তিনি বলেন, ‘আমি জানি বিচার কাজ কত কঠিন বিষয়। আমি নিজে আইনজীবী বিধায় বুঝতে পারি বিচারকগণ সারাদিন কী পরিমাণ পরিশ্রম করেন। কিন্তু তারপরও আমি বলব মামলার পরিমাণ দিন দিন যে হারে বাড়ছে সেটাকে আয়ত্তের মধ্যে আনতে হলে বিচারকদের আরো বেশি কাজ করতে হবে। মামলার রাশ টেনে ধরতে বিকল্প নিষ্পত্তির উদ্যোগ নিতে হবে। ’
বুধবার সুপ্রিম কোর্টের জাজেজ লাউঞ্জে ‘বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট দিবস’ উপলক্ষে আয়োজিত এক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
রাষ্ট্রপতি বলেন, সরকার বিচার বিভাগের স্বাধীনতায় দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করে এবং বিচারকদের সুযোগ-সুবিধা বৃদ্ধির জন্য অত্যন্ত আন্তরিক।
‘কিন্তু বিচারকদের খেয়াল রাখতে হবে মামলার রায় হওয়ার পর রায়ের কপি পাওয়ার জন্য বিচারপ্রার্থীদের যেন আদালতের বারান্দায় ঘোরাঘুরি করতে না হয়,’ যোগ করেন তিনি।
মামলা ব্যবস্থাপনায় গতিশীলতার আনতে সুপ্রিম কোর্ট প্রশাসনকে তথ্য প্রযুক্তি ব্যবহারের আহ্বান জানিয়ে রাষ্ট্রপতি বলেন, ‘আমি জেনেছি সুপ্রিম কোর্টে ইতোমধ্যে অনলাইন কজলিস্ট চালু হয়েছে এবং অনলাইন বেল কনফার্মেশন ব্যবস্থা কার্যকরভাবে চলছে।’
‘কিন্তু সপ্রিম কোর্ট যেহেতু কোর্ট অব রেকর্ড সেহেতু এর সকল নথিকে ডিজিটাল নথিতে পরিণত করার উদ্যোগ গ্রহণ এবং মামলা দায়ের থেকে রায় ঘোষণা পর্যন্ত সমস্ত কার্যক্রমকে ডিজিটাল পদ্ধতিতে সংরক্ষণের ব্যবস্থা করতে হবে,’ যোগ করেন তিনি।
রাষ্ট্রপতি আরও বলেন, ‘ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে জেলখানা হতে আদালতে আসামিদের উপস্থিত করা এবং একই পদ্ধতিতে দূর হতে সাক্ষীদের সাক্ষ্য গ্রহণের ব্যবস্থা করা যায় কী না তা ভেবে দেখতে হবে। সরকার এসব বিষয়ে অত্যন্ত আন্তরিক এবং ইতোমধ্যে সরকার ই-জুডিসিয়ারি প্রকল্প বাস্তবায়নের কাজ হাতে নিয়েছে।’
প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেনের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন।
প্রসঙ্গত, বিকল্প বিরোধ নিষ্পত্তি বা এডিআর এমন একটা পদ্ধতি, যার মাধ্যমে স্বল্প সময়ে ও স্বল্প ব্যয়ে মধ্যস্থতাকারীর উপস্থিতিতে আদালতের ভেতরে বা বাইরে বসে বিরোধ নিষ্পত্তি করা। তবে যদি কোনো মামলা এডিআরের মাধ্যমে নিষ্পত্তি না হয়, তাহলে মামলাটি আদালতে চলে যায়।