বাংলাদেশে মতপ্রকাশের স্বাধীনতা ও গণমাধ্যমের ওপর আলোকপাত করে বিশেষ আলোচনাসভার আয়োজন করে দৃক গ্যালারি।
বুধবার রাজধানীর পান্থপথে দৃক পিকচার লাইব্রেরিতে এটির আয়োজন করা হয়।
বিকাল সাড়ে ৫টায় দৃকপথ ভবনে বিশ্বখ্যাত ফটোসাংবাদিক ও দৃকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক শহিদুল আলমের সঙ্গে এই কথোপকথনে যোগ দেন ইতিহাসবিদ, গবেষক এবং ইউএনবি ও ঢাকা কুরিয়ার-এর এডিটর-অ্যাট-লার্জ আফসান চৌধুরী।
কথোপকথনে দেশের দুইজন বিশিষ্ট মিডিয়া ব্যক্তিত্বের বর্ণনার মাধ্যমে বাংলাদেশের গণমাধ্যমের স্বাধীনতার প্রধান বাধাগুলোকে তুলে ধরেন।
শহিদুল বলেন, ‘বাংলাদেশে বাকস্বাধীনতা নেই। আমরা যে মতাদর্শে স্বাধীন, তা এদেশে একটি মৌলিক ভুল ধারণা। আমরা যে পরিস্থিতিতে আছি তার ওপর আমাদের নিয়ন্ত্রণ নেই।’
ডিজিটাল সিকিউরিটি অ্যাক্ট (ডিএসএ) সম্পর্কে তিনি বলেন, ‘আমরা ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে অন্তর্ভুক্ত বিধিতে আপত্তি জানিয়েছিলাম, কারণ এটি আইসিটি আইন ২০০৬-এর বিলুপ্ত বিধানের প্রতিস্থাপন ছিল। আইনমন্ত্রী যিনি এই আইন তৈরির তদারকি করেছিলেন তিনি দপ্তরের দায়িত্বে নেই।’
‘তৎকালীন আইনমন্ত্রী এই বিল সম্পর্কে বলেছিলেন যে এই আইনের অধীনে যদি কোনও সাংবাদিকের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়, তবে তিনি নিজেই সাংবাদিককে রক্ষা করবেন। কেউ সেই ধারাটি আর স্মরণও করে না, কারণ তিনি আর মন্ত্রী নেই।’
আফসান বলেন, ‘মানুষ ভুলভাবে বিশ্বাস করে যে বাংলাদেশে মুক্ত গণমাধ্যম আছে, কিন্তু তা ভুল। বাংলাদেশের কাঠামোগত সীমাবদ্ধতা গণমাধ্যমের স্বাধীনতাকে সীমিত করে।’
আরও পড়ুন: লেখক ও গণমাধ্যম ব্যক্তিত্ব আলী ইমাম আর নেই
‘সরকার আজকাল বেশিরভাগই ডিএসএ প্রয়োগ করে বিশ্বের বৃহত্তম সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম ফেসবুকের কারণে। প্রশাসনের জন্য এই ধরনের একটি বিশাল সামাজিক মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম অত্যন্ত উদ্বেগজনক।’
‘ফেসবুক এখন গণমাধ্যম এবং সবচেয়ে জনপ্রিয় প্ল্যাটফর্ম যেখানে সবাই একজন সাংবাদিক। বাংলাদেশের বেশিরভাগ মিডিয়া আউটলেট তাদের মালিকদের দ্বারা প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। কারণ তাদের অর্থ উপার্জনের প্রয়োজন রয়েছে। স্বাধীনতা অর্জন এবং অনুশীলন করার জন্য এই দাবিটি বাদ দিতে হবে। মিডিয়া, কিন্তু কেউ সেই সুযোগ নিতে চায় না।’
আফসান বলেন, ‘সুতরাং সাংবাদিকরা যদি নিজেরাই সাংবাদিকতা চর্চা করতে চান, তবে তাদের একাই তা করতে হবে। কারণ সংস্থাগুলো তাদের সহায়তা করতে পারে না। আমাদের এখন বিবেচনা করতে হবে বাকস্বাধীনতা নিশ্চিত করার পাশাপাশি কীভাবে সোশ্যাল মিডিয়াতে একই সঙ্গে আমাদের মতামত সঠিকভাবে প্রকাশ করা যায়।
আরও পড়ুন: কিছু গণমাধ্যম বিদেশি রাষ্ট্রদূতদের বাংলাদেশ সম্পর্কে মন্তব্য করতে বাধ্য করে: পররাষ্ট্রমন্ত্রী