প্রধানমন্ত্রীর-কার্যালয়
জলবায়ু পরিবর্তন থেকে বাংলাদেশকে রক্ষা করতে গাছ লাগান: শেখ হাসিনা
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জলবায়ু পরিবর্তনের বিরূপ প্রভাব থেকে বাংলাদেশকে রক্ষা করতে বৃক্ষরোপণের জন্য জনগণের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।
তিনি বলেন, ‘আমি সবাইকে পরিবেশ বাঁচানোর জন্য আহ্বান জানাতে চাই, কারণ বাংলাদেশে জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব মোকাবিলা করা আমাদের কর্তব্য।’
সোমবার (৫ জুন) বিশ্ব পরিবেশ দিবস ২০২৩ উপলক্ষে গণভবন প্রাঙ্গণে তিনটি চারা রোপনের পর তিনি এসব কথা বলেন।
অনুষ্ঠানে তিনি পরিবেশ মেলা-২০২৩, জাতীয় বৃক্ষরোপণ অভিযান এবং বৃক্ষমেলা- ২০২৩ -এরও উদ্বোধন করেন।
তিনি বলেন, ‘আজ যেহেতু বিশ্ব পরিবেশ দিবস, তাই গাছ লাগিয়েছি। আমি আশা করি বাংলাদেশের সকল (জনগণ) এটি অনুসরণ করবে (গাছ লাগানো)।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশকে আরও সুন্দর ও উন্নত করতে তারা ব্যাপক হারে বৃক্ষরোপণ কর্মসূচি বাস্তবায়ন করছে।
তিনি আরও বলেন, ‘আমি চাই জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে বাংলাদেশ যেন কোনো ক্ষতির সম্মুখীন না হয়। তাই, আমি সবাইকে গাছ লাগাতে বলি।’
বিশ্বব্যাপী পণ্যের মূল্যবৃদ্ধির মধ্যে ফল, শাকসবজি এবং অন্যান্য পণ্য উৎপাদনের জন্য প্রতিটি খালি জায়গায় গাছ লাগাতে এবং প্রতিটি অঞ্চলকে উৎপাদনের আওতায় আনতে তিনি জনগণের প্রতি আহ্বান জানান।
আরও পড়ুন: বিএনপি শাসনামলের বিচারহীনতা থেকে আ. লীগ দেশকে মুক্ত করেছে: প্রধানমন্ত্রী
বৈশ্বিক উচ্চ মূল্যস্ফীতির কারণে অনেক উন্নত দেশও লড়াই করছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, সরকার দেশের জনগণকে রক্ষা করার প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখবে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমি প্রত্যেক নাগরিককে তিনটি গাছ লাগাতে অনুরোধ করতে চাই এবং সম্ভব না হলে অন্তত একটি গাছ লাগান।’
তিনি শিক্ষার্থীদের স্কুল, কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাঙ্গণে গাছ লাগাতে বলেন।
শেখ হাসিনা বলেন, তার দল-বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ ১৯৮৪ সালে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে এবং ১৯৮৫ সালে বৃক্ষরোপণ কর্মসূচি শুরু করে। বাংলাদেশ কৃষক লীগও এই কর্মসূচি বাস্তবায়ন করেছে।
তিনি বলেন, আ.লীগের প্রতিটি নেতাকর্মীকে অন্তত তিনটি কাঠ, ফল ও ভেষজ গাছ লাগানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
আরও পড়ুন: অস্থির বৈশ্বিক পরিস্থিতি আরও খারাপ হতে পারে: প্রধানমন্ত্রী
আওয়ামী লীগ সভানেত্রী বলেন, তার দল বিগত বছরের মতো এবারও আষাঢ় মাসের প্রথম দিনে বৃক্ষরোপণ অভিযান শুরু করবে।
অনুষ্ঠানে আইনমন্ত্রী আনিসুল হক, পরিবেশমন্ত্রী মো. শাহাব উদ্দিন, পরিবেশ উপমন্ত্রী হাবিবুন নাহার, পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি সাবের হোসেন চৌধুরী, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সচিব মোহাম্মদ সালাহউদ্দিন ও পরিবেশ সচিব ফারহিনা আহমেদ উপস্থিত ছিলেন।
বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্র সংলগ্ন শেরে বাংলা নগরে ৫ থেকে ১১ জুন পরিবেশ মেলা অনুষ্ঠিত হবে। মেলা প্রতিদিন সকাল ১০টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত দর্শনার্থীদের জন্য উন্মুক্ত থাকবে।
বৃক্ষমেলা ২০২৩ ঈদুল আজহার কারণে ৪ দিনের বিরতি রেখে ৫ জুন থেকে ২৬ জুন এবং ১ জুলাই থেকে ১২ জুলাই পর্যন্ত অনুষ্ঠিত হচ্ছে।
সারাবিশ্বে ‘প্লাস্টিক দূষণের সমাধান’- থিম নিয়ে বিশ্ব পরিবেশ দিবস ২০২৩ পালিত হচ্ছে।
আরও পড়ুন: হারানো গৌরব ফিরিয়ে আনতে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির উন্নয়নে একসঙ্গে কাজ করুন: প্রধানমন্ত্রী
বিএনপি শাসনামলের বিচারহীনতা থেকে আ. লীগ দেশকে মুক্ত করেছে: প্রধানমন্ত্রী
বিএনপির শাসনামলে যে বিচারহীনতার সংস্কৃতি ছিল তার অবসান ঘটিয়ে আওয়ামী লীগ সরকার দেশে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা করেছে বলে মন্তব্য করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
সোমবার বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির নবনির্বাচিত নেতারা তার সরকারি বাসভবন গণভবনে তার সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎকালে প্রধানমন্ত্রী এসব কথা বলেন।
তিনি সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির নবনির্বাচিত নেতৃবৃন্দকে অভিনন্দন জানান।
তিনি বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও তার পরিবারের সদস্যদের হত্যার পর ঘোষিত ইনডেমনিটি অধ্যাদেশের মাধ্যমে বিএনপি জোরপূর্বক গুম, হত্যা ও অনাচারের সংস্কৃতি চালু করেছিল।
বঙ্গবন্ধুর জ্যেষ্ঠ কন্যা শেখ হাসিনা বলেন, জাতির পিতাকে হত্যার পর বিচার চাওয়ার ও পাওয়ার অধিকার ছিল না। ‘এটি ছিল মানবাধিকারের চরম লঙ্ঘন। আজ আমরা ন্যায়বিচার না পাওয়ার ঘটনা থেকে দেশকে মুক্ত করতে পেরেছি। আওয়ামী লীগ সরকার সব সময় ন্যায়বিচারে বিশ্বাস করে।’
তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ সরকার জনগণের ন্যায়বিচার পাওয়ার ব্যবস্থা করেছে।
আরও পড়ুন: অস্থির বৈশ্বিক পরিস্থিতি আরও খারাপ হতে পারে: প্রধানমন্ত্রী
তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের সরকার বিচার ব্যবস্থাকে ডিজিটালাইজড করেছে, যাতে মানুষ ভোগান্তির সম্মুখীন না হয়ে স্বল্প সময়ে ন্যায়বিচার পেতে পারে।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, তার সরকার করোনা মহামারির সময় ভার্চুয়ালি এটা (বিচার কার্যক্রম) করেছে, যাতে মানুষ ঘরে বসে স্বল্প সময়ে ন্যায়বিচার পেতে পারে।
চলমান তাপপ্রবাহের মধ্যে বিদ্যুতের কারণে জনগণের দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, এ ব্যাপারে আমরা যথাসাধ্য চেষ্টা করছি এবং প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিচ্ছি।
শেখ হাসিনা বলেন, দেশে গত সাড়ে ১৪ বছর ধরে গণতন্ত্রের ধারাবাহিকতার কারণে বাংলাদেশ চিত্তাকর্ষক উন্নয়ন প্রত্যক্ষ করেছে।
তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ সরকারের নিবেদিতপ্রাণ প্রচেষ্টায় বাংলাদেশ উন্নয়নশীল দেশে উন্নীত হয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা বাংলাদেশকে একটি উন্নত ও সমৃদ্ধ দেশ হিসেবে গড়ে তুলতে কাজ করে যাচ্ছি।
বৈঠকে আইনমন্ত্রী আনিসুল হক এবং আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য ও সিনিয়র আইনজীবী ইউসুফ হোসেন হুমায়ুন উপস্থিত ছিলেন।
আরও পড়ুন: হারানো গৌরব ফিরিয়ে আনতে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির উন্নয়নে একসঙ্গে কাজ করুন: প্রধানমন্ত্রী
শান্তি বিঘ্নিত করতে অশুভ শক্তি উন্নত প্রযুক্তি ব্যবহার করছে: প্রধানমন্ত্রী
অস্থির বৈশ্বিক পরিস্থিতি আরও খারাপ হতে পারে: প্রধানমন্ত্রী
বর্তমান অস্থির বিশ্ব পরিস্থিতির আরও অবনতি হতে পারে বলে আশংকা করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
তিনি বলেন, ‘...পৃথিবীর এই অস্বাভাবিক পরিস্থিতি কতদিন চলবে তা কেউ বলতে পারে না। হয়তো পরিস্থিতি আরও খারাপ হবে।’
রবিবার সংসদে ক্ষমতাসীন দলের সংসদ সদস্য আফসারুল আমিনের প্রতি উত্থাপিত শোক প্রস্তাবে অংশ নিয়ে প্রধানমন্ত্রী এ কথা বলেন।
তিনি বলেন, খাদ্য ঘাটতি, মূল্যস্ফীতি, পরিচালন ও পরিবহন ব্যয় এবং বিদ্যুতের সংকট বিশ্বে সবার জীবনকে অসহনীয় করে তুলেছে।
সংসদ নেতা বলেন, সরকার প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী মানুষের ঘরে ঘরে বিদ্যুৎ পৌঁছে দিয়েছে।
তিনি উল্লেখ করেন, বিশ্বব্যাপী জ্বালানি তেল, কয়লা বা গ্যাসের সংকট চলছে।
শেখ হাসিনা বলেন, ‘এখন কেনা খুব কঠিন। কেনা অসম্ভব হয়ে পড়েছে। তারপরও আমাদের প্রচেষ্টা অব্যাহত থাকবে।’
আরও পড়ুন: হারানো গৌরব ফিরিয়ে আনতে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির উন্নয়নে একসঙ্গে কাজ করুন: প্রধানমন্ত্রী
তিনি বলেন, সরকার কাতার ও ওমানের সঙ্গে জ্বালানি ক্রয়ের চুক্তি করেছে।
তিনি আরও বলেন, সরকার জলবিদ্যুৎ আমদানির ব্যবস্থাও নিয়েছে।
শেখ হাসিনা বলেন, ‘ইতোমধ্যে কয়লা কেনার পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। যাতে আমরা বিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলো পুনরায় চালু করতে পারি।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, দেশ আর্থ-সামাজিকভাবে এগিয়ে যাওয়ায় স্বাধীনতার সুফল জনগণের দ্বারে দ্বারে পৌঁছে যাচ্ছে।
তিনি উল্লেখ করেন, ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধ, নিষেধাজ্ঞা, পাল্টা নিষেধাজ্ঞা, বৈশ্বিক মূল্যস্ফীতি ও জ্বালানি তেলের সংকট যার জন্য শুধু বাংলাদেশ নয়, উন্নত দেশগুলোও হিমশিম খাচ্ছে।
শেখ হাসিনা বলেন, ইউরোপ-আমেরিকাসহ বিভিন্ন দেশে জ্বালানির ঘাটতি রয়েছে। আছে লোডশেডিং বা বিদ্যুতের সীমিত ব্যবহার। খাবার থেকে শুরু করে সব কিছুর দাম বেড়েছে। এমনকি উন্নত দেশগুলোতেও অনেক মানুষ তাদের চাকরি হারাচ্ছে।’
তিনি বলেন, বিশ্বব্যাপী একটি অস্বাভাবিক পরিস্থিতি বিরাজ করছে।
তিনি আরও বলেন,‘আমি জানি না আগে কখনো এমন হয়েছে কিনা। সম্ভবত প্রথম বিশ্বযুদ্ধ ও দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর দুর্ভিক্ষ হয়েছিল।’
শেখ হাসিনা বিদ্যুৎ ব্যবহারে মিতব্যয়ীতা বজায় রাখার আহ্বান পুনর্ব্যক্ত করেন।
আরও পড়ুন: শান্তি বিঘ্নিত করতে অশুভ শক্তি উন্নত প্রযুক্তি ব্যবহার করছে: প্রধানমন্ত্রী
এসময় তিনি বলেন, ‘আমাদেরও খাদ্য উৎপাদন বাড়াতে হবে। আমাদের চেষ্টা করতে হবে। পৃথিবীর এই অস্বাভাবিক পরিস্থিতি কতদিন চলবে তা কেউ বলতে পারছে না। তবে আমাদের দেশের জনগণের খাদ্য নিরাপত্তার জন্য আমরা খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য সবকিছু করছি।’
তিনি বলেন, করোনাভাইরাস মহামারির ফলে সারা বিশ্বে খাদ্য সংকট, মূল্যস্ফীতি, পরিচালন ও পরিবহন ব্যয়, বিদ্যুতের ঘাটতি এবং তারপর ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধ প্রতিটি মানুষের জীবনকে অসহনীয় করে তুলেছে।
তিনি আরও বলেন, আমরা বাংলাদেশে আমাদের সেরাটা করছি।
আফসারুল আমিনের কথা স্মরণ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, তিনি ছাত্রজীবন থেকেই ছাত্রলীগের সঙ্গে জড়িত।
প্রতিটি সংগ্রামে তিনি ভূমিকা রেখেছেন। তিনি একজন নিবেদিত প্রাণ ছিলেন। দলের প্রতি তার নিষ্ঠা ও সততা ছিল অতুলনীয়।
তিনি মন্ত্রী হিসেবেও দারুণ সাফল্য দেখিয়েছেন।
শোক প্রস্তাবে বক্তব্য রাখেন আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য তোফায়েল আহমেদ, ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী, শিক্ষা উপমন্ত্রী মুহিবুল হাসান চৌধুরী, ক্ষমতাসীন দলের সংসদ সদস্য ওয়াসেকা আয়েশা খান, মোতাহার হোসেন, নুরুল ইসলাম নাহিদ, মুজিবুল হক চুন্নু ও মসিউর রহমান রাঙ্গা।
পরে, হাউসে সর্বসম্মতভাবে ক্ষমতাসীন দলের সংসদ সদস্যের মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করে শোক প্রস্তাব গৃহীত হয়।
স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরী শোক প্রস্তাব উত্থাপন করেন।
এক মিনিট নীরবতা পালন ও মোনাজাত করা হয়।
আরও পড়ুন: রোহিঙ্গাদের মর্যাদাপূর্ণ প্রত্যাবাসনে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের দৃঢ় প্রতিশ্রুতি কামনা প্রধানমন্ত্রীর
ঢাকা-চিলাহাটি রুটে আন্তঃনগর ট্রেন 'চিলাহাটি এক্সপ্রেস' উদ্বোধন করলেন প্রধানমন্ত্রী
রাজধানীর সঙ্গে উত্তরাঞ্চলের যোগাযোগ জোরদার ও ব্যবসা সম্প্রসারণের লক্ষ্যে রবিবার ঢাকা-চিলাহাটি-ঢাকা রুটে 'চিলাহাটি এক্সপ্রেস' নামে একটি নতুন আন্তঃনগর ট্রেনের উদ্বোধন করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
প্রধানমন্ত্রী তার সরকারি বাসভবন গণভবন থেকে ভার্চুয়াল প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে চিলাহাটি রেলওয়ে স্টেশনে এক অনুষ্ঠানে যোগ দিয়ে চিলাহাটি এক্সপ্রেসের উদ্বোধন করেন।
৮০০ যাত্রী ধারণ ক্ষমতাসম্পন্ন চিলাহাটি এক্সপ্রেস সপ্তাহে ছয় দিন ঢাকা-চিলাহাটি-ঢাকা রুটে চলাচল করবে।
আরও পড়ুন: চিলাহাটি-মঙ্গলা রেল যোগাযোগ স্থাপিত হবে জুনে: রেলমন্ত্রী
বর্তমানে ঢাকা-চিলাহাটি রুটে মালবাহী ট্রেন ও আন্তঃসীমান্ত ট্রেন 'মিতালী এক্সপ্রেস' চলাচল করে।
নীলফামারীর চিলাহাটি থেকে অনুষ্ঠানে রেলমন্ত্রী মো. নূরুল ইসলাম সুজন, নীলফামারী-২ আসনের সংসদ সদস্য আসাদুজ্জামান নূরসহ স্থানীয় সংসদ সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।
মুখ্য সচিব তোফাজ্জল হোসেন মিয়া অনুষ্ঠানটি পরিচালনা করেন এবং গণভবন থেকে স্বাগত বক্তব্য দেন রেলওয়ে সচিব মুহাম্মদ হুমায়ুন কবীর।
আরও পড়ুন: ৫৬ বছর পর চালু হলো চিলাহাটি-হলদিবাড়ি রেল যোগাযোগ
মুক্তিযুদ্ধে ফারুকের ভূমিকা অবিস্মরণীয়: প্রধানমন্ত্রী
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, মুক্তিযুদ্ধে আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য ও প্রখ্যাত চলচ্চিত্র অভিনেতা আকবর হোসেন পাঠান, যিনি ফারুক নামে পরিচিত, তার ভূমিকা অবিস্মরণীয় কারণ তিনি প্রতিটি সংগ্রাম ও আন্দোলনে অসামান্য দৃঢ়তার সঙ্গে অবদান রেখেছিলেন।
সংসদে তিনি বলেন, ‘ফারুক একজন মুক্তিযোদ্ধা। আইয়ুব বিরোধী আন্দোলনের পর থেকেই তিনি ছাত্রলীগের একজন প্রাণবন্ত কর্মী ছিলেন। প্রতিটি সংগ্রাম ও আন্দোলনে তিনি অসামান্য সাহসিকতার সঙ্গে অবদান রেখেছিলেন। ছয় দফা আন্দোলন ও ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধে তার ভূমিকা কখনোই ভোলার নয়।’
বুধবার ফারুকের মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করতে সংসদে শোক প্রস্তাবের আলোচনায় যোগ দিয়ে প্রধানমন্ত্রী এ মন্তব্য করেন।
আরও পড়ুন: হারানো গৌরব ফিরিয়ে আনতে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির উন্নয়নে একসঙ্গে কাজ করুন: প্রধানমন্ত্রী
শেখ হাসিনা বলেন, ফারুক শুধু একজন রাজনীতিবিদই ছিলেন না, তিনি সাংস্কৃতিক অঙ্গনেও অবদান রেখেছিলেন। তার মৃত্যু আমাদের সাংস্কৃতিক ক্ষেত্রে অপূরণীয় ক্ষতি হয়েছে বলেন প্রধানমন্ত্রী।
তিনি বলেন, প্রতিটি আন্দোলন-সংগ্রামে সাংস্কৃতিক কর্মীরা আওয়ামী লীগের পক্ষ নিয়েছেন এবং নেতাকর্মীদের সাহস জুগিয়েছেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ১৯৭৫ সালের ঘটনার পর যখন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নাম মুছে ফেলা হচ্ছিল এবং কেউ তার নাম উচ্চারণ করার সাহস করেনি, তখন সংস্কৃতিকর্মীরা এগিয়ে আসেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘তিনি (ফারুক) বঙ্গবন্ধুর নামে একটি সাংস্কৃতিক সংগঠন গঠন এবং দেশাত্মবোধক গানকে সামনে নিয়ে এসে মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে উজ্জীবিত করতে ভূমিকা রেখেছিলেন। সুতরাং, তিনি এই দেশের জন্য একটি অবদান রেখেছেন।’
এর আগে, একাদশ জাতীয় সংসদের ২৩তম অধিবেশনের (বাজেট অধিবেশন) শুরুতে সংসদে শোক প্রস্তাব উত্থাপন করেন স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী।
এ নিয়ে আলোচনা শেষে বুধবার সর্বসম্মতিক্রমে শোক প্রস্তাব গৃহীত হয়।
আলোচনায় যোগ দেন- সংসদ উপনেতা মতিয়া চৌধুরী (শেরপুর-২), আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য আমির হোসেন আমু (ঝালোকাঠি-২), তোফায়েল আহমেদ (ভোলা-১), শেখ ফজলুল করিম সেলিম (গোপালগঞ্জ-২), আসাদুজ্জামান নূর (নীলফামারী-২), মেহের আফরোজ (গাজীপুর-৫) ও হাবিব হাসান (ঢাকা-১৮), বিরোধী দলীয় উপনেতা গোলাম মোহাম্মদ কাদের, জাতীয় পার্টির সংসদ সদস্য কাজী ফিরোজ রশীদ (ঢাকা-৬) ও আনিসুল ইসলাম মাহমুদ।
আকবর হোসেন পাঠান (ঢাকা-১৭), যিনি গত ১৫ মে সিঙ্গাপুরের একটি হাসপাতালে মারা যান।
এছাড়া সংসদ সাবেক প্রতিমন্ত্রী ও বিএনপির সংসদ সদস্য কবির হোসেন, গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ও মুক্তিযোদ্ধা ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী, ঐক্য ন্যাপের সভাপতি ও মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক পঙ্কজ ভট্টাচার্য, প্রখ্যাত লেখক ও ঔপন্যাসিক সমরেশ মজুমদার, সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা রোকিয়া আফজাল রহমান, শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনির মা রহিমা ওয়াদুদ ও বিশিষ্ট সঙ্গীতশিল্পী কল্যাণী কাজীর মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করেছে।
সাম্প্রতিক ঘূর্ণিঝড় মোখায় হতাহত এবং দেশ-বিদেশে দুর্ঘটনায় সংসদ গভীর শোক প্রকাশ করেছে।
এক মিনিট নীরবতা পালন ও মরহুমের বিদেহী আত্মার মাগফেরাত কামনা করে মোনাজাত করা হয়। মোনাজাত পরিচালনা করেন আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য হাফিজ রুহুল আমিন মাদানী (ময়মনসিংহ-৭)।
প্রথা অনুযায়ী, বর্তমান সংসদ সদস্য আকবর হোসেন পাঠানের মৃত্যুতে শোক প্রস্তাব গৃহীত হলে তার প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে সংসদের দিনের কার্যক্রম মুলতবি করা হয়।
আরও পড়ুন: আইসিটি, অর্থনৈতিক অঞ্চলে আরও সুইডেনের বিনিয়োগের আহ্বান প্রধানমন্ত্রীর
প্রধানমন্ত্রীকে হত্যার হুমকি: আরও ৩ দিনের রিমান্ডে বিএনপি নেতা চাঁদ
আইসিটি, অর্থনৈতিক অঞ্চলে আরও সুইডেনের বিনিয়োগের আহ্বান প্রধানমন্ত্রীর
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বাংলাদেশের বিভিন্ন খাতে বিশেষ করে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি (আইসিটি) এবং অর্থনৈতিক অঞ্চলে আরও সুইডিশ বিনিয়োগের আহ্বান জানিয়েছেন।
মঙ্গলবার বিশ্বখ্যাত পোশাক কোম্পানি এইচঅ্যান্ডএম-এর প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) ও প্রেসিডেন্ট হেলেনা হেলমারসনের নেতৃত্বে একটি সুইডিশ প্রতিনিধিদল গণভবনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে এলে তিনি এ আহ্বান জানান।
বাংলাদেশে নিযুক্ত সুইডেনের রাষ্ট্রদূত আলেকজান্দ্রা বার্গ ভন লিন্ডে এবং এইচঅ্যান্ডএম-এর চিফ ফাইন্যান্সিয়াল অফিসার অ্যাডাম কার্লসনও প্রতিনিধিদলে ছিলেন।
প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব ইহসানুল করিম সাক্ষাতের বিষয়ে সাংবাদিকদের জানান।
শেখ হাসিনা বলেন, দারিদ্র্য বিমোচন, খাদ্য নিরাপত্তা, স্বাস্থ্যসেবা এবং কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টিতে বাংলাদেশের নিজস্ব অর্থনৈতিক নীতি ও লক্ষ্যযুক্ত পরিকল্পনা রয়েছে।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশের সঙ্গে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক জোরদারে আগ্রহী কাতার: দেশটির প্রধানমন্ত্রী
তিনি উল্লেখ করেন, সরকার দেশের অর্থনীতিকে আরও শক্তিশালী করতে রপ্তানি ঝুড়ি সম্প্রসারণ করতে চায়।
সাক্ষাৎকালে হেলেনা হেলমারসন গত তিন দশক ধরে বাংলাদেশের সঙ্গে সুইডেনের বিশেষ সম্পর্কের কথা উল্লেখ করে বলেন, তারা বাংলাদেশের সঙ্গে ব্যবসা এগিয়ে নিতে চায়।
এইচঅ্যান্ডএম-এর সিইও ও প্রেসিডেন্ট বাংলাদেশের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নের ভূয়সী প্রশংসা করেন এবং দেশে কোভিড-১৯ মহামারি সফলভাবে মোকাবিলার জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকারের ভূয়সী প্রশংসা করেন।
জবাবে প্রধানমন্ত্রী সুইডিশ কোম্পানির প্রশংসা করেন, যেহেতু তারা মহামারির সময়েও তাদের অর্ডার বাতিল করেনি।
হেলেনা হেলমারসন জলবায়ু পরিবর্তন ইস্যুটিকে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হিসেবে উল্লেখ করে বলেন, তার সরকার নিজস্ব অর্থায়নে প্রশমন কর্মসূচি পরিচালনা করছে।
এ প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বলেন, তার সরকার জলবায়ু পরিবর্তন সম্পর্কে সচেতন এবং এ বিষয়ে কাজ করছে।
শেখ হাসিনা নারীর ক্ষমতায়ন ও লিঙ্গ সমতায় তার সরকারের অর্জনও তুলে ধরেন।
এ সময় প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ বিষয়ক উপদেষ্টা সালমান ফজলুর রহমান এবং প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব তোফাজ্জল হোসেন মিয়া উপস্থিত ছিলেন।
আরও পড়ুন: হারানো গৌরব ফিরিয়ে আনতে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির উন্নয়নে একসঙ্গে কাজ করুন: প্রধানমন্ত্রী
হারানো গৌরব ফিরিয়ে আনতে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির উন্নয়নে একসঙ্গে কাজ করুন: প্রধানমন্ত্রী
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মুসলিম সম্প্রদায়ের প্রতি তাদের মতভেদ দূরে সরিয়ে রেখে বিজ্ঞান, দর্শন, চিকিৎসা এবং জ্ঞানচর্চার অন্যান্য ক্ষেত্রে ইসলামি বিশ্বের গৌরবময় ঐতিহ্য ফিরিয়ে আনতে একসঙ্গে কাজ করার আহ্বান জানিয়েছেন।
তিনি বলেন, ‘আজ মুসলিমরা উল্লেখযোগ্য পরিমাণ সম্পদের অধিকারী। বিজ্ঞান ও আধুনিক প্রযুক্তির উন্নয়নে এই সম্পদ ব্যবহার করে আমরা আমাদের হারানো ঐতিহ্য ফিরিয়ে আনতে পারি। আমি এটা বিশ্বাস করি।’
আরও পড়ুন: শান্তিপূর্ণ গণতান্ত্রিক পরিবেশ বিরাজ করায় বাংলাদেশ উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি অর্জন করতে সক্ষম হয়েছে: প্রধানমন্ত্রী
মঙ্গলবার ইসলামিক ইউনিভার্সিটি অব টেকনোলজি (আইইউটি) এর ক্যাম্পাসে আয়োজিত ৩৫তম সমাবর্তন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন। এছাড়া অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন, আইইউটির চ্যান্সেলর এবং ওআইসি মহাসচিব হিসেন ব্রাহিম ত্বহা।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ইসলামের স্বর্ণযুগে মুসলিম পণ্ডিতরা বিজ্ঞান, ইতিহাস, সাহিত্য, দর্শন, রসায়ন, গণিত, চিকিৎসাবিদ্যা, জ্যোতির্বিদ্যা, ভূগোলসহ আরও অনেক শাখায় সাফল্যের শিখরে পৌঁছেছিলেন। এছাড়া সে যুগের মুসলিম পণ্ডিতরা সংস্কৃতি, জ্ঞান আহরণ, বৈজ্ঞানিক আবিষ্কার এবং সমসাময়িক সাহিত্যে বিশ্বে আধিপত্য বিস্তার করেছিলেন।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এক সময়ের গৌরবময় ঐতিহ্যের অধিকারী মুসলমানদের পতনের কারণ বিশ্লেষণের প্রয়োজনীয়তার ওপর গুরুত্বারোপ করে বলেন, অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্ব, মুসলিম দেশগুলোর মধ্যে পারস্পরিক শ্রদ্ধা ও সম্প্রীতির অভাব, জ্ঞান এবং বিজ্ঞানের অভাব।
তিনি আরও বলেন, অন্যান্য অনেক বিষয় মুসলিম উম্মাহর সম্মিলিত পতনের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। এই হারানো গৌরব পুনরুদ্ধার করতে, আমি মনে করি আমাদের মুসলিম উম্মাহকে মতভেদ ভুলে ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করতে হবে।
আরও পড়ুন: শান্তি বিঘ্নিত করতে অশুভ শক্তি উন্নত প্রযুক্তি ব্যবহার করছে: প্রধানমন্ত্রী
শেখ হাসিনা বলেন, বিজ্ঞান ও আধুনিক প্রযুক্তির বিকাশ ঘটাতে মুসলিম দেশগুলোকে বিশেষ করে মুসলিম দেশগুলোর শিক্ষার্থীদের শিক্ষা ও বিজ্ঞানে আরও বেশি বিনিয়োগ করতে হবে।
শেখ হাসিনা বলেন, আধুনিক যুগে মুসলিমরা মাত্র তিনটি নোবেল পুরস্কার পেয়েছেন। দুঃখজনক হলেও সত্য যে, এটাই এই আধুনিক যুগে গবেষণা, প্রযুক্তি ও উন্নয়নের ক্ষেত্রে মুসলিম উম্মাহর অবদানের প্রকৃত চিত্র।
তিনি বলেন, মুসলিম দেশগুলোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির ক্ষেত্রে আরও জোরালো প্রচেষ্টা দরকার, যাতে তারা আরও বেশি অবদান রাখতে পারে।
তিনি আরও বলেন, বিশেষ করে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা, রোবোটিক্স, ইন্টারনেট অব থিংস, কোয়ান্টাম কম্পিউটিং এবং অন্যান্য খাতে ৪র্থ শিল্প বিপ্লবের ফলে উদ্ভূত বিভিন্ন চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় মুসলিম সম্প্রদায়ের পিছিয়ে পড়া উচিত নয়।
আরও পড়ুন: রোহিঙ্গাদের মর্যাদাপূর্ণ প্রত্যাবাসনে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের দৃঢ় প্রতিশ্রুতি কামনা প্রধানমন্ত্রীর
শান্তি বিঘ্নিত করতে অশুভ শক্তি উন্নত প্রযুক্তি ব্যবহার করছে: প্রধানমন্ত্রী
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, অশুভ শক্তি উন্নত প্রযুক্তি ব্যবহার করায় বিশ্বে শান্তি বজায় রাখা অতীতের চেয়ে এখন কঠিন হয়ে পড়েছে।
তিনি বলেন, ‘প্রযুক্তির সাম্প্রতিক বিকাশ ও অগ্রগতির সঙ্গে সঙ্গে অশুভ শক্তির নতুন হুমকি বাড়ছে’।
সোমবার বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে (বিআইসিসি) আন্তর্জাতিক জাতিসংঘ শান্তিরক্ষী দিবস-২০২৩ উপলক্ষে এক অনুষ্ঠানে দেওয়া ভাষণে প্রধানমন্ত্রী এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, প্রযুক্তি মানুষকে আর্থ-সামাজিক উন্নয়নসহ সব ক্ষেত্রে সুযোগ দিচ্ছে।
তিনি বলেন, ‘...তবে আমরা এটাও দেখছি যে অপশক্তিও প্রযুক্তি ব্যবহার করে মানুষের মধ্যে বিভ্রান্তি সৃষ্টি করছে এবং মানুষের জীবনের শান্তি কেড়ে নিচ্ছে’।
তিনি বলেন, জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনে শান্তিরক্ষীদের জটিল বহুমাত্রিক পরিস্থিতি মোকাবিলা করতে হয়।
তিনি আরও বলেন, ‘অতএব উন্নত প্রযুক্তির সাহায্যে শান্তিরক্ষা মিশনকে সমৃদ্ধ করার প্রয়োজনীয়তা বহুগুণ বৃদ্ধি পেয়েছে’।
শেখ হাসিনা উল্লেখ করেন যে তার সরকার বিশ্বের সবচেয়ে চ্যালেঞ্জিং এবং বিপজ্জনক অঞ্চলে জটিল পরিস্থিতি মোকাবিলায় সর্বদা বাংলাদেশী শান্তিরক্ষীদের সর্বাধুনিক প্রশিক্ষণ দিয়ে প্রস্তুত করেছে।
তিনি বলেন, ‘আমরা মিশন এলাকার পরিবেশ, আবহাওয়া এবং ভূখণ্ডের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ পোশাক, অন্যান্য প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র এবং আধুনিক সামরিক সরঞ্জাম সরবরাহ নিশ্চিত করছি।’
এই প্রসঙ্গে, তিনি উল্লেখ করেন যে সরকার শান্তিরক্ষী যোগাযোগের জন্য বাংলাদেশ কন্টিনজেন্টে আধুনিক মাইন-প্রতিরোধী এবং অ্যামবুশ-সুরক্ষিত যানবাহন এবং অত্যাধুনিক প্রযুক্তি অন্তর্ভুক্ত করেছে।
তিনি আরও বলেন, ‘আধুনিক প্রযুক্তি এবং প্রশিক্ষণ অন্তর্ভুক্ত করা একটি চলমান প্রক্রিয়া যা আমরা ভবিষ্যতে অব্যাহত রাখব।’
আরও পড়ুন: রোহিঙ্গাদের মর্যাদাপূর্ণ প্রত্যাবাসনে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের দৃঢ় প্রতিশ্রুতি কামনা প্রধানমন্ত্রীর
অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন, সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল এস এম শফিউদ্দিন আহমেদ এবং জাতিসংঘের আবাসিক সমন্বয়ক গুয়েন লুইস।
অনুষ্ঠানের শুরুতে শান্তি প্রতিষ্ঠায় জীবন উৎসর্গকারী বীরদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়।
অনুষ্ঠানে ‘বাংলাদেশ ইন গ্লোবাল পিস’- শীর্ষক একটি ভিডিও ডকুমেন্টারি প্রদর্শিত হয়।
প্রধানমন্ত্রী পাঁচ শান্তিরক্ষীর পরিবারের সদস্যদের হাতে পুরস্কার তুলে দেন। তিনি পাঁচজন আহত শান্তিরক্ষীর হাতে পুরস্কারও তুলে দেন।
তিনি ইন্টারন্যাশনাল পিসকিপার জার্নাল উন্মোচন করেন।
আরও পড়ুন: শান্তিপূর্ণ গণতান্ত্রিক পরিবেশ বিরাজ করায় বাংলাদেশ উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি অর্জন করতে সক্ষম হয়েছে: প্রধানমন্ত্রী
সাধারণ মানুষের কাছে স্বাস্থ্যসেবা পৌঁছে দেওয়ায় কমিউনিটি ক্লিনিকের ভূয়সী প্রশংসা প্রধানমন্ত্রীর
রোহিঙ্গাদের মর্যাদাপূর্ণ প্রত্যাবাসনে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের দৃঢ় প্রতিশ্রুতি কামনা প্রধানমন্ত্রীর
রোহিঙ্গাদের নিরাপদ ও মর্যাদাপূর্ণ প্রত্যাবাসন নিশ্চিত করতে অর্গানাইজেশন অব ইসলামিক কো-অপারেশন (ওআইসি)সহ আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কাছে দৃঢ় প্রতিশ্রুতি চেয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
তিনি বলেন, রোহিঙ্গাদের নিরাপদ ও মর্যাদাপূর্ণ প্রত্যাবাসন নিশ্চিত করতে ওআইসিসহ আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের দৃঢ় প্রতিশ্রুতি প্রয়োজন।
রবিবার ওআইসি মহাসচিব হিসেন ব্রাহিম তাহা তার সরকারি বাসভবন গণভবনে তার সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎকালে প্রধানমন্ত্রী এ মন্তব্য করেন।
বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব ইহসানুল করিম।
শেখ হাসিনা রোহিঙ্গাদের স্বদেশে পাঠানোর মাধ্যমে ওআইসি সদস্য দেশগুলোর কাছে রোহিঙ্গা সমস্যা সমাধানে সহায়তার জন্য দৃঢ় প্রতিশ্রুতিও চেয়েছেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, তারা মানবিক কারণে রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দিয়েছেন এবং ওআইসি সদস্য দেশগুলোকে রোহিঙ্গাদের জন্য তহবিল সংগ্রহ করতে বলেছেন।
তিনি বলেন, বাংলাদেশে ধর্মীয় সম্প্রীতি রয়েছে এবং এখানকার মানুষ শান্তিতে বসবাস করছে।
‘রোহিঙ্গারা তাদের অধিকার থেকে বঞ্চিত’ উল্লেখ করে ওআইসি মহাসচিব বলেন, রোহিঙ্গা ওআইসির জন্য একটি অগ্রাধিকার ইস্যু।
আরও পড়ুন: প্রত্যাবাসনের লক্ষ্যে রোহিঙ্গাদের তালিকা যাচাইয়ে কক্সবাজারে মিয়ানমারের প্রতিনিধি দল
তিনি বলেন, ওআইসির কাছে বাংলাদেশ একটি গুরুত্বপূর্ণ দেশ। তিনি বলেন, ওআইসিতে বাংলাদেশ একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে।
তিনি আন্তর্জাতিক শান্তি প্রতিষ্ঠায় জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের মহান অবদানের কথাও স্মরণ করেন।
ওআইসি মহাসচিব বিশ্ব শান্তিতে অবদানের জন্য বঙ্গবন্ধুকে জোলিয়ট-কিউরি শান্তি পুরস্কার প্রদানের ৫০তম বছরে প্রধানমন্ত্রীকে শুভেচ্ছা জানান।
এ সময় প্রধানমন্ত্রীর রাষ্ট্রদূত মোহাম্মদ জিয়াউদ্দিন, প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব এম. তোফাজ্জেল হোসেন মিয়া, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সচিব (সমুদ্র বিষয়ক ইউনিট) রিয়ার আমিরাল (অব.) মো. খোরশেদ আলম এবং ওআইসি সহকারী মহাসচিব অ্যাম্বাসেডর আসকার মুসিনভ উপস্থিত ছিলেন।
ওআইসি মহাসচিব হিসেন ব্রাহিম তাহা পাঁচ দিনের সফরে শনিবার ঢাকায় এসেছেন।
ইসলামিক ইউনিভার্সিটি অব টেকনোলজির (আইইউটি) চ্যান্সেলর হিসেবে তিনি ৩০ মে অনুষ্ঠিতব্য আইইউটির ৩৫তম সমাবর্তনে যোগ দেবেন।
আরও পড়ুন: রোহিঙ্গা মামলা: সদস্য দেশগুলোর সমর্থন চেয়েছেন ওআইসি মহাসচিব
শান্তিপূর্ণ গণতান্ত্রিক পরিবেশ বিরাজ করায় বাংলাদেশ উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি অর্জন করতে সক্ষম হয়েছে: প্রধানমন্ত্রী
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ২০০৮ সাল থেকে দেশে শান্তিপূর্ণ গণতান্ত্রিক পরিবেশ বিরাজ করায় বাংলাদেশ গত ১৪ বছরে উল্লেখযোগ্য আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন অর্জন করতে সক্ষম হয়েছে।
২০০৮ সালের নির্বাচনে বিজয়ী হয়ে ২০০৯ সালে সরকার গঠনকারী তার দল আওয়ামী লীগকে সাফল্যের কৃতিত্ব দেন তিনি।
রবিবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে জুলিও কুরি শান্তি পদক প্রদানের সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির ভাষণে এ কথা বলেন।
প্রধানমন্ত্রীর সভাপতিত্বে বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে (বিআইসিসি) মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের আয়োজনে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
শেখ হাসিনা বলেন, ‘২০০৮ সালে জনগণের ম্যান্ডেট পাওয়ার পর তার সরকার পরিকল্পিতভাবে দেশের উন্নয়নে কাজ করে যাচ্ছে। এর ফলে আমরা দারিদ্র্যের হার ও মাতৃমৃত্যু হ্রাস, সাক্ষরতা ও আয়ু বৃদ্ধি করতে সক্ষম হয়েছি। সুতরাং অর্থনৈতিক মুক্তি অর্জনে জনগণের জন্য একটি শান্তিপূর্ণ টেকসই পরিবেশ প্রয়োজন এবং তা সবাইকে মনে রাখতে হবে।’
আরও পড়ুন: বাংলাদেশের আসন্ন জাতীয় নির্বাচন আ. লীগ সরকারের অধীনেই হবে: প্রধানমন্ত্রী
বৈশ্বিক অস্ত্র প্রতিযোগিতার নিন্দা জানিয়ে তিনি ভারত ও মিয়ানমারের মতো সংলাপের মাধ্যমে সব বিরোধ নিষ্পত্তির ওপর গুরুত্বারোপ করেন।
তিনি বলেন, ‘এখন কেন এই অস্ত্র প্রতিযোগিতা (চলছে), অস্ত্র প্রতিযোগিতার জন্য যে অর্থ ব্যবহার করা হচ্ছে তা ক্ষুধার্ত শিশু ও মানুষের জন্য কেন ব্যবহার করা হবে না। এই অস্ত্র প্রতিযোগিতার জন্য সারা বিশ্বে হাজার হাজার শিশু ও নারী মানবেতর জীবনযাপন করছে।’
এ প্রসঙ্গে তিনি উল্লেখ করেন, বাংলাদেশ জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত মিয়ানমারের ১০ লাখেরও বেশি নাগরিক রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দিয়েছে, যারা ১৯৭১ সালে নিপীড়নের শিকার হয়েছিল। এ প্রসঙ্গে তিনি ১৯৭১ সালে বাঙালিদের গণহত্যার কথা স্মরণ করেন।
তিনি আরও বলেন, ‘আমরা চাই বিশ্বে শান্তি ফিরে আসুক। কোনো ধরনের অস্থিরতা (পৃথিবীতে) থাকবে না।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘যারা দেশের স্বাধীনতা চায়নি তারাই জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে হত্যা করেছে। প্রতিটি মুহূর্তে আমাদের তাদের (স্বাধীনতাবিরোধী শক্তি) বাধা অতিক্রম করতে হবে।’
প্রধানমন্ত্রী দৃঢ়তার সঙ্গে বলেন, বাংলাদেশ বিশ্বে কোনো ধরনের অস্থিরতা ও সংঘাত চায় না।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশে বড় আকারের বিনিয়োগ করতে চায় সৌদি আরব: প্রধানমন্ত্রীকে দেশটির দুই মন্ত্রী