আরও পড়ুন: পোল্ট্রি ও ডেইরি শিল্পের সুরক্ষায় নীতিমালা তৈরি করছে সরকার: মন্ত্রী
নিজের শ্রম ও মেধা দিয়ে ঝালকাঠির রাজাপুর উপজেলার উত্তর পিংরি গ্রামের সৈয়দ এনামুল হক পৈত্রিক ১৫ বিঘা জমির ওপর গড়ে তুলেছেন সৈয়দ বহুমুখী এগ্রো ফার্ম। তার এই খামারে কর্মসংস্থান হয়েছে ১০টি পরিবারের।
সৈয়দ এনামুল হক কৃষি, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ কম্পোনেন্ট নিয়ে বহুমাত্রিক ফার্ম গড়েছেন। ঝালকাঠির যুব উন্নয়ন অধিদপ্তর থেকে তিনি গবাদি পশু, হাস-মুরগি পালন, মৎস্য চাষ ও কৃষি বিষয়ক প্রশিক্ষণ নিয়েছেন।
সৈয়দ এনামুল হক যুব উন্নয়ন অধিদপ্তরের এখন একজন সফল উদ্যোক্তা। তার প্রকল্প দেখার জন্য জেলা প্রশাসকসহ কৃষি ব্যাংকের চেয়ারম্যানও প্রকল্প পরিদর্শন করেছেন। এছাড়া বিভিন্ন উদ্যোক্তরা তার প্রকল্প দেখতে এবং অভিজ্ঞতা বিনিময় করতে আসেন।
সৈয়দ আবু বকর সিদ্দিকের ছেলে সৈয়দ এনামুল হক উচ্চ মাধ্যমিক পাস করে বেকার জীবনযাপন করছিলেন। বছর পাঁচেক আগে তিনি ট্রলারে করে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে প্রবাসে যাওয়ার জন্য দালাল খুঁজতে ঢাকায় যান। তখন হোটেলে বসে তার ধারণা হয় বিদেশে যেতে গেলেও এই শিক্ষাগত যোগ্যতা নিয়ে পরিশ্রমের কাজ করতে হবে।
পরে বিদেশে যাওয়ার চিন্তা বাদ দিয়ে নিজের পৈত্রিক জায়গায় কিছু করার উদ্যোগ নিয়ে যুব উন্নয়ন অধিদপ্তরে প্রথমে হাস মুরগি পালনের ওপর প্রশিক্ষণ নেন।
শুরুতে বড় ভাই সৈয়দ আজিজুল হকের কাছ থেকে ২০ হাজার টাকা নিয়ে ছোট আকারের একটি মুরগির খামার শুরু করেন। এখন তার ১৫ বিঘা জমির ওপরে ছোট বড় চারটি পুকুরে মিশ্র জাতের মাছের চাষ এবং একটি পুকুরে দেশি জাতের শিং, মাগুর মাছের চাষ রয়েছে।
পাশাপাশি ব্রয়লার ও দেশি জাতের মুরগির পৃথক খামার রয়েছে। একই ফার্মে রয়েছে দেশি জাতের গরুর খামার। এছাড়া নতুন করে সংকর জাতের গাভী লালন পালনের জন্য বড় আকারের শেড নির্মাণ করা হচ্ছে।
পুকুর সংলগ্ন পাড়ে বিভিন্ন ধরনের শাকসবজি ও বসত বাড়িতে আম্রপালিসহ উচ্চ ফলনশীল জাতের ফলের গাছ রয়েছে। মুরগির খামারের সাথেই ৩০০ শতাধিক কবুতরসহ টারকী (কেদারনাথ, সিলকি) জাতের মুরগি রয়েছে। রয়েছে ১০০টি ছাগল লালন পালনের খামারও।
সম্প্রতি ফার্ম দেখতে এসে ঝালকাঠির জেলা প্রশাসক সন্তোষ প্রকাশ করে জানান, এই ধরনের যুবকরাই তাদের উদ্যমকে কাজে লাগিয়ে দেশের অগ্রগতি ও সমৃদ্ধির পথে বড় ভূমিকা পালন করতে পারে।
তিনি অন্য বেকার যুবকদেরও প্রশিক্ষণ নিয়ে সৈয়দ এনামুল হকের মত উদ্যোগ নিয়ে উদোক্তা হওয়ার আহ্বান জানান।