রাজনীতি
নির্বাচনে ভয় পেলে রাজনীতি নয়, এনজিওতে যোগ দিন: আমীর খসরু
নির্বাচনে যারা ভয় পান, তাদের রাজনীতিতে না থেকে এনজিও বা প্রেসার গ্রুপ হিসেবে কাজ করা উচিত বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী।
তিনি বলেন, ‘যারা নির্বাচনে ভয় পান, তাদের রাজনীতি করার দরকার নেই। তারা চাইলে প্রেসার গ্রুপ হিসেবে কাজ করতে পারেন, এনজিওতে যেতে পারেন। আপনি রাজনীতি করবেন, নির্বাচন এড়াবেন, আবার একই সঙ্গে গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়াও বাধাগ্রস্ত করবেন—এটা চলতে পারে না।’
রবিবার (২৭ জুলাই) ঢাকার রিপোর্টার্স ইউনিটিতে ভাসানী জনশক্তি পার্টি ও ভাসানী অনুসারী পরিষদের আয়োজিত ‘জুলাই গণ-অভ্যুত্থান’–এর প্রথম বর্ষপূর্তি উপলক্ষে আয়োজিত এক আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন।
আমীর খসরু বলেন, যেসব দেশে গণ-অভ্যুত্থানের পর নির্বাচন বিলম্বিত হয়েছে, সেখানে বিভাজন, গৃহযুদ্ধ ও রাষ্ট্র হিসেবে ব্যর্থতার উদাহরণ রয়েছে। কিন্তু যারা দ্রুত নির্বাচন দিয়ে গণতন্ত্রে ফিরে গেছে, তারা অর্থনৈতিক, সামাজিক ও রাজনৈতিকভাবে উন্নতি করেছে।
জুলাইয়ের গণ-অভ্যুত্থান নিয়ে তিনি বলেন, এই আন্দোলন নিয়ে মতপার্থক্য থাকলেও, একে কেউ ‘হাইজ্যাক’ করার সুযোগ পাবে না। এই আন্দোলন নতুন কিছু নয়, কারণ অধিকার আদায়ের আন্দোলন বাংলাদেশের জনগণের রক্তে রয়েছে।
পড়ুন: স্বাধীন পুলিশ কমিশন গঠনে একমত রাজনৈতিক দলগুলো: অধ্যাপক আলী রীয়াজ
বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘৫ আগস্ট শেখ হাসিনা না গেলে আমরা বাড়ি ফিরতাম না। আমাদের আন্দোলন চলতেই থাকত।’
তিনি আরও বলেন, এই আন্দোলনের লক্ষ্য ছিল দেশের ওপর জনগণের মালিকানা পুনঃপ্রতিষ্ঠা এবং তাদের সাংবিধানিক অধিকার ফিরিয়ে দেওয়া।
যদিও বিএনপি নেতাকর্মীরা এই আন্দোলনে সবচেয়ে বেশি নিপীড়নের শিকার হয়েছেন, তবে বিএনপি কখনও এর কৃতিত্ব দাবি করেনি বলে মন্তব্য করেন তিনি।
তিনি বলেন, জনগণের ভোটে নির্বাচিত একটি সরকার প্রতিষ্ঠার মাধ্যমেই এই গণ-অভ্যুত্থান সফল হবে।
আমীর খসরু বলেন, সব বিষয়ে পূর্ণ ঐকমত্য প্রয়োজন নেই।
‘বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের ভিন্নমত ও বিশ্বাস থাকবে, সেটাই স্বাভাবিক। কিন্তু জাতীয় স্বার্থে ঐক্য জরুরি। মতপার্থক্য ছাড়া গণতন্ত্র টিকে না। আমরা একদলীয় শাসন প্রতিষ্ঠা করতে আসিনি।’
তিনি আরও বলেন, শেখ হাসিনার ‘পলায়নের’ পর দেশের জনগণের মনোভাবে পরিবর্তন এসেছে।
‘যারা এই পরিবর্তন বুঝতে পারছে না, তাদের কোনো রাজনৈতিক ভবিষ্যৎ নেই।’
বিএনপির এই নেতা বলেন, একটি নির্বাচিত সরকার না থাকায় অনেক পুলিশ ও সরকারি কর্মকর্তাই সঠিকভাবে কাজ করছেন না এবং বিদেশি বিনিয়োগকারীরাও সিদ্ধান্ত নিতে অপেক্ষায় আছেন।
১৩০ দিন আগে
সংস্কারের কথা বলে নির্বাচন পেছানোর কোনো বয়ান কাজে লাগবে না: রিজভী
সংস্কারের কথা বলে নির্বাচন পেছানোর নানা বয়ান আমরা শুনতে পাচ্ছি, সেগুলো কোনো কাজে লাগবে না বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী।
তিনি বলেন, বিগত ১৭ বছরে দেশে উন্নয়নের যে ফিরিস্তি স্বৈরাচারী হাসিনা সরকার দিয়েছে তা— এই পাহাড়ে না আসলে দেখতে পেতাম না।
বুধবার (৯ জুলাই) দুপুরে কাউখালী উপজেলার ঘাগড়া ইউনিয়নের দুর্গম এলাকায় বাংলাদেশ নারী ফুটবল দলের ফুটবলার ঋতুপর্ণার অসুস্থ মাকে দেখতে গিয়ে তিনি এসব কথা বলেন।
এ সময় কেন্দ্রীয় সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক ব্যারিষ্টার হেলাল, আমরা বিএনপির পরিবারের আহবায়ক আতিকুর রহমান রুমন, সদস্য সচিব মো. মিথুন, রাঙ্গামাটি জেলা বিএনপি সভাপতি দীপন তালুকদার দিপু, সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট মামুনুর রশিদ মামুনসহ অন্যান্য নেতারা উপস্থিত ছিলেন।
আরও পড়ুন: আমি নিজেই এখনো নির্বাচনের তারিখ জানি না: সিইসি
এ সময়, জাতীয়তাবাদী দল বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব রহুল কবির রিজভী ঋতুপর্ণা চাকমার মা ভুজিপুতি চাকমাকে আশ্বস্ত করেন। বলেন, বিএনপি সব সময় ঋতুর মায়ের পাশে থাকবে। বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বিভিন্ন গণমাধ্যমের খবর পেয়ে ঋতুর মায়ের পাশে দাঁড়ানের জন্য নির্দেশনা দিয়েছেন। তাই, এই প্রবল বৃষ্টি মাথায় নিয়ে দুর্গম এই পথ পাড়ি দিয়ে আমরা তার বাড়িতে এসেছি। আমরা ঋতুর মায়ের সকল চিকিৎসার খরচ বহন করব।
এসময় রিজভী ঋতুপর্ণার মায়ের হাতে ২ লাখ টাকা হাতে তুলে দেন। এছাড়া প্রতি মাসে কেমোথেরাপির ৩০ হাজার টাকা করে বিএনপির পক্ষ থেকে দেওয়ার ঘোষণা দেন তিনি।
পাহাড়ের গোল্ডেন গার্ল খ্যাত ঋতুপর্ণা চাকমার জোড়া গোলে এশিয়ান কাপের মূল পর্বে জায়গা করে নিয়েছে বাংলাদেশ নারী ফুটবল দল।
ঋতুপর্ণা চাকমার মা ভুজোপতি চাকমা ব্রেস্টক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে চিকিৎসাধীন। এরমধ্যে, তিনি তিনটি কেমোথেরাপি দিয়েছেন। প্রতি ২১ দিন পরপর তাকে চট্টগ্রাম শহরে নিয়ে গিয়ে কেমোথেরাপি দিতে হয়।
১৪৮ দিন আগে
রাজনীতির চেয়ারে ঘুণপোকা ধরেছে: ব্যারিস্টার ফুয়াদ
দেশের রাজনীতির চেয়ারে ঘুণপোকা ধরেছে বলে মন্তব্য করেছেন আমার বাংলাদেশ পার্টির (এবি পার্টি) সাধারণ সম্পাদক ব্যারিস্টার আসাদুজ্জামান ফুয়াদ। তিনি বলেছেন, ‘এই চেয়ার শুধু মেরামত করলে হবে না, চেয়ারটাই পরিবর্তন করতে হবে।’
শনিবার (২৬ এপ্রিল) বিকাল সাড়ে ৪টার দিকে চুয়াডাঙ্গায় এবি পার্টির উদ্যোগে একটি মতবিনিময় ও আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
ব্যারিস্টার ফুয়াদ বলেন, ‘রাজনীতি যদি জনগণের কল্যাণে না আসে, তবে সে রাজনীতির কোনো মূল্য নেই। আমরা চাই, আমার দেশের কৃষক, জেলে, দিনমজুরসহ নিরলস পরিশ্রম করা প্রতিটি মানুষ যেন রাষ্ট্রের সঠিক সেবা পায়। শিক্ষা, চিকিৎসা, কৃষিসহ প্রতিটি খাতে যেন সুশাসন প্রতিষ্ঠিত হয়।’
তিনি বলেন, ‘চুয়াডাঙ্গার বিভিন্ন সমস্যা আপনাদের সামনে তুলে ধরছি। চুয়াডাঙ্গায় স্বাস্থ্যখাতে অনিয়ম, শিক্ষার অবনতি ও অবকাঠামোগত উন্নয়নে দুর্নীতি উদ্বেগজনক হারে বেড়েছে। সাধারণ মানুষ এখনও ন্যায্য সেবা থেকে বঞ্চিত।’
‘বিশেষ করে পানি সংকট নিয়ে আমি গভীরভাবে উদ্বিগ্ন। মাথাভাঙ্গা নদীসহ অনেক নদী শুকিয়ে যাচ্ছে। অপরিকল্পিত বাঁধ নির্মাণ, নদী দখল ও দূষণের কারণে এই সংকটের সৃষ্টি। নদী বাঁচাতে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে। নদী না বাঁচলে কৃষি ও জনজীবন হুমকিতে পড়বে। আমরা নদী ও পানির ন্যায্য অধিকার রক্ষায় সোচ্চার থাকব।’
এই রাজনীতিক বলেন, ‘বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকার কিছু সম্ভাবনাময় অগ্রগতি দেখিয়েছে। বিদেশি বিনিয়োগকারীরা বাংলাদেশের প্রতি আগ্রহ দেখাচ্ছেন। সম্পূর্ণরূপে রেমিট্যান্স আসতে শুরু করেছে, যা দেশের অর্থনীতির জন্য ইতিবাচক। এই পরিবর্তন দীর্ঘদিন পরে দেখতে পাচ্ছি, যা আমাদের আশাবাদী করে তুলেছে।’
আরও পড়ুন: ঐকমত্য কমিশনের সাথে এবি পার্টির আলোচনা সোমবার
তিনি আরও বলেন, ‘সংস্কার, অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন—সবই প্রয়োজন। এই সরকার যেহেতু প্রতিশ্রুতি দিয়েছে যে ডিসেম্বর থেকে জুনের মধ্যেই এই বিষয়ে কার্যকর উদ্যোগ নেওয়া হবে, আমরা আশাবাদী তারা কথা রাখবেন। দেশের জন্য টেকসই গণতান্ত্রিক পরিবেশ তৈরি হবে—এটাই প্রত্যাশা।’
সভার বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন এবি পার্টির কেন্দ্রীয় কমিটির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আব্দুল্লাহ আল মামুন রানা। সভাপতিত্ব করেন জেলা এবি পার্টির আহ্বায়ক আলমগীর হোসেন।
চুয়াডাঙ্গা জেলা ও বিভিন্ন উপজেলার নেতা-কর্মীরা সভায় উপস্থিত ছিলেন। এ সময় প্রাণবন্ত আলোচনার মাধ্যমে দলীয় কার্যক্রম আরও গতিশীল করার অঙ্গীকার ব্যক্ত করেন দলটির উপস্থিত নেতারা।
২২২ দিন আগে
আ.লীগ কীভাবে রাজনীতি করবে, সেটা নির্ধারণের দায়িত্ব অন্তর্বর্তী সরকারের: রিজভী
ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত দল আওয়ামী লীগ কীভাবে রাজনীতি করবে, সেই দায়িত্ব বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারের বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী।
বুধবার (২৩ এপ্রিল) বেলা ১১টায় মানিকগঞ্জ সদর উপজেলার চারু শিল্পী মানবেন্দ্র ঘোষের অগ্নিদগ্ধ বাড়ি পরিদর্শন শেষে তিনি এসব কথা বলেন।
রিজভী বলেন, ‘সমস্ত গণতন্ত্রকামী মানুষ আপনাদের (অন্তর্বর্তী সরকার) সমর্থন দিয়েছে। কিন্তু কনস্টিটিউশনালি বা আইনগতভাবে অন্তর্বর্তী সরকারের কোনো ভিত্তি নেই।’
‘যারা গণতন্ত্রের জন্য লড়াই করেছেন, তারা প্রত্যেকেই আপনাদের সমর্থন করেছে। সে অনুযায়ী আপনারা দেশ চালাচ্ছেন। এখন আওয়ামী লীগ কীভাবে রাজনীতি করবে, সে দায়িত্ব অন্তর্বর্তী সরকারের,’ যোগ করেন তিনি।
আরও পড়ুন: বিভ্রান্তি তৈরি করলে পুনরায় ফ্যাসিবাদের উত্থান হতে পারে: সরকারকে রিজভী
বিএনপির এই জ্যেষ্ঠ নেতা বলেন, ‘প্রশাসন আপনাদের হাতে, অন্য সব স্টেট মেশিনারি আপনাদের হাতে। আওয়ামী লীগকে নিয়ে আপনারা কী করবেন, সেটা আপনাদেরই ঠিক করতে হবে।’
‘আওয়ামী লীগের দোসরদের অনুসারীরা ঘাপটি মেরে আছে নানা জায়গায়। ওদের কাছে পেট্রোল কিনে বাড়ি পুড়িয়ে দেওয়ার যে অর্থ, মানুষকে হত্যা করার জন্য যে অস্ত্র লাগে, সেসব তাদের কাছে আছে।’
তিনি বলেন, ‘সেটাকে দমন করতে আপনাদের কী আইন প্রণয়ন করতে হ,বে সেটা আপনারা জনগণের কাছে খোলাসা করুন। যেহেতু প্রশাসন আপনাদের হাতে। দোসরদের অনেকেই পালিয়ে গেছে পার্শ্ববর্তী দেশসহ অনেক জায়গায়। কিন্তু যারা নৈরাজ্য ছড়াচ্ছে তারা প্রশ্রয় পাচ্ছে কার দ্বারা?’
‘যারা ১৫ বছর যাবত শেখ হাসিনাকে পাহারা দিয়েছে, ব্যাংক লুট করেছে, অন্যের সম্পদ লুট করেছে, টাকা পাচার করেছে, তারা আজ এই জনসমুদ্রের ভিতর কোথায় লুকিয়ে আছে। অন্তর্বর্তী সরকার যদি খুঁজে বের করতে না পারে, তাহলে তো এই সরকারকে মানুষ ব্যর্থ সরকার বলবে,’ ভাষ্য রিজভীর।
আরও পড়ুন: সরকার কি কোনো গোপন পরিকল্পনা নিয়ে এগোচ্ছে, প্রশ্ন রিজভীর
এ সময় মানিকগঞ্জ জেলা বিএনপির আহবায়ক ও সাবেক সভাপতি আফরোজা খানম রিতা, আহ্বায়ক কমিটির সদস্য অ্যাডভোকেট আজাদ খান, গোলাম আবেদীন কায়সার, বিএনপির সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক রফিক উদ্দিন ভূঁইয়া হাবু, যুবদলের যুগ্ম আহবায়ক তুহিনুর রহমান তুহিন, মাসুদ পারভেজ, স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক জিন্নাহ খান, ছাত্রদলের সভাপতি আব্দুল খালেক শুভ, সাধারণ সম্পাদক সিরাজুল ইসলাম খান সজীব প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
২২৫ দিন আগে
কোনোভাবেই আ.লীগের রাজনীতি করার অধিকার নেই: নাসির উদ্দীন পাটোয়ারী
রিফাইন্ড হোক, কিংবা অন্য যেকোনোভাবেই হোক না কেন, বাংলাদেশে আওয়ামী লীগের কোনো রাজনীতি করার অধিকার নেই বলে মন্তব্য করেছেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপির) মুখ্য সংগঠক নাসির উদ্দীন পাটোয়ারী।
রবিবার (২৩ মার্চ) রাজধানীর বাংলামোটরে দলীয় কার্যালয়ে দলটির শ্রমিক শাখা গঠনের লক্ষ্যে এক সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এমন কথা বলেন।
আরও পড়ুন: নির্বাচন পেছাতে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করছে এনসিপি: ফারুক
এনসিপির মুখ্য সংগঠক (দক্ষিণাঞ্চল) হাসনাত আবদুল্লাহর ফেসবুক পোস্টের সঙ্গে দ্বিমত পোষণ করেছেন দলটির আরেক মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম। এ নিয়ে সামাজিকমাধ্যমে নেতিবাচক মন্তব্য পড়ছে। এ সম্পর্কে জানতে চাইলে নাসিরউদ্দিন পাটওয়ারী বলেন, ‘এনসিপি নেতাদের মধ্যে কোনো দূরত্ব কিংবা বোঝাপড়ার জায়গায় কোনো ঘাটতি নেই। তবে একটি বড় অভ্যুত্থান সংঘটিত হয়েছে। আন্দোলন ও রাজনৈতিক জায়গা—দুটোই আলাদা। সেই জায়গা থেকে এই গণঅভ্যুত্থানের ছাত্ররা নিজেদের রাজনৈতিক জায়গায় রূপান্তর করছেন।’
‘সেখান থেকে যদি কোনো ভুলত্রুটি হয়ে থাকে, দেশবাসীকে ক্ষমাসুন্দর দেখার অনুরোধ করছি। ফেসবুকে যেসব মন্তব্য পড়েছে, সেগুলো মূল্যায়ন করে আমরা দেখেছি, আমাদের ওপর মানুষের প্রত্যাশা অনেক উঁচু। সে ক্ষেত্র থেকে তারা আমাদের পরামর্শ দিয়ে থাকেন। আমরা সেই পরামর্শ নেই।’
শুরুতেই এমন হোঁচট খেলে আপনাদের দলের ভবিষ্যৎ কী—প্রশ্নে তিনি বলেন, “হাসনাত আবদুল্লাহর ফেসবুক পোস্ট রাজনৈতিক ও সেনা অঙ্গনে নতুন আলোচনার জন্ম দিয়েছে। তবে আমরা বলতে চাই, বিভিন্ন জায়গায় বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের বৈঠক হয়ে থাকে। যে বিষয়গুলো জনগণের কাছে স্পষ্ট না, সেগুলো আমরা পরিষ্কার করার চেষ্টা করি। কিন্তু যখন দল গঠন হয়েছে সেক্ষেত্রে আমি বলেছি, মিটিং নিয়ে জনগণের কাছে যখন বলা হবে, তখন অপরপক্ষের সম্মতির একটি বিষয় আছে। সেই জায়গা থেকে আমি বিষয়টি ‘শিষ্টাচারবহির্ভূত’ বলেছি।”
ক্যান্টনমেন্টের বৈঠকটি হাসনাত ও সার্জিসের বৈঠক ছিল, নাকি এনসিপির বৈঠক ছিল? যদি ব্যক্তিগত বৈঠক হয়, তাহলে আপনারা কী অবগত ছিলেন? জানতে চাইলে এই ছাত্রনেতা বলেন, ‘তারা বৈঠক সম্পর্কে আমাদের অবগত করেছিলেন। তবে বিষয়টি নিয়ে আমাদের মধ্যে কোনো আলোচনা হয়নি। এ নিয়ে একটি বৈঠক হওয়ার কথা আছে, তারপরে সবাইকে বিষয়টি স্পষ্ট করব।’
‘তবে দলীয় কিছু মানুষ এই বৈঠক সম্পর্কে জানতেন। কিন্তু ওখানে যে কথা হয়েছিল, সবগুলো সবার কাছে প্রকাশ করা হয়নি। কেন বৈঠক হয়েছিল, সে বিষয়ে হাসনাত আবদুল্লাহ স্পষ্ট করে দিয়েছেন।’
হাসনাত যে কথাগুলো লিখেছেন, সেগুলো সেনাসদর থেকে ‘অবান্তর’ বলে মন্তব্য করা হয়েছে— এ বিষয়ে মতামত জানতে চাইলে নাসির উদ্দীন পাটোয়ারী বলেন, ‘যে আলোচনা হয়েছে, সেটার কোনো সমাধান আসেনি। আবার বিভিন্নজন বিভিন্নভাবে কথা বলে যাচ্ছেন। আবার সেনাসদর থেকে যে বক্তব্য এসেছে, সেটা কোনো মুখপাত্রের মাধ্যমে আসেনি। আইএসপিআর থেকে এমন কোনো বক্তব্য আসেনি।’
আরও পড়ুন: আ.লীগকে রাজনীতিতে ফেরানোর যেকোনো প্রচেষ্টা প্রতিহত করতে এনসিপির অঙ্গীকার
২৫৬ দিন আগে
আমরা কোনো রাজনীতিতে ঢুকতে চাই না: সিইসি
অতীতে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন আয়োজন না করতে পারার জন্য নির্বাচন কমিশনে রাজনৈতিক দলগুলোর প্রভাবকে দায়ী করেছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ এম এম নাসির উদ্দিন। তিনি বলেন, আমরা কোনো রাজনীতিতে ঢুকতে চাই না।
রবিবার (৯ ফেব্রুয়ারি) রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন কমিশন ভবনে ‘সাংবাদিক হোসাইন জাকির বেস্ট রিপোর্টিং অ্যাওয়ার্ড-২০২৪ প্রদান অনুষ্ঠানে তিনি এমন কথা বলেন। নির্বাচন কমিশন বিটে কর্মরত সাংবাদিকদের সংগঠন রিপোর্টার্স ফোরাম ফর ইলেকশন অ্যান্ড ডেমোক্রেসি (আরএফইডি) এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছে।
নাসির উদ্দিন বলেন, ‘আমরা কমিশনে যারা আছি, আমরা কোনো রাজনীতিতে ঢুকতে চাই না। আমরা কোনো রাজনৈতিক দলের পক্ষে বা বিপক্ষে দাঁড়াতে চাই না। আমরা নিরপেক্ষ থাকতে চাই। আপনারা আমাদেরকে সাহায্য করবেন।’
আরও পড়ুন: সাবেক সিইসি বিচারপতি আব্দুর রউফের মৃত্যুতে আইন উপদেষ্টার শোক
‘আমরা নিরপেক্ষ থাকতে চাই। ইলেকশন কমিশনের এত বদনাম—এত গালি দেয়—এটা কেন হল? ১০০টা কারণ বলতে পারবেন, ২০০টা কারণ বলতে পারবেন! কিন্তু আমার কাছে এক নম্বর কারণ হলো পলিটিক্যাল কন্ট্রোল অফ দা ইলেকশন কমিশন (নির্বাচন কমিশনে রাজনৈতিক নিয়ন্ত্রণ)।’
‘এটি আমার কাছে মনে হয়েছে সবচাইতে বড় কারণ। রাজনীতির কাছে নির্বাচন কমিশনকে সঁপে দেওয়া—এটি হচ্ছে সবচেয়ে বড় কারণ,’ বলেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার।
তিনি আরও বলেন, ‘রাজনীতিবিদদের ইনফ্লুয়েন্স অন দা ইলেকশন কমিশন বন্ধ করা না যায়, আবার সেই পুরনো জিনিস রিপিট হবে বলে আমি মনে করি। দে আর থাউজেন্ড রিজন, তবে আমার বিবেচনা সবচেয়ে বড় কারণ দেয়ার মে বি পলিটিক্যাল কন্ট্রোল অন দ্য ইলেকশন কমিশন। এটি আমার কাছে সবচেয়ে বড় কারণ মনে হয়েছে অতীতে।’
আরও পড়ুন: সাবেক সিইসি বিচারপতি আবদুর রউফের ইন্তেকাল
২৯৮ দিন আগে
নির্বাচন ঘিরে বিএনপি-জামায়াতের বিভেদ কী গভীর হচ্ছে?
গেল ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর আওয়ামী লীগ রাজনীতির মাঠে অনুপস্থিত থাকায় আসন্ন নির্বাচনকে সামনে রেখে আধিপত্য বিস্তারের লড়াইয়ে দীর্ঘদিনের দুই শরিক বিএনপি ও বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী পরস্পর দূরে সরে যাচ্ছে বলে মনে করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা।
তারা বলছেন, বিএনপি ও জামায়াতের মধ্যে গভীর বিভেদ আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছে। তাদের নেতারা পরস্পরকে তীব্র সমালোচনা করছেন, যা দেশের রাজনৈতিক দৃশ্যপটে নতুন মেরুকরণের ইঙ্গিত দিচ্ছে।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা আরও বলছেন, অতীতে বিএনপি ও জামায়াতের মধ্যে দ্বন্দ্ব থাকলেও সাম্প্রতিক বছরগুলোতে তাদের মধ্যে যে মাত্রার বৈরিতা হয়েছে তা নজিরবিহীন। কারণ উভয় দলই তাদের রাজনৈতিক ক্ষমতা প্রদর্শন করার চেষ্টা করছে।
নির্বাচনের আগে আওয়ামী লীগ রাজনীতিতে ফিরে আসতে না পারলে ত্রয়োদশ সংসদে শক্তিশালী বিরোধী দল হিসেবে আবির্ভূত হতে জামায়াত অন্যান্য ইসলামপন্থী দলগুলোর সঙ্গে জোট গঠনের চেষ্টা করতে পারে বলেও ভবিষ্যদ্বাণী করেছেন তারা।
তবে আওয়ামী লীগ রাজনীতি করতে পারলে এবং নির্বাচনে অংশ নিতে পারলে বিএনপির জোটের অধীনে জামায়াতের নির্বাচনে অংশ নেওয়ার সম্ভাবনা উড়িয়ে দিচ্ছেন না তারা।
বর্তমান টানাপোড়েন সত্ত্বেও বিএনপি ও জামায়াত উভয় দলের সিনিয়র নেতারা ইউএনবিকে বলেছেন, তারা তাদের ঐক্য নষ্ট করতে চান না। কারণ, তারা বিশ্বাস করেন যেকোনো বিভক্তি আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে ফিরে আসাকে সহজ করতে পারে।
গণঅভ্যুত্থানের পর দুই পক্ষের মধ্যে দ্বন্দ্ব তীব্রতর হয়, প্রধানত ইসলামী ব্যাংকের দখল এবং অভ্যুত্থানের কৃতিত্ব নেওয়া নিয়ে সৃষ্ট বিরোধকে ঘিরে।
এরপরই জামায়াত নেতারা বিএনপির বিরুদ্ধে সারা দেশে 'দখল ও চাঁদাবাজি' করার অভিযোগ করেন।
বিএনপি প্রথমে কোনো মন্তব্য না করলেও ২৯ ডিসেম্বর বিএনপির সিনিয়র নেতা রুহুল কবির রিজভী অভিযোগ করেন, শুধু ভারত নয়, একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধবিরোধীসহ বেশ কয়েকটি রাজনৈতিক দল এই অস্থিরতাকে নিজেদের স্বার্থে কাজে লাগানোর চেষ্টা করছে।
আরও পড়ুন: রিজভী-খসরুসহ বিএনপি-জামায়াতের সহস্রাধিক নেতা-কর্মীর জামিন
রিজভী জামায়াতের বিরুদ্ধে ব্যাংকসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান দখল ও টেন্ডার কারসাজির সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগ করেন। জবাবে জামায়াত এসব অভিযোগ অস্বীকার করে বিবৃতি দিয়েছে।
জামায়াতের আমির ডা. শফিকুর রহমান গত ২৩ ডিসেম্বর রংপুরে এক অনুষ্ঠানে বলেন, দেশে পরীক্ষিত দেশপ্রেমিক শক্তি মাত্র দু'টি- একটি সেনাবাহিনী, অন্যটি বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী।
পরে রিজভী জামায়াতপ্রধানের বক্তব্যকে হাস্যকর আখ্যায়িত করেন এবং একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধে 'ইসলামপন্থী দলের' ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন।
বৃহস্পতিবার (৯ জানুয়ারি) এক অনুষ্ঠানে বিএনপির জ্যেষ্ঠ নেতা মেজর (অবসরপ্রাপ্ত) হাফিজ উদ্দিন আহমেদ জামায়াতের সমালোচনা করে বলেন, তারা (জামায়াত) ক্ষমা চাওয়ার পরিবর্তে একাত্তরের ভূমিকাকে জায়েজ করার চেষ্টা করছে।
দল দুটির সমর্থকরা সামাজিক মাধ্যমে বিশেষভাবে সক্রিয় হয়ে কঠোর শব্দ বিনিময় করেছে এবং তাদের মধ্যে ক্রমবর্ধমান শত্রুতাকে ঘি ঢালছে।
বিএনপি ও জামায়াতের মধ্যে একটি স্থায়ী সম্পর্ক রয়েছে। বিশেষত ১৯৯১ সালের জাতীয় নির্বাচনের সময় এবং ১৯৯৯ সালে তারা আনুষ্ঠানিক জোট গঠন করেছিল। দ্বাদশ জাতীয় নির্বাচনের আগে ২০ দলীয় জোট ভেঙে যাওয়া পর্যন্ত তারা রাজনৈতিকভাবে ঐক্যবদ্ধ ছিল।
বিশেষ করে ২০২২ সালের ডিসেম্বরে বিএনপি ২০ দলীয় জোট ভেঙে দিয়ে কিছু বামপন্থীসহ আরও অনেক দলের সঙ্গে যুগপৎ আন্দোলন করার পর থেকে বেশ কিছুদিন ধরেই দুই দলের মধ্যে লক্ষণীয় মতপার্থক্য ও বিভেদ দেখা যাচ্ছে।
২০১৮ সালে জামায়াতকে উপেক্ষা করে ড. কামাল হোসেনের নেতৃত্বাধীন গণফোরামসহ কয়েকটি দলের সমন্বয়ে বিএনপি জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট গঠন করায় বিএনপি-জামায়াত সম্পর্কের অবনতি ঘটে।
১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের সময় মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে জামায়াতের শীর্ষ নেতাদের গ্রেপ্তার ও ফাঁসি কার্যকরের বিষয়ে নীরবতা পালন করায় জামায়াত বিএনপির প্রতি ক্ষোভ পোষণ করে। পরে উচ্চ পর্যায়ের বৈঠকের পর মতপার্থক্য মিটে গেলেও এখন আবার উত্তেজনা দেখা দিয়েছে।
বিএনপির কয়েকজন নেতার অভিযোগ, শেখ হাসিনাকে ক্ষমতাচ্যুত করার পরপরই জামায়াতের আমির প্রথম বিএনপিকে আক্রমণ করে বলেছিলেন, 'একজন জালিম চলে গেলেও আরেকজনের দেশের লাগাম নেওয়া উচিত নয়।’
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, গত সেপ্টেম্বরে বিএনপি আগাম নির্বাচনের দাবি জানালেও যাদের জনসমর্থন নেই তারা নির্বাচন চায় না।
বিএনপি নেতারা বলছেন, নির্বাচনের রোডম্যাপ ও আগাম নির্বাচনের ব্যাপারে তারা সক্রিয়ভাবে সোচ্চার হলেও জামায়াত তাদের অসৎ উদ্দেশ্য নিয়ে নির্বাচন পেছাতে চায়।
তারা বলেন, জাতীয় নির্বাচনের আগে জামায়াত এখন স্থানীয় সরকার নির্বাচন চাইছে, যা বিএনপির অবস্থানের পরিপন্থী।
যোগাযোগ করা হলে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু বলেন, জামায়াত নেতাদের নেতিবাচক বক্তব্যে বিএনপি নেতাকর্মীদের ক্ষোভ থাকা স্বাভাবিক।
তিনি বলেন, 'গত ৪৬ বছরে জামায়াত নির্বাচনী হিসাব-নিকাশে বিএনপির প্রতিদ্বন্দ্বী না হলেও মনে হচ্ছে দলটি বিএনপিকে প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে ভাবতে শুরু করেছে।’
টুকু বলেন, জামায়াত নেতাদের তাদের রাজনৈতিক বক্তব্যের ব্যাপারে আরও সতর্ক হওয়া উচিত, কারণ বিএনপি দেশের বৃহত্তর স্বার্থে গণতন্ত্রপন্থী শক্তিকে ঐক্যবদ্ধ করার দিকে মনোনিবেশ করছে।
ইউএনবির সঙ্গে আলাপকালে জামায়াতে ইসলামীর প্রচার সম্পাদক অ্যাডভোকেট মতিউর রহমান আকন্দ বলেন, বিএনপির কিছু নেতা পুরোনো শব্দ ও অবমাননাকর বাক্য ব্যবহার করে জামায়াতের বিরুদ্ধে কটুক্তি করছেন।
আকন্দ বলেন, 'জামায়াত সম্পর্কে এত পুরোনো বক্তব্য দেশের মানুষ গ্রহণ করেনি। তারা যদি এসব সেকেলে বক্তব্য গ্রহণ করতেন তাহলে জামায়াতের জনপ্রিয়তা ও সাংগঠনিক সম্প্রসারণ বাড়ত না ‘
তিনি বলেন, জামায়াতের ক্রমবর্ধমান জনপ্রিয়তায় কিছু বিএনপি নেতা ঈর্ষা ও হিংসার বশবর্তী হয়ে এমন আক্রমণাত্মক বক্তব্য দিচ্ছেন।
আকন্দ অবশ্য দাবি করেন, কিছু নেতা মৌখিক বাক্য বিনিময় করলেও জাতির বৃহত্তর স্বার্থে উভয় দল ঐক্যবদ্ধ রয়েছে।
জামায়াতের এই নেতা বলেন, ‘দুই দলের শীর্ষ নেতাদের মধ্যে কোনো মনোমালিন্য নেই। আমিও মনে করি, দুই পক্ষের সম্পর্কের অবনতি হয়নি। কিছু নেতা হতাশা ও অহংকার থেকে মন্তব্য করছেন। এটা সাময়িক অবস্থান। মূল ঐক্য অটুট রয়েছে।’
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সরকার ও রাজনীতি বিভাগের অধ্যাপক ড. শামসুল আলম বলেন, আওয়ামী লীগের অনুপস্থিতিতে জামায়াত বিএনপির বিরুদ্ধে নেতিবাচক মন্তব্য করে তৃণমূলের সংগঠনকে উজ্জীবিত ও সম্প্রসারণের চেষ্টা করছে।
তিনি বলেন, বিএনপির ছাত্র সংগঠন ছাত্রদলকে চ্যালেঞ্জ করে জামায়াতপন্থী ছাত্রশিবিরও সব শিক্ষাঙ্গনে নিজেদের আধিপত্য প্রতিষ্ঠার চেষ্টা করছে।
তিনি বলেন, ‘আমি মনে করি, পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে কেন্দ্র পর্যায়ে নয়, দুই দলের তৃণমূল পর্যায়ে ফাটল ধরেছে। তবে নির্বাচনের আগে হয় দুই দল পুনরায় একত্রিত হবে, না হয় নতুন মেরুকরণ হবে।’
আরও পড়ুন: পদোন্নতির দাবিতে একট্টা হচ্ছেন সচিবালয়ের বিএনপি-জামায়াতপন্থী কর্মকর্তারা
৩২৭ দিন আগে
রাজনীতি করতে হলে জনগণের কথা মাথায় রাখতে হবে: সেলিম উদ্দিন
রাষ্ট্রের প্রতিটি নাগরিকের নিরাপদ আশ্রয়ের সমাজ প্রতিষ্ঠিত করতে জামায়াত কাজ করছে বলে মন্তব্য করেছেন দলটির কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী উত্তরের আমির মোহাম্মদ সেলিম উদ্দিন।
তিনি বলেন, ‘জামায়াতে ইসলামী এমন একটি সমাজ প্রতিষ্ঠার প্রত্যয়ে কাজ করে যাচ্ছে, যেখানে রাষ্ট্রই প্রত্যেক নাগিরকের আয়-রোজগারের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ এবং নিরাপদ আশ্রয়স্থল হবে। রাষ্ট্রই অন্ন, বস্ত্র, বাসস্থান, শিক্ষা ও চিকিৎসাসহ সকল মানুষের মৌলিক অধিকারের নিশ্চয়তা প্রদান করবে।’
সোমবার (৬ জানুয়ারি) সকালে দক্ষিণ খান পশ্চিম থানা জামায়াতের ৫০ নম্বর ওয়ার্ড আয়োজিত সমাজের দরিদ্র ও সুবিধাবঞ্চিত শীতার্ত মানুষের মধ্যে শীতবস্ত্র বিতরণকালে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন।
সেলিম উদ্দিন বলেন, আমাদের দেশের একশ্রেণির রাজনীতিক জনগণের ভোট নিয়ে নিজেরাই দেশের মালিক-মোক্তার বনে যান। তারা নিজেদের রাজনৈতিক উচ্চাভিলাষ চরিতার্থ ও জনগণের ওপর জুলুম করার জন্যই মাস্তান পোষেন। মানুষ তাদের পেছনে দৌঁড়াতে বাধ্য হয়। কিন্তু সেদিন শেষ হয়ে এসেছে।
তিনি আরও বলেন, অপরাজনীতি বাংলাদেশে আর কোনোভাবেই চলবে না। এদেশে রাজনীতি করতে হলে জনগণের কথা মাথায় রেখেই করতে হবে। এক টাকার ঘুষ, দুর্নীতি, চাঁদাবাজী, টেন্ডারবাজী, সন্ত্রাস, নৈরাজ্য, অপরাজনীতি ও জনগণকে কষ্ট দেওয়ার অশুভ বৃত্ত থেকে সংশ্লিষ্টদের অবশ্যই বেরিয়ে আসতে হবে। ব্যক্তিস্বার্থ, সংকীর্ণ দলীয় স্বার্থের বিপরীতে জাতীয় স্বার্থকে প্রধান্য দিয়ে দেশ গড়ার প্রত্যয় গ্রহণ করতে হবে। তাহলে আমরা জাতিকে এক নতুন বাংলাদেশ উপহার দিতে সক্ষম হবো। তিনি দেশকে ক্ষুধা, দারিদ্রমুক্ত ও সুখী-সমৃদ্ধ করতে দলমত নির্বিশেষে সকলকে ঐক্যবদ্ধ থাকার আহ্বান জানান।
জামায়াতের এই নেতা বলেন, স্বাধীনতার পর দেশে রাজনীতি ও রাষ্ট্রাচারকে ব্যসায়িক পণ্যে পরিণত করা হয়েছে। পতিত স্বৈরাচারের আমলে ব্যাপকভাবে মূল্যস্ফীতি ঘটেছে। এমনকি বই, খাতা, কলমসহ শিক্ষা উপকরণের দাম ছিল সাধারণ মানুষের নাগালের বাইরে। রাজনীতিকে পরিণত করা হয়েছিল জুলুম- শোষণের হাতিয়ার হিসাবে। তাই সেই অশুভ রাজনীতির কালো থাবা থেকে বেড়িয়ে এসে আমাদেরকে জনকল্যাণের রাজনীতি শুরু করতে হবে।
আরও পড়ুন: এদেশে আর কোনো মাইনরিটি-মেজরিটি শুনতে চাই না: জামায়াত আমীর
দেশের সকল নাগিরক সুখে-শান্তিতে থাকতে পারে সকলে মিলে সে পরিকল্পনা গ্রহণ সময়ের সবচেয়ে বড় দাবি বলেও উল্লেখ করেন তিনি। একবিংশ শতাব্দীর বৈশ্বিক চ্যালেঞ্জ চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় আমাদেরকে সার্বিক প্রস্তুতি গ্রহণ করতে হবে। দারিদ্র বিমোচন ও বেকার সমস্যার সমাধনের জন্য কর্মসংস্থান সৃষ্টির জন্য দেশে ব্যাপকভিত্তিক শিল্পায়ন হওয়া দরকার। তাহলেই দেশ আত্মনির্ভরশীল হয়ে উঠবে।
থানা আমির আবু সাঈদ শাহনাওয়াজের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরা সদস্য ও উত্তরা পূর্ব জোন পরিচালক মুহাম্মদ জামাল উদ্দীন।
উপস্থিত ছিলেন থানা নায়েবে আমির মো. মামুন, সেক্রেটারি আলী হোসাইন মুরাদ, কাউন্সিলর প্রার্থী ইঞ্জিনিয়ার ফখরুল আলম ভূঁইয়া, থানা কর্মপরিষদ সদস্য মো. আইয়্যুব আলী, মো. আশরাফুল আলম, সিরাজুল ইসলাম মামুন, নূরুল কবির ও নজরুল ইসলাম চৌধুরী প্রমুখ।
৩৩২ দিন আগে
আজ হোক বা কাল, রাজনীতিবিদরাই দেশ চালাবে: উপদেষ্টা
নৌপরিবহন এবং বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অবসরপ্রাপ্ত) ড. এম সাখাওয়াত হোসেন বলেছেন, আজ হোক বা কাল রাজনীতিবিদরাই দেশ চালাবেন।
শনিবার (৭ ডিসেম্বর) দুপুরে সাতক্ষীরার ভোমরা স্থলবন্দর পরিদর্শনে এসে এসব কথা বলেন নৌপরিবহন উপদেষ্টা এম সাখাওয়াত হোসেন।
উপদেষ্টা বলেন, যদি রাজনীতিবিদদের মধ্যে ঐকমত্য না হয়, তাহলে জাতীয় ঐক্যের যে পথ নির্ধারণ করার কথা, সেটা এলোমেলো হয়ে যায়।
আরও পড়ুন: চ্যালেঞ্জিং সময়ে তৈরি পোশাক ক্রেতাদের ভূমিকার প্রশংসা করলেন প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ দূত
সব রাজনৈতিক দল একত্রে বসেছে এটা একটা উদাহরণ। অতীতেও এমন কিছু দেখা যায়নি বলে জানান উপদেষ্টা এম সাখাওয়াত হোসেন।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন জেলা প্রশাসক মোস্তাক আহমেদ, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সজীব খানসহ প্রশাসনের বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তারা।
৩৬২ দিন আগে
রাজনীতিতে ফিরতে ট্রাম্পের ছবি ব্যবহার করছে আ.লীগ: বিএনপি
যুক্তরাষ্ট্রের নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ছবি ব্যবহারসহ নানা গোপন উপায়ে ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ দেশের রাজনৈতিক মঞ্চে ফেরার চেষ্টা করছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী ও হাফিজ উমেদ আহমেদ।
রবিবার রাজধানীতে পৃথক দুটি অনুষ্ঠানে তারা আরও অভিযোগ করেন, আওয়ামী লীগ তার রাজনৈতিক অবস্থান হারিয়েছে বলেই এ ধরনের চক্রান্তে মেতেছে।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ব্যানারে ছাত্র-জনতার আন্দোলনের মুখে গত ৫ আগস্ট ক্ষমতাচ্যুত হয়ে দেশ ছেড়ে ভারতে আশ্রয় নেন তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা। তার পর থেকে দলটির বেশিরভাগ নেতাকর্মী আত্মগোপনে থাকার মাঝে আজ (রবিবার) নূর হোসেন দিবসে কর্মসূচি ঘোষণা করে আওয়ামী লীগ।
তবে আওয়ামী লীগকে এই ধরনের কর্মসূচি পালন করতে দেওয়া হবে না বলে সরকারের পক্ষ থেকে জানানো হয়। এর পরিপ্রেক্ষিতে পাল্টা কর্মসূচি ঘোষণা করে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন। এমন পরিস্থিতিতে ট্রাম্পের ছবিসহ ১০ জনকে গ্রেপ্তার করার কথা জানায় ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি)।
আরও পড়ুন: ৭ নভেম্বর 'জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবস' পালন করবে বিএনপি
এদিকে, বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের সঙ্গে বাংলাদেশে নিযুক্ত সিঙ্গাপুরের হাইকমিশনার ডেরেক লোর বৈঠক শেষে দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন।
জনগণ দ্বারা দেশ থেকে বিতাড়িত হয়ে শেখ হাসিনা ও তার দল বিভিন্ন সময় ভিন্ন ভিন্ন ছদ্মবেশে রাজনীতিতে ফেরার চেষ্টা করছে বলে এ সময় মন্তব্য করেন তিনি।
আমীর খসরু বলেন, ‘সমস্যা হচ্ছে যখন দেশের মানুষ আপনাকে বিতাড়িতে করে- এখন আপনি একেক সময় একেক কাভারে আসতে চান। কোনো কোনো সময় হিন্দু-মুসলিম ইস্যুটা নিয়ে আসবেন, কিছু সময় ওই যে হিন্দুদের উপরে নির্যাতনের চিত্র নিয়ে আসবেন। আবার এখন ট্রাম্পের (ডনাল্ড ট্রাম্প) চিত্র আসছে।’
‘আসলে যাদের এখন অস্তিত্ব বিলীন হয়ে গেছে, তারা কোনো একটা অন্য কোনো বেশে তারা আসতে চাচ্ছে দেশের মধ্যে। এটা হচ্ছে তাদের রাজনৈতিক দৈন্যতা- তারা যে রাজনৈতিকভাবে ধ্বংস হয়ে গেছে, এটাই প্রমাণ করে।’
এক প্রশ্নের জবাবে এই বিএনপি নেতা বলেন, ‘ট্রাম্পের বেশে কেন আসতে হবে, হিন্দুদের অত্যাচারের বেশে কেন আসতে হবে? কেন তারা রাজনৈতিক শক্তি হিসেবে এই অবস্থায় পৌঁছাল- এটা তারা নিজেরাই প্রমাণ করেছে, তাই না।’
‘আমি বলতে চাই, বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন মোড়কে আসার চেষ্টা হচ্ছে। যারা রাজনৈতিকভাবে ব্যাংক্রাপট (দেউলিয়া) হয়ে গেছে, তারা বিভিন্ন মোড়কে আসার চেষ্টা করছে- একটা আবহাওয়া সৃষ্টির চেষ্টা করছে।’
অপর এক আলোচনা সভায় ‘আওয়ামী লীগ সভাপতি ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এখন আরেক দেশে বসে যুক্তরাষ্ট্রের নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ছবি আশ্রয় করে বাঁচতে চান’ বলে মনে করেন বিএনপি নেতা মেজর (অব.) হাফিজ উদ্দিন আহমেদ।
রবিবার (১০ নভেম্বর) জাতীয় প্রেস ক্লাবে জিয়া পরিষদ আয়োজিত ‘ঐতিহাসিক ৭ নভেম্বর : শহীদ রাষ্ট্রনায়ক জিয়াউর রহমান ও বাংলাদেশের উন্নয়ন’ শীর্ষক আলোচনা সভায় তিনি এ মন্তব্য করেন।
হাফিজ বলেন, ‘হাসিনা কত নিষ্ঠুর, কত ছাত্র হত্যা করেছে। রাষ্ট্র ক্ষমতার জন্য কত নির্মম এরা ছিল। আল্লাহর গজব এদের উপর পড়েছে। এখন আরেক দেশে বসে ট্রাম্পের ছবি আশ্রয় করে উনি বাঁচতে চান।’
‘আসেন না বাংলাদেশে, এত বড় বড় কথা বলেন, বাংলাদেশে আসেন। এখন জিয়াউর রহমান নাই, তার দল বিএনপি এখনও আছে। তার বাংলাদেশের জাতীয়বাদ আছে। আমরা সবাই মিলে এই দেশের স্বাধীনতা সার্বভৌমত্ব রক্ষা করব।’
জিয়া পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান প্রফেসর ড. শফিকুল ইসলামের সভাপতিত্বে সভায় বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা অ্যাডভোকেট সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, নির্বাহী কমিটির সদস্য অ্যাডভোকেট রফিক শিকদার, পরিষদের মহাসচিব ডক্টর ইন্তাজ হোসেন প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
আরও পড়ুন: ছলচাতুরী বাদ দিয়ে নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করুন: সরকারকে বিএনপি
৩৮৯ দিন আগে