চীনের রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যমে বাংলা অনুষ্ঠান সম্প্রচারের ৫৫তম বর্ষ উপলক্ষে সোমবার (১ জানুয়ারি) সন্ধ্যায় ঢাকায় অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
দীপ্ত টিভির কার্যালয় প্রাঙ্গণে অনুষ্ঠিত ‘হ্যালো চায়না’ শিরোনামের এ অনুষ্ঠানে সম্মানিত অতিথি হিসেবে ছিলেন সংস্কৃতিবিষয়ক প্রতিমন্ত্রী কেএম খালিদ এবং বাংলাদেশে চীনা দূতাবাসের শারজেই ড্যাফেয়ার (Charge d'affaires) ইয়ান হুয়ালং।
উদযাপনের অংশ হিসেবে নিউ ইয়ার কনসার্ট অনুষ্ঠিত হয়। যেখান সংগীত পরিবেশন করেন খ্যাতিমান সংগীতশিল্পী তাহসান (তাহসান রহমান খান) এবং জনপ্রিয় রক ব্যান্ড চিরকুটের শারমিন সুলতানা সুমি ও অন্য সদস্যরা।
অনুষ্ঠানে ভিডিওর মাধ্যমে বক্তব্য রাখেন চায়না মিডিয়া গ্রুপের (সিএমজি) আফ্রিকান ও এশিয়ান কেন্দ্রের পরিচালক আন সিয়াও ইয়ু এবং বেইজিং থেকে অনলাইনে অনুষ্ঠানে যোগ দেন সিএমজির বাংলা বিভাগের পরিচালক ইয়ু কুয়াং ইউয়ে আনন্দি। অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন দীপ্ত টিভির ব্যবস্থাপনা পরিচালক কাজী জাহেদুল হাসান।
আরও পড়ুন: তিস্তা নদীর উন্নয়নমূলক প্রকল্পে আগ্রহ প্রকাশ করেছে চীন: পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়
এ আয়োজন উপলক্ষে বাণী দেন জাতীয় সংসদের স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী। তিনি বাংলাদেশ ও চীনের মধ্যে আদান-প্রদান বৃদ্ধিতে চীনা গণমাধ্যমে প্রচারিত বাংলা অনুষ্ঠানের অবদানের প্রশংসা করেন।
এ সময় গণমাধ্যমে কর্মরত সংবাদকর্মী ও কলাকুশলীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘আপনারা কেবল ইতিহাসের সাক্ষী নন, ইতিহাস নির্মাণকারীও।’
সংস্কৃতিবিষয়ক প্রতিমন্ত্রী তার বক্তব্যে বলেন, চীন বর্তমানে বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় উন্নয়ন অংশীদার এবং বাংলাদেশের রাষ্ট্রীয় বিকাশে বন্ধুপ্রতীম দেশটির অবদান অনস্বীকার্য।
সিএমজি বাংলা বিভাগের উদ্যোগে বাংলাদেশ-চীন মিডিয়া ক্লাব প্রতিষ্ঠার উদ্যোগকে তিনি স্বাগত জানান এবং আশা প্রকাশ করেন দুদেশের সাংস্কৃতিক বন্ধনকে আরও সদৃঢ় করবে এ ক্লাব।
সিএমজির আফ্রিকান ও এশিয়ান কেন্দ্রের পরিচালক আন সিয়াও ইয়ু বলেন, চীনা জাতির মহান পুনর্জাগরণের স্বপ্ন এবং বাংলাদেশের জনগণের ‘সোনার বাংলার’ স্বপ্নের মধ্যে অনেক মিল রয়েছে।
চীন ও বাংলাদেশের সহযোগিতা উভয় দেশের জনগণের জন্য সুফল বয়ে এনেছে এ কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, সিএমজি দু’দেশের মধ্যে মিডিয়ার সহযোগিতাকে আরও গভীর করতে এবং চীন-বাংলাদেশ বন্ধুত্বকে এগিয়ে নিতে দুদেশের সর্বস্তরের বন্ধুদের সঙ্গে কাজ করবে।
কাজী জাহেদুল হাসান চীনকে বাংলাদেশের অকৃত্রিম বন্ধু হিসেবে আখ্যায়িত করে বলেন, বাংলাদেশের উন্নয়ন যাত্রায় দেশটি সব সময় পাশে রয়েছে।
চীনের রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যমে বাংলা অনুষ্ঠান সম্প্রচার শুরু হয় ১৯৬৯ সালের ১ জানুয়ারি তৎকালীন রেডিও পিকিংয়ের মাধ্যমে। রেডিও পিকিংয়ের নাম বদলে পরে হয় রেডিও বেইজিং এবং তারপর চীন আন্তর্জাতিক বেতার (চায়না রেডিও ইন্টারন্যাশনাল-সিআরআই)। ২০১৮ সালে চীন আন্তর্জাতিক বেতার এবং আরও ৩টি রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যম – চায়না সেন্ট্রাল টেলিভিশন (সিসিটিভি), চায়না গ্লোবাল টেলিভিশন নেটওয়ার্ক (সিজিটিএন) এবং চায়না ন্যাশনাল রেডিও (সিএনআর) নিয়ে গঠিত হয় সিএমজি।
জানা গেছে, বাংলাদেশ ও চীনের গণমাধ্যমগুলোর যোগাযোগ ও আদান-প্রদান আরও বাড়াতে চায়না মিডিয়া গ্রুপের বাংলা বিভাগ চলতি বছরে বাংলাদেশ-চীন মিডিয়া ক্লাব প্রতিষ্ঠার নতুন উদ্যোগ নিয়েছে।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশের সঙ্গে উজ্জ্বল ভবিষ্যত দেখছে চীন: ঢাকায় নিযুক্ত চীনা রাষ্ট্রদূত