প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মুসলিম সম্প্রদায়ের প্রতি তাদের মতভেদ দূরে সরিয়ে রেখে বিজ্ঞান, দর্শন, চিকিৎসা এবং জ্ঞানচর্চার অন্যান্য ক্ষেত্রে ইসলামি বিশ্বের গৌরবময় ঐতিহ্য ফিরিয়ে আনতে একসঙ্গে কাজ করার আহ্বান জানিয়েছেন।
তিনি বলেন, ‘আজ মুসলিমরা উল্লেখযোগ্য পরিমাণ সম্পদের অধিকারী। বিজ্ঞান ও আধুনিক প্রযুক্তির উন্নয়নে এই সম্পদ ব্যবহার করে আমরা আমাদের হারানো ঐতিহ্য ফিরিয়ে আনতে পারি। আমি এটা বিশ্বাস করি।’
মঙ্গলবার ইসলামিক ইউনিভার্সিটি অব টেকনোলজি (আইইউটি) এর ক্যাম্পাসে আয়োজিত ৩৫তম সমাবর্তন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন। এছাড়া অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন, আইইউটির চ্যান্সেলর এবং ওআইসি মহাসচিব হিসেন ব্রাহিম ত্বহা।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ইসলামের স্বর্ণযুগে মুসলিম পণ্ডিতরা বিজ্ঞান, ইতিহাস, সাহিত্য, দর্শন, রসায়ন, গণিত, চিকিৎসাবিদ্যা, জ্যোতির্বিদ্যা, ভূগোলসহ আরও অনেক শাখায় সাফল্যের শিখরে পৌঁছেছিলেন। এছাড়া সে যুগের মুসলিম পণ্ডিতরা সংস্কৃতি, জ্ঞান আহরণ, বৈজ্ঞানিক আবিষ্কার এবং সমসাময়িক সাহিত্যে বিশ্বে আধিপত্য বিস্তার করেছিলেন।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এক সময়ের গৌরবময় ঐতিহ্যের অধিকারী মুসলমানদের পতনের কারণ বিশ্লেষণের প্রয়োজনীয়তার ওপর গুরুত্বারোপ করে বলেন, অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্ব, মুসলিম দেশগুলোর মধ্যে পারস্পরিক শ্রদ্ধা ও সম্প্রীতির অভাব, জ্ঞান এবং বিজ্ঞানের অভাব।
তিনি আরও বলেন, অন্যান্য অনেক বিষয় মুসলিম উম্মাহর সম্মিলিত পতনের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। এই হারানো গৌরব পুনরুদ্ধার করতে, আমি মনে করি আমাদের মুসলিম উম্মাহকে মতভেদ ভুলে ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করতে হবে।
আরও পড়ুন: শান্তি বিঘ্নিত করতে অশুভ শক্তি উন্নত প্রযুক্তি ব্যবহার করছে: প্রধানমন্ত্রী
শেখ হাসিনা বলেন, বিজ্ঞান ও আধুনিক প্রযুক্তির বিকাশ ঘটাতে মুসলিম দেশগুলোকে বিশেষ করে মুসলিম দেশগুলোর শিক্ষার্থীদের শিক্ষা ও বিজ্ঞানে আরও বেশি বিনিয়োগ করতে হবে।
শেখ হাসিনা বলেন, আধুনিক যুগে মুসলিমরা মাত্র তিনটি নোবেল পুরস্কার পেয়েছেন। দুঃখজনক হলেও সত্য যে, এটাই এই আধুনিক যুগে গবেষণা, প্রযুক্তি ও উন্নয়নের ক্ষেত্রে মুসলিম উম্মাহর অবদানের প্রকৃত চিত্র।
তিনি বলেন, মুসলিম দেশগুলোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির ক্ষেত্রে আরও জোরালো প্রচেষ্টা দরকার, যাতে তারা আরও বেশি অবদান রাখতে পারে।
তিনি আরও বলেন, বিশেষ করে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা, রোবোটিক্স, ইন্টারনেট অব থিংস, কোয়ান্টাম কম্পিউটিং এবং অন্যান্য খাতে ৪র্থ শিল্প বিপ্লবের ফলে উদ্ভূত বিভিন্ন চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় মুসলিম সম্প্রদায়ের পিছিয়ে পড়া উচিত নয়।
আরও পড়ুন: রোহিঙ্গাদের মর্যাদাপূর্ণ প্রত্যাবাসনে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের দৃঢ় প্রতিশ্রুতি কামনা প্রধানমন্ত্রীর