বাংলাদেশ পোশাক প্রস্তুতকারক ও রপ্তানিকারক সমিতি (বিজিএমইএ) দেশের ঐতিহ্য, ইতিহাস ও সংস্কৃতিকে দেশে-বিদেশে হাইলাইট করার উদ্যোগ নিয়েছে। সে লক্ষ্যে ‘বাংলাদেশ হেরিটেজ ফেস্টিভ্যাল ২০২৪’- এর আয়োজন করেছে বিজিএমইএ।
বিজিএমইএর উদ্যোগে প্রথমবারের মতো বাংলাদেশের সমৃদ্ধময় সংস্কৃতি ও ঐতিহ্য উদযাপন করার অভিপ্রায় নিয়ে ১৮ ফেব্রুয়ারি থেকে ২০ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত তিন দিনব্যাপী বিজিএমইএ কমপ্লেক্সে ‘বাংলাদেশ হেরিটেজ ফেস্টিভ্যাল ২০২৪’ এর আয়োজন করা হয়েছে।
বিজিএমইএ সভাপতি ফারুক হাসান বাংলাদেশের সংস্কৃতির ভান্ডার সংরক্ষণ ও আন্তর্জাতিক বিশ্বে এগুলো তুলে ধরে দেশকে ব্র্যান্ডিং করার উপর গুরুত্বারোপ করেন।
তিনি বলেন, আমাদের সমৃদ্ধময় ঐতিহ্য ও সংস্কৃতিকে বিশ্বের সামনে তুলে ধরার মাধ্যমে আমরা নিজেদের ব্র্যান্ডিং করতে পারি এবং বাংলাদেশের সমৃদ্ধ সংস্কৃতি ও ঐতিহ্যকে ফ্যাশনের সঙ্গে যুক্ত করে পোশাক রপ্তানির সুযোগ তৈরি করতে পারি, এভাবে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিতে অবদান রাখতে পারি। ঐতিহ্যবাহী পণ্য যেমন জামদানি, খাদি এবং বিভিন্ন তাঁতবস্ত্রকে আন্তর্জাতিকভাবে তুলে ধরা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
ফারুক হাসান সবাইকে দেশীয় পণ্য ব্যবহার করে দেশের ঐতিহ্য ও সংস্কৃতি উদযাপনের আহবান জানান।
আরও পড়ুন: তৈরি পোশাকের জন্য নিরবচ্ছিন্ন সেবা নিশ্চিত করতে এনবিআরকে অনুরোধ জানিয়েছে বিজিএমইএ
তিনি সকলের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেন, আসুন আমরা সবাই নিজ নিজ অবস্থান থেকে আমাদের প্রিয় মাতৃভূমিকে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে গৌরবময় অবস্থানে উন্নীত করতে অবদান রাখি।
এর আগে একই দিনে, বিজিএমইএ একটি সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে, যেখানে ফারুক হাসান বাংলাদেশ হেরিটেজ ফেস্টিভ্যাল ২০২৪ এর বিভিন্ন দিকগুলো এবং উদ্দেশ্যসহ সাংস্কৃতিক উৎসবের একটি সার্বিক বর্ণনা দেন।
বাংলাদেশ হেরিটেজ ফেস্টিভ্যাল ২০২৪ এর উদ্দেশ্য হলো- বাংলাদেশের সমৃদ্ধশালী সংস্কৃতি ও শত শত বছরের ঐতিহ্য, যেমন জামদানি, খাদি, মসলিন, গামছা, মনিপুরি তাঁতবস্ত্র, মৃৎশিল্প, (টেপা পুতুল, শখের হাড়ি, পোড়ামাটির পণ্য) হস্তশিল্প, নকশি কাঁথা, পাটজাত পণ্য, বেত, শীতলপাটি এবং ৬ষ্ঠ ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ কর্তৃক স্বীকৃত রিকশা পেন্টিং এবং আরও অনেক দেশীয় পণ্য তুলে ধরা।
এই ইভেন্টের বিশেষ দিগুলো হলো ফ্যাশন শো, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, প্রদর্শনী এবং শিল্প ও কারুকাজ উপস্থাপন, যা বাংলাদেশকে অনন্য করে তুলেছে। পুরো উৎসব জুড়ে, দর্শকরা বাংলাদেশের বিভিন্ন সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যর সঙ্গে একাত্ম হওয়ার সুযোগ পাবেন।
উৎসবের একটি প্রধান আকর্ষণ হলো বিজিএমইএ কমপ্লেক্সের নিচতলায় বিখ্যাত শিল্পীদের শিল্পকর্ম নিয়ে একটি চিত্র প্রদর্শনী, যা বাংলাদেশের ঐতিহ্য ও অপার সৌন্দর্যকে তুলে ধরছে। উৎসবে মোট ৪০টি স্টল অংশগ্রহণ করছে, যেখানে বাংলাদেশের সাংস্কৃতি ও ঐতিহ্যময় পণ্য প্রদর্শন করা হয়েছে।
ইভেন্টে জামদানি, মসলিন, খাদি এবং অন্যান্য ঐতিহ্যবাহী কাপড় থেকে তৈরি উচ্চমানের পোশাকগুলো নিয়ে একটি মন্ত্রমুগ্ধ ফ্যাশন শোও রয়েছে। উৎসবে বাংলাদেশের লোকজ সঙ্গীত পরিবেশনাও থাকছে।
উৎসবে প্রথম দিনে নৃত্য পরিবেশন করেন প্রখ্যাত অভিনেত্রী ও নৃত্যশিল্পী সাদিয়া ইসলাম মৌ ও তার দল।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন- বিজিএমইএ সভাপতি ফারুক হাসান।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন- বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের মাননীয় প্রতিমন্ত্রী আহসানুল ইসলাম টিটু এমপি।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন- বাংলাদেশে নিযুক্ত ইউরোপিয় ইউনিয়নের রাষ্ট্রদূত ও প্রতিনিধিদলের প্রধান চার্লস হোয়াইটলি, বাংলাদেশে স্পেনের রাষ্ট্রদূত ফ্রান্সিসকো ডি অ্যাসিস বেনিতেস সালাস, প্রখ্যাত শিল্পী মোহাম্মদ ইউনুস এবং গুলশান হোসেন।
আরও উপস্থিত ছিলেন- বিজিএমইএ এর পরিচালক আসিফ আশরাফ, পরিচালক ব্যারিস্টার ভিদিয়া অমৃত খান এবং পরিচালক নীলা হোসনে আরা।
আরও পড়ুন: শীতে দরিদ্রদের দুর্ভোগ কমাতে বিত্তবানদের প্রতি আহ্বান বিজিএমইএ সভাপতির