বাগেরহাটের শহর, বন্দর, গ্রামসহ সর্বত্র উন্নয়নের ছোঁয়া লাগায় প্রত্যন্ত অঞ্চলের অনেক মানুষ শহরের সুবিধা পাচ্ছেন।
মোংলায় ইপিজেডের পাশাপাশি অর্থনৈতিক জোন করা হয়েছে। খুলনা-মোংলা রেলপথ নির্মাণ করা হয়েছে। জেলার কয়েক হাজার ভূমি ও গৃহহীনদের জমিসহ বসতবাড়ি নির্মাণ করে দেওয়া হয়েছে। বীর মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য কমপ্লেক্স ও বসতবাড়ি নির্মাণ করা হয়েছে।
মৃতপ্রায় মোংলা সমুদ্রবন্দর কর্মচাঞ্চল্যতা ফিরে পেয়েছে। পলি মাটি জমে ভরাট হয়ে যাওয়া মোংলা ঘষিয়াখালী চ্যানেলসহ প্রায় ২০০টি নদী-খাল পুনঃখনন করে প্রবাহ ফিরিয়ে আনা হয়েছে। সুন্দরবনে বাঘরক্ষাসহ পর্যটন শিল্পকে এগিয়ে নিতে নানা উদ্যোগ বাস্তবায়ন করা হচ্ছে।
জেলায় হতদরিদ্রদের স্বল্পমূল্যে নানাভাবে খাদ্য সহায়তার ব্যবস্থা করে দিচ্ছে প্রশাসন। তথ্য-প্রযুক্তির ব্যবহার ছড়িয়ে দেওয়া হয়েছে জেলাজুড়ে। জেলার মোট জনসংখ্যার টার্গেট অনুযায়ী প্রায় শতভাগ মানুষকে করোনার ভ্যাকসিনের আওতায় আনা হয়েছে। কৃষি ক্ষেত্রেও এই জেলায় ব্যাপক সফলতা রয়েছে।
বাগেরহাটে সরকারের বেশ কয়েকটি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে কথা হলে জানা গেছে, জেলায় নানা ক্ষেত্রে ধারাবাহিকভাবে উন্নয়ন কর্মকাণ্ড চলছে। এরইমধ্যে বেশকিছু উন্নয়ন প্রকল্পের কাজ শেষ হওয়ায় মানুষ এর সুফল ভোগ করছে। শিগগিরই আরো বেশকিছু উন্নয়ন প্রকল্পের কাজ শেষ হবে।
আশ্রয়ণ
জেলার কয়েক হাজার ভূমি ও গৃহহীন মানুষ দীর্ঘদিন ধরে মানবেতর জীবনযাপন করছিলেন। এই সরকার প্রথম, দ্বিতীয়, তৃতীয় ও চতুর্থ প্রকল্পের অধীনে জেলার ৩ হাজার ৬৬৪টি ভূমি ও গৃহহীন পরিবারকে জমিসহ গৃহনির্মাণ করে দিয়েছে। পঞ্চম ও ষষ্ঠ প্রকল্পের অধীনে আরো ৯৩৯টি পরিবারকে জমিসহ ঘর দেওয়ার কাজ চলমান রয়েছে।
স্বাস্থ্য
স্বাস্থ্য সেবা মানুষের কাছে পৌঁছে দিতে কমিউনিটি ক্লিনিকের মাধ্যমে গ্রামের প্রত্যন্ত অঞ্চলের মানুষকে স্বাস্থ্য সেবা দেওয়া হচ্ছে। বাগেরহাট ১০০ শয্যার সদর হাসপাতালকে ২৫০ শয্যার জেলা হাসপাতালে রূপান্তরিত করা হয়েছে। ২৫০ শয্যা হাসপাতালের জন্য ৭তলা নতুন ভবন নির্মাণ করা হয়। এই হাসপাতালে ১০ শয্যার আইসিইউ এবং ২০ শয্যার আইশোলেশন নির্মাণ করা হয়েছে। সম্প্রতি ১০ শয্যার আইসিইউ উদ্বোধন করা হয়।
প্রতিদিন গড়ে এই হাসপাতালে এক হাজার ৫০০ জন মানুষ চিকিৎসা সেবা নিচ্ছেন। জেলার সব উপজেলায় স্বাস্থ্য বিভাগের চাহিদা অনুযায়ী সম্প্রসারিত ভবন নির্মাণ করা হয়েছে। জেলার ২৫০ শয্যার হাসপাতাল এবং উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সগুলোতে বিনামূল্যে রোগীদের ওষুধ সরবারহসহ চিকিৎসা সেবার মান বাড়ানো হয়েছে।
খাদ্য
খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির আওতায় বাগেরহাটে ১৫ টাকা কেজি দরে জনপ্রতি ৩০ কেজি করে চাল বিতরণ করা হচ্ছে। প্রায় ৯৮ হাজার পরিবার বছরে ৫ মাস এই খাদ্য সহায়তা পাচ্ছেন। ভিডব্লিউডি কার্ডের মাধ্যমে ২১ হাজার ১৩০টি পরিবারকে প্রতিমাসে ৩০ কেজি করে চাল দেওয়া হচ্ছে। এছাড়া ওএমএসের মাধ্যমে জেলায় প্রায় ২২ হাজার পরিবার ৫ কেজি করে চাল ও ৫ কেজি করে আটা স্বল্পমূল্যে ক্রয় করতে পারছেন। জেলায় ১৫ বছরে ৫ লাখ ৯৭ হাজার ৩২০ মেট্রিক টন চাল ও আটা নানাভাবে খাদ্য সহায়তা দেওয়া হয়েছে।