শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (শাবিপ্রবি) আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা উপাচার্যের পদত্যাগের দাবি পুনর্ব্যক্ত করার জবাবে শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি বলেন, উপাচার্যের পদত্যাগের দাবি রাষ্ট্রপতির কাছে পেশ করা হবে, কারণ তিনি চ্যান্সেলর। ভিসি পদে কাউকে নিয়োগ ও অপসারণের ক্ষমতা তার হাতে।
শুক্রবার বিকাল ৩টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত সিলেটের সার্কিট হাউসে শিক্ষামন্ত্রীর সঙ্গে তিন ঘণ্টার বৈঠকে মোট আটটি দাবি তুলে ধরেন শিক্ষার্থীরা।
বৈঠক শেষে শিক্ষামন্ত্রী সাংবাদিকদের ব্রিফিংকালে বলেন, আলোচনার সময় আমরা তাদের কথা মনোযোগ দিয়ে শুনেছি। তবে, শিক্ষার্থীদের কিছু দাবি ইতোমধ্যে পূরণ করা হয়েছে। তাদের প্রধান দাবি ভিসির পদত্যাগ বা অপসারণ।
আরও পড়ুন: শাবিপ্রবির নতুন প্রক্টর ইশরাত ইবনে ইসমাইল
দীপু মনি বলেন, ‘কিন্তু একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি নিয়োগ করেন চ্যান্সেলর। তাই আমরা শিক্ষার্থীদের দাবি রাষ্ট্রপতির কাছে তুলে ধরব। তিনি সিদ্ধান্ত নেবেন।’
তাদের অন্য দাবিগুলো হলো—উপাচার্য ফরিদ উদ্দিন আহমেদের পদত্যাগ, ক্লাস-পরীক্ষা চালু, শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে হওয়া মামলা প্রত্যাহার, আড়াই শতাধিক শিক্ষার্থীর বন্ধ থাকা মোবাইল ব্যাংকিং অ্যাকাউন্ট চালু করা, পুলিশের গুলিতে আহত শিক্ষার্থী সজল কুণ্ডকে এককালীন আর্থিক সহযোগিতা দেয়া ও তার জন্য নবম গ্রেডের চাকরি নিশ্চিত করা, মুহম্মদ জাফর ইকবাল ও ইয়াসমিন হককে ইমেরিটাস অধ্যাপক হিসেবে নিয়োগ দেয়া, সব বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষণা খাতে বাজেট বাড়ানো, পরীক্ষা পদ্ধতিতে কোডিং সিস্টেম কার্যকর করা, শিক্ষক নিয়োগে পিএইচডি এবং ডেমো ক্লাসের ভিত্তিতে নিয়োগ প্রক্রিয়া চালু করা।
শিক্ষামন্ত্রীর সঙ্গে শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল, বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশন অনু বিভাগের সেক্রেটারিসহ তিন কর্মকর্তা ও শিক্ষার্থী প্রতিনিধিরা আলোচনায় অংশ নেন।
আরও পড়ুন: শাবিপ্রবির প্রথম নারী ছাত্র উপদেষ্টা অধ্যাপক আমিনা পারভীন
উল্লেখ্য, শাবি শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের শুরু ১৩ জানুয়ারি। বিশ্ববিদ্যালয়ের বেগম সিরাজুন্নেসা চৌধুরী হলের প্রাধ্যক্ষ জাফরিন আহমেদ লিজার বিরুদ্ধে অসদাচরণের অভিযোগ তুলে তার পদত্যাগসহ তিন দফা দাবিতে আন্দোলন শুরু করেন হলের কয়েক শ ছাত্রী।
১৬ জানুয়ারি বিকেলে শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইসিটি ভবনে উপাচার্যকে অবরুদ্ধ করেন। তখন শিক্ষার্থীদের লাঠিপেটা করে উপাচার্যকে মুক্ত করে পুলিশ। এরপর পুলিশ ৩০০ জনকে আসামি করে শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে মামলা করে।
১৯ জানুয়ারি দুপুর আড়াইটা থেকে উপাচার্যের পদত্যাগ না করা পর্যন্ত আমরণ অনশনে বসেন ২৪ শিক্ষার্থী।
২৬ জানুয়ারি অনশন ভাঙার পর জাফর ইকবাল ও ইয়াসমিন হকের হাতে শিক্ষার্থীরা উপাচার্যের পদত্যাগসহ পাঁচটি দাবি সরকারের উচ্চপর্যায়ে পৌঁছে দেয়ার জন্য তুলে দেন। এরপর ৬ জানুয়ারি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র উপদেশ ও নির্দেশনা পরিচালক পদ থেকে অধ্যাপক জহির উদ্দিন আহমদকে সরিয়ে দেয়া হয়।