঁচাতেই এমন সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য হয়েছেন।
পাশাপাশি উঠে এসেছে শিক্ষার্থীদের প্রতি বিভাগের শিক্ষকদের অবহেলার বিষয়টিও।
বিশ্ববিদ্যালয়ের সব চূড়ান্ত পরীক্ষা হয়ে থাকে পরীক্ষা নিয়ন্ত্রকের কার্যালয়ের মাধ্যমে। কিন্তু পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক কার্যালয়ের ওই সময়ে দায়িত্বে থাকা কেউ এ বিষয়ে কথা বলতে আগ্রহ দেখাননি।
এখন প্রশ্ন উঠেছে, কোনো শিক্ষার্থী যদি তৃতীয় বর্ষে অকৃতকার্য হয় তাহলে সে কী করবে? বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়ম অনুযায়ী দুই বিষয়ে কেউ অকৃতকার্য হলে সে একই ব্যাচের সঙ্গে পড়াশোনা চালিয়ে যেতে পারবে। আর অকৃতকার্য হওয়া ওই দুই বিষয় তাকে পরবর্তী ব্যাচের সঙ্গে পরীক্ষা দিতে হবে। যেটা ‘ইমপ্রুভমেন্ট’ হিসেবে গণ্য হবে এবং তার ‘ইয়ার ড্রপ’ হবে না। আর তিন বা তারও বেশি কোর্সে অকৃতকার্য হলে নীচের কোন ব্যাচের সঙ্গে তাকে পরীক্ষা দিয়ে উত্তীর্ণ হতে হবে। যেটি ‘ইয়ার ড্রপ’ হবে। এছাড়া অতিরিক্ত অর্থ দিয়ে বিশেষ পরীক্ষার ব্যবস্থা তো থাকছেই।
ঠিক সেই জায়গায় দাঁড়িয়ে বিভাগের শিক্ষকরা তৃতীয় বর্ষের পরীক্ষার ফল প্রকাশের আগেই চতুর্থ বর্ষের পরীক্ষা নিয়ে নিয়েছেন যে, যাই হোক না কেন, শিক্ষার্থীদের বিশেষ পরীক্ষা দেয়ার সুযোগ তো থাকছে।
এরমধ্যে কিন্তু ৪৭ ব্যাচের তৃতীয় বর্ষের পরীক্ষাও শেষ হয়ে গেছে। এখন ৪৬ ব্যাচের কেউ যদি তিন বিষয় বা তারও বেশি কোর্সে অকৃতকার্য হয় তাহলে তিনি দুই বছর পিছিয়ে পড়বেন। অর্থাৎ তাকে ৪৮ ব্যাচের সঙ্গে পড়াশোনা চালাতে হবে, অথবা দ্রুত বসতে হবে বিশেষ পরীক্ষায়। এমন অবস্থায় ৪৬ ব্যাচের সব শিক্ষার্থী হতাশা ও অনিশ্চয়তায় দিন পার করছে।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, একাডেমিক ক্যালেন্ডার অনুযায়ী ফার্মেসি বিভাগের ৪৬ ব্যাচের (২০১৬-১৭ শিক্ষাবর্ষ) তৃতীয় বর্ষের চূড়ান্ত পরীক্ষা ২০১৯ সালে হওয়ার কথা থাকলেও তা অনুষ্ঠিত হয় আড়াই বছর পর ২০২১ সালে। করোনার কারণে পরীক্ষা পিছিয়ে ২০২১ সালের ২১ আগস্ট শুরু হয়ে ১০ অক্টোবর (তত্ত্বীয়) শেষ হয়। এর ৭ মাস পর শুরু হয় ব্যবহারিক (ল্যাব) পরীক্ষা। ২০২২ সালের ১৮ মে থেকে শুরু হয়ে ২ জুন পর্যন্ত চলে ল্যাব পরীক্ষা।
পরীক্ষার ৯ মাস পার হয়ে গেলেও ফল প্রকাশ করা হয়নি। এরই মধ্যে চতুর্থ বর্ষের চূড়ান্ত পরীক্ষাও (তত্ত্বীয় ও ল্যাব) সম্পন্ন হয়ে গেছে। যেটি ২০২২ সালের ১৯ সেপ্টেম্বর শুরু হয়ে শেষ হয় নভেম্বরের শেষে। ফলে শিক্ষার্থীরা ভুগছেন চরম অস্থিরতায়। তারা আদৌ জানেন না তারা তৃতীয় বর্ষের পরীক্ষায় উত্তীর্ণ করেছেন কী না। আর যদি উত্তীর্ণ না হন তাহলে তাদের শিক্ষাজীবন আরও অনিশ্চয়তায় পড়ে যাবে। এদিকে, ৪৬ ব্যাচের অন্য বিভাগের শিক্ষার্থীরা বর্তমানে স্নাতকোত্তরে পড়াশোনা করছেন।
তৃতীয় বর্ষের পরীক্ষা কমিটির সভাপতি ছিলেন তানিয়া বিনতে ওয়াহিদ, আর সদস্য হিসেবে আছেন অধ্যাপক সোহেল রানা এবং সহযোগী অধ্যাপক সুকল্যাণ কুমার কুণ্ডু। কিন্তু পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশ না করেই ২০২২ সালের ১ সেপ্টেম্বর শিক্ষা ছুটিতে দেশের বাইরে চলে যান সভাপতি তানিয়া। এরপরই পরীক্ষা কমিটির সভাপতির দায়িত্ব পান অধ্যাপক মাফরুহী সাত্তার। এরপরও পেরিয়ে গেছে ৫ মাস। কিন্তু ফলাফল প্রকাশ করতে পারেননি কমিটির সদস্যরা। আর চতুর্থ বর্ষের পরীক্ষা কমিটির সভাপতি ছিলেন অধ্যাপক ড. সুকল্যাণ কুমার কুণ্ডু।
অথচ বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়ম অনুযায়ী, পরীক্ষা শেষ হওয়ার সর্বোচ্চ তিন মাসের মধ্যে ফল প্রকাশ করতে হবে।
আরও পড়ুন: জাবিতে গাড়ি থামানোয় নিরাপত্তাকর্মীকে মারধর শিক্ষার্থীর
এদিকে আগের বর্ষের পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশ না করেই পরবর্তী বর্ষের পরীক্ষা নেয়া যায় কী না- জানতে চাওয়া হয় বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন সাবেক ডিন ও অধ্যাপক পদমর্যার এক শিক্ষকের কাছে। তারা জানান, এমন কোন নিয়ম বিশ্ববিদ্যালয়ে নেই। যদি তা হয়ে থাকে তাহলে উপাচার্যের বিশেষ অনুমতিতে হতে পারে অথবা বিভাগের শিক্ষকদের চাপে পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক কার্যালয় পরীক্ষা নিয়ে থাকতে পারে। অথবা বিভাগ আবেদন করার পর পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক কার্যালয় খেয়ালই করেননি যে তৃতীয় বর্ষের পরীক্ষার ফলাফল আটকে আছে; তাদের চোখের ফাঁক গলে বিষয়টি সংঘটিত হয়ে গেছে।
তবে, উপাচার্যের বিশেষ কোন অনুমতি নেই এই তথ্য নিশ্চিত হওয়া গেছে। আর বিষয়টি নিয়ে পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক কার্যালয়ের কেউ সরাসরি কথা বলতে রাজি হননি। পরিচয় গোপন রাখার শর্তে তিনজন কর্মকর্তার সঙ্গে কথা বলে বুঝা গেছে, বিভাগের শিক্ষকদের চাপ থাকলে সেখানে তাদেরও খুব একটা কিছু করার থাকে না। ফার্মেসী বিভাগের শিক্ষকদের সঙ্গে কথা বলেও এই কথার সত্যতা আঁচ করা গেছে।
আর যে সহকারী পরীক্ষা নিয়ন্ত্রকের অধীনে ফার্মেসী বিভাগের পরীক্ষা হয়েছে তিনি বর্তমানে শারীরিকভাবে কিছুটা অক্ষম। নিয়মিত অফিস করলেও খুব একটা কথা বলতে পারেন না। ফলে তার কাছ থেকেও ঘটনার বিস্তারিত জানা সম্ভব হয়নি।
এদিকে তৎকালীন সময়ে পরীক্ষা নিয়ন্ত্রকের দায়িত্বে থাকা পদার্থ বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষক ও বর্তমান গাণিতিক ও পদার্থ বিষয়ক অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড.ফরিদ আহমেদও এই বিষয়ে কথা বলতে আগ্রহী হননি।
তিনি বলেন, ‘এখন দায়িত্বে নেই, ফলে সবকিছু মনেও নেই। তাই এই বিষয়ে মন্তব্য না করাই ভালো মনে করছি।’
এরপর যোগাযোগ করা হয় তৎকালীন উপপরীক্ষা নিয়ন্ত্রকের দায়িত্বে থাকা মাসুদুর রহমানের সঙ্গে। তিনি বর্তমানে অবসর প্রস্তুতিমূলক ছুটিতে (এলপিআর) আছেন। বিষয়টি তার মনে নেই জানিয়ে বলেন, ‘সব ছেড়ে চলে আসার সঙ্গে সঙ্গে মাথা থেকে সব কাজ ফেলে দিয়েছি, সাত দিনও রাখিনি। ওই সময়ের কথা তেমন কিছুই মনে নেই। তাই কিছু বলতেও পারব না।’
এদিকে তৃতীয় বর্ষের ফল প্রকাশের আগেই চতুর্থ বর্ষের তত্ত্বীয় পরীক্ষা নেয়া হলেও ইন্ডাস্ট্রিয়াল ট্রেনিংয়ের বিষয়ে বিভাগের কোনো পরিকল্পনা নেই বলে অভিযোগ করছেন শিক্ষার্থীরা। ফলে চতুর্থ বর্ষের ফলও কবে প্রকাশিত হবে তা নিয়ে দেখা দিয়েছে অনিশ্চয়তা।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক শিক্ষার্থী ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ‘আমাদের অন্য বিভাগের বন্ধুরা অনার্স শেষ করে এখন মাস্টার্সে ক্লাস করছে। আর আমাদের তৃতীয় বর্ষের ফলাফলই প্রকাশিত হয়নি। ফলে বিসিএসসহ সব ধরনের চাকরির পরীক্ষায় অংশগ্রহণের সুযোগ আমরা পাচ্ছি না, এমনিক আমাদের সেক্টরেও চাকরির বাজারেও আবেদন করতে পারছি না।’
বিভাগের অবহেলাকে পুরোপুরি দায়ী করে তিনি বলেন, ‘আমরা দীর্ঘ সেশনজটের কবলে পড়েছি। আমাদের ভবিষ্যৎ হুমকির মুখে পড়ে গেছে।’
এ বিষয়ে জানতে চাইলে ফার্মেসি বিভাগের সভাপতি অধ্যাপক মুহম্মদ দিদারে আলম মুহসিন বলেন, ‘করোনা পরিস্থিতির কারণে বিভাগে কিছু সেশনজট তৈরি হয়েছে। করোনার মধ্যে তত্ত্বীয় পরীক্ষা অনলাইনে নেয়ার অনুমতি থাকলেও ব্যবহারিক পরীক্ষা নেয়া সম্ভব হয়নি। ফলে আমরা ব্যবহারিক পরীক্ষাগুলো নিতে পারিনি। এখন আমরা আগে তত্ত্বীয় পরীক্ষা হওয়া সাপেক্ষে বিভিন্ন ব্যাচের ব্যবহারিক পরীক্ষা নেব।’
‘আর চতুর্থ বর্ষের ইন্ডাস্ট্রিয়াল ট্রেনিংয়ের জন্য আমরা বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে যোগাযোগ করছি। অধিকাংশ শিক্ষার্থী বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে তাদের ট্রেনিং করছে। কিছু শিক্ষার্থীর বাকি আছে আশা করছি দ্রুতই এর সমাধান হবে।’
তবে তৃতীয় বর্ষের ফল প্রকাশের অগ্রগতি সম্পর্কে জানতে পরীক্ষা কমিটির সভাপতি অধ্যাপক মাফরুহী সাত্তারের সঙ্গে কথা বলতে দুই দিন বিভাগে গিয়েও পাওয়া যায়নি। পরে, মুঠোফোনে কল করলেও তিনি রিসিভ করেননি।
এদিকে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বিভাগের শিক্ষকরা বিভিন্ন বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে ক্লাস নেয়ায় ব্যস্ত থাকেন। যার কারণে এমন জটিল পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে।
আরও পড়ুন: জাবিতে মোটরসাইকেলের ধাক্কায় আহত শিক্ষার্থী লাইফ সাপোর্টে
ঋণ খেলাপির জন্য সাধারণ মানুষ নয়, বড় ব্যবসায়ীরা দায়ী: রাষ্ট্রপতি
রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ বলেছেন, ব্যাংকের খেলাপি ঋণের এক শতাংশের জন্যও সাধারণ মানুষ দায়ী নয়। বরং বড় ব্যবসায়ী ও শিল্পপতিরা স্বেচ্ছায় ফেরত না দেয়ার অভিপ্রায়েই ঋণ নিয়ে থাকেন।
তিনি বলেন, ‘তারা ঋণ নেয় (ইচ্ছা করে) পরিশোধ না করার জন্য। অবশ্য এর সঙ্গে কিছু ব্যাংকারও জড়িত।’
শনিবার জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) ষষ্ঠ সমাবর্তনে তিনি এসব কথা বলেন।
বর্তমানে দেশের ব্যাংক ও অন্যান্য ঋণদানকারী প্রতিষ্ঠানের খেলাপি ঋণ রয়েছে এক লাখ ৩৪ হাজার কোটি টাকার বেশি, যা মোট ঋণের ৯ দশমিক ৩৬ শতাংশ। দেশে এখন পর্যন্ত খেলাপি ঋণের এটাই সর্বোচ্চ সংখ্যা।
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, ২০২২ সালের সেপ্টেম্বর শেষে ব্যাংকিং খাতের মোট ঋণের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ১৪ দশমিক ৩৬ লাখ কোটি টাকা।
শিক্ষার্থীরাই দেশের ভবিষ্যৎ উল্লেখ করে হামিদ বলেন, কেউ হবে রাজনীতিবিদ, কেউ হবে ব্যবসায়ী বা শিল্পপতি, কেউ হবে আমলা।
রাষ্ট্রপতি বলেন, ‘মনে রাখবেন রাজনীতিবিদ, ব্যবসায়ী ও আমলাদের সমন্বিত প্রচেষ্টায় একটি দেশ উন্নয়ন ও অগ্রগতির পথে এগিয়ে যায়। তা করতে ব্যর্থ হলে দেশ ও জাতির জন্য চরম বিপদ ডেকে আনে।’
আরও পড়ুন: বঙ্গভবনে রাষ্ট্রপতির বড়দিনের শুভেচ্ছা বিনিময়
সার্কভুক্ত একটি দেশের অর্থনীতির দেউলিয়া অবস্থার সংবাদের উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘এই অর্থনৈতিক দেউলিয়াপনার জন্য আমলা, রাজনীতিবিদ ও ব্যবসায়ীদের সিন্ডিকেটকে দায়ী করা হয়েছে। এই সিন্ডিকেটের অশুভ সম্পর্ক যেকোনো দেশের জন্য বিপদ ডেকে আনতে পারে।’ তবে তিনি কোনও দেশের নাম বলেননি।
প্রতিটি শিক্ষার্থীকে প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষার পাশাপাশি নীতি-নৈতিকতা, মূল্যবোধ, দেশপ্রেম ও জাতীয়তাবোধে শিক্ষিত হওয়ার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, একটি বিশ্ববিদ্যালয় হচ্ছে এসব শিক্ষার মূল ক্ষেত্র।
তিনি আরও বলেন, ‘কিন্তু দুঃখের বিষয় হল আজকের রাজনীতিতে ক্ষমতা এবং অর্থ অনেক ক্ষেত্রেই নিয়ন্ত্রণকারী শক্তির ভূমিকা পালন করে। ছাত্র রাজনীতিতে এসব অশুভ ছায়া ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়েছে।’
তিনি বলেন, ‘অধিগ্রহণ ও চাঁদাবাজির কারণে ছাত্র রাজনীতিকে এখন আগের মতো সম্মানের পরিবর্তে নেতিবাচক দৃষ্টিতে দেখা হচ্ছে। এটা আমাদের ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য ভালো নয়।’
ব্যবসায়ীদের সমালোচনা করে হামিদ বলেন, তারা নৈতিকতা বাদ দিয়ে ব্যবসা শুরু করে কীভাবে রাতারাতি ধনী হওয়া যায় তা চিন্তা করেন।
হামিদ বলেন, একই কথা সরকারি কর্মচারীদের ক্ষেত্রেও সমানভাবে প্রযোজ্য। চাকরি করার পর কীভাবে দ্রুত গাড়ি ও বাড়ির মালিক হবেন তা নিয়েই তারা চিন্তিত।
তিনি বলেন, ‘তারা ভুলে যায় যে তারা প্রজাতন্ত্রের কর্মচারী এবং জনগণের সেবক। নিজেদের ক্ষুদ্র স্বার্থে তারা মাঝে মাঝে দেশ ও জাতির বৃহৎ স্বার্থকে ক্ষুণ্ন করতে দ্বিধা করে না।’
দেশের উন্নয়ন ও অগ্রগতির পথে দুর্নীতি অন্যতম বড় বাধা উল্লেখ করে তিনি বলেন, দুর্নীতির বিরুদ্ধে সবাইকে সচেতন হতে হবে এবং শিক্ষকদেরও দুর্নীতি ও স্বজনপ্রীতি মুক্ত রাখতে হবে।
হামিদ বলেন, কিছু উপাচার্য ও শিক্ষক আইনের অপব্যবহার করে নিজেদের সুযোগ-সুবিধা আদায়ে ব্যস্ত।
আরও পড়ুন: জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে নিজস্ব পরিচয় তৈরি করুন: এনডিসি স্নাতকদের রাষ্ট্রপতি
তিনি বলেন, ‘প্রতিটি বিশ্ববিদ্যালয় তার নিজস্ব আইন দ্বারা পরিচালিত হয়। কিন্তু দুঃখজনকভাবে, বেশিরভাগ বিশ্ববিদ্যালয়ে, আইনের অপব্যবহার করে এমন একটি বিভাগ তাদের সুযোগ-সুবিধা পেতে খুব ব্যস্ত। তারা ক্ষমতা ধরে রাখতে বিশ্ববিদ্যালয় এবং ছাত্রদের ব্যবহার করতে দ্বিধা করে না।’
তিনি বলেন, শিক্ষা নিয়ে কোনোভাবেই আপস করা যাবে না এবং শিক্ষার্থীরা একাডেমিক সব কার্যক্রম ঠিক রেখে রাজনীতি, সমাজসেবা ও সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ড করতে পারে।
রাষ্ট্রপতি আরও বলেন, ‘দুর্ভাগ্যজনক হলেও এটা সত্য যে দেশের অধিকাংশ বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার সঙ্গে আপস করে অ-একাডেমিক কর্মকাণ্ডে বেশি সময় দেয়া হচ্ছে। যে কারণে বিশ্বের প্রথম এক হাজার বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যেও দেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। শুধু সার্টিফিকেটভিত্তিক শিক্ষা দিয়ে দেশের উন্নয়ন সম্ভব নয়।’
বিশ্ববিদ্যালয়ের ৩৯তম থেকে ৪৭তম ব্যাচের ৩১ হাজার ৭১৬ জন যোগ্য স্নাতকের মধ্যে মোট ১৫ হাজার ২১৯জন অনার্স, মাস্টার্স, এম ফিল, পিএইচডি, এমবিএ ডিগ্রি এবং উইকএন্ড কোর্সের অধীনে নিবন্ধন করেছেন।
বিশ্ববিদ্যালয় সমাবর্তনে ১৫ জন স্নাতককে আসাদুল কবির স্বর্ণপদক এবং শরাফুদ্দিন স্বর্ণপদক দেয়া হয় তাদের অসাধারণ একাডেমিক ফলাফলের জন্য।
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম সমাবর্তন ১৯৯৭ সালে, দ্বিতীয়টি ২০০১ সালে, তৃতীয়টি ২০০৬ সালে, চতুর্থটি ২০১০ সালে এবং পঞ্চম সমাবর্তন ২০১৫ সালের ৫ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠিত হয়।
আরও পড়ুন: বিশ্ববিদ্যালয়ে সময়োপযোগী কারিকুলাম প্রণয়নের নির্দেশ রাষ্ট্রপতির
জাবিতে গাড়ি থামানোয় নিরাপত্তাকর্মীকে মারধর শিক্ষার্থীর
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে (জাবি) গাড়ি নিয়ে ঢুকতে বাধা দেয়ায় এক নিরাপত্তাকর্মীকে মারধর ও গালিগালাজ করার অভিযোগ উঠেছে উইকেন্ড প্রোগ্রামের এক শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে।
শুক্রবার (৩ ফেব্রুয়ারি) সকাল সাড়ে ১০টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটক দিয়ে ওই শিক্ষার্থী গাড়ি নিয়ে ঢুকার সময় বাধা দেয়ায় এমন ঘটনা ঘটেছে বলে জানান নিরাপত্তা প্রহরী জাকারিয়া।
অভিযুক্ত শিক্ষার্থীর নাম দিপ্ত দেবনাথ।
আরও পড়ুন: জাবিতে বাংলাদেশের সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য সংরক্ষণ ও ব্যবস্থাপনা বিষয়ক সেমিনার
নিরাপত্তা অফিস সূত্রে জানা গেছে, কয়েকজন ছেলেমেয়ে গাড়ি নিয়ে ঢুকতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের গার্ড প্রশাসনের অনুমতি না থাকায় তাদের ঢুকতে দেননি। পরে তারা নিরাপত্তাকর্মীকে গালিগালাজ ও মারধর করেন।
এ বিষয়ে নিরাপত্তাকর্মী বলেন, আজকে প্রশাসনের পক্ষ থেকে ক্যাম্পাসের ভেতরে গাড়ি ঢুকতে না দেয়ার নির্দেশনা ছিল। উইকেন্ডের কয়েকজন গাড়ি নিয়ে ঢুকতে চাইলে আমি তাদের নিষেধ করি। পরে তারা ক্ষিপ্ত হয়ে আমাকে ‘টাকা দিয়ে পড়ি, গাড়ি নিয়ে ঢুকতে দিবি না কেন’ বলে গালিগালাজ করা শুরু করেন এবং মারধর করেন।
অভিযুক্ত দিপ্ত দেবনাথ বলেন, গাড়ি নিয়ে প্রবেশ করার সময় আমাকে বাধা দেন। আমি তো শিক্ষার্থী তাই বাধা দেয়ায় কারণ জানতে চাই। কর্মী গাড়ি সরাতে বললে আমি তাকে গালিগালাজ করেছি। হাতাহাতি হয়েছে। আমিও মার খেয়েছি। তারপর আমার সঙ্গে দুই জন ছিল তারাও হাতাহাতিতে অংশ নিয়েছে।
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান নিরাপত্তা কর্মকর্তা সুদীপ্ত শাহীন বলেন, 'গার্ডের সঙ্গে যা হয়েছে তা অন্যায়।'
আরও পড়ুন: জাবিতে মোটরসাইকেলের ধাক্কায় আহত শিক্ষার্থী লাইফ সাপোর্টে
জাবিতে দিনব্যাপী পাখি মেলা শুক্রবার
জাবিতে দিনব্যাপী পাখি মেলা শুক্রবার
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে (জাবি) বন্যপ্রাণী ও পাখি সংরক্ষণে জনসচেতনতা সৃষ্টির লক্ষ্যে শুক্রবার অনুষ্ঠিত হবে দিনব্যাপী পাখি মেলা।
এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ওয়াইল্ডলাইফ রেসকিউ সেন্টার, বাংলাদেশ বার্ড ক্লাব, অরণ্যক ফাউন্ডেশন, প্রকৃতি ও জীবন ফাউন্ডেশন, বাংলাদেশ জুলজিক্যাল সোসাইটি ও ইন্টারন্যাশনাল ইউনিয়ন ফর কনজারভেশন অব নেচারের সহযোগিতায় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগ এ মেলার আয়োজন করছে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের জহির রায়হান মিলনায়তনে সকাল ১০টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. নূরুল আলম এ কর্মসূচির উদ্বোধন করবেন।
আরও পড়ুন: জাবির মুক্তমঞ্চে নদীর জীবন-চিত্র আঁকলো শিক্ষার্থীরা
মেলার আহ্বায়ক অধ্যাপক কামরুল হাসান বলেন, ‘আমরা আশা করছি বিগত বছরগুলোর মতো এবারও মেলা সফল হবে। তাছাড়া কোভিড মহামারির কারণে গত দুই বছর মেলা আয়োজন করতে না পারায় এ বছর মেলা আরও আলোড়ন সৃষ্টি করবে।’
দিনব্যাপী এ মেলায় উদ্বোধনী অধিবেশন, অডিও ও ভিডিওর মাধ্যমে পাখি শনাক্তকরণ প্রতিযোগিতা, পরিবেশবিষয়ক বিতর্ক ও শিশুদের জন্য পাখি চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতা, পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানসহ বিভিন্ন বিষয় থাকবে।
এছাড়া বিগ বার্ড বাংলাদেশ অ্যাওয়ার্ড, কনজারভেশন মিডিয়া অ্যাওয়ার্ড ও সায়েন্টিফিক পাবলিকেশন অ্যাওয়ার্ড- এই তিনটি ক্যাটাগরিতে মোট সাতজন পাখি সংরক্ষণবিদকে পুরস্কৃত করা হবে।
আরও পড়ুন: জাবিতে বাংলাদেশের সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য সংরক্ষণ ও ব্যবস্থাপনা বিষয়ক সেমিনার
জাবির মুক্তমঞ্চে নদীর জীবন-চিত্র আঁকলো শিক্ষার্থীরা
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) মুক্তমঞ্চের প্রবেশপথে নদীর জীবন-চিত্র আঁকলো জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা।
সম্প্রতি বিশ্ববিদ্যালয়ের মুক্তমঞ্চে অনুষ্ঠিত ‘নদীরক্স’-কনসার্টের উদ্যোগের পাশে দাঁড়িয়ে এ শিল্পকর্মটি উপহার দেয় তারা।
আরও পড়ুন: জাবি ছাত্রলীগের পূর্ণাঙ্গ কমিটি ঘোষণা
প্রত্নতত্ব বিভাগের স্নাতকোত্তর শিক্ষার্থী সৌমিক বাগচী বলেন, ‘আমরা আসলে এমন একটা নদী আঁকতে চেয়েছি, যে নদীটা সম্পূর্ণ দেখা যাবে। সেই তার উৎসমুখ থেকে তার মানুষের কাছে আসা পর্যন্ত-পুরো তার জীবন প্রবাহ। আমাদের আঁকা নদীটা দেখলে দেখবেন, মানুষের কাছাকাছি আসতে আসতে নীল জলের নদীটা কালো হয়ে যাচ্ছে, অর্থাৎ মানুষের সংস্পর্শে এসে সে তার জীবন হারাচ্ছে-যা আমাদের নদীমাতৃক বর্তমান বাংলাদেশের বাস্তবচিত্র।’
সৌমিক আরও জানান, এ চিত্রকর্মটি আঁকতে বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলার শিক্ষার্থীরা ছাড়াও অংশ নেয় জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় সাংস্কৃতিক জোটের সদস্যরা।
শুধু তাই নয়, কনসার্টটিতে জাহাঙ্গীর নগর বিশ্ববিদ্যালয়ের স্মরণকালের সর্ববৃহৎ জনসমাগম হয় বলে জানা গেছে। প্রায় বিশ হাজার শিক্ষার্থীর অংশগ্রহণে এ কনসার্টে দেশের নদীগুলো বাঁচাতে জনসচেতনায় গান পরিবেশন করেন-দেশের শীর্ষস্থানীয় পাঁচ ব্যান্ড চিরকুট, অ্যাশেজ, বাংলা ফাইভ, এফ মাইনর ও স্মুচেস।
এ উদ্যোগে সমর্থন ব্যক্ত করেন শিক্ষার্থীরা।
নদীরক্স কনসার্টের সহযোগিতায় রয়েছে বাংলাদেশে অবস্থিত সুইজারল্যান্ড দূতাবাস, সুইডেন দূতাবাস ও ইউএনডিপি।
দেশের মৃতপ্রায় ও ক্ষতিগ্রস্ত নদীগুলো বাঁচাতে দেশব্যাপী জনসচেতনতামূলক ‘নদীরক্স’ কনসার্টের আয়োজন করছেন শারমিন সুলতানা সুমী।
তিনি বলেন, ‘জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে এমন অভূতপূর্ব সাড়া পাবো তা ভাবতে পারিনি। এ আবেগ শুধু গানের জন্য ছিল না, ছিল নদীর জন্যও এটিই সবচেয়ে অভিভূত করেছে। মুক্তমঞ্চের প্রবেশপথে তাদের আঁকা নদীটা দেখলেই তা বোঝা যায়।’
শিক্ষার্থীদের মতে, শুধু বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে নয়, দেশের আনাচে কানাচে কিংবা ক্ষতিগ্রস্ত কোন নদীগুলোর তীরে এ কনসার্ট আয়োজিত হলে আয়োজনটি আরও সফল হবে।
আরও পড়ুন: জাবিতে বাংলাদেশের সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য সংরক্ষণ ও ব্যবস্থাপনা বিষয়ক সেমিনার
জাবিতে বর্ণিল আয়োজনে প্রজাপতি মেলা
জাবির সাবেক ভিসি আলাউদ্দিন আহমেদ আর নেই
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) সাবেক উপাচার্য আলাউদ্দিন আহমেদ মঙ্গলবার রাজধানীর একটি হাসপাতালে মারা গেছেন। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৭৪ বছর।
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে দেয়া এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, মুক্তিযোদ্ধা আলাউদ্দিন আহমেদ বিকাল ৩টা ২৫ মিনিটে রাজধানীর ইউনাইটেড হাসপাতালে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন।
তিনি ১৯৯৮ সালের ১৮ জুলাই থেকে ১৯৯৯ সালের ৯ ডিসেম্বর পর্যন্ত জাবিতে ভিসি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। এর আগে তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য ছিলেন।
এছাড়াও তিনি কিশোরগঞ্জ-১ আসন থেকে ২০০১ সালে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন।
আলাউদ্দিন ২০০৯ থেকে ২০১৩ সাল পর্যন্ত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার শিক্ষা, সামাজিক উন্নয়ন ও রাজনৈতিক বিষয়ক উপদেষ্টা হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।
আরও পড়ুন: ডা. এস এ মালেকের মৃত্যুতে পররাষ্ট্রমন্ত্রীর শোক
১৯৪৭ সালে কিশোরগঞ্জের পাকুন্দিয়া উপজেলায় জন্মগ্রহণকারী আলাউদ্দিন আহমেদ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) থেকে ১৯৭১ সালে এমএসসি ডিগ্রি লাভ করেন।
তিনি ১৯৭৩-১৯৭৭ সাল পর্যন্ত বাংলাদেশ সরকারের ডেপুটি ম্যাজিস্ট্রেট এবং ডেপুটি কালেক্টর হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।
আলাউদ্দিন আহমেদ ১৯৭৫ সালে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) রসায়ন বিভাগের অধ্যাপক হিসেবে যোগদান করেন।
তার মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করেছেন জাবি’র ভিসি ড. মোহাম্মদ নুরুল আলম।
পাশাপাশি শোকসন্তপ্ত পরিবারের সদস্যদের প্রতি গভীর সমবেদনা জানান তিনি।
আরও পড়ুন: ডা. এস এ মালেকের মৃত্যুতে প্রধানমন্ত্রীর শোক
সাবেক মন্ত্রী গোলাম মোস্তফা আর নেই
জাবি ছাত্রলীগের পূর্ণাঙ্গ কমিটি ঘোষণা
দীর্ঘ দশ মাস পর পূর্ণাঙ্গ কমিটির অনুমোদন পেলো জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় (জাবি) শাখা ছাত্রলীগ। নতুন কমিটিতে স্থান পেয়েছেন ৩৮৮ জন।
মঙ্গলবার (২৯ নভেম্বর) রাতে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ সভাপতি আল নাহিয়ান খান জয় ও সাধারণ সম্পাদক লেখক ভট্টাচার্য স্বাক্ষরিত এক বিবৃতিতে পূর্ণাঙ্গ কমিটির অনুমোদন দেয়া হয়।
রাত ৯টা ২০ মিনিটে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের অফিশিয়াল পেজে তা প্রচার করা হয়।
আরও পড়ুন: তথ্য ও প্রযুক্তি আইনে জাবি শিক্ষার্থীর ৭ বছরের কারাদণ্ড
এবারের কমিটিতে সহ-সভাপতি পদে রয়েছেন ১০০ জন, সাংগঠনিক সম্পাদক পদে ১১ জন, যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক ১১ জন, সহ-যুগ্ম সম্পাদক পদ পেয়েছেন ৬৬ জন এবং সদস্য পদ পেয়েছেন ৫৫ জন।
এছাড়া বিভিন্ন পদে সম্পাদক ও উপ-সম্পাদক হিসেবে রয়েছেন মোট ১৪৩ জন।
দীর্ঘদিন পর কমিটি হওয়ায় উচ্ছ্বসিত ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। সদ্য সহ-সভাপতি মনোনীত আরিফুল ইসলাম প্রীতম বলেন, ‘ক্যাম্পাস জীবনের রাজনীতি আজ পূর্ণতা পেলো। দীর্ঘদিনের অপেক্ষার প্রতিফলন পেলাম। সামনের দিনগুলোয় আরও ভালো কিছু হবে’।
শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি আকতারুজ্জামান সোহেল বলেন, ‘রাত ৯টার পর বাংলাদেশ ছাত্রলীগের অফিসিয়াল পেইজ থেকে পূর্ণাঙ্গ কমিটি দেওয়া হয়েছে। এর মাধ্যমে জাবি শাখার ছাত্রলীগের কমিটি পূর্ণতা পেলো। আমাদের দু’জনের কাঁধ থেকে বড় একটা বোঝা নেমে গেলো। আশা করি শাখা ছাত্রলীগ পূর্ণ উদ্যমে কাজ শুরু করবে।’
উল্লেখ্য, এ বছরের ৩ জানুয়ারি বিশ্ববিদ্যালয়ের ৪২ ব্যাচের পাবলিক হেলথ এন্ড ইনফরমেটিক্স বিভাগের শিক্ষার্থী আখতারুজ্জামান সোহেলকে সভাপতি ও ৪৩ ব্যাচের দর্শন বিভাগের হাবিবুর রহমান লিটনকে সাধারণ সম্পাদক করে আংশিক কমিটির অনুমোদন দেয় কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ।
আরও পড়ুন: সাংবাদিক নির্যাতনে জাবির ১১ শিক্ষার্থী সাময়িক বহিষ্কার
জাবির নাট্যতত্ত্ব বিভাগের সহ-প্রতিষ্ঠাতা আফসার আহমদের ৬৩তম জন্মজয়ন্তী
জাবি’র নতুন ভিসি প্রফেসর নূরুল আলম
জাহাঙ্গীরনগর (জাবি) বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস চ্যান্সেলর (ভিসি) হিসেবে অধ্যাপক নূরুল আলমকে নিয়োগ দেয়া হয়েছে। মঙ্গলবার শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, বিশ্ববিদ্যালয়টির চ্যান্সেলর রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় আইন অনুযায়ী নতুন ভাইস চ্যান্সেলর হিসেবে প্রফেসর নূরুল আলমকে নিয়োগ দেন।
আরও পড়ুন: এইচএসসি পরীক্ষা শুরু ৬ নভেম্বর, রুটিন প্রকাশ
নূরুল আলম একই বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থ বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষক।
তিনি প্রো-ভিসি হিসেবে দায়িত্ব পালন করে আসছিলেন। এবং ১ মার্চ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক
প্রয়োজনে ভারপ্রাপ্ত ভিসি হিসেবে তিনি নিয়োগপ্রাপ্ত হয়ে দায়িত্ব পালন করছিলেন।
আরও পড়ুন: প্রশ্নপত্র ফাঁস নিয়ে গুজব ছড়ালে ব্যবস্থা: শিক্ষামন্ত্রী
এ বছর এসএসসি পরীক্ষা ১১টায় শুরু হবে: শিক্ষামন্ত্রী
তথ্য ও প্রযুক্তি আইনে জাবি শিক্ষার্থীর ৭ বছরের কারাদণ্ড
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সম্পর্কে কুরুচিপূর্ণ বক্তব্যের অভিযোগে তথ্য ও প্রযুক্তি আইনের মামলায় জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) সরকার ও রাজনীতি বিভাগের শিক্ষার্থী শামসুল আলম বাবুর সাত বছরের সশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছেন ট্রাইব্যুনাল।
সোমবার রাজধানীর সাইবার ট্রাইব্যুনালের বিচারক জগলুল হোসেন এ রায় ঘোষণা করেন।
ট্রাইব্যুনালের পেশকার শামীম আল মামুন বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
এদিন জামিনে থাকা আসামি বাবু রায় ঘোষণার সময় আদালতে উপস্থিত ছিলেন। রায় ঘোষণার পর আদালত সাজা পরোয়ানা জারি করে আসামিকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।
রায়ে বলা হয়, আসামির বয়স মাত্র ২৩ বছর। তার স্বল্প বয়স বিবেচনায় তাকে তথ্য ও প্রযুক্তি আইন ২০০৬ (সংশোধিত/২০১৩) এর ৫৭ ধারায় ন্যূনতম সাত বছরের সশ্রম কারাদণ্ড প্রদানের সিদ্ধান্ত গৃহীত হলো।
২০১৫ সালের ৫ আগস্ট আসামি শামসুল আলম বাবুর বিরুদ্ধে সাভারের আশুলিয়া থানায় তথ্য ও প্রযুক্তি আইনে এ মামলা দায়ের করা হয়।
মামলার তদন্ত শেষে ২০১৬ সালের ২৬ এপ্রিল আসামির বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল হয়।
আরও পড়ুন: হলের ছাদ থেকে পড়ে জাবি শিক্ষার্থীর মৃত্যু
ওই বছরেরই ২১ জুলাই ট্রাইব্যুনাল অভিযোগ গঠনের মাধ্যমে বিচার শুরুর আদেশ দেন। বিচার চলাকালীন বিভিন্ন সময়ে ৯জনের সাক্ষ্যগ্রহণ করেন আদালত।
মামলার বিবরণে বলা হয়, ২০১৫ সালের ৪ আগস্ট জাবির সরকার ও রাজনৈতিক বিভাগের ৩৮তম ব্যাচের শিক্ষার্থী আল আমিন সেতু বঙ্গবন্ধুর অসমাপ্ত আত্মজীবনী বইয়ের ওপর একটি কলাম পত্রিকায় প্রকাশ করে। ওই লেখাটি একই বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের ৩৮তম ব্যাচের শিক্ষার্থী মোরশেদুর আকন্দ ফেসবুকে পোস্ট করেন।
ওই পোস্টের প্রতিক্রিয়ায় শামসুল আলম বাবু তার ‘মো.কবির মামু’ নামের ফেসবুক আইডি থেকে একটি মন্তব্য করেন। যেখানে তিনি বঙ্গবন্ধু ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সম্পর্কে অত্যন্ত কুরুচিপূর্ণ বক্তব্য দেন।
এ নিয়ে পরবর্তী সময়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ শিক্ষার্থীদের মধ্যে ক্ষোভের সঞ্চার হয় এবং আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি ঘটে। আল আমিন সেতু লিখিতভাবে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে বিষয়টি জানালে শামসুল আলম বাবুকে আটক করা হয়।
এরপর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান নিরাপত্তা কর্মকর্তা মো. ইয়াকুব আলী মিয়া আসামি বাবুকে আশুলিয়া থানায় হস্তান্তর করে এজাহার দাখিল করেন।
এজাহারের সঙ্গে আসামি বাবুর ফেসবুক আইডি হতে দেয়া বক্তব্যের হার্ড কপি এবং আল আমিন সেতুর বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কাছে দাখিল করা অভিযোগের কপি সংযুক্ত করা হয়।
আরও পড়ুন: জাবিতে সশরীরে ক্লাস বন্ধ ঘোষণা
জাবিতে ৬ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত সশরীরে ক্লাস-পরীক্ষা বন্ধ
‘আমার মস্তিষ্কই আমার মৃত্যুর জন্য দায়ী’
বৃষ্টিতে ভিজতে গিয়ে হলের ছাদ থেকে পড়ে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) শিক্ষার্থী অমিত কুমার বিশ্বাসের মৃত্যুর পরে রুম থেকে একটি চিঠি পাওয়া যায়। মঙ্গলবার রাত ৯ টার দিকে তার রুমে বালিশের নিচ থেকে ওই সুইসাইড নোট উদ্ধার করেন তার রুমমেটরা।
সুইসাইড নোটের লিখা থেকে ধারণা করা হয় অমিত কুমার আত্মহত্যা করেছে।
সুইসাইড নোটে লিখা ছিল,‘আমার মৃত্যুর জন্য কেউ দায়ী না। আমার মস্তিষ্কই আমার মৃত্যুর জন্য দায়ী। আমি নিজেই নিজের শত্রু হয়ে পড়েছি অজান্তেই। নিজের সঙ্গে যুদ্ধ করতে করতে আমি ক্লান্ত। আর না। এবার মুক্তি চাই। প্রিয় মা, বাবা, ছোটবোন সবাই পারলে আমাকে ক্ষমা করে দিও।’
বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রক্টর আ স ম ফিরোজ উল হাসান জানিয়েছেন, সুইসাইড নোটের হাতের লিখার সঙ্গে অমিত বিশ্বাসের হাতের লিখার মিল আছে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ রফিক-জব্বার হলের প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক সোহেল আহমেদ বলেন, ‘তার খাতার লিখার সঙ্গে সুইসাইড নোটের হাতের লিখার মিল রয়েছে। ইতোমধ্যে পুলিশ কেস হয়েছে, তাদের তদন্তের পরেই বলা যাবে এই লিখা তার কিনা।’
আরও পড়ুন: হলের ছাদ থেকে পড়ে জাবি শিক্ষার্থীর মৃত্যু
তিনি আরও বলেন, ‘তার রুমের পড়ার টেবিলে সুইসাইড বিষয়ক লেখা কিছু মন্তব্য দেখা গেছে। পুলিশের পরিদর্শনের পর আমরা রুমটি বন্ধ করে দিয়েছি।’
নিহত অমিত কুমার বিশ্ববিদ্যালয়ের ৪৫ ব্যাচের উদ্ভিদবিজ্ঞান বিভাগ ও শহীদ রফিক-জব্বার হলের আবাসিক শিক্ষার্থী। তার গ্রামের বাড়ি খুলনায়।
জানা যায়, বটতলায় রুমমেটদের সঙ্গে দুপুরের খাবারের পর তাদের রেখে একাই হলে চলে আসেন অমিত। পরে দুপুর আড়াইটার দিকে পাঁচতলা হলের ছাদ থেকে ভারী কিছু নিচে পড়ার শব্দ শুনে বাইরে আসেন কয়েকজন শিক্ষার্থী। বাইরে এসে অমিতকে মাটিতে অজ্ঞান হয়ে পড়ে থাকতে দেখেন তারা। এসময় তাকে বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিকেল সেন্টারে নিয়ে যাওয়া হলে সেখানের কর্তব্যরত চিকিৎসক উন্নত চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে নিয়ে যেতে বলেন। পরে তাকে সাভারের এনাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। অবস্থা গুরুতর দেখে হাসপাতালের নিবিড় পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রে (আইসিইউ) স্থানান্তর করা হলে বিকাল সাড়ে ৫টায় তার মৃত্যু হয়েছে বলে নিশ্চিত করেন চিকিৎসক ড. ইফরান।
এ বিষয়ে আশুলিয়া থানার তদন্ত কর্মকর্তা (ওসি) জিয়াউল ইসলাম বলেন, তদন্ত শুরু হয়েছে। আমরা তার দুটি মোবাইল ফোন, মানিব্যাগ ও সুইসাইড নোটের হাতের লিখা মিলানোর জন্য দুটি খাতা আলামত হিসাবে সংগ্রহ করেছি। ময়নাতদন্তের রিপোর্ট হাতে আসার পর আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।