দক্ষিণ কোরিয়া
শান্তিপূর্ণ পারমাণবিক শক্তি ব্যবহারে সহযোগিতায় বাংলাদেশ ও দ. কোরিয়ার সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর
পারমাণবিক শক্তির শান্তিপূর্ণ ব্যবহারে সহযোগিতার জন্য সমঝোতা স্মারক (এমওইউ) স্বাক্ষর করেছে কোরিয়া পরমাণু শক্তি গবেষণা ইনস্টিটিউট (কেএইআরআই) ও বাংলাদেশ পরমাণু শক্তি কমিশন (বিএইসি)।
বুধবার ঢাকায় বিএইসি ভবনে এই চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। কেএইআরআই এর প্রেসিডেন্ট ড. পার্ক ওয়ান সিওক, বিএইসি এর চেয়ারম্যান ড. মো. আজিজুল হক, বাংলাদেশে নিযুক্ত কোরিয়ার রাষ্ট্রদূত লি জ্যাং-কেউন এবং বিএইসি ও কেএইআরআই এর অন্যান্য কর্মকর্তা উপস্থিত ছিলেন।
সমঝোতা স্মারক অনুসারে, কেএইআরআই ও বিএইসি পারমাণবিক শক্তির শান্তিপূর্ণ ব্যবহারের বিভিন্ন ক্ষেত্রে সহযোগিতা জোরদার করবে। যার মধ্যে রয়েছে গবেষণা চুল্লির উন্নয়ন, ব্যবহার ও আপগ্রেড, রেডিওআইসোটোপের উৎপাদন ও প্রয়োগ, বিকিরণ প্রযুক্তির বিকাশ, নিউট্রন বিজ্ঞান ও পারমাণবিক/তেজস্ক্রিয় বর্জ্য ব্যবস্থাপনা।
আরও পড়ুন: দক্ষিণ কোরিয়ার নবনির্বাচিত প্রধানমন্ত্রীকে শেখ হাসিনার অভিনন্দন
কোরিয়ার প্রত্যাশা সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর দুটি সংস্থার মধ্যে বিদ্যমান সহযোগিতাকে একটি নতুন উচ্চতায় নিয়ে যাওয়ার জন্য গুরুত্বপূর্ণ গতি প্রদান করবে।
দক্ষিণ কোরিয়ার নবনির্বাচিত প্রধানমন্ত্রীকে শেখ হাসিনার অভিনন্দন
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কোরিয়া প্রজাতন্ত্রের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে নিয়োগ পাওয়ায় রবিবার হান ডাক-সুকে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন।
তিনি বলেন, বাংলাদেশ ও কোরিয়া প্রজাতন্ত্রের মধ্যে যৌথ মূল্যবোধ, পারস্পরিক শ্রদ্ধা ও অভিন্ন আকাঙ্খার ভিত্তিতে চমৎকার দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক রয়েছে।
তিনি নতুন কোরিয়ার প্রধানমন্ত্রীকে লেখা চিঠিতে বলেছেন, ‘আমাদের সম্পর্ক সময়ের সঙ্গে সঙ্গে গভীরতা এবং মাত্রায় অসাধারণ বৃদ্ধি পেয়েছে। কোরিয়া প্রজাতন্ত্র এখন বাংলাদেশের একটি গুরুত্বপূর্ণ অর্থনৈতিক ও উন্নয়ন সহযোগী। সাম্প্রতিক বছরগুলিতে, আমাদের দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য ও বিনিয়োগ উল্লেখযোগ্য সম্প্রসারণ প্রত্যক্ষ করেছে, যার ফলে বাংলাদেশে কোরিয়ান কোম্পানি এবং সংস্থাগুলোর উপস্থিতি বৃদ্ধি পেয়েছে’।
তিনি উল্লেখ করেন,দুই দেশের বর্তমান উন্নয়নের গতিপথ আমাদের দুই দেশের জনগণের সুবিধার জন্য গভীর ও বিস্তৃত অংশীদারিত্বের জন্য প্রচুর সম্ভাবনা প্রদান করে।
তিনি বলেন, ‘এক দশকেরও বেশি সময় ধরে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির বৃদ্ধি এবং অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ খাতে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতির ফলে বাংলাদেশে এখন কোরিয়ার মতো তার অন্যান্য অংশীদারদের জন্য প্রচুর কাজের সুযোগ রয়েছে।’
আরও পড়ুন: রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনে দ. কোরিয়ার ‘আরও উদ্যোগ’ চায় বাংলাদেশ
এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, সরকার দেশের আধুনিকায়ন ও অর্থনীতির প্রতিযোগিতা সক্ষমতা বাড়াতে অনেক উদ্যোগ ও মেগা প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে।
তিনি তার গভীর আত্মবিশ্বাস ব্যক্ত করেন যে হান ডাক-সুর দায়িত্বে থাকাকালীন দুই বন্ধুত্বপূর্ণ দেশের মধ্যে যে বন্ধুত্ব, বোঝাপড়া এবং সহযোগিতার বন্ধন বিদ্যমান, তা আরও দৃঢ় হবে।
তিনি দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ককে আরও সুসংহত করতে এবং অভিন্ন স্বার্থের আঞ্চলিক ও বৈশ্বিক বিষয়গুলোকে এগিয়ে নিতে তার সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করার আগ্রহ প্রকাশ করেন।
শেখ হাসিনা দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ককে নতুন উচ্চতায় নিয়ে যাওয়ার জন্য অভিন্ন অগ্রাধিকারগুলো যৌথভাবে চিহ্নিত করার সুযোগ গ্রহণের লক্ষ্যে পারস্পরিক সুবিধাজনক সময়ে নতুন প্রধানমন্ত্রীকে বাংলাদেশ সফরেরে আমন্ত্রণ জানান।
তিনি কোরিয়া প্রজাতন্ত্রের বন্ধুত্বপূর্ণ জনগণের জন্য নতুন প্রধানমন্ত্রীর সুস্বাস্থ্য, সুখ এবং অব্যাহত শান্তি ও সমৃদ্ধি কামনা করেছেন।
আরও পড়ুন: সিউলে বাংলাদেশ-দক্ষিণ কোরিয়া যৌথ পিপিপি প্লাটফর্ম মিটিং অনুষ্ঠিত
বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্ক ‘পরবর্তী পর্যায়ে’ নিয়ে যেতে আগ্রাহী কোরিয়া
সিউলে বাংলাদেশ-দক্ষিণ কোরিয়া যৌথ পিপিপি প্লাটফর্ম মিটিং অনুষ্ঠিত
দক্ষিণ কোরিয়ার রাজধানী সিউলে বুধবার বাংলাদেশ ও দক্ষিণ কোরিয়া যৌথ পিপিপি প্লাটফর্ম মিটিং অনুষ্ঠিত হয়েছে।
কোরিয়ায় বাংলাদেশের দূতাবাস থেকে পাঠানো সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, পাবলিক প্রাইভেট পারটনারশিপ অথরিটি অব বাংলাদেশ (পিপিপিএ বাংলাদেশ), কোরিয়া ওভারসিজ ইনফ্রাস্ট্রাকচার অ্যান্ড আরবান ডেভেলপমেন্ট করপোরেশন (কেআইএনডি) এবং রিপাবলিক অব কোরিয়া যৌথভাবে এই সভার আয়োজন করে।
প্রধানমন্ত্রীর মুখ্যসচিব ড. আহমেদ কায়কাউস এ সভায় বাংলাদেশ থেকে অনলাইনে যোগদান করেন।
ড. আহমেদ কায়কাউস বলেন, কোরিয়া বাংলাদেশের সঙ্গে বেশ কিছু বড় পরিসরের প্রকল্পে কাজ করছে এবং বাংলাদেশ সরকার এখন কোরিয়ান বিনিয়োগকারীদের বড় বড় অবকাঠামোগত বিনিয়োগ প্রকল্পে এগিয়ে আসার আহ্বান জানাচ্ছে।
তিনি বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিনিয়োগের কথা উল্লেখ করে বলেন, পাবলিক প্রাইভেট পারটনারশিপ অথরিটি এরই মধ্যে বেসরকারি বিনিয়োগকারীদের সাহায্য করার ম্যান্ডেট নিয়ে কাজ করে যাচ্ছে এবং সরকারি কর্মকর্তারাও তাদেরকে যথেষ্ট সাহায্য করতে প্রস্তুত।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশ-দক্ষিণ কোরিয়া সম্পর্ক নিয়ে কসমস ফাউন্ডেশনের ওয়েবিনার বৃহস্পতিবার
পিপিপি অথরিটি বাংলাদেশের সেক্রেটারি ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) সুলতানা আফরোজ বলেন, পাবলিক প্রাইভেট পারটনারশিপ মডেলে বিদেশি বিনিয়োগকারীদের কাজ করার উপযোগী প্রাযুক্তিক, আইনি, সামাজিক ও বাণিজ্যিক পরিবেশ এখন বাংলাদেশে রয়েছে।
এই সময় তিনি কেআইএনডি ও এমওএলআইটিকে এই আয়োজনের জন্য ধন্যবাদ জানান। তিনি বিদেশি বিনিয়োগকারীদের আগ্রহী করার জন্য সরকারের বিভিন্ন প্রণোদনার উল্লেখ করেন।
অংশগ্রহণকারীদের শুভেচ্ছা এবং ধন্যবাদ জানান কেআইএনডি’র ডিরেক্টর সো ইয়ুং কিম।
কেআইএনডি’র প্রেসিডেন্ট এবং সিইও মি. কাং লি মহামারির চ্যালেঞ্জের মধ্যেও এই আয়োজন সম্পন্ন করতে পারার জন্য তার সন্তোষ এবং আনন্দ প্রকাশ করেন।
এমওএলআইটি’র ভাইস মিনিস্টার সেয়ং ওউন এউন বলেন, পিপিপি অথরিটি এবং কেআইএনডি’র মধ্যেকার চুক্তি দুই দেশের বিশ্বস্ত অংশীদারিত্বমূলক সম্পর্ককে আরও জোরদার করেছে। যার ফলশ্রুতিতে দক্ষিণ কোরিয়া ও বাংলাদেশের যৌথ পিপিপি প্লাটফর্মর মাধ্যমে রাস্তা, সেতু, রেলওয়ে ও ট্রান্সমিশন লাইন নির্মাণের চারটি অবকাঠামোগত পরিকল্পনা নির্ধারিত হয়েছে।
মেঘনা সেতু নির্মাণে দুইদেশের মধ্যে পিপিপি প্রকল্পের উল্লেখ করে তিনি বলেন, সেতু নির্মাণের অনুমোদন প্রক্রিয়া এখন শেষের দিকে।
দক্ষিণ কোরিয়ায় বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত দেলোয়ার হোসেন বলেন, দুই দেশের মধ্যেকার দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক এখন নতুন উচ্চতায় পৌঁছেছে।
আরও পড়ুন: ফের দক্ষিণ কোরিয়ার ভিসার জন্য আবেদন চালু
সভায় সাড়ে সাত হাজার কোটি টাকা ব্যয় পূর্বাচল নিউ টাউন ইলেকট্রিকাল ডিস্ট্রিবিউশন লাইন প্রকল্পটিকে পিপিপি প্রকল্প হিসেবে গ্রহণ করতে সম্মত হয়েছে দক্ষিণ কোরিয়া। এছাড়াও সভায় আরও আটটি প্রকল্প উপস্থাপন করা হয়। এর মধ্যে চারটি প্রকল্প কোরিয়া এবং চারটি বাংলাদেশের পক্ষ থেকে উপস্থাপন করা হয়।
পাবলিক প্রাইভেট পারটনারশিপ অথরিটি অব বাংলাদেশ’র সেক্রেটারি এবং সিইও সুলতানা আফরোজের নেতৃত্বে সভায় বাংলাদেশ থেকে প্রতিনিধি দলে ছিলেন রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান আমিন উল্লাহ নুরী, ডেসকো’র ম্যানেজিং ডিরেক্টর মো. কাউসার আমীর আলী, বিদ্যৎ বিভাগের যুগ্মসচিব মোহাম্মদ নাজমুল আবেদীন, পিপিপিএ অথরিটি বাংলাদেশের মহাপরিচালক আবুল বাশার প্রমুখ।
দ. কোরিয়ার উদ্দেশ্যে দেশ ছাড়লেন আরও ৯৮ বাংলাদেশি শ্রমিক
দক্ষিণ কোরিয়ার উদ্দেশ্যে বুধবার ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে কোরিয়ান এয়ার কোম্পানির চার্টার্ড ফ্লাইটে করে দেশ ত্যাগ করেছেন আরও ৯৮ জন বাংলাদেশি শ্রমিক।
এ নিয়ে গত বছরের ডিসেম্বর থেকে এখন পর্যন্ত ৩৩৯ জন বাংলাদেশি দক্ষিণ কোরিয়ায় গিয়েছেন।
দক্ষিণ কোরিয়া যাওয়া প্রবাসী শ্রমিকদের এটা দ্বিতীয় ব্যাচ। এর আগে গত ৫ জানুয়ারি ৯২ জন বাংলাদেশি শ্রমিক দেশটিতে যান।
বাংলাদেশ ব্যাংকের হিসাব মতে, দক্ষিণ কোরিয়ায় বাংলাদেশি শ্রমিকদের কাছ থেকে রেমিটেন্স প্রবাহ সাম্প্রতিক বছরে ক্রমাগত বৃদ্ধি পাচ্ছে। ২০১৬-১৭ অর্থবছরে এর পরিমাণ ছিল ৮০ দশমিক ৬৫ মিলিয়ন মার্কিন ডলার যা ২০২০-২১ অর্থবছরে বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২০৯ দশমিক ১৬ মিলিয়ন মার্কিন ডলারে।
আরও পড়ুন: প্রবাসী বাংলাদেশিদের হয়রানিমুক্ত দ্রুত সেবা নিশ্চিতের নির্দেশ পররাষ্ট্রমন্ত্রীর
দক্ষিণ কোরিয়া সরকার কোভিড-১৯ মহামারির কারণে ২০২০ সালের মার্চে বিদেশি শ্রমিক নেয়া স্থগিত করে এবং ২০২১ সালের ডিসেম্বর থেকে প্রবাসী শ্রমিক নেয়া আবার শুরু করে।
বুধবার ১০৮ জন দেশটিতে পাড়ি দেয়ার কথা ছিল। তবে পিসিআর পরীক্ষায় করোনা পজেটিভ হওয়ায় ১০ জন যেতে পারেননি।
এছাড়া মধ্য ফেব্রুয়ারিতে আরও ১৩০ জন প্রবাসী শ্রমিক দেশটিতে পাঠানোর কথা রয়েছে।
আরও পড়ুন: মালদ্বীপ প্রবাসীদের সমস্যা সমাধানে পদক্ষেপ নেবে সরকার: প্রধানমন্ত্রী
ওমিক্রন: দেশে আসতে প্রবাসীদের জন্য নতুন নির্দেশনা
বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্ক ‘পরবর্তী পর্যায়ে’ নিয়ে যেতে আগ্রাহী কোরিয়া
বাংলাদেশের সঙ্গে দক্ষিণ কোরিয়ার সম্পর্ক পরবর্তী পর্যায়ে নিয়ে যেতে একসঙ্গে কাজ করার ‘দৃঢ় অঙ্গীকার’ ব্যক্ত করেছেন দেশটির প্রেসিডেন্ট মুন জায়ে-ইন।
দক্ষিণ কোরিয়ায় নিযুক্ত বাংলাদেশি রাষ্ট্রদূত এম দেলোয়ার হোসেন শুক্রবার সিউলে দেশটির প্রেসিডেন্ট ভবন ব্লু হাউসে মুন জায়ে-ইনের কাছে তার পরিচয় দিতে গেলে তিনি তার দেশের অঙ্গীকারের কথা জানান।
সিউলের বাংলাদেশ দূতাবাস জানায়, এ সময় কোরিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী চুং ইউই-ইয়ং এবং কোরীয় প্রেসিডেন্ট কার্যালয় ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশ বিশ্বের কাছে অনুপ্রেরণা: ভার্চুয়াল অনুষ্ঠানে বক্তারা
রাষ্ট্রদূত দু’দেশের চমৎকার দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের কথা উল্লেখ করেন যা গত পাঁচ দশকে গভীরতা ও মাত্রায় ব্যাপক বৃদ্ধি প্রত্যক্ষ করেছে।
তিনি বলেন, দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্যের অব্যাহত প্রবৃদ্ধি এবং বাংলাদেশে কোরিয়ান কোম্পানির ক্রমবর্ধমান উপস্থিতির মাধ্যমে দেশটি বাংলাদেশের একটি গুরুত্বপূর্ণ উন্নয়ন সহযোগী হিসেবে আবির্ভূত হয়েছে।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশের সঙ্গে অর্থনৈতিক সম্পর্ক গড়তে চায় অস্ট্রিয়া
বাংলাদেশকে অ্যাম্বুলেন্স ও অক্সিজেন জেনারেটর উপহার দিল কোরিয়া
করোনা মহামারি মোকাবিলা ও দেশের স্বাস্থ্য খাতে সক্ষমতা বৃদ্ধির জন্য বাংলাদেশ সরকারকে আটটি অ্যাম্বুলেন্স ও একশটি অক্সিজেন জেনারেটর অনুদান দিয়েছে দক্ষিণ কোরিয়া।
মঙ্গলবার ঢাকার মহাখালীর স্বাস্থ্য অধিদপ্তরে এই সরঞ্জামগুলো হস্তান্তর করা হয়।
অনুষ্ঠানে রাষ্ট্রদূত লি বলেন, ‘বাংলাদেশে কোভিড-১৯ মোকাবিলায় অ্যাম্বুলেন্স অনুদানসহ দক্ষিণ কোরিয়ার ক্রমাগত সহায়তা কোরিয়া ও বাংলাদেশের মধ্যে বন্ধুত্বের প্রতীক। আমরা বাংলাদেশের বন্ধুদের পাশে থাকব।
আরও পড়ুন: ফের দক্ষিণ কোরিয়ার ভিসার জন্য আবেদন চালু
এ সময় স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক আব্দুল বাশার খুরশিদ আলম কোরিয়ার সহায়তার জন্য আন্তরিক কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন এবং আশা করেন যে এই অ্যাম্বুলেন্সগুলো সময়মতো প্রয়োজনীয় সেবা দেয়ার মাধ্যমে বাংলাদেশের জনগণের জীবন বাঁচাতে সহায়তা করবে।
তিনি বলেন, মহামারিটির অবসান ঘটাতে বাংলাদেশ সরকার কোরিয়ান সরকারের সাথে একযোগে কাজ করবে।
অত্যাধুনিক অ্যাম্বুলেন্সগুলি প্রাথমিক চিকিৎসার জন্য চিকিৎসা বাক্স, অক্সিজেন সুবিধা, ব্যক্তিগত সুরক্ষামূলক সরঞ্জাম এবং অন্যান্য জরুরি ও আনুষাঙ্গিক সরঞ্জাম দ্বারা সুসজ্জিত।
অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পরিচালক ডা. ফরিদ হোসেন মিয়া, কোইকা বাংলাদেশ অফিসের কান্ট্রি ডিরেক্টর ডোহ ইয়াং-আহসহ ডিজিএইচএস-এর অন্যান্য কর্মকর্তারা।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশ-দক্ষিণ কোরিয়া সম্পর্ক নিয়ে কসমস ফাউন্ডেশনের ওয়েবিনার বৃহস্পতিবার
উল্লেখ্য, কোরিয়া সরকার মহামারি পরিস্থিতি মোকাবিলায় বাংলাদেশ সরকারকে বিভিন্ন সহায়তা প্রদান করেছে, যার মধ্যে রয়েছে ১৫০ মিলিয়ন ডলার ইডিসিএফ ঋণ দিয়েছে। গত বছর ৫০ মিলিয়ন ডলার ও এই বছর ১০০ মিলিয়ন ডলার ঋণের ব্যবস্থা করেছে। মহামারি শুরু পর গত বছর করোনা পরীক্ষার কিট ও অন্যান্য চিকিৎসা সরঞ্জাম অনুদান দিয়েছে।
দক্ষিণ কোরিয়ায় একদিনে রেকর্ড ৪ হাজারের বেশি করোনা শনাক্ত
দক্ষিণ কোরিয়া নতুন করে করোনা সংক্রমণ বৃদ্ধির পর একদিনে রেকর্ড ৪ হাজারের বেশি শনাক্ত হয়েছে বলে দেশটির কর্মকর্তারা জানিয়েছে। স্বাস্থ্যবিধি শিথিল করার পর সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলোতে দেশটিতে করোনায় শনাক্ত ও মৃত্যু উল্লেখযোগ্য হারে বাড়ছে।
কোরিয়া ডিজিজ কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রিভেনশন এজেন্সি জানিয়েছে, বুধবার নতুন করে আক্রান্ত হওয়া ৪ হাজার ১১৬ জনের বেশির ভাগই রাজধানী সিউল এবং আশেপাশের মেট্রোপলিটন এলাকার বাসিন্দা। এ নিয়ে দেশটিতে মোট আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়াল ৪ লাখ ২৫ হাজার ৬৪ জনে।
এছাড়া গত ২৪ ঘণ্টায় ৩৫ জন করোনা রোগী মারা গেছেন। এনিয়ে দেশটিতে মোট মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৩ হাজার ৩৬৩ জনে।
উচ্চ টিকা দেয়া হারের মধ্যে সামাজিক দূরত্বের ব্যবস্থা শিথিল করার পর সংক্রমণ এবং হাসপাতালে ভর্তি রোগী সংখ্যা বৃদ্ধি পাওয়া সর্বশেষ দেশ দক্ষিণ কোরিয়া।
থ্যাঙ্কস গিভিং ছুটির সপ্তাহান্তের আগে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রেও শনাক্ত বাড়ছে। এদিকে ইউরোপজুড়ে সংক্রমণ বৃদ্ধি পাওয়ায় সোমবার অস্ট্রিয়া দেশব্যাপী কঠোর লকডাউন জারি করেছে।
আরও পড়ুন: ফরাসি প্রধানমন্ত্রী করোনায় আক্রান্ত
বিশ্ব পরিস্থিতি
বিশ্বব্যাপী টিকাদান কার্যক্রম চলমান থাকলেও করোনা আক্রান্ত ও মৃত্যু সংখ্যা উল্লেখযোগ্য হারে বাড়ছে। যুক্তরাষ্ট্রের জনস্ হপকিন্স বিশ্ববিদ্যালয়ের তথ্য অনুযায়ী, বুধবার সকাল পর্যন্ত বিশ্বজুড়ে করোনায় মোট আক্রান্তের সংখ্যা ২৫ কোটি ৮৭ লাখ ৮৩ হাজার ৩৬৭ জন এবং মোট মৃতের সংখ্যা ৫১ লাখ ৬৫ হাজার ৬৫৫ জনে দাঁড়িয়েছে।
করোনায় সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত দেশ আমেরিকায় এখন পর্যন্ত মোট শনাক্তের সংখ্যা চার কোটি ৭৯ লাখ ৮০ হাজার ৭৮০ জন এবং মৃত্যুবরণ করেছে সাত লাখ ৭৩ হাজার ৭৭০ জন।
এদিকে, দক্ষিণ আমেরিকার দেশ ব্রাজিলে করোনায় আক্রান্ত হয়ে মোট মৃত্যুর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ছয় লাখ ১৩ হাজার ৬৬ জনে। দেশটিতে এ পর্যন্ত আক্রান্ত হয়েছে দুই কোটি ২০ লাখ ৩০ হাজার ১৮২ জন। মৃত্যুর দিক দিয়ে দেশটির অবস্থান দ্বিতীয়।
বাংলাদেশের প্রতিবেশি দেশ ভারতে মোট তিন কোটি ৪৫ লাখ ২৬ হাজার ৪৮০ জনের সংক্রমণ চিহ্নিত হয়েছে। একই সময়ে মৃত্যু সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে চার লাখ ৬৬ হাজার ১৪৭ জনে।
আরও পড়ুন: করোনার বিধিনিষেধ: বেলজিয়ামে কয়েক হাজার মানুষের বিক্ষোভ
আবারও ব্যালিস্টিক মিসাইল নিক্ষেপ করল উত্তর কোরিয়া
উত্তর কোরিয়া আবারও ব্যালিস্টিক মিসাইল নিক্ষেপ করেছে বলে দক্ষিণ কোরিয়া এবং জাপানের সামরিক বাহিনী জানিয়েছে।
এমন এক সময়ে এই মিসাইল নিক্ষেপ করা হলো যখন পারমাণবিক অস্ত্র কর্মসূচিতে সিউলে দক্ষিণ কোরিয়া, জাপান ও যুক্তরাষ্ট্রের গোয়েন্দা প্রধানদের বৈঠক নিয়ে খবর আসছে।
দক্ষিণ কোরিয়ার জয়েন্ট চীফ অব স্টাফ জানিয়েছেন, স্থানীয় সময় মঙ্গলবার উত্তর কোরিয়ার উপকূলীয় এলাকায় এই মিসাইল নিক্ষেপ করা হয়।
এর আগে সেপ্টেরের মাঝামাঝি এবং অক্টোবরের শুরুতে বিমান বিধ্বংসী ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা চালানোর অভিযোগ উঠে উত্তর কোরিয়ার বিরুদ্ধে।
আরও পড়ুন: উত্তর কোরিয়ার দূরপাল্লার মিসাইল পরীক্ষা
ইরাক যুদ্ধের অন্যতম পরিকল্পনাকারী কলিন পাওয়েলের মৃত্যু
ভারতে ভারী বৃষ্টিপাত ও ভূমিধসে নিহত ২১
দক্ষিণ কোরিয়া গেলেন সেনাপ্রধান
পাঁচদিনের সরকারি সফরে রবিবার রাতে ঢাকা ত্যাগ করেছেন সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল এসএম শফিউদ্দিন আহমেদ।
আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তরের (আইএসপিআর) এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, সফরে জেনারেল শফিউদ্দিন বাংলাদেশ সশস্ত্র বাহিনীর পাঁচ সদস্যের একটি প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দেবেন।
সফরকালে বাংলাদেশ সেনাপ্রধান দক্ষিণ কোরিয়ার জাতীয় প্রতিরক্ষামন্ত্রী, জয়েন্ট চিফস অব স্টাফ, সেনা ও বিমান বাহিনী প্রধান এবং অন্যান্য ঊর্ধ্বতন সামরিক কর্মকর্তাদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করবেন।
জেনারেল শফিউদ্দিন দুই দেশের মধ্যে দ্বিপাক্ষিক সামরিক সম্পর্ক নিয়েও আলোচনা করবেন।
২৩ অক্টোবর সেনাপ্রধানের দেশে ফেরার কথা রয়েছে।
পড়ুন: খুলনায় দুস্থদের মাঝে সেনাপ্রধানের খাদ্যসামগ্রী বিতরণ
যুক্তরাষ্ট্র সফর শেষে দেশে ফিরেছেন সেনাবাহিনী প্রধান
উত্তর কোরিয়ার দূরপাল্লার মিসাইল পরীক্ষা
পরমাণু অস্ত্র কর্মসূচি নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বিরোধের মধ্যেই নতুন একটি বিমান বিধ্বংসী মিসাইলের পরীক্ষা চালিয়েছে উত্তর কোরিয়া। এই মিসাইলটি দেড় হাজার কিলোমিটার দূরের লক্ষ্যবস্তুতেও আঘাত হানতে সক্ষম।
উত্তর কোরিয়ার রাষ্ট্রীয় সংবাদ সংস্থা দ্য কোরিয়ান সেন্ট্রাল নিউজ এজেন্সি জানিয়েছে, মিসাইলটি তৈরিতে সময় লেগেছে প্রায় দুই বছর।
শনিবার ও রবিবার পরীক্ষা চালানো এই মিসাইলটিকে নিজেদের ‘গুরুত্বপূর্ণ কৌশলগত অস্ত্র’ হিসেবে অভিহিত করেছে উত্তর কোরিয়া।
এর আগে নিজেদের পারমাণবিক অস্ত্র কর্মসূচিকে আরও জোরদার করার ঘোষণা দিয়েছিলেন দেশটির নেতা কিম জং উন।
মিসাইল পরীক্ষার ঘোষণার পর উদ্বিগ্ন প্রতিবেশী দেশ দক্ষিণ কোরিয়া জানিয়েছে, নিজেদের ও যুক্তরাষ্ট্রের গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে।
করোনাভাইরাস মহামারি ও যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞার কারণে উত্তর কোরিয়ার অর্থনীতি নাজুক অবস্থার মধ্যে রয়েছে। এরপরেও এ বছরের জানুয়ারিতে ক্ষমতাসীন ওয়ার্কার্স পার্টির সম্মেলনে পরমাণু কর্মসূচি বাড়ানোর ঘোষণা দিয়েছিলেন কিম।
তিনি বলেছেন, ‘আমাদের প্রতিরক্ষা বিজ্ঞানীরা বিশ্বের সবচেয়ে শক্তিশালী মধ্যম-মাত্রার বিমান বিধ্বংসী মিসাইল তৈরি করছে।‘
তবে রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, মিসাইল পরীক্ষার মধ্য দিয়ে যুক্তরাষ্ট্র ও দক্ষিণ কোরিয়া আলোচনায় বসার পরোক্ষ বার্তা দিচ্ছে উত্তর কোরিয়া।
এর আগে দেশের নাজুক অর্থনীতির পরিপ্রেক্ষিতে যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে পরমাণু কর্মসূচি নিয়ে আলোচনায় বসেছিলেন কিম। জো বাইডেন ক্ষমতায় আসার পর এই আলোচনা অনেকটাই থমকে গেছে।
আরও পড়ুন: ইন্দোনেশিয়ার কারাগারে অগ্নিকাণ্ডে নিহত ৪১
আখুন্দের নেতৃত্বে আফগানিস্তানে তালেবান সরকার