বাংলাদেশ
বন্যা পরিস্থিতি ভয়াবহ: সিলেট ও সুনামগঞ্জ বিদ্যুৎবিচ্ছিন্ন
সিলেট ও সুনামগঞ্জ জেলার আরও অনেক এলাকা পানিতে তলিয়ে গেছে। বন্ধ রাখা হয়েছে বিদ্যুৎ সরবরাহ। এতে এ দুই জেলার বন্যা কবলিত মানুষের দুর্ভোগ বেড়েছে।
ভারত থেকে আসা পাহাড়ি ঢলের কারণে প্রধান প্রধান নদীর পানির উচ্চতা বৃদ্ধি পাওয়ায় পরিস্থিতি ভয়াবহ রূপ নিয়েছে।
সিলেটের কুমারগাঁও গ্রিড পাওয়ার সাব-স্টেশনে বন্যার পানি ঢুকে পড়ায় শনিবার দুপুর ১২টায় কর্তৃপক্ষ দুই জেলায় বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ করে দিয়েছে বলে জানিয়েছেন সিলেট বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের প্রধান প্রকৌশলী (বিক্রয় ও বিতরণ বিভাগ) আব্দুল কাদির।
বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র জানিয়েছে, নজিরবিহীন এ বন্যায় সিলেট বিভাগের ৮০ শতাংশ ও সুনামগঞ্জের ৯০ শতাংশ এলাকা প্লাবিত হয়েছে।
আরও পড়ুন: সিলেটে বন্যা পরিস্থিতির আরও অবনতি, মানবিক বিপর্যয়ের আশঙ্কা
চট্টগ্রামে বৃষ্টি অব্যাহত, নগরজুড়ে জলজট
চট্টগ্রামে টানা বৃষ্টিপাতের কারণে নগরজুড়ে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে। এতে ভোগান্তিতে পড়েছেন সাধারণ মানুষ।
গত তিনদিনের বৃষ্টিতে হালিশহর বাকলিয়া, আগ্রাবাদ, মুরাদপুর, দুই নম্বর গেট, বহদ্দার হাটসহ নগরীর বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ সড়কের বিভিন্ন স্থান হাঁটু থেকে কোমর সমান পানির নিচে তলিয়ে গেছে। গত রাতে নগরীর আখতারুজ্জামান ফ্লাইওভারের দুই নম্বর গেট অংশেও সৃষ্টি হয় জলাবদ্ধতা। এতে ফ্লাইওভারে যানজট লেগে যায়।
আখতারুজ্জামান ফ্লাইওভারে আটকে থাকা সিএনজি চালিত অটোরিকশার চালক মহিউদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘সড়কে পানি থাকায় ফ্লাইওভারে উঠেছিলাম জলাবদ্ধ সড়ক অতিক্রম করতে। কিন্ত এক ঘণ্টা ধরে ফ্লাইওভারেও যানজটে আটকে আছি।’
আরও পড়ুন: চট্টগ্রামে টানা বৃষ্টিতে পাহাড় ধসে নিহত ৪
এদিকে ভারী বর্ষণের কারণে পানি জমে যাওয়ায় দুর্ভোগের মধ্যে পড়েছেন সাধারণ মানুষ। পর্যাপ্ত যানবাহন না থাকায় রিকশায় অথবা পায়ে হেঁটে হাঁটু পানি মাড়িয়ে যাত্রা করতে হয়েছে কর্মস্থলে।
চট্টগ্রাম পতেঙ্গা আবহাওয়া অফিসের কর্মকর্তা বিশ্বজিৎ চৌধুরী বলেন, চট্টগ্রামে গত তিনদিন ধরে টানা বৃষ্টি হচ্ছে। শনিবার দুপুর ১২টা পর্যন্ত গত ২৪ ঘণ্টায় চট্টগ্রামে ৪৮ দশমিক ১০ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে। আজ ও আগামীকাল বৃষ্টি অব্যাহত থাকবে।
ঢাকার বাতাসের মান ‘মধ্যম’
দেশের বিভিন্ন এলাকায় বর্ষার বৃষ্টির কারণে ঢাকার বাতাসের মান ‘মধ্যম’ ধরনের হয়েছে।
শনিবার সকাল ৯টা ৮ মিনিটে এয়ার কোয়ালিটি ইন্ডেক্সে (একিউআই) ৫৬ স্কোর নিয়ে বিশ্বের দূষিত বাতাসের শহরের তালিকায় বাংলাদেশের রাজধানী ৫৬তম অবস্থানে রয়েছে।
একিউআই সূচক ৫০ থেকে ১০০ কে ‘মধ্যম’ ধরা হয় এবং এটি গ্রহণযোগ্য বাতাস। তবে বায়ুদূষণের প্রতি অস্বাভাবিকভাবে সংবেদনশীল খুব কম সংখ্যক মানুষের জন্য মাঝারি ধরনের স্বাস্থ্য ঝুঁকি থাকতে পারে।
সৌদি আরবের রিয়াদ, ইন্দোনেশিয়ার জাকার্তা ও কুয়েতের কুয়েত সিটি যথাক্রমে ৩০৩, ১৭০ ও ১৬৮ স্কোর নিয়ে এ তালিকার শীর্ষ তিন স্থানে রয়েছে।
আরও পড়ুন: ঢাকার বাতাসের মানের ‘উন্নতি’
একিউআই স্কোর ১০১ থেকে ২০০ হলে ‘অস্বাস্থ্যকর’ বলে বিবেচনা করা হয় বিশেষ করে সংবেদনশীল গোষ্ঠীর জন্য।
একইভাবে, ২০১ থেকে ৩০০ এর মধ্যে একিউআই স্কোর ‘খারাপ’ বলা হয় এবং ৩০১ থেকে ৪০০ এর স্কোর ‘ঝুঁকিপূর্ণ’ বলে বিবেচিত হয় যা বাসিন্দাদের জন্য গুরুতর স্বাস্থ্য ঝুঁকি তৈরি করে।
প্রতিদিনের বাতাসের মান নিয়ে তৈরি করা একিউআই সূচক একটি নির্দিষ্ট শহরের বাতাস কতটুকু নির্মল বা দূষিত সে সম্পর্কে মানুষকে তথ্য দেয় এবং তাদের জন্য কোনো ধরনের স্বাস্থ্য ঝুঁকি তৈরি হতে পারে তা জানায়।
বাংলাদেশে একিউআই নির্ধারণ করা হয় দূষণের পাঁচটি ধরনকে ভিত্তি করে- বস্তুকণা (পিএম১০ ও পিএম২.৫), এনও২, সিও, এসও২ এবং ওজোন (ও৩)।
ঢাকা দীর্ঘদিন ধরে বায়ু দূষণে ভুগছে। এর বাতাসের গুণমান সাধারণত শীতকালে অস্বাস্থ্যকর হয়ে যায় এবং বর্ষাকালে কিছুটা উন্নত হয়।
আরও পড়ুন: বাতাসে কার্বন ডাই অক্সাইডের পরিমাণে মাইলফলক
২০১৯ সালের মার্চ মাসে পরিবেশ অধিদপ্তর ও বিশ্বব্যাংকের একটি প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে যে, ঢাকার বায়ু দূষণের তিনটি প্রধান উৎস হল, ইটভাটা, যানবাহনের ধোঁয়া ও নির্মাণ সাইটের ধুলো।
জাতিসংঘের তথ্যমতে, বিশ্বব্যাপী প্রতি ১০ জনের মধ্যে ৯ জন দূষিত বাতাসে শ্বাস নেন এবং বায়ু দূষণের কারণে প্রতি বছর প্রধানত নিম্ন ও মধ্য আয়ের দেশে আনুমানিক ৭০ লাখ মানুষের অকাল মৃত্যু ঘটে।
কুড়িগ্রামে বন্যা পরিস্থিতির আরও অবনতি, এক লাখ মানুষ পানিবন্দি
উজান থেকে আসা পাহাড়ি ঢল ও টানা বৃষ্টির কারণে প্রধান প্রধান নদীর পানির বিপদসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হওয়ায় কুড়িগ্রাম জেলার বন্যা পরিস্থিতির আরও অবনতি হয়েছে। এতে জেলার এক লাখ মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন।
স্থানীয় পানি উন্নয়ন বোর্ডের তথ্য অনুযায়ী, শনিবার সকাল ৬টায় সেতু পয়েন্টে ধরলা নদীর পানি বিপদসীমার ২২ সেন্টিমিটার ওপরে এবং চিলমারী পয়েন্টে ব্রহ্মপুত্র নদের পানি বিপদসীমার ২২ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
এছাড়া টানা বর্ষণে তিস্তা নদীর পানিও অনেক জায়গায় বেড়েছে।
আরও পড়ুন: বন্যার্তদের জন্য ২৬ হাজার শুকনো খাবারের প্যাকেটসহ নগদ অর্থ বরাদ্দ
কুড়িগ্রাম সদর, উলিপুর, ফুলবাড়ী, নাগেরশ্বরী, ভুরুঙ্গামারী ও চিলমারী উপজেলার নিচু এলাকা ও চরাঞ্চল পানিতে তলিয়ে গেছে এবং বন্যায় প্রায় শতাধিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ হয়ে গেছে।
জেলার ৩০টি পয়েন্টে নদীভাঙ্গন তীব্র আকার ধারণ করেছে এবং ২০টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও বহু ঘরবাড়ি ভাঙনের ঝুঁকিতে রয়েছে।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের সূত্রে জানা গেছে, বন্যায় ছয় হাজার হেক্টর জমির ফসল তলিয়ে গেছে এবং ১৫০টি পুকুরের মাছ ভেসে গেছে।
আরও পড়ুন: সিলেটে বন্যা পরিস্থিতির আরও অবনতি, মানবিক বিপর্যয়ের আশঙ্কা
এছাড়া জেলার ৯টি উপজেলার অনেক সড়ক পানিতে তলিয়ে যাওয়ায় সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে।
বন্যার পানি বসতবাড়িতে ঢুকে পড়ায় অনেকেই রাস্তা ও বাঁধসহ উঁচু স্থানে আশ্রয় নিয়েছেন।
গত কয়েকদিন ধরে বন্যা কবলিত এলাকার হাজারো মানুষ খাদ্য ও সুপেয় পানির সংকটে ভুগছেন।
চট্টগ্রামে টানা বৃষ্টিতে পাহাড় ধসে নিহত ৪
চট্টগ্রামে টানা বৃষ্টির কারণে পৃথক পাহাড় ধসের ঘটনায় চারজন নিহত হয়েছেন। শুক্রবার দিবাগত রাতে নগরীর আকবর শাহ থানার বরিশাল ঘোনা ও বিজয় নগর এলাকায় এসব দুর্ঘটনা ঘটে।
নিহতরা হলেন- শাহীনুর (৩২), লিটন (২৪), ইমন (১৪) ও মাইনুর আখতার (২০)।
আকবর শাহ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ওয়ালি উদ্দিন আকবর বলেন, রাত ১টার দিকে বরিশাল ঘোনা এলাকায় পাহাড় ধসের ঘটনা ঘটে। পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিসের একটি দল ঘটনাস্থলে গিয়ে পাঁচজনকে উদ্ধার করে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠায়। হাসপাতালের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক শাহিনুর আক্তার (২৬) ও মাইনুল আক্তারকে (২৪) মৃত ঘোষণা করেন।
আরও পড়ুন: চট্টগ্রামে বাসচাপায় পুলিশ কনস্টেবল নিহত
অন্যদিকে একই দিন রাত ৩টার দিকে বিজয় নগর এলাকায় আরেকটি পাহাড় ধসের ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় লিটন ( ২৩) ও ইমন (১৪) নামে আরও দুজনের মৃত্যু হয়।
চট্টগ্রাম পতেঙ্গা আবহাওয়া অফিস সূত্র অনুযায়ী, চট্টগ্রামে গত তিনদিন ধরে টানা বৃষ্টি হচ্ছে। শনিবার সকাল ছয়টা পর্যন্ত গত ২৪ ঘণ্টায় চট্টগ্রামে ৪৮ দশমিক ৮ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে। আজকেও বৃষ্টি অব্যাহত থাকবে।
চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, শুক্রবার সকাল থেকে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকেঝুঁকিপূর্ণ এলাকায় মাইকিং ও সেখান থেকে এলাকাবাসীকে সরে যাওয়ার জন্য নির্দেশনা দেয়া হয়।
আরও পড়ুন: চট্টগ্রামে ইউপি নির্বাচনে বিরোধের জেরে স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা খুন
এছাড়া ভারী বর্ষণ ও দুর্যোগ মোকাবিলায় জেলা প্রশাসনের তত্ত্বাবধানে আগ্রাবাদ, বাকলিয়া, কাট্টলী ও চান্দগাঁও এলাকায় ১৯টি আশ্রয়কেন্দ্র প্রস্তুত রাখা হয়েছে।
চট্টগ্রামে বাসচাপায় পুলিশ কনস্টেবল নিহত
চট্টগ্রামের লোহাগাড়ায় বাসের চাপায় এক পুলিশ কনস্টেবল নিহত হয়েছেন। শুক্রবার রাত সাড়ে ৯টার দিকে চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কের উপজেলার চুনতি বাজারে এ দুর্ঘটনা ঘটে।
নিহত মারুফুল ইসলাম (২২) চকরিয়া উপজেলার হারবাং ইউনিয়নের নয়া বাজার এলাকার সাংবাদিক ছিদ্দিক আহমদের ছেলে এবং কনস্টেবল হিসেবে চট্টগ্রাম মহানগর পুলিশে কর্মরত ছিলেন।
আরও পড়ুন: চট্টগ্রাম ও ফেনীতে সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত ৭
চুনতি পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ উপপরিদর্শক (এসআই) রাফিকুল ইসলাম জামান, মারুফুল ইসলাম মোটরসাইকেল চালিয়ে হারবাংয়ের বাড়ি যাওয়ার পথে রাত সাড়ে ৯টার চুনতি এলাকায় পৌঁছালে বিপরীত দিক থেকে আসা একটি বাস তাকে চাপা দেয়। এতে ঘটনাস্থলেই তিনি নিহত হন।
বজ্রপাতে ১২ জনের মৃত্যু, চলতি বছরে সর্বোচ্চ
ময়মনসিংহ, জামালপুর, শেরপুর, লালমনিরহাট, সিরাজগঞ্জ ও কেরানীগঞ্জে শুক্রবার বজ্রপাতে অন্তত ১২ জন নিহত এবং দুজন আহত হয়েছেন বলে জানিয়েছে পুলিশ।
চলতি বছরে একদিনে বজ্রপাতে নিহতের সর্বোচ্চ সংখ্যা এটি।
ময়মনসিংহের বিভিন্ন এলাকায় বজ্রপাতে তিন শিশুসহ ছয়জনের মৃত্যু হয়েছে।
নান্দাইল উপজেলার কাঁকরহাটি গ্রামের সৈয়দ মিয়া (১২), স্বাধীন (১১) ও শাওন (৭) ফুটবল খেলার সময় বজ্রপাতে মারা যায়।
এছাড়া ময়মনসিংহ সদরের বালাপাড়ায় একটি জলাশয়ে মাছ ধরারকালে বজ্রপাতে দুই জেলে নিহত হয়েছেন।
কোতোয়ালি মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা শাহ কামাল আকন্দ জানান, নিহতরা হলেন- একই এলাকার আবু বক্কর (৪০) ও জাহাঙ্গীর আলম (৩২)।
আরও পড়ুন: রূপসা নদীতে বজ্রপাতে ট্রলার মাঝি নিখোঁজ, আহত ৭
এছাড়া একই দিনে সকালে ধোবাউড়া উপজেলার চরমোহিনী গ্রামে বজ্রপাতে আরেকজনের মৃত্যু হয়।
বিষয়টি নিশ্চিত করে ধোবাউড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) টিপু সুলতান জানান, মুষলধারে বৃষ্টির সময় চরমোহিনী গ্রামের ঘোগরা বিলে মাছ ধরার সময় বজ্রপাতে আহত হয় গফুর মিয়ার ছেলে আবু সাঈদ (৩০)। তাকে উদ্ধার করে ধোবাউড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেয়ার পথে তার মৃত্যু হয়।
এদিকে সিরাজগঞ্জ সদর উপজেলার যমুনা নদীতে বজ্রপাতে এক ব্যবসায়ী নিহত ও দুই শ্রমিক আহত হয়েছেন।
সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. নজরুল ইসলাম বলেন, ‘নিহত আব্দুর রাজ্জাক মুন্সী (৫০) সদর উপজেলার যমুনার দুর্গম চরাঞ্চলের কাটাঙ্গার চরের বর্ণি গ্রামের দরবেশ আলী মুন্সীর ছেলে। আহতরা হলেন-শহরের একডালা মহল্লার সাইফুল (২৮) ও শামীম (৩২)।’
কেরানীগঞ্জের রোহিতপুরে ফুটবল খেলার সময় বজ্রপাতে এক কিশোরের মৃত্যু হয়েছে।
কেরানীগঞ্জ মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবু ছালাম মিয়া জানান, নিহত সজিব সরকার (১৮) একই এলাকার বাসিন্দা।
লালমনিরহাটে মাছ ধরার সময় বজ্রপাতে হাতীবান্ধা উপজেলার আব্দুল মতিন (৫২) নামে এক জেলে নিহত হয়েছেন বলে জানিয়েছেন উপজেলার সানিয়াজান ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আবুল হাসেম তালুকদার।
বগুড়ায় ধানখেতে কাজ করার সময় বজ্রপাতে এক কৃষকের মৃত্যু হয়েছে।
নিহত তোজবেল হোসেন (৭০) ধুনট উপজেলার এলাঙ্গী ইউনিয়নের বলে জানিয়েছেন এলাঙ্গী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান তোজাম্মেল হক।
শেরপুরের নকলা উপজেলায় শুক্রবার ভোররাতে বজ্রপাতে ৩৫ বছর বয়সী এক ব্যক্তির মৃত্যু হয়েছে বলে পুলিশ জানিয়েছে।
আরও পড়ুন: রাঙামাটিতে বজ্রপাতে ২ শিক্ষার্থীর মৃত্যু
নিহত শওকত আলী একই এলাকার এবং কায়দা উত্তর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে অফিস সহকারী ছিলেন।
পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, শওকত তার ছোট ভাই মেহেদী হাসানকে নিয়ে পুকুরের পাড় মেরামত করতে যায় যাতে পানিতে থাকা মাছ ভেসে না যায়। এ সময় শওকতের ওপর বজ্রপাত হয়।
তাকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে মৃত ঘোষণা করা হয় বলে নকলা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ মুশফিকুর রহমান জানান।
জামালপুরের সরিষাবাড়ী উপজেলায় মাছ ধরার সময় বজ্রপাতে ১৫ বছরের এক কিশোরের মৃত্যু হয়েছে।
সরিষাবাড়ী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. দেবাশীষ রাজবংশী জানান, হাসপাতালে নেয়ার পর নবম শ্রেণির ছাত্র শাকিলকে মৃত ঘোষণা করা হয়।
রাত ৮টার পর দোকান-শপিংমল বন্ধ রাখার নির্দেশ
বিশ্বব্যাপী জ্বালানির অব্যাহত মূল্যবৃদ্ধিজনিত পরিস্থিতিতে বিদ্যুৎ ও জ্বালানি সাশ্রয়ে রাত ৮টার পর সারা দেশে দোকান, শপিংমল, মার্কেট, বিপণি বিতান, কাঁচা বাজার খোলা না রাখার নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
এ নির্দেশনার যথাযথ বাস্তবায়ন নিশ্চিত করতে সংশ্লিষ্টদের চিঠি দিয়েছে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়।
প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের মহাপরিচালক (প্রশাসন) মো. আহসান কিবরিয়া সিদ্দিকের সই করা চিঠিতে বলা হয়, বিশ্বব্যাপী জ্বালানির অব্যাহত মূল্যবৃদ্ধিজনিত বিদ্যমান পরিস্থিতিতে বিদ্যুৎ ও জ্বালানি সাশ্রয়ের নিমিত্ত প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণের জন্য প্রধানমন্ত্রী সানুগ্রহ নির্দেশনা দিয়েছেন।
বন্যার্তদের জন্য ২৬ হাজার শুকনো খাবারের প্যাকেটসহ নগদ অর্থ বরাদ্দ
বন্যাসহ বিভিন্ন প্রাকৃতিক দুর্যোগে ক্ষতিগ্রস্তদের সাহায্যার্থে মানবিক সহায়তা হিসেবে বিতরণের লক্ষ্যে ২৬ হাজার শুকনো ও অন্যান্য খাবারের প্যাকেট বরাদ্দ দেয়া হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (১৬ জুন) এ বরাদ্দ দেয়া হয় বলে শুক্রবার দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়।
এতে বলা হয়, প্রতিটি প্যাকেটে চাল-ডাল-তেল-লবণ চিনিসহ যে খাদ্য সামগ্রী রয়েছে তা পাঁচ সদস্যের একটি পরিবারের এক সপ্তাহ চলবে বলে আশা করা যায়। একই সাথে নগদ টাকা এবং চালও বরাদ্দ দেয়া হয়েছে।
বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত সিলেট জেলায় ২০০ মেট্রিক টন চাল, ৩০ লাখ নগদ টাকা এবং ৮ হাজার শুকনো ও অন্যান্য খাবারের প্যাকেট বরাদ্দ দেয়া হয়েছে।
আরও পড়ুন: ধরলার পানি বিপদসীমার ৩ সেন্টিমিটার ওপরে
সুনামগঞ্জ জেলার জন্য নগদ ৩০ লাখ টাকা এবং ৮ হাজার শুকনো ও অন্যান্য খাবারের প্যাকেট, নেত্রকোণা জেলার জন্য ১০০ মেট্রিক টন চাল, ১০ লাখ নগদ টাকা এবং ৩ হাজার শুকনো ও অন্যান্য খাবার প্যাকের বরাদ্দ দেয়া হয়েছে।
এছাড়া কুড়িগ্রাম জেলার জন্য নগদ ১০ লাখ টাকা এবং ১ হাজার শুকনো ও অন্যান্য খাবারের প্যাকেট বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। রংপুর জেলার জন্য ৩ হাজার এবং নীলফামারী জেলার জন্য ৩ হাজার শুকনো ও অন্যান্য খাবারের প্যাকেট বরাদ্দ দেয়া হয়েছে।
বরাদ্দকৃত ত্রাণকার্য (নগদ) অর্থ শুধুমাত্র আপদকালীন সময়ে বন্যাসহ বিভিন্ন প্রাকৃতিক দুর্যোগে ক্ষতিগ্রস্তদের মাঝে মানবিক সহায়তা হিসেবে বিতরণ করতে হবে বলে বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে।
আরও পড়ুন: বন্যা পরিস্থিতির অবনতিতে ওসমানী বিমানবন্দরে ফ্লাইট ওঠা-নামা বন্ধ
তিস্তায় পানি বেড়ে নিম্নাঞ্চল প্লাবিত
নানিকে ঘুমের ওষধ খাইয়ে নাতনিকে ধর্ষণ, যুবক গ্রেপ্তার
চট্টগ্রামের হাটহাজারীতে নানিকে ঘুমের ওষধ খাইয়ে ৬ষ্ঠ শ্রেণিতে পড়ুয়া ছাত্রীকে ধর্ষণের অভিযোগে এক যুবককে গ্রেপ্তার করেছে র্যাব-৭।
গ্রেপ্তার মো. আসিফ হোসেন (২২) হাটহাজারী উপজেলার মির্জাপুর ইউনিয়নের মো. ইয়াকুবের ছেলে।
শুক্রবার সন্ধ্যায় র্যাব-৭ এ পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
র্যাব জানায়, ভুক্তভোগী ছাত্রী স্কুলে যাওয়া আসার পথে এলাকার যুবক আসিফ রাস্তাঘাটে প্রায়ই উত্যক্ত করত। চলতি বছরের ১ ফেব্রুয়ারি আসিফ পূর্ব পরিকল্পিতভাবে মেয়েটিকে ১০টি ঘুমের ট্যাবলেট দিয়ে তার নানিকে খাওয়াতে বলে এবং তার কথামত কাজ না করলে মেরে ফেলার হুমকি দেয়।
মেয়েটি ভয়ে সেদিন রাত ৮টার দিকে তার নানিকে প্রেসার ও গ্যাস্ট্রিকের ট্যাবলেটের কথা বলে দুটি ঘুমের ট্যাবলেট খাওয়ালে নানি ঘুমিয়ে পড়ে। এরপর রাত ৯টার দিকে আসিফ পূর্ব পরিকল্পিতভাবে ঘরে ঢুকে স্কুলছাত্রীকে ধর্ষণ করে। এরপর ১৯ মার্চ থেকে ২ এপ্রিল পর্যন্ত বিভিন্ন সময়ে আসিফ মৃত্যুর ভয় দেখিয়ে একাধিকবার ধর্ষণ করে বলে মেয়েটির মা হাটহাজারী থানায় মামলা করে।
র্যাব-৭ এর সহকারী পরিবালক (মিডিয়া) নুরুল আবছার জানান, এ ঘটনা জানার পর মেয়েটির মা তার নাবালিকা মেয়ের ঘটনার সুষ্ঠু বিচার ও আসামির বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য র্যাব-৭, চট্টগ্রাম বরাবর একটি অভিযোগ দায়ের করে। এর প্রেক্ষিতে র্যাব গোপন সংবাদের ভিত্তিতে আসিফ হোসেনকে গ্রেপ্তার করে।
র্যাব জানায়, গ্রেপ্তার আসামি স্কুলছাত্রীকে ভয় দেখিয়ে পরিকল্পিতভাবে একাধিকবার ধর্ষণ করেছে বলে স্বীকার করেছে।
পড়ুন: খুলনায় ধর্ষণ মামলায় পুলিশ কনস্টেবল গ্রেপ্তার