চীন
চীনে ভিসামুক্ত সুবিধা পাচ্ছে আরও ৬ দেশ: ওয়াং ই
সুইজারল্যান্ড, আয়ারল্যান্ড, হাঙ্গেরি, অস্ট্রিয়া, বেলজিয়াম ও লুক্সেমবার্গের নাগরিকরা পরীক্ষামূলকভাবে ভিসামুক্ত নীতির অংশ হিসেবে ভিসা ছাড়াই চীনে প্রবেশ করার সুযোগ পাচ্ছেন।
বৃহস্পতিবার(৭ মার্চ) চীনের জাতীয় আইনসভার চতুর্দশ ন্যাশনাল পিপলস কংগ্রেসের দ্বিতীয় অধিবেশনের সাইডলাইনে এক সংবাদ সম্মেলনে চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়াং ই এই তথ্য তুলে ধরেন।
তিনি বলেন, আগামী ১৪ মার্চ থেকে এই সিদ্ধান্ত কার্যকর হবে।
ওয়াং বলেন, 'আমরা আশা করি আরও অনেক দেশ চীনা নাগরিকদের ভিসা সহজীকরণের প্রস্তাব দেবে এবং আন্তঃসীমান্ত ভ্রমণের জন্য ফাস্ট-ট্র্যাক নেটওয়ার্ক তৈরি এবং আন্তর্জাতিক যাত্রীবাহী ফ্লাইট দ্রুত পুনরায় শুরুর লক্ষ্যে আমাদের সঙ্গে কাজ করবে।’
আরও পড়ুন: রাখাইনে অস্ত্রবিরতি নিয়ে মিয়ানমারের সঙ্গে কাজ করছে চীন: রাষ্ট্রদূত ইয়াও ওয়েন
তিনি বলেন, এর ফলে চীনা নাগরিকদের বিদেশ ভ্রমণ আরও সহজ হবে এবং বিদেশি বন্ধুরা চীনকে নিজের দেশের মতো অনুভব করবে।
ওয়াং আরও উচ্চমানের মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি সইয়ের প্রচার, মুক্ত বাণিজ্য অঞ্চলের বিশ্বব্যাপী ভিত্তিক নেটওয়ার্ক সম্প্রসারণ এবং বিশ্বব্যাপী শিল্প, সরবরাহ এবং ডেটা চেইনকে স্থিতিশীল ও নিরবচ্ছিন্ন রাখতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সঙ্গে সহযোগিতার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।
অন্যদিকে রয়্যাল থাই সরকার ইতোমধ্যে চীন ও কাজাখস্তানের পর্যটকদের ভিসামুক্ত প্রবেশাধিকার দিয়েছে, যা ১ মার্চ থেকে কার্যকর করেছে।
থাইল্যান্ড এবং চীন চলতি বছরের ২৮ জানুয়ারি উভয় দেশের নাগরিকদের জন্য পারস্পরিক ভিসামুক্ত প্রবেশের জন্য একটি চুক্তি সই করেছে, যা আনুষ্ঠানিকভাবে কার্যকরও হয়েছে।
আরও পড়ুন: বাইরের হস্তক্ষেপের বিরোধিতায় বাংলাদেশকে দৃঢ়ভাবে সমর্থন করে চীন: রাষ্ট্রদূত ইয়াও ওয়েন
এই চুক্তির আওতায় চীনা ও থাই নাগরিদের মধ্যে বৈধ পাসপোর্টধারী জনগণ অন্য দেশের ভূখন্ডে প্রবেশ, প্রস্থান বা ট্রানজিটের ক্ষেত্রে ৩০ দিনের জন্য ভিসামুক্ত সুবিধা পাবেন। তবে যারা বসবাস, কর্মসংস্থান, শিক্ষা বা পড়াশোনা, গণমাধ্যমের কাজ বা অন্যান্য কর্মকাণ্ড পরিচালনার জন্য ভ্রমণ করবেন, তাদের ক্ষেত্রে স্ব স্ব দেশের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের পূর্বানুমতির প্রয়োজন হবে।
এর আগে থাইল্যান্ড ২০২৩ সালের ২৫ সেপ্টেম্বর থেকে ২০২৪ সালের ২৯ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত চীনা পর্যটকদের জন্য অস্থায়ী ভিসামুক্ত সুবিধা দিয়েছে।
থাইল্যান্ডের অন্যতম বড় বাজার হলো চীন। কেবল ২০২৩ সালেই থাইল্যান্ড সফরকারী চীনা নাগরিকের সংখ্যা ৩৫ লাখে পৌঁছেছে। পরিসংখ্যান অনুযায়ী এটি মালয়েশিয়ার পরে এবং দক্ষিণ কোরিয়া, ভারত এবং রাশিয়ার আগে দ্বিতীয় বৃহত্তম বাজারে পরিণত হয়েছে। ২০২৪ সালের ১ জানুয়ারি থেকে ২৬ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত ১১ লাখ ২০ হাজার চীনা নাগরিক থাইল্যান্ড সফর করেছেন।
আরও পড়ুন: বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতে বিনিয়োগ বাড়াতে চীনকে বাংলাদেশের আহ্বান
বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতে বিনিয়োগ বাড়াতে চীনকে বাংলাদেশের আহ্বান
বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতে চীনের অংশগ্রহণ বাড়ানোর বিষয়ে গভীর আগ্রহ প্রকাশ করেছে বাংলাদেশ।
বাংলাদেশে নিযুক্ত চীনা রাষ্ট্রদূত ইয়াও ওয়েনের সঙ্গে বৈঠকে আগামী পাঁচ বছরে ৩০ বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগের প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর দেন বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ।
সোমবার প্রতিমন্ত্রীর কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত এই বৈঠকে দুই দেশের মধ্যে গভীর সহযোগিতা ও পারস্পরিক স্বার্থ নিয়ে আলোচনা হয়।
হামিদ বলেন, ‘আমরা চীনের কাছ থেকে আরও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা প্রত্যাশা করছি। বাংলাদেশের বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতে আগামী পাঁচ বছরে ৩০ বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ প্রয়োজন।’
চীনের সঙ্গে দীর্ঘস্থায়ী বন্ধুত্বের কথা তুলে ধরে রাষ্ট্রদূত ইয়াওকে স্বাগত জানান নসরুল হামিদ। প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘চীনা কোম্পানিগুলো বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতের সম্প্রসারণে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখছে।’
আরও পড়ুন: বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতে ইন্দোনেশিয়ার বিনিয়োগকে স্বাগত জানায় বাংলাদেশ: নসরুল হামিদ
তিনি বিনিয়োগের সম্ভাব্য ক্ষেত্রগুলো বের করতে একটি বিশেষ দল গঠনের প্রস্তাবও দিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘এই খাতে বিনিয়োগ বাড়াতে একটি বিশেষ দল গঠন করা যেতে পারে।’
উষ্ণ অভ্যর্থনা এবং বিনিয়োগ বৃদ্ধির আহ্বানে সাড়া দিয়ে রাষ্ট্রদূত ইয়াও দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক জোরদার করার জন্য চীনের প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করেন। ইয়াও বলেন, বাংলাদেশের সঙ্গে চীনের সহযোগিতা বাড়ছে।
তিনি বলেন, সহযোগিতার ক্ষেত্রকে শক্তিশালী করতে উভয় দেশকে একসঙ্গে এগিয়ে আসতে হবে।
আগামী পাঁচ বছরে বাংলাদেশ আরও সমৃদ্ধ, শক্তিশালী ও উন্নত দেশ হবে বলে আশা প্রকাশ করেন চীনা রাষ্ট্রদূত।
বৈঠকে তারা চীনা অর্থায়নে প্রকল্প, লিথিয়াম ব্যাটারি কারখানা স্থাপন, সেমি-কন্ডাক্টর কারখানা, বৈদ্যুতিক যানবাহন, ব্যাটারি স্টোরেজ সিস্টেম, স্মার্ট মিটার, সৌর ও বায়ু বিদ্যুৎ প্রকল্প, বর্জ্য থেকে বিদ্যুৎ, গ্যাস উত্তোলনসহ বিভিন্ন বিষয়ে আলোচনা করেন।
আরও পড়ুন: স্বয়ংক্রিয় মূল্য নির্দেশিকা প্রয়োগে জ্বালানির দাম কমতে পারে: নসরুল হামিদ
‘চিন-রাখাইনের চলমান সংঘাতের গতিপ্রকৃতি বুঝতে হবে বাংলাদেশকে’
এক আলোচনায় বক্তারা বলেন, চিন ও রাখাইন রাজ্যে চলমান সংঘাতের গতিপ্রকৃতি বাংলাদেশকে বুঝতে হবে। তারা উল্লেখ করেন, ভারত, চীন ও বিশ্বের অন্যান্য শক্তিশালী দেশগুলোর জন্যও রাখাইন গুরুত্বপূর্ণ।
বিআইপিএসএসের প্রেসিডেন্ট মেজর জেনারেল (অব.) এ এন এম মনিরুজ্জামান বলেন, 'মিয়ানমারের সার্বিক উন্নয়ন পরিস্থিতি বা সংঘাতময় পরিস্থিতি আমাদের বিশেষ করে রাখাইন ও চিনকে গুরুত্ব দিয়ে বুঝতে হবে।’
বৃহস্পতিবার (২২ ফেব্রুয়ারি) ঢাকার দ্য ওয়েস্টিনে বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব পিস অ্যান্ড সিকিউরিটি স্টাডিজ (বিআইপিএসএস) আয়োজিত 'মিয়ানমার কি উন্মোচিত হচ্ছে? বাংলাদেশ ও এ অঞ্চলের জন্য প্রভা ‘ শিরোনোমে এ গোলটেবিল আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়।
মিয়ানমারের জটিল সামাজিক-রাজনৈতিক কাঠামো বিশ্লেষণ এবং দক্ষিণ এশিয়া জুড়ে সম্ভাব্য প্রতিক্রিয়া মূল্যায়নের জন্য এই আয়োজনে অংশ নেন বিশেষজ্ঞরা।
আরও পড়ুন: মিউনিখ নিরাপত্তা সম্মেলনে অংশগ্রহণ বিশ্ব শান্তির প্রতি বাংলাদেশের অঙ্গীকারের প্রতিফলন : প্রধানমন্ত্রী
স্বাগত বক্তব্যে বিপসের সিনিয়র রিসার্চ ফেলো শাফকাত মুনির রোহিঙ্গা সংকটের বাইরেও মিয়ানমারের গতিপ্রকৃতি বোঝার প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরেন।
অনুষ্ঠানের সঞ্চালক মুনিরুজ্জামান গত অক্টোবরে ব্রাদারহুড অ্যালায়েন্সের উত্থানের মাধ্যমে এই অঞ্চলে মিয়ানমারের কেন্দ্রীয় ভূমিকা এবং চলমান অভ্যন্তরীণ কোন্দলের প্রাসঙ্গিকতা তুলে ধরেন।
মুনিরুজ্জামান বলেন, রাখাইন শুধু বাংলাদেশের জন্য নয়, চীন, ভারত ও বিশ্বের অন্যান্য বড় শক্তির জন্যও গুরুত্বপূর্ণ।
তিনি বলেন, ‘চীনের জন্য এটি গুরুত্বপূর্ণ কারণ কিয়াউকফিউতে তাদের একটি গভীর সমুদ্রবন্দর রয়েছে যা চীনের জ্বালানি নিরাপত্তার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। ভারতের জন্য রয়েছে কালাদান মাল্টি-মোডাল ট্রানজিট ট্রান্সপোর্ট প্রজেক্ট, যার জন্য সীমান্তবর্তী রাজ্য চিন ও রাখাইন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।’
প্যানেল আলোচক সাবেক পররাষ্ট্রসচিব মো. তৌহিদ হোসেন, মিয়ানমারের সাবেক ডিফেন্স অ্যাটাশে ও লিবিয়ায় সাবেক রাষ্ট্রদূত মেজর জেনারেল মো. শহীদুল হক এবং ইউল্যাবের সেন্টার ফর সাউথ এশিয়ান স্টাডিজের (সি-এসএএস) পরিচালক ও 'দ্য ইস্টার্ন গেট' বইয়ের লেখক সুদীপ চক্রবর্তী তাদের দৃষ্টিভঙ্গি তুলে ধরেন।
তৌহিদ হোসেন পরিস্থিতিকে একটি ক্রমবর্ধমান গৃহযুদ্ধ হিসেবে চিহ্নিত করেছেন, যেখানে সশস্ত্র বিদ্রোহ ও বেসামরিক বিরোধিতা উভয়ের মুখোমুখি তাতমাদাও।
তিনি বলেন, 'এই প্রথম বামনরা সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে অস্ত্র হাতে নিয়েছে।’
ভূ-রাজনৈতিক প্রভাবগুলো নিয়ে আলোচনা করেন তিনি। এই অঞ্চলে চীন ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কৌশলগত পরিকল্পনাগুলো উল্লেখ করেছিলেন এবং সংঘাতের সংস্থান নিয়ন্ত্রণের গুরুত্বপূর্ণ প্রকৃতির উপর জোর দেন তিনি।
বাংলাদেশের জন্য সম্পদ নিয়ন্ত্রণ ও রোহিঙ্গা ইস্যুর কৌশলগত গুরুত্বের ওপরও জোর দেন হোসেন।
মেজর জেনারেল শহীদুল হক তার প্রারম্ভিক বক্তব্যে মিয়ানমারের বর্তমান পরিস্থিতি এবং পূর্ব ও পশ্চিমাঞ্চলের সংঘাতের বিপরীত প্রকৃতি নিয়ে একটি বিস্তৃত বিশ্লেষণ তুলে ধরেন।
তিনি দৃঢ়তার সঙ্গে বলেন, কিছু অনুমানের কারণে মিয়ানমার বিচ্ছিন্ন হবে না। তিনি এমন একটি দৃশ্যকল্পের কল্পনা করেছিলেন যেখানে তাতমাদাও শেষ পর্যন্ত ইএওগুলোর সঙ্গে পুনরায় আলোচনা করবে, মিয়ানমারের বিভিন্ন অঞ্চল জুড়ে সংঘাতের অনন্য মাত্রা বোঝার গুরুত্বের উপর জোর দেবে।
হকের মতে, পূর্ব সীমান্তে লড়াইয়ের গতিশীলতা পশ্চিম সীমান্তের চেয়ে উল্লেখযোগ্যভাবে পৃথক, প্রতিটি অঞ্চল স্থিতিশীলতার জন্য নিজস্ব চ্যালেঞ্জ এবং প্রভাব উপস্থাপন করে।
তিনি বলেন, একটি অঞ্চলে বিপর্যয় সামগ্রিকভাবে মিয়ানমারের জন্য সর্বনাশ নয়।
তিনি আরাকান আর্মির সঙ্গে যোগাযোগের চ্যানেল খোলার ওপর গুরুত্বারোপ করেন।
যে আরাকান আর্মির সঙ্গে জড়িত হওয়া ভারতের জন্য একটি কৌশলগত পদক্ষেপ হতে পারে বলেও পরামর্শ দেন, বিশেষত কালাদান প্রকল্পের প্রেক্ষাপটে।
আরও পড়ুন: রমজানে কোনো পণ্যের ঘাটতি হবে না: প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা
মেজর জেনারেল হক একটি প্রকল্পকে মৃত ঘোষণা করেন, যা আন্তর্জাতিক বিনিয়োগের উপর আঞ্চলিক গতিশীলতার প্রভাব এবং কৌশলগত যোগাযোগ ও জোটের গুরুত্বকে চিত্রিত করে।
সুদীপ চক্রবর্তী দক্ষিণ-পশ্চিম চীনে তেল ও গ্যাস সরবরাহকারী পাইপলাইনের মাধ্যমে দেশের জ্বালানি খাতে চীনের কৌশলগত বিনিয়োগের দিকে মনোনিবেশ করে মিয়ানমারের গভীর ভূ-রাজনৈতিক সংকটের কথা তুলে ধরেন।
তিনি এই জ্বালানি রুটগুলো সুরক্ষিত করতে মিয়ানমারের জাতিগত গোষ্ঠীগুলোর সঙ্গে সম্পর্ক লালন করার চীনের দীর্ঘদিনের অনুশীলনের উপর জোর দেন।
বিপরীতে, তাতমাদাওয়ের উপর ব্যাপকভাবে নির্ভরশীল ভারতের সীমান্ত সুরক্ষা জোরদার করার প্রচেষ্টা সত্ত্বেও পরিবর্তিত গতিশীলতার বিলম্বিত প্রতিক্রিয়ার জন্য সমালোচিত হয়েছে।
চক্রবর্তী মিয়ানমারের অস্থিতিশীলতার বৃহত্তর প্রভাবের কথাও উল্লেখ করেছেন, যার মধ্যে সংঘাত ও অস্ত্রশস্ত্র প্রতিবেশী দেশগুলো, বিশেষত বাংলাদেশে ছড়িয়ে পড়ার ঝুঁকিও রয়েছে।
চক্রবর্তীর বিশ্লেষণে মিয়ানমারের চলমান অস্থিরতা এবং এর আঞ্চলিক প্রভাবের পরিপ্রেক্ষিতে প্রতিবেশী দেশগুলো, বিশেষ করে বাংলাদেশকে কৌশলগত পুনর্মূল্যায়নের আহ্বান জানানো হয়েছে।
অংশগ্রহণকারীদের প্রশ্নগুলো জ্বালানি নিরাপত্তা, আসিয়ানের কূটনৈতিক সম্ভাবনা এবং মিয়ানমারের প্রতি বাংলাদেশের পররাষ্ট্রনীতির রূপরেখাসহ বিভিন্ন বিষয়ে আলোচনার সুযোগ করে দেয়।
কথোপকথনে মিয়ানমারের কোনো জাতিগোষ্ঠীর নৌ সক্ষমতা না থাকার তাৎপর্য নিয়ে আলোচনা হয়, যা ওই অঞ্চলে ক্ষমতার ভারসাম্য ও নিরাপত্তার গতিশীলতা নিয়ে প্রশ্ন তোলে।
অধিকন্তু, রোহিঙ্গা সংকট নিয়ে আলোচনা গুরুত্বপূর্ণ হলেও আলোচনায় এতটাই প্রাধান্য পেয়েছে যে তা আসিয়ানের সঙ্গে সম্পৃক্ততাকে বাধাগ্রস্ত করতে পারে বলে ঐকমত্য হয়েছে।
এই সংকটে আসিয়ানকে আরও বড় ভূমিকা পালন করতে হবে বলে উল্লেখ করা হয়।
শ্রোতারা আসিয়ানের মধ্যে রোহিঙ্গাদের পুনর্বাসনের সম্ভাবনাও তুলে ধরেন।
ইন্টারেক্টিভ সেশনে আঞ্চলিক রাজনীতির জটিলতা নিরসনে বাংলাদেশের একটি সক্রিয় ও উদ্ভাবনী কূটনৈতিক অবস্থান গ্রহণ করার অপরিহার্যতার ওপর গুরুত্বারোপ করা হয়।
পারস্পরিক স্বার্থ চিহ্নিতকরণ এবং তার সঙ্গে একত্রিত হয়ে বাংলাদেশ তার কৌশলগত অবস্থান উন্নত করতে পারে এবং আরও নিরাপদ ও সমৃদ্ধ ভবিষ্যৎ গড়ে তুলতে পারে।
আলোচনা শেষে মেজর জেনারেল মুনিরুজ্জামান পরিকল্পিত কূটনৈতিক প্রচেষ্টার আহ্বান জানান এবং জটিল গতিশীলতার গভীরে গিয়ে বিশ্লেষণের জন্য প্যানেলিস্টদের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।
অনুষ্ঠানটি কেবল কঠোর বিশ্লেষণের জন্য একটি প্ল্যাটফর্মই নয় বরং দক্ষিণ এশিয়ায় শান্তি ও নিরাপত্তা সম্পর্কিত আলোচনাকে সমৃদ্ধ করতে বিআইপিএসএসের অবদান তুলে ধরে।
বিআইপিএসএস জানায়, দক্ষিণ এশিয়ায় শান্তি ও নিরাপত্তা সম্পর্কে বৃহত্তর বোঝাপড়ায় অবদান রেখে এ ধরনের জটিল আলোচনা জোরদার করতে তারা প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
আরও পড়ুন: ক্ষমতার অপব্যবহার যেন না হয় তা নিশ্চিত করুন: রাষ্ট্রপতি সাহাবুদ্দিন
প্রধানমন্ত্রীকে সফরের আমন্ত্রণ চীনের
পারস্পরিক স্বার্থ সংশ্লিষ্ট সব ক্ষেত্রে বন্ধুত্বপূর্ণ সহযোগিতা আরও গভীর করতে বাংলাদেশের নতুন সরকারের সঙ্গে কাজ করার জন্য প্রস্তুত উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে বেইজিংয়ে সরকারি সফরের আমন্ত্রণ জানিয়েছে চীন।
রবিবার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে বাংলাদেশে নিযুক্ত চীনের রাষ্ট্রদূত ইয়াও ওয়েনের সঙ্গে বৈঠক শেষে পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাছান মাহমুদ সাংবাদিকদের বলেন, 'চীন আমাদের প্রধানমন্ত্রীকে সফরের আমন্ত্রণ জানিয়েছে। পারস্পরিক সুবিধাজনক সময়ে এ সফর করার বিষয়ে আলোচনা চলছে।’
আরও পড়ুন: সুন্দরগঞ্জে অটোরিকশা-মোটরসাইকেলের সংঘর্ষে শিক্ষিকা নিহত
দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক এবং আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক বিষয়ে গভীর আলোচনা হয়েছে বলে জানান তিনি।
চীনা কর্তৃপক্ষ জানায়, চীন বাংলাদেশের জাতীয় সার্বভৌমত্ব, স্বাধীনতা, আঞ্চলিক অখণ্ডতা, ঐক্য ও স্থিতিশীলতা রক্ষা এবং বাইরের হস্তক্ষেপের বিরোধিতায় দৃঢ়ভাবে সমর্থন দেয়।
এর আগে ২০১৯ সালের ১-৬ জুলাই চীন সফর করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি দালিয়ানে ১৩তম গ্রীষ্মকালীন দাভোস ফোরামেও অংশ নিয়েছিলেন।
সফরকালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন।
আরও পড়ুন: নেত্রকোণায় প্রাইভেটকার-অটোরিকশার সংঘর্ষে পুলিশসহ নিহত ২
সিংড়ায় সিএনজি অটোরিকশায় চাঁদা আদায়কে কেন্দ্র করে দু’পক্ষের সংঘর্ষ
রাখাইনে অস্ত্রবিরতি নিয়ে মিয়ানমারের সঙ্গে কাজ করছে চীন: রাষ্ট্রদূত ইয়াও ওয়েন
ঢাকায় নিযুক্ত চীনের রাষ্ট্রদূত ইয়াও ওয়েন বলেছেন, তার দেশ রাখাইন রাজ্যে আরেকটি অস্ত্রবিরতির জন্য মিয়ানমারের সঙ্গে কাজ করছে, যাতে খুব শিগগিরই রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়া শুরু করা যায়।
আজ রবিবার (২৮ জানুয়ারি) পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদের সঙ্গে বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের তিনি বলেন, ‘প্রত্যাবাসন ইস্যুটি নিয়ে আমরা বেশ গভীরভাবে আলোচনা করেছি। আমরা বুঝতে পারছি, এখন আমরা কঠিন সময়ের মুখোমুখি। তবে আমাদের আত্মবিশ্বাসী হতে হবে।’
রাষ্ট্রদূত স্মরণ করিয়ে দেন- তারা অতীতে রাখাইন রাজ্যে চীনের মধ্যস্থতায় অস্ত্রবিরতি দেখে।
তিনি বলেন, বাংলাদেশ, চীন ও মিয়ানমারের যৌথ উদ্যোগে তারা ইতোমধ্যে রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসনের ক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি অর্জন করেছে।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশের সঙ্গে উজ্জ্বল ভবিষ্যত দেখছে চীন: ঢাকায় নিযুক্ত চীনা রাষ্ট্রদূত
রাষ্ট্রদূত ইয়াও বলেন, চীন তার ভূমিকা অব্যাহত রাখবে এবং রোহিঙ্গারা যাতে যত দ্রুত সম্ভব মিয়ানমারে ফিরে যেতে পারে সে ব্যবস্থা গ্রহণে বাংলাদেশ ও মিয়ানমার সম্পৃক্ত থাকবে বলে আশা প্রকাশ করেন।
তিস্তা প্রকল্প সংক্রান্ত এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, চীন এ বিষয়ে বাংলাদেশকে সহায়তা করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ, তবে এর জন্য সবার আগে বাংলাদেশের পক্ষ থেকে প্রস্তাব প্রয়োজন।
চীনা রাষ্ট্রদূত বলেন, তারা বাংলাদেশের সঙ্গে উন্নত ভবিষ্যৎ ও গভীর সহযোগিতা প্রত্যাশা করেন।
শনিবার পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেন, প্রতিবেশি দেশটিতে ক্রমবর্ধমান উত্তেজনার মধ্যে মিয়ানমার সীমান্তে বাংলাদেশের নিরাপত্তা বাহিনী সতর্ক রয়েছে।
তিনি বলেন, মিয়ানমারে সাময়িক বিরতির মাধ্যমে উত্তেজনা বিরাজ করছে এবং বাংলাদেশ বাহিনী অনেক আগে থেকেই সতর্ক রয়েছে।
রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন পদ্মায় সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, এ ধরনের উত্তেজনাকর পরিস্থিতি অবশ্যই রোহিঙ্গাদের তাদের জন্মস্থান মিয়ানমারে প্রত্যাবাসনের প্রচেষ্টায় নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে।
তবে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় চাপ সৃষ্টি করলে মিয়ানমার সরকার তাদের নাগরিকদের ফিরিয়ে নিতে বাধ্য হবে বলেও জানান তিনি।
আরও পড়ুন: আগামী নির্বাচনের পর স্থিতিশীলতা ও বাংলাদেশের সঙ্গে সহযোগিতা অব্যাহত থাকবে: আশা চীনা রাষ্ট্রদূতের
স্পিকারের সঙ্গে চীনের কমিউনিস্ট পার্টির নেতা সান হাইয়ানের সাক্ষাৎ
সফররত চীনা কমিউনিস্ট পার্টির আন্তর্জাতিক বিভাগের ভাইস মিনিস্টার সান হাইয়ান জাতীয় সংসদের স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেছেন।
বৃহস্পতিবার (২৫ জানুয়ারি) স্পিকারের কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত বৈঠকে তারা দ্বিপক্ষীয় বন্ধুত্ব, ব্যবসা-বাণিজ্য, রোহিঙ্গা, বঙ্গবন্ধুর চীন সফর, সংসদীয় কার্যক্রমসহ বিভিন্ন বিষয়ে আলোচনা করেন।
আরও পড়ুন: আবারও শীর্ষ করদাতা বিএটি বাংলাদেশ
স্পিকার বলেন, চীনের সঙ্গে বাংলাদেশের দীর্ঘদিনের বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক রয়েছে। উভয় দেশের জাতীয় সংসদের মধ্যে সংসদীয় মৈত্রী গ্রুপ গঠন এবং সংসদীয় রীতিনীতি বিনিময়ের মাধ্যমে এই সম্পর্ক আরও জোরদার করা যেতে পারে।
বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গারা দীর্ঘদিন ধরে বাংলাদেশে বসবাস করছে উল্লেখ করে স্পিকার রোহিঙ্গাদের মিয়ানমারে প্রত্যাবাসনে চীনের সহায়তা কামনা করেন।
আরও পড়ুন: বন্যপ্রাণী পাচার রোধে বাংলাদেশের সঙ্গে কাজ করবে ভারত: পরিবেশমন্ত্রী
৬ প্রকল্পে চীনের কাছে এক বিলিয়ন ডলার চায় বাংলাদেশ: পলক
ডাক ও টেলিযোগাযোগ এবং তথ্যপ্রযুক্তি খাতে ছয়টি প্রকল্পে চীনের কাছে নতুন করে বাংলাদেশ আরও এক বিলিয়ন ডলার চায় বলে জানিয়েছেন প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক।
তথ্যপ্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী বলেন, গত ১০ বছরে আমরা ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের আওতায় মোট পাঁচটি প্রকল্প বাস্তবায়ন করেছি চীনের লাইন অব ক্রেডিটের আওতায়।
আরও পড়ুন: টেশিসকে লাভজনক প্রতিষ্ঠানে উন্নীত করতে হবে: পলক
মঙ্গলবার (২৪ জানুয়ারি) সচিবালয়ে ঢাকায় নিযুক্ত চীনের রাষ্ট্রদূত ইয়াও ওয়েনের সঙ্গে বৈঠকের পর সাংবাদিকদের এ কথা জানান পলক।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, সেখানে আমরা ছয়টি প্রজেক্ট ইআরডির মাধ্যমে চাইনিজ সরকারের কাছে পাঠিয়েছি। মডার্নাইজেশন অব আরবান অ্যান্ড রুরাল লাইফ নামে ৫০০ মিলিয়ন ডলারের প্রকল্প।
তিনি আরও বলেন, ‘আর একটি আছে টেলিটকের ফোরজি নেটওয়ার্ক সম্প্রসারণ প্রকল্প এবং আমাদের বিটিসিএল টেলিফোন শিল্প সংস্থা এবং কম্পিউটার কাউন্সিলের আরও প্রায় এক বিলিয়ন ডলারের লাইন অব ক্রেডিট চেয়ে ছয়টি প্রজেক্ট আমরা জমা দিয়েছি।’
আগামী পাঁচ বছরে সরকারি বিনিয়োগ পাওয়ার আশাবাদ জানিয়ে প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘সেই ক্ষেত্রগুলো আমরা চিহ্নিত করেছি। রাষ্ট্রদূত আমাকে কথা দিয়েছেন তিনি তথ্যপ্রযুক্তির প্রসারে এবং স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণে আমাদের পাশে আগামী পাঁচ বছর থাকবেন। যাতে ২০৪১ সালের স্মার্ট বাংলাদেশের একটি শক্ত ভিত্তি এই পাঁচ বছরে আমরা তৈরি করতে পারি।’
আরও পড়ুন: দেশের উন্নয়ন দর্শনের মূল কারিগর বঙ্গবন্ধু: পলক
প্রতিমন্ত্রী পলক বলেন, ছয়টা প্রজেক্টে গত ১০ বছরে এক বিলিয়ন ডলার আমরা চাইনিজ লাইন অব ক্রেডিট থেকে ব্যবহার করেছি। সেখান থেকে আয় করে আমরা এখন ঋণটা ফেরতও দিচ্ছি।
পলক আরও বলেন, আমরা চাইনিজ সরকার, চাইনিজ এক্সিম ব্যাংক এবং চাইনিজ বিভিন্ন তথ্যপ্রযুক্তি কোম্পানির বিনিয়োগ আকর্ষণ করার চেষ্টা করছি। আমরা বাংলাদেশ-চায়না ইনভেস্টমেন্ট সামিট করব। সেটার ব্যাপারেও কথা হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, আমরা একটা স্মার্ট ইকোনোমি এবং ইনভেস্টমেন্ট পার্টনারশিপ স্ট্র্যাটেজিক এমওইউ করব। সেখানে আমাদের চারটি লক্ষ্য আছে- রপ্তানি আয় বৃদ্ধি, কর্মসংস্থান সৃষ্টি, বিনিয়োগ আকর্ষণ এবং গবেষণা ও উদ্ভাবন। এই চারটি এরিয়াতে বাংলাদেশ ও চীন একসঙ্গে কাজ করবে।
আরও পড়ুন: দেশের প্রতিটি ডায়াবেটিস হাসপাতাল ইন্টারনেটের আওতায় আসবে: পলক
চীনে ভূমিধসে নিহতের সংখ্যা বেড়ে ৩১, এখনও নিখোঁজ অনেক
চীনের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলীয় প্রদেশ ইউনানের প্রত্যন্ত ও পার্বত্য এলাকায় ভূমিধসে নিহতের সংখ্যা বেড়ে ৩১ জনে দাঁড়িয়েছে এবং এখনও অনেক নিখোঁজ রয়েছে বলে জানিয়েছে চীনের রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যম সিনহুয়া।
সোমবার(২২ জানুয়ারি) স্থানীয় সময় ভোর ৬টার কিছু আগে ইউনানের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের লিয়াংশুই গ্রামে এ দুর্ঘটনা ঘটে।
এর আগে মঙ্গলবার কর্তৃপক্ষ জানিয়েছিল, মোট ৪৪ জনের মতো নিখোঁজ এবং নিহত হওয়ার ঘটনা ঘটেছে। ইতোমধ্যে বেশ কিছু লাশ উদ্ধার করেছেন তারা।
আরেকটি ভূমিধসের সতর্কতার কারণে দিনের শুরুতে উদ্ধার অভিযান স্থগিত থাকার পর পুনরায় তা শুরু হয়েছে।
জরুরি ব্যবস্থাপনা মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, খননকারী, ড্রোন ও উদ্ধারকারী কুকুরের সহায়তায় ১ হাজারেরও বেশি উদ্ধারকর্মী হিমশীতল ঠান্ডার মধ্যে কাজ করছেন। সোমবার দু'জনকে উদ্ধার করে স্থানীয় একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন দেওয়া হয়।
স্থানীয় বিশেষজ্ঞদের প্রাথমিক তদন্তের বরাত দিয়ে রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থা সিনহুয়া জানিয়েছে, প্রায় ১০০ মিটার (৩৩০ ফুট) প্রশস্ত, ৬০ মিটার (২০০ ফুট) উচ্চতা এবং গড়ে ৬ মিটার (২০ ফুট) পুরুত্বের একটি খাড়া পাহাড় ধসে পড়লে ভূমিধসের সূত্রপাত হয়। তবে কী কারণে প্রথম ধসের ঘটনা ঘটেছে, সে বিষয়ে বিস্তারিত কিছু জানায়নি তারা।
আরও পড়ুন: ফিলিপাইনের দক্ষিণাঞ্চলে ভূমিধসে নিহত ৭, নিখোঁজ ১০
সিনহুয়ার পোস্ট করা উপর থেকে তোলা ছবিতে দেখা গেছে, একটি উঁচু পাহাড়ের অংশ পাশের গ্রামের বেশ কয়েকটি বাড়ির ওপর ছড়িয়ে পড়েছে। নিরাপত্তার কারণে ৯০০ জনেরও বেশি গ্রামবাসীকে অন্যত্র সরিয়ে নেওয়া হয়েছে।
ঝেনশিয়ং কাউন্টি বেইজিং থেকে প্রায় ২ হাজার ২৫০ কিলোমিটার (১,৪০০ মাইল) দক্ষিণ-পশ্চিমে অবস্থিত। ২ হাজার ৪০০ মিটার (৭,৯০০ ফুট) পর্যন্ত এর উচ্চতা রয়েছে।
উদ্ধারকারীরা তুষারপাত, বরফে ঢাকা রাস্তা এবং হিমশীতল তাপমাত্রার সঙ্গে লড়াই করছে। এমন আবহাওয়া কমপক্ষে আরও তিন দিন অব্যাহত থাকবে বলে পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছে।
আরও পড়ুন: চীনের পশ্চিমাঞ্চলে ৭.১ মাত্রার ভূমিকম্প
চীনের অনেক অংশে ভারী তুষারপাত হচ্ছে, যা পরিবহন ব্যবস্থায় ব্যাঘাত সৃষ্টি করছে এবং জীবনকে বিপন্ন করছে।
উদ্ধারকারীরা গত সপ্তাহে উত্তর-পশ্চিম চীনের একটি প্রত্যন্ত স্কিইং এলাকা থেকে পর্যটকদের সরিয়ে নিয়েছিল। কারণ ভারী তুষারপাতের কারণে এক সপ্তাহ ধরে এক হাজারেরও বেশি লোক আটকা পড়েছিল। সীমান্তের কাছে জিনজিয়াং অঞ্চলের আলতাই প্রদেশের একটি গ্রামে তুষারধসের কারণে মঙ্গোলিয়া, রাশিয়া ও কাজাখস্তানের সঙ্গে চীনের সড়ক যোগাযোগ বন্ধ হয়ে যায়।
বৃষ্টি বা অনিরাপদ নির্মাণ কাজের কারণে ভূমিধসের ঘটনা চীনে অস্বাভাবিক কিছু নয়। গত বছর ভূমিধসে কমপক্ষে ৭০ জন নিহত হয়েছিল। এর মধ্যে ইনার মঙ্গোলিয়া অঞ্চলে একটি উন্মুক্ত খনিতে ৫০ জনেরও বেশি লোক নিহত হন। এছাড়া ২০২১ সালে নির্মাণাধীন একটি টানেল প্লাবিত হওয়ায় ১৪ শ্রমিকের মৃত্যু হয়েছিল।
গানসু ও কিংহাই প্রদেশের মধ্যবর্তী প্রত্যন্ত অঞ্চলে চীনের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলে কয়েক বছরের মধ্যে সবচেয়ে শক্তিশালী ভূমিকম্প আঘাত হানার মাত্র এক মাস পর ইউনানে ভূমিধসের ঘটনা ঘটল। গত ১৮ ডিসেম্বর আঘাত হানা ৬ দশমিক ২ মাত্রার ভূমিকম্পে অন্তত ১৪৯ জন নিহত হয়, এতে ঘরবাড়ি ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয় এবং ভারী ভূমিধসে কিংহাই প্রদেশের দুটি গ্রাম প্লাবিত হয়।
গত ৯ বছরের মধ্যে চীনে সবচেয়ে ভয়াবহ ভূমিকম্পে প্রায় এক হাজার মানুষ আহত এবং ১৪ হাজারেরও বেশি ঘরবাড়ি ধ্বংস হয়েছে।
আরও পড়ুন: চীনের পাহাড়ি এলাকায় ভূমিধসে ৪৭ জনের মৃত্যু
নিরাপত্তা বাহিনীর প্রশিক্ষণের পরিধি বাড়াতে চীনের প্রতি অনুরোধ স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর
নিরাপত্তা বাহিনীর প্রশিক্ষণের পরিধি বাড়াতে চীনের প্রতি অনুরোধ জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান। সোমবার (২২ জানুয়ারি) দুপুরে সচিবালয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সম্মেলনকক্ষে চীন সরকারের 'গ্রেট ওয়াল মেমোরেটিভ মেডেল' হস্তান্তর অনুষ্ঠানে তিনি এ অনুরোধ জানান।
ঢাকায় নিযুক্ত চীনের রাষ্ট্রদূত ইয়াও ওয়েন আজ এ মেডেল হস্তান্তর করেন। এ সময় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে কর্মকর্তা ও চীনের প্রতিনিধিদল উপস্থিত ছিলেন।
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, আমরা সব সময় সাইবার সিকিউরিটির বিষয়ে আমরা উদ্বিগ্ন আছি। আমরা ট্রান্স ন্যাশনাল ক্রাইম, আন্তর্জাতিক ক্রাইম এসমস্ত ক্রাইম যাতে আমরা প্রতিরোধ করতে পারি সেগুলোর জন্য আমরা সবসময় সহযোগিতা চাচ্ছি।
তিনি আরও বলেন, তারা সবসময় আমাদের নিরাপত্তা বাহিনীকে প্রশিক্ষণ দিয়ে আসছেন। এই প্রশিক্ষণের পরিধি আরও বাড়ানোর জন্য আমরা অনুরোধ জানিয়েছি তারা বিবেচনা করেছেন যে তারা আমাদের আরও প্রশিক্ষণ গ্রহণের সুযোগ দেবেন। প্রশিক্ষণের জন্য আমাদের পুলিশ মহাপরিদর্শক এরই মধ্যে তালিকা তাদের কাছে হস্তান্তর করেছেন। আমার মনে হয়, তারা সেটি গ্রহণ করবে।
আরও পড়ুন: পরাজয় নিশ্চিত জেনে নির্বাচনে অংশ নেয়নি বিএনপি: স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী
জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়ে বিভিন্ন রাষ্ট্রের বিরূপ মন্তব্য প্রসঙ্গে প্রশ্ন করলে তিনি বলেন, আমরা মনে করি একটা সুন্দর নির্বাচন উপহার দিয়েছে আমাদের নির্বাচন কমিশন। এখন পর্যন্ত কোনো দেশ থেকে এই নির্বাচনকে প্রশ্নবিদ্ধ করা হয়নি সেটা আপনারা জানেন।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, আমাদের নির্বাচন নিয়ে অনেকগুলো দেশ অনেক মন্তব্য করেছেন। কিন্তু চায়না সরকার আমাদের বন্ধু। তারা সবসময় বলেছে এটা বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয় সেখানে আমাদের কোনো মন্তব্য নেই। বাংলাদেশ সরকারই নির্বাচন করবে আমাদের এখানে কোনো মন্তব্য নেই।
যারা বিরূপ মন্তব্য করেছেন তাদের প্রসঙ্গে মন্ত্রী বলেন, আমি মনে করি তারা এখন বুঝে গিয়েছেন আমাদের প্রধানমন্ত্রী ও নির্বাচন কমিশনের মাধ্যমে বাংলাদেশ একটা সুন্দর নির্বাচন হয়েছে।
তিনি বলেন, চীনের সঙ্গে আমাদের বন্ধুত্বপূর্ণ যে সম্পর্ক পাশাপাশি অন্যান্য প্রতিবেশী দেশের সঙ্গেও আমাদের চমৎকার সম্পর্ক রয়েছে। আমি মনে করি এটা আরও শক্তিশালী হবে।
আরও পড়ুন: পছন্দের প্রার্থীকে ভোট দিয়ে নৈতিক দায়িত্ব পালনের আহ্বান স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর
চীনের পাহাড়ি এলাকায় ভূমিধসে ৪৭ জনের মৃত্যু
চীনের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলীয় পার্বত্য ইউনান প্রদেশে ভূমিধসে ৪৭ জনের মৃত্যু হয়েছে। ঠান্ডা তাপমাত্রা ও তুষারপাতের কারণে আরও ২০০ জনকে নিরাপদে সরিয়ে নিয়েছে দেশটির কর্তৃপক্ষ।
সোমবার (২২ জানুয়ারি) স্থানীয় সময় ভোর ৬টার কিছু আগে ইউনান প্রদেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় লিয়াংশুই গ্রামে এ দুর্ঘটনা ঘটে।
ঝেনশিয়ং কাউন্টির প্রচার বিভাগ জানিয়েছে, ১৮টি আলাদা বাড়িতে চাপা পড়া হতাহতদের উদ্ধার তৎপরতা চলছে।
তবে এসব ক্ষেত্রে তাৎক্ষণিকভাবে হতাহতের কোনো খবর পাওয়া যায়নি। ভূমিধসের কারণ তাৎক্ষণিকভাবে জানা না গেলেও ছবিতে দেখা গেছে যে তুষারপাত অব্যাহত রয়েছে।
আরও পড়ুন: শ্রীলঙ্কায় বন্যা ও ভূমিধসে ২১ হাজারের বেশি মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত
ভূমিধসের সময় ৩৫ বছর বয়সী লুও ডংমেই ঘুমিয়ে ছিলেন, কিন্তু তিনি বেঁচে যান এবং স্থানীয় কর্তৃপক্ষ তাকে একটি স্কুলে সরিয়ে নিয়েছে।
লুও ডংমেই বলেন, ‘আমি ঘুমিয়ে ছিলাম, কিন্তু আমার ভাই দরজায় কড়া নাড়ল এবং আমাকে জাগিয়ে তুলল। তারা বলেছিল যে সেখানে একটি ভূমিধস ছিল এবং বিছানাটি কাঁপছিল, তাই তারা দ্রুত উপরে উঠে আমাদের জাগিয়ে তোলে।’
তিনি বলেন, লুও, তার স্বামী এবং তাদের তিন সন্তানসহ আরও অনেক বাসিন্দাকে স্কুলে খাবার সরবরাহ করা হয়েছে তবে তারা এখনও ঠান্ডা আবহাওয়া মোকাবিলায় কম্বল এবং অন্যান্য সুরক্ষা সামগ্রীর জন্য অপেক্ষা করছেন।
লুও বলেন, ভূমিধসের স্থানের কাছাকাছি থাকা তার বোন ও খালার সঙ্গে তিনি যোগাযোগ করতে পারছেন না। ‘আমি এখন শুধু অপেক্ষা করতে পারি।’
আরও পড়ুন: চীনের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে ভূমিধসে খনি শ্রমিক আবাসনে নিহত ১৯
উদ্ধারকারীরা গত সপ্তাহে উত্তর-পশ্চিম চীনের একটি প্রত্যন্ত স্কিইং এলাকা থেকে পর্যটকদের সরিয়ে নিয়েছিল। কারণ ভারী তুষারপাতের কারণে এক সপ্তাহ ধরে এক হাজারেরও বেশি লোক আটকা পড়েছিল। সীমান্তের কাছে জিনজিয়াং অঞ্চলের আলতাই প্রদেশের একটি গ্রামে তুষারধসের কারণে মঙ্গোলিয়া, রাশিয়া ও কাজাখস্তানের সঙ্গে চীনের সড়ক যোগাযোগ বন্ধ হয়ে যায়।
বৃষ্টি বা অনিরাপদ নির্মাণ কাজের কারণে ভূমিধসের ঘটনা চীনে অস্বাভাবিক কিছু নয়। গত বছর ভূমিধসে কমপক্ষে ৭০ জন নিহত হয়েছিল। এর মধ্যে ইনার মঙ্গোলিয়া অঞ্চলে একটি উন্মুক্ত খনিতে ৫০ জনেরও বেশি লোক নিহত হন। এছাড়া ২০২১ সালে নির্মাণাধীন একটি টানেল প্লাবিত হওয়ায় ১৪ শ্রমিকের মৃত্যু হয়েছিল।
গানসু ও কিংহাই প্রদেশের মধ্যবর্তী প্রত্যন্ত অঞ্চলে চীনের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলে কয়েক বছরের মধ্যে সবচেয়ে শক্তিশালী ভূমিকম্প আঘাত হানার মাত্র এক মাস পর ইউনানে ভূমিধসের ঘটনা ঘটল। গত ১৮ ডিসেম্বর আঘাত হানা ৬ দশমিক ২ মাত্রার ভূমিকম্পে অন্তত ১৪৯ জন নিহত হয়, এতে ঘরবাড়ি ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয় এবং ভারী ভূমিধসে কিংহাই প্রদেশের দুটি গ্রাম প্লাবিত হয়।
গত ৯ বছরের মধ্যে চীনে সবচেয়ে ভয়াবহ ভূমিকম্পে প্রায় এক হাজার মানুষ আহত এবং ১৪ হাজারেরও বেশি ঘরবাড়ি ধ্বংস হয়েছে।
আরও পড়ুন: ফিলিপাইনের দক্ষিণাঞ্চলে ভূমিধসে নিহত ৭, নিখোঁজ ১০