সিনোফার্ম
সিনোফার্মের আরও ৬ কোটি টিকা ক্রয়ের অনুমোদন
চীনের সিনোফার্ম টিকার আরও ৬ কোটি ডোজ ক্রয়ের অনুমোদন দিয়েছে সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটি।
কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, চলতি বছরের নভেম্বরের মধ্যে এসব টিকার ডোজ দেশে পৌঁছাবে।
তবে কর্মকর্তারা টিকার মূল্য প্রকাশ করেন নি। তারা বলছেন, চীনা টিকা ক্রয়ের মূল্য প্রকাশ না করতে একটি চুক্তি রয়েছে।
বৈঠক শেষে মন্ত্রিসভা বিভাগের অতিরিক্ত সচিব শামসুল আরেফিন সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমরা আশা করছি এই বছরের নভেম্বরের মধ্যে এই সব টিকা দেশে পৌঁছে যাবে। যেহেতু টিকার ক্রয় মূল্য প্রকাশ না করার চুক্তি আছে, তাই আমরা এর মূল্য প্রকাশ করতে পারছি না।
অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামালের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত ভার্চুয়াল বৈঠকে বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের আরও নয়টি ক্রয় প্রস্তাব অনুমোদন দিয়েছে ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটি।
অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা হিসাব করে দেখেছি যে আমাদের প্রায় ১৩ কোটি ৮২ লাখ মানুষকে টিকা দিতে হবে। তাই, আমাদের ২৭ কোটি ৬৫ লাখ টিকা ডোজ কিনতে হবে। আমাদের হাতে ২ কোটি ৫৫ লাখ টিকার ডোজ আছে এবং বাকিগুলো সংগ্রহ করতে হবে।
এর আগে বাংলাদেশ চীন থেকে সিনোফার্ম থেকে প্রাথমিক চুক্তিমূল্যের চেয়ে কম দামে দেড় কোটি ডোজ কোভিড টিকা ক্রয়ের চুক্তি করেছে।
চলতি বছরের ২৭ মে একই কমিটি প্রতি ডোজ ১০ ডলারে চীনের সিনোফার্মের টিকা ক্রয়ের অনুমোদন দিয়েছিল।
তখন টিকার মূল্য প্রকাশ করায় চীনা পক্ষ অসন্তুষ্ট হয়।
আরও পড়ুন: ঢাকার পথে সিনোফার্মের ১৭ লাখ টিকা
টিকা নিয়ে সমালোচনা শাস্তিযোগ্য অপরাধ: তথ্যমন্ত্রী
চট্টগ্রামে টিকা নিতে ভিড়, সংক্রমণ ঝুঁকি বাড়ছে
১২ আগস্টের পর মডার্নার প্রথম ডোজ দেয়া বন্ধ
মডার্না টিকার দ্বিতীয় ডোজ নিশ্চিত করার লক্ষ্যে সরকার ১২ আগস্টের পর সারাদেশে প্রথম ডোজ দেয়া বন্ধের সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
মঙ্গলবার (১০ আগস্ট) স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সম্প্রসারিত টিকাদান কর্মসূচির এক নির্দেশনায় এ তথ্য জানানো হয়।
এতে বলা হয়, ১২ আগস্টের পর দেশব্যাপী মডার্না টিকার প্রথম ডোজ দেয়া বন্ধ থাকবে।
আরও পড়ুনঃ খুলনায় ফের যুবককে একসাথে ২ ডোজ টিকা প্রদান
তবে যেসব কেন্দ্রে টিকার প্রথম ডোজ মজুদ রয়েছে সেসব স্থানে দ্রুত প্রথম ডোজ দেয়ার কাজ সম্পন্ন করে দ্বিতীয় ডোজ দেয়া শুরু করতে হবে।
শিগগিরই চাহিদা অনুযায়ী দ্বিতীয় ডোজ টিকা কেন্দ্রে পাঠানো হবে বলে বলা হয়েছে।এছাড়াও ১৪ আগস্ট থেকে সিনোফার্মের দ্বিতীয় ডোজ দেয়া শুরু করতে বলা হয়।
কর্তৃপক্ষকে এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে বলা হয়েছে।
আরও পড়ুনঃ ঢাকার পথে সিনোফার্মের ১৭ লাখ টিকা
দেশে করোনা পরিস্থিতি
মঙ্গলবার স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তি জানানো হয়, করোনার ডেল্টা ভ্যারিয়েন্টের সংক্রমণের মাঝে গেলো ২৪ ঘণ্টায় দেশে করোনা আক্রান্ত হয়ে সর্বোচ্চ ২৬৪ জনের মৃত্যু হয়েছে। এটি দেশে এক দিনে করোনায় সর্বোচ্চ সংখ্যক মৃত্যুর ঘটনা। এর আগে গত ৫ আগস্টও আগের ২৪ ঘণ্টায় ২৬৪ জনের মৃত্যু হয়েছিল। নতুন মৃত্যুসহ দেশে মোট মৃতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ২৩ হাজার ১৬১ জনে।
আরও পড়ুনঃ দুর্গম পাহাড়েও পৌঁছালো টিকা
২৪ ঘণ্টায় শনাক্ত হয়েছে আরও ১১ হাজার ১৬৪ জন। এনিয়ে মোট মোট আক্রান্তের সংখ্যা ১৩ লাখ ৭৬ হাজার ৩২২ জনে দাঁড়িয়েছে।
গত ২৪ ঘণ্টায় ৪৭ হাজার ৪২৪ জনের নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে। এই সময় শনাক্তের হার শতকরা ২৩.৫৪ শতাংশ।
আরও পড়ুনঃ কক্সবাজারে ৩৪ রোহিঙ্গা ক্যাম্পে টিকা দেয়া শুরু
এই পর্যন্ত করোনায় দেশে মৃত্যুর হার ১.৬৮ শতাংশ। এখন পর্যন্ত মোট সুস্থ হয়েছে ১২ লাখ ৩৪ হাজার ৭৬২ জন। দেশে সুস্থতার হার ৮৯.৭১ শতাংশ।
গত ২৪ ঘণ্টায় ঢাকা বিভাগে ৯২ জন, খুলনা বিভাগে ২৭ জন, চট্টগ্রামে ৬০ জন, রংপুরে ১৪ জন, বরিশালে ১১ জন, সিলেটে ১৭ জন, রাজশাহীতে ২৫ জন এবং ময়মনসিংহে ১৮ জন মারা গেছেন।
ঢাকার পথে সিনোফার্মের ১৭ লাখ টিকা
কোভ্যাক্স সুবিধার আওতায় সিনোফার্মের ১৭ লাখ ডোজ টিকা বেইজিং থেকে বিমানের একটি উড়োজাহাজে বাংলাদেশের উদ্দেশে রওনা হয়েছে।
মঙ্গলবার ঢাকায় নিযুক্ত চীনা দূতাবাসের ডেপুটি চিফ অব মিশন হুয়ালং ইয়ান জানান, সন্ধ্যা ৭টার দিকে টিকাগুলো হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছানোর কথা রয়েছে।
আরও পড়ুনঃ দুর্গম পাহাড়েও পৌঁছালো টিকা
যৌথভাবে টিকা উৎপাদনের বিষয়ে হুয়ালং ইয়ান বলেন, ‘আমরা শিগগিরই যৌথভাবে টিকা উৎপাদনে আসছি।’
এর আগে গত বৃহস্পতিবার পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. একে আব্দুল মোমেন বলেছেন, বাংলাদেশ আগামী সপ্তাহে সিনোফার্মের ৩৪ লাখ ডোজ টিকা এবং সেপ্টেম্বরের প্রথম সপ্তাহে ফাইজারের ৬০ লাখ টিকার চালান পেতে যাচ্ছে।
আরও পড়ুনঃ ১৫ আগস্টের মধ্যে আসছে আরও ৫৪ লাখ টিকা
এছাড়া বাংলাদেশ কোভ্যাক্স সুবিধার আওতায় অ্যাস্ট্রাজেনেকা টিকার ১০ লাখ ডোজ টিকা শিগগিরই পাবে বলে তিনি জানান।
আগামী সপ্তাহে সিনোফার্মের ৩৪ লাখ ডোজ টিকা আসছে: পররাষ্ট্রমন্ত্রী
বাংলাদেশ আগামী সপ্তাহে সিনোফার্মের ৩৪ লাখ ডোজ টিকা এবং সেপ্টেম্বরের প্রথম সপ্তাহে ফাইজারের ৬০ লাখ টিকার চালান পেতে যাচ্ছে। বৃহস্পতিবার পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আবদুল মোমেন এ তথ্য জানিয়েছেন।
এছাড়া বাংলাদেশ কোভ্যাক্স সুবিধার আওতায় অ্যাস্ট্রাজেনেকা টিকার ১০ লাখ ডোজ টিকা শিগগিরই পাবে।
আরও পড়ুনঃ জাপানের দেয়া অ্যাস্ট্রাজেনেকা টিকার তৃতীয় চালান ঢাকায়
রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন পদ্মায় এক অনুষ্ঠানে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, আমরা ভালোভাবেই গুছিয়ে নিয়েছি। আমরা মনে করি, আমরা সঠিক পথেই আছি।
স্বাস্থ্য মন্ত্রণায়ের কথা উল্লেখ করে আবদুল মোমেন বলেন, বাংলাদেশে এক কোটি ২৩ লাখ ডোজ টিকা মজুদ আছে। এর মধ্য থেকে কিছু টিকা (অ্যাস্ট্রাজেনেকা) দ্বিতীয় ডোজ হিসেবে রাখা হবে।
যৌথভাবে টিকা উৎপাদন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, বাংলাদেশে যৌথভাবে সিনোফার্ম টিকা উৎপাদন সংক্রান্ত সমঝোতা স্মারক (এমওইউ) যে কোনো মুহূর্তে স্বাক্ষরিত হবে।
আরও পড়ুনঃ সিনোফার্মেরর সাথে যৌথ টিকা উৎপাদনে সমঝোতা স্মারক প্রস্তুত: পররাষ্ট্রমন্ত্রী
পররাষ্ট্রমন্ত্রী যোগ করেন, আইন মন্ত্রণালয় যাচাই -বাছাইয়ের পর ইতোমধ্যেই তা অনুমোদন করেছে এবং এটি যে কোনো মুহূর্তে স্বাক্ষরিত হবে। সবকিছুই চূড়ান্ত।
ড. মোমেন বলেন, বাংলাদেশে যৌথভাবে টিকার উৎপাদন অপরিহার্য। আমি যৌথ উৎপাদনের শুরু চাই।
এর আগে তিনি বলেছিলেন, সমঝোতা স্মারক স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের কাছে রয়েছে এবং স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের উচিত এটি দ্রুত নিষ্পত্তি করা।
আরও পড়ুনঃ সপ্তাহে এক কোটি মানুষকে টিকা দেবে সরকার: পররাষ্ট্রমন্ত্রী
মোমেন বলেন, বাংলাদেশ সরকার, সিনোফার্ম এবং একটি স্থানীয় কোম্পানি (ইনসেপ্টা ফার্মাসিউটিক্যালস লিমিটেড) চুক্তিতে স্বাক্ষর করবে।
সিনোফার্মেরর সাথে যৌথ টিকা উৎপাদনে সমঝোতা স্মারক প্রস্তুত: পররাষ্ট্রমন্ত্রী
সিনোফার্মেরর সাথে যৌথভাবে টিকা উৎপাদনের বিষয়ে বাংলাদেশ দ্রুত একটি সমঝোতা স্মারক করার জন্য প্রস্তুত বলে জানিয়েছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আবদুল মোমেন।
সোমবার তিনি সাংবাদিকদের বলেন, ‘টিকার যৌথ উৎপাদনে এমওইউ সইয়ের প্রস্তাব আমরা পেয়েছি এবং এটি স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে। আমি মনে করি খুব দ্রুত এমওইউ করা উচিত।’
আরও পড়ুনঃ দেশে পৌঁছেছে সিনোফার্মের আরও ৩০ লাখ টিকা
মোমেন বলেন, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়, সিনোফার্ম এবং একটি দেশীয় কোম্পানি (ইনসেপ্টা ফার্মাসিউটিক্যালস লিমিটেড) এই চুক্তিতে স্বাক্ষর করবে।.
চীন থেকে টিকা সরবরাহ প্রসঙ্গে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, চীন বাংলাদেশকে চুক্তি অনুযায়ী বাধাহীনভাবে টিকা সরবরাহের আশ্বাস দিয়েছে।
তিনি বলেন, সেখানে চাহিদা অনেক বেশি এবং বাংলাদেশের যে পরিমাণ ভ্যাকসিন প্রয়োজন তা আগে থেকেই চীনা পক্ষকে জানানোর জন্য অনুরোধ করা হয়েছে।
আরও পড়ুনঃ ২৫ বছর হলেই করোনার টিকা
মোমেন বলেন, সরকার প্রতি সপ্তাহে এক কোটি মানুষকে টিকা দেয়ার পরিকল্পনা করেছে এবং দুই মাসের মধ্যে আট কোটি মানুষকে টিকা দেয়ার আশা করছে।
তার ভাই এবং সাবেক অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিতের স্বাস্থ্যের অবস্থা নিয়ে মোমেন বলেন, ‘মুহিত ঠিকমতো খাওয়া এবং ঘুমোতে পারছেন না, তিনি করোনা ভ্যাকসিনের দুটি ডোজ নিয়েছেন। আশা করি, তিনি পুরোপুরি সুস্থ হয়ে উঠবেন।’
এসময় তিনি সাবেক অর্থমন্ত্রীর সুস্থাতার জন্য সবার কাছে দোয়া চেয়েছেন।
আরও পড়ুনঃ সপ্তাহে এক কোটি মানুষকে টিকা দেবে সরকার: পররাষ্ট্রমন্ত্রী
উল্লেখ্য, আবুল মাল আবদুল মুহিত এক সপ্তাহ আগে করোনা শনাক্ত হয়েছেন এবং বর্তমানে তিনি রাজধানীর সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন।
সিলেটে ৭ আগস্ট থেকে করোনার গণটিকা কার্যক্রম শুরু
সিলেট নগরীর ২৭টি ওয়ার্ডে করোনার গণ টিকাদান কার্যক্রম শুরু হচ্ছে। আগামী ৭ আগস্ট থেকে শুরু হয়ে ১২ আগস্ট পর্যন্ত এই কার্যক্রম চলবে।
এই লক্ষ্যে সিলেট নগরীতে ৫৪টি বিশেষ টিকা কেন্দ্র খোলা হচ্ছে। যারা অনলাইনে নাম রেজিস্ট্রেশন করতে পারেননি, তারাও এই কার্যক্রমের আওতায় টিকা নিতে পারবেন। টিকার সময় ভোটার বা এনআইডি কার্ড সঙ্গে থাকলেই চলবে।
সিলেট সিটি করপোরেশনের প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. জাহিদুল ইসলাম বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
আরও পড়ুন: ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় মিলছে না পর্যাপ্ত প্যারাসিটামল
এদিকে, সিটি এলাকার জন্য মডার্না ও জেলার ১২টি উপজেলাগুলোর জন্য সিনোফার্মের টিকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। কিন্তু প্রবাসী অধ্যুষিত সিলেটে টিকার ধরন নিয়ে সমস্যার সৃষ্টি হয়েছে। বিপাকে পড়েছেন প্রবাসীরা, তাদেরকে নিয়ে বিপাকে স্বাস্থ্যবিভাগও।
সংশ্লিষ্টরা জানান, দেশে ফেরা হাজার হাজার প্রবাসী শিগগিরই বিদেশে যাবেন। বিভিন্ন দেশ মডার্নার টিকা বাধ্যতামূলক করেছে। ফলে উপজেলা পর্যায়ের প্রবাসীরা কেউই স্থানীয়ভাবে টিকা নিচ্ছেন না। তারা মডার্নার টিকার জন্য রেজিস্ট্রেশনের সময় সিলেট নগরীর ঠিকানা দিচ্ছেন। ফলে সিলেট নগরীর প্রায় ৬ লাখ নাগরিকের তালিকায় যোগ হচ্ছেন প্রবাসীরাও।
শুধু তাই নয়, সিলেট নগরীর সঙ্গে জুড়ে দেওয়া হয়েছে সদর উপজেলাও। সব মিলিয়ে টিকা প্রদান নিয়ে হিমশিম খেতে হচ্ছে সিলেটের স্বাস্থ্য বিভাগকে।
আরও পড়ুন: বিশ্বে করোনা আক্রান্ত প্রায় ১৯ কোটি ৮৩ লাখ মানুষ
স্বাস্থ্য অধিদফতরের সিলেট বিভাগীয় পরিচালক ডা. হিমাংশু লাল রায় জানান, সিলেটে করোনা সংক্রমণের ক্রমশ ঊর্ধ্বগতিতে সাধারণ মানুষ টিকার জন্য উদগ্রীব। প্রতিদিনই টিকা কেন্দ্রগুলোতে উপচে পড়া ভিড়। ফলে স্বাধ্যবিধির চরম লঙ্ঘনসহ টিকাদানের স্বাভাবিক কার্যক্রমও ব্যহত হচ্ছে। টিকা কেন্দ্রে ধাক্কাধাক্কি মারামারির ঘটনাও ঘটছে। এমতাবস্থায় গণটিকার কার্যক্রম দ্রুত শুরু করা জরুরি হয়ে পড়েছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্র আরও জানায়, শনিবার পর্যন্ত সিলেট নগরীতে প্রায় ৮৮ হাজার নাগরিককে করোনার প্রথম ডোজের টিকা দেওয়া হয়েছে। চলতি রেজিস্ট্রেশন থেকে টিকাদান চালু রাখা হলেও প্রথম ধাপে রেজিস্ট্রেশন করা প্রায় ৩৭ হাজার নাগরিক এখনও টিকা থেকে বঞ্চিত রয়েছেন।
আরও পড়ুন: জুলাইয়ে খুলনা বিভাগে করোনায় ১৩১৮ মৃত্যু
করোনার টিকা সংরক্ষণ করতে হয় প্রায় মাইনাস ১৫ ডিগ্রির মধ্যে। কিন্তু সিলেটে বিপুল পরিমাণে টিকা সংরক্ষণের ব্যবস্থাও নেই। তাই ধাপে ধাপে টিকা আনার মাধ্যমে টিকাদান চালিয়ে যেতে হচ্ছে।
দেশে পৌঁছেছে সিনোফার্মের আরও ৩০ লাখ টিকা
চীন থেকে ক্রয়কৃত সিনোফার্মের আরও ৩০ লাখ ডোজ টিকা বাংলাদেশে এসে পৌঁছেছে। বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ১০টা ও শুক্রবার ভোর সোয়া ১টা এবং সাড়ে ৫টায় মোট তিনটি ফ্লাইটে টিকাগুলো হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমান বন্দরে এসে পৌঁছায়।
ঢাকা বিমান বন্দরের স্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রধান ডা. শাহরিয়ার সাজ্জাদ ইউএনবিকে বলেন, ‘বাংলাদেশ বিমানের একটি ফ্লাইট চীন থেকে সিনোফার্মের ১০ লাখ ডোজ টিকা নিয়ে রাত ১০টা ৩০ মিনিটের দিকে দেশে অবতরণ করে।’
আরও পড়ুন: সিনোফার্মের টিকা পাওয়া যাবে আগের চেয়ে কম দামে
বাংলাদেশ বিমানের জনসংযোগ কর্মকর্তা তাহেরা খন্দকার স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে ভোরে অপর দু’টি ফ্লাইটে বিজি-৫০৬৭ এবং বিজি-৫০৬৯ করে চীন থেকে টিকা নিয়ে ঢাকায় অবতরণের বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়।
মোট ৩০ লাখ ডোজ কোভিড টিকা দেশে আনতে বৃহস্পতিবার বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স এর অত্যাধুনিক তিনটি ড্রিমলাইনার (একটি বোয়িং ৭৮৭-৯ ও দুইটি বোয়িং ৭৮৭-৮) ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে চীনের উদ্দেশ্যে ছেড়ে যায়।
আরও পড়ুন: করোনা: দেশে সিনোফার্মের টিকা দেয়া শুরু
এর আগে গত ১৭ ও ১৮ জুলাই সিনোফার্মের হতে ক্রয়কৃত মোট ২০ লাখ ডোজ টিকা বাংলাদেশে পৌঁছায়। চীনের সাথে টিকা ক্রয়ের চুক্তির ভিত্তিতে এই ভ্যাকসিনগুলো সংগ্রহ করা হচ্ছে।
এই মাসে সিনোফার্মের আরও ৩০ লাখ ডোজ টিকা আসবে
করোনাভাইরাস সংক্রমণ প্রতিরোধে চীন থেকে ২৬ বা ২৭ তারিখে সিনোফার্মের আরও ৩০ লাখ ডোজ টিকা আসবে বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণমন্ত্রী জাহিদ মালেক এমপি।
শনিবার বাংলাদেশ প্রাইভেট মেডিকেল কলেজ অ্যাসোসিয়েশনের(বিপিবএমসিএ)সদস্য ভুক্ত প্রতিষ্ঠান ও হাসপাতালগুলোর সঙ্গে এক মতবিনিময় সভায় করোনা সংক্রমণের ঊর্ধ্বগতি প্রতিরোধ, অক্সিজেন সংকট, হাসপাতালের সুযোগ-সুবিধা ও শয্যা সংখ্যা বৃদ্ধি শীর্ষক অনুষ্ঠানে তিনি এ তথ্য জানান।
অনুষ্ঠানে অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন বিপিবএমসিএ’র সভাপতি এম এ মুবিন খান ও সাধারণ সম্পাদক ড. আনোয়ার হোসেন খান, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) উপাচার্য অধ্যাপক ডা. শারফুদ্দিন আহমেদ প্রমুখ।
আরও পড়ুন: সিনোফার্মের টিকা পাওয়া যাবে আগের চেয়ে কম দামে
স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, সবাইকে টিকার আওতায় আনতে আমরা কাজ করে যাচ্ছি। ইতিমধ্যেই পর্যাপ্ত সংখ্যক টিকা এসে পৌঁছেছে। ২৬ বা ২৭ তারিখের মধ্যে আরও ৩০ লাখ ডোজ সিনোফার্মের টিকা আসছে। ২১ কোটি টিকার ব্যবস্থা করা হয়েছে। সময়মত পেলে বাংলাদেশ কোন দেশ থেকে টিকায় পিছিয়ে থাকবে না। ৮০ শতাংশ জনগোষ্ঠীকে টিকার আওতায় আনা যাবে।
মন্ত্রী বলেন, টিকা সংরক্ষণে ২৬টি কোল্ড ফ্রিজার বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা থেকে এনেছি। এগুলোতে মাইনাস (-) ৭০ ডিগ্রিতে রাখার মতো টিকাও সংরক্ষণ করা যাবে। বিভিন্ন দেশ থেকে নতুন করে আরও যে টিকা আসবে, সেগুলো সংরক্ষণ করতে কোন সমস্যা হবে না।
জাহিদ মালেক বলেন, গ্রামে বয়স্ক লোকজনকে অগ্রাধিকারের ভিত্তিতে টিকা দেয়া হবে। আমরা নির্দেশনা দিয়েছি। শিক্ষক ছাত্রদেরও প্রায়োরিটি দেয়া হবে, তাদের পরিবারের আঠারোর্ধদের টিকা দেয়া হবে।
আরও পড়ুন: সিনোফার্মের ২০ লাখ ডোজ টিকা আসছে আজ
বাংলাদেশে যৌথভাবে টিকা উৎপাদনে চীনা প্রতিষ্ঠানগুলো কাজ করছে: চীনা উপরাষ্ট্রদূত
বয়স্কদের শরীরে চীনা টিকার কার্যকরিতা নিয়ে প্রশ্ন!
সাম্প্রতিক এক গবেষণায় দেখা গেছে চীনের তৈরি করোনাভাইরাসের সিনোফার্ম টিকার কার্যকরিতা বয়স্কদের শরীরের অনেকটাই কম। ইতোমধ্যেই বেশ কয়েকটি দেশ তাদের বয়স্ক-ঝুঁকিপূর্ণ নাগরিকদের এই টিকার আওতায় এনেছে, কিন্তু এই গবেষণা এই টিকা কার্যক্রমকে প্রশ্নের সম্মুখীন করেছে।
সম্প্রতি দুই হাঙ্গেরিয়ান গবেষক ৪৫০ জন টিকা প্রাপ্ত মানুষের রক্তের নমুনা সংগ্রহের মাধ্যমে এই গবেষণা পরিচালনা করেন।
আরও পড়ুন: সিনোফার্মের টিকা পাওয়া যাবে আগের চেয়ে কম দামে
সিনোফার্মের দ্বিতীয় ডোজের টিকা নেয়ার দুই সপ্তাহ পার হবার পর এসকল নমুনা সংগ্রহ করা হয়। তাদের গবেষণায় দেখা যায়, ৫০ বছরের নিচের প্রায় ৯০ শতাংশ মানুষের শরীরের প্রয়োজনীয় রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা তৈরি হয়েছে।
কিন্তু পঞ্চাশোর্ধ মানুষের শরীরের টিকার কার্যকরিতা কম লক্ষ করা যায়। বিশেষ করে আশি বছরের বেশি প্রায় ৫০ শতাংশ মানুষের শরীরের কোনও প্রকার রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা তৈরি হওয়ার প্রমাণ পাওয়া যায়নি বলে ওই গবেষণা প্রতিবেদনে বলা হয়।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশের সাথে যৌথ টিকা উৎপাদনে সম্মত রাশিয়া: পররাষ্ট্রমন্ত্রী
গবেষণাটি চলতি সপ্তাহে অনলাইনে প্রকাশ করা হলেও, এখন পর্যন্ত কোনও গবেষণা সংস্থা বা গবেষকের দ্বারা এর পর্যালোচনা প্রকাশিত হয়নি। তবে তিনজন বহিরাগত বিশেষজ্ঞ জানান, চীনের তৈরি সিনোফার্ম টিকার কার্যকারিতা নিয়ে এই গবেষণার কর্মপদ্ধতি সম্পর্কে তাদের কোনও আপত্তি নেই।
হংকং বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইরোলজিস্ট জিন ডং-ইয়ান এই গবেষণা ফলাফল সম্পর্কে বলেন, ‘এটা খুবই আশঙ্কাজনক বিষয় যে, করোনার উচ্চ ঝুঁকিতে থাকা বয়স্কদের শরীরে সিনোফার্ম টিকার কার্যকারিতা কম।’
আরও পড়ুন: বাংলাদেশকে ভ্যাকসিন সরবরাহ নিশ্চিত করতে কাজ করছি: দোরাইস্বামী
চীনের পেকিং ইউনিয়ন মেডিকেল কলেজের সাবেক অধ্যাপক ওয়াং চেংগুয়াং জানান, এই গবেষণা পরিচালানার ক্ষেত্রে ব্যবহৃত টেস্ট কিটের কারণে ফলাফলে তারতম্য ঘটতে পারে। তবে, বয়স্কদের মধ্যে এই টিকার কার্যকারিতা নিয়ে এটাই প্রথম কোনও গবেষণা যার ফলাফল জনগণের কাছে প্রকাশ পেয়েছে।
তবে এই গবেষণার বিষয়ে কোনও প্রকার মন্তব্য করতে অস্বীকৃতি জানিয়েছে চীনের জাতীয় স্বাস্থ্য কমিশন। তাদের মতে, এই ব্যাপারে সরকার বা নির্দিষ্ট গবেষণা প্রতিষ্ঠান থেকেই মতামত জানানো হবে।
অন্যান্য টিকার স্বল্পতার কারণে করোনা মোকাবিলায় বর্তমানে বিশ্বের অন্তত ৫০টি দেশ চীনের সিনোফার্ম টিকা ব্যবহার করছে।
সিনোফার্মের ২০ লাখ ডোজ টিকা আসছে আজ
বাংলাদেশ নতুন করে চীনের কাছ থেকে সিনোফার্মের প্রস্তুতকৃত করোনার ২০ লাখ ডোজ টিকা পেতে যাচ্ছে। শনিবার রাতেই সিনোফার্মের কাছ থেকে ক্রয়কৃত এসব টিকা বাংলাদেশে এসে পৌঁছানোর কথা রয়েছে।
শুক্রবার ঢাকায় চীনা দূতাবাসের উপ-প্রধান হুয়ালং ইয়ান ইউএনবিকে জানান, দু’টি ফ্লাইটে টিকাগুলো হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমান বন্দরে এসে পৌঁছাবে। এছাড়া অতিরিক্ত ১০ লাখ ডোজ টিকা উপহার হিসেবে আসবে।
আরও পড়ুন: দেশে করোনায় মৃত্যু ১৮৭, শনাক্ত ১২, ১৪৮
তিনি বলেন, ‘করোনার বিরুদ্ধে বাংলাদেশের লড়াইয়ের উপহার স্বরূপ চীন সরকার বাংলাদেশকে আরও ১০ লাখ টিকা উপহার দিচ্ছে।’
আরও পড়ুন: আইভিআইয়ের সহযেগিতায় দেশেই টিকা উৎপাদন সম্ভব: স্বাস্থ্যমন্ত্রী
বাংলাদেশ চীনের কাছ থেকে বাণিজ্যিক ক্রয় চুক্তির আওতায় ১.৫ কোটি ডোজ করোনার টিকা পাওয়ার কথা রয়েছে।