পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন বলেছেন, বঙ্গবন্ধু স্বদেশে ফেরার পর দেশকে শক্তিশালী ভিত্তির উপর প্রতিষ্ঠিত করতে যা যা প্রয়োজন বঙ্গবন্ধু তা করে গেছেন। জাতির পিতা হিসেবে যা যা করার তিনি তার সবকিছুই করে গেছেন৷
তিনি বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু মাত্র সাড়ে তিন বছরে ১২৬টি দেশের স্বীকৃতি আদায় করেছিলেন। মাত্র আড়াই মাসের মাথায় বন্ধুপ্রতিম দেশের সৈন্যদের ফেরত পাঠিয়েছেন। অল্প সময়ের মধ্যেই জাতিসংঘসহ বিশ্বের গুরুত্বপূর্ণ সকল সংস্থার সদস্যপদ অর্জন করতে সক্ষম হয়েছেন। দেশকে শক্ত ভিত্তির উপর প্রতিষ্ঠিত করতে মাত্র নয়মাসের মাথায় একটি অপূর্ব শাসনতন্ত্র (সংবিধান) তৈরি করে দিয়েছেন।’
শুক্রবার (২ সেপ্টেম্বর) বিকালে সিলেট জেলা পরিষদ মিলনায়তনে ‘বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান আজীবন সংগ্রামীর গল্প’ শীর্ষক বইয়ের কুইজ প্রতিযোগিতার পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।
পড়ুন: বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা গড়তে শেখ হাসিনার হাতকে আরও শক্তিশালী করুন: পররাষ্ট্রমন্ত্রী
সিলেট সিটি কর্পোরেশন, চন্দ্রাবতী একাডেমির সহযোগিতায়, ‘বঙ্গবন্ধুকে জানো, বঙ্গবন্ধুকে পড়’ প্রতিপাদ্যে আগস্ট মাস জুড়ে শিক্ষার্থীদের জন্য এই কুইজ প্রতিযোগিতার আয়োজন করে।
অনুষ্ঠানে ড. মোমেন বলেন, বঙ্গবন্ধু দেশের শিক্ষা, সংস্কৃতি, ধর্মীয়-সবক্ষেত্রে কাজ করে গেছেন। কৃষি ক্ষেত্রে যেসব পলিসি, স্ট্রাটেজি বঙ্গবন্ধু রেখে গিয়েছিলেন সেগুলো এখনো আমাদের চলার পথে পাথেয়। বঙ্গবন্ধু পররাষ্ট্র বিষয়ক অপূর্ব একটি নীতি আমাদের দিয়ে গেছেন, আমরা এখনো সেটা অনুসরণ করি, আর সেটা হলো- ‘সবার সাথে বন্ধুত্ব কারো সাথে বৈরিতা নয়।’
ড. মোমেন বলেন, বঙ্গবন্ধুর এসব অর্জনের কথা শিক্ষার্থীদের জানাতে হবে।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী শিক্ষার্থীদের জন্য বই পড়া ও কুইজ প্রতিযোগিতা আয়োজনের জন্য সিলেট সিটি কর্পোরেশনকে ধন্যবাদ জানান।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ‘বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান আজীবন সংগ্রামীর গল্প’ বইয়ের লেখক, বিশিষ্ট সমাজ উন্নয়ন কর্মী ও মোমেন ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান সেলিনা মোমেন। সম্মানিত অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সিলেট সিটি কর্পোরেশনের সচিব ফাহিমা ইয়াসমিন।
সেলিনা মোমেন তাঁর ‘বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান আজীবন সংগ্রামীর গল্প’ শীর্ষক বইটি লেখার প্রেক্ষাপট সম্পর্কে বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু সম্পর্কে সহজ ভাষায় শিক্ষার্থীদের জানানোর তাগিদ থেকে এই বইটি লিখেছি। শিক্ষার্থীরা যদি জানতে পারে যে, বঙ্গবন্ধু কী ধরণের মানুষ ছিলেন, ছোট বেলায় তিনি কী করতেন, কীভাবে অন্যের সাহায্যে এগিয়ে আসতেন-এগুলো যদি সহজ ভাষায় শিক্ষার্থীদের জানানো যায়- তাহলে তারাও দেশের উপযুক্ত নাগরিক হিসেবে নিজেদের গড়ে তুলতে অনুপ্রাণিত হবে।’
তিনি প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণকারী শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্যে বলেন, বঙ্গবন্ধু যেভাবে দেশকে, দেশের মানুষকে ভালোবাসতেন-তোমরাও সেভাবে দেশকে, দেশের মানুষকে ভালোবাসতে শেখো।’
বাংলাদেশকে জানতে হলে বঙ্গবন্ধুকে জানতে হবে উল্লেখ করে সেলিনা মোমেন বলেন, বঙ্গবন্ধু সোনার বাংলা গড়তে চেয়েছিলেন। সোনার বাংলার অর্থ হলো-এদেশের মানুষ যেন ক্ষুধা-দারিদ্রমুক্ত জীবন পায়, দুর্নীতিমুক্ত মানুষ হয়-আর এটাই বঙ্গবন্ধু চেয়েছিলেন।’
তিনি আরও বলেন, সোনার বাংলা গড়তে হলে সোনার মানুষ হতে হবে। আর সোনার মানুষ হতে হলে বঙ্গবন্ধুকে জানতে হবে, তাঁকে অনুসরণ করতে হবে।’
তিনি শিক্ষার্থীদের জন্য কুইজ প্রতিযোগিতার মাধ্যমে বঙ্গবন্ধুকে জানার সুযোগ প্রদানের জন্য সংশ্লিষ্টদের প্রতি ধন্যবাদ জানান।
পড়ুন: শিনজো আবে বাংলাদেশের খাঁটি বন্ধু ছিলেন: পররাষ্ট্রমন্ত্রী
মিয়ানমারকে সতর্ক করেছে সরকার: মর্টার শেল ছোড়া প্রসঙ্গে পররাষ্ট্রমন্ত্রী