এশিয়া
চাঁদে ভারতীয় মহাকাশযানের সফল অবতরণ
চাঁদের দক্ষিণ মেরুর কাছে ভারতের একটি মহাকাশযান সফলভাবে অবতরণ করেছে। বিজ্ঞানীদের কাছে এটি একটি অজানা অঞ্চল। তবে তারা বিশ্বাস করেন এখানে হিমায়িত পানি এবং মূল্যবান উপাদানের উল্লেখযোগ্য পরিমাণ মজুদ থাকতে পারে। এই সফল অবতরণের মধ্য দিয়ে দেশটি মহাকাশ এবং প্রযুক্তিতে তার ক্রমবর্ধমান দক্ষতাকে প্রদর্শন করেছে।
বুধবার স্থানীয় সময় ৬টা ৪ মিনিটে ল্যান্ডারের অভ্যন্তরে একটি রোভারসহ চন্দ্র পৃষ্ঠে অবতরণ করে। এসময় দক্ষিণ ভারতীয় শহর বেঙ্গালুরুতে মহাকাশ বিজ্ঞানীরা উল্লাস প্রকাশ করে করতালি দিতে থাকে। প্রায় চার বছর আগে তাদের প্রচেষ্টা ব্যর্থ হয়। এরপর প্রায় অজানা দক্ষিণ মেরু অঞ্চলের কাছে চাঁদের মাটি স্পর্শ করে প্রথম দেশ হিসেবে ইতিহাস তৈরি করেছে ভারত। চাঁদে অবতরণকারী দেশ হিসেবে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, সোভিয়েত ইউনিয়ন ও চীনের সঙ্গে একই তালিকায় ভারত নিজেদের যুক্ত করল।
ভারতের সফল অবতরণের কিছু দিন আগে রাশিয়ার লুনা-২৫ একই চন্দ্র অঞ্চলের দিকে অবতরণের চেষ্টা করেছিল। যেটি কয়েকদিন আগে একটি অনিয়ন্ত্রিত কক্ষপথে ঘুরতে গিয়ে বিধ্বস্ত হয়। এটি ৪৭ বছর পর প্রথম সফল রাশিয়ান চন্দ্র অবতরণ হতে পারত। রাশিয়ার রাষ্ট্র-নিয়ন্ত্রিত মহাকাশ কর্পোরেশনের প্রধান রোসকসমস ১৯৭৬ সালে চাঁদে শেষ সোভিয়েত মিশন চালান। চন্দ্র গবেষণায় দীর্ঘ বিরতির কারণে দক্ষতার অভাবকে এ ব্যর্থতার জন্য দায়ী করেছেন।
বিশ্বের বৃহত্তম জনসংখ্যার দেশ ভারতের উদ্বিগ্ন ও আগ্রহী জনতা সারাদেশের অফিস, দোকান, রেস্তোরাঁ এবং বাড়িতে টেলিভিশনের চারপাশে ভিড় করে। উত্তর ভারতের পবিত্র শহরখ্যাত বারাণসীসহ মন্দির ও ধর্মীয় স্থানগুলোতে ও নদীর তীরে তেলের প্রদীপ জ্বালিয়ে মিশনের সাফল্যের জন্য মঙ্গলবার হাজার হাজার মানুষ প্রার্থনা করেছিল।
ভারতের চন্দ্রযান-৩ ১৪ জুলাই দক্ষিণ ভারতের শ্রীহরিকোটার একটি লঞ্চপ্যাড থেকে যাত্রা করেছিল।
ভারতীয় মহাকাশ গবেষণা সংস্থা বুধবার এক বিবৃতিতে বলেছে, ‘ভারতের মহাকাশ অনুসন্ধান গবেষণা আসন্ন চন্দ্রযান-৩ মিশনের মাধ্যমে একটি অসাধারণ মাইলফলক ছুঁয়েছে। যা চন্দ্র পৃষ্ঠে একটি নিরাপদ অবতরণ করার জন্য প্রস্তুত। এই কৃতিত্ব ভারতীয় বিজ্ঞান, প্রকৌশল, প্রযুক্তি ও শিল্পের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপকে চিহ্নিত করে। যা মহাকাশ অনুসন্ধানে আমাদের দেশের অগ্রগতির প্রতীক।’
তারা বলেছে, চন্দ্রযান-৩ এর সফল অবতরণ কৌতূহল জাগিয়ে তুলতে এবং যুবকদের মধ্যে অন্বেষণের আবেগ জাগিয়ে তুলবে।
সংস্থাটি বলেছে, ‘আমরা সম্মিলিতভাবে ভারতীয় বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির পরাক্রম উদযাপন করার সঙ্গে সঙ্গে এটি গর্ব এবং একতার গভীর অনুভূতি তৈরি করে। এটি বৈজ্ঞানিক অনুসন্ধান এবং উদ্ভাবনের পরিবেশ গড়ে তুলতে অবদান রাখবে।’
অনেক দেশ এবং বেসরকারি কোম্পানিগুলো দক্ষিণ মেরু অঞ্চলে আগ্রহী। কারণ স্থায়ীভাবে ছায়াযুক্ত গর্তগুলোতে হিমায়িত পানি ধরে রাখতে পারে যা ভবিষ্যতের মহাকাশচারী মিশনে সহায়তা করতে পারে।
আরও পড়ুন: ভারতের চন্দ্রযান-২ অভিযান ব্যর্থ
চন্দ্রযান-৩ এর ছয় চাকার ল্যান্ডার এবং রোভার মডিউলটি পেলোডের সঙ্গে স্থাপন করা হয়েছে যা রাসায়নিক এবং উপাদানগুলোর বিন্যাসসহ চন্দ্রের মাটি এবং শিলার বৈশিষ্ট্যগুলোর বিষয়ে বিজ্ঞানীদের তথ্য সরবরাহ করবে।
এর আগে ২০১৯ সালে দক্ষিণ মেরুর কাছে চাঁদে প্রায় আজানা স্থানে ভারতের একটি রোবোটিক মহাকাশযান অবতরণের চেষ্টা ব্যর্থ হয়েছিল। এটি চন্দ্রের কক্ষপথে প্রবেশ করেছিল কিন্তু তার ল্যান্ডারের সঙ্গে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়েছিল। যা পানির চিহ্নগুলো অনুসন্ধান করতে একটি রোভার স্থাপন করতে চূড়ান্ত অবতরণের সময় বিধ্বস্ত হয়েছিল। ইসরোতে জমা দেওয়া একটি ব্যর্থতা বিশ্লেষণ প্রতিবেদন অনুসারে, একটি সফ্টওয়্যার ত্রুটির কারণে দুর্ঘটনাটি ঘটেছিল।
২০১৯ সালে ১৪০ মিলিয়ন ডলারের মিশনটির উদ্দেশ্য ছিল স্থায়ীভাবে ছায়াযুক্ত চাঁদের গর্তগুলো অনুসন্ধান করা যেগুলোতে পানি জমা রয়েছে বলে মনে করা হয়। যা ২০০৮ সালে ভারতের চন্দ্রযান-১ অরবিটার মিশনের মাধ্যমে নিশ্চিত করা হয়েছিল।
ভারত গত বছর বিশ্বের পঞ্চম-বৃহৎ অর্থনীতি হিসেবে আবির্ভূত হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে একটি প্রযুক্তি এবং মহাকাশ শক্তিধর দেশ হিসেবে নিজেদের ক্রমবর্ধমান অবস্থান প্রদর্শন করতে আগ্রহী।
একটি সফল চন্দ্র মিশন মোদি ও ভারতের ইমেজকে বৃদ্ধি করে, যা বিশ্বব্যাপী অভিজাতদের মধ্যে তার স্থান নিশ্চিত করে। আগামী বছরের একটি গুরুত্বপূর্ণ সাধারণ নির্বাচনের আগে তার জনপ্রিয়তা বৃদ্ধিতে সাহায্য করবে এটি।
আরও পড়ুন: ভারতীয় চন্দ্রযানের ধ্বংসাবশেষ খুঁজে পেয়েছে নাসা
রাশিয়ার ব্যর্থ প্রচেষ্টা এবং ভারতের আঞ্চলিক প্রতিদ্বন্দ্বী চীন মহাকাশে নতুন মাইলফলক ছুঁয়ে যাওয়ার পরে ভারতের সফল অবতরণের প্রত্যাশা বেড়ে যায়। মে মাসে চীন তার প্রদক্ষিণকারী মহাকাশ স্টেশনের জন্য তিন ব্যক্তির ক্রু চালু করেছে। একই সঙ্গে দশকের শেষের আগে চাঁদে মহাকাশচারীদের রাখার আশা করছে। ২০২০ সালে মারাত্মক সীমান্ত সংঘর্ষের পর থেকে ভারত ও চীনের মধ্যে সম্পর্ক ভেঙে গেছে।
অনেক দেশ এবং বেসরকারি সংস্থাগুলো সফলভাবে চন্দ্রপৃষ্ঠে একটি মহাকাশযান অবতরণ করার জন্য চেষ্টা করছে। এপ্রিলে জাপানি একটি কোম্পানির মহাকাশযান দৃশ্যত চাঁদে অবতরণের চেষ্টা করার সময় বিধ্বস্ত হয়। ২০১৯ সালে অনুরূপ অলাভজনক একটি ইসরাইলি মহাকাশযান কৃতিত্ব অর্জন করার চেষ্টা করেছিল, কিন্তু এর মহাকাশযানটি আঘাতে ধ্বংস হয়ে গিয়েছিল।
জাপান একটি এক্স-রে টেলিস্কোপ মিশনের অংশ হিসেবে সপ্তাহের শেষে চাঁদে একটি লুনার ল্যান্ডার চালু করার পরিকল্পনা করেছে এবং দুটি মার্কিন সংস্থাও বছরের শেষ নাগাদ লুনার ল্যান্ডার স্থাপনের জন্য প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছে। তাদের মধ্যে একটি দক্ষিণ মেরুতে। আগামী বছরগুলোতে নাসা গর্তে জমা হিমায়িত পানির সুবিধা নিতে নভোচারীদের চাঁদের দক্ষিণ মেরুতে অবতরণ করার পরিকল্পনা করেছে।
আরও পড়ুন: আরও এক ধাপ এগিয়ে গেল চন্দ্রযান-৩: ইসরো
সদস্য হতে ইচ্ছুক দ. এশীয় দেশগুলোর অন্তর্ভুক্তির বিষয়ে আলোচনা করবে ব্রিকস নেতারা
আসন্ন ব্রিকস শীর্ষ সম্মেলন- ২০২৩ এর লোগোতে একটি সূর্য রয়েছে। যা পাঁচটি রঙে আলো ছড়ায়: সবুজ, নীল, কমলা, লাল ও হলুদ। যা গ্রুপের বর্তমান পাঁচ সদস্যের প্রতিনিধিত্ব করে।
এই বছরের শীর্ষ সম্মেলন ২২ থেকে ২৪ অগাস্ট দক্ষিণ আফ্রিকায় অনুষ্ঠিত হবে। এবারের থিম ‘পার্টনারশিপ ফর মিউচুয়ালি অ্যাসিলেরেটেড গ্রোথ, সাসটেইনেবল ডেভেলপমেন্ট এন্ড ইনক্লুসিভ মাল্টিল্যাটারিজম।’
ব্রিকস কর্মকর্তারা বলেছেন, এই চেতনার ফলে গ্লোবাল সাউথের প্রায় ৪০টি দেশ গ্রুপে যোগদানে আগ্রহী হয়েছে।
আগ্রহ ক্রমে বাড়ছে
দক্ষিণ কেন্দ্রের নির্বাহী পরিচালক কার্লোস মারিয়া কোরেয়া সাম্প্রতিক এক সাক্ষাৎকারে সিনহুয়াকে বলেছেন, আসন্ন শীর্ষ সম্মেলনে নেতারা ব্রিকস গ্রুপের সম্প্রসারণ, অন্তর্ভুক্তির মানদণ্ড এবং নির্দেশনাসহ বিভিন্ন বিষয়ে আলোচনা করবেন বলে আশা করা হচ্ছে।
দক্ষিণ আফ্রিকার ব্রিকস রাষ্ট্রদূত অনিল সুকলল বলেন, ‘২২টি দেশ আনুষ্ঠানিকভাবে পূর্ণ সদস্য হওয়ার জন্য ব্রিকস দেশগুলোর সঙ্গে যোগাযোগ করেছে। এছাড়া একই সংখ্যক দেশ অনানুষ্ঠানিকভাবে ব্রিকস সদস্য হওয়ার বিষয়ে প্রস্তাব দিয়েছে।’
আগ্রহ দেখানো সর্বশেষ দেশগুলোর মধ্যে আলজেরিয়া একটি।
আরবি সম্প্রচারকারী এননাহার টিভি ২২ জুলাই আলজেরিয়ার প্রেসিডেন্ট আবদেলমাদজিদ টেবুউনকে উদ্ধৃত করে বলেছে, ‘আমরা আনুষ্ঠানিকভাবে ব্রিকস গ্রুপে যোগদানের জন্য আবেদন করেছি এবং আমরা ব্যাংকে (নিউ ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক) শেয়ারহোল্ডার সদস্য হওয়ার জন্য একটি চিঠি পাঠিয়েছি।’
একটি জাপানি দৈনিক মাইনিচি শিম্বুনের জানায়, সৌদি আরব, সংযুক্ত আরব আমিরাত, নাইজেরিয়া এবং অন্যান্য তেল উৎপাদনকারী দেশগুলোও আবেদন করেছে। একবার অনুমোদিত হলে, ব্রিকস সদস্যরা বিশ্বের তেল ও গ্যাস সম্পদের অর্ধেকেরও বেশি নিয়ন্ত্রণ করবে।
আরও পড়ুন: ১৫তম ব্রিকস সম্মেলনে যোগ দিতে দ. আফ্রিকা যাচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী
উইটওয়াটারসরান্ড ইউনিভার্সিটির একজন সিনিয়র লেকচারার কেনেথ ক্রিমার একটি সাম্প্রতিক সাক্ষাত্কারে সিনহুয়াকে বলেন, ‘গ্লোবাল সাউথের অনেক দেশ আরও ন্যায্য ও অন্তর্ভুক্তিমূলক বিশ্ব ব্যবস্থা নির্মাণে কাজ করার জন্য একত্র হওয়ার চেষ্টা করেছে... ব্রিকস অনেক দেশকে এই দৃষ্টিভঙ্গিকে এগিয়ে নেওয়ার জন্য আবার এক হতে অনুপ্রাণিত করে।’
ব্রিকসের আকর্ষণ
এই বছরের জুনে ফরাসি প্রেসিডেন্ট এমানুয়েল ম্যাক্রোঁ একবার দক্ষিণ আফ্রিকার আন্তর্জাতিক সম্পর্ক ও সহযোগিতা মন্ত্রী নালেদি পান্ডোরের সঙ্গে বৈঠকের পর আসন্ন শীর্ষ সম্মেলনে যোগ দেওয়ার ইচ্ছা প্রকাশ করেছিলেন।
ব্রিকসের আকর্ষণ (বিশেষত্ব) এখানেই। ব্রিকস ব্লক আন্তর্জাতিক বিষয়ে একটি ইতিবাচক, স্থিতিশীল ও গঠনমূলক শক্তিতে পরিণত হয়েছে।
উদাহরণস্বরূপ, জার্মানির রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন সম্প্রচারকারী ডয়চে ভেলে বলেছে, বেশ কয়েকটি উদীয়মান অর্থনীতি আইএমএফ-এর কঠোর অর্থনৈতিক নীতির কারণে আর্থিকভাবে বিপর্যস্ত।
ডয়চে ভেলে বলেছে, নিউ ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক এবং ব্রিকস কন্টিনজেন্ট রিজার্ভ অ্যারেঞ্জমেন্ট অর্থপ্রদানের সমস্যায় অর্থনীতিকে সহায়তা করতে পারে।
ব্রিকস নিয়ে গবেষণা করা প্রিটোরিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন অধ্যাপক ড্যানিয়েল ব্র্যাডলো বলেছেন, ‘নিউ ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক হলো সবচেয়ে বড় অর্জন। এটি দেশগুলোর মধ্যে বাণিজ্য বৃদ্ধির পথ দেখাচ্ছে এবং আন্তর্জাতিক মনোযোগও অর্জন করেছে।’
কিউবার প্রেসিডেন্ট মিগুয়েল দিয়াজ-ক্যানেল বলেছেন, সর্বোপরি ব্রিকস বহুমুখীতা ও বহুপাক্ষিকতাকে রক্ষা করে। এটি করার মাধ্যমে, ‘ব্রিকস দেশগুলো স্নায়ু যুদ্ধের ধারণাকে মোকাবিলা করছে এবং আরও ন্যায্য ও ন্যায়সঙ্গত আন্তর্জাতিক ব্যবস্থার সম্ভাবনা উন্মুক্ত করছে; যা বিশ্বকে উপকৃত করবে।’
কেনিয়ার আন্তর্জাতিক সম্পর্কের পণ্ডিত ক্যাভিন্স আধেরে বলেছেন, ‘ক্রমবর্ধমান মেরুকৃত বিশ্বে ব্রিকস দেশগুলোর জন্য একটি আরও অন্তর্ভুক্তিমূলক রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক শৃঙ্খলা তৈরি করার জন্য একটি কার্যকর উপায় তৈরি করছে।’
স্প্যানিশ ওয়েবসাইট রেবেলিয়ন জানিয়েছে, বহু দেশ কয়েক দশক ধরে বিশ্ব অর্থনীতিতে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের আধিপত্যে ক্লান্ত। ওয়াশিংটনের নির্দেশনা মেনে চলতে ব্যর্থতার ফলে নিষেধাজ্ঞা ও আর্থিক ব্ল্যাকমেলের শিকার হতে হয় তাদের।
বিপুল সম্ভাবনা
সম্ভাবনাময় সদস্যদের গ্রুপে অন্তর্ভুক্তি করার মাধ্যমে আন্তঃসীমান্ত বাণিজ্য আরও চাঙ্গা হয়ে উঠবে এবং আরও বিনিয়োগকারীদের নজর কাড়বে। ব্রিকসের একটি মুদ্রা ইস্যু করারও সম্ভাবনা রয়েছে।
আমেরিকান সংবাদ প্রকাশনা ‘ফরেন পলিসি’ ব্রিকসের সম্ভাব্য মুদ্রা সম্পর্কে বলেছেন, ‘এর সদস্যরা সম্ভবত বিদ্যমান যে কোনো আর্থিক ইউনিয়নের তুলনায় বিস্তৃত পরিসরে পণ্য উৎপাদন করতে সক্ষম হবে।’
আরও পড়ুন: ব্রিকস শীর্ষ সম্মেলনে এজেন্ডাগুলোর অগ্রগতির আশা করছে রাশিয়া ও চীন
তারা তাদের প্রতিবেদনে জানায়,‘যেহেতু ব্রিকস গোষ্ঠীর প্রতিটি সদস্যই তাদের নিজস্ব অঞ্চলে একটি অর্থনৈতিক হেভিওয়েট, বিশ্বের দেশগুলো সম্ভবত তাদের প্রচলন করা মুদ্রায় ব্যবসা করতে ইচ্ছুক হবে।’
যেহেতু বাংলাদেশ, মিশর, সংযুক্ত আরব আমিরাত ও উরুগুয়ে ব্রিকস নিউ ডেভেলপমেন্ট ব্যাংকের নতুন সদস্য হিসেবে যুক্ত হয়েছে। এই চারটি দেশ তিনটি মহাদেশে অবস্থিত হওয়ায় সেখানে আরও ন্যায্য ও আরও অবারিত আন্তর্জাতিক বাণিজ্য হতে বাধ্য।
ওয়াশিংটন পোস্ট সাম্প্রতিক একটি নিবন্ধে বলেছে, ‘নতুন প্রবেশকারীরা ব্রিকসের অংশ হওয়ার ফলে তাদের কূটনৈতিক প্রভাব বিস্তার করতে পারে এবং লাভজনক বাণিজ্য ও বিনিয়োগের সুযোগ লাভ করতে পারে।’
তাস নিউজ এজেন্সির সঙ্গে এক সাক্ষাত্কারে জেনেভায় জাতিসংঘে দক্ষিণ আফ্রিকার স্থায়ী প্রতিনিধি নোজিফো ম্যাক্সাকাতো-ডিসেকো বলেছেন, যোগদানের আগ্রহ প্রকাশকারী নতুন সদস্যদের গ্রহণ করতে পেরে ব্রিকস খুশি।
আফ্রিকা-চীন সহযোগিতা বিশেষজ্ঞ জেরাল্ড এমবান্ডা সিনহুয়াকে বলেছেন, ‘ব্রিকস বহুপাক্ষিকতাকে সমুন্নত রাখতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। এটি বারবার বৈশ্বিক শাসন ব্যবস্থার সংস্কার এবং উন্নয়নশীল দেশগুলোর সঙ্গে আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে ন্যায্য আচরণ করার পরামর্শ দিয়েছে।’
এমবান্ডা বলেন, ‘এই কারণেই আমি বিশ্বাস করি, ব্রিকস নিঃসন্দেহে বর্ধিত বাণিজ্য ও বিনিয়োগের সুযোগের সঙ্গে দ্রুত প্রবৃদ্ধি অর্জনের একটি উপায়।’
আরও পড়ুন: ব্রিকস শীর্ষ সম্মেলন: সাইডলাইন বৈঠকে বসতে পারেন শেখ হাসিনা-মোদি
ব্রিকস শীর্ষ সম্মেলনে এজেন্ডাগুলোর অগ্রগতির আশা করছে রাশিয়া ও চীন
চলতি সপ্তাহে দক্ষিণ আফ্রিকায় অনুষ্ঠেয় ব্রিকস শীর্ষ সম্মেলনে উন্নয়নশীল বিশ্বে আরও রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক ক্ষেত্র লাভের দিকে নজর দেবে রাশিয়া ও চীন। এ সময় পশ্চিম-বিরোধী যৌথ প্রচেষ্টার অংশ হিসেবে সৌদি আরবকে কাছে টানতে আনুষ্ঠানিকভাবে চূড়ান্ত পদক্ষেপ নিতে পারে তারা।
ব্রাজিল, রাশিয়া, ভারত, চীন ও দক্ষিণ আফ্রিকার ব্রিকস অর্থনৈতিক ব্লকের নেতারা জোহানেসবার্গের স্যান্ডটনে তিন দিনের বৈঠক করবেন। গত দেড় দশকে চীন এই ব্লকে কূটনৈতিক মূলধন বিনিয়োগ করেছে এবং এটা নিয়ে তাদের উচ্চাকাক্ষা রয়েছে তার প্রমাণ ওই বৈঠকে চীনের প্রধানমন্ত্রী শি জিনপিংয়ের উপস্থিতি।
ইউক্রেনের যুদ্ধের জন্য রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি রয়েছে। একারণে দক্ষিণ আফ্রিকা সফরের ক্ষেত্রে জটিলতা থাকায় ভার্চুয়ালি যুক্ত হবেন তিনি। এ ছাড়া ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট লুইজ ইনাসিও লুলা দা সিলভা, ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি এবং দক্ষিণ আফ্রিকার প্রেসিডেন্ট সিরিল রামাফোসা উপস্থিত থাকবেন।
বুধবার প্রধান শীর্ষ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে। এ ছাড়া মঙ্গলবার ও বৃহস্পতিবার সাইডলাইন বৈঠকগুলো অনুষ্ঠিত হবে। বৈশ্বিক প্রতিষ্ঠানগুলোতে পশ্চিমা আধিপত্য নিয়ে ক্রমবর্ধমান অসন্তোষের মধ্যেই দক্ষিণাঞ্চলীয় দেশগুলোর পারস্পরিক সহযোগিতা আরও বাড়াতে সাধারণ আহ্বান জানানো হবে বলে প্রত্যাশা করা হচ্ছে।
এ বিষয়ে রাশিয়া ও চীন সবেচেয়ে বেশি আগ্রহী। দক্ষিণ আফ্রিকায় পুতিনের প্রতিনিধিত্ব করবেন রাশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই ল্যাভরভ। এ ছাড়া আরও কয়েক ডজন উন্নয়নশীল দেশের নেতা বা প্রতিনিধিরা সাইডলাই বৈঠকে যোগ দেবেন।
ব্রিকস ব্লকের সম্ভাব্য সম্প্রসারণসহ একটি সুনির্দিষ্ট নীতির বিষয়ে আলোচনা করা হবে। ব্রাজিল, রাশিয়া, ভারত ও চীনের উদীয়মান বাজারভিত্তিক দেশগুলোর সমন্বয়ে ২০০৯ সালে গঠিত হয়েছিল ব্রিকস। পরের বছর সংস্থাটিতে দক্ষিণ আফ্রিকাকে যুক্ত করেছিল।
দক্ষিণ আফ্রিকার কর্মকর্তারা বলছেন, আরেকটি সম্ভাব্য সম্প্রসারণে ব্রিকসে যোগদানের জন্য আনুষ্ঠানিকভাবে আবেদনকারী ২০টিরও বেশি দেশের মধ্যে একটি হলো সৌদি আরব। রাশিয়া ও চীনের সঙ্গে একটি অর্থনৈতিক ব্লকে বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম তেল উত্পাদককে অন্তর্ভুক্ত করার যে কোনো পদক্ষেপ স্পষ্টতই মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং তার মিত্রদের মনোযোগ আকর্ষণ করবে। অতিরিক্ত শীতল ভূ-রাজনৈতিক পরিবেশ এবং পারস্য উপসাগরে কিছুটা প্রভাব বিস্তারের জন্য বেইজিংয়ের সাম্প্রতিক পদক্ষেপ এরই মধ্যে অনেকে দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে।
আরও পড়ুন: দ. আফ্রিকায় ব্রিকস সম্মেলনে যোগ দিতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে আনুষ্ঠানিক আমন্ত্রণ
সৌদি আরবে ভারতের সাবেক রাষ্ট্রদূত তালমিজ আহমেদ বলেছেন, ‘যদি সৌদি আরব ব্রিকসে প্রবেশ করে তবে এটি এই গ্রুপিংকে অসাধারণ গুরুত্ব দেবে।’
বিশ্লেষকরা বলছেন, ইতোমধ্যেই উন্নয়নশীল বিশ্বের বৃহত্তম অর্থনীতির একটি বড় অংশ নিয়ে গঠিত ব্রিকস সম্প্রসারণের নীতিতে একটি চুক্তিও জি-৭ এর ভারসাম্য বজায় রাখতে ব্লকের জন্য রাশিয়ান ও চীনা দৃষ্টিভঙ্গির জন্য একটি নৈতিক বিজয়।
ইউক্রেনের যুদ্ধের কারণে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে চীনের অর্থনৈতিক দ্বন্দ্ব এবং পশ্চিমের সঙ্গে রাশিয়ার স্নায়ুযুদ্ধের মতো স্থবিরতার মধ্যে উভয়ই এক ধরনের জোটকে শক্তিশালী করার জন্য আরও দেশকে যুক্ত করার পক্ষে -- এমনকি এটি শুধুমাত্র প্রতীকী হলেও৷
আর্জেন্টিনা থেকে শুরু করে আলজেরিয়া, মিশর, ইরান, ইন্দোনেশিয়া ও সংযুক্ত আরব আমিরাত পর্যন্ত সব দেশই আনুষ্ঠানিকভাবে সৌদির সঙ্গে যোগদানের জন্য আবেদন করেছে এবং সম্ভাব্য নতুন সদস্যও হতে পারে।
জোহানেসবার্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের কলেজ অব বিজনেস অ্যান্ড ইকোনমিকসের অধ্যাপক অ্যালেক্সিস হাবিয়ারেমি বলেছেন, ‘যদি তাদের মধ্যে কয়েকটি দেশকে নেওয়া হয়, তাহলে এটি একটি বৃহত্তর অর্থনৈতিক ব্লকে পরিণত হবে এবং সেখান থেকে শক্তির উৎস তৈরি হবে।’
যদিও ব্রাজিল, ভারত ও দক্ষিণ আফ্রিকা সম্প্রসারণে কম আগ্রহী এবং বর্তমানে একটি একচেটিয়া উন্নয়নশীল বিশ্ব সংগঠনে তাদের প্রভাব হ্রাস পেয়েছে। যদিও কোনো সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি এবং পাঁচটি দেশকে প্রথমে নতুন সদস্য হওয়ার যে মানদণ্ড পূরণ করতে হবে তাতে একমত হতে হবে। বেইজিংয়ের চাপের মধ্যে এটি জোহানেসবার্গের এজেন্ডায় রয়েছে।
দক্ষিণ আফ্রিকায় চীনের রাষ্ট্রদূত চেন জিয়াওডং বলেছেন, ‘ব্রিকস সম্প্রসারণ এই মুহূর্তে শীর্ষ আলোচিত বিষয়ে হয়ে দাঁড়িয়েছে৷’ সম্প্রসারণই ব্রিকসের মূল কার্যক্রম বাড়ানোর চাবিকাঠি। আমি বিশ্বাস করি আসন্ন এই বছরের শীর্ষ সম্মেলন একটি নতুন ও দৃঢ় পদক্ষেপের সাক্ষী হবে।’
ব্রিকস থেকে উদ্ভূত যে কোনো রুশ ও চীনা প্রভাবকে বন্ধ করার প্রয়াসে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র দক্ষিণ আফ্রিকা, ব্রাজিল ও ভারতের সঙ্গে তার দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের উপর জোর দিয়েছে। শীর্ষ সম্মেলনের আগেই স্টেট ডিপার্টমেন্ট বলেছে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ‘ব্রিকস অ্যাসোসিয়েশনের অনেক নেতৃস্থানীয় সদস্যদের সঙ্গে গভীরভাবে জড়িত আছে।’
আরও পড়ুন: বাংলাদেশকে ব্রিকস জোটে স্বাগত জানাতে প্রস্তুত চীন: মুখপাত্র
ইউরোপীয় ইউনিয়নও জোহানেসবার্গের ঘটনাগুলো ঘনিষ্ঠভাবে অনুসরণ করবে, তবে ইউক্রেনের যুদ্ধের উপর প্রায় একমাত্র মনোযোগ এবং উন্নয়নশীল বিশ্ব থেকে রাশিয়ার আগ্রাসনের জন্য ঐক্যবদ্ধ নিন্দা জানাতে ব্লকের অব্যাহত প্রচেষ্টা এখনও পর্যন্ত অনেকাংশে ব্যর্থ হয়েছে।
শি, লুলা, মোদি ও রামাফোসা একত্রিত হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে ইউরোপীয় কমিশনের মুখপাত্র পিটার স্ট্যানো বলেছেন, ইউরোপীয় ইউনিয়ন তাদের এই মুহূর্তটি আন্তর্জাতিক আইন বজায় রাখার জন্য ব্যবহার করার আহ্বান জানিয়েছে।
স্ট্যানো বলেছেন, ‘আমরা পুতিনকে তার অবৈধ, অস্থিতিশীল আচরণ বন্ধ করতে তাদের ভূমিকার জন্য অপেক্ষা করছি।’
মূল শীর্ষ সম্মেলনের আগে জুন মাসে কেপটাউনে ব্রিকস পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের বৈঠকে যদি কোনো সমাধান হয়ে থাকে, তাহলে যুদ্ধ নিয়ে রাশিয়া বা পুতিনের প্রকাশ্য সমালোচনা হবে না। স্যান্ডটন কনভেনশন সেন্টারের বাইরে অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল রাইটস গ্রুপ এবং ইউক্রেনীয় অ্যাসোসিয়েশন অব সাউথ আফ্রিকার ঘোষিত প্রতিবাদ সম্ভবত একমাত্র নিন্দা জানাবে।
যদ আগের বৈঠকে কোনো সমাধান হয়, এই শীর্ষ সম্মেলন থেকে কিছু সুবিধা পেতে পারে রাশিয়া।
ইউরোপ, রাশিয়া ও ইউরেশিয়া প্রোগ্রামে ওয়াশিংটনভিত্তিক সেন্টার ফর স্ট্র্যাটেজিক অ্যান্ড ইন্টারন্যাশনাল স্টাডিজের সিনিয়র ফেলো মারিয়া স্নেগোভায়া বলেছেন, গত মাসে ইউক্রেনের বাইরে শস্য পাঠানোর অনুমতি দেওয়ার একটি চুক্তি স্থগিত করার পরে পুতিন উন্নয়নশীল দেশগুলোতে আরও বিনামূল্যে রাশিয়ান শস্যের চালান ঘোষণা করতে ব্রিকস সমাবেশ ব্যবহার করতে পারেন। তিনি ইতোমধ্যে বেশ কয়েকটি আফ্রিকান দেশের জন্য করেছেন।
স্নেগোভায়া বলেন, ইউক্রেনকে প্রক্রিয়া থেকে বাদ দেওয়ার সময় এটি পুতিনকে উন্নয়নশীল বিশ্বের কাছে ‘সদিচ্ছা’ প্রদর্শনের অনুমতি দেবে।
ক্রেমলিনের মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকভ বলেছেন,পুতিন একটি ভিডিও লিঙ্কে উপস্থিত হওয়া সত্ত্বেও শীর্ষ সম্মেলনে ‘সম্পূর্ণ অংশগ্রহণ’ করবেন এবং একটি বক্তব্য দেবেন।
আরও পড়ুন: ব্রিকসে বাংলাদেশের অন্তর্ভুক্তি নির্ভর করছে সদস্যদের উপর: পররাষ্ট্রমন্ত্রী
জোহানেসবার্গে তিন দিন ধরে নিয়মিতভাবে যা সম্প্রচারিত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে তা হলো বর্তমান বৈশ্বিক আর্থিক ব্যবস্থার উপর উন্নয়নশীল বিশ্ব আঁকড়ে ধরা। শীর্ষ সম্মেলনের আগের কয়েক মাস ও সপ্তাহ ধরেই আন্তর্জাতিক বাণিজ্যের জন্য বিশ্বের মুদ্রা হিসেবে মার্কিন ডলারের আধিপত্যের সমালোচনা চলছে।
পাঁচটি দেশের ভিন্ন ভিন্ন অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক অগ্রাধিকারের কারণে এবং চীন ও ভারতের মধ্যে উত্তেজনা ও প্রতিদ্বন্দ্বিতার কারণে নীতি বাস্তবায়নে ব্লকের যে অসুবিধা রয়েছে তা নির্দেশ করতে ব্রিকস বিশেষজ্ঞরা সাধারণত ঐক্যবদ্ধ।
চায়না গ্লোবাল সাউথ প্রজেক্টের বিশ্লেষক কোবাস ভ্যান স্টাডেন বলেন, স্থানীয় মুদ্রায় আরও বেশি বাণিজ্যের দিকে মনোনিবেশ করা এমন একটি বিষয় যা তারা সকলেই পিছনে ফেলতে পারে।
তিনি দেখেছেন যে ব্রিকস বিশ্বের কিছু অংশে আঞ্চলিক বাণিজ্যে ডলারের থেকে দূরে সরে যাচ্ছে, ঠিক যেভাবে তিনি এই শীর্ষ সম্মেলনকে সামগ্রিকভাবে দেখেন।
ভ্যান স্ট্যাডেন বলেন, ‘এগুলোর কোনোটিই বড় অস্ত্র নয় যা ডলারকে মোকাবিলা করতে চলেছে। এটা নাটক নয়।’ ‘এটি একটি বড় তরবারির ক্ষত নয়, এটি অনেকগুলো কাগজ কাটার মতো। এটি ডলারকে দমাবে না, তবে এটি অবশ্যই বিশ্বকে আরও জটিল করে তুলছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘তাদের ডলারকে হারানোর দরকার নেই এবং তাদের জি-৭ কে পরাজিত করার দরকার নেই। তারা বিশেষভাবে যা করতে চায় তা হলো এর একটি বিকল্প উত্থাপন। এটা অনেক দীর্ঘ কাজ।’
আরও পড়ুন: ব্রিকস শীর্ষ সম্মেলন: সাইডলাইন বৈঠকে বসতে পারেন শেখ হাসিনা-মোদি
পাকিস্তানে পিকআপে বাসের ধাক্কা, আগুন ধরে নিহত ২০
পাকিস্তানের পাঞ্জাবের পিন্ডি ভাট্টিয়ানের কাছে থেমে থাকা একটি ভ্যানকে যাত্রীবাহী বাস ধাক্কা দেওয়ায় আগুন লেগে কমপক্ষে ২০ জন নিহত এবং ১১ জন আহত হয়েছে।
রবিবার (২০ আগস্ট) ভোরে পুলিশ ও উদ্ধারকারী কর্মকর্তারা এ তথ্য জানিয়েছেন।
সিনিয়র পুলিশ অফিসার ফাহাদ আহমেদ জানিয়েছেন, ইসলামাবাদগামী বাসটি লাহোর-ইসলামাবাদ মোটরওয়ের পাশে দাঁড়িয়ে থাকা একটি ভ্যানকে ধাক্কা দেওয়ায় এই দুর্ঘটনা ঘটেছে।
আহমেদ বলেন, ভ্যানটি জ্বালানির ড্রাম বহন করছিল, ফলে অগ্নিকাণ্ড ঘটে এবং পরে বাসেও আগুন লেগে যায়।
আহমেদ জানান, বাসটিতে ৪০ জনেরও বেশি যাত্রী ছিল।
যাদের উদ্ধার করা হয়েছে তাদের মধ্যে বেশ কয়েকজন গুরুতর দগ্ধ। অন্যান্য যাত্রীরা জানালা দিয়ে পালানোর সময় দগ্ধ হয়ে সামান্য আহত হয়েছেন।
পুলিশ জানিয়েছে, উভয় গাড়ির চালক মারা গেছেন।
নিকটবর্তী ফয়সালাবাদ জেলার একটি হাসপাতালের মেডিকেল অফিসার মোহাম্মদ জাভেদ বলেছেন, গুরুতরভাবে দগ্ধ আহতদের মধ্যে দুজন হাসপাতালে মারা যাওয়ায় মৃতের সংখ্যা ২০ জনে পৌঁছেছে এবং ১১ জনকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
আরও পড়ুন: পাকিস্তানে গির্জা ও খ্রিস্টানদের বাড়িতে হামলার ঘটনায় গ্রেপ্তার ১২৯
মোটরওয়ে পুলিশের মুখপাত্র এহসান জাফর বলেন, আগুনে বাসটি সম্পূর্ণ পুড়ে গেছে, শুধুমাত্র স্টিলের ফ্রেমটি অবশিষ্ট রয়েছে।
তিনি বলেন, অগ্নিনির্বাপক দল কয়েক মিনিটের মধ্যে ঘটনাস্থলে পৌঁছালেও ততক্ষণে দুটি গাড়িই আগুনে পুড়ে যায়।
তিনি আরও বলেন, প্রাথমিক তদন্তে জানা গেছে বাস চালকের গাফিলতির কারণেই দুর্ঘটনাটি ঘটেছে। বাসটি পেছন থেকে রাস্তার পাশে থেমে থাকা ভ্যানটিকে ধাক্কা দেয়।
বাসে থাকা ইমদাদ আলী জানান, দুর্ঘটনার সময় অধিকাংশ যাত্রী ঘুমিয়ে ছিলেন।
আলী বলেন, ‘দুর্ঘটনার ধাক্কায় সবাই জেগে উঠলেও আগুনের ফলে যাত্রীরা পালানোর সময় পায়নি। দ্রুত বাসটিতে আগুন লেগে যায় এবং সেসময় সমস্ত নারী, শিশু ও পুরুষ চিৎকার করছিল।’
তিনি আরও জানান, তিনি একটি জানালা ভাঙতে সফল হয়েছেন, তবে ধারালো ভাঙা কাঁচের মধ্য দিয়ে উঠতে দ্বিধাবোধ করছিলেন।
ইমদাদ আলী বলেন, ‘হঠাৎ কেউ আমাকে ধাক্কা দিল এবং আমি বাইরে পড়ে গেলাম। আল্লাহকে ধন্যবাদ এবং সেই মানুষটিকে ধন্যবাদ। সে যেই হোক তার কারণে আমি বেঁচে আছি।’
পাকিস্তানের মহাসড়কগুলোতে প্রায়ই দুর্ঘটনা ঘটে। সেখানে প্রায়ই নিরাপত্তা ব্যবস্থা মানা হয়না এবং ট্র্যাফিক নিয়ম লঙ্ঘন করা হয়।
ক্লান্ত চালকেরা দীর্ঘ যাত্রা সময় গাড়িতেই ঘুমিয়ে পড়েন।
আরও পড়ুন: কোরআন অবমাননার অভিযোগে পাকিস্তানে খ্রিস্টানদের গির্জায় হামলা
পাকিস্তানে ট্রেন লাইনচ্যুত হয়ে নিহত ৩০, আহত ৬০
সপ্তম চীন-দক্ষিণ এশিয়া এক্সপো শুরু হয়েছে ইউনানে
চীনের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলীয় ইউনান প্রদেশের কুনমিংয়ে বুধবার শুরু হয়েছে সপ্তম চীন-দক্ষিণ এশিয়া এক্সপো।
আরও পড়ুন: ঢাকা-বেইজিং বন্ধুত্বে বাংলাদেশি শিক্ষার্থীরা ‘আশার সেতু’: চীনা রাষ্ট্রদূত
বিশ্বের ৮৫টি দেশ ও অঞ্চল এবং আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোর ৩০ হাজারের বেশি প্রদর্শক, প্রতিনিধি এবং অতিথিরা এই প্রদর্শনীতের যোগ দিচ্ছেন। পাঁচ দিনব্যাপী এই প্রদর্শনীতে অনলাইন ও অফলাইনে বিভিন্ন ধরনের কার্যক্রমে অংশ নেবেন তারা।
‘সাধারণ উন্নয়নের জন্য সংহতি ও সমন্বয়’ প্রতিপাদ্য নিয়ে এ প্রদর্শনী শুরু হয়েছে। এখানে দক্ষিণ এশিয়া প্যাভিলিয়ন, দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া প্যাভিলিয়ন, সম্পদ-ভিত্তিক অর্থনীতি প্যাভিলিয়ন এবং বন্দর অর্থনীতি প্যাভিলিয়নসহ ১৫টি প্রদর্শনী হল স্থাপন করেছে।
আরও পড়ুন: নির্বাচন বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়: চীনের রাষ্ট্রদূত ইয়াও
'শান্তি ও স্থিতাবস্থা' বজায় রাখার প্রতিশ্রুতি চীন-ভারতের
পুরুষের সামনে মুখ দেখালে নারীর মর্যাদা কমে যায়: তালেবান কর্মকর্তা
আফগানিস্তানের তালেবান সরকারের একটি গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র বৃহস্পতিবার (১৭ আগস্ট) বলেছেন, জনসমক্ষে পুরুষদের সামনে মুখ দেখালে নারীদের মর্যাদা কমে যাবে।
তিনি আরও বলেন, দেশের ধর্মীয় নেতারা একমত যে বাড়ির বাইরে থাকার সময় নারীদের মুখ ঢেকে রাখতে হবে।
তালেবান সরকার ২০২১ সালের আগস্টে দেশটির ক্ষমতা গ্রহণ করে। এরপর থেকে পার্ক, চাকরি ও বিশ্ববিদ্যালয়সহ বেশিরভাগ জনপরিসরে নারীদের নিষিদ্ধ করার কারণ হিসেবে তারা যথাযথভাবে হিজাব (মাথা ঢেকে রাখার ইসলামিক পোশাক) পড়তে ব্যর্থতার কথা উল্লেখ করেছে।
তালেবানের ভাইস ও ভার্চু (পাপ ও পূণ্য) মন্ত্রণালয়ের (পূর্বনাম নারীবিষয়ক মন্ত্রণালয়) মুখপাত্র মৌলভী মোহাম্মদ সাদিক আকিফ বৃহস্পতিবার অ্যাসোসিয়েটেড প্রেসকে (এপি) দেওয়া একটি সাক্ষাত্কারে বলেছেন, নারীদের মুখ জনসমক্ষে দেখা গেলে ফিতনা বা পাপে জড়ানোর আশঙ্কা রয়েছে।
আকিফ বলেন, ‘কিছু এলাকায় (বড় শহর) নারীদের (হিজাব ছাড়া) খুবই খারাপভাবে দেখা যায়। আমাদের পণ্ডিতরাও একমত যে নারীদের মুখ ঢেকে রাখা উচিত।’
তিনি আরও বলেন, ‘এমন না যে এতে তার মুখের কোনো ক্ষতি হবে। একজন নারীর নিজস্ব মর্যাদা আছে এবং পুরুষরা তাকে দেখলে সেই মর্যাদা কমে যায়। আল্লাহ হিজাব পরা নারীদের সম্মান দেন এবং এতে মর্যাদা রয়েছে।’
কেমব্রিজ ইউনিভার্সিটির ডিভিনিটি অনুষদের ইসলামিক স্টাডিজের শেখ জায়েদ লেকচারার টিম উইন্টার বলেছেন, নারীর মুখ ঢেকে রাখার ব্যাপারে ইসলামে কোনো শাস্ত্রসম্মত কোনো আদেশ বা হাদিস নেই। এ ছাড়া তালেবানরা ইসলামি ধর্মগ্রন্থে (কোরআন) এমন কিছু খুঁজে পাবে না যা তাদের হিজাবের নিয়মের ব্যাখ্যাকে সমর্থন করে।
তিনি এপিকে বলেন, ‘তাদের নাম থেকেই বোঝা যায় যে তারা ধর্মীয় বিষয়ে বিশেষজ্ঞ নন। তালেবান শব্দের অর্থ শিক্ষার্থী (জ্ঞান আহরণকারী)।’
তিনি বলেন, তালেবানরা গ্রামের মাদরাসা ও ধর্মীয় বিদ্যালয়ে ব্যবহৃত পাঠ্যপুস্তকের মাধ্যমে শিক্ষাব্যবস্থা চালান। এ ছাড়া তালেবান শাসনের দুই মেয়াদে আফগানিস্তানে যাওয়া মুসলিম পণ্ডিতদের ধর্মীয় জ্ঞানের দ্বারা তারা প্রভাবিত। তাই ‘তারা বৃহত্তর মুসলিম সম্প্রদায় থেকে এত বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে।’
আরও পড়ুন: আফগানিস্তানে নারীদের বিউটি পার্লার নিষিদ্ধ করেছে তালেবান
মেয়ে ও নারীদের উপর তালেবানের নিষেধাজ্ঞা আরোপের ফলে কিছু মুসলিম-সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশসহ বিশ্বব্যাপী ক্ষোভের সৃষ্টি করেছে।
বুধবার জাতিসংঘের বিশেষ দূত গর্ডন ব্রাউন বলেছেন, আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের আফগান মেয়ে ও নারীদের শিক্ষা ও কর্মসংস্থানের অধিকার হরণ করায় মানবতাবিরোধী অপরাধের জন্য তালেবান নেতাদের বিচার করা উচিত।
ভাইস অ্যান্ড ভার্চু মন্ত্রণালয়ের প্রধান মুখপাত্র আকিফ বলেন, মন্ত্রণালয়ের কোনো কাজে সাধারণ মানুষ কোনো বাধা দেয়নি। বরং আফগানরা এই আইনগুলোতে সমর্থন করেছে।
তিনি বলেন, ‘মানুষ এখানে শরিয়া (ইসলামি আইন) বাস্তবায়ন করতে চেয়েছিল। এখন আমরা শরিয়া বাস্তবায়ন করছি।’
তিনি আরও বলেন, এগুলো সব ইসলামিক বিধি-বিধান। তালেবানরা এতে অতিরিক্ত কিছুই যোগ করেনি। ‘শরিয়ার আদেশ ১৪০০ বছর আগে জারি করা হয়েছিল এবং তা এখনও আছে।’
তিনি বলেন, বর্তমান প্রশাসনে পুরুষরা আগের সরকারের আমলের মতো নারীদের হয়রানি করবে না বা তাকাবে না।
তালেবান সরকার আরও বলেছে, তারা মদ্যপান ও ছেলেশিশুদের শ্লীলতাহানীর মতো ‘ঘৃন্য’ কাজ বন্ধ করেছে।
এই মন্ত্রণালয় আফগানিস্তানের রাজধানী কাবুলের দারুল আমান প্রাসাদের কাছে একটি সুরক্ষিত কম্পাউন্ডে অবস্থিত। নারীদের মন্ত্রণালয়ের প্রাঙ্গণে ঢোকা নিষেধ।
আকিফ বলে, জনগণ নিয়ম মেনে চলছে কি না তা পরীক্ষা করার জন্য মন্ত্রণালয় কর্মকর্তা ও তথ্যদাতাদের নেটওয়ার্কের উপর নির্ভর করে।
তিনি বলেন, ‘আমাদের ন্যায়পালরা বাজার, উন্মুক্ত স্থান, বিশ্ববিদ্যালয়, স্কুল, মাদরাসা ও মসজিদে ঘুরে বেড়ায়। ‘তারা এই সব জায়গায় যান এবং লোকজনদের দেখেন। তারা তাদের সঙ্গে কথা বলেন এবং তাদের শিক্ষা দেন। আমরা তাদের পর্যবেক্ষণ করি এবং লোকেরাও আমাদের সঙ্গে সহযোগিতা করে এবং আমাদের জানায়।’
নারীরা পার্কে যেতে পারবেন কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, এই জায়গা থেকে তাদের নিষিদ্ধ করা হয়েছে। তবে কিছু শর্ত পূরণ করে তারা সেখানে যেতে পারবেন।
তিনি আরও বলেন, ‘যদি সেখানে কোনো পুরুষ না থাকে তাহলে নারীরা পার্কে যেতে পারে। কিন্তু যদি পুরুষ থাকে, তাহলে শরিয়া তা অনুমোদন করে না। আমরা বলি না যে একজন নারী খেলাধুলা করতে পারবে না, তবে সে পার্কে গিয়ে খেলতে বা দৌড়াতে পারবে না। সে এসব করতেই পারে, তবে অর্ধ-উলঙ্গ হয়ে পুরুষদের মধ্যে এসব করতে পারবে না।’
আরও পড়ুন: কাবুলে তালেবান শাসন: ম্যানিকুইনেরও মুখ ঢেকে রাখার নির্দেশ!
কাবুলে শিক্ষাকেন্দ্রে আত্মঘাতী বোমা হামলায় নিহত ১৯: তালেবান
ঐতিহাসিক সাফল্যের কাছাকাছি ভারতের চন্দ্র অভিযান
চাঁদে অনুসন্ধান করতে দক্ষিণ মেরুতে ভারতের তৃতীয় চন্দ্র মিশনের একটি ল্যান্ডার এবং রোভার আগামী ২৩ আগস্ট অবতরণ করতে চলেছে।
বিবিসি জানিয়েছে, বৃহস্পতিবার (১৭ আগস্ট) চাঁদের কাছে নিয়ে যাওয়া প্রপালশন মডিউল থেকে আলাদা হয়ে যাওয়ার পর চন্দ্রযান-৩ ল্যান্ডারটি মিশনের চূড়ান্ত পর্যায় শুরু করে।
এটি বলেছে, একটি রাশিয়ান মহাকাশযানও চাঁদের দক্ষিণ মেরুতে যাত্রা করছে।
লুনা-২৫ হলো ১৯৭৬ সাল থেকে রাশিয়ার প্রথম চাঁদ মিশন। তখন দেশটি সোভিয়েত ইউনিয়নের একটি অংশ ছিল।
আরও পড়ুন: ভারতের চন্দ্রযান-২ অভিযান ব্যর্থ
গত সপ্তাহে লুনা-২৫ চালু হয়েছিল। এটি আগামী ২১ বা ২২ আগস্ট একটি নিরাপদ অবতরণ করতে প্রস্তুত।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, যদি লুনা-২৫ নির্ধারিত সময়ে নিরাপদ অবতরণ করতে সফল হয়, তাহলে চন্দ্রযান-৩ -কে দ্বিতীয় স্থান নির্ধারিত হওয়ার জন্য স্থির থাকতে হবে।
আরও পড়ুন: ভারতীয় চন্দ্রযানের ধ্বংসাবশেষ খুঁজে পেয়েছে নাসা
প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, সর্বোপরি বহুল প্রত্যাশিত চন্দ্রযান ৩-এর অবতরণ ভারতকে চন্দ্রপৃষ্ঠে পৌঁছে দেওয়া দেশগুলোর তালিকায় নিয়ে আসবে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, প্রাক্তন সোভিয়েত ইউনিয়ন এবং চীন যারা ইতোমধ্যে চন্দ্রপৃষ্ঠে পৌঁছেছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, চন্দ্রযান-৩ মহাকাশযানটি গত ১৪ জুলাই চালু করা হয়েছিল। কিন্তু ৫ আগস্ট চন্দ্রের কক্ষপথে প্রবেশ করার আগে এটি পৃথিবীর বেশ কয়েকটি কক্ষপথ প্রদক্ষিণ করেছে। তারপর থেকে মহাকাশযানটি অবতরণের প্রস্তুতির জন্য চাঁদকে প্রদক্ষিণ করছে।
আরও পড়ুন: নাসা: ইঞ্জিন ত্রুটি সাড়ার পর শনিবার নতুন চন্দ্রযান রকেট উৎক্ষেপণের লক্ষ্য নির্ধারণ
এতে আরও বলা হয়েছে, রাশিয়ান এবং ভারতীয় মহাকাশযান উভয়ই একসঙ্গে ইতিহাসের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে বলে একটি ‘মিনি স্পেস রেস’ নিয়ে আলোচনা হয়েছে।
ইন্ডিয়ান স্পেস রিসার্চ অর্গানাইজেশন অবশ্য এটিকে রেস না করে চাঁদে একটি নতুন ‘মিটিং পয়েন্ট’ বলতে আগ্রহী।
ইসরোর একজন মুখপাত্র বিবিসিকে বলেছেন, ‘১৯৬০-এর দশকে শুরুর প্রথম দিন থেকে ইসরো কখনোই কোনো প্রতিযোগিতা করেনি।’
আরও পড়ুন: আরও এক ধাপ এগিয়ে গেল চন্দ্রযান-৩: ইসরো
পাকিস্তানে গির্জা ও খ্রিস্টানদের বাড়িতে হামলার ঘটনায় গ্রেপ্তার ১২৯
পাকিস্তানে কথিত কোরআন অবমাননার অভিযোগে ক্ষুব্ধ জনতা কয়েকটি গির্জা এবং সংখ্যালঘু খ্রিস্টানদের বেশকিছু বাড়িতে হামলা চালানের ঘটনায় ১২৯ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। পবিত্র গ্রন্থ কোরআন অবমাননা করার অভিযোগে পুলিশ দুই খ্রিস্টান পুরুষকেও গ্রেপ্তার করেছে।
বৃহস্পতিবার দেশটির কর্মকর্তারা এ তথ্য জানিয়েছেন।
কোরআন অবমাননার অভিযোগে গত বুধবার(১৬ আগস্ট) দেশটির পূর্বাঞ্চলীয় প্রদেশের জরানওয়ালা জেলায় তাণ্ডব শুরু করেছিল উত্তেজিত জনতা। যার ফলে খ্রিস্টানরা নিরাপদ স্থানে পালিয়ে যেতে বাধ্য হয়। কারণ জনতা খ্রিস্টানদের উপর দেশের সবচেয়ে ধ্বংসাত্মক আক্রমণ শুরু করেছিল।
নগরীর পুলিশ প্রধান, বিলাল মেহমুদ বলেছেন, অফিসাররা রাজা আমির এবং তার এক বন্ধুকে গ্রেপ্তার করেছে। স্থানীয় মুসলমানরা যাদেরকে কুরআনের একটি পৃষ্ঠা ছিঁড়ে ফেলা ও অন্য পৃষ্ঠাগুলোতে অবমাননাকর মন্তব্য লিখে এবং গ্রন্থটি মাটিতে ফেলে দেওয়ার অভিযোগে অভিযুক্ত করেছিল।
আঞ্চলিক পুলিশ প্রধান রিজওয়ান খান বলেছেন, সন্দেহভাজন দাঙ্গাবাজ হিসাবে ১২৯ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে এবং পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। কর্তৃপক্ষ শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনতে সৈন্যদের মোতায়েন করে এবং খ্রিস্টান বাসিন্দারা বৃহস্পতিবার ধ্বংস দেখতে ধীরে ধীরে বাড়ি ফিরে আসে।
শাজিয়া আমজাদ তার পোড়া বাড়ির বাইরে কাঁদতে কাঁদতে বলেন, ‘আমরা বাড়িতে বসা থাকতে হঠাৎ শুনতে পেলাম যে জনতার একটি দল আসছে এবং তারা বাড়িঘর জ্বালিয়ে দিচ্ছে এবং গীর্জায় হামলা করছে।’
তিনি বলেছিলেন, জনতা ঘরের জিনিসপত্র এবং আসবাবপত্র পুড়িয়ে দিয়েছে এবং তার কিছু জিনিসপত্র চুরি হয়ে গেছে। সে তার পরিবারের সঙ্গে নিরাপদ এলাকায় অবস্থান করছিলেন।
আরও পড়ুন: পাকিস্তানের স্বাধীনতা দিবসে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধানমন্ত্রীর শপথ
অন্যান্য খ্রিস্টানরাও অনুরূপ কঠিন পরিস্থিতির বর্ণনা করেছিল এবং বিস্ময় প্রকাশ করেছিল।
আজিম মসিহ তার বাড়ির বাইরে বসে বসে কাঁদছিলেন। যেটি তার রাস্তায় পুড়ে ফেলা কয়েকটি ভবনের মধ্যে একটি ছিল। তিনি বলেন, কিছু দাঙ্গাকারী আসবাবপত্র ও অন্যান্য জিনিসপত্র পুড়িয়ে দেওয়ার পর খ্রিস্টানদের গৃহস্থালির জিনিসপত্র নিতে গাড়ি নিয়ে আসে।
তিনি বলেন,‘কেন তারা আমাদের সঙ্গে এটা করল? আমরা কোনো অন্যায় করিনি।’
স্থানীয় পুরোহিত খালিদ মুখতার বলেছেন যে তিনি বিশ্বাস করেন, জরানওয়ালার ১৭টি গির্জার বেশিরভাগেই আক্রমণ করা হয়েছে এবং তার নিজের বাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
সরকারি কর্মকর্তারা বলেছেন, সমস্ত ক্ষতিগ্রস্ত গীর্জা এবং বাড়িগুলো এক সপ্তাহের মধ্যে মেরামত করা হবে এবং যারা ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছে তাদের ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে।
সারাদেশে সহিংসতাটির নিন্দা জানানো হয়েছে। দাঙ্গাবাজদের গ্রেপ্তার নিশ্চিত করার জন্য পুলিশকে নির্দেশ দিয়েছেন দেশটির তত্ত্বাবধায়ক প্রধানমন্ত্রী আনোয়ারুল-উল-হক কাকার।
আঞ্চলিক পুলিশ প্রধান বলেছেন, জনতা দ্রুত জড়ো হয়ে গীর্জা ও খ্রিস্টানদের বাড়িতে হামলা শুরু করে। দাঙ্গাকারীরা শহরের প্রশাসকের অফিসেও হামলা চালায়, কিন্তু পুলিশ হস্তক্ষেপ করে, ফাঁকা গুলি ছুড়ে এবং মুসলিম আলেম ও মুরব্বিদের সহায়তায় হামলাকারীদের ছত্রভঙ্গ করতে লাঠিচার্জ করে।
সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করা ভিডিও এবং ফটোতে দেখা যাচ্ছে ক্ষুব্ধ জনতা একটি গির্জার ওপর উঠেছে, ইটের টুকরো দিয়ে ঢিল ছুঁড়ছে এবং আগুন ধরিয়ে দিচ্ছে। অন্য একটি ভিডিওতে দেখা যায় আরও চারটি গির্জায় হামলা করা হয়, আক্রমণকারীরা জানালা ভেঙে আসবাবের টুকরো বাইরে ফেলে এবং আগুন ধরিয়ে দেন।
অন্য একটি ভিডিওতে, একজন ব্যক্তিকে একটি গির্জার ছাদে উঠে হাতুড়ি দিয়ে বার বার আঘাত করে একটি স্টিলের ক্রস সরাতে দেখা যায়, আর তাকে বাহবা দিচ্ছে জড়ো হওয়া লোকজন।
আরও পড়ুন: 'শান্তি ও স্থিতাবস্থা' বজায় রাখার প্রতিশ্রুতি চীন-ভারতের
দেশীয় এবং আন্তর্জাতিক মানবাধিকার গোষ্ঠীগুলো ওই সহিংসতার নিন্দা জানিয়েছে। অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল পাকিস্তানের ব্লাসফেমি আইন বাতিলের আহ্বান জানিয়েছে।
পাকিস্তানের ব্লাসফেমি আইনের অধীনে, যে কেউ ইসলাম বা ইসলামিক ধর্মীয় ব্যক্তিত্বদের অবমাননার জন্য দোষী সাব্যস্ত হলে মৃত্যুদণ্ড হতে পারে। যদিও কর্তৃপক্ষ এখনও ব্লাসফেমির জন্য মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করতে পারেনি। প্রায়শই শুধুমাত্র একটি অভিযোগ জনতাকে সহিংসতা, বিচারহীনতা এবং হত্যার জন্য উস্কে দিতে পারে।
অধিকার গ্রুপগুলো বলছে, ব্লাসফেমির অভিযোগগুলো ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের ভয় দেখানো এবং ব্যক্তিগত স্বার্থের জন্য ব্যবহার করা হয়েছে।
মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র বেদান্ত প্যাটেল পাকিস্তানকে পূর্ণ তদন্ত করার আহ্বান জানিয়েছেন। বুধবার ওয়াশিংটনে তিনি বলেন, ‘আমরা শান্তিপূর্ণ মত প্রকাশের স্বাধীনতা এবং প্রত্যেকের জন্য ধর্ম ও বিশ্বাসের স্বাধীনতার অধিকারকে সমর্থন করি।’
আরও পড়ুন: কোরআন অবমাননার অভিযোগে পাকিস্তানে খ্রিস্টানদের গির্জায় হামলা
মালয়েশিয়ায় উড়োজাহাজ বিধ্বস্ত, ৯ জনের লাশ উদ্ধার
মালয়েশিয়ার কেন্দ্রীয় সেলাঙ্গর রাজ্যের একটি শহরতলিতে বৃহস্পতিবার একটি ছোট উড়োজাহাজ বিধ্বস্ত হয়েছে। এ ঘটনায় অন্তত ৯ জনের লাশ উদ্ধার করা হয়।
শাহ আলম জেলার পুলিশ প্রধান মোহাম্মদ ইকবাল ইব্রাহিম একটি উড়োজাহাজ (জেট) বিধ্বস্ত হওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তবে বিমানের সব যাত্রী মারা গেছেন কি না সে বিষয়ে বিস্তারিত কিছু বলা যাচ্ছে না।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক আরেক পুলিশ কর্মকর্তা বলেন, অন্তত ৯ জনের লাশ পাওয়া গেছে।
দেশটির বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, উড়োজাহাজটিতে ৬ জন যাত্রী ও ২ জন ক্রু ছিলেন।
প্রত্যক্ষদর্শীদের বরাত দিয়ে মালয় মেইল নামে স্থানীয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জানিয়েছে, দুর্ঘটনার পর বিমানটি বিস্ফারিত হয় এবং এর কিছু ধ্বংসাবশেষ একটি মোটরসাইকেলকে আঘাত করে।
আরও পড়ুন: চট্টগ্রাম থেকে মালয়েশিয়া যাওয়া জাহাজের কন্টেইনার থেকে কিশোর উদ্ধার
নিউ স্ট্রেইটস টাইমস নামে আরেকটি সংবাদপত্র তাদের ওয়েবসাইটে উল্লেখ করেছে, উড়োজাহাজটি উত্তরাঞ্চলীয় রিসোর্ট দ্বীপ ল্যাংকাউই থেকে সেলাঙ্গরের সুবাং বিমানবন্দরে যাওয়ার পথে দুর্ঘটনার কবলে পড়ে এবং মহাসড়কে বিধ্বস্ত হয় বলে ধারণা করা হচ্ছে।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ভিডিওতে দেখা যায়, শাহ আলম জেলার প্রধান মহাসড়কের পাশে একটি ঘাসযুক্ত লন (দুর্ঘটনাস্থল) থেকে আগুন ও কালো ধোঁয়ার কুণ্ডলী উঠে আসছে। রাস্তার কিছু অংশ ঘন ধোঁয়ায় ঢেকে থাকতে দেখা গেছে।
ঘটনাস্থলে পুলিশ ও দমকল বাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে।
পরিবহনমন্ত্রী অ্যান্টনি লোক সংবাদ সম্মেলনে বিস্তারিত জানাবেন বলে আশা করা হচ্ছে।
আরও পড়ুন: ধনী বিনিয়োগকারীদের আকৃষ্ট করতে প্রিমিয়াম ভিসা চালু করছে মালয়েশিয়া
মালয়েশিয়া পাচারকালে বাংলাদেশিসহ ৫৭ রোহিঙ্গা উদ্ধার, আটক ২
কোরআন অবমাননার অভিযোগে পাকিস্তানে খ্রিস্টানদের গির্জায় হামলা
পবিত্র কোরআন শরীফকে অবমাননা করায় পাকিস্তানের একজন খ্রিস্টানের বাড়ি ভাঙচুর করেছে উত্তেজিত জনতা। এসময় গির্জায় অগ্নিসংযোগসহ আরও বেশ কয়েকটি বাড়িঘর ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তবে তাৎক্ষণিকভাবে হতাহতের কোনো খবর পাওয়া যায়নি।
বুধবার দেশটির পুলিশ ও স্থানীয়রা এই তথ্য জানিয়েছেন।
সহিংসতার মাত্রা সরকারকে অতিরিক্ত পুলিশ বাহিনী মোতায়েন করতে এবং শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনতে সহায়তা করার জন্য সেনাবাহিনী পাঠাতে বাধ্য করেছে।
দেশটির পূর্বাঞ্চলের পাঞ্জাব প্রদেশের ফয়সালাবাদ জেলার জরানওয়ালায় এই ঘটনা ঘটে। ওই এলাকায় বসবাসকারী কিছু মুসলমান দাবি করেন, তারা রাজা আমির নামের স্থানীয় একজন খ্রিস্টান এবং তার বন্ধুকে কোরআনের একটি পাতা ছিঁড়ে মাটিতে ফেলে দিতে এবং কোরআনের অন্যান্য পৃষ্ঠায় অপমানজনক মন্তব্য লিখতে দেখেছেন।
পুলিশ প্রধান রিজওয়ান খান বলেন, এতে স্থানীয় মুসলমানরা ক্ষুব্ধ হয়েছে। জনতা জড়ো হয়ে একাধিক গির্জা এবং বেশ কয়েকটি খ্রিস্টান বাড়িতে আক্রমণ করে আসবাবপত্র এবং অন্যান্য গৃহস্থালি সামগ্রী পুড়িয়ে দেয়। এমন পরিস্থিতিতে খ্রিস্টান সম্প্রদায়ের কিছু সদস্য তাদের বাড়িঘর ছেড়ে পালিয়েছে।
পুলিশ শেষ পর্যন্ত হস্তক্ষেপ করে ফাঁকা গুলি চালায় এবং মুসলিম আলেম ও বয়োজ্যেষ্ঠদের সহায়তায় হামলাকারীদের ছত্রভঙ্গ করার আগে লাঠিচার্জ করে। কর্তৃপক্ষ আরও বলেছে, তারা সমস্ত অপরাধীদের খুঁজে বের করার প্রয়াসে অভিযান শুরু করেছে। কয়েক ডজন দাঙ্গাবাজকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
পুলিশ কর্মকর্তা বিলাল মেহমুদ সাংবাদিকদের বলেছেন, তারা আমিরকেও খুঁজছেন, যিনি জনতার হাত থেকে বাঁচতে আত্মগোপনে গেছেন। তিনি কোরআনকে অবমাননা করেছেন কিনা তা তদন্ত করতে তাকে আটক করা হবে।
সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করা ভিডিও এবং ছবিগুলো দেখায় যে বিক্ষুব্ধ জনতা একটি গির্জার উপর হামলা চালাচ্ছে। ইটগুলোর টুকরো ছুঁড়েছে এবং এটি পুড়িয়ে দিচ্ছে৷ অন্য একটি ভিডিওতে আরও দুটি গির্জায় হামলা করতে দেখা যায়। এতে আক্রমণকারীরা আসবাবপত্র বের করে এবং আগুন লাগানোর সময় তাদের জানালা ভেঙে যায়।
আরও পড়ুন: আনোয়ার-উল-হক কাকার পাকিস্তানের তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত
ভিডিওতে বেশ কয়েকজন পুলিশ সদস্যকে ভাঙচুর থামাতে হস্তক্ষেপ না করে পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করতে দেখা যায়।
আরেকটি ভিডিওতে একজন ব্যক্তিকে গির্জার ছাদে উঠতে দেখা যাচ্ছে এবং রাস্তার নিচে থাকা জনতা উল্লাস করছে। আর সে হাতুড়ি দিয়ে বারবার আঘাত করে স্টিলের ক্রসটি (খ্রিস্টানদের ধর্মীয় প্রতীক) সরিয়ে ফেলছে।
খালিদ মুখতার নামে একজন স্থানীয় ধর্মযাজক বলেন, ওই এলাকায় বসবাসকারী অধিকাংশ খ্রিস্টান নিরাপদ স্থানে পালিয়ে গেছে। ‘এমনকি আমার বাড়ি পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে।’
মুখতার বলেন, জরানওয়ালায় ১৭টি গির্জা রয়েছে এবং তিনি ধারণা করেন, হয়তো তাদের বেশিরভাগই আক্রমণের শিকার হয়েছে। তবে কর্তৃপক্ষ তাৎক্ষণিকভাবে এই সংখ্যা নিশ্চিত করেনি।
কোরআন অবমাননার অভিযোগকে একটি ‘মিথ্যা অভিযোগ’ হিসাবে বর্ণনা করেছেন করাচির ন্যাশনাল ক্যাথলিক ইনস্টিটিউট অব থিওলজি গির্জার ইতিহাসের শিক্ষক ফাদার গুলশান বরকত। তিনি বলেছেন, এই ঘটনার জন্য স্থানীয় মসজিদগুলোও দায়ী কারণ মিনারে স্থাপন করা লাউডস্পিকারগুলোর মাধ্যমে সকালে মুসলমানদের জড়ো হতে আহ্বান জানিয়েছিল। ফলে ‘গীর্জা এবং খ্রিস্টান সম্প্রদায়গুলো আক্রমণের শিকার হয়।’
তিনি বলেন, ‘আমাদের মুসলিম ভাইদের আবেগ খুব দ্রুত জ্বলে ওঠে, এমনকি শোনার মধ্যেও।’
আরও পড়ুন: পাকিস্তানের স্বাধীনতা দিবসে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধানমন্ত্রীর শপথ
লাউডস্পিকার সম্পর্কে অভিযোগের সত্যতা নিশ্চিত করার জন্য জরানওয়ালা মসজিদের কোনো আলেমের কাছে পৌঁছানো যায়নি।
পুলিশ প্রধান বলেন, পরে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে এবং তদন্ত চলছে। হামলার সঙ্গে জড়িত সবাইকে বিচারের আওতায় আনা হবে। ‘আমাদের প্রথম অগ্রাধিকার ছিল খ্রিস্টানদের সকলের জীবন বাঁচানো।’
পরে সন্ধ্যায় পুলিশকে সাহায্য করতে আসে সেনারা। ক্ষুব্ধ মুসলমানদের তাদের বাড়িতে ফিরে যাওয়ার জন্য অনুরোধ করা হয় এই প্রতিশ্রুতি দিয়ে যে কুরআন অপবিত্রকারীকে শিগগিরই গ্রেপ্তার করা হবে।
খ্রিস্টানদের প্রতি সহমর্মিতা জানাতে লাহোর শহর থেকে মুসলিম আলেমদের একটি প্রতিনিধি দলও যায় জরানওয়ালায়।
আরও পড়ুন: 'শান্তি ও স্থিতাবস্থা' বজায় রাখার প্রতিশ্রুতি চীন-ভারতের