জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সজিব আহমেদ ও মেজবাহ উদ্দিনের উপস্থিতিতে আখালিয়া নবাবী মসজিদ কবরস্থান থেকে সকাল ৯টায় লাশ উত্তোলনের কাজ শুরু হয়। প্রায় ২ ঘণ্টা পর বেলা ১১টার দিকে লাশ উত্তোলন কাজ শেষ হয়।
পিবিআই টিমের পাশাপাশি ওসমানী মেডিকেল কলেজের কয়েকজন ডোমও সেখানে ছিলেন।
পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) সিলেট জেলা পুলিশ সুপার খালেকুজ্জামান বলেন, জেলা প্রশাসনের ম্যাজিস্ট্রেটের উপস্থিতিতে রায়হানের লাশ উত্তোলন করা হয়েছে। পরে লাশের সুরতহাল করা হয়। এরপর ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে লাশ পাঠানো হয়। সেখানে মেডিকেল বোর্ড গঠনের পর তার ময়নাতদন্ত করা হবে।
তিনি আরও জানান, পুলিশ এই হত্যা মামলায় অজ্ঞাতদের গ্রেপ্তার করার জন্য কাজ চালিয়ে যাচ্ছে। এছাড়া তদন্তকালীন সময়ে যাদের সংশ্লিষ্টতা পিবিআই পাবে তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।
পুনরায় ময়নাতদন্তের জন্য রায়হানের মরদেহ কবর থেকে উত্তোলনের আবেদন করেছিলেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা কোতোয়ালি থানার উপপরিদর্শক (এসআই) আব্দুল বাতেন। তার আবেদনের প্রেক্ষিতেই রায়হান আহমদের মরদেহ কবর থেকে তোলার অনুমতি দেয় জেলা প্রশাসক। পুলিশ সদর দপ্তরের নির্দেশে বর্তমানে এই মামলাটির তদন্ত করেছে পিবিআই। মঙ্গলবার রাতেই এই মামলার নথি পিবিআই এর কাছে হস্তান্তর করে এসএমপি।
প্রসঙ্গত, নিহত রায়হান আহমদ আখালিয়া নেহারীপাড়ার মৃত রফিকুল ইসলামের ছেলে। রায়হান সিলেট নগরীর স্টেডিয়াম মার্কেট এলাকায় একটি ডায়াগনস্টিক সেন্টারে চাকরি করতেন। গত ১০ অক্টোবর তিনি যথারীতি দায়িত্ব পালন করে ওইদিন রাতে বাড়িতে না ফেরায় স্বজনরা ছিলেন উদ্বেগে।
গত ১১ অক্টোবর বিকালে সিলেট নগরীর আখালিয়া নেহারিপাড়া এলাকার বাসিন্দা রায়হান আহমেদের (৩৫) মরদেহ পাওয়া যায় সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে। খবর পেয়ে পরিবারের সদস্যরা সেখানে ছুটে যান। তারা রায়হানের শরীরে অসংখ্য আঘাতের চিহ্ন দেখতে পান।
এ ঘটনায় নিহতের স্ত্রী তাহমিনা আক্তার তান্নি বাদী হয়ে ওই দিনই সিলেট কোতোয়ালি মডেল থানায় মামলা করেন। মামলায় অভিযোগ করা হয়, সিলেটের বন্দরবাজার পুলিশ ফাঁড়িতে রায়হানকে নির্যাতন করে হত্যা করা হয়েছে। যদিও পুলিশের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়, ছিনতাইকালে গণপিটুনিতে মারা গেছেন রায়হান।
রায়হানের মৃত্যুর ঘটনায় পুলিশের বিরুদ্ধে অভিযোগ ওঠায় তা তদন্তের জন্য সিলেট মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার (উত্তর) শাহরিয়ার আলম মামুনের নেতৃত্বে একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটি পুলিশি নির্যাতনের অভিযোগের সত্যতা পেয়েছে। এ ঘটনায় বন্দরবাজার ফাঁড়ির ইনচার্জ আকবর হোসেন ভুঁইয়াসহ চার পুলিশকে সাময়িক বরখাস্ত এবং তিনজনকে প্রত্যাহার করা হয়েছে।