বাগেরহাট
স্বাস্থ্যবিধি লঙ্ঘন: বাগেরহাটে ২৯ জনকে জরিমানা
বাগেরহাটে স্বাস্থ্যবিধি লঙ্ঘন করার অপরাধে ২৯ জনকে ১০ হাজার টাকা জরিমানা করেছে জেলা প্রশাসনের ভ্রাম্যমাণ আদালত। একই সময় ২৯টি মামলা দায়ের করা হয়।
সোমবার সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটরা জেলার বিভিন্ন এলাকায় ৬টি ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করে মাস্ক ব্যবহার না করার অপরাধে এই অর্থদণ্ড প্রদান করেন।
বাগেরহাটের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট হাফিজ আল আসাদ এই তথ্য জানিয়েছেন।
আরও পড়ুন: সোনারগাঁয়ে ভেজাল ওষুধ তৈরির অপরাধে ৪ জনের জরিমানা
এদিকে বাগেরহাটে দুদিনের ব্যবধানে করোনা শনাক্তের হার কমেছে ১৫ দশমিক ৩৫ শতাংশ। গত ২৪ ঘণ্টায় নমুনা পরীক্ষা বিবেচনায় জেলায় করোনা শনাক্তের হার দাঁড়িয়েছে ৩৯ দশমিক ৩৩ শতাংশে। এই সময়ে ১৫০ জনের নমুনা পরীক্ষা করে ৫৯ জনের করোনা শনাক্ত করেছে স্বাস্থ্য বিভাগ। গত রবিবার (৩০ জানুয়ারি) বাগেরহাটে নমুনা পরীক্ষা বিবেচনায় করোনা শনাক্তের হার ছিল ৫৪ দশমিক ৬৮ শতাংশ।
মঙ্গলবার পর্যন্ত বাগেরহাটে করোনা শনাক্তের সংখ্যা ৭ হাজার ৪৮০ জন। জেলায় এই পর্যন্ত মারা গেছে ১৪৪ জন। সুস্থ হয়ে উঠেছে ৬ হাজার ৯৪৫ জন।
করোনা সংক্রমণ বাড়তে থাকায় বাগেরহাট জেলায় সব ধরণের সভা, সমাবেশ, সামজিক অনুষ্ঠান এবং জনসভাবেশ নিষিদ্ধ করা হয়েছে। একই সাথে শহর-বন্দর, গ্রাম থেকে সর্বত্রই জনসচেতনতা বৃদ্ধির পাশাপাশি ভ্রাম্যমাণ আদালত জোরদার করা হয়েছে।
আরও পড়ুন: লকডাউন লঙ্ঘন: বাগেরহাটে একজনের জেল, ৪৯ জনের জরিমানা
বাগেরহাটের ডেপুটি সিভিল সার্জন ডা. হাবিবুর রহমান জানান, দুই দিনের ব্যবধানে বাগেরহাটে করোনা সংক্রমণের হার ১৫ দশমিক ৩৫ শতাংশ কমেছে। এই মুহূর্তে বাগেরহাটে করোনা আক্রান্ত ১৫ জন হাসপাতালে ভর্তি থেকে চিকিৎসা নিচ্ছেন। বাকিরা বাসায় থেকে চিকিৎসা নিচ্ছন।
বাগেরহাটের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আজিজুর রহমান জানান, করোনা সংক্রমণ রোধ করতে জেলার সর্বত্রই ব্যাপকভাবে জনসচেতনতামূলক প্রচার-প্রচারণা চালানো হচ্ছে। স্বাস্থ্যবিধি প্রতিপালন করতে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটরা জেলার বিভিন্ন এলাকায় ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করছে। স্বাস্থ্যবিধি লঙ্ঘন করলে কঠোরভাবে আইন প্রয়োগ করা হবে।
দুর্নীতির মামলায় বাগেরহাটের পৌর মেয়রকে আত্মসমর্পণের নির্দেশ
দুর্নীতির মামলায় বাগেরহাট পৌর মেয়র খান হাবিবুর রহমানকে তিন সপ্তাহের মধ্যে আত্মসমর্পণের নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। তাকে আগাম জামিন না দিয়ে সোমবার বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমানের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন।
আদালতে আসামিপক্ষে আইনজীবী ছিলেন নকীব সাইফুল ইসলাম। দুদকের পক্ষে আইনজীবী ছিলেন আসিফ হাসান। আর রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল এ কে এম আমিন উদ্দিন মানিক।
ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল এ কে এম আমিন উদ্দিন মানিক বলেন, হাইকোর্ট তাকে আগাম জামিন দেননি। তাকে তিন সপ্তাহের মধ্যে নিম্ন আদালতে আত্মসমর্পণ করতে বলেছেন।
অবৈধ নিয়োগ ও প্রকল্প বাস্তবায়ন না করে সরকারি টাকা আত্মসাতের অভিযোগে বাগেরহাট পৌরসভার মেয়র খান হাবিবুর রহমানের নামে গত বছরের ২৫ নভেম্বর পৃথক দুটি মামলা করে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
আরও পড়ুন: ঋণ জালিয়াতি: এবি ব্যাংকের সাত্তারকে আত্মসমর্পণের নির্দেশ
মামলার সূত্রে জানা যায়, বাগেরহাট পৌরসভায় নিয়ম বহির্ভূতভাবে ১৭ জনকে নিয়োগ দিয়ে সরকারি কোষাগার থেকে এক কোটি ২৬ লাখ ৮৮ হাজার ৮০০ টাকা আত্মসাতের অপরাধে মেয়রসহ ১৮ জনকে আসামি করে একটি মামলা করা হয়।
অন্যদিকে প্রশিক্ষণ কেন্দ্রসহ বাগেরহাটে আবাহনী ক্লাবের কমপ্লেক্স ভবন নির্মাণ এবং বাগেরহাট ডায়াবেটিক হাসপাতাল কমপ্লেক্স ভবন নির্মাণ প্রকল্পের কাজ না করে এক কোটি টাকা উত্তোলন করে আত্মসাতের অভিযোগে পৌর মেয়র খান হাবিবুর রহমান এবং বাগেরহাট পৌরসভার সাবেক সচিব মোহাম্মদ রেজাউল করিমকে আসামি করে আরও একটি মামলা করা হয়। এ মামলায় আগাম জামিন চেয়ে হাইকোর্টে আবেদন করা হলে আদালত তাকে তিন সপ্তাহের মধ্যে আত্মসমর্পণের নির্দেশ দেন।
আরও পড়ুন: ইকসল ফুডের এমডিকে আত্মসমর্পণের নির্দেশ
করোনা সংক্রমণ বৃদ্ধি: বাগেরহাটে সভা-সমাবেশ নিষিদ্ধ
বাগেরহাটে করোনা সংক্রমণ উদ্বেগজনক হারে বাড়তে থাকায় জেলায় সব ধরনের সভা, সমাবেশ, সামজিক অনুষ্ঠান এবং জনসভাবেশ নিষিদ্ধ করা হয়েছে। জেলা করোনা সংক্রমণ প্রতিরোধ কমিটির সভা থেকে এই সিদ্ধান্ত নেয়া হয় বলে জানিয়েছেন জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আজিজুর রহমান।
তিনি বলেন, জেলায় করোনা সংক্রমণ উদ্বেগজনক হারে বৃদ্ধি পাওয়ায় সব ধরনের সভা, সমাবেশ, ধর্মীয়, রাজনৈতিক এবং জনসমাগম নিষিদ্ধ করা হয়েছে। পরবর্তী নির্দেশনার আগ পর্যন্ত জেলার সর্বত্রই এই নির্দেশনা বহাল থাকবে।
তিনি বলেন, জেলার সর্বত্রই ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযান জোরদার করা হয়েছে। জেলার বিভিন্ন এলাকায় প্রবেশদারে ভ্রাম্যমাণ আদালত বসানো হয়েছে। নো-মাস্ক নো-সর্ভিস শতভাগ বাস্তবায়ন করতে নানা উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। স্বাস্থ্যবিধি লঙ্ঘন করলে ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে কঠোরভাবে আইন প্রয়োগ করা হবে।
আরও পড়ুন: ভাসমান জনগোষ্ঠীকে দেয়া হবে জনসনের টিকা: স্বাস্থ্যমন্ত্রী
এদিকে বাগেরহাটে গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে আরও ৫৯ জন করোনায় আক্রান্ত হয়েছে। পরীক্ষা বিবেচনায় করোনা শনাক্তের হার শতকরা ৩৯.৮৬ শতাংশ। এই সময়ে জেলায় ১৪৮ জনের নমুনা পরীক্ষা করে ৫৯ জনের করোনা শনাক্ত করেছে স্বাস্থ্য বিভাগ। এ নিয়ে জেলায় এপর্যন্ত করোনা শনাক্তের সংখ্যা সাত হাজার ৪২১ জন। এছাড়া এখন পর্যন্ত করোনায় আক্রান্ত হয়ে জেলায় মারা গেছে ১৪৪ জন। আর সুস্থ হয়ে উঠেছেন ছয় হাজার ৯৪২ জন।
বাগেরহাটের সিভিল সার্জন ডা. জালাল উদ্দিন আহমেদ জানান, বাগেরহাটে গত ২৪ ঘণ্টায় করোনা সংক্রমণের হার ৩৯.৮৬ শতাংশ। জেলায় ভ্যাকসিন কার্যক্রম জোরদার করা হয়েছে। জেলা সদর হাসপাতালসহ ২৪টি কেন্দ্রে প্রতিদিন গড়ে ১২ হাজারের উপরে ভ্যাকসিন দেয়া হচ্ছে।
আরও পড়ুন: করোনা পজিটিভ হলে ১০ দিনের আইসোলেশন: স্বাস্থ্য অধিদপ্তর
বাগেরহাটে করোনা শনাক্তের হার ৫৪.৬৮ শতাংশ!
বাগেরহাটে রবিবার সকাল ৮টা পর্যন্ত আগের ২৪ ঘণ্টায় ১২৮ জনের নমুনা পরীক্ষা করে ৭০ জনের করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়েছে। এনিয়ে জেলায় এপর্যন্ত করোনা শনাক্তের সংখ্যা সাত হাজার ৩৬২ জন। এসময় নমুনা পরীক্ষা বিবেচনায় শনাক্তের হার শতকরা ৫৪ দশমিক ৬৮ শতাংশ।
বর্তমানে বাগেরহাটে করোনা আক্রান্ত ১০ জন হাসপাতালে ভর্তি থেকে চিকিৎসা নিচ্ছেন। বাকিরা বাসায় থেকে চিকিৎসা নিচ্ছে বলে স্বাস্থ্য বিভাগ জানায়।
এ পর্যন্ত করোনায় আক্রান্ত হয়ে জেলায় মারা গেছেন ১৪৪ জন।
আরও পড়ুন: করোনা: চট্টগ্রামে মৃত্যু ৪, শনাক্ত ১১৬৭
বাগেরহাটের ডেপুটি সিভিল সার্জন ডা. হাবিবুর রহমান জানান, জেলায় করোনা আক্রান্তের সংখ্যা প্রতিদিন বাড়ছে। গত ২৪ ঘন্টায় বাগেরহাটে নমুনা পরীক্ষা বিবেচনায় করোনা শনাক্তের হার শতকরা ৫৪ দশমিক ৬৮ শতাংশ। একারণে জেলায় করোনা আক্রান্ত রোগীদের চিকিৎসার জন্য ১৩৫টি শয্যা প্রস্তুত রাখা হয়েছে। একই সঙ্গে চিকিৎসক এবং নার্সরা প্রস্তুত রয়েছে।
বাগেরহাট সদর হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) ডা. শেখ আদনান হোসেন জানান, বাগেরহাটে প্রতিদিন করোনা রোগী বাড়ছে। এই মুহুর্তে সদর হাসপাতালে সাতজন করোনা রোগী ভর্তি রয়েছে।
আরও পড়ুন: ঠাকুরগাঁওয়ে একদিনে করোনায় আক্রান্ত ৫১, শনাক্তের হার প্রায় ৫২.৫৮
করোনায় মৃত্যু বেড়েই চলছে
সুন্দরবনে মৃত বাঘ উদ্ধার
পূর্ব বন বিভাগের বাগেরহাটের দুবলারচরের কাছে রুপার খাল থেকে শুক্রবার সকালে একটি মৃত বাঘ উদ্ধার করা হয়েছে। বাঘটি বার্ধক্যজনিত কারণে মারা গেছে বলে ধারণা করছে বন বিভাগ।
আরও পড়ুন: মতলবে খাঁচায় বন্দি মেছো বাঘ, জনমনে আতঙ্ক
সুন্দরবন পূর্ব বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা (ডিএফও) মুহাম্মদ বেলায়েত হোসেন জানান, বন বিভাগের সদস্যরা শুক্রবার সকালে টহল দেয়ার সময় বনের রূপার খালে মৃত অবস্থায় একটি বাঘ ভাসতে দেখে। পরে তারা গিয়ে মৃতবাঘটি উদ্ধার করে। বাঘটির আনুমানিক বয়স ১৬ থেকে ১৭ বছর এবং বাঘটি পুরুষ প্রজাতির। মৃত্যুর সঠিক কারণ জানতে বাঘটির ময়নাতদন্ত করা হবে বলে তিনি জানান।
ডিএফও মুহাম্মদ বেলায়েত হোসেন আরও জানান, বন বিভাগের সদস্যরা বাঘটিকে কুলে উঠানোর পর ভালোভাবে পর্যবেক্ষণ করে দেখেছে বাঘের শরীরের কোথাও কোন ধরনের আঘাতের চিহৃ নেই। ধরাণা করা হচ্ছে বাঘটি বার্ধক্যজনিত কারণে মারা গেছে।
আরও পড়ুন: কুমিল্লায় মেছো বাঘের ৩ শাবক উদ্ধার
বন বিভাগ জানায়, ২০২১ সালের মার্চ মাসে সুন্দরবন পূর্ব বিভাগের ভোলা নদীর ধনচেবাড়িয়ার চর থেকে মৃত অবস্থায় একটি বাঘ উদ্ধার করা হয়। এর আগে ২০২০ সালের জুলাই মাসে মাত্র সাড়ে ৫ মাসের ব্যবধানে সুন্দরবন পূর্ব এবং পশ্চিম বিভাগের আওতাধীন এলাকায় বনে দুইটি বাঘ মরে পড়েছিল। পরে বন বিভাগের সদস্যরা থেকে মৃত অবস্থায় ওই বাঘ দুটি উদ্ধার করে।
বাগেরহাটে করোনা শনাক্তের হার ৫৩.৩৯ শতাংশ
বাগেরহাটে নমুনা পরীক্ষা বিবেচনায় করোনা শনাক্তের হার শতকরা ৫৩.৩৯ শতাংশ। বুধবার সকাল ৮টা থেকে বৃহস্পতিবার সকাল ৮টা পর্যন্ত জেলায় ১০৩ জনের নমুনা পরীক্ষা করে ৫৫ জনের করোনা শনাক্ত করেছে স্বাস্থ্য বিভাগ। এনিয়ে জেলায় এপর্যন্ত করোনা শনাক্তের সংখ্যা সাত হাজার ২৬৩ জন। এ পর্যন্ত করোনায় আক্রান্ত হয়ে জেলায় মারা গেছে ১৪৪ জন।
তবে বাগেরহাটে করোনা সংক্রমণ বাড়লেও হাসপাতালগুলোতে বাড়েনি করোনা রোগীদের ভিড়। বৃহস্পতিবার পর্যন্ত বাগেরহাট জেলায় করোনা আক্রান্ত সাত জন রোগী হাসপাতাল ও স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি থেকে চিকিৎসা নিচ্ছেন। বাকিরা বাড়িতে আইসোলেশনে থেকে চিকিৎসা নিচ্ছে বলে স্বাস্থ্য বিভাগ জানিয়েছে।
আরও পড়ুন: করোনায় মৃত্যু ১৫, শনাক্তের হার ৩১.৯৮
বাগেরহাটের সিভিল সার্জন ডা. জালাল উদ্দিন আহমেদ জানান, জেলায় করোনা আক্রান্তের সংখ্যা প্রতিদিন বাড়ছে। একারণে জেলায় করোনা আক্রান্ত রোগীদের চিকিৎসার জন্য ১৩৫টি শয্যা প্রস্তুত রাখা হয়েছে। একই সঙ্গে চিকিৎসক এবং নার্সরা প্রস্তুত রয়েছেন। জেলা সদর হাসপাতালে ৩৫টি এবং কচুয়া, রামপাল, শরণখোলা, মোড়েলগঞ্জ, মোংলা, ফকিরহাট, মোল্লাহাট ও চিতলমারী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ১০টি করে শয্যা প্রস্তত রাখা হয়েছে। এছাড়া বাগেরহাট সদর হাসপতালে আগামি মাসে তিনটি আইসিউ শয্যা যুক্ত হবে।
এদিকে বাগেরহাটে হাট-বাজার,ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান, শপিংমহল এবং গণপরিবহনসহ সর্বত্রই নানা ভাবে স্বাস্থ্যবিধি উপেক্ষিত হচ্ছে। করোনা সংক্রমণ বাড়তে থাকলেও মানুষ স্বাস্থ্যবিধি মানতে চাইছে না। সরকারি নির্দেশনা কঠোর ভাবে মানতে বিধিনিষেধ জারি করা হলেও সেই নির্দেশনা মানার বালাই নেই।
স্বাস্থ্যবিধি পালন জোরদার করতে জেলা প্রশাসনের ভ্রাম্যমান আদালত জেলায় প্রতিদিন ভ্রাম্যমান আদালত পরিচালনা করছে।
অপর দিকে বাগেরহাটে করোনার ভ্যাকসিন কার্যক্রম জোরদার করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার বাগেরহাট সদর হাসপাতাল কেন্দ্রে গিয়ে দেখা গেছে বুথগুলোতে ভ্যাকসিন নিতে আসা মানুষের উপচে পড়া ভিড়। জেলার ৯টি উপজেলায় ২৪টি বুথে ভ্যাকসিন কার্যক্রম চলছে। প্রতিদিন ১২ হাজারের উপরে মানুষকে ভ্যাকসিন দেয়া হচ্ছে জেলায়।
আরও পড়ুন: ঠাকুরগাঁওয়ে করোনা শনাক্তের হার ৫৬ শতাংশ!
বাগেরহাটে স্বাস্থ্যবিধি উপেক্ষিত, শনাক্তের হার ৪৬ শতাংশ
বাগেরহাটে হাট-বাজার, ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান, শপিংমহল এবং গণপরিবহনসহ সর্বত্রই নানাভাবে স্বাস্থ্যবিধি উপেক্ষিত হচ্ছে। করোনা সংক্রমণ বাড়তে থাকলেও মানুষ স্বাস্থ্যবিধি মানতে চাইছে না। গত ২৪ ঘন্টায় বাগেরহাটে নমুনা পরীক্ষা বিবেচনায় করোনা শনাক্তের হার শতকরা ৪৬ দশমিক ০৫ শতাংশ। এসময় ৭৬ জনের নমুনা পরীক্ষা করে ৩৫ জনের করোনা শনাক্ত করেছে স্বাস্থ্য বিভাগ।
এ নিয়ে বুধবার পর্যন্ত বাগেরহাট জেলায় মোট করোনা রোগী শনাক্তের সংখ্যা ৭ হাজার ২০৮ জন। আর এ পর্যন্ত আক্রান্তদের মধ্যে মারা গেছে ১৪৪ জন।
হাট-বাজারসসহ সর্বত্রই মানুষ মাস্ক ছাড়া ঘুরে বেড়াচ্ছে। সরকারি নির্দেশনা কঠোরভাবে মানতে বিধিনিষেধ জারি করা হলেও সেই নির্দেশনা মানার বালাই নেই। মাস্ক ব্যবহার না করার কারণ হিসেবে মানুষের অজুহাতের শেষ নেই। স্বাস্থ্যবিধি প্রতিপালন করতে জেলা প্রশাসনেরপ্রতিদিন ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করছে। স্বাস্থ্য বিভাগ বলছে, করোনা সংক্রমণ রোধ করতে হলে অবশ্য সবাইকে স্বাস্থ্যবিধি মানতে হবে।
পড়ুন: রাজশাহীতে করোনা শনাক্ত ৫৮.৬০ শতাংশ
এদিকে বাগেরহাটে করোনার ভ্যাকসিন কার্যক্রম জোরদার করা হয়েছে। বুধবার বাগেরহাট সদর হাসপাতাল কেন্দ্রে গিয়ে দেখা গেছে, বুথগুলোতে ভ্যাকসিন নিতে আসা মানুষের উপচে পড়া ভিড়। জেলার ৯টি উপজেলায় ২৪টি বুথে ভ্যাকসিন কার্যক্রম চলছে। প্রতিদিন ১২ হাজারের উপরে মানুষকে ভ্যাকসিন দেয়া হচ্ছে।
স্বাস্থ্য বিভাগের তথ্য মতে, এ পর্যন্ত বাগেরহাট জেলায় ১১ লাখ ১৭ হাজার ৩৫৬ জনকে প্রথম ডোজ, ৭ লাখ ৫৪ হাজার ৪২ জনকে দ্বিতীয় ডোজ এবং ২৩ হাজার ৩১১ জনকে সুস্টার ডোজ ভ্যাকসিন দেয়া হয়েছে। এছাড়া ১২ থেকে ১৭ বছর বয়স্ক শিক্ষার্থীদের এক লাখ ৫৪ হাজার ৮৫৬ জনকে প্রথম ডোজ এবং ৬৭ হাজার ১৮৬ জনকে দ্বিতীয় ডোজ ভ্যাকসিন দেয়া হয়েছে।
বাগেরহাটের সিভিল সার্জন ডা. জালাল উদ্দিন আহমেদ জানান, বাগেরহাটে করোনা সংক্রমণ বাড়ছে। গত ২৪ ঘন্টায় নমুনা পরীক্ষা বিবেচনায় শনাক্তের হার শতকরা ৪৬.০৫ শতাংশ। সংক্রমণ রোধ করতে হলে সবাইকে স্বাস্থ্যবিধি মানতে হবে। জেলায় ভ্যাকসিন কার্যক্রম জোরদার করা হয়েছে।
সিভিল সার্জন আরও জানান, বাগেরহাট জেলায় এ পর্যন্ত করোনার প্রথম ডোজ ভ্যাকসিন ৬৪.০৫ শতাংশ, দ্বিতীয় ডোজ ৪৩.২৩ শতাংশ এবং বুস্টার ডোজ ১.৩২ শতাংশ দেয়া হয়েছে। এছাড়া ১২ থেকে ১৭ বছর বয়সী শিক্ষার্থীদের ১১৩.৩২ শতাংশ ভ্যকাসিন দেয়া হয়েছে। শিক্ষার্থীদের লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ১৩.৩২ শতাংশ বেশি দেয়া হয়েছে।
পড়ুন: বিশ্বে করোনায় আক্রান্ত ৩৫ কোটি ৯০ লাখ ছাড়িয়েছে
করোনা রোগীদের ৭০-৮০ ভাগই ওমিক্রনে আক্রান্ত: স্বাস্থ্যমন্ত্রী
বাগেরহাটে হরিণের ৫ চামড়াসহ পাচারকারি আটক
বাগেরহাটের মোংলা থেকে পাঁচটি হরিণের চামড়াসহ পাচারকারি চক্রের এক সদস্যকে আটক করেছে র্যাব। মঙ্গলবার রাত ১১টার দিকে র্যাব খুলনা-৬ এর সদস্যরা মোংলা উপজেলার বিদ্যারবাহন খেওয়াঘাট এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাকে আটক করে।
আটক আল আমিন শরীফ (২৪) খুলনা জেলার দাকোপ উপজেলার উত্তর বানিয়াশান্তা গ্রামের মো. ফারুক শরীফের ছেলে।
র্যাব খুলনা-৬ এর কোম্পানি কমান্ডার পুলিশ সুপার আল আসাদ মো. মাহফুজুল ইসলাম জানান, হরিণের চামড়া ক্রয়-বিক্রিয় করা হচ্ছে গোপন সূত্রে খবর পেয়ে র্যাবের একটি দল মোংলার বিদ্যারবাহন খেওয়াঘাট এলাকায় অবস্থান নেয়। রাত ১১টার দিকে আল আমিন নামে ওই যুবক সেখানে পৌঁছালে র্যাব সদস্যরা তার কাছে থাকা ব্যাগ তল্লাশি করে। এসময় ওই ব্যাগ থেকে হরিণের পাঁচটি কাঁচা চামড়া উদ্ধার করা হয়। এক থেকে দুই দিন আগে সুন্দরবনে হরিণ শিকারের পর ওই চাড়মা পাচারকারি চক্রের মাধ্যমে বিক্রির জন্য নেয়া হচ্ছিল বলে র্যাব কর্মকর্তা জানান।
আরও পড়ুন: খুলনায় হরিণ ধরার ফাঁদসহ গ্রেপ্তার ৩
তিনি আরও জানান, র্যাবের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আটক আল আমিন হরিণের চামড়া পাচারকারি চক্রের সদস্য বলে স্বীকার করেছে। সুন্দরবনে শিকারিদের কাছ থেকে হরিণের চামড়া নিয়ে চক্রের অপর সদস্যদের মাধ্যমে বিভিন্ন এলাকায় বিক্রি করার কথা জানিয়েছে।
এ ব্যাপারে মোংলা থানায় মামলা দায়েরের প্রস্ততি চলছে।
পড়ুন: সুন্দরবনে হরিণের মাংস, ফাঁদসহ আটক ১০
বাগেরহাটে করোনা শনাক্তের হার ৫০ শতাংশ!
বাগেরহাটে গত ২৪ ঘন্টায় করোনার নমুনা পরীক্ষা বিবেচনায় শনাক্তের হার শতকরা ৫০ শতাংশ পৌঁছেছে। রবিবার ৪০ জনের নমুনা পরীক্ষা করে ২০ জনের করোনা শনাক্ত করেছে স্বাস্থ্য বিভাগ। এনিয়ে জেলায় মোট শনাক্ত করোনা রোগীর সংখ্যা সাত হাজার ১২৫ জন। আর এপর্যন্ত মারা গেছেন ১৪৪ জন।
জানা গেছে, শুক্রবার বাগেরহাটে পরীক্ষা বিবেচনা করোনা শনাক্তের হার ছিল ২০ শতাংশ এবং বৃহস্পতিবার শনাক্তের হার ছিল ২২ দশমিক ২২ শতাংশ। দুই দিনের ব্যবধানে বাগেরহাটে করোনা শনাক্তের হার দ্বিগুনের চেয়ে বেশি বৃদ্ধি পেয়েছে।
এদিকে, বাগেরহাটে করোনার টিকাদান কার্যক্রম জোরদার করা হয়েছে। বাগেরহাট সদর হাসপতাল কেন্দ্রে গিয়ে দেখা গেছে বুথগুলোতে ভ্যাকসিন নিতে আসা মানুষের উপচে পড়া ভিড়। জেলার ৯টি উপজেলায় ২৪টি বুথে ভ্যাকসিন দেয়া হচ্ছে।
স্বাস্থ্য বিভাগের তথ্য মতে, এপর্যন্ত বাগেরহাট জেলায় ১১ লাখ ২২ হাজার ২৬৯ জনকে প্রথম ডোজ, সাত লাখ ৩০ হাজার ৬২৪ জনকে দ্বিতীয় ডোজ এবং ২০ হাজার ৯০৫ জনকে সুস্টার ডোজ ভ্যাকসিন দেয়া হয়েছে।
এছাড়া ১২ থেকে ১৭ বছর বয়সী শিক্ষার্থীদের এক লাখ ৫৩ হাজার ৩৬১ জনকে প্রথম ডোজ এবং ৪৬ হাজার ৪৩৭ জনকে দ্বিতীয় ডোজ ভ্যাকসিন দেয়া হয়েছে।
তবে, এখনও এখানকার মানুষ স্বাস্থ্যবিধি মানছে না। সরকারি কঠোর বিধিনিষেধ জারি করা হলেও সেই নির্দেশনা মানারও বালাই নেই। মাস্ক না পরার কারণ হিসেবে মানুষের অজুহাতের শেষ নেই। রবিবার সকালে বাগেরহাট শহরের সাধনার মোড়, মেইন রোড, কাঁচাবাজার,মাছ বাজার, তেলপট্টিসহ বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে হাট-বাজারে মানুষ মাস্ক ছাড়া ঘুরে বেড়াচ্ছে।
আরও পড়ুন: চট্টগ্রামে একদিনে করোনায় শনাক্ত এক হাজার ছাড়াল
জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আজিজুর রহমান জানান,মাস্ক ছাড়া ঘরের বাইরে বের হওয়া যাবে না। মাস্ক না পড়লে ভ্রাম্যমান আদালতের মাধ্যমে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
বাগেরহাটের ডেপুটি সিভিল সার্জন ডা. মো. হাবিবুর রহমান জানান, বাগেরহাটে গত ২৪ ঘন্টায় নমুনা পরীক্ষা বিবেচনায় শনাক্তের হার শতকরা ৫০ শতাংশ। করোনা সংক্রমণ রোধ করতে হলে সবাইকেই মাস্ক পরতে হবে এবং স্বাস্থ্যবিধি মানতে হবে। সংক্রমন বাড়তে থাকায় বাগেরহাট জেলা সদর হাসপাতাল এবং ৮টি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে করোনা ইউনিট প্রস্তুত রাখা হয়েছে। জোরদার করা হয়েছে ভ্যাকসিন কার্যক্রম।
ডেপুটি সিভিল সার্জন ডা. মো. হাবিবুর রহমান আরও জানান, বাগেরহাটে এপর্যন্ত করোনার প্রথম ডোজ টিকা দেয়া হয়েছে শতকরা ৬৩ দশমিক ১৯ শতাংশ, দ্বিতীয় ডোজ দেয়া হয়েছে ৪১ দশমিক ৮৮ শতাংশ এবং বুস্টার ডোজ দেয়া হয়েছে এক দশমিক ১৮ শতাংশ। এছাড়া ১২ থেকে ১৭ বছর বয়সী শিক্ষার্থীদের ১১২ দশমিক ২৩ শতাংশকে টিকার প্রথম ডোজ দেয়া হয়েছে।
আরও পড়ুন: করোনা: রাজশাহী বিভাগে শনাক্ত ৪৪.১৯ শতাংশ
করোনা উপসর্গে দিনাজপুরে মৃত্যু ৩, শনাক্ত ৫১.৫১ শতাংশ
বাগেরহাটে ২৪ ঘণ্টায় করোনা শনাক্তের হার ৫০ শতাংশ
গত ২৪ ঘণ্টায় বাগেরহাটে নমুনা পরীক্ষা বিবেচনায় শনাক্তের হার শতকরা ৫০ শতাংশ। ৪০ জনের নমুনা পরীক্ষা করে ২০ জনের করোনা শনাক্ত করেছে জেলা স্বাস্থ্য বিভাগ।
রবিবার পর্যন্ত করোনা শনাক্তের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে সাত হাজার ১২৫ জন এবং মারা গেছে ১৪৪ জন। এই সময়ে সুস্থ হয়ে উঠেছে ৬ হাজার ৯৩৫ জন। এর পরেও মানুষ স্বাস্থ্যবিধি মানছে না।
আরও পড়ুন: একদিনে খুলনায় করোনায় ২ মৃত্যু
বাগেরহাটের ডেপুটি সিভিল সার্জন ডা. মো. হাবিবুর রহমান জানান, বাগেরহাটে করোনা সংক্রমণ বাড়ছে। গত ২৪ ঘণ্টায় নমুনা পরীক্ষা বিবেচনায় শনাক্তের হার শতকরা ৫০ শতাংশ। জোরদার করা হয়েছে ভ্যাকসিন কার্যক্রম। এ পর্যন্ত করোনার প্রথম ডোজ ভ্যাকসিন দেয়া হয়েছে শতকরা ৬৩ দশমিক ১৯ শতাংশ, দ্বিতীয় ডোজ দেয়া হয়েছে ৪১ দশমিক ৮৮ শতাংশ এবং বুস্টার ডোজ দেয়া হয়েছে ১ দশমিক ১৮ শতাংশ।
আরও পড়ুন: ফোন দিলেই করোনা রোগীর বাড়িতে পৌঁছে যাবে অক্সিজেন
স্বাস্থ্য বিভাগের তথ্য মতে, এ পর্যন্ত বাগেরহাটে ১১ লাখ ২২ হাজার ২৬৯ জনকে প্রথম ডোজ, সাত লাখ ৩০ হাজার ৬২৪ জনকে দ্বিতীয় ডোজ ও ২০ হাজার ৯০৫ জনকে বুস্টার ডোজ ভ্যাকসিন দেয়া হয়েছে। এছাড়া ১২ থেকে ১৭ বছর বয়স্ক শিক্ষার্থীদের এক লাখ ৫৩ হাজার ৩৬১ জনকে প্রথম ডোজ ও ৪৬ হাজার ৪৩৭ জনকে দ্বিতীয় ডোজ ভ্যাকসিন দেয়া হয়েছে।