দলের সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেন, ‘‘করোনাভাইরাস মোকাবিলায় সরকারের নেয়া নীতির বিষয়ে মানুষের পরিষ্কার ধারণা নেই। ‘নো কিট নো করোনা, নো টেস্ট নো করোনা অ্যান্ড নো পেসেন্ট নো করোনা’ নীতি নেয়ার কারণে ইরান ও ইতালি সরকার তাদের দেশ ধ্বংস করে দিয়েছে এবং তারা আজ বিশ্ব থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। আমাদের দেশেও সেই লুকোচুরির নীতি অনুসরণ করে সবকিছু করার চেষ্টা চলছে।’’
রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয় থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে সংবাদ সম্মেলনে দেয়া বক্তব্যে তিনি আরও অভিযোগ করেন, কেউ যাতে মারাত্মক করোনাভাইরাস সংক্রমণের বিষয়ে সরকারের নেয়া এমন পদক্ষেপের কথা প্রকাশ করতে না পারে সে ব্যাপারেও প্রচেষ্টা চালাচ্ছে। ‘এ লুকোচুরি নীতিকে বলা হচ্ছে গুজব।’
বিএনপির এ নেতা বলেন, বাস্তবতাকে অস্বীকার করে মন্ত্রীদের ‘দায়িত্বজ্ঞানহীন’ মন্তব্য এবং করোনাভাইরাস মোকাবিলায় সরকারের ‘বানোয়াট’ সফলতা নিয়ে করা মন্তব্য জনগণের উদ্বেগ ও হতাশা বাড়াচ্ছে।
করোনাভাইরাসের ছড়িয়ে পড়া ঠেকাতে দুমাস সময় পেয়েও সরকার প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি নিতে ব্যর্থ হয়েছে বলে দুঃখ প্রকাশ করেন তিনি।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডাব্লিউএইচও) নির্দেশিকা অনুসারে করোনায় আক্রান্ত বিভিন্ন দেশ থেকে ফিরে আসা বাংলাদেশিদের আলাদাভাবে কোয়ারেন্টাইনের আওতায় আনতে সরকার ব্যর্থ হওয়ায় দেশটি মারাত্মক বিপদের মুখোমুখি হতে পারে বলেও উদ্বেগ প্রকাশ করেন রুহুল কবির রিজভী।
তিনি বলেন, এ ধরনের দুর্যোগ মোকাবিলায় এখনও সরকারের প্রস্তুতি ও সমন্বয় উভয়ই ক্ষেত্রেই ঘাটতি রয়েছে। ‘সংক্রমিত রোগীদের শনাক্ত করার মতো পর্যাপ্ত সরঞ্জাম ও ব্যবস্থা নেই ... সরকার পরীক্ষা ছাড়াই যে পরিসংখ্যান দিচ্ছে তা মানুষের কাছে বিশ্বাসযোগ্য নয়।’
বিএনপির এ নেতা বলেন, যদিও সরকার বলছে পর পর গত দুদিন ধরে দেশে করোনায় আক্রান্ত কোনো রোগী ধরা পড়েনি, তবে গণমাধ্যমে সর্দি, কাশি এবং শ্বাসকষ্টজনিত সমস্যার কারণে মানুষের মৃত্যুর খবর পাওয়া যাচ্ছে। ‘সংবাদপত্রগুলো গত ২৪ ঘণ্টায় করোনাভাইরাসে আক্রান্তের লক্ষণ নিয়ে পাঁচজনের মৃত্যু হয়েছে বলে খবর প্রকাশ করেছে।’
জানুয়ারির শেষ সপ্তাহ থেকে প্রায় ৬ লাখ ৬৫ হাজার মানুষ বিভিন্ন দেশ থেকে বাংলাদেশে এসছে জানিয়ে তিনি বলেন, যারা ফিরে এসেছে এবং করোনায় আক্রান্ত কোনো ব্যক্তির সংস্পর্শে আসা ব্যক্তিদের এখনও পরীক্ষা করা হয়নি। ‘এসব ব্যক্তিদের চিহ্নিত না করায় তারা সমাজে জ্যামিতিক হারে এ ভাইরাস ছড়িয়ে দেয়ার ঝুঁকি রয়েছে।’