সেই সাথে এ সংক্রান্ত বিদ্যমান আইন সংশোধন করে আদালতের নির্দেশনাটি ৬ মাসের মধ্যে অন্তর্ভুক্ত করতে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর ও স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়কে বলা হয়েছে।
এক রিট আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে বিচারপতি মইনুল ইসলাম চৌধুরী ও বিচারপতি খন্দকার দিলীরুজ্জামানের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এ রায় ঘোষণা করে।
আদালতে রিটের পক্ষে উপস্থিত ছিলেন ব্যারিস্টার রাশনা ইমাম। আইন ও সালিশ কেন্দ্রের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী জেডআই খান পান্না। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল সাইফুদ্দিন খালেদ।
রায়ের পর রাশনা ইমাম বলেন, ‘বিশেষ পরিস্থিতিতে পরিচিত এবং সম্পর্ক আছে এমন ব্যক্তিরা চাইলে তাদের অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ দান করতে পারবেন। অর্থাৎ নিকট আত্মীয় ছাড়া কেউ অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ দান করতে পারবে না বলে আইনের যে বিধান তা আর কার্যকর থাকছে না। আজকের রায়ের ফলে অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ দানে নিকট আত্মীয়র গণ্ডিতে পড়তে হবে না। কোনো ব্যক্তি চাইলে তার ভালবাসার যেকোনো মানুষকে কিডনি দান করতে পারবেন।’
তিনি জানান, আইন অনুসারে অঙ্গ-প্রত্যঙ্গের বাণিজ্য নিষিদ্ধ। তাই আদালত কয়েকটি নির্দেশনা দিয়েছে। এসব নির্দেশনায় আদালত বলেছে যে অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ দানের ক্ষেত্রে ‘ইমোশনাল ডোনেশন’ হচ্ছে কি না তা যাচাইয়ের জন্য প্রত্যেক হাসপাতালে একটি করে প্রত্যয়ন বোর্ড গঠন করতে হবে। ওই বোর্ড আত্মীয়-স্বজনদের জিজ্ঞাসা করে দাতার সাথে রোগীর পরিচয় নির্ণয় করবে। দাতা নিজ ইচ্ছায় অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ দান করছেন কি না, অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ কেনা-বেচা হচ্ছে কি না এবং দাতা মানসিকভাবে সুস্থ বা মাদকাসক্ত কি না তাও নির্ণয় করতে হবে।
ফাতেমা জোহরা নামে একজন ২০১৫ সালে তার মেয়েকে কিডনি দান করেন। তা অকেজো হয়ে গেলে পুনরায় কিডনি প্রতিস্থাপনের জন্য দাতাও পাওয়া যায়। কিন্তু আইনগত বাধার কারণে সেই কাজ করা না গেলে আদালতে রিট করা হয়।
আদালত ২০১৭ সালের ২৪ আগস্ট এক আদেশে অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ সংযোজন আইন-১৯৯৯ এর তিনটি (২ (গ), ৩ ও ৬) ধারা কেন অসাংবিধানিক ঘোষণা করা হবে না তা জানতে চেয়ে রুল জারি করে। বৃহস্পতিবার এ রুলের শুনানি শেষে আদেশ দেয়া হয়।