বিএনপির সিনিয়র নেতা ড. আবদুল মঈন খান বলেছেন, ভোটের আগে আসন বণ্টনের মাধ্যমে সরকার ৭ জানুয়ারির নির্বাচনের ফলাফল নির্ধারণ করছে।
তিনি বলেন, ‘জানুয়ারিতে নির্ধারিত নির্বাচনটি কোনো নির্বাচনই হতে পারে না। কারণ খোলাখুলিভাবে ভোট ও আসন ভাগাভাগি চলছে। এই নির্বাচনের ফলাফল ঢাকায় (সরকার দ্বারা) নির্ধারণ করা হচ্ছে। এখন যা হচ্ছে তা নির্বাচন না, সুবিধাভোগীদের মধ্যে সুবিধা বিতরণের মতো কিছু একটা।’
বৃহস্পতিবার (১৪ ডিসেম্বর) রাজধানীর মিরপুরে শহীদ বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এসব কথা বলেন।
এসময় আবদুল মঈন খান বলেন, সরকার আসন বণ্টনের এমন নির্বাচন করে জাতির ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করছে।
তিনি বলেন, নির্বাচন কমিশন (ইসি) এখন রাজধানীতে সরকারের ঠিক করা ফলাফল ৭ জানুয়ারি ঘোষণা করবে।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির এই সদস্য আরও বলেন, ‘তাই বাংলাদেশের ১৮ কোটি মানুষের কাছে আজ স্পষ্ট হয়ে গেছে যে ৭ জানুয়ারি কোনো নির্বাচন হবে না।’
আরও পড়ুন: ক্ষমতাসীন দলের এমপি-মন্ত্রীদের হাতে আলাদিনের বাতি আছে: রিজভী
শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস উপলক্ষে মিরপুরে শহীদ বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধে ফুল দিয়ে বুদ্ধিজীবীদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করেন ড. আবদুল মঈন খানসহ দলের কয়েকজন জ্যেষ্ঠ নেতা।
এসময় ড. মঈন বলেন, ‘বুদ্ধিজীবীদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে আমরা সরকারের কাছে সংঘাতের পথ ত্যাগ করার আহ্বান জানাই। এদেশের মানুষ শান্তি ভালোবাসে এবং তারা শান্তিতে থাকতে চায়... শান্তিপূর্ণভাবে রাজনৈতিক অচলাবস্থার অবসান ঘটাতে সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য পদত্যাগ করুন।’
তিনি বলেন, বিএনপি দীর্ঘদিন ধরে রাজপথে আছে এবং জনগণের ভোটের অধিকার ফিরিয়ে না দেওয়া পর্যন্ত থাকবে।
দেশ স্বাধীনের ৫০ বছরের বেশি সময় পার হলেও আওয়ামী লীগ শাসনামলে একদলীয় শাসন প্রতিষ্ঠিত হওয়ায় জনগণের বাকস্বাধীনতা, ভোটাধিকার ও গণতান্ত্রিক অধিকার নেই বলে দুঃখ প্রকাশ করেন বিএনপি নেতা।
তিনি বলেন, ‘মানুষ (বিএনপির) এখন নিজেদের ঘরে থাকতে পারে না, ভিন্নমত প্রকাশ করতে পারে না। সবাইকে এখন বাকশালের (একদলীয় সরকার) পক্ষে কথা বলতে হবে।’
এই বিএনপি নেতা বলেন, যারা একদলীয় সরকারের বিরুদ্ধে আওয়াজ তোলে, তারা গুম, রাজনৈতিক হত্যা এবং দমন-নিপীড়নের শিকার হচ্ছে।
আরও পড়ুন: বিএনপি নেতা-কর্মীদের ‘পক্ষপাতদুষ্ট’ বিচারকের মাধ্যমে শাস্তি দিচ্ছে সরকার: রিজভী
তিনি বলেন, সরকার বুলেট, টিয়ারগ্যাস ও সাউন্ড গ্রেনেড দিয়ে জনগণকে আটকানোর চেষ্টা করতে পারে। কিন্তু গত দেড় বছর ধরে বিএনপি যেভাবে একদলীয় সরকারের বিরুদ্ধে গণতান্ত্রিক ও শান্তিপূর্ণভাবে প্রতিবাদ জানাচ্ছে, তা তারা অব্যাহত রাখবে।
ড. মঈন বলেন, ‘আমরা চাই বাংলাদেশে এই রাজনৈতিক সংঘাত শান্তিপূর্ণভাবে শেষ হোক। সরকার দাবি করে তারা ব্যাপক উন্নয়ন করেছে, তাহলে তারা অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন করতে ভয় পাচ্ছে কেন?’
এসময় তিনি সরকারের প্রতি বিধিনিষেধ ও দমন-পীড়নের পথ ছেড়ে জনগণের মুখোমুখি হওয়ার আহ্বান জানান।
তিনি বলেন, ‘সব মৌলিক অধিকার ফিরিয়ে আনুন এবং একটি সুষ্ঠু ও বিশ্বাসযোগ্য নির্বাচন করুন। সুষ্ঠু নির্বাচনে জয়ী হলে আমিই সবার আগে আপনাদের অভিনন্দন জানাব। কিন্তু বাস্তবতা হলো, আপনারা দেশের জনগণকে এবং সুষ্ঠু নির্বাচনকে ভয় পান।’
আরও পড়ুন: বিএনপি নেতা-কর্মীরা কারাগারে নির্যাতনের শিকার হচ্ছেন: রিজভী