বিএনপি
বিএনপিকে বিজয় দিবসের সমাবেশের অনুমতি দিতে গড়িমসি করছে পুলিশ: রিজভী
বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী অভিযোগ করেছেন, ‘পুলিশ তাদের দলকে বিজয় দিবসের সমাবেশের অনুমতি দিতে গড়িমসি করছে।’
বৃহস্পতিবার (১৪ ডিসেম্বর)ভার্চুয়াল ব্রিফিংয়ে বক্তৃতাকালে তিনি আরও অভিযোগ করেন, শহীদ বুদ্ধিজীবীদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে বিএনপিকে পুলিশ বাধা সৃষ্টি করেছে।
এই বিএনপি নেতা বলেন, ‘তারা (পুলিশ) মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে বিএনপিকে বিজয় সমাবেশের অনুমতি দিতে কৌশল অবলম্বন করে ১৯৭০ সালের হানাদার বাহিনীর মতো ভূমিকা পালন করছে।’
১৬ ডিসেম্বর বিজয় দিবস উদযাপনে রাজধানীতে সমাবেশের অনুমতি চেয়ে ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি) কমিশনারকে চিঠি দিয়েছে বিএনপি।
বুধবার দলের ভাইস চেয়ারম্যান নিতাই রায় চৌধুরীর নেতৃত্বে বিএনপির একটি প্রতিনিধি দল বেইলি রোডে ডিএমপি কার্যালয়ে গিয়ে চিঠি জমা দেন।
রিজভী আরও অভিযোগ করেন, পুলিশ বিএনপির নয়াপল্টনে কেন্দ্রীয় কার্যালয় দেড় মাসেরও বেশি সময় ধরে অবরুদ্ধ করে রেখেছে। আমাদের নেতারা নয়াপল্টনে যেতে পারবেন না।
তিনি দাবি করেন, বুধবার রাতে গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারর্সনের কার্যালয়ে কোনো অনুমতি ছাড়াই পুলিশ অভিযান চালিয়ে প্রতিটি কক্ষে তল্লাশি চালায়।
এই বিএনপি নেতা আরও বলেন, শহীদ বুদ্ধিজীবীদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে কার্যালয়ে রাখা পুষ্পস্তবক ও অন্যান্য জিনিসপত্র নিয়ে গেছে পুলিশ।
তিনি বলেন, শহীদ বুদ্ধিজীবীদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে কেউ অফিসে এলে গ্রেপ্তারের হুমকিও দেয় আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। কিন্তু তারা (সরকার) বলছে তারা মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাসী।
রিজভী বলেন, গুলশান থানার ওসির নেতৃত্বে পুলিশের একটি দল বিএনপি চেয়ারপার্সনেরর কার্যালয়ে প্রবেশ করে পুষ্পস্তবকটি বের করে প্রকাশ্যে ছিঁড়ে ফেলে। ‘আমরা কোন দেশে বাস করছি? আওয়ামী লীগের প্রধানমন্ত্রী সম্রাজ্ঞী হিসেবে আছেন এবং তারা যাকে খুশি গ্রেপ্তার করতে পারে এবং তাদের বিরুদ্ধে মামলা করে জেলে রাখতে পারে।’
তিনি বলেন, সরকার তার পুতুল রাষ্ট্রযন্ত্রের মদদে নিজস্ব ও ডামি প্রার্থী দিয়ে উদ্ভট নির্বাচন করতে যাচ্ছে।
তিনি দেশের ভোটারদের একতরফা নির্বাচন বর্জন এবং তা প্রতিহত করার আহ্বান জানান।
ইসির আন্দোলন বন্ধ করতে চাওয়া নজিরবিহীন ও গণবিরোধী: রিজভী
১৮ ডিসেম্বর থেকে ৭ জানুয়ারির মধ্যে রাজনৈতিক সমাবেশ নিষিদ্ধ করতে অনুরোধ জানিয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে নির্বাচন কমিশনের চিঠি পাঠানোর সিদ্ধান্ত 'নজিরবিহীন ও গণবিরোধী বলে অভিহিত করেছেন বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী।
চিঠির নিন্দা জানিয়ে রিজভী বলেন, 'আওয়ামী লীগের অধীনস্থ ও বিতর্কিত রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানে পরিণত হওয়া নির্বাচন কমিশন সম্প্রতি নজিরবিহীন ও গণবিরোধী সিদ্ধান্ত নিয়েছে।’
আগামী ১৮ ডিসেম্বর থেকে নির্বাচনের দিন পর্যন্ত নির্বাচনী প্রচারণা ব্যতীত অন্য কোনো রাজনৈতিক কর্মসূচি বা সমাবেশের অনুমতি না দিতে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে অনুরোধ করেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)।
মঙ্গলবার (১২ ডিসেম্বর) স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের সচিবের কাছে পাঠানো এক চিঠিতে এ অনুরোধ জানানো হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (১৪ ডিসেম্বর) এর প্রতিক্রিয়ায় রিজভীর সই করা এক বিবৃতিতে এ কথা জানায় বিএনপি।
বিএনপির এই নেতা বলেন, পক্ষপাতদুষ্ট ও অযোগ্য নির্বাচন কমিশন আসন ভাগাভাগির মাধ্যমে ২০২৪ সালের ৭ জানুয়ারি ‘ডামি’ নির্বাচন আয়োজনের গণবিরোধী সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
রিজভী বলেন, নির্বাচন কমিশনের প্রতি কেন ব্যাপক অবিশ্বাস রয়েছে এবং কেন লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড তৈরি করা বা এর অধীনে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন করা সম্ভব হচ্ছে না, তা এখন স্পষ্ট হয়েছে।
আরও পড়ুন: শহীদ বুদ্ধিজীবীদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন বিএনপির
বিবৃতিতে তিনি বলেন, জনগণের মুক্ত ও স্বাধীনতার আকাঙ্ক্ষাকে দমন করার জন্য দুঃশাসন, দুর্নীতি ও নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্যের অসহনীয় মূল্যবৃদ্ধির মধ্যে গণতন্ত্রপন্থী সকল শক্তি এই অন্যায্য পদক্ষেপের নিন্দা জানাচ্ছে।
এর আগে মেরুদণ্ডহীন নির্বাচন কমিশন ফ্যাসিবাদী সরকারের নির্দেশনা মেনে রাজনৈতিক দলগুলোকে নিবন্ধন ও ভুয়া সংগঠনগুলোকে নির্বাচন পর্যবেক্ষক হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে।
রিজভী বলেন, 'তথাকথিত' রাজনৈতিক দল তৈরি করে এবং দেশি-বিদেশি নির্বাচন পর্যবেক্ষক নিয়োগ দিয়ে আওয়ামী লীগ ও নির্বাচন কমিশনের প্রতারণার চেষ্টা জাতির সামনে উন্মোচিত হয়েছে।
এর আগে মেরুদণ্ডহীন নির্বাচন কমিশন ফ্যাসিবাদী সরকারের নির্দেশনা মেনে রাজনৈতিক দলগুলোর নিবন্ধন ও ভুয়া সংগঠনগুলোকে নির্বাচন পর্যবেক্ষক হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে বলেও অভিযোগ করেন রিজভী।
আরও পড়ুন: অবশেষে চিকিৎসার জন্য ভারতে গেলেন বিএনপি নেতা হাফিজ উদ্দিন
বিএনপির চলমান 'শান্তিপূর্ণ ও অহিংস' আন্দোলনকে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের সংগ্রাম আখ্যায়িত করে রিজভী কমিশনের সিদ্ধান্ত প্রত্যাহারের আহ্বান জানান।
তিনি বলেন,‘রাজনৈতিক কর্মসূচি বন্ধের নতুন প্রচেষ্টায় আমরা উদ্বেগ ও নিন্দা জানাচ্ছি। গণতান্ত্রিক মত প্রকাশের অধিকার খর্ব করার এই অশুভ উদ্যোগ বাংলাদেশে চলমান রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক ও কূটনৈতিক সংকটকে আরও তীব্র করে তুলবে।’
নির্বাচনে অংশগ্রহণ থেকে বিরত থাকা যেকোনো ব্যক্তি বা দলের গণতান্ত্রিক অধিকার হলেও বিএনপি নির্বাচনে অংশগ্রহণের বিরোধী নয়।
তিনি আরও বলেন, ‘আমরা বিশ্বাস করি, অবাধ, সুষ্ঠু, অংশগ্রহণমূলক ও বিশ্বাসযোগ্য নির্বাচন হলে বিএনপির নিরঙ্কুশ বিজয় অনিবার্য।’
রিজভী বলেন, গণতন্ত্রকামী সব রাজনৈতিক দলের অংশগ্রহণে বিএনপি একযোগে আন্দোলন করছে।
তিনি বলেন, জনগণের আশা-আকাঙ্ক্ষার প্রতিফলন ঘটাতে বিএনপিসহ ৬৩টি রাজনৈতিক দল নির্বাচন বর্জন করেছে।
১২ কোটি ভোটারের ভোটাধিকার পুনরুদ্ধারের মাধ্যমে নির্বাচনকালীন নিরপেক্ষ ও নির্দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবিতে আমাদের শান্তিপূর্ণ ও ঐক্যবদ্ধ আন্দোলন অব্যাহত থাকবে এবং আরও জোরদার হবে।
আরও পড়ুন: ৭ জানুয়ারির নির্বাচনের ফলাফল নির্ধারণ করছে সরকার: ড. মঈন খান
৭ জানুয়ারির নির্বাচনের ফলাফল নির্ধারণ করছে সরকার: ড. মঈন খান
বিএনপির সিনিয়র নেতা ড. আবদুল মঈন খান বলেছেন, ভোটের আগে আসন বণ্টনের মাধ্যমে সরকার ৭ জানুয়ারির নির্বাচনের ফলাফল নির্ধারণ করছে।
তিনি বলেন, ‘জানুয়ারিতে নির্ধারিত নির্বাচনটি কোনো নির্বাচনই হতে পারে না। কারণ খোলাখুলিভাবে ভোট ও আসন ভাগাভাগি চলছে। এই নির্বাচনের ফলাফল ঢাকায় (সরকার দ্বারা) নির্ধারণ করা হচ্ছে। এখন যা হচ্ছে তা নির্বাচন না, সুবিধাভোগীদের মধ্যে সুবিধা বিতরণের মতো কিছু একটা।’
বৃহস্পতিবার (১৪ ডিসেম্বর) রাজধানীর মিরপুরে শহীদ বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এসব কথা বলেন।
এসময় আবদুল মঈন খান বলেন, সরকার আসন বণ্টনের এমন নির্বাচন করে জাতির ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করছে।
তিনি বলেন, নির্বাচন কমিশন (ইসি) এখন রাজধানীতে সরকারের ঠিক করা ফলাফল ৭ জানুয়ারি ঘোষণা করবে।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির এই সদস্য আরও বলেন, ‘তাই বাংলাদেশের ১৮ কোটি মানুষের কাছে আজ স্পষ্ট হয়ে গেছে যে ৭ জানুয়ারি কোনো নির্বাচন হবে না।’
আরও পড়ুন: ক্ষমতাসীন দলের এমপি-মন্ত্রীদের হাতে আলাদিনের বাতি আছে: রিজভী
শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস উপলক্ষে মিরপুরে শহীদ বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধে ফুল দিয়ে বুদ্ধিজীবীদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করেন ড. আবদুল মঈন খানসহ দলের কয়েকজন জ্যেষ্ঠ নেতা।
এসময় ড. মঈন বলেন, ‘বুদ্ধিজীবীদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে আমরা সরকারের কাছে সংঘাতের পথ ত্যাগ করার আহ্বান জানাই। এদেশের মানুষ শান্তি ভালোবাসে এবং তারা শান্তিতে থাকতে চায়... শান্তিপূর্ণভাবে রাজনৈতিক অচলাবস্থার অবসান ঘটাতে সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য পদত্যাগ করুন।’
তিনি বলেন, বিএনপি দীর্ঘদিন ধরে রাজপথে আছে এবং জনগণের ভোটের অধিকার ফিরিয়ে না দেওয়া পর্যন্ত থাকবে।
দেশ স্বাধীনের ৫০ বছরের বেশি সময় পার হলেও আওয়ামী লীগ শাসনামলে একদলীয় শাসন প্রতিষ্ঠিত হওয়ায় জনগণের বাকস্বাধীনতা, ভোটাধিকার ও গণতান্ত্রিক অধিকার নেই বলে দুঃখ প্রকাশ করেন বিএনপি নেতা।
তিনি বলেন, ‘মানুষ (বিএনপির) এখন নিজেদের ঘরে থাকতে পারে না, ভিন্নমত প্রকাশ করতে পারে না। সবাইকে এখন বাকশালের (একদলীয় সরকার) পক্ষে কথা বলতে হবে।’
এই বিএনপি নেতা বলেন, যারা একদলীয় সরকারের বিরুদ্ধে আওয়াজ তোলে, তারা গুম, রাজনৈতিক হত্যা এবং দমন-নিপীড়নের শিকার হচ্ছে।
আরও পড়ুন: বিএনপি নেতা-কর্মীদের ‘পক্ষপাতদুষ্ট’ বিচারকের মাধ্যমে শাস্তি দিচ্ছে সরকার: রিজভী
তিনি বলেন, সরকার বুলেট, টিয়ারগ্যাস ও সাউন্ড গ্রেনেড দিয়ে জনগণকে আটকানোর চেষ্টা করতে পারে। কিন্তু গত দেড় বছর ধরে বিএনপি যেভাবে একদলীয় সরকারের বিরুদ্ধে গণতান্ত্রিক ও শান্তিপূর্ণভাবে প্রতিবাদ জানাচ্ছে, তা তারা অব্যাহত রাখবে।
ড. মঈন বলেন, ‘আমরা চাই বাংলাদেশে এই রাজনৈতিক সংঘাত শান্তিপূর্ণভাবে শেষ হোক। সরকার দাবি করে তারা ব্যাপক উন্নয়ন করেছে, তাহলে তারা অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন করতে ভয় পাচ্ছে কেন?’
এসময় তিনি সরকারের প্রতি বিধিনিষেধ ও দমন-পীড়নের পথ ছেড়ে জনগণের মুখোমুখি হওয়ার আহ্বান জানান।
তিনি বলেন, ‘সব মৌলিক অধিকার ফিরিয়ে আনুন এবং একটি সুষ্ঠু ও বিশ্বাসযোগ্য নির্বাচন করুন। সুষ্ঠু নির্বাচনে জয়ী হলে আমিই সবার আগে আপনাদের অভিনন্দন জানাব। কিন্তু বাস্তবতা হলো, আপনারা দেশের জনগণকে এবং সুষ্ঠু নির্বাচনকে ভয় পান।’
আরও পড়ুন: বিএনপি নেতা-কর্মীরা কারাগারে নির্যাতনের শিকার হচ্ছেন: রিজভী
অবশেষে চিকিৎসার জন্য ভারতে গেলেন বিএনপি নেতা হাফিজ উদ্দিন
বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান মেজর (অবসরপ্রাপ্ত) হাফিজ উদ্দিন আহমেদ চিকিৎসার জন্য ভারতে গেছেন।
বৃহস্পতিবার (১৪ ডিসেম্বর) বিএনপির মিডিয়া সেলের সদস্য শায়রুল কবির খান এই তথ্য জানান।
তিনি বলেন, দুপুর আড়াইটার দিকে এয়ার ইন্ডিয়ার একটি ফ্লাইটে তিনি হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর ত্যাগ করেছেন।
শনিবার দিল্লির ফোর্টিস হাসপাতালে বিএনপি নেতার হাঁটুর অস্ত্রোপচার হওয়ার কথা রয়েছে বলেও জানান শায়রুল কবির।
হাফিজ ও তার স্ত্রী দিলারা হাফিজের গত মঙ্গলবার দিল্লি যাওয়ার কথা ছিল। হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের ইমিগ্রেশন কর্তৃপক্ষ হাফিজকে ভারতে যেতে বাধা দিলেও তার স্ত্রীকে সেখানে যাওয়ার অনুমতি দেওয়া হয়।
আরও পড়ুন: ক্ষমতাসীন দলের এমপি-মন্ত্রীদের হাতে আলাদিনের বাতি আছে: রিজভী
হাফিজ উদ্দিনের বিদেশ যাত্রায় বাধা দেওয়ার বিরুদ্ধে বুধবার (১৩ নভেম্বর) হাইকোর্টে রিট দায়ের করা হয়। এদিকে আজ তিনি দিল্লি গেছেন।
তফসিল ঘোষণার আগে তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ সাংবাদিকদের বলেছিলেন, হাফিজ উদ্দিনসহ অনেক নেতা বিএনপি ছেড়ে নতুন দলে যোগ দেবেন।
পরে গত ৮ নভেম্বর বনানীর বাসায় এক সংবাদ সম্মেলনে হাফিজ উদ্দিন বলেন, তিনি শিগগিরই রাজনীতি থেকে অবসর নেবেন এবং বিএনপিকে বিভক্ত করে নতুন দল গঠনের জল্পনা উড়িয়ে দেন।
তিনি সংবাদ সম্মেলনে বলেন, 'আমি শারীরিকভাবে সক্রিয় রাজনীতিতে অংশ নিতে পারি না। আমি শিগগিরই অবসর নেব... এখন আমার অগ্রাধিকার আমার স্বাস্থ্য। এটা সত্য নয় যে আমি একটি নতুন রাজনৈতিক দল গঠন করব। আমি এই মুহূর্তে রাজনীতিতে সক্রিয় নই। বিএনপি নির্বাচনে অংশ নিলে আমি অংশ নেব। আমি এখনো বিএনপির সঙ্গে আছি এবং দলের সঙ্গেই থাকব।’
আরও পড়ুন: শহীদ বুদ্ধিজীবীদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন বিএনপির
শহীদ বুদ্ধিজীবীদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন বিএনপির
শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস উপলক্ষে বৃহস্পতিবার (১৪ ডিসেম্বর) রাজধানীর মিরপুরে শহীদ বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধে ফুল দিয়ে শহীদ বুদ্ধিজীবীদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়েছে বিএনপি।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আবদুল মঈন খানসহ দলের কয়েকজন জ্যেষ্ঠ নেতা শহীদদের সমাধিতে ফুল দেন এবং দেশের জন্য প্রাণ দেওয়া মহান জাতীয় বীরদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে কিছুক্ষণ নীরবতা পালন করেন।
এ সময় বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেন, যুগ্ম মহাসচিব মাহবুবউদ্দিন খোকন, কেন্দ্রীয় নেতা আব্দুল হাই সিকদার, মোস্তাফিজুর রহমান বাবুল, তাইফুল ইসলাম টিপু, রফিক শিকদার, আবেদ রেজা, কাদের গণি চৌধুরী প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
এ উপলক্ষে সকালে বিএনপি জাতীয় পতাকা অর্ধনমিত রাখে এবং সব কার্যালয়ে কালো পতাকা উত্তোলন করে।
তবে বিএনপির নয়াপল্টন কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের কলাপসিবল গেট এখনও বাইরে থেকে তালাবদ্ধ থাকায় দলের নেতা-কর্মীদের দলীয় কার্যালয়ে আসতে দেখা যায়নি।
২৮ অক্টোবরের জনসভাকে কেন্দ্র করে ঘটা সহিংসতার জেরে বিএনপির কার্যালয় বন্ধ করে দেওয়া হয়।
এদিকে, দিবসটি উপলক্ষে জাতীয় প্রেস ক্লাবে এক আলোচনা সভার আয়োজন করে বিএনপিপন্থী পেশাজীবীদের সংগঠন বাংলাদেশ স্মৃতি পেশাজীবী পরিষদ।
শিক্ষাবিদ, সাংবাদিক, অন্যান্য পেশাজীবী ও বিএনপি নেতা-কর্মীদের অংশগ্রহণে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আবদুল মঈন খান।
১৯৭১ সালের ১৪ ডিসেম্বর রাতে ঢাকায় শিক্ষাবিদ, সাংবাদিক, সাহিত্যিক, লেখক, চিকিৎসক, বিজ্ঞানী, আইনজীবী, শিল্পী, দার্শনিক ও রাজনৈতিক চিন্তাবিদসহ দুই শতাধিক বুদ্ধিজীবীকে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী তাদের স্থানীয় সহযোগীদের সহায়তায় ঢাকায় তুলে নিয়ে যায়।
ক্ষমতাসীন দলের এমপি-মন্ত্রীদের হাতে আলাদিনের বাতি আছে: রিজভী
নির্বাচন কমিশনে জমা দেওয়া হলফনামায় ক্ষমতাসীন দলের অনেক প্রার্থীর সম্পদের যে ঘোষণা দেখানো হয়েছে তা আলাদিনের প্রদীপের গল্পের মতো বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী।
তিনি বলেন, দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) এসব আর্থিক বিবরণী সম্পর্কে সম্পূর্ণ নীরব, কারণ এটি কেবল বিরোধী দলের নেতা ও ভিন্নমতাবলম্বীদের নিপীড়ন ও হয়রানির হাতিয়ারে পরিণত হয়েছে।
বুধবার(১৩ ডিসেম্বর) এক ভার্চুয়াল প্রেস ব্রিফিংয়ে তিনি এসব কথা বলেন।
আরও পড়ুন: বিএনপি নেতা-কর্মীদের ‘পক্ষপাতদুষ্ট’ বিচারকের মাধ্যমে শাস্তি দিচ্ছে সরকার: রিজভী
বিএনপির এই নেতা আরও বলেন, ‘আসন্ন একদলীয় ও নাটকীয় নির্বাচনে তাদের (আওয়ামী লীগের) মন্ত্রী, সংসদ সদস্য, ডামি ও সুবিধাভোগী ও স্বতন্ত্র প্রার্থীদের হলফনামা আরবি রূপকথার বিখ্যাত আলাদিনের চেরাগের কথা মনে করিয়ে দেয়।’
তিনি আরও বলেন, ক্ষমতাসীন দলের অনেক প্রার্থী তাদের হলফনামায় বিদেশের উঁচু এলাকায় বাড়ি, গাড়ি, অ্যাপার্টমেন্ট দেখিয়েছেন এবং ডুপ্লেক্স সহ আরও অনেক কিছু তাদের হলফনামায় প্রমাণিত হয়েছে যে তারা স্বর্গে বাস করছেন।
রিজভী বলেন, ‘ভোট ডাকাতির মন্ত্রী এমপিরা এবং ক্ষমতাসীন দলের নেতারা গত ১৫ বছরে বিপুল সম্পদ ও নগদ অর্থ সংগ্রহ করেছেন।’
তিনি আরও বলেন, ‘তাদের স্ত্রী, সন্তান ও শ্বশুরবাড়ির লোকজনও অস্বাভাবিক ধনী হয়েছে।’
রিজভী বলেন, সাধারণ ব্যবসায়ীরা ক্ষতির সম্মুখীন হলেও আওয়ামী ‘ফ্যাসিবাদী’ রাজনীতিবিদদের কোনো ক্ষতি নেই।
বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘আওয়ামী রাজনীতি এমন একটি ব্যবসায় পরিণত হয়েছে যেখানে কোনো ঝুঁকি নেই, লোকসানের ঝুঁকি নেই। তারা যে ব্যবসাই করুক না কেন, তারা শুধু মুনাফা অর্জন করে। তাদের কেউই শেয়ার ব্যবসায় লোকসানের সম্মুখীন হননি। কৃষি ও মাছের ব্যবসায়ও তারা অনেক বার লাভবান হয়েছে। স্ত্রীরাও কোটি কোটি টাকা ও সম্পদ উপার্জন করে স্বামীর ব্যবসা রক্ষণাবেক্ষণ করেছেন।’
রিজভী আরও বলেন, ‘ক্ষমতাসীন দলের নেতারা আওয়ামী লীগের ম্যাজিক স্টিকের ছোঁয়ায় সম্পদের পাহাড় ও গাড়ির বহর গড়ে তুলেছেন। ১০ বছর আগে যেসব মন্ত্রীর বার্ষিক আয় এক লাখের নিচে ছিল, তারা এখন কোটি কোটি টাকার মালিক।’
তিনি আরও বলেন, ‘ক্ষমতাসীন দলের নেতারা আসন্ন জাতীয় নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার জন্য নির্বাচন কমিশনে জমা দেওয়া হলফনামায় এখনও তাদের মূল সম্পদের খুব কম সম্পদ দেখিয়েছেন। তারা তাদের হলফনামায় অবৈধভাবে অর্জিত অর্থ, বিদেশে সেকেন্ড হোম এবং বিদেশে পাচার করা অর্থের কথা উল্লেখ করেননি।’
বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘যারা আওয়ামী লীগের রাজনীতি করে তাদের লক্ষ্য লুটপাটের মাধ্যমে অবৈধ সম্পদের পাহাড় গড়ে তোলা। হলফনামায় লুটেরাদের সামান্য সম্পদই বেরিয়ে এসেছে। সংসদ সদস্য, মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী ও স্বতন্ত্র প্রার্থীরাও তাদের সম্পদের অনেক তথ্য গোপন করেছেন।’
তিনি বলেন, ‘ক্ষমতাসীন দলের নেতাদের অবৈধভাবে অর্জিত সম্পদের বিষয়ে দুদক নীরব, কারণ তারা প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে কাজ করে। আওয়ামী লুটেরাদের সম্পদ দেখে তারা অন্ধ হয়ে যায়।’
বিএনপির এই নেতা আরও বলেন, ‘দুদককে একটি দলীয় প্রতিষ্ঠানে পরিণত করা হয়েছে কারণ এর বর্তমান কাজ হচ্ছে বিএনপি নেতা ও ভিন্নমতাবলম্বীদের খুঁজে বের করা।’
তিনি দাবি করেন, বুধবার বিকাল ৫টা পর্যন্ত গত ২৪ ঘণ্টায় ৩৪০ জনের বেশি নেতা-কর্মীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
আরও পড়ুন: বিএনপি নেতা-কর্মীরা কারাগারে নির্যাতনের শিকার হচ্ছেন: রিজভী
বিএনপি নেতা রিজভীর সমাবেশ থেকে গাড়িতে ইটপাটকেল নিক্ষেপ পিকেটারদের
গাজীপুরে রেললাইন কাটাকে নাশকতা বলে তদন্তের দাবি বিএনপির
গাজীপুরে রেললাইন কাটার ঘটনাকে নাশকতা আখ্যায়িত করে দোষীদের খুঁজে বের করতে বিচার বিভাগীয় তদন্তের দাবি জানিয়েছে বিএনপি।
এক বিবৃতিতে বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী আশঙ্কা প্রকাশ করে বলেন, বিরোধী দলের উপর দোষ চাপানোর জন্য পরিকল্পিতভাবে এ ঘটনা ঘটানো হয়েছে।
আরও পড়ুন: বিএনপি ও সমমনা বিরোধী দলের ডাকা ১১ দফায় অবরোধ চলছে
তিনি বলেন, ভাওয়াল রেলস্টেশনের কাছে একটি ট্রেনের সাতটি বগি লাইনচ্যুত হওয়ার ঘটনা নিঃসন্দেহে একটি নাশকতার ঘটনা। আমি এই ঘটনার নিন্দা জানাই।
বিএনপির এই নেতা আরও বলেন, যারা এ ধরনের অমানবিক ঘটনা ঘটিয়েছে তারা মানবতার শত্রু।
আমরা এ ঘটনার নিরপেক্ষ বিচার বিভাগীয় তদন্ত দাবি করছি। বিএনপির পক্ষ থেকে ট্রেন লাইনচ্যুতের ঘটনায় জড়িতদের অবিলম্বে গ্রেপ্তার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানাচ্ছি।
তিনি দুর্ঘটনায় নিহতদের বিদেহী আত্মার মাগফিরাত কামনা করেন এবং আহতদের দ্রুত আরোগ্য কামনা করেন।
বিবৃতিতে রিজভী বলেন, কিছু গণমাধ্যম ট্রেন দুর্ঘটনার দায় বিরোধী দলগুলোর ঘাড়ে চাপানোর চেষ্টা করছে।
তিনি বলেন, ‘এটা গভীর ষড়যন্ত্র। এটা প্রমাণ করে এবং মানুষ বিশ্বাস করে যে এই ধরনের নাশকতা পরিকল্পিতভাবে সংঘটিত হয়েছে।’
তিনি দাবি করেন, ট্রেন দুর্ঘটনা নিয়ে বিরোধী দলগুলোর চলমান গণতান্ত্রিক আন্দোলনের বিরুদ্ধে কিছু গণমাধ্যম অপপ্রচার চালাচ্ছে এবং অন্যের পাপের শাস্তি দিতে বিরোধী দলের ঘাড়ে চাপাচ্ছে।
বিএনপি ও অন্যান্য বিরোধী দলের ৩৬ ঘণ্টার রেল, সড়ক ও নৌপথ অবরোধের শেষ দিন বুধবার ভোরে গাজীপুর রেলস্টেশনের কাছে বাঁখারিয়ায় ট্রেনের সাতটি বগি লাইনচ্যুত হয়ে একজন নিহত ও পাঁচজন আহত হয়েছেন।
জয়দেবপুর রেলওয়ে স্টেশন মাস্টার হানিফ আলী জানান, ভোর সাড়ে ৪টার দিকে ময়মনসিংহ থেকে ঢাকাগামী মোহনগঞ্জ এক্সপ্রেসের সাতটি বগি লাইনচ্যুত হয়।
স্থানীয় পুলিশ কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, এটি দুর্ঘটনা নাকি নাশকতার ঘটনা তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
আরও পড়ুন: বিএনপি নেতা-কর্মীদের ‘পক্ষপাতদুষ্ট’ বিচারকের মাধ্যমে শাস্তি দিচ্ছে সরকার: রিজভী
বিএনপি আন্ডারগ্রাউন্ড সংগঠনে রূপান্তরিত হয়েছে: তথ্যমন্ত্রী
বিএনপি নেতা-কর্মীদের ‘পক্ষপাতদুষ্ট’ বিচারকের মাধ্যমে শাস্তি দিচ্ছে সরকার: রিজভী
বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, বিএনপিকে নির্মূল করার জন্য সরকার ‘পক্ষপাতদুষ্ট’ বিচারকদের মাধ্যমে তড়িঘড়ি করে বিরোধী দলীয় নেতা-কর্মীদের সাজা দিচ্ছে।
রাজধানীর বাংলামোটর এলাকায় আকস্মিক সমাবেশে তিনি হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেন, বিএনপি নেতা-কর্মীদের কারারুদ্ধ করে সরকার ক্ষমতায় টিকে থাকতে পারবে না।
আরও পড়ুন: বিএনপি নেতা রিজভীর সমাবেশ থেকে গাড়িতে ইটপাটকেল নিক্ষেপ পিকেটারদের
তিনি আরও বলেন, বিএনপি নেতৃত্বকে নিশ্চিহ্ন
করতে সরকার ক্যাঙ্গারু কোর্ট স্থাপন করেছে। সেখানে দিন-রাত চলছে কাল্পনিক মামলার বিচার। পুলিশ কাল্পনিক মামলা দায়ের করছে এবং তারা সাক্ষ্যও দিচ্ছে।
তিনি বলেন, কিছু ‘পক্ষপাতদুষ্ট’ বিচারক আইন উপেক্ষা করে প্রহসনমূলক বিচারের নামে বিএনপি ও বিরোধী দলের নেতাদের বিরুদ্ধে একের পর এক রায় দিচ্ছেন। আমরা বলতে চাই, এই অবৈধ ও ফ্যাসিবাদী সরকারের নির্দেশিত রায় ও সাজা দিয়ে টিকে থাকতে পারবে না।
রিজভী বলেন, বিভিন্ন ‘মিথ্যা’ মামলায় বিরোধী দলের নেতা-কর্মীদের গ্রেপ্তার করে নির্বাচনী মাঠ থেকে নির্মূল করা হয়েছে।
তিনি বলেন, ‘তারাই (ক্ষমতাসীন দল) শুধু মাঠে আছে। এক সময় রিটার্নিং কর্মকর্তারা ডামি ও স্বতন্ত্র প্রার্থীদের মনোনয়নপত্র বাতিল করেছে। এরপর আপিল করে বাতিল হওয়া সব মনোনয়নপত্র বৈধ করছে।’
তিনি অভিযোগ করেন- সরকার ও নির্বাচন কমিশন অনেক স্বতন্ত্র ও ডামি প্রার্থী দিয়ে নির্বাচনের নামে খেলা করছে।
তিনি বলেন, ‘এসব করে কোনো লাভ হবে না, কারণ জনগণ সরকারের সব নীল নকশা ধরে ফেলেছে। মানুষ জেগে উঠেছে এবং রাস্তায় নেমে এসেছে। দেশের জনগণ সরকারের আসন ভাগাভাগির নির্বাচন প্রতিহত করবে।’
বিরোধী দলের ৩৬ ঘণ্টার অবরোধের সমর্থনে সকাল ৭টার দিকে যুবদল ও ছাত্রদলের ২০-২৫ জন নেতা-কর্মীকে নিয়ে বাংলামোটর এলাকায় আকস্মিক মিছিল বের করেন রিজভী।
তারা অবরোধের পক্ষে এবং ৭ জানুয়ারির নির্বাচনের তফসিলের বিরুদ্ধে বিভিন্ন স্লোগান দেন।
রাজধানীর ধানমন্ডি, তেজগাঁও, মিরপুর, যাত্রাবাড়ী, কারওয়ান বাজার, বনানী, ঝিগাতলা, দৈনিক বাংলা, ফকিরাপুল, খিলগাঁও, আরামবাগ, মগবাজার, সেগুনবাগ, সেন্ট্রাল রোড, রামপুরাসহ বিভিন্ন এলাকায় বিএনপি ও এর সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মীরা আকস্মিক মিছিল বের করে।
নির্বাচন কমিশন (ইসি) ঘোষিত একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার প্রতিবাদে মঙ্গলবার সকাল ৬টা থেকে সারাদেশে ৩৬ ঘণ্টার সড়ক-রেল-নৌপথ অবরোধ করেছে বিএনপি ও সমমনা বিরোধী দলগুলো।
গত ৩১ অক্টোবর থেকে বিএনপি ও সমমনা বিরোধী দলগুলোর ডাকা এটি ছিল ১১তম অবরোধ।
আরও পড়ুন: বিএনপি নেতা-কর্মীরা কারাগারে নির্যাতনের শিকার হচ্ছেন: রিজভী
আগামী ১০ ডিসেম্বর মানববন্ধন করবে বিএনপি: রিজভী
বিএনপি ও সমমনা বিরোধী দলের ডাকা ১১ দফায় অবরোধ চলছে
বিএনপি ও সমমনা বিরোধী দলগুলোর ডাকা দেশব্যাপী আরেকটি সড়ক-রেল-নৌপথ অবরোধ চলছে।
নির্বাচন কমিশন (ইসি) ঘোষিত আগামী জাতীয় নির্বাচনের তফসিলের প্রতিবাদে ৩৬ ঘণ্টার এই অবরোধ কর্মসূচি পালিত হচ্ছে।
৩১ অক্টোবর থেকে বিএনপি ও সমমনা বিরোধী দলগুলোর ডাকা এটি ১১ দফায় অবরোধ কর্মসূচি। আজ মঙ্গলবার (১২ ডিসেম্বর) সকাল ৬টা থেকে শুরু হওয়া অবরোধ শেষ হবে বুধবার সন্ধ্যা ৬টায়।
উত্তেজনা ও অগ্নিসংযোগের আশঙ্কা সত্ত্বেও ঢাকার সড়কে গণপরিবহন ও যাত্রীদের উপস্থিতি অনেকটাই স্বাভাবিক দেখা গেছে।
আরও পড়ুন: মঙ্গলবার থেকে বিএনপির ৩৬ ঘণ্টার অবরোধ
এদিকে সোমবার রাতে রাজধানীর টিকাটুলি ও মোহাম্মদপুর এলাকায় দু’টি বাসে আগুন দিয়েছে দুর্বৃত্তরা।
মোহাম্মদপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) তোফাজ্জল হোসেন জানান, রাত সাড়ে ৮টার দিকে মিডলাইন পরিবহনের একটি বাসে আগুন দিয়ে পালানোর সময় ২ জনকে আটক করা হয়।
আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীগুলোর সদস্যদের সড়কে টহল দিতে দেখা গেছে এবং ঢাকার বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টে তাদের মোতায়েন করা হয়েছে।
গণমাধ্যমের যানবাহন, অ্যাম্বুলেন্স এবং অক্সিজেন সিলিন্ডার ও ওষুধ বহনকারী যানবাহন অবরোধের আওতা বহির্ভূত থাকবে।
আওয়ামী লীগ সরকারের পদত্যাগ ও নির্দলীয় সরকারের অধীনে আগামী নির্বাচন আয়োজনের দাবিতে বিএনপিসহ সমমনা বিরোধী দলগুলো অবরোধ কর্মসূচি পালন করে আসছে।
আরও পড়ুন: ৪৮ ঘণ্টার অবরোধ: র্যাবের ৪১৮ টহল দল মোতায়েন
২৮ অক্টোবর থেকে অবরোধ-হরতালে ২৬৭টি অগ্নিসংযোগের খবর পাওয়া গেছে: ফায়ার সার্ভিস
বিএনপি নেতা-কর্মীরা কারাগারে নির্যাতনের শিকার হচ্ছেন: রিজভী
বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেন, বিরোধী দলের সক্রিয় নেতা-কর্মীদের দমন করতে কারাগারের ভেতরে ও বাইরে নানাভাবে অমানবিক নির্যাতন করা হচ্ছে। কারাবন্দিদের ওপর অবর্ণনীয় ও নৃশংস নির্যাতন করা হচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন তিনি।
আরও পড়ুন: বিএনপি নেতা রিজভীর সমাবেশ থেকে গাড়িতে ইটপাটকেল নিক্ষেপ পিকেটারদের
ভার্চুয়াল প্রেস ব্রিফিংয়ে তিনি আরও বলেন, কারাবন্দি বিরোধী দলীয় নেতা-কর্মীদের চিকিৎসা থেকে বঞ্চিত করে হত্যা করা হচ্ছে। অসুস্থ বন্দিদের হাসপাতালে না পাঠিয়ে হাত-পায়ে শিকল দিয়ে কারাগারে রেখে দেওয়া হচ্ছে।
বিএনপির এ নেতা বলেন, বিএনপির কারাবন্দি নেতা-কর্মীদের দিন-রাত কারাগারে দমবন্ধ কক্ষে আটকে রাখা হচ্ছে।
তিনি বলেন, ‘তাদের অসুস্থতার দিকে ঠেলে দেওয়া হচ্ছে। অত্যন্ত নিম্নমানের খাবার দিয়ে মৃত্যুর দিকে ঠেলে দেওয়া হচ্ছে... বন্দিদের মৃত্যুর পর সরকার ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী দায় এড়াতে গল্প তৈরি করছে।’
রিজভী হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেন, কারা হেফাজতে মৃত্যুর দায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও কারা কর্মকর্তারা এড়াতে পারবেন না। প্রতিটি মৃত্যু ও হত্যার জন্য তাদের অবশ্যই বিচারের মুখোমুখি হতে হবে।
ব্রিটিশ সংবাদপত্র গার্ডিয়ানের সাম্প্রতিক ‘Full prison and false charges: Bangladesh opposition faces pre-election crackdown' শিরোনামে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদনের উদ্ধৃতি দিয়ে তিনি বলেন, সরকার কীভাবে বিএনপি নেতা-কর্মীদের ওপর জুলুম ও কারারুদ্ধ করছে।
বিএনপির এই নেতা বলেন, দেশের ৬৮টি কারাগারে ৪৩ হাজারেরও কম বন্দি রাখার সক্ষমতা থাকলেও বর্তমানে এসব কারাগারে প্রায় ৮৮ হাজার বন্দি রয়েছে।
তিনি বলেন, ‘অবৈধ দখলদার সরকার পুরো দেশকে নরকে পরিণত করেছে ক্ষমতা ধরে রাখার জন্য। বাড়ির বাইরে কোথাও মানুষের নিরাপত্তা নেই। দেশের মানুষ অজানা ভয়ের মধ্যে দিন কাটাচ্ছে।’
রিজভী বলেন, কারাগারগুলো মৃত্যু উপত্যকায় পরিণত হয়েছে এবং কারাগারগুলো হিটলারের গ্যাস চেম্বারের মতো শেখ হাসিনার গ্যাস চেম্বারে পরিণত হয়েছে।
তিনি বলেন, ‘দেশের ৬৮টি কারাগারের প্রতিটিই টর্চার সেলের মতো, যেখানে রাজনৈতিক বন্দিরা প্রতি মুহূর্তে মৃত্যুর ভয় পায়। সুস্থ নেতা-কর্মীদের মিথ্যা ও কাল্পনিক মামলায় নির্যাতন করে কারাগারে নিক্ষেপ করা হচ্ছে এবং লাশের মতো বের করে আনা হচ্ছে।’
গণমাধ্যমে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনের বরাত দিয়ে বিএনপি নেতা বলেন, এ বছর বিএনপি নেতা-কর্মীসহ প্রায় ১০০ জন কারাগারে মারা গেছেন।
দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থতার জন্য সরকারের সমালোচনা করে রিজভী বলেন, পেঁয়াজ, রসুন, মসুর ডাল ও চালের দাম নিয়ে দেশে নৈরাজ্য চলছে।
তিনি বলেন, সরকারি কর্তৃপক্ষের কোনো তদারকি না থাকায় ব্যবসায়ীরা সব নিয়ম-কানুন উপেক্ষা করে তাদের ইচ্ছানুযায়ী পণ্যের দাম নির্ধারণ করছেন। সরকারের যদি জনগণের ভোটের প্রয়োজন হতো, তাহলে তারা বাজারের নিয়ন্ত্রণ তার দলের ব্যবসায়ীদের হাতে ছেড়ে দিত না।
আরও পড়ুন: বিএনপি নেতারা কারাগারে চরম মানবাধিকার লঙ্ঘনের শিকার: রিজভী
আগামী ১০ ডিসেম্বর মানববন্ধন করবে বিএনপি: রিজভী