বুয়েটের শিক্ষার্থীদের সাথে তাদের ১০ দফা দাবির বিষয়ে বক্তব্য দিতে গিয়ে শুক্রবার সন্ধ্যায় তিনি এ ঘোষণা দেন।
ভিসি বলেন, ‘নিজস্ব ক্ষমতাবলে আমি ক্যাম্পাসে সব ধরনের সাংগঠনিক ছাত্র রাজনীতি নিষিদ্ধ ঘোষণা করছি। একই সাথে আবরার হত্যায় জড়িত ১৯ জনকে সাময়িক বহিষ্কার করছি।’
শিক্ষার্থীদের কাছে ক্ষমা চেয়ে তিনি বলেন, ‘আবরার হত্যার পর আমার কিছু ঘাটতি ছিল। আমি আশা করি পিতৃতুল্য মনে করে তোমরা আমাকে ক্ষমা করবে।’
শিক্ষার্থীদের ১০ দফা দাবির সাথে একমত পোষণ করে ভিসি বলেন, ‘আবরার হত্যা মামলার সম্পূর্ণ ব্যয় বহন করবে বুয়েট প্রশাসন এবং তার পরিবারকে ক্ষতিপূরণ দেয়া হবে। ক্যাম্পাসে র্যাগিং বন্ধ করা হবে এবং শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হবে।’
বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগ এবং হলের কয়েকশ শিক্ষার্থী আলোচনায় উপস্থিত ছিলেন।
এর আগে বেলা সোয়া ১১টার দিকে শতাধিক শিক্ষার্থী প্ল্যাকার্ডসহ বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ মিনারের সামনে জড়ো হন। এসময় আবরারের হত্যাকারীদের ফাঁসির দাবিতে বিভিন্ন ধরনের স্লোগান দেয় বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা।
১০ দফা দাবি নিয়ে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের সাথে বিকালে আলোচনায় বসেন ভিসি অধ্যাপক ড. সাইফুল ইসলাম।
বুয়েট শিক্ষার্থীদের ১০ দফা দাবিগুলো হচ্ছে: আবরারের খুনিদের সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিত করা; হত্যাকাণ্ডে জড়িতদের শুক্রবার বিকাল ৫টার মধ্যে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আজীবন বহিষ্কার; মামলার সব খরচ ও আবরারের পরিবারের ক্ষতিপূরণ বুয়েট প্রশাসনকে বহন করা; দায়েরকৃত মামলা দ্রুত বিচার ট্রাইবুনালের অধীনে স্বল্পতম সময়ে নিষ্পত্তিতে বুয়েট প্রশাসনকে যথাযথ পদক্ষেপ নেয়া এবং অবিলম্বে চার্জশিটের কপিসহ অফিসিয়াল নোটিস দেয়া।
এছাড়া বুয়েটে ‘সাংগঠনিক ছাত্র রাজনীতি’ নিষিদ্ধ করা; বুয়েট ভিসি ও ছাত্র কল্যাণ উপদেষ্টাকে (ডিএসডব্লিউ) জবাবদিহি করা; আবাসিক হলগুলোতে র্যাগিংয়ের নামে ভিন্ন মতাবলম্বীদের ওপর সকল প্রকার শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন বন্ধ করতে জড়িতদের ছাত্রত্ব বাতিলে পদক্ষেপ নেয়া; নির্যাতন বিরোধী রিপোর্টের জন্য অফিসিয়াল সাইটে পোর্টাল খুলে ঘটনাগুলোর দ্রুত বিচার করা এবং শের-ই-বাংলা হলের প্রভোস্টকে প্রত্যাহার করা।
বুয়েটের ইলেকট্রিকাল অ্যান্ড ইলেকট্রনিক ইঞ্জিনিয়ারিং (ইইই) বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী আবরারকে (২১) রবিবার রাত ৩টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের শের-ই-বাংলা হলের সিঁড়ি থেকে অচেতন অবস্থায় উদ্ধার করা হয়।
পরে বুয়েটের মেডিকেল কর্মকর্তা ডা. মো. মাসুক এলাহি তাকে মৃত ঘোষণা করেন। এর আগে আবরারকে হলের ২০১১ নম্বর কক্ষে নিয়ে মারধর করেন ছাত্রলীগের কয়েকজন নেতাকর্মী।
আবরার হত্যায় দায়ের করা মামলায় এখন পর্যন্ত ১৮ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। সোমবার সন্ধ্যায় আবরারের বাবা বরকত উল্লাহ ১৯ জনকে আসামি করে চকবাজার থানায় মামলা করেন। মামলাটি মঙ্গলবার ডিবিতে স্থানান্তর করা হয়।