ট্রলারে
কক্সবাজারে ট্রলারে ১০ লাশ উদ্ধারের ঘটনায় মামলা, প্রধান আসামিসহ গ্রেপ্তার ২
বঙ্গোপসাগরের কক্সবাজার উপকূলে ভাসমান ট্রলার থেকে হাত-পা বাঁধা অবস্থায় ১০ জনের লাশ উদ্ধারের ঘটনায় ৬০ জনের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে। এ মামলার দুই আসামিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। মঙ্গলবার বিকাল সাড়ে ৫টার দিকে দুজনকে গ্রেপ্তারের কথা জানান কক্সবাজার জেলা পুলিশ সুপার (এসপি) মো. মাহফুজুল ইসলাম।
তিনি জানান, গ্রেপ্তারেরা প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে ১০ জনকে হত্যায় জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছেন।
নিহতেরা হলেন- মহেশখালী উপজেলার হোয়ানক ইউনিয়নের ছনখোলা পাড়ার রফিক মিয়ার ছেলে সামশুল আলম (২৩), শাপলাপুর ইউনিয়নের মিটাছড়ি গ্রামের দেলোয়ার হোসেনের ছেলে সাইফুল ইসলাম (১৮), জাফর আলমের ছেলে সওকত উল্লাহ (১৮), মুসা আলীর ছেলে ওসমান গণি (১৭), সাহাব মিয়ার ছেলে সাইফুল্লাহ (২৩), মোহাম্মদ আলীর ছেলে পারভেজ মোশাররফ (১৪), মোহাম্মদ হোসাইনের ছেলে নুরুল কবির (২৮), চকরিয়া উপজেলার কোনাখালী ইউনিয়নের কবির হোসাইনের ছেলে সাইফুল ইসলাম (৩৪), শাহ আলমের ছেলে মোহাম্মদ শাহজাহান (৩৫) ও চকরিয়া পৌরসভার চিরিঙ্গা এলাকার জসিম উদ্দীনের ছেলে তারেক জিয়া (২৫)।
গ্রেপ্তারেরা হলেন-বাইট্টা কামাল ও করিম সিকদার।
পুলিশ সুপার জানান, নিহত সামশুল আলমের স্ত্রী রোকেয়া আক্তার বাদী হয়ে চারজনের নাম উল্লেখ করে এবং অজ্ঞাতনামা ৬০ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেছেন। কক্সবাজার সদর মডেল থানায় দায়েরকৃত মামলায় বাইট্টা কামালকে প্রধান ও করিম সিকদারকে চার নম্বর আসামি করা হয়েছে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে তাদের দুইজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
মাহফুজুল ইসলাম আরও জানান, মহেশখালীর মাতারবাড়ি ও আশপাশের এলাকা থেকে দুইজনকে গ্রেপ্তারের পর প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তারা ১০ জনকে হত্যায় জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছেন। অধিকতর তদন্তের স্বার্থে দুইজনকে আদালতে সোপর্দ করে রিমান্ড চাইবে পুলিশ। রিমান্ড মঞ্জুর হলে জিজ্ঞাসাবাদে ঘটনার আসল রহস্য বেরিয়ে আসবে বলে ধারণা পুলিশের।
আরও পড়ুন: কক্সবাজারে মাছ ধরার ট্রলার থেকে ১০ লাশ উদ্ধার
নিহত ১০ জন জলদস্যু ছিলেন কি না-এ প্রশ্নের জবাবে পুলিশ সুপার বলেন, সেটি এখনো স্পষ্ট নয়। তবে নিহত সামশুল আলমের বিরুদ্ধে মাদক ও নুরুল কবিরের বিরুদ্ধে ডাকাতির মামলা রয়েছে। সব কিছু মাথায় নিয়ে পুলিশ কাজ শুরু করেছে।
স্বজনদের দাবি, ভাসমান ট্রলারটির মালিক মহেশখালীর হোয়ানক ইউনিয়নের ছনখোলা এলাকার মোহাম্মদ রফিকের ছেলে সামশুল আলম। গত ৭ এপ্রিল মাঝিমাল্লা নিয়ে তিনি সাগরে মাছ ধরতে রওনা দেন। কিন্তু এরপর থেকেই ট্রলারসহ নিখোঁজ ছিলেন তারা।
ট্রলারটি গত ২২ এপ্রিল বিকালে কক্সবাজারের নাজিরারটেক পয়েন্টের কাছাকাছি টেনে নিয়ে আসে আরেকটি মাছ ধরার ট্রলার। এরপর ২৩ এপ্রিল সেখান থেকে ১০টি লাশ উদ্ধার করে ফায়ার সার্ভিস ও পুলিশ। ট্রলারে লাশগুলো বরফ ও মাছ রাখার স্টোরে হাত-পা বেঁধে ঢুকিয়ে দরজা পেরেক ঠুকে আটকে দেওয়া হয়।
পুলিশের ধারণা, এটি একটি পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড।
জানা যায়, নিহত ১০ জনের মধ্যে ছয়জনেরই বাড়ি মহেশখালী উপজেলার শাপলাপুর মিঠাছড়ি এলাকায়। স্থানীয় মোহাম্মদ হোসাইনের ছেলে নুরুল কবিরের মাধ্যমে ওই এলাকার পাঁচজন কিশোর সাগরে যায়। কিন্তু নুরুল কবির ছাড়া বাকি কিশোররা পেশায় জেলে ছিল না। হঠাৎ তারা কেন সাগরে মাছ ধরতে গেছে সেটিও কেউ বুঝে উঠতে পারছে না।
পুলিশের ভাষ্য, উদ্ধার লাশগুলোর শরীরের প্রায় ৯৫ শতাংশ গলে গেছে। এর ফলে তাদের শনাক্ত করা কঠিন হয়ে পড়েছিল। তারপরও স্বজনদের মাধ্যমে শনাক্ত করে ছয়জনের লাশ হস্তান্তর করে পুলিশ। বাকি চার লাশ এখনো মর্গেই রয়ে গেছে।
আরও পড়ুন: কক্সবাজারে মা-মেয়ের লাশ উদ্ধারের ঘটনায় চট্টগ্রামে স্বামী আটক
কক্সবাজারে সমুদ্রে গোসলে নেমে পর্যটকের মৃত্যু
১ বছর আগে
লকডাউনে ট্রলারে পিকনিক, খাবার গেল এতিমখানা-মাদ্রাসায়
চাঁদপুরের মতলব দক্ষিণে সরকারের চলমান লকডাউনের বিধিনিষেধ অমান্য করে ট্রলারে বনভোজনের (পিকনিক) আয়োজন পণ্ড করে দিয়েছে ভ্রাম্যমাণ আদালত। বিধিনিষেধ ভঙ্গের অপরাধে মামলা ও জরিমানাও করা হয়েছে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ফাহমিদা হক ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে পাঁচটি মামলায় ১১হাজার ৫শত টাকা জরিমানা করেন। আয়োজকদের পাঁচজনকে জরিমানা করা হয় ।
আরও পড়ুন: কঠোর লকডাউনের দ্বিতীয় দিনে রাজধানীতে গ্রেপ্তার ৩৮৩
রবিবার দুপুর ১২ টায় উপজেলার নারায়নপুর ইউনিয়নের বোয়ালজুড়ি খালে অভিযান চালিয়ে সরকারের বিধিনিষেধ অমান্য করে অপরাধে সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে মামলা ও জরিমানা করা হয়।
এছাড়াও পিকনিকের সব খাদ্যসামগ্রীও জব্দ করা হয়। জব্দ করা খাবার পরে এলাকার এতিমখানা ও মাদ্রাসায় বিতরণ করা হয়।
আরও পড়ুন: লকডাউনে ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য প্রধানমন্ত্রীর ৩,২০০ কোটি টাকার প্রণোদনা প্যাকেজ
এ সময় সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সেটু কুমার বড়ুয়া, মতলব দক্ষিণ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. মহিউদ্দিন মিয়া উপস্থিত ছিলেন।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ইউএনবি কে জানান, লকডাউন চলাকালে সরকারি বিধিনিষেধ অমান্য করে জনসমাগম করায় তাদেরকে এ জরিমানা করা হয়েছে। সরকারের বিধি নিষেধ বাস্তবায়নে প্রশাসনের অভিযান অব্যাহত থাকবে। সবাই স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলুন। বিনা প্রয়োজন কেউ ঘর থেকে বের হতে পারবে না।
৩ বছর আগে