আমের ‘নতুন রাজধানী’ হিসেবে পরিচিতি পাওয়া নওগাঁ জেলায় এবার চলতি মাসের ২২ তারিখ থেকে আম সংগ্রহ শুরু হবে। জেলা কৃষি অফিসের নির্দেশনা অনুযায়ী, ওই দিন থেকে দেশীয় গুটি জাতের আম সংগ্রহ করা যাবে। তবে বিভিন্ন উন্নত জাতের সুস্বাদু আম খেতে অপেক্ষা করতে হবে আরও কিছুদিন।
প্রশাসনের বেঁধে দেওয়া সময়সীমা অনুযায়ী, এই মৌসুমে ২২ মে থেকে গুটি জাতের আম, ২৮ মে থেকে গোপালভোগ, ২ জুন থেকে ক্ষীরসাপাত ও হিমসাগর, ৭ জুন থেকে নাক ফজলি, ১০ জুন থেকে ল্যাংড়া ও হাড়িভাঙা, ২০ জুন থেকে ফজলি, ২২ জুন থেকে আম্রপালি এবং ১০ জুলাই থেকে আশ্বিনা, বারি আম-৪, গৌড়মতি ও কাটিমন জাতের আম সংগ্রহ করা যাবে।
নওগাঁয় এ বছর ৩৩ হাজার ৩০০ হেক্টর জমিতে আম বাগান গড়ে উঠেছে যা থেকে ৪ লাখ ৩১ হাজার ৫০০ মেট্রিকটন আম উৎপাদনের আশা করছে কৃষি বিভাগ। ব্যানানা ম্যাংগো, মিয়াজাকি, কাটিমন, গৌড়মতি, বারি আমচাসহ দেশি-বিদেশি মিলে প্রায় ১৬ জাতের আম চাষ হয়েছে এ জেলায়।
আরও পড়ুন: খরায় পুড়ছে আম, ফলন বিপর্যয়ের শঙ্কায় চাঁপাইনবাবগঞ্জের চাষীরা
জাতভেদে ৮৯৮ হেক্টর জমিতে নাক ফজলি, ১ হাজার ৬১৫ হেক্টরে ল্যাংড়া, ১ হাজার ৪০৮ হেক্টরে ফজলি, ৬১০ হেক্টরে গোপালভোগ, ১ হাজার ৪৭ হেক্টরে ক্ষীরসাপাত, ২ হাজার ৪০২ হেক্টরে বারি-৪ আম, ৪২ দশমিক ৫০ হেক্টরে বারি-১১ আম, ৩৭ হেক্টরে মল্লিকা, ১৫৪ দশমিক ৫০ হেক্টর জমিতে কাটিমন, ১৪৩ দশমিক ২৫ হেক্টর জমিতে গৌড়মতি, ৪১ দশমিক ৭৫ হেক্টর জমিতে হাড়িভাঙা, ১০৭ দশমিক ৫০ হেক্টর জমিতে ব্যানানা ম্যাংগো, ২ হাজার ৩২২ দশমিক ৫০ হেক্টরে আশ্বিনা, ১৩ হেক্টরে কুমড়াজালি, ৬০৭ হেক্টরে গুটি/স্থানীয় ও ১৮ হাজার ৪২২ হেক্টর জমিতে আম্রপালি আমের চাষ হয়েছে। জেলায় যে পরিমাণ আম বাগান রয়েছে তার মধ্যে আম্রপালি চাষ হয়েছে মোট জমির ৬০ দশমিক ৮০ শতাংশে।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক কৃষিবিদ আবুল কালাম আজাদ বলেন, ‘গত বছর নওগাঁ থেকে ২২০ মেট্রিকটন আম রপ্তানি করা হয়েছিল। এবার আমাদের টার্গেট কমপক্ষে ৫০০ মেট্রিকটন। এ উদ্দেশ্যে আমরা কাজ করছি। যারা বিদেশে আম রপ্তানি করে তাদের নিয়ে এসে বিভিন্ন আমের বাগান ঘুরে ঘুরে দেখাচ্ছি।’
আরও পড়ুন: বাংলাদেশি আম আমদানিতে আগ্রহী চীন
তিনি বলেন, ‘চলতি মৌসুমে আর কোনো প্রাকৃতিক দুর্যোগ দেখা না দিলে নওগাঁ থেকে প্রায় ২৫০০ কোটি টাকার আম বাণিজ্য হতে পারে বলে আশা করছি।’
রপ্তানিকারকদের একটি দল আগামী শুক্রবার-শনিবার সাপাহারের আম বাগান পরিদর্শনে আসবে বলেও জানান এ কর্মকর্তা।