গত ২১ এপ্রিল করোনাভাইরাস সংক্রমণ রোধে কর্মহীন মানুষের সহায়তায় গঠিত ইউএনও’র ত্রাণ তহবিলে নিজের ভাঙা ঘর মেরামতের জন্য ভিক্ষা করে দুই বছর ধরে জমানো নগদ দশ হাজার টাকা অনুদান দিয়ে আলোচনায় এসেছিলেন শেরপুরে ঝিনাইগাতীর ৮০ বছর বয়সী ভিক্ষুক নাজিম উদ্দিন।
এই দৃষ্টান্তমূলক ও হৃদয়গ্রাহী ঘটনাটি প্রধানমন্ত্রীর নজর কেড়েছিল এবং তাকে ব্যক্তিগত তহবিল থেকে একটি আধুনিক বাড়ি তৈরি করার জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দেন।
তার মহৎ কাজটি খুব তাড়াতাড়ি প্রধানমন্ত্রীর নজরে আসে। প্রধানমন্ত্রী তাৎক্ষণিকভাবে তার কাজের প্রশংসা করে নিজের তহবিল থেকে তাকে উপহার হিসেবে একটি বাড়ি দেয়ার সিদ্ধান্ত নেন।
গত ২৭ এপ্রিল এক অনুষ্ঠানে শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমি মনে করি ভিক্ষুক নাজিমুদ্দিন সারা বিশ্বে এক মহৎ দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন। এত বড় মানবিক গুণ আমাদের অনেক বিত্তশালীর মাঝেও দেখা যায় না।’
এমনকি প্রধানমন্ত্রী নিজেও বৃদ্ধ দরিদ্র ব্যক্তির জন্য বাড়ির নকশা চূড়ান্ত করেছেন।
তাকে কেবল বাড়ি নয়, একটি দোকানও দেয়া হচ্ছে যাতে আয় করে তিনি তার পরিবারকে সহযোগিতা করতে পারেন। ভিক্ষাবৃত্তির অবসান ঘটিয়ে সমাজে এমন একটি অবমাননাকর প্রথা যা তাকে বহু আগেই অবলম্বন করতে হয়েছিল।
নাজিমউদ্দিনকে সেখানে মুদি দোকান শুরু করতে ইতোমধ্যে ২০ হাজার টাকা দেয়া হয়েছে।
এ ছাড়া, সরকার তাকে খাস জমি দিচ্ছে যেখানে তিনি এখন উপজেলার গান্ধীগাঁও গ্রামে বসবাস করছেন।
শেরপুরের জেলা প্রশাসক আনার কলি মাহবুব বলেন, ‘আমরা আগামীকাল (রবিবার) প্রধানমন্ত্রীর পক্ষে নবনির্মিত বাড়িটি এই ব্যক্তিকে (নাজিমউদ্দিন) হস্তান্তর করব ... প্রধানমন্ত্রীর ব্যক্তিগত তহবিলের অর্থ দিয়ে বাড়িটি তৈরি করা হয়েছে।’
শেরপুরের জেলা প্রশাসক ইউএনবিকে বলেন, ‘যদিও সরকার অন্য একটি উপযুক্ত জায়গায় নতুন বাড়ি তৈরি করতে চেয়েছিল, নাজিমউদ্দিন এখন যে জায়গাটিতে বাস করছেন, সেখান থেকে সরকারি জমি থেকেও যেতে চাননি তিনি। তাই, নতুন বাড়িটি তার বর্তমান জায়গায় নির্মিত হয়েছে।’
ঝিনাইগাতী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) রুবেল মাহমুদ বলেন, খাস জমিটি তার নামে বরাদ্দ করে বন্দোবস্ত করে দেয়া হয়েছে। এছাড়াও উপজেলা প্রশাসন এই দাতা ব্যক্তির জন্য অন্যান্য প্রয়োজনীয় সহযোগিতা অব্যাহত রেখেছে।