যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভের সময় পুলিশের কর্মকাণ্ডে উদ্বেগ প্রকাশ করে বল প্রয়োগকে 'অসামঞ্জস্যপূর্ণ' ও 'অগ্রহণযোগ্য' বলে বর্ণনা করেছেন তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রী মোহাম্মদ এ আরাফাত।
তিনি বলেন, মূলত ফিলিস্তিনিদের অধিকারের সমর্থনে শিক্ষার্থী ও শিক্ষকদের নেতৃত্বে এই বিক্ষোভ সংগঠিত হয়েছিল।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম এক্সে (সাবেক টুইটার) পোস্টে প্রতিমন্ত্রী বলেন, 'সেখানে সমাবেশগুলো মূলত শান্তিপূর্ণভাবে পরিচালিত হচ্ছে। বিএনপি-জামায়াতের অগ্নিসংযোগকারীরা বাংলাদেশে যে ধরনের সহিংসতা, অগ্নিসংযোগ বা পুলিশ, শিশু বা নারী হত্যা করেছে- সেখানে সেরকম কোনো সহিংসতা, অগ্নিসংযোগ বা নারী হত্যার ঘটনা ঘটেনি।’
আরও পড়ুন: বাংলাদেশ ফিলিস্তিনের জনগণের পক্ষে আছে, থাকবে: পরিবেশমন্ত্রী
তিনি বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের অসংখ্য নামকরা ও মর্যাপূর্ণ কলেজ ক্যাম্পাসে এই বিক্ষোভ অনুষ্ঠিত হয়েছে, যেখানে অংশগ্রহণকারীরা ফিলিস্তিনি জনগণের স্বাধীনতার পক্ষে কথা বলেছেন। সহিংসতা ও অগ্নিসংযোগের অনুপস্থিতি তুলে ধরে তিনি এই বিক্ষোভের শান্তিপূর্ণ প্রকৃতিকে সমর্থন করেন, যা প্রায়শই অন্যান্য বিক্ষোভের সঙ্গে সম্পৃক্ত।
তিনি বলেন, ‘কিছু ছাত্র ও অধ্যাপকরাই অন্যায়ের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করছেন। সেখানে কোনো সহিংসতা বা অগ্নিসংযোগের প্রমাণ পাওয়া যায়নি।’
বিক্ষোভকারীদের শান্তিপূর্ণ আচরণ সত্ত্বেও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর প্রতিক্রিয়া উল্লেখযোগ্যভাবে আক্রমণাত্মক হয়েছে বলে উল্লেখ করেন আরাফাত।
তিনি আরও বলেন, জনগণকে নিয়ন্ত্রণে আনতে সেখানে পুলিশ বাহিনীর সদস্যদের যে পরিমাণ উপস্থিতি দেখা গেছে, তাতে বেসামরিক লোকজনের বিক্ষোভের প্রতি তাদের কোনো সম্মান নেই।
বাংলাদেশে এ ধরনের পরিস্থিতি যেভাবে সামাল দেওয়া হয় তা তুলে ধরে আরাফাত একই ধরনের পরিস্থিতিতে মার্কিন প্রশাসনের প্রতিক্রিয়া সম্পর্কে নিজের ধারণা তুলে ধরেন।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, 'নির্বাচনকে বাধাগ্রস্ত করতে এবং বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়াকে বাধাগ্রস্ত করতে কয়েক মাস আগে বিএনপি-জামায়াতের যে তথাকথিত বিক্ষোভ তারা দেখিয়েছে, তার মুখে মার্কিন প্রশাসন কী করবে তা ভেবে অবাক হচ্ছি।’
আরাফাত সহিংসতার নিন্দা জানিয়ে বলেন, 'আমি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি, গণতন্ত্রে সহিংসতার কোনো স্থান নেই।’
একজন বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপকের একটি বেদনাদায়ক বিবরণও তুলে ধরেন আরাফাত। ওই অধ্যাপক ক্যালিফোর্নিয়া বিশ্ববিদ্যালয়, বার্কলে থেকে প্রাপ্ত তার একাডেমিক সনদপত্র প্রদর্শন সত্ত্বেও পুলিশ তার সঙ্গে দুর্ব্যবহার করেছিলেন বলে উল্লেখ করেন তথ্য প্রতিমন্ত্রী।
তিনি পরিস্থিতি ব্যাখ্যা করে বলেন, ‘তাকে(ওই অধ্যাপক) বাংলাদেশের বিএনপি-জামায়াত সন্ত্রাসীদের মতো উগ্রবাদী বলে মনে হয়নি, এমনকি নিজেকে সহিংসতা বা অগ্নিসংযোগেও লিপ্ত করেননি। তবুও তাকে মৌখিকভাবে গালিগালাজ ও নির্মমভাবে গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলে জানা গেছে।’
আরাফাত সমাবেশ ও প্রতিবাদের মৌলিক গণতান্ত্রিক অধিকারকে নিশ্চিত করে উপসংহার টানেন। তিনি যুক্তি দিয়ে বলেন, সর্বজনীনভাবে ‘সমাবেশের অধিকার এবং প্রতিবাদের অধিকারকে সমস্ত গণতন্ত্রে সম্মান করা উচিত।’
আরও পড়ুন: যুক্তরাষ্ট্রে বন্দুকধারীর গুলিতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ৪ কর্মকর্তা নিহত