গাজীপুর
গাজীপুরে ১২৩ কারখানায় ভাঙচুর, ২২ মামলায় ৮৮ জন গ্রেপ্তার
শিল্প পুলিশের ডিআইজি মো. জাকির হোসেন খান বলেছেন, গার্মেন্টস সেক্টরে শ্রমিকের মজুরি বাড়ানোকে কেন্দ্র করে গাজীপুরে শ্রমিক অসন্তোষ চলছে।
তিনি বলেন, আমাদের কাছে তথ্য আছে ১২৩টি কারখানায় কম-বেশি ধ্বংসাত্মক কার্যক্রম চালানো হয়েছে। এ ছাড়া বিভিন্ন থানায় ২২টি মামলায় এ পর্যন্ত ৮৮ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
আরও পড়ুন: গাজীপুরে এপিসি কারে বিস্ফোরণ, ৫ পুলিশ আহত
শনিবার (১১ নভেম্বর) দুপুর ১২টার দিকে গাজীপুরের কোনাবাড়িতে শ্রমিকদের আন্দোলনে ক্ষতিগ্রস্ত কারখানা তুসুকা গার্মেন্টস্ পরিদর্শনে এসে তিনি সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন।
ডিআইজি জাকির হোসেন বলেন, গার্মেন্টস সেক্টরে শ্রমিকের মজুরি বাড়ানোকে কেন্দ্র করে এখানে শ্রমিক অসন্তোষ চলছে। আমাদের কাছে তথ্য আছে ১২৩টি কারখানায় কম-বেশি ধ্বংসাত্মক কার্যক্রম চালানো হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, শ্রমিকদের আন্দোলন কোনাবাড়িতে বেশি। আশুলিয়াতে কিছুটা আছে এবং চট্টগ্রাম এলাকায় আন্দোলন নেই। কোনাবাড়িতে একটি গ্রুপ এখানে মদদ দিচ্ছে। ইন্ডাস্ট্রিয়াল পুলিশ ও ইন্টেলিজেনস সেল আছে তারাও কাজ করছে।
তিনি বলেন, শিল্প পুলিশ, গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশ, র্যাব, জেলা পুলিশসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী অন্য বাহিনীর সবাই মিলে আমরা এ পর্যন্ত ৮৮ জনকে গ্রেপ্তার করেছি এবং বিভিন্ন থানায় ২২টি মামলা হয়েছে।
তিনি বলেন, আমাদের অভিযান অব্যাহত। সরকার ইতোমধ্যে মজুরি ঘোষণা করেছেন এবং আমাদের ধারণা এর পেছনে একটা গ্রুপ তাদের উসকানি দিচ্ছে আন্দোলন করার জন্য। এখানে যারা কাজ উসকানি দিচ্ছে, আমরা তাদের চিহ্নিত করার কাজ করছি।
ডিআইজি আরও বলেন, সাধারণ শ্রমিকদের আতঙ্কিত হওয়ার কোনো কারণ নেই। এই ধ্বংসাত্মক কর্মকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত শ্রমিকদের সঙ্গে বহিরাগত লোক আছে।
তিনি বলেন, যেসব শ্রমিক এসব ধ্বংসাত্মক কাজের সঙ্গে যুক্ত আছে তারাই আতঙ্কগ্রস্ত হবে এবং তাদের আমরা গ্রেপ্তার করব। এর পেছনে যারা বহিরাগত আছে তাদেরও আমরা গ্রেপ্তার করব।
ডিআইজি বলেন, সাধারণ শ্রমিকদের আতঙ্কিত হওয়ার কোনো কারণ নেই।
তিনি জানান, গাজীপুর কোনাবাড়ি মিলে ১৭টি কারখানা বন্ধ। মালিক কর্তৃপক্ষ যাতে কারখানা চালু রাখেন আমরা তাদের সঙ্গে কথা বলছি, তারা দ্রুতই উৎপাদনে যাবে।
কারখানা পরিদর্শনের সময় উপস্থিত ছিলেন- গাজীপুর শিল্পাঞ্চল পুলিশ-২ এর পুলিশ সুপার সারোয়ার আলমসহ শিল্প পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।
আরও পড়ুন: গাজীপুরে বাসে আগুন দিয়েছে অবরোধকারীরা
গাজীপুরে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে নারী পোশাক শ্রমিক নিহত
গাজীপুরে বাসে আগুন দিয়েছে অবরোধকারীরা
গাজীপুরে বিএনপি ও সমমনা দলগুলোর ৪৮ ঘণ্টার অবরোধের মধ্যে শর্মিলী পরিবহনের একটি বাসে আগুন দিয়েছে দুর্বৃত্তরা। বুধবার (৮ অক্টোবর) মাওনা শ্রীপুরের এমসি বাজার এলাকায় ঘটনাটি ঘটে।
ফায়ার সার্ভিস অ্যান্ড সিভিল ডিফেন্স কন্ট্রোল রুমের (মিডিয়া সেল) স্টেশন অফিসার তানহা বিন জসিম জানান, সন্ধ্যা ৬টা ৮ মিনিটের দিকে শ্রীপুর ফায়ার স্টেশনের দুটি ইউনিট ঘটনাস্থলে পৌঁছায়।
আরও পড়ুন: মিরপুরে ঢাবি কর্মীদের বহনকারী বিআরটিসি বাসে আগুন
উল্লেখ্য, গত ৬ নভেম্বর বিএনপি, জামায়াতসহ সমমনা দলগুলো বুধবার থেকে সারাদেশে ৪৮ ঘণ্টার সড়ক-রেল-নৌপথ অবরোধের ঘোষণা দেয়।
এর আগে বিরোধী দলের ৪৮ ঘণ্টার দেশব্যাপী অবরোধের শেষ দিনে সর্বশেষ আন্দোলনের ঘোষণা দেওয়া হয়েছিল, যা পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষ, ভাঙচুর ও যানবাহন পোড়ানো সহ ব্যাপক সহিংসতার ঘটনা ঘটেছিল।
আরও পড়ুন: খাগড়াছড়িতে কুরিয়ার সার্ভিসের কাভার্ডভ্যানে আগুন
৪৮ ঘণ্টার অবরোধের আগে রাজধানীর মালিবাগে বাসে আগুন
গাজীপুরে এপিসি কারে বিস্ফোরণ, ৫ পুলিশ আহত
শ্রমিক আন্দোলন দমন করতে গিয়ে গাজীপুরে এপিসি কার বিস্ফোরণে আহত হয়েছেন ৫ পুলিশ সদস্য। তাদের একজনের হাতের কব্জি প্রায় বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে।
বুধবার (৮ নভেম্বর) বিকালে এই দুর্ঘটনা ঘটে।
জানা গেছে, বেতন বাড়ানোর দাবিতে বিকালে নগরের নাওজোড় এলাকায় ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করতে থাকে শ্রমিকরা। এ সময় বিক্ষুব্ধ শ্রমিকদের সঙ্গে পুলিশের ব্যাপক সংঘর্ষ হয়। শ্রমিক বিক্ষোভ দমন করতে গিয়ে পুলিশের এপিসি কারে একটি বিস্ফোরণ ঘটে। এতে কয়েকজন পুলিশ সদস্য গুরুতর আহত হয়েছেন।
আহত একজনের হাতের কব্জি প্রায় বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে। আহত সব পুলিশ সদস্যকে প্রথমে গাজীপুরের শহীদ তাজউদ্দীন আহমেদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ও পরে তাদের তিনজনকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে (ঢামেক) নেওয়া হয়েছে।
আরও পড়ুন: গাজীপুরে শ্রমিক বিক্ষোভ, পোশাক কারখানা বন্ধ ঘোষণা
পুলিশের একটি সূত্র জানিয়েছে, এপিসি কারের ভেতরে পুলিশ সদস্যদের অসাবধানতায় বিস্ফোরণ ঘটে। এতে সেখানে থাকা পুলিশ সদস্যরা আহত হন। একজনের হাতের কব্জি মারত্মক ক্ষতিগ্রস্ত হয় ওই বিস্ফোরণে।
গাজীপুরের শহীদ তাজউদ্দিন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসক রফিকুল ইসলাম জানান, আহত অবস্থায় পাঁচজন পুলিশ সদস্যকে হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়েছে। এদের মধ্যে গুরুতর আহত পুলিশ সদস্য প্রবীর (৩০), ফুয়াদ (২৮) ও খোরশেদকে (৩০) উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। আশিকুল (২৭) ও বিপুলকে (২৪) হাসপাতালে ভর্তি রেখে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।
এদের মধ্যে ফুয়াদের অবস্থা বেশি গুরুতর, তিনি ডান হাতের আঙুল ও কব্জির নিচের অংশে গুরুতর আঘাতপ্রাপ্ত হয়েছে বলে জানান চিকিৎসক।
আরও পড়ুন: গাজীপুরে সোয়েটার কারখানায় শ্রমিক বিক্ষোভ, অন্য কারখানায় হামলা
গাজীপুরে তেল ব্যবসায়ীর লাশ উদ্ধার
গাজীপুরে নিজ দোকান থেকে তেল ব্যবসায়ীর লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। মঙ্গলবার (৭ নভেম্বর) রাত ৮টার দিকে লাশটি উদ্ধার করে পুলিশ।
নিহত আব্দুর রহিম (২৪) ঝালকাঠি জেলার কাঠালিয়া উপজেলার মরিচবুনিয়া গ্রামের তন্নু হাওলাদারের ছেলে। তিনি কড্ডা এলাকায় স্থানীয় আলমাস আলীর বাড়িতে ভাড়ায় বসবাস করে জ্বালানি তেলের ব্যবসা করতেন।
গাজীপুর মহানগর পুলিশের বাসন থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (তদন্ত) রফিকুল ইসলাম জানান, আব্দুর রহিম মঙ্গলবার সন্ধ্যায় নাওজোড় ফ্লাইওভারের পশ্চিম দিকে একটি টং দোকানে তার রক্তাক্ত লাশ দেখে স্থানীয়রা পুলিশে খবর দেয়। খবর পেয়ে পুলিশ লাশ উদ্ধার করে সুরতহাল প্রতিবেদন করে শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠায়।
আরও পড়ুন: চট্টগ্রামে নিখোঁজ শিশুর লাশ উদ্ধার করল পিবিআই
তিনি আরও জানান, নিহতদের মুখমণ্ডল দিয়ে রক্ত ঝড়তে দেখা গেছে। ধারণা করা হচ্ছে, দুর্বৃত্তের আঘাতে আব্দুর রহিমের মৃত্যু হয়েছে। তবে তার শরীরের কোনো আঘাতের চিহ্ন নেই। ময়নাতদন্তের পর মৃত্যুর প্রকৃত কারণ জানা যাবে।
এ ঘটনায় কেউ আটক হয়নি। তদন্ত করে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলেও জানান ওসি।
আরও পড়ুন: তুরস্কে আরও ৪ জনের লাশ উদ্ধার করল বাংলাদেশ সম্মিলিত দল
গাজীপুরে পোশাক কারখানায় অগ্নিসংযোগের ঘটনায় ছাত্রদল নেতা গ্রেপ্তার
গাজীপুরে গার্মেন্টস ফ্যাক্টরিসহ বিভিন্ন স্থাপনায় হামলা, ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের নেতৃত্ব দেওয়ার অভিযোগে ছাত্রদল নেতা রিপন হোসেনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
এ বিষয়ে আজ মঙ্গলবার (৭ নভেম্বর) গাজীপুর মহানগর পুলিশ কমিশনার কার্যালয়ের হলরুমে সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।
মহানগর পুলিশ কমিশনার মো. মাহবুব আলম বলেন, ‘বিভিন্ন ফুটেজ ও স্থিরচিত্র পর্যালোচনা করে দেখা গেছে, জেলার সফিপুর ও কোনাবাড়ীর একাধিক পোশাক কারখানায় কালিয়াকৈর উপজেলা ছাত্রদলের যুগ্ম আহ্বায়ক রিপন হোসেনের নেতৃত্বে অগ্নিসংযোগ ও ভাঙচুর করা হয়।’
আরও পড়ুন: গ্রেপ্তারদের কাছ থেকে 'চাঞ্চল্যকর' তথ্য পাওয়ার দাবি সিটিটিসি’র
তিনি আরও বলেন, ‘গার্মেন্টস শ্রমিকদের বেতন বাড়ানোর দাবিকে পুঁজি করে দলীয় এজেন্ডা বাস্তবায়নের জন্য তার নেতৃত্বে এসব অপরাধ করে অস্থিতিশীল পরিবেশ সৃষ্টি করার চেষ্টা করা হয়।’
পুলিশের এই কর্মকর্তা বলেন, পুলিশের চৌকস টিম অনুসন্ধান করে গতকাল তাকে ঢাকার হাজারীবাগ এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করেছে। তাকে আদালতে পাঠিয়ে আরো বিস্তারিত তথ্য উদঘাটন করতে ১০দিনের রিমান্ডের আবেদন করা হবে।
আরও পড়ুন: বিরোধী দলের নেতাদের গ্রেপ্তার করায় উদ্বিগ্ন ইইউ
গাজীপুরে দুটি বাসে আগুন দিয়েছে দুর্বৃত্তরা
গাজীপুরে বিএনপির ডাকা অবরোধের দ্বিতীয় দফার ২য় দিনে পৃথক স্থানে দু’টি বাসে অগ্নিসংযোগ করেছে দুর্বৃত্তরা। তবে এসব ঘটনায় কেউ হতাহত হয়নি।
রবিবার (৫ নভেম্বর) রাতে গাজীপুর জেলা শহরের বিলাসপুর বটতলা এলাকায় সড়কের পাশে পার্কিং করে রাখা নিরাপদ পরিবহনের একটি বাসে আগুন ধরিয়ে দেয় দুর্বৃত্তরা।
গাজীপুর ফায়ার সার্ভিসের পরিদর্শক রকিবুল হাসান জানান, খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা ঘটনাস্থলে গিয়ে আগুন নেভায়।
আরও পড়ুন: রূপসায় বাসে আগুন দিয়েছে দুর্বৃত্তরা
অন্যদিকে, ভোরে কালিয়াকৈর উপজেলার সফিপুর এলাকায় ঢাকা- টাঙ্গাইল মহাসড়কে একটি বাসে অগ্নিসংযোগ করে দুর্বৃত্তরা।
বাসটি সফিপুর এলাকায় পৌঁছালে ধীরগতিতে চলন্ত ওই গাড়িতে কয়েকজন যুবক দৌড়ে উঠে পেট্রোল নিক্ষেপ করে আগুন ধরিয়ে দিয়ে পালিয়ে যায়।
আরও পড়ুন: চট্টগ্রামে রাতে আরও একটি বাসে আগুন
গাজীপুরে পোশাক কারখানা খোলা, ফের শ্রমিকদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষ
কয়েক দিনের বিক্ষোভের পর গাজীপুরের অধিকাংশ তৈরি পোশাক কারখানায় শ্রমিকেরা কাজে যোগ দিয়েছেন শনিবার সকালে। অপ্রীতিকর ঘটনা ও সহিংসতা এড়াতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর বাড়তি সদস্য মোতায়েন করা হয়।
তবে শনিবার সকালে সদর উপজেলার নতুন বাজার এলাকার বেতন বাড়ানোর দাবিতে কিছু শ্রমিক আবারও বিক্ষোভ শুরু করে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক অবরোধের চেষ্টা করে। এ সময় পুলিশ তাদের বাধা দেয়। এতে তারা উত্তেজিত হয়ে পুলিশকে লক্ষ্য করে ইট-পাটকেল নিক্ষেপ করতে থাকে। পরে পুলিশ সাউন্ড গ্রেনেড, কাঁদানে গ্যাস ছুঁড়ে শ্রমিকদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়।
আরও পড়ুন: গাজীপুরে আগুনে পুড়ে পোশাককর্মী নিহত
এসময় শ্রমিকদের ছুড়া ইটের আঘাতে গাজীপুর শিল্প পুলিশ-২ এর শ্রীপুর সাব-জোনের সহকারী পুলিশ সুপার মো. আসাদ, পরিদর্শক আবদুর নুরসহ কয়েকজন আহত হন।
সহকারী পুলিশ সুপার মো. আসাদ বলেন, আমরা প্রথমে শ্রমিকদের বুঝানোর চেষ্টা করি। কিন্তু তারা আমাদের কথা না শুনে মহাসড়ক অবরোধের চেষ্টা করে। পুলিশ তাদের বাধা দেয়। এতে উত্তেজিত শ্রমিকরা পুলিশকে লক্ষ্য করে ইট-পাটকেল নিক্ষেপ করলে পরিদর্শক আবদুর নুর ও আমি রক্তাক্ত হই।
গাজীপুর-২ শিল্পাঞ্চলের পুলিশ সুপার সারোয়ার আলম জানান, গাজীপুরে শ্রমিকদের সহিংসতা ঠেকাতে ৩ হাজারের বেশি আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা কাজ করছেন। শ্রমিক অসন্তোষ ও সহিংসতার পর শনিবার সকাল থেকে অধিকাংশ কারখানা খোলা হয়েছে। সেখানে শান্তিপূর্ণ পরিবেশে কাজ চলছে। গত কয়েকদিনের সহিংসতা ও অগ্নিসংযোগের ঘটনায় মামলা দায়ের ও বেশ কয়েকজন শ্রমিককে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
ন্যূনতম মজুরি ২৩ হাজার টাকা নির্ধারণের দাবিতে গত ২৩ অক্টোবর থেকে আন্দোলনে নামেন শ্রমিকেরা। সে সময় বেশ কিছু এলাকায় শ্রমিক বিক্ষোভ থেকে গাড়ি ভাঙচুর; কারখানায় ও শপিংমলে অগ্নিসংযোগ করা হয়। এ অবস্থায় শিল্প এলাকার অধিকাংশ কারখানায় ছুটি ঘোষণা করে কর্তৃপক্ষ।
পরে শ্রমিকদের আন্দোলনের বিষয়টি নিয়ে সরকার, মালিক, বিজিএমইএ, শ্রমিক সংগঠনের নেতারা আলোচনায় বসেন। গঠন করা হয় মজুরি বোর্ড, যেখানে শ্রমিকদের ন্যূনতম মজুরি নির্ধারণ করে নভেম্বর মাসে ঘোষণা ও ডিসেম্বর মাস থেকে কার্যকরের সিদ্ধান্ত হয়। এরপর শনিবার থেকে কারখানা খোলার সিদ্ধান্ত নেয় বিজিএমইএ। সিদ্ধান্ত মেনে গাজীপুরে অধিকাংশ তৈরি পোশাক কারখানায় কাজে যোগ দেন শ্রমিকেরা।
আরও পড়ুন: গাজীপুরে পোশাক শ্রমিকদের বিক্ষোভে পুলিশের টিয়ার শেল নিক্ষেপ
ঢাকা ও গাজীপুরে পোশাক কারখানার নিরাপত্তা জোরদারে বিজিবি মোতায়েন
গাজীপুরে পোশাক শ্রমিকদের বিক্ষোভে পুলিশের টিয়ার শেল নিক্ষেপ
মূল বেতন বৃদ্ধির দাবিতে গাজীপুরের গার্মেন্টস কারখানার শ্রমিকরা আজও বিক্ষোভ অব্যাহত রেখেছেন।
সকাল সাড়ে ৮টার দিকে শ্রমিকরা মিছিল নিয়ে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক অবরোধের চেষ্টা করলে শিল্প পুলিশ ও বাসন থানার পুলিশ তাদের ছত্রভঙ্গ করতে সাউন্ড গ্রেনেড ও টিয়ার শেল নিক্ষেপ করে।
গাজীপুর শিল্প পুলিশ-২ এর পুলিশ সুপার সারোয়ার আলম সাংবাদিকদের বলেন, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে বিপুল সংখ্যক পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
আরও পড়ুন: ঢাকা ও গাজীপুরে পোশাক কারখানার নিরাপত্তা জোরদারে বিজিবি মোতায়েন
তিনি বলেন, শ্রমিকদের ভাঙচুর না করে শান্ত থাকার আহ্বান জানানো হয়েছে।
গাজীপুরের ভোগড়া বাইপাস এলাকার টিএম ফ্যাশন লিমিটেডের শ্রমিকরা বিক্ষোভ শুরু করলে আশপাশের কারখানার শ্রমিকরা এতে যোগ দেন।
বর্তমানে আন্দোলনরত শ্রমিকরা মহাসড়কের চারপাশে অবস্থান নিয়েছেন।
আরও পড়ুন: গাজীপুরে আগুনে পুড়ে পোশাককর্মী নিহত
গাজীপুরে পোশাকশ্রমিকদের বিক্ষোভ: শ্রমিক নিহত
ঢাকা ও গাজীপুরে পোশাক কারখানার নিরাপত্তা জোরদারে বিজিবি মোতায়েন
গার্মেন্টস সেক্টরে চলমান শ্রমিক অস্থিরতার মধ্যে নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে ঢাকা ও আশপাশের এলাকায় বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) সদস্য মোতায়েন করা হয়েছে।
বিজিবি সদর দপ্তরের জনসংযোগ কর্মকর্তা শরিফুল ইসলাম জানান, আশুলিয়া, সাভার, মিরপুর, রামপুরা, আব্দুল্লাহপুর, টঙ্গী, গাজীপুর, কোনাবাড়ীতে সৈন্য মোতায়েন করা হয়েছে।
ন্যূনতম মূল বেতন ২৩ হাজার টাকা করার দাবিতে গত কয়েকদিন ধরে ঢাকাসহ বিভিন্ন স্থানে বিক্ষোভ করছেন পোশাক কারখানার শ্রমিকরা।
আরও পড়ুন: গাজীপুরে আগুনে পুড়ে পোশাককর্মী নিহত
ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কে চলমান বিক্ষোভ চলাকালে সোমবার গাজীপুরের মালেকের বাড়িস্থ ডিজাইন এক্সপ্রেস লিমিটেড কোম্পানির ইলেকট্রিশিয়ান রাসেল হাওলাদার (২২) মারা গেছেন।
আন্দোলনরত পোশাক শ্রমিকরা বলছেন, ‘পুলিশের গুলিতে’ রাসেল মারা গেছেন।
এদিকে বিভিন্ন স্থানে পুলিশ ও পোশাক শ্রমিকদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে।
অস্থিরতার পর অধিকাংশ পোশাক কারখানা বন্ধ ঘোষণা করা হয়।
আরও পড়ুন: গাজীপুরে শ্রমিকদের বিক্ষোভ, গাড়িতে আগুন
গাজীপুরে পোশাকশ্রমিকদের বিক্ষোভ: শ্রমিক নিহত
গাজীপুরে আগুনে পুড়ে পোশাককর্মী নিহত
গাজীপুরের কোনাবাড়ী এলাকায় এবিএম ফ্যাশন লিমিটেডের কারখানায় বিক্ষুব্ধ শ্রমিকদের দেওয়া আগুনে পুড়ে ওই কারখানার এক পোশাককর্মী নিহত হয়েছেন।
সোমবারের (৩০ অক্টোবরের) ঘটনায় নিহত ইমরান হোসেন (৩০) কুমিল্লার লাকসাম উপজেলার ভুমবাড়িয়ার জহিরুল ইসলামের ছেলে।
গাজীপুর ফায়ার সার্ভিসের উপ-সহকারী পরিচালক মোহাম্মদ আব্দুল্লাহ আল-আরেফিন জানান, আগুন নিয়ন্ত্রণে আনার পর কারখানার পুড়ে যাওয়া অংশ থেকে তার লাশ উদ্ধার করা হয়। পরে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে।
উল্লেখ্য, ন্যূনতম ২৩ হাজার টাকা মূল বেতনের দাবিতে পোশাক শ্রমিকরা বিক্ষোভ করে আসছে।
আরও পড়ুন: গাজীপুরে পঞ্চম দিনের মতো শ্রমিকদের সড়ক অবরোধ
পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিস সূত্রে জানা গেছে, অবরোধের কারণে বেশিরভাগ কারখানা বন্ধ ঘোষণা করা হলেও এবিএম ফ্যাশন লিমিটেড খোলা ছিল। এই খবর বিক্ষোভকারীদের মধ্যে ছড়িয়ে পড়ে এবং তারা ওই কারখানার শ্রমিকদের আন্দোলনের আহ্বান জানান। শ্রমিকরা আন্দোলনে যোগ না দিলে তারা গেট ভেঙে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মারধর করেন।
এক পর্যায়ে কারখানায় আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়। খবর পেয়ে কাশিমপুর ডিবিএল ফায়ার সার্ভিসের ৩টি ইউনিট প্রায় এক ঘণ্টার চেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে।
গাজীপুর ফায়ার সার্ভিসের উপ-সহকারী পরিচালক মোহাম্মদ আবদুল্লাহ আল-আরেফিন জানান, ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা তাৎক্ষণিকভাবে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন।
আরও পড়ুন: গাজীপুরে শ্রমিকদের বিক্ষোভ, গাড়িতে আগুন
গাজীপুরে পোশাকশ্রমিকদের বিক্ষোভ: শ্রমিক নিহত