মৃত্যুদণ্ড
প্রধানমন্ত্রীকে হত্যাচেষ্টা: মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত পলাতক আসামি গ্রেপ্তার
২০০০ সালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে হত্যা চেষ্টার অভিযোগে করা মামলায় মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত পলাতক আসামিকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
মঙ্গলবার রাজধানীর খিলক্ষেত বাজার থেকে আসামি আজিজুল হক রানা ওরফে শাহনেওয়াজ ওরফে রুমানকে গ্রেপ্তার করা হয়।
এসময় তার কাছ থেকে দুটি জিহাদি বই, দুটি মোবাইল ফোন সেট, একটি পেনড্রাইভ ও একটি কম্পিউটার হার্ডডিস্ক উদ্ধার করেছে পুলিশ।
২০০০ সালের ২০ জুলাই শেখ লুৎফুর রহমান সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় সংলগ্ন একটি দোকানের সামনে থেকে পুলিশ ৭৬ কেজি ওজনের একটি বোমা উদ্ধার করে। ওই স্থানে ২২ জুলাই শেখ হাসিনার একটি সমাবেশে উপস্থিত থাকার কথা ছিল।
এছাড়া ওই বছরের ২৩ জুলাই কোটালীপাড়া হেলিপ্যাডের কাছে সেনাবাহিনীর বোমা বিশেষজ্ঞ স্কোয়াড আরও একটি ৪০ কেজি ওজনের বোমা উদ্ধার করে।
আরও পড়ুন: প্রধানমন্ত্রীর ছবি বিকৃত করে ফেসবুকে পোস্ট করায় গ্রেপ্তার ১
এ ঘটনায় পৃথক তিনটি মামলা হয়েছে।
২০২১ সালের ২৩ মার্চ, ঢাকার একটি ট্রাইব্যুনাল ২০০০ সালে গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়ায় শেখ হাসিনাকে হত্যা চেষ্টার অভিযোগে করা রাষ্ট্রদ্রোহ মামলায় ১৪ জনকে মৃত্যুদণ্ড দেয়।
জিজ্ঞাসাবাদের পর পুলিশ জানিয়েছে, আজিজুলকে বোমা রাখার দায়িত্ব দেয়া হয়েছিল।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে পুলিশ জানতে পেরেছে, আজিজুল ২১ বছর ধরে পলাতক থেকে গোপনে তার কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছিল। নিজের পরিচয় গোপন করতে দোকানদার, বই বিক্রেতা, চালক ও ছাপাখানার কর্মী হিসেবে কাজ করতেন তিনি।
আরও পড়ুন: বীমার সুবিধা সম্পর্কে জনসচেতনতা বাড়ানোর আহ্বান প্রধানমন্ত্রীর
পরকীয়ার জেরে স্বামী হত্যা: স্ত্রীসহ ৩ জনের মৃত্যুদণ্ড
জয়পুরহাটে পরকীয়ার জেরে স্বামীকে পরিকল্পিতভাবে গলা কেটে হত্যার দায়ে স্ত্রী আকলিমা খাতুনসহ তিনজনকে মৃত্যুদণ্ডের আদেশ দিয়েছেন আদালত। বৃহস্পতিবার দুপুরে জয়পুরহাট জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক মো. নূর ইসলাম এ আদেশ দেন।
দণ্ডপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন-দিনাজপুরের ঘোড়াঘাট উপজেলার দেওগ্রাম ডুগডুগির নিহত রহিম বাদশার স্ত্রী আকলিমা খাতুন, একই উপজেলার শালগ্রামের মৃত শহিদুল ইসলামের ছেলে সেলিম মিয়া ও গোপালপুর গ্রামের গোলাপ রহমানের ছেলে আইনুল ইসলাম।
জামিন নিয়ে পলাতক থাকায় স্ত্রী আকলিমা খাতুনের অনুপস্থিতিতে এ রায় ঘোষণা করা হয়।
আরও পড়ুন: যৌতুকের দাবিতে হত্যা: স্বামীসহ ৪ জনের মৃত্যুদণ্ড
পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) অ্যাডভোকেট নৃপেন্দ্রনাথ মন্ডল জানান, দিনাজপুরের ঘোড়াঘাট উপজেলার দেওগ্রাম-ডুগডুগি এলাকার মাইক্রোবাস চালক রহিম বাদশার কাছে মাইক্রোবাস চালানো শিখতেন সেলিম মিয়া। সেই সুবাধে বাড়িতে আসা-যাওয়ার এক পর্যায়ে তার স্ত্রী আকলিমার সঙ্গে পরকীয়া সম্পর্কে জড়িয়ে পড়ে সেলিম। সেই সম্পর্ককে বিয়েতে গড়াতে আকলিমা ও সেলিম গোপনে মাইক্রোবাস চালক- রহিম বাদশাকে হত্যার পরিকল্পনা করে। পরিকল্পনা অনুযায়ী,২০১৬ সালের ১০ জুলাই রাতে সেলিম ও আইনুল রহিমের গাড়িতে উঠে। পরে কৌশলে তাকে ঘুমের ওষুধ খাইয়ে জয়পুরহাটের পাঁচবিবি-বারোকান্দী দো’সীমানা এলাকায় মাইক্রোবাসের মধ্যেই গলা কেটে হত্যা করে তার লাশ ফেলে পালিয়ে যায় আসামিরা।
ওই দিনই নিহতের বাবা শাহাদাত হোসেন সাদা বাদি হয়ে জয়পুরহাটের পাঁচবিবি থানায় একটি হত্যা মামলা করেন। মামলার তদন্তের পর একই বছরের ১৭ ডিসেম্বর আদালতে চার্জশীট (অভিযোগপত্র) দাখিল করা হয়। এরপর এ মামলার দীর্ঘ শুনানী শেষে বৃহস্পতিবার (আজ) দুপুরে আদালত এ রায় দেন।
আরও পড়ুন: চট্টগ্রামে প্রবাসীর স্ত্রীকে ধর্ষণের পর হত্যা, মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি ইসহাক গ্রেপ্তার
যৌতুকের দাবিতে হত্যা: স্বামীসহ ৪ জনের মৃত্যুদণ্ড
গোপালগঞ্জের বেদগ্রামের জাকিয়া মল্লিক হত্যা মামলায় তার স্বামীসহ চারজনের মৃত্যুদণ্ডের আদেশ দিয়েছেন ট্রাইব্যুনাল। বৃহস্পতিবার ঢাকার দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল-২ এর বিচারক মো. জাকির হোসেন এ রায় ঘোষণা করেন।
মৃত্যদণ্ড প্রাপ্ত আসামিরা হলেন, জাকিয়ার স্বামী মোর্শেদায়ান নিশান, নিশানের বড় ভাই এহসান সুশান, ভগ্নিপতি হাসান শেখ ও তাদের কর্মচারী আনিসুর রহমান।
মৃত্যুদণ্ডের পাশাপাশি মোর্শেদায়ানকে পাঁচ লাখ এবং বাকি তিন আসামিকে তিন লাখ টাকা করে জরিমানা করেছেন বিচারক।
আরও পড়ুন: চট্টগ্রামে প্রবাসীর স্ত্রীকে ধর্ষণের পর হত্যা, মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি ইসহাক গ্রেপ্তার
এর আগে ১০ ফেব্রুয়ারি ঢাকার দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল-২-এর বিচারক মো. জাকির হোসেনের আদালতে মামলাটির রায় ঘোষণার জন্য দিন ধার্য ছিল। এদিন রায় প্রস্তুত না হওয়ায় ২৪ ফেব্রুয়ারি রায় ঘোষণার জন্য দিন ধার্য করেন বিচারক।
মামলার অভিযোগ থেকে জানা যায়, যৌতুকের দাবিতে ২০১৬ সালের ৫ ফেব্রুয়ারি রাতে গোপালগঞ্জে জাকিয়াকে নির্যাতন করা হয়। এ সংক্রান্ত অভিযোগ পেয়ে পুলিশ জাকিয়ার স্বামী মোর্শেদায়ান নিশান, তার ভাই এহসান সুশান, বোন-জামাই মোহাম্মদ হাসান শেখ ও ম্যানেজার আনিসুর রহমানকে আটক করে।
এসময় জাকিয়াকে উদ্ধার করে গোপালগঞ্জ সদর হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। ঘটনায় জাকিয়ার বাবা জালাল উদ্দিন মল্লিক বাদী হয়ে গোপালগঞ্জ থানায় একটি হত্যা মামলা করেন। মামলায় মোর্শেদায়ান নিশানসহ চারজনকে আসামি করা হয়।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ২০১৬ সালের ৯ জুন আদালতে চার আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দাখিল করেন।
এরপর ওই বছরের ৭ সেপ্টেম্বর আদালত আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেন। মামলার বিচার চলাকালীন আদালতে ২০ জন সাক্ষী সাক্ষ্য দেন।
আরও পড়ুন: আশুলিয়ায় গার্মেন্টস কর্মী হত্যা মামলায় ৪ জনের মৃত্যুদণ্ড
গুজরাটে সিরিজ বোমা হামলার ঘটনায় ৩৮ জনের মৃত্যুদণ্ড
১৩ বছর আগে ২০০৮ সালে গুজরাটের সিরিজ বোমা হামলার মামলায় ৩৮ জনের মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন আদালত। শুক্রবার ভারতের পশ্চিমাঞ্চলীয় রাজ্য গুজরাটের একটি সন্ত্রাসবিরোধী বিশেষ আদালত এই আদেশ দেন।
এটি এখন পর্যন্ত ভারতের যেকোনো আদালতে একসঙ্গে সর্বোচ্চ সংখ্যক মৃত্যুদণ্ডাদেশের ঘটনা।
২০০৮ সালে এক ঘণ্টার ব্যবধানে ৩১টি বিস্ফোরণে গুজরাটের আহমেদাবাদ শহরে ৫৬ জনের মৃত্যু এবং ২০০ জনেরও বেশি আহত হয়েছিল।
আরও পড়ুন: মমতার দলে কি বিদ্রোহ চলছে?
বাকি আসামিদের মধ্যে ১১ জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন বিশেষ আদালতের বিচারক এআর প্যাটেল। যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত আসামিদের কেউ ১৪বছর পর প্যারোলের অধিকারী হবে না বলে আদালত স্পষ্ট করে দিয়েছে।
এই মামলায় মোট ৮০ জন আসামিকে বিচারের মুখোমুখি করা হলেও তথ্য প্রমাণের অভাবে মামলায় অন্য ২৮ জনকে খালাস দেয়া হয়।
বিচার চলাকালীন এই হামলার জন্য স্বদেশী সন্ত্রাসী সংগঠন ইন্ডিয়ান মুজাহিদিনকে দায়ী করা হয়।
আরও পড়ুন: ভারতে দৈনিক সংক্রমণ ৩৫ হাজারের নিচে নামল
আশুলিয়ায় গার্মেন্টস কর্মী হত্যা মামলায় ৪ জনের মৃত্যুদণ্ড
আশুলিয়ার গার্মেন্ট কর্মী মো. তানিম হত্যা মামলায় চারজনের ফাঁসি ও প্রত্যেককে ৩০ হাজার টাকা করে জরিমানা অনাদায়ে ৬ মাসের সশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। সেইসঙ্গে টাকা আদায়ের ঘটনায় প্রত্যেকের ৫ বছরের কারাদণ্ড ও ১০ হাজার টাকা করে জরিমানা করা হয়।
বুধবার ঢাকার দ্বিতীয় অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ ইসমত আরা এ রায় দেন।
দণ্ডিতেরা হলেন- গামেন্ট কর্মী সোহেল রানা, ফরহাদ হোসেন, মো. আশিকুর রহমান, মো. নজরুল ইসলাম।
রায়ের বিবরণ থেকে জানা যায়, ২০১৭ সালের ২২ জুলাই সকাল ৯ টায় নিখোঁজ হয় নিহত তানিম। এর তিনদিন পরে আশুলিয়ার খাগান গ্রামের জঙ্গল থেকে তার লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। বেওয়ারিশ লাশ হিসাবে পুলিশ লাশটি ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে (ঢামেক) ময়নাতদন্তে পাঠায়। তখন পুলিশ বাদী হয়ে একটি অপমৃত্যু মামলা করে।
আরও পড়ুন: রিকশাচালক হত্যায় বিজিবি সদস্যের মৃত্যুদণ্ড
অন্যদিকে, তানিমকে খুঁজে না পেয়ে তানিমের স্ত্রী নূরুন্নাহার ১০ আগস্ট রাজধানীর কাফরুল থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করেন। এরপর তানিমের মা সাইদা সুলতানা আসামিদের বিরুদ্ধে ঢাকার মুখ্য বিচারিক হাকিম আদালতে তার ছেলেকে অপহরণ ও মুক্তিপন আদায়ের অভিযোগ এনে একটি মামলা করেন। এ মামলা এজাহার হিসাবে গণ্য করার জন্য আশুলিয়া থানাকে নির্দেশ দেয়া হয়।
তদন্তে জানা যায়, আসামিরা তানিমের কণ্ঠ মোবাইল ফোনে ধারণ করে নিহতের মায়ের কাছে বিকাশের মাধ্যমে টাকা আদায় করে। পরে পুলিশ অভিযান চালিয়ে সোহেলকে গ্রেপ্তার করে। সোহেল ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়ে হত্যার কারণ এবং অংশগ্রহণকারী সবার নাম বলে দেয়। এ মামলায় ২০১৮ সালের ৫ নভেম্বর অভিযোগ গঠন করা হয়।
রায় ঘোষণার পর নিহতের মা সাঈদা সুলতানা সাংবাদিকদের বলেন, রায় যেন দ্রুত কার্যকর করা হয়।
আরও পড়ুন: ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় আ’লীগ নেতা হত্যা মামলায় ১৩ জনের মৃত্যুদণ্ড
সিনহা হত্যা: সাবেক ওসি প্রদীপ, লিয়াকতের মৃত্যুদণ্ড, ৬ জনের যাবজ্জীবন
জিল্লুর হত্যা মামলায় ২ জনের মৃত্যুদণ্ড, ৬ জনের যাবজ্জীবন
চট্টগ্রামের রাঙ্গুনিয়ায় চাঞ্চল্যকর জিল্লুর ভাণ্ডারি হত্যা মামলায় দু’জনকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন আদালত। এছাড়া আরও ছয় জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড ও পাঁচজনকে খালাস দেয়া হয়েছে।
মঙ্গলবার দুপুরে চট্টগ্রামের প্রথম অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ শেখ ছামিদুল ইসলাম আদালত এ রায় দেন।
মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন- শহিদুল ইসলাম খোকন এবং ইসমাইল ওরফে পিস্তল ইসমাইল।
যাবজ্জীবনপ্রাপ্তরা হলেন- আবু ওরফে ধামা আবু, কামাল, জসিম উদ্দিন, তোতা মিয়া, নাছির, সুমন ওরফে সিএনজি সুমন।
বাদীপক্ষের আইনজীবী আবদুস সাত্তার রায়ের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
আরও পড়ুন: নড়াইলে মাদক মামলায় নারীর যাবজ্জীবন
আদালত সূত্রে জানা যায়, ২০১৫ সালের ২১ জানুয়ারি রাতে রাঙ্গুনিয়া উপজেলার রানীরহাট প্রাথমিক বিদ্যালয় গেটের সামনে প্রকাশ্যে জিল্লুর ভাণ্ডারি নামে একজনকে গুলি করে হত্যা করা হয়। এ ঘটনায় তার ছোট ভাই মোহাম্মদ আজিম উদ্দিন রাঙ্গুনিয়া থানায় মামলা করেন।
তদন্ত শেষে ২০১৬ সালের ৯ অক্টোবর সিআইডি এ মামলার চার্জশিট জমা দেয়। ২০১৯ সালের ২৮ মে ১৩ আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন আদালত।
এর আলোকে অভিযোগপত্রে মোট ২৫ জন সাক্ষীর মধ্যে ২৩ জন সাক্ষীকে হাজির করে সাক্ষ্য নিয়েছে রাষ্ট্রপক্ষ। কয়েক বার পেছানোর পর আজ (১৫ ফেব্রুয়ারি এ মামলার রায় ঘোষণা করেন আদালত।
আরও পড়ুন: লক্ষ্মীপুরে ব্যবসায়ী হত্যা মামলার আসামির যাবজ্জীবন
গাইবান্ধায় ছোট ভাই হত্যায় বড় ভাইয়ের মৃত্যুদণ্ড
গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জে বড় ভাইয়ের হাতে ছোট ভাই হত্যার অপরাধ প্রমাণিত হওয়ায় বড় ভাই তানজির আহম্মেদকে মৃত্যুদণ্ডাদেশ দিয়েছেন আদালত।
বৃহস্পতিবার (১০ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে গাইবান্ধার জেলা ও দায়রা আদালতের বিচারক দীলিপ কুমার ভৌমিক এই আদেশ দেন।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা সঞ্জয় কুমার জানান, উপজেলার দরবস্ত ইউনিয়নের কান্দিপাড়া গ্রামের ছোট ভাই সাগর সরকারের স্ত্রীর সঙ্গে বড় ভাই তানজির আহম্মেদের সাথে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। এই ঘটনা নিয়ে দুই ভাইয়ের মধ্যে মনোমানিল্য শুরু হয়।
তিনি আরও জানান, ২০২০ সালের ৬ জানুয়ারি রাতে তানজির আহম্মেদ তার ছোট ভাই সাগর আহম্মেদকে পলাশবাড়ি উপজেলার ভগবানপুর গ্রামের নির্জন স্থানে ডেকে নিয়ে যায় এবং ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে হত্যা করে। তারপর লাশ একটি পরিত্যাক্ত স্থানে ফেলে দেয়। পরদিন স্থানীয় লোকজন লাশ উদ্ধার হয় এবং বেনজীর আহম্মেদ বাদী হয়ে পলাশবাড়ি থানায় ভাই তানজির আম্মেদের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা করেন। মামলায় দীর্ঘ সাক্ষ্য প্রমাণের পর আজ এই রায় প্রদান করা হয়।
আরও পড়ুন: সিনহা হত্যা: সাত দিনের মধ্যে হাইকোর্টে যাবে প্রদীপ-লিয়াকতের মৃত্যুদণ্ডাদেশ
আবরার হত্যা: মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত ১৭ আসামির জেল আপিল গ্রহণ
রিকশাচালক হত্যায় বিজিবি সদস্যের মৃত্যুদণ্ড
সিনহা হত্যা: সাবেক ওসি প্রদীপ, লিয়াকতের মৃত্যুদণ্ড, ৬ জনের যাবজ্জীবন
মেজর (অব.) সিনহা মোহাম্মদ রাশেদ খান হত্যা মামলায় কক্সবাজারের সাবেক ওসি প্রদীপ কুমার দাস ও পুলিশ পরিদর্শক লিয়াকত আলীকে মৃত্যুদণ্ড এবং ছয়জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত।
যাবজ্জীবন প্রাপ্ত ছয়জন হলেন- কনস্টেবল সাগর দেব, উপ-পরিদর্শক নন্দলাল রক্ষিত, কনস্টেবল রুবেল শর্মা, নুরুল আমিন, মো. নিজামউদ্দিন ও আয়াজ উদ্দিন।
জেলা ও দায়রা জজ মোহাম্মদ ইসমাইল ১৫ আসামির উপস্থিতিতে এ রায় ঘোষণা করেন বলে পাবলিক প্রসিকিউটর ফরিদুল আলম জানান। আদালত অবশ্য অন্য সাত আসামিকে খালাস দিয়েছে।
আরও পড়ুন: সিনহা হত্যা মামলার রায় ঘিরে কক্সবাজারে নিরাপত্তা জোরদার
দুপুর ২টায় কক্সবাজার জেলা কারাগার থেকে ১৫ আসামিকে আদালতে আনা হয়। ১৫ আসামির মধ্যে প্রদীপ, সাগর দেব ও রুবেল ছাড়া ১২ জন আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন।
রায় ঘোষণার আগে কক্সবাজার শহরে নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে।
এদিকে গত বছর ২৭ জুন আনুষ্ঠানিকভাবে মামলাটির বিচারকাজ শুরু হয় এবং চলতি বছরের ১২ জানুয়ারি সর্বশেষ দুই আসামির পক্ষে তাদের আইনজীবীদের যুক্তি উপস্থাপনের মধ্য দিয়ে বিচারকাজ শেষ হয়।
পরে বিচারক ৩১ জানুয়ারি রায় ঘোষণার তারিখ নির্ধারণ করেন।
২০২০ সালের ৩১ জুলাই রাতে কক্সবাজার-টেকনাফ মেরিন ড্রাইভ সড়কের বাহারছড়ার শামলাপুরে এপিবিএন চেকপোস্টে পুলিশের গুলিতে নিহত হন সেনাবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহা মোহাম্মদ রাশেদ। এ ঘটনায় পুলিশ বাদী হয়ে তিনটি (টেকনাফে দুটি, রামুতে একটি) মামলা করেছিল।ঘটনার পাঁচ দিন পর ৫ আগস্ট কক্সবাজার আদালতে টেকনাফ থানার বহিষ্কৃত ওসি প্রদীপ কুমার দাশ, বাহারছড়া তদন্ত কেন্দ্রের পরিদর্শক লিয়াকত আলীসহ ৯ পুলিশের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা করেন সিনহার বড় বোন শারমিন শাহরিয়া ফেরদৌস।
আদালত মামলাটি আমলে নিয়ে র্যাবকে তদন্তের দায়িত্ব দেন। তদন্ত শেষে র্যাব ১৫ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র জমা দেয়।
আরও পড়ুন: ‘প্রদীপের লাথিতে নিস্তেজ হয় সিনহা, লিয়াকত ও দুলালের সক্রিয় ভুমিকা প্রমাণিত’
কঙ্গোয় জাতিসংঘের ২ বিশেষজ্ঞ হত্যা মামলায় ৫১ জনের মৃত্যুদণ্ড
গণতান্ত্রিক কঙ্গো প্রজাতন্ত্রের একটি সামরিক আদালত জাতিসংঘের বিশেষজ্ঞ মাইকেল শার্প ও জাইদা কাতালানের হত্যা মামলায় ৫১ জনকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছে। স্থানীয় সময় শনিবার এ রায় ঘোষণা করা হয়।
কাসাই অক্সিডেন্টাল মিলিটারি কোর্টের প্রেসিডেন্ট ব্রিগেডিয়ার মো. জেনারেল জিন-পলিন এনটাশায়োকোলো এই হত্যাকাণ্ডের রায় ঘোষণা করেন।
তিনি জানান, রায়ে ৫৪ আসামির বাকি তিনজনের একজনকে ১০ বছরের কারাদণ্ড এবং অন্য দুইজনকে মুক্তি দেয়া হয়েছে।
তিনি আরও জানান, মৃত্যুদণ্ডে দণ্ডিত ব্যক্তিদের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেয়া হবে। কারণ ২০০৩ সালে কঙ্গোতে মৃত্যুদণ্ড স্থগিত করা হয়েছে।
মার্কিন নাগরিক শার্প এবং সুইডিশ নাগরিক কাতালানকে ২০১৭ সালের ১২ মার্চ মধ্য কঙ্গোর কাসাই অঞ্চল থেকে অপহরণের পর হত্যা করা হয়। তারা দুজন দেশটির সরকারি বাহিনী ও মিলিশিয়া গোষ্ঠীর মধ্যে সংঘর্ষের পর গণকবরের বিষয়ে তদন্ত করছিলেন। হত্যাকাণ্ডের পেছনে কঙ্গোর সশস্ত্র সন্ত্রাসী দল কামুইনা নাসাপু জড়িত রয়েছে বলে অভিযোগ কঙ্গো সরকারের।
আরও পড়ুন: শান্তিতে নোবেলজয়ী ডেসমন্ড টুটু মারা গেছেন
সামরিক আদালত অবশ্য সাংবাদিক ট্রুডন রাফায়েল কাপুকু এবং পুলিশ অফিসার অনারে শিম্বাম্বাকে মুক্তি দিয়েছে। এরা দুজনেই ২০১৮ সালে এই মামলায় গ্রেপ্তার হন।
কঙ্গোতে হিউম্যান রাইটস ওয়াচের সিনিয়র গবেষক টমাস ফেসি বলেছেন, রায় দেয়া হলেও এই হত্যাকাণ্ডের প্রায় পাঁচ বছর পরেও উত্তরের চেয়ে আরও বেশি প্রশ্ন রয়েছে।
এ বিষয়ে তিনি এক টুইটে বলেন, শেষ পর্যন্ত এই হত্যাকাণ্ডের বিচার যাই হোক, তদন্তে সম্পূর্ণ সত্য উদঘাটন করতে ব্যর্থ হয়েছে। জাতিসংঘের সহায়তায় কঙ্গোলিজ কর্তৃপক্ষের উচিত এই হত্যাকাণ্ডে উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের ভূমিকা সম্পর্কে তদন্ত করা।
সুইডেনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান লিন্ডেও বলেছেন, তদন্ত চালিয়ে যেতে হবে।
তিনি এক টুইটে লিখেছেন, গুরুত্বপূর্ণ যে ব্যক্তিরা এই হত্যাকাণ্ডে জড়িত, তাদের বিষয়ে তদন্ত চালিয়ে যেতে হবে। এতে আরও সত্য উন্মোচন হবে এবং ন্যায়বিচার নিশ্চিত হবে। আমরা দেশটির কর্তৃপক্ষকে জাতিসংঘের সঙ্গে সহযোগিতা করার আহ্বান জানাই।
আরও পড়ুন: দ. আফ্রিকায় ওমিক্রন ঢেউ শেষ পর্যায়ে এসে পৌঁছেছে
বুরকিনা ফাসোতে জঙ্গী হামলায় নিহত ২০
আবরার হত্যা: মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত ১৭ আসামির জেল আপিল গ্রহণ
বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) ছাত্র আবরার ফাহাদ রাব্বীকে পিটিয়ে হত্যা মামলায় মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত ১৭ আসামির করা জেল আপিল শুনানির জন্য গ্রহণ করেছেন হাইকোর্ট। বিচারিক আদালতের রায়ের বিরুদ্ধে কারাগার থেকে কারা কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে এসব মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি পৃথক জেল আপিল করেন, যা বুধবার হাইকোর্টের কার্যতালিকায় ওঠে। পরে বিচারপতি মো. রেজাউল হক ও বিচারপতি রাজিক আল জলিলের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ বুধবার জেল আপিলগুলো শুনানির জন্য গ্রহণ করেন।
আদালত বলেছেন, ডেথ রেফারেন্সের (মৃত্যুদণ্ড অনুমোদন) সঙ্গে জেল আপিলগুলোরও শুনানি হবে। এ সময় ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল কে এম মাসুদ রুমি উপস্থিত ছিলেন।
এর আগে গত ৮ ডিসেম্বর দুপুরে ঢাকার দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল-১ এর বিচারক আবু জাফর মো. কামরুজ্জামান এ মামলার ২০ আসামিকে মৃত্যুদণ্ড এবং পাঁচজনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়ে রায় ঘোষণা করেন।
আইন অনুযায়ী বিচারিক আদালতে কোন আসামিকে মৃত্যুদন্ড দেয়া হলে তার মৃত্যু অনুমোদনের জন্য মামলাটির যাবতীয় নথি হাইকোর্টে পাঠানো হয়। এরপর এটি ডেথরেফারেন্স মামলা হিসেবে হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় অন্তর্ভূক্ত হয়। পরে মামলার পেপারবুক (যাবতীয় নথি সম্বলিত ফাইল) প্রস্তুত হলে সিরিয়াল অনুসরণ করে ডেথ রেফারেন্সের শুনানি হয়।
আরও পড়ুন: আবরার হত্যা: খালাস চেয়ে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি সেতুর হাইকোর্টে আপিল
এ মামলায় মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন-মেহেদী হাসান রাসেল (২৪), মো. অনিক সরকার ওরফে অপু (২২), মেহেদী হাসান রবিন ওরফে শান্ত (২৩), ইফতি মোশাররফ সকাল (২০), মো. মনিরুজ্জামান মনির (২১), মেফতাহুল ইসলাম জিয়ন (২৩), মো. মাজেদুর রহমান মাজেদ (২০), মো. মুজাহিদুর রহমান মুজাহিদ (২১), খন্দকার তাবাকারুল ইসলাম ওরফে তানভির (২১), হোসেন মোহাম্মদ তাহো (২১), মো. শামীম বিল্লাহ (২১), মো. সাদাত এ এস এম নাজমুস সাদাত (২১), মুনতাসির আল জেমী (২০), মো. মিজানুর রহমান মিজান (২২), এস এম মাহমুদ সেতু (২৪), সামসুল আরেফিন রাফাত (২১), মো. মোর্শেদ ওরফে মোর্শেদ অমর্ত্য ইসলাম (২০), এহতেশামুল রাব্বি ওরফে তানিম (২০) (পলাতক), মোহাম্মদ মোর্শেদ উজ্জামান মন্ডল প্রকাশ জিসান (২২) (পলাতক), মুজতবা রাফিদ (২১) (পলাতক)। এছাড়া যাবজ্জীবন কারাদ-প্রাপ্ত আসামিরা হলেন- অমিত সাহা (২১), ইসতিয়াক আহমেদ মুন্না (২১), মো. আকাশ হোসেন (২১), মুহতাসিম ফুয়াদ (২৩) ও মো. মোয়াজ ওরফে মোয়াজ আবু হোরায়রা (২১)।
২০১৯ সালের ৬ অক্টোবর রাতে বুয়েটের শেরে বাংলা হলে ইলেকট্রিক অ্যান্ড ইলেক্ট্রনিক ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র আবরার ফাহাদকে পিটিয়ে হত্যা করে দুর্বৃত্তরা। পরের দিন ৭ অক্টোবর তার লাশ উদ্ধার করা হয়। আবরারের বাবা বরকত উল্লাহ বাদী হয়ে রাজধানীর চকবাজার থানায় বুয়েট শাখার ছাত্রলীগের ১৯ জন নেতা-কর্মীর বিরুদ্ধে হত্যা মামলা দায়ের করেন। মামলায় অজ্ঞাতনামা আরও অনেক জনকে আসামি করা হয়। ২০১৯ সালের ১৩ নভেম্বর পুলিশের গোয়েন্দা শাখার (ডিবি) পরিদর্শক ও মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ওয়াহিদুজ্জামান ২৫ জনকে অভিযুক্ত করে ঢাকার মুখ্য মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেন। গত বছরের ১৫ সেপ্টেম্বর এ মামলায় আদালত অভিযোগ গঠনের মধ্য দিয়ে বিচার শুরু হয়।
আরও পড়ুন: আবরার হত্যা: ২০ আসামির ডেথ রেফারেন্স হাইকোর্টে
আবরার হত্যা: ২০ আসামির মৃত্যুদণ্ড, ৫ জনের যাবজ্জীবন