বোয়ালমারী উপজেলার চিতার বাজার, ময়েনদিয়া বাজার, জয় পাশা পেঁয়াজ বাজারে ব্যবসায়ীরা জানান, চাষীরা তাদের আগাম জাতের মুড়িকাটা (গুটি থেকে উৎপাদিত) পেঁয়াজ বাজারে এনেছেন। ক্রেতারা আগ্রহ নিয়ে ওই পেঁয়াজ কেনেন।
পেঁয়াজ ব্যবসায়ী নাছিম আহমেদ কবির জানান, চিতার বাজারে আমি দুই মণ পেয়াজ নিয়ে যাই। কিন্তু হঠাৎ করে দর পড়ে যাওয়ায় বাধ্য হয়ে ৭ হাজার টাকা মণে সেই পেঁয়াজ বিক্রয় করেছি।
ওই এলাকার পেঁয়াজ চাষী শামিম মোল্লা বলেন, মৌসুমের সময়ে হাজার মণ পেঁয়াজ সংগ্রহ করেছিলাম, প্রথম দিকে বেশি অংশ কম দামে বিক্রয় করেছি, সম্প্রতি সময়ে দাম ঊর্ধ্বমুখী হওয়ায় বাড়িতে থাকা বাকি পেঁয়াজ বিক্রয় করতে পেরেছি।
তিনি বলেন, শনিবার সকাল থেকেই হঠাৎ করে এই বাজারে পেঁয়াজের দর মণ প্রতি দুই হাজার টাকা কমে গেছে।
চিতার বাজারের বণিক সমিতির সভাপতি মওলা বিশ্বাস জানান, আকস্মিকভাবে পেঁয়াজের দাম বেড়ে যাওয়ায় ক্রেতাদের মধ্যে হতাশা সৃষ্টি হয়েছিল। তবে গত দুই দিন ধরে সেই দর নেমে আশায় পেঁয়াজের বাজারে স্থিতিশীলতা বিরাজ করছে।
এদিকে জেলা সালথা উপজেলার মাঝারদিয়া, বালিয়াগট্টি বাজারে গিয়ে পেঁয়াজের দাম কমতে দেখা যায়। ওইসব বাজারে পুরানো পেঁয়াজ সর্বোচ্চ বিক্রয় হচ্ছে মণ প্রতি সাড়ে সাত হাজার টাকায়। অন্য দিকে মুড়িকাটা পেঁয়াজ বাজার মূল্য রয়েছে সাড়ে মণ প্রতি ৪ হাজার টাকার মধ্যে।
জেলা কৃষি বিভাগ জানান, এই জেলার নয় উপজেলাতে পেঁয়াজ মৌসুমে সময়ে ৪ লাখ ৬০ হাজার মেট্রিক টন পেঁয়াজের উৎপাদন হয়। চলতি শীত মৌসুমের আগাম জাতের মুড়ি কাটা পেঁয়াজের উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৬০ হাজার মেট্রিক টন।
এছাড়াও জেলাতে তিন জাতের পেঁয়াজ চাষ হয়। এর মধ্যে রয়েছে হালি পেঁয়াজ (চারা থেকে উৎপাদন হয়), দানা পেঁয়াজ (বীজ থেকে উৎপাদন হয়) এবং মুড়িকাটা পেঁয়াজ (গুটি থেকে উৎপাদন হয়)।
ফরিদপুর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক কৃষিবিদ কার্তিক চন্দ্র চক্রবর্তী জানান, চলতি শীত মৌসুমে ফরিদপুরে আগাম জাতের মুড়িকাটা পেঁয়াজের আবাদ হয়েছে ৬ হাজার হেক্টর জমিতে।
তিনি বলেন, যে সকল চাষি আগে পেঁয়াজ রোপণ করেছিল তারা এখন তাদের উৎপাদিত পেঁয়াজ বাজারের আনতে শুরু করেছে। এতে পেঁয়াজ বাজার কিছুটা নিম্নমুখী। ডিসেম্বরের প্রথম সপ্তাহের মধ্যে অনেক চাষি তাদের আগাম জাতের পেঁয়াজ বাজারে তুলতে পারবে।
ফরিদপুরের জেলা প্রশাসক অতুল সরকার জানান, জেলায় যে সকল মাঠে পেঁয়াজের আবাদ বেশি হয় সে মাঠে পরিদর্শনে গিয়েছিলাম। চাষিরা বলেছে অল্প কিছু দিনের মধ্যেই ঘরে তুলতে পারবে তাদের পেঁয়াজ। আর এতে করে পেঁয়াজের বাজার স্বাভাবিক হবে বলে মনে করছেন তিনি।
ফরিদপুর শহরের হাজী শরীয়াতুল্লাহ বাজারের ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক নূর ইসলাম মোল্লা জানান, শনিবার থেকে এ বাজারে পুরানো পেঁয়াজ কেজি প্রতি বিক্রয় হচ্ছে ১৮০ টাকা দরে এবং নতুন হালি পেঁয়াজ কেজি প্রতি বিক্রয় হচ্ছে ১২০ টাকা দরে।