বঙ্গবন্ধু
দেশকে শক্তিশালী ভিত্তি দিতে জাতির পিতা সবকিছুই করেছেন: পররাষ্ট্রমন্ত্রী
পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন বলেছেন, বঙ্গবন্ধু স্বদেশে ফেরার পর দেশকে শক্তিশালী ভিত্তির উপর প্রতিষ্ঠিত করতে যা যা প্রয়োজন বঙ্গবন্ধু তা করে গেছেন। জাতির পিতা হিসেবে যা যা করার তিনি তার সবকিছুই করে গেছেন৷
তিনি বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু মাত্র সাড়ে তিন বছরে ১২৬টি দেশের স্বীকৃতি আদায় করেছিলেন। মাত্র আড়াই মাসের মাথায় বন্ধুপ্রতিম দেশের সৈন্যদের ফেরত পাঠিয়েছেন। অল্প সময়ের মধ্যেই জাতিসংঘসহ বিশ্বের গুরুত্বপূর্ণ সকল সংস্থার সদস্যপদ অর্জন করতে সক্ষম হয়েছেন। দেশকে শক্ত ভিত্তির উপর প্রতিষ্ঠিত করতে মাত্র নয়মাসের মাথায় একটি অপূর্ব শাসনতন্ত্র (সংবিধান) তৈরি করে দিয়েছেন।’
শুক্রবার (২ সেপ্টেম্বর) বিকালে সিলেট জেলা পরিষদ মিলনায়তনে ‘বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান আজীবন সংগ্রামীর গল্প’ শীর্ষক বইয়ের কুইজ প্রতিযোগিতার পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।
পড়ুন: বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা গড়তে শেখ হাসিনার হাতকে আরও শক্তিশালী করুন: পররাষ্ট্রমন্ত্রী
সিলেট সিটি কর্পোরেশন, চন্দ্রাবতী একাডেমির সহযোগিতায়, ‘বঙ্গবন্ধুকে জানো, বঙ্গবন্ধুকে পড়’ প্রতিপাদ্যে আগস্ট মাস জুড়ে শিক্ষার্থীদের জন্য এই কুইজ প্রতিযোগিতার আয়োজন করে।
অনুষ্ঠানে ড. মোমেন বলেন, বঙ্গবন্ধু দেশের শিক্ষা, সংস্কৃতি, ধর্মীয়-সবক্ষেত্রে কাজ করে গেছেন। কৃষি ক্ষেত্রে যেসব পলিসি, স্ট্রাটেজি বঙ্গবন্ধু রেখে গিয়েছিলেন সেগুলো এখনো আমাদের চলার পথে পাথেয়। বঙ্গবন্ধু পররাষ্ট্র বিষয়ক অপূর্ব একটি নীতি আমাদের দিয়ে গেছেন, আমরা এখনো সেটা অনুসরণ করি, আর সেটা হলো- ‘সবার সাথে বন্ধুত্ব কারো সাথে বৈরিতা নয়।’
ড. মোমেন বলেন, বঙ্গবন্ধুর এসব অর্জনের কথা শিক্ষার্থীদের জানাতে হবে।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী শিক্ষার্থীদের জন্য বই পড়া ও কুইজ প্রতিযোগিতা আয়োজনের জন্য সিলেট সিটি কর্পোরেশনকে ধন্যবাদ জানান।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ‘বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান আজীবন সংগ্রামীর গল্প’ বইয়ের লেখক, বিশিষ্ট সমাজ উন্নয়ন কর্মী ও মোমেন ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান সেলিনা মোমেন। সম্মানিত অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সিলেট সিটি কর্পোরেশনের সচিব ফাহিমা ইয়াসমিন।
সেলিনা মোমেন তাঁর ‘বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান আজীবন সংগ্রামীর গল্প’ শীর্ষক বইটি লেখার প্রেক্ষাপট সম্পর্কে বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু সম্পর্কে সহজ ভাষায় শিক্ষার্থীদের জানানোর তাগিদ থেকে এই বইটি লিখেছি। শিক্ষার্থীরা যদি জানতে পারে যে, বঙ্গবন্ধু কী ধরণের মানুষ ছিলেন, ছোট বেলায় তিনি কী করতেন, কীভাবে অন্যের সাহায্যে এগিয়ে আসতেন-এগুলো যদি সহজ ভাষায় শিক্ষার্থীদের জানানো যায়- তাহলে তারাও দেশের উপযুক্ত নাগরিক হিসেবে নিজেদের গড়ে তুলতে অনুপ্রাণিত হবে।’
তিনি প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণকারী শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্যে বলেন, বঙ্গবন্ধু যেভাবে দেশকে, দেশের মানুষকে ভালোবাসতেন-তোমরাও সেভাবে দেশকে, দেশের মানুষকে ভালোবাসতে শেখো।’
বাংলাদেশকে জানতে হলে বঙ্গবন্ধুকে জানতে হবে উল্লেখ করে সেলিনা মোমেন বলেন, বঙ্গবন্ধু সোনার বাংলা গড়তে চেয়েছিলেন। সোনার বাংলার অর্থ হলো-এদেশের মানুষ যেন ক্ষুধা-দারিদ্রমুক্ত জীবন পায়, দুর্নীতিমুক্ত মানুষ হয়-আর এটাই বঙ্গবন্ধু চেয়েছিলেন।’
তিনি আরও বলেন, সোনার বাংলা গড়তে হলে সোনার মানুষ হতে হবে। আর সোনার মানুষ হতে হলে বঙ্গবন্ধুকে জানতে হবে, তাঁকে অনুসরণ করতে হবে।’
তিনি শিক্ষার্থীদের জন্য কুইজ প্রতিযোগিতার মাধ্যমে বঙ্গবন্ধুকে জানার সুযোগ প্রদানের জন্য সংশ্লিষ্টদের প্রতি ধন্যবাদ জানান।
পড়ুন: শিনজো আবে বাংলাদেশের খাঁটি বন্ধু ছিলেন: পররাষ্ট্রমন্ত্রী
মিয়ানমারকে সতর্ক করেছে সরকার: মর্টার শেল ছোড়া প্রসঙ্গে পররাষ্ট্রমন্ত্রী
বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা গড়তে শেখ হাসিনার হাতকে আরও শক্তিশালী করুন: পররাষ্ট্রমন্ত্রী
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপ্নের সোনার বাংলা অর্জনের জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হাতকে আরও শক্তিশালী করার আহবান জানিয়েছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন। শুক্রবার সকালে সিলেটে শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের সৈয়দ মুজতবা আলী হলের বর্ধিতাংশের উদ্বোধন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় উপস্থিত শিক্ষক, শিক্ষার্থীসহ সকলের প্রতি তিনি এ আহ্বান জানান।
অনুষ্ঠানে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান আমাদের এই দেশটা তৈরি করে দিয়ে গেছেন। তিনি শুধু একটা ভূখণ্ড দিয়ে যান নাই- জাতির পিতা হিসেবে যা যা করার, তিনি তা করেছেন। মাত্র সাড়ে তিন বছরে বাংলাদেশের পক্ষে ১২৬টি দেশের স্বীকৃতি অর্জন করেছিলেন বঙ্গবন্ধু। জাতিসংঘসহ পৃথিবীর বড় বড় সকল সংস্থার সদস্যপদ অর্জন করেছিলেন। মাত্র ৯ মাসের মাথায় তিনি আমাদের একটি শক্তিশালী সংবিধান দিয়ে গেছেন।’
ড. মোমেন বলেন, ‘এসব সম্ভব হয়েছে বঙ্গবন্ধুর গতিশীল ও দূরদর্শী নেতৃত্বের জন্য। শুধু তাই নয়- তিনি আমাদের একটি স্বপ্ন দেখিয়েছেন- সোনার বাংলার স্বপ্ন। একটা উন্নত, সমৃদ্ধশালী, অসাম্প্রদায়িক অর্থনীতি গড়ে তোলার স্বপ্ন। এখন আমাদের সবার দায়িত্ব হচ্ছে সেই স্বপ্ন বাস্তবায়ন করা।’
আরও পড়ুন: মিয়ানমারকে সতর্ক করেছে সরকার: মর্টার শেল ছোড়া প্রসঙ্গে পররাষ্ট্রমন্ত্রী
জিয়া মারা না গেলে বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলার আসামি হতেন: আইনমন্ত্রী
আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়কমন্ত্রী আনিসুল হক বলেছেন, জিয়াউর রহমান যে বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত ছিলেন তা প্রমাণের জন্য রকেট সায়েন্স লাগে না। তার কর্মকাণ্ডই প্রমাণ করে তিনি এই হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত ছিলেন। মারা না গেলে জিয়াউর রহমান এই মামলার আসামি হতেন বলেও জানান তিনি।
বুধবার সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতি মিলনায়তনে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৪৭তম শাহাদাতবার্ষিকী ও জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষ্যে বঙ্গবন্ধু আওয়ামী আইনজীবী পরিষদ আয়োজিত আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিলে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
আইনমন্ত্রী বলেন, বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডে যারা ষড়যন্ত্র করেছেন, তাদেরকে চিহ্নিত করতে একটি কমিশন গঠনের বিষয়ে অনেকেই এখন সোচ্চার। তিনি আশ্বস্ত করে বলেন, সময়মত এ কমিশন অবশ্যই গঠন করা হবে এবং এর মাধ্যমে ষড়যন্ত্রকারীদের চিহ্নিত করা হবে। তিনি বলেন, ষড়যন্ত্রকারীরা কমবেশি চিহ্নিত। তাদের কর্মকাণ্ডকে দলিল হিসেবে সংরক্ষণের জন্য কমিশন প্রয়োজন।
আরও পড়ুন:সাজাপ্রাপ্ত আসামিদের ছাড় দেয়া হবে না: আইনমন্ত্রী
তিনি বলেন, ‘উইচ হান্টিং’ বা প্রতিশোধমূলক ব্যবস্থা হিসেবে এই কমিশন গঠন করা হবে না। ১৯৭৫ সালের বাংলাদেশের ভবিষ্যতকে বদলে দেয়ার জন্য যে কলঙ্কিত প্রচেষ্টা নেয়া হয়েছিল, যে নৃশংস হত্যাকাণ্ড ঘটানো হয়েছিলে তার সঙ্গে কারা কারা জড়িত ছিল, নতুন ও ভবিষ্যত প্রজন্মকে সেটা জানানোর জন্যই এই কমিশন গঠন করা হবে। এছাড়া কাদের ব্যাপারে তাদের সাবধানতা অবলম্বন করা দরকার সেটা জানানোও এই কমিশনের উদ্দেশ্য।
বঙ্গবন্ধু আওয়ামী আইনজীবী পরিষদের আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট ইউসুফ হোসেন হুমায়ুনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস, সাবেক খাদ্যমন্ত্রী কামরুল ইসলাম এমপি, অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন, বাংলাদেশ বার কাউন্সিলের ভাইস চেয়ারম্যান সৈয়দ রেজাউর রহমান, আওয়ামী লীগের আইন বিষয়ক সম্পাদক কাজী নজিবুল্লাহ হিরু, সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সভাপতি মো. মোমতাজ উদ্দিন ফকির, এডভোকেট আব্দুল্লাহ আবু প্রমুখ বঙ্গবন্ধুর জীবন-আদর্শ নিয়ে আলোচনা করেন।
অনুষ্ঠানে ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্টের নৃশংস হত্যাকাণ্ডের শিকার বঙ্গবন্ধু পরিবারের সদস্যদের রুহের মাগফিরাত কামনা করে দোয়া করা হয়।
আরও পড়ুন:আ.লীগ জনগণের দল, আমাদের শক্তি জনগণের শক্তি: আইনমন্ত্রী
সুষ্ঠু ভূমি ব্যবস্থাপনার অভাবেই মামলাজট: আইনমন্ত্রী
বঙ্গবন্ধুর হত্যার অন্তরালে যারা ছিল তাদের বিচার হবে: মুক্তিযুদ্ধ বিষয়কমন্ত্রী
মুক্তিযুদ্ধ বিষয়কমন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক বলেছেন, বঙ্গবন্ধুর হত্যার অন্তরালে যারা ছিল তাদের বিচার হবে।
তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধুর আত্মস্বীকৃত খুনীদের বিচার হয়েছে। কিন্তু পর্দার অন্তরালে যারা ছিলেন, তাদের বিচারের সময় এসেছে। কমিশন গঠন করে সেই সমস্ত মদদদাতাদের খুঁজে বের করে জাতির সামনে তুলে ধরা হবে। তাদেরকে চিহ্নিত করতে হবে। হয়তো অনেকে মারা গেছে, তাদের বিচার হবে না, কিন্ত ইতিহাস তো জানা উচিৎ।
মঙ্গলবার সন্ধ্যায় গোপালগঞ্জে শেখ ফজলুল হক মনি স্মৃতি মিলনায়তনে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় আয়োজিত বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৪৭তম শাহাদত বার্ষিকী ও শোক দিবসের আলোচন সভায় মন্ত্রী এই সব কথা বলেন।
আরও পড়ুন: টিকা না দিলে শাস্তি: মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রীর বক্তব্য প্রত্যাহার
তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধুকে হত্যা শুধু ব্যক্তির হত্যা ছিল না, বা মুষ্টিমেয় কয়েকজন দুস্কৃতিকারী হত্যা করেছে, তা নয়। এটি আন্তর্জাতিক ষড়যন্ত্রের ফসল।
মন্ত্রী বলেন, এই দেশে একটি দল এখনও শ্লোগান দেয়, ৭৫ এর হাতিয়ার গর্জে উঠুক আরেকবার। ৭৫ এ বঙ্গবন্ধুকে স্বপরিবারে হত্যা করেছে। এখনও তারা হত্যা করতে চায়। তারেক জিয়া হাওয়া ভবনে বসে ষড়যন্ত্র করেই শেখ হাসিনাকে হত্যার জন্য ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা চালিয়েছিল। তারেক ছিল তার মদদ দাতা, মাস্টার মাইন্ড।
শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনির সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী।
স্বাগত বক্তব্য দেন জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. মো. মশিউর রহমান ও উপউপাচার্য প্রফেসর ড. মো. নিজাম উদ্দিন।
আ.লীগ জনগণের দল, আমাদের শক্তি জনগণের শক্তি: আইনমন্ত্রী
আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়কমন্ত্রী আনিসুল হক বলেছেন, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ জনগণের দল। আমাদের শক্তি জনগণের শক্তি। ২০০৮, ২০১৪ ও ২০১৮ সালে আওয়ামী লীগ জনগণের ভোটে সরকার গঠন করেছে। আগামী নির্বাচনেও জনগণের ভোটে সরকার গঠন করবে ইনশাআল্লাহ। এজন্য অন্য কোন কিছুর ওপর নির্ভর করার প্রয়োজন নেই।
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৪৭তম শাহাদাতবার্ষিকী ও জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষ্যে আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয় আয়োজিত আলোচনা ও দোয়া মাহফিলে সভাপতির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
আইনমন্ত্রী বলেন, তৎকালীন পূর্ব বাংলার অনেক বড় বড় নেতা পাকিস্তানের সামরিক জান্তাদের সঙ্গে আপস করলেও বঙ্গবন্ধু কখনও আপস করেননি। এজন্য পাকিস্তানের সামরিক শাসকরা বঙ্গবন্ধুকে ভয় পেতেন, তাঁকে গুণতেন। বঙ্গবন্ধুকে ভয় পাওয়ার যুক্তিও ছিল।
‘বঙ্গবন্ধু সবসময় নিয়মতান্ত্রিক রাজনীতি করতেন। তিনি গেরিলা যুদ্ধে বিশ্বাস করতেন না। ষড়যন্ত্রের রাজনীতিতে বিশ্বাস করতেন না। তিনি সবসময় জনগণকে সঙ্গে নিয়ে রাজনৈতিক আন্দোলনে বিশ্বাসী ছিলেন। কারণ তাঁর ছিল প্রবল দেশপ্রেম এবং ছিল জনগণের প্রতি গভীর ভালোবাসা’, বলেন আইনমন্ত্রী আনিসুল হক।
আরও পড়ুন: সুষ্ঠু ভূমি ব্যবস্থাপনার অভাবেই মামলাজট: আইনমন্ত্রী
তিনি দুঃখ করে বলেন, পাকিস্তানের সামরিক জান্তারা যাঁকে হত্যা করার সাহস পায়নি, সেই বঙ্গবন্ধুকে আমরা হত্যা করেছি। এই কলঙ্ক আমরা কোনোদিন মোচন করতে পারবো না।
আইনমন্ত্রী বলেন, ‘জাতির পিতার আদর্শ, দেশপ্রেম, মানুষের প্রতি গভীর ভালোবাসা ও আত্মমর্যাদার চেতনায় উদ্বুদ্ধ হয়ে জননেত্রী শেখ হাসিনা বাংলাদেশকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন। বৈশ্বিক প্রেক্ষাপটে আমরা বর্তমানে কঠিন সময় পার করছি। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে এই কঠিন সময় অবশ্যই আমরা মোকাবিলা করতে পারবো ইনশাআল্লাহ। তাঁর নেতৃত্বে ২০৪১ সালের মধ্যে উন্নত বাংলাদেশ বিনির্মাণ করতে পারবো।’
আলোচনা সভায় আইন মন্ত্রণালয়ের লেজিসলেটিভ ও সংসদ বিষয়ক বিভাগের সচিব মো. মইনুল কবির, আইন ও বিচার বিভাগের সচিব মো. গোলাম সারওয়ার, নিবন্ধন অধিদপ্তরের মহাপরিদর্শক শহিদুল আলম ঝিনুক, সুপ্রিম কোর্টের ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার জেনারেল মো. গোলাম রাব্বানী, অতিরিক্ত সচিব হাফিজ আহমেদ চৌধুরী, যুগ্ম সচিব উম্মে কুলসুম ও কাজী আরিফুজ্জামান, উপসচিব শেখ গোলাম মাহবুব ও গাজী কালিমুল্লাহ প্রমুখ বঙ্গবন্ধুর জীবন আদর্শ নিয়ে আলোচনা করেন।
অনুষ্ঠান শেষে ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্টে নৃশংস হত্যাকণ্ডের শিকার বঙ্গবন্ধু পরিবারের সদস্যদের রুহের মাগফিরাত কামনা করে দোয়া করা হয়।
আরও পড়ুন: বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ড পূর্বপরিকল্পিত ও ষড়যন্ত্রমূলক: আইনমন্ত্রী
জাতিসংঘের মানবাধিকার হাইকমিশনার দেশের পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেননি: আইনমন্ত্রী
বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ড পূর্বপরিকল্পিত ও ষড়যন্ত্রমূলক: আইনমন্ত্রী
আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়কমন্ত্রী আনিসুল হক বলেছেন, বাংলাদেশ ও বঙ্গবন্ধু অবিচ্ছেদ্য। বঙ্গবন্ধুকে যারা সপরিবারে হত্যা করেছে, তারা বুঝতে পেরেছিল বঙ্গবন্ধু পরিবারের এক ফোঁটা রক্ত বেঁচে থাকলে বাংলাদেশকে ব্যর্থ রাষ্ট্রে পরিণত করা যাবে না। এ থেকেই বোঝা যায় এটি পূর্বপরিকল্পিত, ষড়যন্ত্রমূলক হত্যাকাণ্ড।মঙ্গলবার (১৬ আগস্ট) জাতীয় প্রেস ক্লাবের তোফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া মিলনায়তনে সম্প্রীতি বাংলাদেশ আয়োজিত ‘বাঙালির শোকের শ্রাবণ’ শীর্ষক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।আইনমন্ত্রী বলেন, বঙ্গবন্ধু নিজেকে খুব সাধারণ মানুষ মনে করতেন। কিন্তু জাতীয় ও আন্তর্জাতিক দৃষ্টিকোণ থেকে তিনি মোটেও একজন সাধারণ মানুষ ছিলেন না। তিনি সারা বিশ্বের দুঃখী মানুষের নেতৃত্ব দেয়ার পর্যায়ে চলে গিয়েছিলেন। এ কারণে তার শত্রু বেড়ে গিয়েছিল। কিন্তু সেই শত্রুরা দেশে একটি ষড়যন্ত্র করে তাকে হত্যা করবে, এটা কখনও ভাবা হয়নি।মন্ত্রী বলেন, ‘জিয়াউর রহমান তো শুরুই করেছিল শাহ আজিজুর রহমানকে প্রধানমন্ত্রী বানিয়ে। তিনি (শাহ আজিজুর) ছিলেন রাজাকার নম্বর ওয়ান। এছাড়াও তার (জিয়াউর রহমানের) মন্ত্রিসভার অনেকেই আইয়ুব খানের মন্ত্রী ছিলেন। এ থেকে তো পরিস্কারভাবে বুঝা যায়, মুক্তিযুদ্ধের ধারাকে সম্পূর্ণভাবে বা ৩৬০ ডিগ্রী পরিবর্তন করার জন্যই জিয়াউর রহমান এই হত্যাকাণ্ড ঘটানোর পর দেশ শাসন শুরু করেছিলেন। তার মানে বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করে তারা বাংলাদেশকে সম্পূর্ণভাবে হত্যা করতে চেয়েছিল।
আরও পড়ুন: বঙ্গবন্ধু হত্যার ষড়যন্ত্রকারীদের খুঁজতে কমিশনের রূপরেখা প্রস্তুত: আইনমন্ত্রীআইনমন্ত্রী মনে করেন, ‘বঙ্গবন্ধু হত্যার বিচার হওয়ার পর এখন এদেরকে চিহ্নিত না করলে আমরা কিন্তু এই শত্রুদের তাদের নিজেদের লালন-পালন করার অবকাশ দিবো। আমি বলছি না যে তাদের সকলকে জেলখানায় ঢুকাতে হবে, হয়তো অনেকেই মরে গেছেন। তারা জেলখানায় যাওয়ার অনেক দূর চলে গেছেন। কিন্তু এদেরকে এবং এই গোষ্ঠীটাকে যদি আমরা চিহ্নিত করতে পারি এবং তাদের সম্বন্ধে সাবধান থাকতে পারি তাহলে আমরা ২০৪১ সালে যে উন্নত বাংলাদেশ গড়ার পরিকল্পনা নিয়েছি, সেই জায়গায় পৌঁছাতে পারবো।’বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের বিষয়ে তদন্ত কমিশন গঠন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, কমিশনের রূপরেখা তৈরি করা হয়েছে। প্রথমে করোনা ভাইরাসের অতিমারি ও পরে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে কমিশন গঠন একটু দেরি হয়ে যাচ্ছে। তিনি বলেন, কমিশন কয় সদস্য বিশিষ্ট হবে, কমিশনের উদ্দেশ্য ও কাজ কী হবে, কিভাবে কাজ করবে তা কমিশনের রূপরেখায় আছে। কমিশনের কাজ হবে অনেকটাই গবেষণামূলক। এই কমিশন গঠনের সঙ্গে জননেত্রী শেখ হাসিনা ওতোপ্রতভাবে জড়িত। তার অভিমত এখানে শিরোধার্য। সেই ক্ষেত্রে তার সঙ্গে আলাপ না করে এটা প্রকাশ করা হবে না। কারণ প্রধানমন্ত্রী এটা সংশোধন, পরিমার্জন, পরিবর্ধন করার কথা বলতে পারেন। তিনি যেটা চূড়ান্ত করে দিবেন সেটাকেই জনগণের সামনে উপস্থাপন করা হবে।সম্প্রীতি বাংলাদেশের আহ্বায়ক পীযূষ বন্দ্যোপাধ্যায়ের সভাপতিত্ব ও সঞ্চালনায় আলোচনা সভায় আরও বক্তব্য দেন সুপ্রিম কোর্টের অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি শামসুদ্দীন চৌধুরী মানিক, সাবেক রাষ্ট্রদূত ও সচিব এ কে এম আতিকুর রহমান এবং রাজনৈতিক ও নিরাপত্তা বিশ্লেষক মেজর জেনারেল (অব.) মোহাম্মদ আলী শিকদার প্রমুখ।
আরও পড়ুন: জনগণকে দ্রুত ন্যায়বিচার দিন: বিচারকদের প্রতি আইনমন্ত্রী
আইনি সহায়তা কার্যক্রমকে আরও গতিশীল ও সেবাবান্ধব করা হবে: আইনমন্ত্রী
বঙ্গবন্ধু জাতিকে শক্ত ভিত্তির ওপর প্রতিষ্ঠিত করে গেছেন: পররাষ্ট্রমন্ত্রী
পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন বলেছেন, বঙ্গবন্ধু মাত্র সাড়ে তিন বছর সরকারে ছিলেন, কিন্তু জাতির পিতা হিসেবে এই সাড়ে তিন বছরে জাতিকে একটি শক্ত ভিত্তির ওপর প্রতিষ্ঠিত করার জন্যে যা যা দরকার সবগুলো তিনি সমাধা করে গেছেন। আর সেই সাথে আমাদের দিকনির্দেশনাও দিয়ে গেছেন।
সোমবার (১৫ আগস্ট) রাজধানীর বেইলি রোডস্থ ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৪৭তম শাহাদতবার্ষিকী এবং জাতীয় শোক দিবস ২০২২ উপলক্ষে আয়োজিত স্মরণসভায় সভাপতির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
ড. মোমেন বলেন, ‘জাতির ভিত্তি রচনার জন্য দরকার একটা শাষণতন্ত্র। বঙ্গবন্ধু মাত্র নয় মাসের মাথায় একটা অপূর্ব শাষণতন্ত্র আমাদের দিয়ে গেছেন। অথচ পাকিস্তানের শাষণতন্ত্র তৈরি করতে লেগেছে নয় বছর, আর আমেরিকার শাষণতন্ত্র তৈরি করতে লেগেছে তেরো বছর।’
তিনি বলেন, ‘বঙ্গবন্ধুর কার্যকর নেতৃত্বের জন্যেই মাত্র দুই মাসের মাথায় আমাদের বন্ধুপ্রতিম দেশ ভারতের সৈন্য ফিরে গেছে। বঙ্গবন্ধুর কারণেই সাড়ে তিন বছরেই আমরা ১২৬টি দেশের স্বীকৃতি পেয়েছি। প্রতিটি বড় বড় প্রতিষ্ঠান, আন্তর্জাতিক সংস্থা, ওয়ার্ল্ড ব্যাংক, আইএমএফ, প্রত্যকের সদস্যপদ এমনকি জাতিসংঘের সদস্যপদ অর্জন করি। এটা সম্ভব হয়েছে বঙ্গবন্ধুর মতো নেতৃত্বের কারণে।’
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় আয়োজিত ‘শোক থেকে শক্তি, শোক থেকে জাগরণ’ প্রতিপাদ্যের উক্ত স্মরণসভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন শেখ পরিবারের বয়োজ্যেষ্ঠ সদস্য এবং বঙ্গবন্ধু মেমোরিয়াল ট্রাস্টের সদস্য শেখ কবির হোসেন।
স্মরণসভায় পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. মোমেন আরও বলেন, পোয়েট অব পলিটিক্স খ্যাত বঙ্গবন্ধু কেবল এ দেশের নয়- তিনি ছিলেন সমগ্র বিশ্বের নেতা, দেশে দেশে নিপীড়িত জনতার সংগ্রামী চেতনার এক জীবন্ত কিংবদন্তি। আর তাই, বঙ্গবন্ধুকে হারানোর বেদনা কেবল এ দেশ নয়, সারা বিশ্বের মানুষের হৃদয়ে ধ্বনিত হয়, বিশ্বের নেতৃবৃন্দও শোকার্ত হন।
তিনি বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু ও তাঁর পরিবারের ঘাতকদের দেশে এনে বিচারের রায় কার্যকর করার জন্য যা যা করার, আমি যতদিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে আছি এই প্রচেষ্টা অবশ্যই চালিয়ে যাবো।’
বঙ্গবন্ধু হত্যার নেপথ্যে ষড়যন্ত্রকারীদের বিচার প্রসঙ্গে ড. মোমেন বলেন, ‘আমাদের একটি ফাউন্ডেশন আছে- বঙ্গবন্ধু ফাউন্ডেশন। যারা বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের নেপথ্যে ছিল তাদেরও বিচারের আওতায় আনার জন্য বঙ্গবন্ধু ফাউন্ডেশন আন্দোলন করে যাচ্ছে।’
বাংলাদেশের পররাষ্ট্র নীতিতে বঙ্গবন্ধুর দূরদর্শিতা প্রসঙ্গে ড. মোমেন বলেন, ‘অর্থনৈতিক মুক্তির জন্য বঙ্গবন্ধু ‘নন-এলাইন্ড ফরেন পলিসি’ গ্রহণ করেন। এটা যে আমাদের জন্যে কত মঙ্গলজনক, আমরা আজও তাঁর ফরেন পলিসি নিয়ে চলছি। বঙ্গবন্ধু সে সময়ে অনেক ধরনের চাপের মধ্যেও ‘নন-এলাইন্ড পলিসি’ অবলম্বন করেছেন।’
তিনি বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু বলেছেন- পিস ইজ ইম্পারেটিভ ফর ডেভেলপমেন্ট। সে জন্য তিনি সবসময় শান্তির জয়গান গেয়েছেন। আমরা শান্তি চাই। শান্তি উন্নয়নের একটি বড় সহায়ক। আমরা, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, বঙ্গবন্ধুর এই শান্তির প্রচেষ্টাকে জোর দিতে চাই।’
‘বিশ্বব্যাপী যে সংঘাত, যুদ্ধ-বিগ্রহ লেগে আছে সেগুলো যাতে কমানো যায় সেজন্য বঙ্গবন্ধুর আদর্শ অনুসরণ করে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কাজ করার সুযোগ আছে’ বলে উল্লেখ করেন ড. মোমেন।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু মাটি ও মানুষকে সবচেয়ে ভালবেসেছিলেন। তিনি বিশ্বাস করতেন মানুষকে যদি কাজে লাগানো যায় তাহলে কোন কিছুই দাবায়ে রাখতে পারে না।’
‘বঙ্গবন্ধু সবক্ষেত্রে দিকনির্দেশনা দিয়ে গেছেন, আর তার দিকনির্দেশনা অনুসরণ করেই রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনা উন্নয়নের মহাসড়কে যাত্রা শুরু করেছেন। এর ফলে আমরা বিশ্বে একটা বিশেষ অবস্থান অর্জন করেছি, একটা ‘রোল মডেল’ হিসেবে প্রতিষ্ঠা লাভ করেছি। সম্প্রতি আমরা পদ্মা সেতুর মতো বিরাট সেতু নিজেদের পয়সায় তৈরি করেছি।’
ড. মোমেন বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু যখন সবুজ বিপ্লবের ডাক দিয়ে দেশে অভাব অনটন দূর করার কাজে ব্যস্ত হয়ে পড়লেন তখনই কিছু কুচক্রী মহল বিভিন্ন ষড়যন্ত্র করে তাঁকে হত্যা করে। বঙ্গবন্ধু জীবিত থাকলে হয়তো আমরা বহু বছর আগেই উন্নয়নশীল দেশ হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হতে পারতাম।’
পড়ুন: এটি খুবই অন্যায়: বঙ্গবন্ধুর খুনিদের আশ্রয় দেয়া দেশগুলোর প্রতি পররাষ্ট্রমন্ত্রী
বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে ভারতীয় হাইকমিশনারের শ্রদ্ধা
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধা জানিয়েছেন বাংলাদেশে নিযুক্ত ভারতীয় হাইকমিশনার বিক্রম কুমার দোরাইস্বামী।
সোমবার (১৫ আগস্ট) হাইকমিশনার ভারতের জনগণ ও সরকারের পক্ষ থেকে বঙ্গবন্ধু স্মৃতি জাদুঘর পরিদর্শন করেন এবং বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করে শ্রদ্ধা জানান।
১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্টের ভয়াল রাতে কিছু উচ্ছৃঙ্খল সেনা সদস্যদের গুলিতে বঙ্গবন্ধু তার পরিবারের অধিকাংশ সদস্যসহ নিহত হন। ১৫ আগস্ট জাতীয় শোক দিবস হিসেবে পালন করা হয়।
পড়ুন: টুঙ্গিপাড়ায় বঙ্গবন্ধুর সমাধিতে প্রধানমন্ত্রীর শ্রদ্ধা
সারাদেশে জাতীয় শোক দিবস পালন
বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে জাতিসংঘ মানবাধিকার প্রধানের শ্রদ্ধা
বঙ্গবন্ধু স্মৃতি জাদুঘরে সোমবার জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়েছেন সফররত জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক হাইকমিশনার মিশেল ব্যাচেলেট।
দুপুর ১২টায় ধানমন্ডি-৩২ এ তাকে স্বাগত জানান পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী মো. শাহরিয়ার আলম।
জাতিসংঘের মানবাধিকার প্রধান সেখানে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন এবং দর্শনার্থী বইয়ে স্বাক্ষর করেন। তিনি পুরো জাদুঘর ঘুরে দেখেন এবং প্রতিমন্ত্রী তাকে ব্রিফ করেন।
ব্যাচেলেট দুই দফায় (২০০৬-২০১০ এবং ২০১৪-২০১৮) চিলির নির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ছিলেন। বুধবার সকালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে তার সাক্ষাত করার কথা রয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে সাক্ষাতের পর বুধবার বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ইন্টারন্যাশনাল অ্যান্ড স্ট্র্যাটেজিক স্টাডিজে তরুণদের সঙ্গে ‘নিউ ফ্রন্টিয়ার্স অব হিউম্যান রাইটস: ক্লাইমেট জাস্টিস ইন পারস্পেকটিভ’ বিষয়ক একটি ইন্টারেক্টিভ সেশনে যোগ দেবেন ব্যাচেলেট।
রবিবার পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেনসহ সরকারের মন্ত্রিসভার সদস্যদের সঙ্গে বৈঠক করেন তিনি।
ব্যাচেলেট তার সফর শেষে বুধবার একটি বিবৃতি দেবেন বলে কার্যালয় জানিয়েছে।
ঢাকায় অবস্থানকালে তিনি জাতীয় মানবাধিকার কমিশন, যুব প্রতিনিধি, নাগরিক সমাজের প্রতিনিধি এবং শিক্ষাবিদদের সাথে মতবিনিময় করার কথা রয়েছে।
চার দিনের সফরে রবিবার সকালে ঢাকায় পৌঁছেন ব্যাচেলেট।
পড়ুন: ব্যাচেলেটে সঙ্গে সাক্ষাতের পর ‘গুম’ নিয়ে যা বললেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী
দেশে গুম নেই, স্বাধীনতায় বিধিনিষেধ নেই: ব্যাচলেটকে বললেন মোমেন
টুঙ্গিপাড়ায় বঙ্গবন্ধুর সমাধিতে প্রধানমন্ত্রীর শ্রদ্ধা
জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে সোমবার টুঙ্গিপাড়ায় জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সমাধিতে শ্রদ্ধা জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
প্রধানমন্ত্রী সমাধিতে দুইবার পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন। প্রথমে সরকারপ্রধান হিসেবে এবং পরে আওয়ামী লীগের সভাপতি হিসেবে।
পুষ্পস্তবক অর্পণের পর প্রধানমন্ত্রী স্বাধীনতার স্থপতির স্মৃতির প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানিয়ে সেখানে কিছুক্ষণ নীরবে দাঁড়িয়ে থাকেন।
১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্টের ভয়াল রাতে কিছু উচ্ছৃঙ্খল সেনা সদস্যদের গুলিতে বঙ্গবন্ধু তার পরিবারের অধিকাংশ সদস্যসহ নিহত হন। ১৫ আগস্ট জাতীয় শোক দিবস হিসেবে পালন করা হয়।
এ সময় বাংলাদেশ সশস্ত্র বাহিনীর একটি চৌকস দল সশস্ত্র সালাম জানায়।
এরপর প্রধানমন্ত্রী জাতির জনক, বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন নেছা মুজিব এবং ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্টের হত্যাকাণ্ডে অন্যান্য শহীদদের বিদেহী আত্মার মাগফেরাত কামনা করে ফাতেহা ও মোনাজাত করেন।
এছাড়াও জাতির অব্যাহত শান্তি, অগ্রগতি ও সমৃদ্ধি কামনা করে মোনাজাত করা হয়।
পরে আওয়ামী লীগের জ্যেষ্ঠ নেতাদের সঙ্গে নিয়ে শেখ হাসিনা দলের পক্ষ থেকে বঙ্গবন্ধুর সমাধিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন।
বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের বিভিন্ন সহযোগী সংগঠনের নেতৃবৃন্দও সমাধিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন।
জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে মন্ত্রিসভার সদস্য, দলীয় নেতা-কর্মীদের সঙ্গে নিয়ে প্রধানমন্ত্রী সমাধি প্রাঙ্গণে মিলাদ ও দোয়া মাহফিলে যোগ দেবেন।
এর আগে শেখ হাসিনা দিবসটির জাতীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে ঢাকার ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে পুষ্পস্তবক অর্পণের পর বিমান বাহিনীর একটি হেলিকপ্টারযোগে বঙ্গবন্ধুর পৈতৃক নিবাস টুঙ্গিপাড়ায় পৌঁছান।
এছাড়া প্রধানমন্ত্রী সকালে বনানী কবরস্থানে ১৫ আগস্টের নির্মম হত্যাকাণ্ডের শিকার অন্য শহীদদের কবরে পুষ্পস্তবক অর্পণ এবং ফুলের পাপড়ি ছিড়িয়ে দেন। সেই সাথে তিনি শহীদদের রুহের মাগফিরাত কামনা করে ফাতেহা পাঠ ও দোয়া করেন।
পড়ুন: শ্রদ্ধাভরে বঙ্গবন্ধুর শাহাদাতবার্ষিকী পালিত হচ্ছে
জাতীয় শোক দিবস: বঙ্গবন্ধুর প্রতি প্রধানমন্ত্রীর শ্রদ্ধা