বুধবার গণভবনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সাথে বৈঠককালে এ কথা জানান সফররত উন্নয়ন সহযোগিতা বিষয়ক ড্যানিশ মন্ত্রী উল্লা পেডারসন টর্নায়েস এবং ডব্লিউএফপি’র নির্বাহী পরিচালক ডেভিড বিসলে।
বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন প্রধানমন্ত্রীর প্রেসসচিব ইহসানুল করিম।
তিনি জানান, ড্যানিশ মন্ত্রী উল্লা পেডারসন টর্নায়েস প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে মূলত রোহিঙ্গা সমস্যা নিয়ে আলোচনা করেছেন।
তিনি রোহিঙ্গাদের মানবিক সমর্থনের জন্য ড্যানিশ সরকারের ৩.৫ মিলিয়ন মার্কিন ডলার সহায়তা দেয়ার সিদ্ধান্তের কথা শেখ হাসিনাকে অবহিত করেন।
বিপুল সংখ্যক রোহিঙ্গাদের আশ্রয় প্রদান, তাদের খাদ্য ও স্বাস্থ্যসেবার ব্যবস্থা করার পাশাপাশি শিশুদের শিক্ষা ব্যবস্থা করার জন্য ড্যানিশ মন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের ভূয়সী প্রশংসা করেন।
ড্যানিশ মন্ত্রী বলেন, ‘বিশাল সংখ্যক রোহিঙ্গা শরণার্থীদের আশ্রয় প্রদান করা সত্যিই একটি বড় চ্যালেঞ্জ।’
উল্লা বলেন, এর আগে তিনি যখন রোহিঙ্গা ক্যাম্প পরিদর্শনে এসেছিলেন সেসময়ের পরিস্থিতি বর্তমানে অনেক পরিবর্তন হয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়া খুব শিগগিরই শুরু হবে, কারণ মিয়ানমার তাদের নাগরিকদের ফিরিয়ে নিতে সম্মত হয়েছে। প্রথম পর্যায়ে ৪৮৫ পরিবারের মোট ২,২৬০ জন তাদের বাড়িতে ফিরে যাবে।
মিয়ানমারে ফেরত যাওয়ার পর রোহিঙ্গাদের সমর্থন বৃদ্ধির জন্য ড্যানিশ সরকার ও ডব্লিউএফপিকে অনুরোধ জানান শেখ হাসিনা।
তিনি রোহিঙ্গাদের জন্য অস্থায়ী আশ্রয়কেন্দ্র, স্বাস্থ্যসেবা ও শিক্ষার জন্য গৃহীত পদক্ষেপগুলো তুলে ধরেন।
তিনি উল্লেখ করেন, শরণার্থী ক্যাম্পে প্রায় ১,৬০০টি স্কুল নির্মাণ করা হয়েছে এবং সেখানে শিক্ষিত রোহিঙ্গাদের তাদের নিজ ভাষায় শিক্ষা প্রদানের জন্য নিযুক্ত করা হয়েছে।
যেকোনো ধরনের প্রাকৃতিক বিপর্যয় এড়াতে ভাসানচরে নির্মিত ঘূর্ণিঝড় আশ্রয় কেন্দ্রগুলোতে শরণার্থীদের স্থানান্তরিত করার জন্য সরকার ব্যবস্থা নিয়েছে। যাতে সেখানে তারা নিরাপদে ও ভালো অবস্থায় বসবাস করতে পারে।
শেখ হাসিনা বলেন, ভাসানচরে আশ্রয়কেন্দ্র নির্মাণের জন্য বাংলাদেশ নৌবাহিনী এবং প্রায় সাত হাজার কর্মী কাজ করছেন।
রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসনের পর ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রগুলো দেশের কাজে ব্যবহার করা হবে বলে জানান প্রধানমন্ত্রী।
তিনি কক্সবাজারে বিপুল পরিমাণ রোহিঙ্গা বসবাসের কারণে স্থানীয় জনগণের ভোগান্তির কথা উল্লেখ করেন।
এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, সরকার স্থানীয় জনগণকে সাহায্য করছে কারণ শরণার্থীরা তাদের চাষযোগ্য জমি দখল করেছে।
রোহিঙ্গাদের জন্য নিরবিচ্ছিন্ন সমর্থন ও মানবিক সাহায্যের জন্য প্রধানমন্ত্রী ড্যানিশ সরকারকে ধন্যবাদ জানান।
রোহিঙ্গা সংকটের টেকসই সমাধানের জন্য নিরবিচ্ছিন্ন সহায়তার জন্য ডব্লিউএফপিকে বিশেষ ধন্যবাদ জানান।
প্রেস সচিব বলেন, আসন্ন নির্বাচনের বিষয়ও তারা আলোচনা করেন। প্রধানমন্ত্রী বলেন, নির্বাচন নির্ধারিত সময়েই অনুষ্ঠিত হবে।
‘নির্বাচন কমিশন নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করবে এবং সকল প্রশাসন ও আইন প্রয়োগকারী সংস্থা নির্বাচন কমিশন দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হবে,’ বলেন শেখ হাসিনা।
তিনি বাংলাদেশের সামাজিক ও অর্থনৈতিক সাফল্য সম্পর্কে ড্যানিশ মন্ত্রীকে ব্রিফ করেন।