মাহবুবে আলম রাজধানীর সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালের (সিএমএইচ) নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) চিকিৎসাধীন অবস্থায় ৭টা ২৫ মিনিটে মারা যান বলে নিশ্চিত করেছেন তার মেয়ের জামাই রিয়াজুল হক।
গত ৪ সেপ্টেম্বর অ্যাটর্নি জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি হন এবং পরে করোনা পরীক্ষায় পজিটিভ আসে।
মাহবুবে আলম ১ ফেব্রুয়ারি ১৯৪৯ সালে মুন্সীগঞ্জের লৌহজংয়ের মৌছামন্দ্রা গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে রাষ্ট্রবিজ্ঞানে বিএ (অনার্স) এবং লোক প্রশাসনে এমএ পাস করেন। তিনি ১৯৭৯ সালে ভারতের রাজধানী নয়াদিল্লিতে সংবিধান ও সংসদীয় গবেষণা ইনস্টিটিউট (আইসিপিএস) থেকে সাংবিধানিক আইন ও সংসদীয় প্রতিষ্ঠান পদ্ধতিতে দুটি ডিপ্লোমা ডিগ্রি অর্জন করেন।
মাহবুবে আলম আইন বিষয়ে স্নাতক হওয়ার পর ১৯৭৫ সালে হাইকোর্টে অনুশীলন শুরু করেন এবং ১৯৮০ সালে আপিল বিভাগের আইনজীবী হন।
তিনি ২০০৪ সালে বাংলাদেশ বার কাউন্সিলের সদস্য নির্বাচিত হন। তিনি ১৯৯৩-১৯৯৪ সালে সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন এবং ২০০৫-২০০৬ সালে তিনি সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সভাপতি নির্বাচিত হন।
মাহবুবে আলম অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল হিসেবে ১৫ নভেম্বর ১৯৯৮ থেকে ৪ অক্টোবর ২০০১ পর্যন্ত দায়িত্ব পালন করেন। এরপর ২০০৯ সালের ১৩ জানুয়ারি থেকে বাংলাদেশের অ্যাটর্নি জেনারেল নিযুক্ত হন।
মাহবুবে আলমের মৃত্যুতে শোক জানিয়েছেন রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, জাতীয় সংসদের স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী, পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. একে আব্দুল মোমেন, প্রতিমন্ত্রী এম শাহরিয়ার আলম প্রমুখ।
এদিকে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর থেকে রবিবার পাঠানো করোনা সংক্রান্ত নিয়মিত সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, করোনাভাইরাসে গত ২৪ ঘণ্টায় দেশে আরও ৩২ জনের মৃত্যু হয়েছে। এ নিয়ে মোট মৃতের সংখ্যা বেড়ে ৫ হাজার ১৬১ জনে দাঁড়িয়েছে।
এছাড়া বয়স বিবেচনায় এখন পর্যন্ত মৃতের সংখ্যা ০ থেকে ১০ বছর বয়সী ২৪ জন, ০.৪৭ শতাংশ। ১১ থেকে ২০ বছর বয়সী ৪২ জন, ০.৮১ শতাংশ। ২১ থেকে ৩০ বছর বয়সী ১১৮ জন, ২.২৯ শতাংশ। ৩১ থেকে ৪০ বছর বয়সী ২৯৬ জন, ৫.৭৪ শতাংশ। ৪১ থেকে ৫০ বছর বয়সী ৬৬৯ জন, ১২.৯৬ শতাংশ। ৫১ থেকে ৬০ বছর বয়সী এক হাজার ৩৯৫ জন, ২৭.০৩ শতাংশ এবং ষাটোর্ধ্ব দুই হাজার ৬১৭ জন, ৫০. ৭১ শতাংশ।
এছাড়া, নতুন করে ১ হাজার ২৭৫ জনের শরীরে করোনা শনাক্ত হয়েছে। যার ফলে মোট আক্রান্তের সংখ্যা পৌঁছেছে ৩ লাখ ৫৯ হাজার ১৪৮ জনে।
বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী, করোনা শনাক্তের জন্য দেশের সরকারি ও বেসরকারি ১০৫টি ল্যাবে গত ২৪ ঘণ্টায় নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে ১০ হাজার ২৬১টি এবং পরীক্ষা করা হয়েছে আগের নমুনাসহ ১০ হাজার ৬৮৫টি। এ নিয়ে মোট নমুনা পরীক্ষা করা হলো ১৯ লাখ ৯ হাজার ৪৬০টি।
২৪ ঘণ্টায় নমুনা পরীক্ষা বিবেচনায় শনাক্তের হার ১১.৯৩ শতাংশ। আর মোট পরীক্ষায় এ পর্যন্ত শনাক্ত হয়েছেন ১৮.৮১ শতাংশ।
নতুন যে ৩২ জন মারা গেছেন তাদের মধ্যে পুরুষ ২২ এবং নারী ১০ জন। এখন পর্যন্ত মোট মারা যাওয়াদের মধ্যে পুরুষ ৩ হাজার ৯৯৬ জন বা ৭৭.৪৩ শতাংশ এবং নারী ১ হাজার ১৬৫ জন বা ২২.৫৭ শতাংশ। শনাক্ত বিবেচনায় মোট মৃত্যুর হার ১.৪৪ শতাংশ।
এদিকে, করোনা থেকে সুস্থ হয়েছেন আরও ১ হাজার ৭১৪ জন। এ নিয়ে দেশে মোট সুস্থ ব্যক্তির সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ২ লাখ ৭০ হাজার ৪৯১ জনে। শনাক্ত বিবেচনায় সুস্থতার হার এখন পর্যন্ত ৭৫.৩১ শতাংশ।