১৮ ডিসেম্বর থেকে ৭ জানুয়ারির মধ্যে রাজনৈতিক সমাবেশ নিষিদ্ধ করতে অনুরোধ জানিয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে নির্বাচন কমিশনের চিঠি পাঠানোর সিদ্ধান্ত 'নজিরবিহীন ও গণবিরোধী বলে অভিহিত করেছেন বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী।
চিঠির নিন্দা জানিয়ে রিজভী বলেন, 'আওয়ামী লীগের অধীনস্থ ও বিতর্কিত রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানে পরিণত হওয়া নির্বাচন কমিশন সম্প্রতি নজিরবিহীন ও গণবিরোধী সিদ্ধান্ত নিয়েছে।’
আগামী ১৮ ডিসেম্বর থেকে নির্বাচনের দিন পর্যন্ত নির্বাচনী প্রচারণা ব্যতীত অন্য কোনো রাজনৈতিক কর্মসূচি বা সমাবেশের অনুমতি না দিতে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে অনুরোধ করেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)।
মঙ্গলবার (১২ ডিসেম্বর) স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের সচিবের কাছে পাঠানো এক চিঠিতে এ অনুরোধ জানানো হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (১৪ ডিসেম্বর) এর প্রতিক্রিয়ায় রিজভীর সই করা এক বিবৃতিতে এ কথা জানায় বিএনপি।
বিএনপির এই নেতা বলেন, পক্ষপাতদুষ্ট ও অযোগ্য নির্বাচন কমিশন আসন ভাগাভাগির মাধ্যমে ২০২৪ সালের ৭ জানুয়ারি ‘ডামি’ নির্বাচন আয়োজনের গণবিরোধী সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
রিজভী বলেন, নির্বাচন কমিশনের প্রতি কেন ব্যাপক অবিশ্বাস রয়েছে এবং কেন লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড তৈরি করা বা এর অধীনে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন করা সম্ভব হচ্ছে না, তা এখন স্পষ্ট হয়েছে।
আরও পড়ুন: শহীদ বুদ্ধিজীবীদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন বিএনপির
বিবৃতিতে তিনি বলেন, জনগণের মুক্ত ও স্বাধীনতার আকাঙ্ক্ষাকে দমন করার জন্য দুঃশাসন, দুর্নীতি ও নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্যের অসহনীয় মূল্যবৃদ্ধির মধ্যে গণতন্ত্রপন্থী সকল শক্তি এই অন্যায্য পদক্ষেপের নিন্দা জানাচ্ছে।
এর আগে মেরুদণ্ডহীন নির্বাচন কমিশন ফ্যাসিবাদী সরকারের নির্দেশনা মেনে রাজনৈতিক দলগুলোকে নিবন্ধন ও ভুয়া সংগঠনগুলোকে নির্বাচন পর্যবেক্ষক হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে।
রিজভী বলেন, 'তথাকথিত' রাজনৈতিক দল তৈরি করে এবং দেশি-বিদেশি নির্বাচন পর্যবেক্ষক নিয়োগ দিয়ে আওয়ামী লীগ ও নির্বাচন কমিশনের প্রতারণার চেষ্টা জাতির সামনে উন্মোচিত হয়েছে।
এর আগে মেরুদণ্ডহীন নির্বাচন কমিশন ফ্যাসিবাদী সরকারের নির্দেশনা মেনে রাজনৈতিক দলগুলোর নিবন্ধন ও ভুয়া সংগঠনগুলোকে নির্বাচন পর্যবেক্ষক হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে বলেও অভিযোগ করেন রিজভী।
আরও পড়ুন: অবশেষে চিকিৎসার জন্য ভারতে গেলেন বিএনপি নেতা হাফিজ উদ্দিন
বিএনপির চলমান 'শান্তিপূর্ণ ও অহিংস' আন্দোলনকে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের সংগ্রাম আখ্যায়িত করে রিজভী কমিশনের সিদ্ধান্ত প্রত্যাহারের আহ্বান জানান।
তিনি বলেন,‘রাজনৈতিক কর্মসূচি বন্ধের নতুন প্রচেষ্টায় আমরা উদ্বেগ ও নিন্দা জানাচ্ছি। গণতান্ত্রিক মত প্রকাশের অধিকার খর্ব করার এই অশুভ উদ্যোগ বাংলাদেশে চলমান রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক ও কূটনৈতিক সংকটকে আরও তীব্র করে তুলবে।’
নির্বাচনে অংশগ্রহণ থেকে বিরত থাকা যেকোনো ব্যক্তি বা দলের গণতান্ত্রিক অধিকার হলেও বিএনপি নির্বাচনে অংশগ্রহণের বিরোধী নয়।
তিনি আরও বলেন, ‘আমরা বিশ্বাস করি, অবাধ, সুষ্ঠু, অংশগ্রহণমূলক ও বিশ্বাসযোগ্য নির্বাচন হলে বিএনপির নিরঙ্কুশ বিজয় অনিবার্য।’
রিজভী বলেন, গণতন্ত্রকামী সব রাজনৈতিক দলের অংশগ্রহণে বিএনপি একযোগে আন্দোলন করছে।
তিনি বলেন, জনগণের আশা-আকাঙ্ক্ষার প্রতিফলন ঘটাতে বিএনপিসহ ৬৩টি রাজনৈতিক দল নির্বাচন বর্জন করেছে।
১২ কোটি ভোটারের ভোটাধিকার পুনরুদ্ধারের মাধ্যমে নির্বাচনকালীন নিরপেক্ষ ও নির্দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবিতে আমাদের শান্তিপূর্ণ ও ঐক্যবদ্ধ আন্দোলন অব্যাহত থাকবে এবং আরও জোরদার হবে।
আরও পড়ুন: ৭ জানুয়ারির নির্বাচনের ফলাফল নির্ধারণ করছে সরকার: ড. মঈন খান