বিএনপি প্রধানের বড় ছেলে তারেক রহমানের স্ত্রী ডা. জোবাইদা রহমান লন্ডন থেকে তার শাশুড়ির চিকিৎসা কার্যক্রম তদারকি করছেন বলেও জানান তিনি।
খালেদা জিয়ার ব্যক্তিগত বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক দলের সদস্য অধ্যাপক এজেডএম জাহিদ হোসেন
বিএনপিপন্থী চিকিৎসকের সংগঠন ডক্টরস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ড্যাব) প্রাক্তন মহাসচিব জাহিদ বলেন, ৭৫ বছর বয়সী অসুস্থ খালেদা জিয়া কোয়ারেন্টাইনে থাকলেও তাকে প্রয়োজনীয় চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে।
তিনি বলেন, ‘খালেদা জিয়া গুরুতর অসুস্থ, তবে এখন পারিবারিক পরিবেশে থাকতে পেরে তিনি স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করছেন। তার মানসিক বল বেড়েছে। আগে যে বিপর্যস্ত চেহারা ছিল তাও ধীরে ধীরে কমছে।’
তিনি বলেন, হৃদরোগ বিশেষজ্ঞ ডা. জুবাইদা রহমান খালেদের চিকিৎসার তদারকি করছেন।
ডা. জাহিদ বলেন, ‘চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী বিএনপি প্রধান তার গুলশানের বাসভবন ফিরোজার দ্বিতীয় তলায় কোয়ারেন্টাইনে আছেন। একজন নার্স এবং স্বাস্থ্যসেবা সরবরাহকারী, যারা তার দেখাশোনা করছেন তারাও সে বাড়িতে কোয়ারেন্টাইনে রয়েছেন।’
তিনি বলেন, নার্স ও অন্য স্বাস্থ্যকর্মীরা যথাযথ নিয়ম ও নির্দিষ্ট দূরত্ব বজায় রেখে খালেদা জিয়াকে স্বাস্থ্যসেবা প্রদান করছেন।
ড্যাবের এ নেতা বলেন, খালেদা জিয়া এখন মোবাইলের তার প্রিয়জনের সাথে যোগাযোগ করতে পেরে স্বস্তিবোধ করছেন এবং চিকিৎসকদের তার সমস্যা জানাতে পারছেন। মাঝে মাঝে শুয়ে, বসে এবং বই পড়ে সম্পূর্ণ পারিবারিক পরিবেশে সময় কাটাচ্ছেন।’
খালেদা জিয়ার চিকিৎসা সম্পর্কে অধ্যাপক জাহিদ বলেন, তার ব্যক্তিগত বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের একটি দল বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) চিকিৎসা বোর্ডের দেয়া কিছু ওষুধ সংযোজন-বিয়োজন করে দিয়েছে।
বিএসএমএমইউতে তিনি কারাবন্দী হিসেবে গত বছরের ১ এপ্রিল থেকে চিকিৎসা নিচ্ছিলেন। গত বুধবার তাকে সাময়িক সময়ের জন্য মুক্তি দেয়া হয়।
জাহিদ বলেন, তার চিকিৎসক ও নিকটাত্মীয়দের ছাড়া কাউকেই খালেদার বাড়ি ফিরোজায় প্রবেশের অনুমতি নেই।
তিনি বলেন, ‘বাতের কারণে খালেদা জিয়ার হাত-পায়ের জয়েন্টে প্রচণ্ড ব্যথা রয়েছে। এগুলো উনাকে ভীষণ কষ্ট দিচ্ছে। এ ব্যথা উপশমের জন্য বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা ওষুধে কিছুটা সংযোজন ও পরিবর্তন করে দিয়েছেন।’
ড্যাবের এ নেতা বলেন, ‘কারাগারের একাকীত্বের কারণে খালেদা জিয়া মানসিকভাবে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছিলেন। উনি অনেকটা দুর্বল হয়ে পড়েছেন এবং তার ওজনও ৯-১০ কেজি কমে গেছে।’
তিনি বলেন, ‘আমরা আশা করছি তার ব্যক্তিগত চিকিৎসকদের দেয়া সেবায় তিনি সুস্থ হয়ে উঠবেন। আমরা ধারণা করছি যে সবকিছুকে যদি একটি সিস্টেমের মধ্যে আনা যায় তবে তার ডায়াবেটিস সমস্যারও ধীরে ধীরে উন্নতি হবে।’
জাহিদ জানান, বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক দলের সদস্য ও নিকট আত্মীয়-স্বজন ছাড়া কাউকে খালেদার বাড়িতে ঢুকতে দেয়া হচ্ছে না।
মঙ্গলবার সরকার ৭৫ বছর বয়সী খালেদা জিয়াকে ২৫ মাস কারাভোগের পর দুটি শর্তে ছয় মাসের জন্য দণ্ড স্থগিত করে কারাগার থেকে মুক্তি দেয়ার ঘোষণা দেয়। শর্ত দুটি হলো- দেশ ত্যাগ করা যাবে না এবং গুলশানের বাসায় থেকে চিকিৎসা নিতে হবে।
জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতির মামলায় দোষী সাব্যস্ত হওয়ায় ২০১৮ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি থেকে কারাগারে ছিলেন সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া।
একই বছরে তিনি আরও একটি দুর্নীতির মামলায় দোষী সাব্যস্ত হন। যদিও তার দল বলছে, দুটি মামলাই রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত।