বৃষ্টিতে ভিজতে গিয়ে হলের ছাদ থেকে পড়ে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) শিক্ষার্থী অমিত কুমার বিশ্বাসের মৃত্যুর পরে রুম থেকে একটি চিঠি পাওয়া যায়। মঙ্গলবার রাত ৯ টার দিকে তার রুমে বালিশের নিচ থেকে ওই সুইসাইড নোট উদ্ধার করেন তার রুমমেটরা।
সুইসাইড নোটের লিখা থেকে ধারণা করা হয় অমিত কুমার আত্মহত্যা করেছে।
সুইসাইড নোটে লিখা ছিল,‘আমার মৃত্যুর জন্য কেউ দায়ী না। আমার মস্তিষ্কই আমার মৃত্যুর জন্য দায়ী। আমি নিজেই নিজের শত্রু হয়ে পড়েছি অজান্তেই। নিজের সঙ্গে যুদ্ধ করতে করতে আমি ক্লান্ত। আর না। এবার মুক্তি চাই। প্রিয় মা, বাবা, ছোটবোন সবাই পারলে আমাকে ক্ষমা করে দিও।’
বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রক্টর আ স ম ফিরোজ উল হাসান জানিয়েছেন, সুইসাইড নোটের হাতের লিখার সঙ্গে অমিত বিশ্বাসের হাতের লিখার মিল আছে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ রফিক-জব্বার হলের প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক সোহেল আহমেদ বলেন, ‘তার খাতার লিখার সঙ্গে সুইসাইড নোটের হাতের লিখার মিল রয়েছে। ইতোমধ্যে পুলিশ কেস হয়েছে, তাদের তদন্তের পরেই বলা যাবে এই লিখা তার কিনা।’
আরও পড়ুন: হলের ছাদ থেকে পড়ে জাবি শিক্ষার্থীর মৃত্যু
তিনি আরও বলেন, ‘তার রুমের পড়ার টেবিলে সুইসাইড বিষয়ক লেখা কিছু মন্তব্য দেখা গেছে। পুলিশের পরিদর্শনের পর আমরা রুমটি বন্ধ করে দিয়েছি।’
নিহত অমিত কুমার বিশ্ববিদ্যালয়ের ৪৫ ব্যাচের উদ্ভিদবিজ্ঞান বিভাগ ও শহীদ রফিক-জব্বার হলের আবাসিক শিক্ষার্থী। তার গ্রামের বাড়ি খুলনায়।
জানা যায়, বটতলায় রুমমেটদের সঙ্গে দুপুরের খাবারের পর তাদের রেখে একাই হলে চলে আসেন অমিত। পরে দুপুর আড়াইটার দিকে পাঁচতলা হলের ছাদ থেকে ভারী কিছু নিচে পড়ার শব্দ শুনে বাইরে আসেন কয়েকজন শিক্ষার্থী। বাইরে এসে অমিতকে মাটিতে অজ্ঞান হয়ে পড়ে থাকতে দেখেন তারা। এসময় তাকে বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিকেল সেন্টারে নিয়ে যাওয়া হলে সেখানের কর্তব্যরত চিকিৎসক উন্নত চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে নিয়ে যেতে বলেন। পরে তাকে সাভারের এনাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। অবস্থা গুরুতর দেখে হাসপাতালের নিবিড় পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রে (আইসিইউ) স্থানান্তর করা হলে বিকাল সাড়ে ৫টায় তার মৃত্যু হয়েছে বলে নিশ্চিত করেন চিকিৎসক ড. ইফরান।
এ বিষয়ে আশুলিয়া থানার তদন্ত কর্মকর্তা (ওসি) জিয়াউল ইসলাম বলেন, তদন্ত শুরু হয়েছে। আমরা তার দুটি মোবাইল ফোন, মানিব্যাগ ও সুইসাইড নোটের হাতের লিখা মিলানোর জন্য দুটি খাতা আলামত হিসাবে সংগ্রহ করেছি। ময়নাতদন্তের রিপোর্ট হাতে আসার পর আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।