অনুদান দেওয়া ভিক্ষুক নজিম উদ্দিনের জন্য প্রধানমন্ত্রীর পক্ষ থেকে সরকারি জমিতে একটি পাকা ঘর, জেলা প্রশাসকের পক্ষ থেকে একটি দোকান ও উপজেলা পশোসনের পক্ষ থেকে তার ও পরিবারের ভরনপোষণ ও চিকিৎসার দায়িত্ব নেওয়া হয়েছে।
বুধবার দুপুরে ভিক্ষুক ও দাতা নাজিম উদ্দিনকে সংবর্ধনা দিয়েছে শেরপুর জেলা প্রশাসন। এসময় জেলা প্রশাসক আনার কলি মাহবুব তাকে ফুলের তোড়া দিয়ে বরণ করে উত্তরীয় পড়িয়ে দেন এবং নগদ ২০ হাজার টাকা আর্থিক সহায়তা প্রদান করেন।
এর আগে ঝিনাইগাতীর ইউএনও রুবেল মাহমুদ নিজগাড়িতে করে পাশে বসিয়ে তাকে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে নিয়ে আসেন।
জেলা প্রশাসক বলেন, ‘দাতা ভিক্ষুক নাজিম উদ্দিনের বিষয়টি প্রধানমন্ত্রীর নজরে এসেছে। প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য আমাদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।’
তিনি আরও জানান, ‘প্রধানমন্ত্রীর উপহার হিসেবে ওই দাতা ভিক্ষুককে জমিসহ ঘর তৈরি করে দেওয়া হবে। তার আত্মকর্মসংস্থানের জন্য একটি দোকান করে দেওয়াসহ তাকে সব ধরনের সহায়তা করা হবে।’
জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত এ সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক এ.বি.এম এহছানুল মামুন, ঝিনাইগাতীর ইউএনও রুবেল মাহমুমদ, জেলা প্রশাসনের অন্যান্য কর্মকর্তা ও স্থানীয় সাংবাদিকরা উপস্থিত ছিলেন।
জেলা প্রশাসক এ দানের ঘটনাটিকে একটি মহতি উদ্যোগ এবং মহানুভবতার এক অনন্য দৃষ্টান্ত বলে উল্লেখ করেন সমাজের অন্যদেরও এ থেকে শিক্ষা নেওয়ার আছে বলে জানান।
এমনকি করোনার এই ক্রান্তিকালে তার মতো সমাজের অন্যাদেরও কর্মহীন ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের সহায়তায় এগিয়ে আসার আহ্বান জানান তিনি।
সংবর্ধনার জবাবে ওই ভিক্ষুক নাজিম উদ্দিন বলেন, ‘কোনকিছু পাওয়ার আশায় আমি দান করি নাই। আমার মনে হয়েছে, দেশের মাইনষের এখন খুব বিপদ। আমার ঘর পরে হলেও চলবে। তাই আমি আমার জমানো সব টাকা ইউএনও’র তহবিলে দিয়েছি। আমি এতে খুব তৃপ্ত।’
ঝিনাইগাতী উপজেলার গান্ধিগাঁও এলাকার ওই ভিক্ষুক নিজের বসত ঘর মেরামতের জন্য দুই বছরের জমানো দশ হাজার টাকা মঙ্গলবার ঝিনাইগাতী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার ত্রাণ তহবিলে জমা দেন।
তার এ অনুদান দেওয়ার ঘটনাটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ও গণমাধ্যমে ভাইরাল হলে সর্বত্র আলোচনার ঝড় ওঠে।