তিনি বলেন, ‘আমরা হাজার হাজার শহীদদের রক্তের বিনিময়ে দেশকে স্বাধীন করেছি এবং বহু প্রতিবন্ধকতা পেরিয়েছি। আমরা চাই না আমাদের দেশটি আবারও ব্যর্থতায় ডুবে যাক। ১৯৭৫ এর অন্ধকারের যুগে যেন আবারও জনগণেরর জীবন কেঁপে না যায়।’
আরও পড়ুন:বন্দরগুলোতে যাত্রীদের আবারও করোনা পরীক্ষার সময় এসেছে: প্রধানমন্ত্রী
রবিবার ‘বঙ্গবন্ধু জাতীয় যুব দিবস ২০২০’এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেয়ার সময় এ কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী।
রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। প্রধানমন্ত্রী গণভবন থেকে অনলাইনে অনুষ্ঠানে অংশ নেন।
শেখ হাসিনা বলেন, সরকার দেশের মানুষের যাত্রাকে আলোর পথে রাখতে চায়। এই প্রসঙ্গে তিনি মাদক, জঙ্গিবাদ, সন্ত্রাসবাদ এবং অনুরূপ কার্যক্রমের বিরুদ্ধে কড়া সতর্কতা উচ্চারণ করেন।
তিনি বলেন, ‘এগুলো অল্প সময়ের জন্য কিছু মোটা অর্থ এনে দিতে পারে, তবে প্রকৃত অর্থে এই কাজগুলোর মধ্যে জীবনের কোনো গ্যারান্টি নেই, প্রত্যেককে এই বিষয়টি মনে রাখতে হবে যে এগুলোর বিরুদ্ধে আমাদের অবস্থান কঠোর।’
জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে জবাবদিহিতা নিশ্চিত করার ওপর জোর দিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘সবাইকে দেশকে ভালোবাসতে হবে এবং জনগণের প্রতি দায়বদ্ধ হতে হবে। ভবিষ্যতে এই দায়িত্বটি বজায় রেখে আপনাকে এগিয়ে যেতে হবে।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আদর্শের সাথে মিল রেখে দেশের যুব-সমাজকে গড়ে তোলা সরকারের লক্ষ্য।
তিনি বলেন, ‘আমরা প্রজন্মের পর প্রজন্মকে সেভাবে গড়ে তুলব যাতে বাংলাদেশ যেন একটি স্বাধীন দেশ হিসেবে মর্যাদা নিয়ে বিশ্বে এগিয়ে যেতে পারে, সেই সাথে আমাদের দেশটা যেন আত্মনির্ভরশীল এবং আত্মমর্যাদাশীল হয়।’
তিনি উল্লেখ করেন যে, সরকারের নীতি হলো শহর এলাকার সুযোগ-সুবিধাসহ দেশের গ্রামীণ এলাকাগুলোকে উন্নত করা।
‘গ্রামাঞ্চলের মানুষ শহুরে অঞ্চলের মতো সুবিধা পাবে, সকল ক্ষেত্রে সমানভাবে উন্নয়ন হবে’ বলেন তিনি।
তিনি বলেন, দেশের স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীতে সরকার দেশজুড়ে শতভাগ বিদ্যুৎ সরবরাহ করবে, যেটি এখন ৯৭ শতাংশ।
শেখ হাসিনা বলেন, সরকার বিদ্যুৎ, রাস্তা, রেল, পানি ও বিমান পরিবহন উন্নত করছে, যাতে দেশের যুবকরা তাদের যোগ্যতা ও সৃজনশীলতা কাজে লাগাতে পারে।
যুব সমাজকে উদ্দেশে করে তিনি বলেন, ‘একটা ডিগ্রি নিয়েই চাকরির পেছনে না ছুটে নিজে কীভাবে কিছু করা যায়, নিজে কাজ করব, আরও অন্যদের চাকরি দেব, এই মানসিকতা রাখতে হবে।’
তিনি বলেন, ‘তারা যেন নিজের পায়ে দাঁড়াতে পারে, কর্মসংস্থান তৈরি করতে পারে, আমরা সেই লক্ষ্যে এগিয়ে চলছি।’
দেশের ফ্রিল্যান্সারদের সমস্যা সম্পর্কে কথা বলতে গিয়ে তিনি বলেন, ‘সেটা নিয়ে ইতোমধ্যে আমরা সজীব ওয়াজেদ জয়ের (প্রধানমন্ত্রীর ছেলে এবং তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তিবিষয়ক উপদেষ্টা) সাথে আলাপ-আলোচনা করে আমাদের আইসিটি মন্ত্রণালয় উদ্যোগ নিয়েছে। আমাদের যুব মন্ত্রণালয়ও। যারা এ ধরনের ফ্রিল্যান্সিংয়ের কাজ করবে তারা যেন একটা স্বীকৃতি পায়। সনদ পায় বা একটা সার্টিফিকেট তাদের হাতে থাকে।’
যুবকদের কল্যাণে সরকারের বিভিন্ন পদক্ষেপের সংক্ষিপ্তসার তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, যুবকদের দক্ষ জনশক্তি তৈরি করতে সরকার এসব উদ্যোগ নিয়েছে।
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী উপলক্ষে এ বছর ১ নভেম্বর ‘বঙ্গবন্ধু জাতীয় যুব দিবস ২০২০’ শিরোনামে উদযাপন করা হচ্ছে।
যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী জাহিদ আহসান রাসেলের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের সচিব মোহাম্মদ আক্তার হোসেন বক্তব্য দেন।
এর আগে যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী আত্মকর্মসংস্থান প্রকল্প স্থাপনে অনুকরণীয় অবদানের স্বীকৃতি হিসেবে ২১ জন প্রশিক্ষিত সফল যুবক এবং পাঁচজন সফল যুব সংগঠকের মধ্যে বঙ্গবন্ধু জাতীয় যুব পুরস্কারের (নগদ অর্থ, প্রশংসাপত্র ও ক্রেস্ট) হস্তান্তর করেন।