শিক্ষার্থী
লালমনিহাটে নার্সিং কলেজের শিক্ষার্থীর ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার
লালমনিরহাটে নার্সিং হল থেকে নার্সিং কলেজের এক শিক্ষার্থীর ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। মঙ্গলবার বিকেলে সদর উপজেলার লালমনিরহাট নার্সিং কলেজ ক্যাম্পাসের ৮০০ বর্গফুট নামক আবাসিক ভবন থেকে তার লাশ উদ্ধার করা হয়।
নিহত আল আমিন সরকার আবির (২০) টাঙ্গাইল জেলার ঘাটাইল উপজেলার শহর গোপিনপুর (আষারিয়া চালা) গ্রামের মো. সাইফুল ইসলামের ছেলে। তিনি লালমনিরহাট নার্সিং কলেজের বিএসসি ইন নার্সিং প্রথম বর্ষের ছাত্র।
আরও পড়ুন: প্রেমিকের সঙ্গে বিয়ে না দেয়ায় ভালোবাসা দিবসে কিশোরীর ‘আত্মহত্যা’
আল আমিন সরকার আবিরের রুম মেট রনি আহমেদ বলেন, দুপুরের খবারের সময় হলে আমরা আমাদের হলের সব শিক্ষার্থী খেতে যাই। খাবার শেষে ফিরে তার কক্ষ ভিতর থেকে আটকানো দেখি। পরে অনেক ডাকাডাকি করে কোন সাড়া শব্দ না পেয়ে বিষয়টি অধ্যক্ষ ছাহেবা বোগমকে অবগত করি।
পরবর্তীতে অধ্যক্ষ আরও কয়েকজন শিক্ষক ও ওই হলের শিক্ষার্থীদের নিয়ে দরজা ভেঙে ভিতরে প্রবেশ করে রুমের সিলিং ফ্যানের সঙ্গে আল আমিনের ঝুলন্ত লাশ দেখতে পান। পরে থানায় খবর দেয়া হয়।
আরও পড়ুন: কুষ্টিয়ায় এসএসসিতে ফেল করে ছাত্রীর আত্মহত্যা!
লালমনিরহাট সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শাহা আলম বলেন, প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে এটি আত্মহত্যা। আমরা লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠিয়েছি।’
নাগরিকদের ইউক্রেন ত্যাগের আহ্বান ভারতের
ইউক্রেনে সম্ভাব্য রুশ আগ্রাসন নিয়ে উত্তেজনা বৃদ্ধির মধ্যে নিজ দেশের নাগরিকদের ইউক্রেন ত্যাগের কথা বিবেচনা করার আহ্বান জানিয়েছে ভারত।
মঙ্গলবার কিয়েভের ভারতীয় দূতাবাস এক বিবৃতিতে বলেছে, ইউক্রেনের বর্তমান পরিস্থিতির অনিশ্চয়তার পরিপ্রেক্ষিতে ভারতীয় নাগরিক বিশেষ করে শিক্ষার্থীরা সাময়িকভাবে ইউক্রেন ত্যাগের বিষয়টি বিবেচনা করতে পারে।
দূতাবাস আরও জানিয়েছে, ভারতীয় নাগরিক যারা ইউক্রেনে অবস্থান করছে তারা তাদের উপস্থিতির বিষয়টি সম্পর্কে দূতাবাসকে যেনো অবহিত করে। যাতে প্রয়োজনে দূতাবাস তাদের কাছে পৌঁছাতে পারে।
আরও পড়ুন: ইউক্রেনে হামলা করলে চড়া মূল্য দিতে হবে, পুতিনকে বাইডেনের হুঁশিয়ারি
ভারত এর আগে ইউক্রেন নিয়ে রাশিয়া ও মার্কিন নেতৃত্বাধীন পশ্চিমের মধ্যে উত্তেজনাপূর্ণ উত্তেজনার পরিপ্রেক্ষিতে কিয়েভ সংকটের একটি ‘শান্তিপূর্ণ সমাধান’ করার আহ্বান জানিয়েছিল।
ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র অরিন্দম বাগচি গত মাসে গণমাধ্যমকে বলেছেন, ‘আমরা রাশিয়া ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে চলমান উচ্চ-পর্যায়ের আলোচনাসহ ইউক্রেন সংক্রান্ত উন্নয়ন ঘনিষ্ঠভাবে অনুসরণ করছি।’
তিনি আরও বলেন, ‘কিয়েভে আমাদের দূতাবাস স্থানীয় উন্নয়নও পর্যবেক্ষণ করছে। আমরা এই অঞ্চলে এবং এর বাইরে দীর্ঘমেয়াদী শান্তি ও স্থিতিশীলতার জন্য টেকসই কূটনৈতিক প্রচেষ্টার মাধ্যমে পরিস্থিতির শান্তিপূর্ণ সমাধানের আহ্বান জানাচ্ছি।’
রাশিয়া-ইউক্রেন সীমান্তের কাছে ১৩ লাখ সৈন্য মোতায়েন করেছে মস্কো। যা ন্যাটো সদস্যদের মধ্যে আশঙ্কা তৈরি করেছে যে ইউক্রেনে রাশিয়া হামলা চালাতে পারে।
আরও পড়ুন: রুশ হামলার আশঙ্কা, ইউক্রেন থেকে দূতাবাস সরিয়ে নিচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র
খুলনায় সুন্দরবন দিবস উদযাপন
খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ে সুন্দরবন দিবস উপলক্ষে সোমবার বেলা ১১টায় ফরেস্ট্রি এন্ড উড টেকনোলজি ক্লাবের উদ্যোগে শোভাযাত্রা বের হয়। শোভাযাত্রাটি আচার্য জগদীশচন্দ্র বসু একাডেমিক ভবনের সামনে থেকে শুরু হয়ে শহিদ তাজউদ্দীন আহমদ ভবনের সামনে দিয়ে হাদী চত্বরে গিয়ে শেষ হয়।
শোভাযাত্রা শেষে সেখানে দিবসের তাৎপর্য তুলে ধরে এক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় বক্তব্য দেন ডিসিপ্লিনের শিক্ষক প্রফেসর এ কে ফজলুল হক। এসময় ডিসিপ্লিনের শিক্ষক ও ক্লাবের সদস্য শিক্ষার্থীরা উপস্থিত ছিলেন।
ক্লাবের সভাপতি আহসান রাজিব প্রমি ও সাধারণ সম্পাদক মো. সাইফুল ইসলাম জানান, নবগঠিত এই ক্লাবের কার্যক্রম শুরু হয়েছে। আগামী বছর বৃহৎ পরিসরে এ দিবসটি পালনে আমাদের পরিকল্পনা রয়েছে।
আরও পড়ুন: সুন্দরবনে লবণাক্ততা বাড়ছে, হুমকির মুখে জীববৈচিত্র্য
শাবিপ্রবি শিক্ষার্থীদের আন্দোলন প্রত্যাহার: ক্লাস-পরীক্ষা শুরুর আহ্বান
উপাচার্য ফরিদ উদ্দিন আহমেদের পদত্যাগের দাবিতে শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (শাবিপ্রবি) শিক্ষার্থীরা তাদের বিক্ষোভ প্রত্যাহার করেছেন। সঙ্গে ক্লাস ও পরীক্ষা পুনরায় শুরু করার জন্য কর্তৃপক্ষের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন শিক্ষার্থীরা।
শনিবার সন্ধ্যা ৭টায় বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে বিক্ষোভরত শিক্ষার্থীরা এ ঘোষণা দেন।
আন্দোলনের মুখপাত্র মোহাইমিনুল ইসলাম রাজ বলেন, ‘আপনারা সবাই অবগত আছেন গতকাল (শুক্রবার) শিক্ষামন্ত্রী ও শিক্ষা উপমন্ত্রী আমাদের আমন্ত্রণে শাবিপ্রবিতে এসেছিলেন। মন্ত্রীদের সঙ্গে আমাদের দাবি নিয়ে দীর্ঘ আলোচনা হয়েছে। তিনি আমাদের সকল দাবি আন্তরিকতার সঙ্গে শুনেছেন এবং আমাদের আলোচনা ফলপ্রসূ হয়েছে। এজন্য আমরা মন্ত্রীদ্বয়’কে আন্তরিকভাবে ধন্যবাদ জানাচ্ছি।
আরও পড়ুন: অবশেষে শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার ঘটনায় শাবিপ্রবি উপাচার্যের দুঃখ প্রকাশ
তিনি বলেন, শিক্ষার্থীরা শুক্রবার তাদের ছয় দফা দাবি এবং সারাদেশের সব বিশ্ববিদ্যালয়ের সর্বাত্মক উন্নয়নের কিছু প্রস্তাব নিয়ে আলোচনা করেছে। আমরা কর্তৃপক্ষকে রবিবার থেকে আগের মতো ক্লাস ও পরীক্ষা শুরু করার আহ্বান জানাচ্ছি।
এর আগে ১৬ জানুয়ারি আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের উপর পুলিশি পদক্ষেপের জন্য উপাচার্য ফরিদ উদ্দিন আহমেদ দুঃখ প্রকাশ করেন।
তিনি এক প্রেস বিবৃতিতে বলেন, ‘আমি সেদিনের অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনায় আহত ছাত্র, শিক্ষক ও কর্মচারীসহ সকলের প্রতি আমার আন্তরিক সমবেদনা প্রকাশ করছি।
শুক্রবার শিক্ষার্থীদের উপাচার্যের পদত্যাগের দাবি প্রসঙ্গে দীপু মনি বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের চ্যান্সেলর হিসেবে ভিসি পদে কাউকে নিয়োগ ও অপসারণের ক্ষমতা রাষ্ট্রপতির। তাদের দাবি রাষ্ট্রপতির কাছে পেশ করা হবে।
আরও পড়ুন: শাবিপ্রবি উপাচার্যকে ‘দায়িত্ব চালিয়ে যাওয়ার’ পরামর্শ শিক্ষামন্ত্রীর
আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে করা দুটি মামলার বিষয়ে তিনি বলেন, যত দ্রুত সম্ভব মামলা প্রত্যাহারের ব্যবস্থা করা হবে। এছাড়াও, আন্দোলনের সময় বন্ধ থাকা শিক্ষার্থীদের মোবাইল ব্যাংকিং অ্যাকাউন্ট এবং নম্বরগুলো কয়েক দিনের মধ্যে পুনরায় সক্রিয় করা হবে বলে জানান তিনি।
দীপু মনি পুলিশের গুলিতে আহত সজল কুণ্ডের যথাযথ চিকিৎসা এবং তার জন্য সরকারি চাকরিতে নিয়োগেরও আশ্বাস দিয়েছেন বলে ব্রিফিংয়ে শিক্ষার্থীরা জানান।
চট্টগ্রামে শিক্ষার্থীকে ধর্ষণের অভিযোগে গ্রেপ্তার ২
চট্টগ্রামের সাতকানিয়ায় দুই শিক্ষার্থীকে ধর্ষণের অভিযোগে দুই যুবককে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। শুক্রবার রাতে উপজেলার দক্ষিণ কাঞ্চনা ও এওচিয়া এলাকায় অভিযান চালিয়ে দুই যুবককে গ্রেপ্তার করা হয় বলে পুলিশ জানায়।গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা হল- কাঞ্চনা ইউনিয়নের দক্ষিণ কাঞ্চনা বকশিরখীল এলাকার মৃত মীর আহমদের ছেলে মো. আলমগীর (২১) ও একই উপজেলার এওচিয়া ইউনিয়নের টুডির বাড়ির মো.ইউনুসের ছেলে মেজবাহ উদ্দিন প্রকাশ কালু (২০)।বিষয়টি নিশ্চিত করে সাতকানিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবদুল জলিল বলেন, ভুক্তভোগী এক শিক্ষার্থীর বাবা বাদী হয়ে থানায় ধর্ষণের অভিযোগে মামলা করলে তাৎক্ষণিক পুলিশের টিম পাঠিয়ে অভিযুক্তদের গ্রেপ্তার করা হয়। শনিবার দুপুরে তাদের আদালতে পাঠানো হয়েছে।
আরও পড়ুন: চাঁদপুরে স্কুলছাত্রীকে ধর্ষণ মামলায় গ্রেপ্তার ১
মামলার এজাহার সূত্রে জানা গেছে, ভুক্তভোগী দুই কিশোরী আপন খালা ও ভাগনি। গত সোমবার বিকেলে তারা পান-সুপারী আনতে দোকানে যায়। এ সময় আগে থেকে ওঁৎ পেতে থাকা দুই অভিযুক্ত তাদের ধরে সিএনজিতে তুলে ৮ কিলোমিটার পশ্চিমে এওচিয়া ইউনিয়নের আলীনগরের নির্জন পাহাড়ি এলাকায় নিয়ে ধর্ষণ করে। ভোরের দিকে দুই কিশোরীকে ফেলে পালিয়ে যায়। ভুক্তভোগী এক কিশোরীর বাবা মেয়ে ও শালিকাকে উদ্ধার করে। সকালে তারা বাড়িতে ফিরে এসে এ ঘটনার কথা জানায়।
এজাহারে আরও জানা যায়, সাতকানিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিলে তাদের সেখানে প্রাথমিক চিকিৎসা দেয়া হয়। পরে তাদের চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে নেয়া হয়। সেখানে চিকিৎসা শেষে শুক্রবার রাতে বাবা নিজে বাদী হয়ে সাতকানিয়া থানায় মামলা করেন। মামলার পরপর পুলিশের একটি টিম অভিযুক্তদের বাড়িতে অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেপ্তার করে।
আরও পড়ুন: ঠাকুরগাঁওয়ে স্কুলছাত্রী ধর্ষণের মামলায় গ্রেপ্তার ২
মুঠোফোনে ডেকে নিয়ে স্কুলছাত্রীকে সংঘবদ্ধ ধর্ষণের অভিযোগ
অবশেষে শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার ঘটনায় শাবিপ্রবি উপাচার্যের দুঃখ প্রকাশ
শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (শাবিপ্রবি) উপাচার্য ফরিদ উদ্দিন আহমেদ গত ১৬ জানুয়ারি আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের ওপর পুলিশের হামলায় দুঃখ প্রকাশ করেছেন। শনিবার এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে উপাচার্য দুঃখ প্রকাশ করেন।বিজ্ঞপ্তিতে উপাচার্য বলেন, আমাদের প্রিয় বিশ্ববিদ্যালয়ে ঘটে যাওয়া অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনায় শিক্ষক, শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা-কর্মচারীসহ যারা আহত হয়েছেন, তাদের সবার প্রতি আমার আন্তরিক সমবেদনা ও সহমর্মিতা প্রকাশ করছি।বিশ্ববিদ্যালয়ের সর্বোচ্চ অভিভাবক হিসেবে ঘটে যাওয়া অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনার জন্য আমি আন্তরিকভাবে গভীর দুঃখ প্রকাশ করছি। উক্ত ঘটনার ধারাবাহিকতায় সৃষ্ট অচলাবস্থা কাটিয়ে উঠতে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা ও কর্মচারী যারা আপ্রাণ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন তাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি।
শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি বিশ্ববিদ্যালয় পরিদর্শনের একদিন পর উপাচার্য দুঃখ প্রকাশ করেন।
ফরিদ উদ্দিন আহমেদ শিক্ষা উপমন্ত্রী, সংশ্লিষ্ট সরকারি কর্মকর্তা, আওয়ামী লীগ নেতা ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্য, গণমাধ্যম কর্মীদের ধন্যবাদ জানান, যারা ক্যাম্পাসের স্বাভাবিক পরিস্থিতি ফিরিয়ে আনতে দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন করেছেন।
ক্যাম্পাসের স্বাভাবিক শিক্ষার পরিবেশ ও স্বাভাবিক কার্যক্রম ফিরিয়ে আনতে সবাইকে ভূমিকা রাখারও আহ্বান জানান ভিসি।
আরও পড়ুন: শাবিপ্রবি উপাচার্যকে ‘দায়িত্ব চালিয়ে যাওয়ার’ পরামর্শ শিক্ষামন্ত্রীর
শুক্রবার শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনির সঙ্গে সাক্ষাতে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা উপাচার্য ফরিদ উদ্দিনের পদত্যাগের দাবি পুনর্ব্যক্ত করেন।
শাবিপ্রবি ভিসিকে অপসারণের সিদ্ধান্ত রাষ্ট্রপতির ওপর নির্ভর করে: দীপু মনি
শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (শাবিপ্রবি) আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা উপাচার্যের পদত্যাগের দাবি পুনর্ব্যক্ত করার জবাবে শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি বলেন, উপাচার্যের পদত্যাগের দাবি রাষ্ট্রপতির কাছে পেশ করা হবে, কারণ তিনি চ্যান্সেলর। ভিসি পদে কাউকে নিয়োগ ও অপসারণের ক্ষমতা তার হাতে।
শুক্রবার বিকাল ৩টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত সিলেটের সার্কিট হাউসে শিক্ষামন্ত্রীর সঙ্গে তিন ঘণ্টার বৈঠকে মোট আটটি দাবি তুলে ধরেন শিক্ষার্থীরা।
বৈঠক শেষে শিক্ষামন্ত্রী সাংবাদিকদের ব্রিফিংকালে বলেন, আলোচনার সময় আমরা তাদের কথা মনোযোগ দিয়ে শুনেছি। তবে, শিক্ষার্থীদের কিছু দাবি ইতোমধ্যে পূরণ করা হয়েছে। তাদের প্রধান দাবি ভিসির পদত্যাগ বা অপসারণ।
আরও পড়ুন: শাবিপ্রবির নতুন প্রক্টর ইশরাত ইবনে ইসমাইল
দীপু মনি বলেন, ‘কিন্তু একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি নিয়োগ করেন চ্যান্সেলর। তাই আমরা শিক্ষার্থীদের দাবি রাষ্ট্রপতির কাছে তুলে ধরব। তিনি সিদ্ধান্ত নেবেন।’
তাদের অন্য দাবিগুলো হলো—উপাচার্য ফরিদ উদ্দিন আহমেদের পদত্যাগ, ক্লাস-পরীক্ষা চালু, শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে হওয়া মামলা প্রত্যাহার, আড়াই শতাধিক শিক্ষার্থীর বন্ধ থাকা মোবাইল ব্যাংকিং অ্যাকাউন্ট চালু করা, পুলিশের গুলিতে আহত শিক্ষার্থী সজল কুণ্ডকে এককালীন আর্থিক সহযোগিতা দেয়া ও তার জন্য নবম গ্রেডের চাকরি নিশ্চিত করা, মুহম্মদ জাফর ইকবাল ও ইয়াসমিন হককে ইমেরিটাস অধ্যাপক হিসেবে নিয়োগ দেয়া, সব বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষণা খাতে বাজেট বাড়ানো, পরীক্ষা পদ্ধতিতে কোডিং সিস্টেম কার্যকর করা, শিক্ষক নিয়োগে পিএইচডি এবং ডেমো ক্লাসের ভিত্তিতে নিয়োগ প্রক্রিয়া চালু করা।
শিক্ষামন্ত্রীর সঙ্গে শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল, বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশন অনু বিভাগের সেক্রেটারিসহ তিন কর্মকর্তা ও শিক্ষার্থী প্রতিনিধিরা আলোচনায় অংশ নেন।
আরও পড়ুন: শাবিপ্রবির প্রথম নারী ছাত্র উপদেষ্টা অধ্যাপক আমিনা পারভীন
উল্লেখ্য, শাবি শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের শুরু ১৩ জানুয়ারি। বিশ্ববিদ্যালয়ের বেগম সিরাজুন্নেসা চৌধুরী হলের প্রাধ্যক্ষ জাফরিন আহমেদ লিজার বিরুদ্ধে অসদাচরণের অভিযোগ তুলে তার পদত্যাগসহ তিন দফা দাবিতে আন্দোলন শুরু করেন হলের কয়েক শ ছাত্রী।
১৬ জানুয়ারি বিকেলে শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইসিটি ভবনে উপাচার্যকে অবরুদ্ধ করেন। তখন শিক্ষার্থীদের লাঠিপেটা করে উপাচার্যকে মুক্ত করে পুলিশ। এরপর পুলিশ ৩০০ জনকে আসামি করে শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে মামলা করে।
১৯ জানুয়ারি দুপুর আড়াইটা থেকে উপাচার্যের পদত্যাগ না করা পর্যন্ত আমরণ অনশনে বসেন ২৪ শিক্ষার্থী।
২৬ জানুয়ারি অনশন ভাঙার পর জাফর ইকবাল ও ইয়াসমিন হকের হাতে শিক্ষার্থীরা উপাচার্যের পদত্যাগসহ পাঁচটি দাবি সরকারের উচ্চপর্যায়ে পৌঁছে দেয়ার জন্য তুলে দেন। এরপর ৬ জানুয়ারি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র উপদেশ ও নির্দেশনা পরিচালক পদ থেকে অধ্যাপক জহির উদ্দিন আহমদকে সরিয়ে দেয়া হয়।
ঢাবিতে সশরীরে ক্লাস শুরু ২২ ফেব্রুয়ারি
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) স্নাতক (সম্মান) প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থীদের সশরীরে ক্লাস ২২ ফেব্রুয়ারি থেকে শুরু হবে।
শুক্রবার বিশ্ববিদ্যালয়ের জনসংযোগ দপ্তর থেকে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, ‘পূর্বের সূচি অনুযায়ী ওই দিন থেকে সশরীরে শ্রেণি কার্যক্রম শুরু হবে। এছাড়া আগের সূচি অনুযায়ীই সশরীরে (পূর্ব ঘোষিত) পরীক্ষা নেয়া হবে।’
বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক মো. আখতারুজ্জামান বলেন, ‘যথাযথ স্বাস্থ্যবিধি মেনে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের স্নাতক (সম্মান) প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থীদের শ্রেণি কার্যক্রম শুরু হবে। একইভাবে পূর্ব ঘোষিত পরীক্ষাও সূচি অনুযায়ী নেয়া হবে।’
অন্যান্য বর্ষের শিক্ষার্থীদের ক্লাসের বিষয়ে তিনি বলেন, ‘করোনা পরিস্থিতি বিবেচনায় নিয়ে অন্যান্য বর্ষের শিক্ষার্থীদের সশরীরে ক্লাসের ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।’
এর আগে দেশব্যাপী করোনা সংক্রমণ বাড়তে থাকায় গত ৬ ফেব্রুয়ারি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অনলাইনে শ্রেণি কার্যক্রম ২১ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত বৃদ্ধি করা হয়।
আরও পড়ুন: ঢাবির 'ডি' ইউনিটের পরীক্ষা বাতিলের সিদ্ধান্তে শিক্ষকদের ক্ষোভ: আদালতে যাওয়ার হুমকি
ঢাবিতে কমছে ভর্তির আসন সংখ্যা, থাকছে না ‘ঘ’ ইউনিটও
তৃতীয় মেধা তালিকার পরও ইবিতে ১২৭০ আসন শূন্য
কুষ্টিয়ার ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে (ইবি) ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের প্রথম বর্ষ স্নাতক শ্রেণিতে ভর্তি পরীক্ষার তৃতীয় মেধা তালিকা থেকে শিক্ষার্থী ভর্তির পরও আরও এক হাজার ২৭০টি আসন শূন্য রয়েছে।
এদিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন অনুষদের জ্যৈষ্ঠ শিক্ষকরা বলছেন, বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ গুচ্ছ পদ্ধতিতে ভর্তি পরীক্ষায় যোগদান করে ভুল সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। এর ফলে তারা সময় মতো বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থী ভর্তি করতে ব্যর্থ হয়েছেন।
গুচ্ছ পদ্ধতিতে যোগ দিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়টি নিজস্ব স্বতন্ত্র হারিয়েছে বলেও অভিযোগ তুলেন তারা।
বিশ্ববিদ্যালয়টির শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক এম মিজানুর রহমান জানান, বুধবার অনুষ্ঠিত সাধারণ সভায় তারা গুচ্ছ পদ্ধতিতে যোগ না দিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের আগের পদ্ধতিতে ভর্তি পরীক্ষা নেয়ার বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।
এ সিদ্ধান্তের বিষয়ে তারা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক শেখ আবদুস সালামের সঙ্গে শিগগিরই কথা বলবেন বলেও জানান তিনি।
আরও পড়ুন: ইবির ইংরেজি বিভাগের নতুন সভাপতি ড. মেহের
বিশ্ববিদ্যালয়ের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানান, বিশ্ববিদ্যালয়ের মোট দুই হাজার ৯৫টি আসনের মধ্যে প্রথম, দ্বিতীয় ও তৃতীয় মেধা তালিকা থেকে ৮২৫ জন শিক্ষার্থী ভর্তি হয়েছেন।
বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক বিভাগের পরিচালক এটিএম এমদাদুল আলম বলেন, শূন্য থাকা এক হাজার ২৭০টি আসনের মধ্যে বিজ্ঞান অনুষদের অধীনে ‘ক’ ইউনিটে ২৭৫টি; কলা, সামাজিক বিজ্ঞান ও আইন অনুষদের অধীনে ‘বি’ ইউনিটে ৭৪৬টি এবং ব্যবসায় প্রশাসনের অধীনে ‘সি’ ইউনিটে ২৫০টি আসন খালি রয়েছে।
আসন্ন মেধা তালিকা থেকে শিক্ষার্থী ভর্তি করে এসব শূন্য আসন পূরণ করা হবে বলেও জানান তিনি।
ইবির আইসিটি সেলের পরিচালক অধ্যাপক এম আহসান-উল-আম্বিয়া বলেন, কেন্দ্রীয় নির্দেশনা অনুযায়ী তারা তৃতীয় মেধা তালিকার ভর্তি প্রক্রিয়া সম্পন্ন করেছেন।
আরও পড়ুন: ইবির শিক্ষক সমিতির নির্বাচন ১২ ডিসেম্বর
তিনি বলেন, তৃতীয় মেধা তালিকার পরও আসন শূন্য থাকলে সংশ্লিষ্ট অনুষদ তাদের নিজস্ব প্রক্রিয়ায় শিক্ষার্থী ভর্তির ব্যবস্থা করতে পারবে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রো-উপাচার্য অধ্যাপক এম মাহবুবুর রহমান বলেন, ‘আমরা পুরো তথ্য নিয়ে কাজ করছি। কয়েকদিনের মধ্যে ওয়েবসাইটে নতুন মেধা তালিকা প্রকাশ করা হবে।’
শাবিতে ভিসির পদত্যাগ আন্দোলন: রক্তিম হস্তছাপ অঙ্কন
সিলেটের শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (শাবিপ্রবি) ভিসি অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন আহমেদের পদত্যাগের দাবিতে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা প্ল্যাকার্ড নিয়ে বিক্ষোভ মিছিল করে এবং ১৬ জানুয়ারি পুলিশি হামলার স্থানে রক্তিম হস্তছাপ অঙ্কন করে।বৃহস্পতিবার আন্দোলনের নিয়মিত কর্মসূচির অংশ হিসেবে বিকেল সাড়ে ৪টায় আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণে বিশ্ববিদ্যালয়ের গোলচত্বর থেকে একটি বিক্ষোভ মিছিল শুরু হয়ে ক্যাম্পাসের বিভিন্ন স্থান ঘুরে ড. এমএ ওয়াজেদ মিয়া আইআইসিটি শিক্ষা ভবনের সামনে গিয়ে শেষ হয়।
মিছিলে শিক্ষার্থীরা গত ১৬ জানুয়ারি পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষ, আন্দোলন-অনশনের সময়ের বিভিন্ন ছবি, প্ল্যাকার্ড এবং পোস্টার নিয়ে অংশগ্রহণ করে। পরবর্তীতে আইআইসিটি ভবনের সামনে ১৬ জানুয়ারি পুলিশের সঙ্গে যেখানে শিক্ষার্থীদের সংঘর্ষ হয়েছিল, সেই স্থানে শিক্ষার্থীরা রক্তিম হস্তছাপ অঙ্কন করে।
আরও পড়ুন: শাবিপ্রবিতে আসছেন শিক্ষামন্ত্রীআন্দোলনকারী শিক্ষার্থী শাহরিয়ার আবেদিন বলেন, ‘আমাদের রক্তের দাগ এখনও শুকায়নি, আমাদের দাবিগুলো এখনও পূরণ হয়নি। তাই দাবি আদায়ের জন্য আমরা মিছিল করেছি। মিছিল শেষে শিক্ষার্থীরা সম্মিলিতভাবে ১৬ জানুয়ারি ক্যাম্পাসের আইআইসিটি ভবনের সম্মুখের যে স্থানে ভিসির নির্দেশে নিরস্ত্র শিক্ষার্থীদের উপর পুলিশ লাঠি, শটগান, টিয়ারশেল, সাউন্ড গ্রেনেড নিয়ে অতর্কিতে হামলা চালিয়েছিল সেখানে সমস্ত অন্যায্যতা-নিপীড়ন-জুলুমের বিরুদ্ধে শিক্ষার্থীদের যে চিরন্তন লড়াই তার ইশতেহার হিসেবে রক্তিম হস্তছাপ আঁকা হয়েছে।
এদিকে বন্ধ থাকা আড়াই শতাধিক মোবাইল ব্যাংকিং একাউন্ট খুলে দেয়া ও শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে দেয়া দুটি মামলা প্রত্যাহারের দাবি জানান তিনি।প্রসঙ্গত, গত ১৬ জানুয়ারি প্রভোস্ট বিরোধী আন্দোলনের সময় অবরুদ্ধ ভিসি অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন আহমেদকে মুক্ত করতে পুলিশ শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা করে, এতে শিক্ষক, শিক্ষার্থী, পুলিশসহ অর্ধশতাধিক আহত হন। হামলার পরপরই প্রভোস্ট বিরোধী আন্দোলন ভিসি বিরোধী আন্দোলনে রূপ নেয়, পরে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসির পদত্যাগের দাবিতে আন্দোলন শুরু করেন শিক্ষার্থীরা। এ সময় বিভিন্ন অভিযোগ তুলে ছাত্র উপদেশ ও নির্দেশনা পরিচালক এবং প্রক্টর বডিরও পদত্যাগ দাবি করেন। পরবর্তীতে শিক্ষার্থীরা ১৯ জানুয়ারি থেকে ভিসির পদত্যাগের দাবিতে অনশন শুরু করে এবং ১৬৩ ঘণ্টা ২০ মিনিট পর ২৬ জানুয়ারি অধ্যাপক ড. জাফর ইকবাল ও অধ্যাপক ড. ইয়াসমিন হক শিক্ষার্থীদের অনশন ভাঙান এবং সব দাবি মেনে নেয়া হবে বলে আশ্বস্ত করেন।
আরও পড়ুন: শাবিপ্রবির প্রথম নারী ছাত্র উপদেষ্টা অধ্যাপক আমিনা পারভীন