দুর্নীতি
দুর্নীতি, অনিয়ম করে নিয়ন্ত্রণহীন সরকার দুর্ভিক্ষের কথা বলছে: ফখরুল
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বারবার আগামী বছর দেশে সম্ভাব্য দুর্ভিক্ষের কথা বলছেন, কারণ তার সরকার ‘অনিয়ম’ দুর্নীতি ও অব্যবস্থাপনার কারণে নিয়ন্ত্রণ হারাচ্ছে।
তিনি বলেন, প্রশাসনসহ কিছুই এখন সরকারের নিয়ন্ত্রণে নেই।
মঙ্গলবার ন্যাশনাল ডেমোক্রেটিক পার্টি (এনডিপি) ও জমিয়তে উলামায়ে ইসলামের সঙ্গে আলোচনা শেষে বিএনপি চেয়ারপারসনের গুলশান কার্যালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এসব কথা বলেন।
বাংলাদেশে সম্ভাব্য দুর্ভিক্ষ সম্পর্কে প্রধানমন্ত্রীর হুঁশিয়ারির প্রতি তার দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে ফখরুল বলেন, আমরাও বুঝতে পারছি না তিনি কেন এমন বলছেন এবং সমস্যাটা কোথায়?
তিনি বলেন, মাত্র কয়েকদিন আগে সরকার দাবি করেছিল দেশ খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ। ‘এখন আবার কী ঘটেছে যার জন্য তারা আশঙ্কা করছে যে দেশ খাদ্য সংকটের মুখোমুখি হবে? আসল কথা হল প্রতিটি সেক্টর এবং সব জায়গায় ব্যাপক দুর্নীতি। এবং তারা এখন আর এটা সামাল দিতে পারছে না।’
আরও পড়ুন: দেশের নিরাপত্তা ও গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠায় বিএনপি বড় অন্তরায়: ওবায়দুল কাদের
বিএনপি শাসনামলের অনিয়ম ও দুর্নীতি তুলে ধরুন: প্রবাসী বাংলাদেশিদের প্রধানমন্ত্রী
বিদেশের মাটিতে বর্তমান সরকারের প্রকৃত উন্নয়ন চিত্র তুলে ধরার পাশাপাশি বিএনপি শাসনামলের নানা অনিয়ম, দুর্নীতি ও বর্বরতার কথা তুলে ধরতে প্রবাসী বাংলাদেশিদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
প্রধানমন্ত্রীর উপ-প্রেস সচিব কে এম শাখাওয়াত মুন বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের ওয়াশিংটন ডিসিতে বৃহস্পতিবার স্থানীয় সময়ানুযায়ী বিকালে প্রবাসী বাংলাদেশিদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে তিনি এ আহ্বান জানান।
যারা বিদেশে রাষ্ট্রবিরোধী অপপ্রচার চালাচ্ছে তাদের অপরাধ তুলে ধরতেও বলেছেন শেখ হাসিনা।
মতবিনিময় অনুষ্ঠানে প্রবাসীরা প্রধানমন্ত্রীকে তার জন্মদিনে শুভেচ্ছা জানান।
তিনি বলেন, ‘গণতান্ত্রিক ব্যবস্থার দীর্ঘ ধারাবাহিকতায় দেশ এগিয়ে যাচ্ছে। বাংলাদেশ আজ উন্নয়নশীল দেশের মর্যাদা পেয়েছে। উন্নয়নের এ ধারা অব্যাহত রাখতে সবাইকে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করতে হবে।’
আরও পড়ুন: প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ৭৬তম জন্মদিন বুধবার
প্রধানমন্ত্রী জানান, দেশে নির্বাচনের সুষ্ঠু পরিবেশ নিশ্চিত করেছে আওয়ামী লীগ। জনগণ এখন স্বাধীনভাবে ভোট দিতে পারবে।
তিনি বলেন, বিএনপি নির্বাচনী ব্যবস্থাকে ধ্বংস করেছে। তারা (বিএনপি) ভুয়া ভোটার বানিয়ে ভোটকেন্দ্রে গুন্ডা ও সন্ত্রাসী বাহিনী পাঠিয়ে সাধারণ মানুষের ভোটাধিকার কেড়ে নিয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, গত জাতীয় নির্বাচনে ৩০০ আসনের বিপরীতে ৭০০ প্রার্থী বাছাই করেছিল বিএনপি। তাই তাদের মনোনয়ন ব্যবসার কারণে জনগণ তাদের ভোট দেয়নি।
দেশে বিনিয়োগের বিভিন্ন সুযোগ তুলে ধরে তিনি প্রবাসীদের বাংলাদেশে বিনিয়োগের আহ্বান জানান।
আরও পড়ুন: আর সম্ভব নয়, রোহিঙ্গাদের ফিরে যেতে হবে: প্রধানমন্ত্রী
দৃঢ় অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশে একজন মানুষও গৃহহীন থাকবে না।
শেখ হাসিনা গত ১৯ সেপ্টেম্বর নিউইয়র্কে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের ৭৭তম অধিবেশনে যোগ দিতে যুক্তরাষ্ট্রে যান। তিনি ১৫ সেপ্টেম্বর লন্ডনের উদ্দেশে ঢাকা ত্যাগ করেন এবং ১৯ সেপ্টেম্বর ওয়েস্টমিনস্টার অ্যাবেতে রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথের রাষ্ট্রীয় অন্ত্যেষ্টিক্রিয়ায় যোগ দেন।
আগামী ৪ অক্টোবর প্রধানমন্ত্রীর দেশে ফেরার কথা রয়েছে।
আরও পড়ুন: গৃহহীনদের আশ্রয়ণ বাড়িতে স্বামী-স্ত্রীর সমান মালিকানা: প্রধানমন্ত্রী
শেয়ার বাজার কারসাজিকারীকে চিহ্নিত করতে ৬-১২ মাস সময় লাগে: বিএসইসি চেয়ারম্যান
বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) চেয়ারম্যান অধ্যাপক শিবলী রুবাইয়াত-উল ইসলাম বলেন, শেয়ারবাজারে কারসাজি ঠেকাতে অত্যাধুনিক সফটওয়্যার এবং প্রযুক্তিগতভাবে দক্ষ জনবল প্রয়োজন।
তিনি বলেন, শেয়ার ব্যবসায় অনৈতিক কার্যক্রম অবিলম্বে চিহ্নিত করতে বিএসইসি দক্ষ সফ্টওয়্যার ইনস্টল করতে কাজ করছে।
শনিবার ঢাকার একটি হোটেলে ‘বাংলাদেশ ক্যাপিটাল মার্কেটের বর্তমান ও ভবিষ্যৎ’ শীর্ষক গোলটেবিল বৈঠকে বিএসইসি চেয়ারম্যান এসব কথা বলেন।
ক্যাপিটাল মার্কেট জার্নালিস্ট ফোরাম (সিএমজেএফ) ও বাংলাদেশ মার্চেন্ট ব্যাংকার্স অ্যাসোসিয়েশন (বিএমবিএ) যৌথভাবে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।
অধ্যাপক শিবলী বলেন, বিদ্যমান ব্যবস্থায় শেয়ারবাজারে জুয়াড়ি শনাক্ত করতে ছয় মাস থেকে এক বছর পর্যন্ত সময় লাগে।
তিনি বলেন, ‘স্টক এক্সচেঞ্জ দ্রুত তদন্ত প্রতিবেদন দিলে আমরা ব্যবস্থা নিতে পারি। সাক্ষ্য-প্রমাণ যাচাই করতে এবং অপরাধীকে শাস্তি দিতে সাধারণত ছয় মাস থেকে এক বছর পর্যন্ত সময় লাগে। ইতোমধ্যে এই সময়ের মধ্যে, বিনিয়োগকারীরা ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে যায়।’
অধ্যাপক শিবলী গণমাধ্যমের সহযোগিতা কামনা করে বলেন, সাংবাদিকরা শেয়ারবাজারের
কারসাজির তথ্য পেলে প্রতিবেদনের মাধ্যমে বিনিয়োগকারীদের সচেতন করা উচিৎ।
তিনি বলেন, অর্থ মন্ত্রণালয়, মন্ত্রী এমনকি প্রধানমন্ত্রীও পুঁজিবাজারের বিষয়ে অবগত।
তিনি আরও বলেন, ‘আমরা নতুন কর্মসংস্থান সৃষ্টির লক্ষ্যে গত দুই বছরে ৩৬টি কোম্পানিকে আইপিও দিয়েছি। এই সময়ে তিন হাজারেরও বেশি লোকের কর্মসংস্থান হয়েছে।’
আরও:বড়দিনে চীন, জাপানের শেয়ার বাজারে দরপতন
পুঁজিবাজার বিশ্লেষক অধ্যাপক আবু আহমেদ বলেন, ব্রিটিশ আমেরিকান টোব্যাকো কত ট্যাক্স দেয় তা সবারই জানা। এগুলো পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত। তাদের আর্থিক প্রতিবেদন প্রকাশ করতে হবে।
আহমেদের প্রশ্ন হলো- বাংলাদেশে এমএনসি’র ব্যবসা করছে এবং কিন্তু কেউ নির্দিষ্ট করে জানে না তারা কত ট্যাক্স দেয়। তাদের
তালিকাভুক্ত করা হয় না। ‘কেন তারা তালিকাভুক্ত নয়’?
ক্যাপিটাল মার্কেট স্ট্যাবিলাইজেশন ফান্ডের চেয়ারম্যান ও সাবেক মুখ্য সচিব নজিবর রহমান; বিএসইসির সাবেক চেয়ারম্যান ফারুক আহমেদ
সিদ্দিকী এবং ড. এম. খায়রুল হোসেন; বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক (ইডি) ড. এজাজুল ইসলাম; ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের চেয়ারম্যান ইউনুসুর রহমান; চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের চেয়ারম্যান আসিফ ইব্রাহিম; অর্থ মন্ত্রণালয়, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর), ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ, চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জ, আইসিএবি, আইসিএমএবি, আইসিএসবি-এর প্রতিনিধিরা অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।
বিএমবিএ চেয়ারম্যান সায়েদুর রহমানের সভাপতিত্বে এবং সিএমজেএফের সভাপতি জিয়াউর রহমান অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন।
আরও পড়ুন: শেয়ার বাজারে আসছে ওয়ালটন
দুর্নীতির মামলায় সেলিম চেয়ারম্যানের ৪ সপ্তাহের আগাম জামিন
৩৪ কোটি টাকার জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) করা মামলায় চাঁদপুরের ‘বিতর্কিত’ ইউপি চেয়ারম্যান সেলিম খানকে চার সপ্তাহের আগাম জামিন দিয়েছেন হাইকোর্ট। একইসঙ্গে ওই সময়ের মধ্যে তাকে
বিচারিক আদালতে আত্মসমর্পণ করতে বলা হয়েছে।
বুধবার (১৪ সেপ্টেম্বর) বিচারপতি শেখ হাসান আরিফ ও বিচারপতি বিশ্বজিৎ দেবনাথের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন।
আদালতে সেলিম খানের পক্ষে শুনানি করেন অ্যাডভোকেট মোমতাজ উদ্দিন ফকির। দুদকের পক্ষ ছিলেন অ্যাডভোকেট খুরশিদ আলম খান।
এর আগে মঙ্গলবার (১৩ সেপ্টেম্বর) আগাম জামিন চেয়ে ফের হাইকোর্টে আবেদন করেন সেলিম চেয়ারম্যান।
আরও পড়ুন: জজ মিয়াকে ১০ কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ দিতে হাইকোর্টে রিট
১৪ আগস্ট ৩৪ কোটি টাকার জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের মামলায় তিন সপ্তাহের মধ্যে চাঁদপুরের বিতর্কিত চেয়ারম্যান সেলিম খানকে আত্মসমর্পণের নির্দেশ দেন হাইকোর্ট।
মঙ্গলবার ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মো. সারওয়ার হোসেন বাপ্পী বলেন, তিন সপ্তাহের মধ্যে নিম্ন আদালতে আত্মসমর্পণ না করতে পারায় সেলিম খান পুনরায় আগাম জামিন চেয়ে আবেদন করেছেন।
সেলিম খানের আইনজীবী অ্যাডভোকেট মোমতাজ উদ্দিন ফকির বলেন, হাইকোর্টের আদেশে মামলা নম্বর ভুল ছিল। এ কারণে নতুন জামিন আবেদন করা হয়েছে।
দুদক সচিব জানান, প্রাথমিক অনুসন্ধানে সেলিম খানের বিরুদ্ধে জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগে সম্পদ বিবরণী চায় দুদক। সেলিম খান ৬৬ লাখ টাকার সম্পদের হিসাব জমা দেন। কিন্তু দুদকের অনুসন্ধানে তার ৩৪ কোটি ৫৩ লাখ ৮১ হাজার ১১৯ টাকার সম্পদের তথ্য পাওয়া যায়। অনুসন্ধান কর্মকর্তার প্রতিবেদনের ভিত্তিতে কমিশন সভায় সেলিম খানের বিরুদ্ধে মামলার সিদ্ধান্ত হয়।
গত ১ আগস্ট আলোচিত ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান সেলিম খানের বিরুদ্ধে মামলা করে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। ৩৪ কোটি টাকার জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের দায়ে চাঁদপুর সদরের ১০ নম্বর লক্ষ্মীপুর ইউনিয়ন চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে এ মামলা হয়।
চাঁদপুর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রস্তাবিত ভূমি অধিগ্রহণ কেলেঙ্কারি, মেঘণা থেকে অবৈধভাবে বালু উত্তোলনসহ নানা বিতর্কিত কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকার অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে।
আরও পড়ুন: বঙ্গভবনে রাষ্ট্রপতির সঙ্গে হাইকোর্ট বিভাগের নবনিযুক্ত বিচারপতিদের সাক্ষাৎ
২ মাসের মধ্যে চট্টগ্রামে হাইকোর্টের সার্কিট বেঞ্চ গঠিত হবে:তথ্যমন্ত্রী
পশ্চিমবঙ্গের আইনমন্ত্রীর বিরুদ্ধে কয়লা পাচারে জড়িত থাকার অভিযোগে তদন্ত
কয়লা পাচারের অভিযোগে ভারতের পশ্চিমবঙ্গের আইনমন্ত্রী মলয় ঘটকের সম্পত্তিতে তদন্ত অভিযান চালিয়েছে দেশটির শীর্ষ তদন্ত সংস্থা ইডি।
বুধবার একটি সূত্র ইউএনবিকে জানিয়েছে, সেন্ট্রাল ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন ( সিবিআই) কলকাতা শহর ও আসানসোলের মন্ত্রীর মালিকানাধীন সাতটি সম্পত্তিতে তদন্ত অভিযান চালিয়েছে।
পড়ুন: নারদা কেলেঙ্কারি: জামিন পেলেন পশ্চিমবঙ্গের ২ মন্ত্রী
পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মন্ত্রিসভার জ্যেষ্ঠ এই মন্ত্রী এক টুইটে ‘স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের দৃষ্টিতে’ দেশের পরিস্থিতি ‘ভয়াবহ’ বলার পরদিনই এই অভিযান চালানো হয়।
তৃণমূলের তৃতীয় শীর্ষ এই নেতার বিরুদ্ধে অবৈধভাবে খনন করা কয়েক হাজার কোটি টাকার কয়লা বিক্রির সঙ্গে সম্পর্কিত একটি গোষ্ঠীর থেকে ঘুষ নেয়ার অভিযোগ আনা হয়েছে।
পড়ুন: ঘুষ নেয়ার অভিযোগে পশ্চিমবঙ্গের ২ মন্ত্রী গ্রেপ্তার
এর আগে জুলাইতে পশ্চিমবঙ্গের শিল্প ও বাণিজ্যমন্ত্রী পার্থ চ্যাটার্জি একটি চাকরী প্রার্থীদের কাছ থেকে ঘুষ নেয়ার অভিযোগে গ্রেপ্তার হয়েছেন। পরবর্তীকালে, তৃণমূল কংগ্রেসের আরেক রাজনীতিবিদ অনুব্রত মণ্ডলকে গরু পাচারের মামলায় সিবিআই গ্রেপ্তার করেছে।
আরও পড়ুন: পশ্চিমবঙ্গে শিক্ষক নিয়োগ কেলেঙ্কারিতে মন্ত্রী আটক
বিমানে পাইলট নিয়োগে দুর্নীতির অভিযোগে ব্যবস্থা নেয়া হবে: প্রতিমন্ত্রী
রাষ্ট্রীয় পতাকাবাহী প্রতিষ্ঠান বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সে পাইলট নিয়োগে ওঠা অনিয়ম, দুর্নীতি ও স্বজনপ্রীতির অভিযোগের প্রেক্ষিতে ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে জানিয়েছেন বিমান পরিবহন ও পর্যটন প্রতিমন্ত্রী মো. মাহবুব আলী।
মঙ্গলবার সচিবালয়ের গণমাধ্যম কেন্দ্রে বাংলাদেশ সেক্রেটারিয়েট রিপোর্টার্স ফোরাম (বিএসআরএফ) আয়োজিত 'বিএসআরএফ সংলাপ'-এ তিনি এ কথা জানান।
এতে সভাপতিত্ব করেন সংগঠনের সভাপতি তপন বিশ্বাস এবং সংলাপ পরিচালনা করেন বিএসআরএফ-এর সাধারণ সম্পাদক মাসউদুল হক।
প্রতিমন্ত্রী মো. মাহবুব আলী বলেন, বিভিন্ন পত্রপত্রিকায় এসেছে পাইলট নিয়োগের বিষয়ে। এটা সর্বোচ্চ পর্যায় থেকে তদন্ত করা হয়েছে, বিভিন্ন এজেন্সির মাধ্যমে, আমাদের মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে আমরাও তদন্ত করেছি, বিমানের নিজস্ব তদন্তও হয়েছে। এর মধ্যে ইনিশিয়ালি যাদের নিয়োগ দেয়া হয়েছে, সম্ভবত ৯ জন, তারা সিলেক্ট করেছিল। এই ৯ জনই বাদ পড়েছে বা জয়েন করেনি।
পাইলট নিয়োগে অনিয়ম, দুর্নীতি ও স্বজনপ্রীতির অভিযোগ তদন্ত দাবি করে ২৮ আগস্ট বাংলাদেশ পাইলট অ্যাসোসিয়েশন (বাপা) প্রতিষ্ঠানটির ব্যবস্থাপনা পরিচালকের কাছে একটি চিঠি পাঠায়।
আরও পড়ুন:ইসরাইলি হামলায় সিরিয়ার বিমানবন্দরের রানওয়ে ক্ষতিগ্রস্ত
পর্যটনকেন্দ্র পর্যটক হয়রানি প্রসঙ্গে তিনি বলেন, পাবলিক অ্যাওয়ারনেস জরুরি। অন্যান্য দেশগুলোতে জনগণ সেটি জানে, সেদিকে নজর রাখে। কক্সবাজারসহ অন্যান্য পর্যটন কেন্দ্রের ডিসিকে আমরা বলেছি তারা যাতে নজর রাখেন। ম্যাজিস্ট্রেট নিয়ে মূল্য তালিকা দেখতে বলেছি। সবাইকে সম্পৃক্ত করতে না পারলে পর্যটনে সফলতা আসবে না। পরিবেশ তৈরি হলে বিদেশি পর্যটক আসবে। সরকার আন্তরিক, একটা ক্যাম্পেইন দরকার পর্যটনকে আমরা এগিয়ে নিতে চাই।
স্বর্ণ চোরাকারবারি প্রসঙ্গে তিনি বলেন, স্বর্ণ ধরা পড়ার ঘটনার সাতদিন আগে গিয়েছিলাম। সেখানে ভিতরের গেটটি দেখে আমার সন্দেহ হয়েছিল। তখন আমি বলেছিলাম সমস্যা হতে পারে, তার চারদিন পরই ঘটনাটি ঘটেছে। এখন শক্তিশালী গেইট দেয়া হয়েছে, সিসি টিভি লাগানো হয়েছে। বিমানে যারা উঠবে নামার সঙ্গে সঙ্গে যাতে চেক করা হয় সেটি বলেছি। এটি দেশের ভাবমূর্তির সঙ্গে জড়িত।
তিনি আরও বলেন, যাত্রীদের সুবিধার জন্য এয়ারপোর্টে বেরিকেড দেয়া হয়েছে। তবে যাত্রীরা ট্রলি নিয়ে যাতে রোড পর্যন্ত বের হতে পারে সেই ব্যবস্থা করা হয়েছে। যাত্রীরা যাতে ট্রলি পায় ঠিকমতো সেদিকে নজর রয়েছে। আমরা আরও ট্রলি এনেছি, আশা করি ট্রলির সংকট হবে না। পাবলিক ট্রান্সপোর্ট এয়ারপোর্টে যাওয়ার বিষয়টি আমিও অনুধাবন করেছি। তৃতীয় টার্মিনালে যাতে নিরবিচ্ছিন্নভাবে যাত্রীরা যেকোন পরিবহন নিয়ে যেতে পারে সেভাবে ব্যবস্থা রাখা হচ্ছে। যাত্রীরা কিন্তু যেকোন পরিবহন এয়ারপোর্টে গিয়ে আবার বের হয়ে আসতে পারবে কোন প্রকার ট্রাফিক সিগনাল ছাড়া।
আরও পড়ুন:ভারতে তৈরি প্রথম বিমানবাহিনী রণতরী আইএনএস বিক্রান্তের যাত্রা শুরু
ভারতে তৈরি প্রথম বিমানবাহিনী রণতরী বিক্রান্তের আজ যাত্রা শুরু
খুলনায় দুর্নীতির মামলায় সাবেক ওসির জামিন নামঞ্জুর
দুর্নীতি মামলায় খুলনার বটিয়াঘাটা থানার সাবেক ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শেখ আবু বকর সিদ্দিকের জামিন আবেদন পুনরায় নামঞ্জুর করেছেন আদালত। বৃহস্পতিবার খুলনা মহানগর বিশেষ দায়রা জজ আদালতের বিচারক মাহমুদা খাতুন শুনানী শেষে জামিন নামঞ্জুর করেন।
দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) দায়ের করা মামলায় অভিযোগপত্র দিতে দেরি হওয়ার দাবি করে আবু বকর সিদ্দিক জামিন আবেদন করেন।
দুদকের আইনজীবী খন্দকার মুজিবর রহমান জানান, মামলায় সাবেক ওসি আবু বকর সিদ্দিকের স্ত্রী সুলতানা রাজিয়া পারুল উচ্চ আদালতের জামিনে আছেন। তবে বিভিন্ন ব্যাংকে এ দম্পতির পাঁচটি ব্যাংক হিসাবে লেনদেন স্থগিত রাখা হয়েছে।
আরও পড়ুন: দুদক মামলায় সম্রাটের জামিন নামঞ্জুর, মুক্তি মিলছে না
একইসঙ্গে প্রায় ৫১ কোটি টাকার অপ্রদর্শিত সম্পত্তির হস্তান্তর বন্ধ রাখতে আইনগত নোটিশ দেওয়া হয়। জ্ঞাত আয় বহির্ভূত সম্পদ স্ত্রীর নামে হস্তান্তরের অভিযোগে মামলায় জামিন নামঞ্জুর হয়েছে।
তিনি আরও জানান, চলতি বছরের ৫মে শেখ আবু বকর সিদ্দিক ও তার স্ত্রী সুলতানা রাজিয়া পারুলের জামিন আবেদন নামঞ্জুর করে তাদেরকে কারাগারে পাঠান আদালত। সেই থেকে আবু বকর সিদ্দিক কারাগারে রয়েছেন।
জানা গেছে, দুদক ২০২১ সালে ৯ নবেম্বর জ্ঞাত আয় বহির্ভূত ৩৩ লাখ ৮৯৫ টাকার সম্পদ অর্জনের অভিযোগে শেখ আবু বকর সিদ্দিকর নামে মামলা ও ওই সম্পদ স্ত্রী সুলতানা রাজিয়া পারুলকে হস্তান্তরের অভিযোগে সুলতানা রাজিয়া পারুল এবং আবু বকর সিদ্দিকের নামে মামলা দায়ের করে।
তদন্তে শেখ আবু বকর সিদ্দিক ও তার স্ত্রীর বিরুদ্ধে আরও প্রায় ৫১ কোটি টাকার সম্পত্তির খোঁজ পাওয়া যায়।
আরও পড়ুন: গুলির ঘটনায় এলডিপির মহাসচিব রেদোয়ানের জামিন নামঞ্জুর
ফরিদপুরের সেই পুলিশ পরিদর্শকের জামিন নামঞ্জুর
৭১ শতাংশ পরিবার দুর্নীতির শিকার: টিআইবি
দেশের প্রায় ৭১ শতাংশ পরিবারকে ঘুষ দিয়ে সরকারের বিভিন্ন খাত থেকে সেবা নিতে হয়। বুধবার ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি) পরিবার জরিপ করে এ তথ্য তুলে ধরে।
‘সেবাখাতে দুর্নীতি: জাতীয় পরিবার জরিপ-২০২১’ শিরোনামে চালানো জরিপে উঠে আসে যে সেবাখাতের আইন-শৃঙ্খলা প্রয়োগকারী সংস্থার বর্হিগমন ও পাসপোর্ট বিভাগ(ডিআইপি) সবচেয়ে বেশি চুয়াত্তর দশমিক ৪ শতাংশ এবং বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষ(বিআরটিএ)আটষট্টি দশমিক ৩ শতাংশ দুর্নীতিগ্রস্ত।
অন্যান্য খাতগুলোর মধ্যে বিচার বিভাগ ৫৬ দশমিক ৮ শতাংশ, স্বাস্থ্য ৪৮ দশমিক ৭ শতাংশ, স্থানীয় সরকারি প্রতিষ্ঠান ৪৬ দশমিক ৬ শতাংশ এবং ভূমি সেবায় ৪৬ দশমিক ৩ শতাংশ দুর্নীতিগ্রস্ত।
জরিপ প্রতিবেদন বলছে, পাসপোর্ট, আইন প্রয়োগকারী সংস্থা ও বিআরটিএ- এই শীর্ষ তিনটি খাতে দেশের সার্বিক ঘুষের প্রচলন ৪০ দশমিক ১ শতাংশ।
ঘুষ দিতে বাধ্য হওয়া ৭২ দশমিক ১ শতাংশ ভুক্তভোগী উল্লেখ করেন, ‘ঘুষ ছাড়া সেবা নাই’ ফলে তারা ঘুষ দেয়। নিয়মিত ঘুষ দেয়ায় তা প্রাতিষ্ঠানিক রূপ লাভ করেছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়, প্রতিটি পরিবার বীমা, বিচার ও গ্যাস এই তিনটি খাতের সেবা নিতে গড়ে বার্ষিক ছয় হাজার ৬৩৬ টাকা ঘুষ দিয়ে থাকে।
জরিপকালীন ২০২০-২০২১ সালের এই সময়ে ১০ হাজার ৮৩০ কোটি টাকা লেনদেন হয়েছে বলে প্রতিবেদনে উঠে এসেছে। যা দেশের ২০২০-২১ অর্থবছরের জিডিপির শূন্য দশমিক ৪ শতাংশ এবং একই অর্থ বছরের সংশোধিত বাজেটের পাঁচ দশমিক ৯ শতাংশ।
টিআইবি ১৯৯৭ সাল থেকে নয়টি জাতীয় খানা জরিপ করেছে।
জরিপ মতে, দুর্নীতির হার ২০১৭ সালের তুলনামূলক বৃদ্ধি পেয়েছে। ২০২১ সালে একই খাতে দুর্নীতির হার ছিল সত্তর দশমিক ৮ শতাংশ যখন ২০১৭ সালে একই খাতে দুর্নীতির হার ছিল ৬৬ দশমিক ৫ শতাংশ। তুলনামূলক ২০১৭ সালের তুলনায় ২০২১ সালে ঘুষ বা বেনামী লেনদেনের হার কমলেও বৃদ্ধি পেয়েছে ঘুষের পরিমাণ।
সরকারের ডিজিটালাইজেশন প্রক্রিয়ার মধ্যেও অনেকগুলো খাতে আইন প্রয়োগকারী সংস্থা, পাসপোর্ট, বিআরটিএ ইত্যাদি) দুর্নীতির হার একই রকম রয়েছে। কিছু খাতে(স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠান, বেসরকারি সংস্থা ও বীমা ইত্যাদি) দুর্নীতি বেড়েছে। উপরন্তু ২০১৭ সালের তুলনায় ঘুষের হার বেড়েছে কিছু খাতে(স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠান সমূহ) এবং ২০২১ সালে কিছু খাতে (কৃষি, শিক্ষা এবং স্বাস্থ্য) দুর্নীতি কমেছে ।
পড়ুন: নির্বাচনকালীন সহিংসতা প্রসঙ্গে সিইসির বক্তব্য আত্মঘাতী ও অপরিণামদর্শী: টিআইবি
২০২১ সালের জরিপে দেখা যায়, সেবাখাতের দুর্নীতির ঘনটনাগুলো শহরাঞ্চলের তুলনায় প্রত্যন্ত অঞ্চলে বেশি হয়েছে যার হার ৩৬ দশমিক ৬ শতাংশ ও ৪৬ দশমিক ৫ শতাংশ। বেশি
উপার্জনক্ষম মানুষের চেয়ে নিম্ন আয়ের মানুষের মধ্যে দুর্নীতির ঊর্ধ্বগতি বেশি। বিভিন্ন সেবা গ্রহীতা নিম্ন আয়ের মানুষদের তাদের বার্ষিক আয়ের বড় একটি অংশ ঘুষ দিতে বাধ্য করা হয়।
জরিপের ফলাফলে দেখা যায় স্বাস্থ্য, স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠান ও অন্যান্য সেবা খাত থেকে সেবা গ্রহীতা নারীরা পুরুষ সেবা গ্রহীতাদের চেয়ে বেশি দুর্নীতির শিকার হন। এবং পুরুষ সেবাগ্রহীতারা শিক্ষা, সরকারি সেবা খাতে
নারীদের চেয়ে বেশি দুর্নীতির শিকার হন। এছাড়া ৩৫ বছরের কম বয়সী সেবাগ্রহীতাদের তুলনায় ৩৬ বছরের ঊর্ধ্বের সেবাগ্রহীতারা বেশি দুর্নীতির শিকার হন।
জরিপে অংশ নেয়া পরিবারগুলোর মতামতের ভিত্তিতে দুর্নীতি দমন কমিশন দশ দফা সুপারিশ করেছে। এরমধ্যে দুর্নীতির সঙ্গে জড়িতদের জবাবদিহির আওতায় নিয়ে আসা, সরকারি সকল সেবা ডিজিটালাইজেশন, সেবা প্রদানকারীদের বিধির আওতায় পরিচালনা এবং সরকারের বিভিন্ন
অভিযোগের পদ্ধতি ও প্রতিকার পাওয়ার বিষয়ে অধিক প্রচারণা চালানো।
আরও পড়ুন: টিসিবির পণ্য বিক্রি নিয়ে টিআইবির প্রতিবেদন সঠিক নয়: বাণিজ্যমন্ত্রী
টিআইবি’র নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, এই পারিবারিক সমীক্ষার সঙ্গে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনালের দুর্নীতি উপলব্ধি সূচকের (সিপিআই) কোন সম্পর্ক নেই।
তিনি বলেন, বৈশ্বিক সংস্থাটি সিপিআই তৈরি করার সময় এই জরিপ এবং টিআইবি দ্বারা পরিচালিত অন্যান্য গবেষণার ফলাফলগুলো ব্যবহার করে না।
দুর্নীতির মামলা: নাজিবের ১২ বছরের সাজা বহাল
মালয়েশিয়ার সাবেক প্রধানমন্ত্রী নাজিব রাজ্জাকের দুর্নীতির মামলায় ১২ বছরের সাজা মওকুফের চূড়ান্ত আবেদন খারিজ করে দিয়েছেন দেশটির উচ্চ আদালত। ওয়ান মালয়েশিয়া ডেভেলপমেন্ট বারহাদ রাষ্ট্রীয় তহবিলের অর্থ লুটপাটের দায়ে তাকে আদালত ১২ বছরের কারাদণ্ড দিয়েছিলেন। সাজা বহালের পাশাপাশি শুনানিতে আদালত বলেছেন, নাজিব দায় এড়াতে পারেন না।
নাজিব আপিল আবেদনে নতুনভাবে বলেন, প্রধান বিচারপতি মাইমুন তন ম্যাট-এর স্বামী জামানি ইব্রাহিম, যিনি পাঁচ সদস্যের ফেডারেল আদালতের নেতৃত্বে আছেন তিনি ওয়ান মালয়েশিয়া ডেভেলপমেন্ট বারহাদের কেলেঙ্কারিকে জটিল করে তুলেছেন।
আদালতে আইনজীবীর পড়া হলফনামায় নাজিব বলেন, ২০১৮ সালের সাধারণ নির্বাচনে নাজিব ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পর পরই একটি ফেসবুক পোস্টে জামানি ইব্রাহিম চূড়ান্তভাবে বলেছিলেন ‘নাজিব সার্বভৌম সরকারের তহবিল চুরি করেছিলেন।’ নাজিব বলেছেন এটি ‘চরমভাবে বিরক্তিকর’ যে তাকে অপরাধী সাব্যস্ত করতে জামানি মাইমুনের মনোভাবকে প্রভাবিত করেছিলেন।
নাজিব তার আবেদনে আরও বলেন, ‘আদালতের এই রায়কে পক্ষপাতমূলক হিসেবে দেখা হতে পারে এবং স্বাধীন বিচার ব্যবস্থা সম্পর্কে মানুষের সন্দেহপূর্ণ ধারণা তৈরি করবে।’
আবেদন করে তার চূড়ান্ত আপিল শুনানি বিলম্ব করার জন্য নাজিবকে অভিযুক্ত করেন প্রসিকিউটর।
৬৯ বছর বয়সী নাজিব রাজ্জাকই প্রথম মালয়েশিয়ান সাবেক প্রধানমন্ত্রী, যিনি দন্ডপ্রাপ্ত হলেন।
কেন্দ্রীয় আদালতে তার সর্বশেষ বেশ কয়েকটি প্রচেষ্টা ছিল গত সপ্তাহে, যেখানে নাজিব শুনানি বিলম্ব করতে চেয়েছিলেন। ২০২০ সালে হাইকোর্টের যে বিচারক তাকে দণ্ড দিয়েছিলেন তার বিরুদ্ধে অভিযোগের প্রমাণ তুলে ধরে পুনঃশুনানি করতে চেয়েছিলেন। তার সেই প্রচেষ্টা ব্যর্থ হয়েছে।
আদালত নাজিবের মামলা নতুন করে প্রস্তত করার জন্য আরেক আইনজীবী নিয়োগের জন্য শুনানি স্থগিত করার আবেদন গ্রহণ করেননি।
আরও পড়ুন: বিদেশি কর্মী নিয়োগে তৃতীয় পক্ষের ভূমিকা চায় না মালয়েশিয়া সরকার
রোহিঙ্গা ইস্যুতে মালয়েশিয়ার ভূমিকার প্রশংসা বক্তাদের
মালয়েশিয়ায় বাংলাদেশি শ্রমিক পাঠানোর কোনো অগ্রগতি নেই
জামিন পেলেন সম্রাট
জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) মামলায় ঢাকা মহানগর দক্ষিণ যুবলীগের বহিষ্কৃত সভাপতি ইসমাইল হোসেন চৌধুরী সম্রাটের অসুস্থতা বিবেচনায় দশ হাজার টাকা মুচলেকায় জামিন মঞ্জুর করেছেন আদালত।
জামিনের শর্ত হিসেবে তাকে আদালতে জমা দিতে হবে নিজের পার্সপোর্ট। বিদেশ যেতে হলে নিতে হবে আদালতের অনুমতি।
সোমবার ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৬ এর বিচারক আল আসাদ মো. আসিফুজ্জামান শুনানি শেষে দশ হাজার টাকা মুচলেকায় ১৯ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত তার জামিন মঞ্জুর করেন।
আদালত জামিনের শর্ত হিসেবে তার পার্সপোর্ট জমা দেয়ার আদেশ দিয়েছেন। বিদেশ যেতে হলে আদালতের অনুমতি নেয়ার আদেশ দিয়েছেন।
সম্রাটের বিরুদ্ধে করা চার মামলায় এর আগে তিন মামলায় জামিনে থাকায় তার মুক্তিতে কোনো বাধা নেই।
এদিন সকালে তাকে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় (বিএসএমএমইউ) থেকে আদালতে হাজির করা হয়।
এরপর অসুস্থ বিবেচনায় সম্রাটের জামিন চান তার আইনজীবী এহসানুল হক সমাজী। অপরদিকে, দুদকের আইনজীবী মাহমুদ হোসেন জাহাঙ্গীর জামিনের বিরোধিতা করেন।
উভয়পক্ষের শুনানি শেষে বিচারক তার জামিন মঞ্জুর করেন।
এর আগে ১১ আগস্ট সম্রাটের জামিন শুনানি ও মামলার চার্জগঠন শুনানির জন্য দিন ধার্য ছিল। সম্রাট অসুস্থ থাকায় কারা কর্তৃপক্ষ তাকে আদালতে না পাঠিয়ে কাস্টডি ওয়ারেন্ট (হাজতি পরোয়ানা) পাঠান।
এরপর ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৬ এর বিচারক আল আসাদ মো. আসিফুজ্জামান তার জামিন শুনানি ও চার্জগঠন শুনানির জন্য ২২ আগস্ট দিন ধার্য করেন।
আরও পড়ুন:সম্রাটের জামিন বাতিলের আদেশ আপিল বিভাগে বহাল
গত ২১ জুন ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৬ এর বিচারক আল আসাদ মো. আসিফুজ্জামানের আদালতে সম্রাটের জামিন শুনানি ও মামলার চার্জগঠন শুনানির জন্য দিন ধার্য ছিল। ওইদিনই সম্রাট অসুস্থ থাকায় কারা কর্তৃপক্ষ হাজতি পরোয়ানা পাঠালে বিচারক জামিন ও চার্জগঠন শুনানির জন্য ৬ জুলাই দিন ধার্য করেছিলেন।
গত ২৪ মে আইনজীবীর মাধ্যমে আত্মসমর্পণ করে জামিন আবেদন করেন সম্রাট। অন্যদিকে, দুদকের আইনজীবী তার জামিনের বিরোধিতা করেন। উভয়পক্ষের শুনানি শেষে ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৬ এর বিচারক আল আসাদ মো. আসিফুজ্জামান তাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।
একই সঙ্গে জামিন শুনানির জন্য ৯ জুন দিন ধার্য করেন। সম্রাটের আইনজীবী তাকে অ্যাম্বুলেন্সে কারাগারে পাঠানোর আবেদন করেন। আদালত আইনজীবীর আবেদন নামঞ্জুর করেন। এরপর দুপুর আড়াইটার দিকে তাকে পুলিশ পিকআপে করে কেরানীগঞ্জ কেন্দ্রীয় কারাগারে পাঠানো হয়।
গত ১৮ মে দুদক এ মামলায় সম্রাটের জামিন বাতিল করেন বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি কাজী মো. ইজারুল হক আকন্দের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ। একইসঙ্গে সাতদিনের মধ্যে তাকে বিচারিক আদালতে আত্মসমর্পণের নির্দেশ দেয়া হয়।
জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগে করা মামলায় বিচারিক আদালতের দেয়া জামিন বাতিল চেয়ে গত ১৬ মে হাইকোর্টে আবেদন করেছিল দুদক। এ মামলায় গত ১১ মে সম্রাটকে জামিন দিয়েছিলেন ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৬ এর বিচারক আল আসাদ মো. আসিফুজ্জামানের আদালত।
এ মামলায় জামিন পাওয়ার আগে তার বিরুদ্ধে করা আরও তিনটি মামলায় তিনি জামিন পান। চারটি মামলার সবগুলোতে জামিন পাওয়ায় গত ১১ মে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএসএমইউ) প্রিজন সেল থেকে কারামুক্তি পান সম্রাট।
রমনা থানায় দায়ের করা মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনের মামলায় গত ১১ এপ্রিল জামিন পান সম্রাট। এর একদিন আগেই ১০ এপ্রিল অর্থপাচার ও অস্ত্র নিয়ন্ত্রণ আইনের পৃথক দুটি মামলায় ঢাকার পৃথক আদালত তার জামিন মঞ্জুর করেন।
সারাদেশে ক্যাসিনোবিরোধী অভিযান চলাকালে ২০১৯ সালের ৬ অক্টোবর সম্রাট ও তার সহযোগী তৎকালীন যুবলীগ নেতা এনামুল হক ওরফে আরমানকে কুমিল্লা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়।
জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগে ওই বছরের ১২ নভেম্বর সম্রাটের বিরুদ্ধে দুদকের করা মামলায় দুই কোটি ৯৪ লাখ ৮০ হাজার টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগ আনা হয়। পরের বছর অর্থাৎ ২০২০ সালের ২৬ নভেম্বর এ মামলায় আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেয় দুদক। অভিযোগপত্রে সম্রাটের বিরুদ্ধে ২২২ কোটি ৮৮ লাখ ৬২ হাজার ৪৯৩ টাকা জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগ আনা হয়।
আরও পড়ুন:দুদকের মামলায় ফের কারাগারে সম্রাট
সম্রাটের জামিন বাতিলের আদেশ স্থগিত করেননি চেম্বার আদালত